জোরপূর্বক ভালোবাসা পর্বঃ ১০

0
2218

জোরপূর্বক ভালোবাসা পর্বঃ ১০
– আবির খান

আবির খপ করেই তমাকে ধরে কোলে তুলে নিয়ে নিচে নামতে থাকে আর সুযোগ বুঝে তমার নরম কোমরটা স্পর্শ করতে থাকে…আমাদের তমা কিন্তু তা বেশ বুঝতে পারছিলো…তাই মজা নেওয়ার জন্য তমা…
তমাঃ আমি কিন্তু ব্যাথা পাচ্ছি…
আবিরঃ কই??গম্ভীর কণ্ঠে…
তমাঃ এই যে যেখানটা আপনি এতোক্ষন যাবত স্পর্শ করছেন….

আবির তমার কথায় এমন লজ্জা পায় যে ছেলে মানুষ হয়েও লজ্জায় আবিরের ফরসা মুখটা লাল হয়ে গিয়েছে…তাও নিজেকে একটু ঠিক করে বলল…

আবিরঃ কোথায় কি স্পর্শ করছি…
তমাঃ কেন এই যে কোম….
তমাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে..রাগী কণ্ঠে আবির বলল..

আবিরঃ একদম চুপ…সাহস বেশি বাড়ছে না তোর…একদম চুপ…

আবিরের এ ব্যবহারে তমার মনটা খারাপ হয়ে যায়… আবির তমাকে নিচে নিয়ে এসে খাবার টেবিলে বসিয়ে দেয়…

আবিরঃ রহিম চাচা…খাবার দেন…
রহিম চাচাঃ জ্বি বাবা…
রহিম চাচা টেবিলে সব খাবার পরিবেশন করে চলে গেলেন… আবির নিজ হাতেই খাবার নিয়ে খেতে পছন্দ করে…বেরে দিতে হয়না…

আবিরঃ খাবার নিয়ে খাওয়া শুরু কর…তমাকে বলল..
তমা মন খারাপ করে মাথা নিচু করে বসে আছে..
আবিরঃ খেতে বলছি…
তমাঃ খিদে নেই..
আবিরঃ খাবি না..ওকে..না খাইলে না খা আমার কি…তুই কষ্ট পাবি…
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


এরপর তমাকে দেখিয়ে আবির আরো মজা করে খাবার খাচ্ছে আর প্রতিটি খাবারের তারিফ করছে..তমা আর দেখতে না পেরে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো…আর মনে মনে বলছে..

তমাঃ বেটাটা কি শয়তান…আমি না হয় রাগে একবার বলছি খিদে নেই..তাই বলে আর খেতে বলবে না…সেই কাল থেকে না খাওয়া… মাথা ঘুরাচ্ছে খুদায়…হঠাৎই আবির…

আবিরঃ হা কর…
তমা দেখলো আবির ওর মুখের সামনে খাবার ধরে আছে…তমার বিশ্বাসই হচ্ছে না…আবির ওকে খাইয়ে দিবে নিজ হাতে…খুশিতে চোখদুটো ভরে আসছে তমার…তমা তারাতাড়ি হা করে খাবারটা নিলো আর আবিরের দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে আর খাচ্ছে…

আবির- জানি ওর খুব ভালো লাগছে আমার হাতে খেয়ে…এতো দিন বাবা মায়ের কাছে ছিলো…তাদের আদরে খেয়েছে আজ বাবা-মাকে ছেড়ে স্বামীরটা খাচ্ছে..ও না বললেও আমি বুঝি বাবা মাকে ছাড়া একটা মেয়ে প্রথম কোথাও খেতে পারেনা..থাকতেও পারেনা..তাই ওকে এখন আর কষ্ট দিচ্ছি না…

