তিনি এবং ও ! ৭

0
1896
তিনি এবং ও ! ৭
তিনি এবং ও ! ৭

তিনি এবং ও !

৭.
নিদ্র নাস্তা করে রশিদ সাহেবকে ফোন করলো। রশিদ সাহেবের আজকে সকালের দিকে আসার কথা। সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে যায় কিন্তু তার দেখা নেই। কল ধরলেন রশিদ সাহেব। নিদ্র কিছু বলার আগে রশিদ সাহেব বললেন
– আরে বাবা আমি ফোন করবো তোমাকে আর তুমিই করে বসলা।
– চাচা আসবেন কখন?
– এইতো পথে আমি।
– তাড়াতাড়ি আসুন।
নিদ্র ফোন কেটে দিয়ে তার ঘরে বসেই রঙ করা কেমন হয়েছে সেটা পর্যবেক্ষণ করছে। খুবই উদ্ভট রঙ হয়েছে। যে কেউ ঘরে আসলে প্রথমে হতভম্ব হয়ে যাবে। ব্যাপার টা হজম করতে সময় লাগবে। রশিদ চাচা দেখলে কেমন রিএক্ট করবে সেটা ভেবে নিদ্র একা একাই হাসছিলো।
মানুষ কে অবাক করে দেয়ার মধ্যে আলাদা মজা পাওয়া যায়।
অদ্রিও তো এই ঘরে এসেছিলো কিন্তু সে কেনো অবাক হলো না? নাকি সে প্রকাশ করেনি? নাকি সে লক্ষ্যই করেনি?
নিদ্র, অদ্রির ঘরের দরজায় নক করলো। অদ্রি দরজা খুলে মাথা নিচু করে দাঁড়ালো। নিদ্র বলল
– আপনি তো বললেন না?
অদ্রি বলল
– কী বললাম না?
– আমার ঘরের কালার?
অদ্রি মাথা উঁচু করে কিছু একটা বলতে যাবে আর তখন নিদ্রের চোখে চোখ পড়লো। নিদ্র সেই লাল টকটকে চোখের দিকে তাকিয়ে আবারো ভয় পেলো। নিদ্র কিছুটা পিছনে সরে আসলো। অদ্রি বুঝতে পেরে বলল
– খেয়াল করিনি। চলুন দেখে আসা যাক।
লিলি প্রায় দৌড়ে এসে বলল
– আপামনি রশিদ চাচা এসেছেন।
অদ্রি বলল
– বসতে বল।
নিদ্র বলল
– আমার একটু কাজ আছে রশিদ চাচার সাথে।
অদ্রি বলল
– আচ্ছা, পরে দেখা যাবে।
রশিদ সাহেব শপিং ব্যাগ হাতে নিয়ে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। নিদ্রকে বললেন
– বাবা তুমি এগুলা কী বানাইতে দিছিলা?
নিদ্র শপিং ব্যাগ থেকে লাল, হলুদ, নীল রঙের লুঙ্গী বের করলো। রশিদ সাহেব বিরক্ত স্বরে বললেন
– এই বাপের জন্মে দেখলাম না কেউ লুঙ্গীতে রাবার ব্যবহার করে।
– আরে চাচা লুঙী পড়লে দেখা গেলো কোন সময় কার সামনে খুলে যায়। সিকিউরিটি সিস্টেমে ঝামেলা। মান সম্মান নিয়ে টানাটানি।
– শক্ত করে পড়লেই তো হয়। তাই বলে মেয়ে মানুষের স্কা্র্টের মতো?
– আরে চাচা আগে সিকিউরিটি তারপর ওসব।
– তোমার লুঙী পড়তে হবেনা।
– আমি পড়বোই। বাংলাদেশে আসছি আর এটা ট্রাই করবো না সেটা কীভাবে হয়?
– বাবা তুমি আর কোনো কালার খুঁজে পেলে না?
অদ্রি রশিদ সাহেবের পাশের সোফায় এসে বসলো।
নিদ্র বলল
– এখনি তো সময় চাকচিক্যময় থাকার।
নিদ্রের হাত থেকে লুঙী নিয়ে অদ্রিকে দেখিয়ে রশিদ সাহেব বললেন
– এইগুলা কেউ পড়ে?
নিদ্র বলল
– উনি কীভাবে বলবেন? নিজেই তো বিধবা সেজে বসে থাকে।
সে আর চাকচিক্যের কী বুঝবে?
রশিদ সাহেব বললেন
– ও যা তাই সেজে থাকে।
নিদ্র অবাক হয়ে বলল
– মানে?
রশিদ সাহেব শান্ত ভাবে বললেন
– অদ্রি বিধবা।
নিদ্র বলল
– এতো অল্প বয়সে বিধবা? তো বিয়ে দেন নি কেনো?
অদ্রি বজ্রকণ্ঠে বলল
– আপনাকে সেটা ভাবতে হবেনা। আপনি আপনার চর্কায় তেল দিন।
নিদ্র বলল
– আমি ভাবতে আসিনি। সাধারণ প্রশ্ন করেছি , তাতে এতো রাগ করার কী আছে?
– আপনি ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে পরবেন না।
– দেখুন আমি আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে পরিনি। আপনি এখনো অনেক ইয়াং তাই জিজ্ঞেস করেছি। আর এই প্রশ্নটা খুবই সাধারণ প্রশ্ন।

চলবে…..!

#Maria_kabir