একটা মেয়ে আর জীবনের প্রথম অংশ তার বাবা মার সাথেই পার করে…হঠাৎ একদিন তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সম্পুর্ন এক আলাদা জায়গায়…সেখানে কিন্তু মেয়েটা সম্পুর্ন একা থাকে..এতোদিন যে বাবা-মা তাকে সবসময় গাছের মতো ছায়া দিয়েছে তারা কিন্তু আর তার সাথে থাকে না সেই জায়গাটায়…মেয়েটার তখন বড্ড একা লাগে..কারণ একরাতেই কিন্তু তার ঘারে একরাশি দায়িত্ব এসে ভীড় জমায়..একজন মেয়ের জীবনে তাকে অনেক চরিত্র পালন করতে হয়…কোন সময় মেয়ে, কোন সময় বউ, কোন সময় মা, কোন সময় ভাবি, কোন সময় নানি কিংবা দাদি..মেয়েটার কিন্তু সবসময়ই ফেলে আসা বাবা-মায়ের সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তের কথা মনে পরে…মনে পরে তাদের আদর,সোহাগ, যত্নের কথা…এসব তার চোখকে ভারি করে দেয় অশ্রু দিয়ে…ঠিক সেই সময়টায় যদি মেয়েটার সবচেয়ে আপন কেউ থাকে তা হলো তার স্বামী..কারণ একমাত্র স্বামীর বুকেই মাথা রেখে নির্ভয়ে সে তার মনের সব কথা বলতে পারবে..দুঃখ কষ্ট সব শেয়ার করতে পারবে…যদি স্বামী তার হাতটা ধরে বলে, মন খারাপ করো না আমি আছি..আজ থেকে তোমার সব দায়িত্ব আমার..তাহলে সেদিনই মেয়েটা তার বাবামার পর ৩য় কোন মানুষকে মনদিয়ে বিশ্বাস করতে পারবে..শুধু দায়িত্বটা ঠিক মতো পালন করা চাই স্বামীর…তাহলে মেয়েটা তার জীবনের বাকি ২ অংশ বেশ আরামেই কাটাতে পারবে….

ঠিক এখন আবির সব রাগ,কষ্ট ভুলে সেই দায়িত্বটাই পালন করছে…তমা মুগ্ধ নয়নে আবিরকে দেখছে আর খাচ্ছে…আবিরের কিন্তু এ দায়িত্ব পালনে খুব মজাই লাগছে…নিজ হাতে নিজের বউকে ভালোবাসা দিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে…হয়তো এই চাপা ভালোবাসা ওর বাবা-মার কথা ভুলতে সাহায্য করবে…

তমাঃ আমাকে মাফ করা যায়না??কান্না মিশ্রিত কণ্ঠে বলল…
আবিরঃ নাহ..
তমাঃ আমি কি অনেক বেশি কষ্ট দিয়ে ফেলেছি আপনাকে???
আবিরঃ….
তমার এভাবে কথা বলায় আবিরের খুব কষ্ট হচ্ছে..কি বলবে কিছুই বুঝতে পারছে না..

তমাঃ আমি জানি আপনি আমাকে অনেক ভালোবাসেন…আমাকে আপনি কোনদিনই ঘৃনা করতে পারেন নাহ…না হলে আমাকে নিজ হাতে এতো ভালোবাসা দিয়ে খাইয়ে দিতেন নাহ…
আবিরঃ কিহ ভালোবাসা আর তোকে…হাহা.. সেটা শেষ.. আর নেই আমার মাঝে…তুই অসুস্থ হয়ে যাবি তাই তোকে খাইয়ে দিছি..অসুস্থ হলেতো সেই আমাকেই দেখতে হতো…আমি এতো কাউকে দেখতে পারবো না তাই খাইয়ে দিসি…
বলেই আবির ঠাস করে প্লেটটা রেখে চলে গেলো…

তমা ভাবছে- উনি কতটা ভালো… মিথ্যাটাও ঠিক মতো বলতে পারে না…মিথ্যার মাঝেও সত্যিটা কিভাবে বলে চলে গেলেন…আপনি আমাকে খাইয়ে দিয়েছেন কারণ না হলে আমি অসুস্থ হয়ে পরবো তাই…কতো ভালোবাসেন আমাকে..আর বলেন আমাকে ভালোবাসেন নাহ…আমিও আপনার মুখ থেকে মানে আমার স্বামীর মুখ থেকে শুনে ছাড়বো, তমা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি…

আবির উপরে গিয়ে রীতিমতো পাগলের মতো করছে….মেয়েটা কিভাবে মায়া ভরা কণ্ঠে কথা বলছে..আবিরের চোখ জলে ভরে যাচ্ছে তা চিন্তা করেই…আজ এক সকালেই ওকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছে…তমাটা কিভাবে খাওয়ার সময় তাকিয়ে ছিলো… সে চোখে ছিলো আবিরের জন্য অনেক ভালোবাসা…আবির আর পারছেনা তমাকে এভাবে কষ্ট দিতে…কিন্তু আবার আগের মতোও হতে পারছে না…কারণ এতো সহজে তমার এই নেশা ধরানো মায়ার টানে আটকা পরলে তমাকে তার ভুলের শিক্ষা দেওয়া যাবে না…আবির তারাতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিজেকে রেডি করে নিচে নেমে আসে..তমা সোফাতেই বসে আছে..আবির রাগী ভাবে তমার কাছে এগিয়ে যায়…
আবিরঃ আমি বাইরে যাচ্ছি যদি এক পা এদিক ওদিক করেছিস তাহলে কিন্তু তোকে নাহ নিজেকেই শেষ করে ফেলবো…
তমা মাথা নারায়…আর আবির হনহনিয়ে বাইরে চলে যায়…

তমাঃ আমার বয়েই গেছে এই মহা প্রেমিক স্বামীর কাছ থেকে পালিয়ে যাবো..কি প্রেম রে বাবা..মুখে বলে আমাকে আর ভালোবাসে না…নিজেকে আঘাত করবে কিন্তু আমাকে আঘাত করতে পারবে না..এটা ভালোবাসা না নয়তো কি…রাগী বোকারাম একটা…

তমা এসব ভেবে কিছুক্ষন চুপ করে বসে থাকে…আর মনটাও ধিরে ধিরে খারাপ হতে থাকে…কারণ তমার তার পাপাই আর মামনির কথা খুব মনে পরছে..তাদেরকে ফেলে সে আজ অন্য ঘরের আমানত…

তমা আরো ভাবে, পাপাই এর যে ক্ষমতা… তিনি চাইলেইতো আমাকে খুজে বের করতে পারেন..তাহলে কেনো বের করছেন নাহ…একটা অচেনা ছেলের মেসেজ দেখে তিনি আমাকে ছেড়ে দিলেন..তমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না…মাথাটা ঝিম ঝিম করছে অনেক ধকল গিয়েছে কাল থেকে… তমা আস্তে করে উপরে গিয়ে আবিরের লাগজারিয়াস রুমে গিয়ে শুয়ে পরে…

এদিকে….
তিশাঃ ওহ আর নিতে পারছি নাহ…তমা যে কই হারায় গেলো…আঙ্কেলও কিছু বলছেনা..আর পাগলটা আসতে বলে এখনো খবর নাই…

শুভর আগমন..বাইক থেকে নেমে হাসতে হাসতে তিশার কাছে যায়…শুভকে এভাবে হাসতে দেখে তিশা রাগ হয়…

তিশাঃ ওই পাগল তুই হাসছিস…আমার বান্ধবীকে নাকি খুজে পাওয়া যাচ্ছে না আর তুই!!!চিন্তিত কণ্ঠে…
শুভঃ আরে আমার বাবুটা এতো চিন্তা করো কেন??তমা কই আমি জানি…
তিশাঃ কি বললা তুমি জানো…
শুভঃ হ্যা…
তিশাঃ তাহলে প্লিজ তারাতাড়ি বলোনা ও কোথায়…
শুভঃ বলবো তবে একটা শর্তে…..
তিশাঃ আবার কিসের শর্ত???
শুভঃ এখানে একটা আর এখানে একটা দিতে হবে..
তিশাঃ তুমি কি আরো পাগল হয়ে গিয়েছো নাকি??এই মুহূর্তে এসব কি চাচ্ছো!!!
শুভঃ না দিলে নাই…আমিও বলবো নাহ…
তিশাঃ আচ্ছা দিবোতো তার আগে বলো…তারপর দিবো…
শুভঃ সত্যিতো??
তিশাঃ তুমি বলবা নাকি আমি চলে যাবো?? তমার জন্য চিন্তায় শেষ হয়ে যাচ্ছি..
শুভঃ আরে বলছি বলছি রাগ করোনা..
তিশাঃ তারাতাড়ি বলো…
শুভঃ তমার যার কাছে থাকার কথা তার কাছেই আছে…
তিশাঃ মানেহ???
শুভঃ মানে আর কি…তমা আবিরের কাছেই আছে…
তিশাঃ হাউ…মানে কিভাবে?? ভাইয়াতো কাল রাতে বললো সে আর তমার ব্যাপারে কিছু শুনতে চায়না তাহলে??
শুভঃ হুম…কিন্তু আবির যে তমাকে অনেক ভালোবাসে তাই ওকে হারাতে চায়নি…
তিশাঃ তমা এখন কোথায়??
শুভঃ আবিরের বাসায়…
তিশাঃ একটা মেয়ে এভাবে থাকবে??
শুভঃ জানে মান…সে এখন আমাদের বড় ভাবি হয়েগিয়েছে…
তিশাঃ মানে??
শুভঃ একটু আগে তাদের বিয়ে করিয়ে দিয়ে আসলাম…
তিশাঃ বলো কি??
শুভঃ জ্বি ম্যাম..
এরপর শুভ তিশাকে প্রথম থেকে সব খুলে বললো..তিশা সবটা শুনে খুব হাসলো আর খুশি হলো…তিশা এখন একে বারেই চিন্তামুক্ত…
শুভঃ একটা কথা বলবো??
তিশাঃ বলো না… কে মানা করেছে..
শুভঃ তোমার হাসিটা খুব সুন্দর… তোমার এই হাসির উপর আবার প্রেমে পরলাম…
তিশা শুভর কথায় লজ্জা পেলো..
শুভঃ লজ্জা পেলে হবে না…আমার দুইটা দেও এখম…
তিশাঃ যাহ দুষ্ট..
শুভঃ কি হলো দেও…তুমিতো বললা সব বললে দুইটা দিবা…দেওতো তারাতাড়ি…
তিশাঃ নাহ এগুলো আমি দেইনা..
শুভ মনটা খারাপ করে অন্যদিকে মুখ করে দাড়িয়ে রইলো…
তিশাঃ আচ্ছা মন খারাপ করো না…দিচ্ছি পাগলটা…
শুভঃ কি সত্যিই… এই নেও দেও…শুভ গালটা এগিয়ে দিলো…তিশা দুইদিকে তাকিয়ে শুভকে তার দুইটা দিয়ে দিলো…
শুভ তিশাকে তার বুকের সাথে জরিয়ে ধরে আর কপালে একটা চুমু দেয়…তিশা চোখ বুঝে তা অনুভব করে….

আবির দুপুরের দিকে ৬/৭ টা শপিং ব্যাগ হাতে বাসায় ফিরে আসে…এসেই তমাকে নিচে দেখেনা..উপরে ওর রুমে চলে যায়…গিয়ে দেখে তমা ঘুমাচ্ছে…আবির ব্যাগ গুলো রেখে ফ্রেশ হতে চলে যায়…ফ্রেশ হয়ে বাইরে এসে দেখে তমা এখনো ঘুমাচ্ছে…অনেক ক্লান্ত তাই এতো ঘুম…আবির আস্তে করে তমার কাছে যায়…তমা ডানদিকে ফিরে ঘুমিয়ে ছিলো…আবির সেদিকটায় যায়…

আবির আস্তে করে নিচে বসে, বসে তমার দিকে তাকায়…আহ কি মায়াবীই না লাগছে ওর ঘুমন্ত মুখটা…মনে হচ্ছে কোন এক রুপকথার দেশের নীল পরীকে তারা আবিরের কাছে রেখে গিয়েছে..আবির বিশেষ করে তমার গোলাপি ঠোঁটদুটোই বেশি দেখছে..খুব টানছে…আগে অধিকার ছিলো না…কিন্তু এখন আছে…এখন যে আবির তমার স্বামী..আবির আর কিছু না ভেবে তমার নেশায় পরে আস্তে করে ওর দিকে এগিয়ে যায়…একটু আলতো করে প্রথমে ওর কপালে একটা চুমু দেয়…তমা একটু কেপে উঠে… সেই কাল রাত থেকে একটি বারও তার এই পরীটাকে একটুও আদর করতে পারেনি…এখন খুব ইচ্ছা হচ্ছে…আবির তমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে…খুব কাছ থেকে আরো সুন্দর লাগছে..আবির শুনেছে মেয়েদের বিয়ে হলে নাকি তাদের রূপের সৌন্দর্য আরো ১০ গুণ বেড়ে যায়.. সত্যিই তমাকে দেখে তা মনে হচ্ছে…আবির শুধু মুগ্ধ হয়েই তমাকে দেখছে..একসময় আস্তে আস্তে করে তমার ঠোঁটের কাছে এগিয়ে যায় আবির..আর কিছু না ভেবে সেখানে আস্তে করে একটা চুমু দিয়েই উঠে পরে আবির…আর নিচে চলে যায়…

এতক্ষণ আবিরের এই নিজের সাথে লড়াই আমাদের তমা মনি উপভোগ করছিলেন…আসলে ঠিক যখনই আবির রুমে ঢুকেছিলো তখনই তমার ঘুম ভেঙে যায়…কিন্তু আবির তার সাথে কি করে তা দেখার জন্য ঘুমের ভান ধরে শুয়ে ছিলো…তমা বেশ বুঝতে পেরেছে আবির তাকে অনেক ভালোবাসে কিন্তু তার ভুলগুলো আবিরকে আটকে দিচ্ছে…তমার নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে…আজ তার একটা ভুলের জন্য তাকে এভাবে বিয়ে করতে হলো.. স্বামীর প্রতি অধিকারটাও ঠিক মতো খাটাতে পারছেনা…এসব ভাবতে ভাবতে তমার চোখ জলে ভরে আসে…তমা আস্তে করে উঠে বসে…

ঠিক সে মুহূর্তেই আবিরও রুমে ঢুকে…তমা তারাতাড়ি তার চোখটা মুছে নিলো…কিন্তু আমাদের আবিরের চোখ এড়ালো না তা…আবিরের খুব কষ্ট হচ্ছে তমাকে এরকম দেখে..তাও নিজেকে একটু গম্ভীর করে..
আবিরঃ এই ব্যাগ গুলোতে কিছু জামা কাপড় আছে…পরেনিস…
আবির তমার কাছে ব্যাগ গুলো দিয়ে যেইনা চলে যাবে ঠিক তখনই তমা খপ করে আবিরের একটা হাত ধরে ফেলে.. আর বলে…

তমাঃ দয়া করে আমার সাথে আর এমনটা করবেন না…আমার খুব কষ্ট হচ্ছে..আমি জানি আপনি আমাকে এখনো অনেক ভালোবাসেন…সত্যি বলছি আমিও আপনাকে অনেক ভালোবাসি…আমাকে এভাবে আর দূরে সরিয়ে দিয়েন নাহ…আপনার বুকে একটু জায়গা দিন..আমাকে মাফ করে দিন..প্লিজ আমাকে আপন করে নিন..প্লিজ…কাদতে কাদতে বলল…

আবির অন্য দিক তাকিয়ে ছিলো…তমার এরকম কথা শুনে আবিরের মতো শক্ত মানুষের হৃদয় ফেটে যাচ্ছে…চোখে অশ্রুর ঢেউ উঠেছে…এই বুঝি আছড়ে পরবে…আবির তমার হাতটা ঝাকি দিয়ে সরিয়ে নিয়ে বাইরে চলে যায়..খুব কষ্ট হচ্ছিলো তমার এই আকুতি শুনে..তাই সেখান থেকে চলে এসেছে আবির…নাহলে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারতো না..আবিরের চোখ দিয়ে অশ্রু গুলো টপটপ করে পরছে..সে যা চেয়েছিলো তাই হচ্ছে..তমা আবিরকে চাচ্ছে..তমাও বলেছে সে আবিরকে অনেক ভালোবাসে..কিন্তু তাও তমাকে আরেকটু পেইনে রাখতে হবে…তাহলে সারাজীবন অনেক বেশি ভালোবাসবে…

এদিকে আবিরের এভাবে চলে যাওয়ায় তমা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে..খুব খারাপ লাগছে তমার..কি করবে?? কিভাবে মানুষটা মন গলাবে??হঠাৎ তমার খেয়াল হয় আজ যে তাদের বাসর রাত..প্রতিটি মেয়েরই এই রাত নিয়ে থাকে অনেক স্বপ্ন কিন্তু তমার একটা বড় ভুলের জন্য আজ সে স্বপ্নটাও ঘোলা হয়ে যাচ্ছে…তমার কান্না আরো বেরে যায়…আবির তমার এরকম কান্না আর না নিতে পেরে নিজেকে শক্ত করে আবার ভিতরে যায়…

আবিরঃ এই মেয়ে কান্না বন্ধ কর…এখন কিসের কান্না..পরে কাদবি…আরো ভালো করে যখন তোকে কষ্ট দিব সেই সময় কাদিস…চুপ এখন একদম চুপ.. নাইলে কিন্তু…

তমা কোন কথা না বলেই আচমকা আবিরকে এসে জরিয়ে ধরে…আবিরতো তমার কান্ড দেখে পুরা বোকা হয়ে যায়…তবে তমা কাজটা কিন্তু অনেক ভালো করেছে…কারণ আবিরের খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো তমাকে জরিয়ে ধরে শান্তনা দেওয়ার..কিন্তু পারছিলো না…তমার এই জরিয়ে ধরা আবিরের শরীরে এক অন্যরকম অনুভূতি জাগাচ্ছিলো..তমার এখন কেন যেনো খুব ভালো লাগছে…এই বুকটার খুব প্রয়োজন ছিলো এতোক্ষন..তমা বুঝতে পারছে আবিরের হার্টবিট শান্ত নেই..আবিরের বুকে ঝড় চলছে…যা তার প্রতি ভালোবাসার জানান দিচ্ছে…

আবির তমাকে ওর কাছে থেকে ছাড়িয়ে সামনে দাড়া করিয়েই মনের অজান্তেই তমার চোখ দুটো মুছে দেয়…তমা অবাক হয়ে যায়…

আবিরঃ এখন কোন কান্নাকাটি নাই…নিচে আয় খাবি..আর ভাবিস না ভালোবাসি বলে তোর চোখ মুছে দিছি… নিচে কাজের লোকেরা আছে ওরা দেখলে খারাপ ভাববে তাই…
বলেই আবির তারাতাড়ি নিচে চলে যায়..নিজেকে আর আটকে রাখতে পারছে না…ফিলিংস গুলো মনের অজান্তেই বের হয়ে আসছে…

তমা দাড়িয়ে ভাবছে, আর কত মিথ্যা বলবেন…আপনি ভুলে গেছেন আমি কিন্তু আপনার চোখ পড়তে পারি..আপনার বুকের কথা শুনেছি… আপনার মন আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে..শুধু আপনিই রেগে আছেন..কিন্তু আজ রাতেই সেই রাগ আমি ঝেরে ফেলে দিবো…
চলবে…?
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে