জানে জিগার পর্ব – ৮ (শেষ পর্ব)

0
1356

#জানে জিগার
#হৃদয়ের আকাশে মেঘ রোদ বর্ষণ
#Last-Part
#Writer-NOVA

পাঁচ বন্ধু মিলে পেছনের রাস্তা দিয়ে পুরনো বাড়ির ভেতরে ঢুকলো। সবার কানে ব্লুটুথ সেট করা। যা দিয়ে তারা একে অপরের সাথে কানেক্টেড আছে। নিশাথকে ধরে তাদের আস্তানায় ইচ্ছেমতো ধোলাই করেছে। সেই ধোলাইতে বেচারা গড়গড় করে সব খুলে বলেছে।হৃদয় চোখের ইশারায় আকাশকে সামনে যেতে বললো। মেঘ সামনে যেতে নিলে বর্ষণ আটকে দিয়ে বললো,

— সাবধানে মেঘ। মানুষ আসছে!

মেঘ তার বিখ্যাত রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো,
— আসতে দে।

বলতে বলতেই একটা মধ্য বয়স্ক লোক ওদের সামনে চলে এলো। সে আচমকা ওদেরকে দেখে যেই চিৎকার করতে যাবে তখুনি মেঘ ঘাড় ধরে ঘুরিয়ে সামনের দেয়ালে বারি দিলো। লোকটা অজ্ঞান হয়ে পরে গেলো। বর্ষণ মেঘের কাধেঁ চাপর মেরে বললো,

— গুড জব ভাই।

আকাশ, হৃদয় উত্তর দিকে চলে গেছে। মেঘের সাথে বর্ষণ আর রোদ। রোদ কিছু সময় ধরে হাসফাস করছে। তার এখন এই মুহুর্তে গাজর খেতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু পকেট থেকে গাজর বের করতে ভয় পাচ্ছে। দুনিয়া উল্টে যাক তাতে রোদের কিছু নেই। তার গাজর না খেলে অস্বস্তি লাগবে। গাজর বের করলে মেঘ,বর্ষণের হাতে মার খাওয়ার সম্ভবনা আছে। তবুও ভয়ে ভয়ে পকেট থেকে একটা গাজর বের করে যেই মুহুর্তে কামড় বসাবে সেই মুহূর্তে সামনে তাকিয়ে দেখে মেঘ চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছে। রোদ সাহস করে একটা গাজরে কামড় বসিয়ে সামনের দুই দাঁত দেখিয়ে খরগোশের দাঁত বের করা হাসি দিলো। এতে যেনো বর্ষণ রেগে গেলো। দাঁত চেপে বললো,

— তোকে জঙ্গলে ফেলে আসতে মন চাচ্ছে। এখন তোর গাজর খেতে মন চাইছে?

রোদ দাঁত দুটো বের করে আবারো একি ভঙ্গিতে হেসে উত্তর দিলো,

— জঙ্গলে ফেলে আসার সময় এক ট্রাক গাজরও দিয়ে দিস ভাই।

বর্ষণ রেগে এগিয়ে আসতে নিলে মেঘ ওকে আটকে দিয়ে বললো,

— ওকে পরে দেখে নিস। আগে যেই মিশনে এসেছিস তা কমপ্লিট কর।

বর্ষণ নিজের রাগ সংযত করে নিলো। ধীরপায়ে সামনে এগিয়ে গেলো। রোদ কচমচ করে গাজর খেতে খেতে সামনে এগুতে লাগলো। কিছু দূর গিয়ে মেঘ ওদের হাত দিয়ে আটকে ধরে সাবধানী গলায় ফিসফিস করে বললো,

— তোরা দুজন ভেতর দিকে যা। আমি একা সামনের দিকে যাচ্ছি।

রোদ, বর্ষণ মাথা হেলিয়ে সম্মতি জানালো। মেঘ ভেতরের দিকে যেতেই কোণার দিকে গণ্ডগোলের আওয়াজ পেলো। বুঝতে পারলো আকাশ ও হৃদয়কে ওরা দেখে ফেলেছে। দ্রুত পায়ে ছুটে চললো সেদিকে।

আধা ঘণ্টার মধ্যে পুরো বাড়ি ওরা পাঁচজন ঘেরা দিয়ে ফেললো। পাঁচ বন্ধু ফাইট পারার কারণে কোন সমস্যা হয়নি। নিশাথের লোকেরা একেকটা আহত হয়ে পরে আছে। হৃদয় শেষ লোকটাকে ইচ্ছে মতো মারতে মারতে বললো,

— বাচ্চাগুলো কোথায় বল?

লোকটা আঙুল দিয়ে পশ্চিম দিকের একটা কামরা দেখিয়ে দিলো। আকাশ, রোদ, বর্ষণ সেদিকে ছুটলো। হৃদয় মনের আশ মিটিয়ে একেকজনকে মারছে। রাগে ওর মুখ লাল হয়ে গেছে। শীতের মধ্যেও দরদর করে ঘামছে। মেঘ এসে থামিয়ে দিয়ে বললো,

— ছাড়, মরে যাবে তো।

হৃদয় এলোপাথাড়ি লাথি মারতে মারতে বললো,
— ওকে মেরেই ফেলবো।

— ওকে মেরে আমাদের কোন লাভ নেই। তারচেয়ে ওদের সবকিছুর বস নিশাথকে উপরে পাঠিয়ে দিছি। তাতেই কাজ হয়ে গেছে।

হৃদয় মেঘের কথা শুনে কিছুটা থামলো। আকাশ ভেতর থেকে দৌড়ে এসে বললো,

— সবগুলো বাচ্চা আছে এখানে। আজকে রাতে এগুলোকে বিদেশে চালান করার ব্যবস্থা করে ফেলছিলো।

মেঘ মোবাইল বের করে আরাফাতকে কল করলো।
— আরাফাত, মিনিট পাঁচের মধ্যে সবাইকে নিয়ে হাজির হও।এখান থেকে এগুলোকে নিয়ে যাবে। একটাও যাতে বাদ না পরে।

মোবাইলের ওপাশ থেকে আরাফাত বললো,
— কোন চিন্তা করবেন না বড় ভাই। ওদের অস্তিত্ব কেউ খুঁজে পাবে না।

মেঘ আরো কিছু কথা শেষ করে কল কেটে দিলো।তিনজন বাচ্চাদের সেখানে চলে গেলো। বড় বড় দোলনার মধ্যে বাচ্চাগুলো পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে। কেউ কেউ আবার জেগে হাত-পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে খেলছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো কেউ কান্না করছে না। তাদের সাথে যে কি হতে চলেছিলো তারা যদি জানতো তাহলে হয়তো এতো নিশ্চিন্তে ঘুমাতে কিংবা খেলতে পারতো না। হৃদয় এগিয়ে গিয়ে একটা বাচ্চার সাথে কথা বলতে লাগলো। মেঘ, আকাশকে বললো,

— আকাশ,খোজ নিয়ে দেখ এই বাচ্চাগুলো কোথা কোথা থেকে হারিয়েছে। ওদের বাবা-মায়ের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা কর। আর….

বর্ষণ মেঘের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললো,
—একটা কাকপক্ষী যাতে না জানে এটা আমাদের কাজ।

বর্ষণ আরো কিছু বলতে নিলে মেঘ থামিয়ে দিয়ে বললো,

— আমি জানি বর্ষণ তুই কি বলবি।তাই কিছু বলার দরকার নেই।

বর্ষণ বিরক্তির সাথে বললো,
— আমি আজ এসব বিষয় কিছু বলবো না। আমি বলতে চেয়েছিলাম যতদ্রুত পারি তত দ্রুত এখান থেকে বাচ্চাগুলোকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

রোদ বর্ষণের সাথে সহমত প্রকাশ করে বললো,
— হ্যাঁ ভাই বর্ষণ ঠিক কথা বলছে।

🔥🔥🔥

সুমনা তার ছেলেকে পেয়ে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো।চোখে, মুখে অসংখ্য চুমু এঁকে দিলো। রাকিবের চোখেও পানি। ছোট বাচ্চা সাকিবও এতদিন পর তার মা কে ফিরে পেয়ে চুপটি করে মায়ের আদর উপভোগ করছে।রাকিব হাতজোড় করে আরাফাতকে বললো,

— আপনেগোরে যে কি কইয়া থেংকু (থ্যাংকস) দিমু তা আমার জানা নাই। তয় আল্লাহর কাছে চাই তিনি যেন আপনেগো আরো ভালো কাজ করোনোর তওফিক দেয়। আল্লাহ আপনেগো ভালো করুক।

আরাফাত রাকিবের দুই হাতের ওপর হাত রেখে হাসি হাসি মুখে বললো,
— আমাকে নয়। বরং পাঁচ সুপারম্যানের জন্য দোয়া করেন। সারাজীবন যেনো ওরা এমনি থাকে।

রাকিব বুঝতে পারলো অদ্ভুত পোশাক পরহিত ছেলেগুলোর কথা বলছে আরাফাত। সুমনা এগিয়ে এসে চোখের পানি মুছতে মুছতে বললো,

— আপনের পাঁচ ভাইরে এই বোইনের পক্ষ থিকা ভালোবাসা জানাইবেন। আল্লাহ তাগোরে সত্যি আমগোর জন্য ফেরেশতা বানায় পাঠাইছে।তারা আইলে অনেক খুশি হইতাম। কিন্তু তারা নাকি কোথায় যায় না। কারো সামনে আহে না।

আরাফাত প্রতিত্তোরে কিছু বললো না। শুধু মুচকি হাসলো। সন্তানকে ফিরে পেয়ে বাবা-মায়ের খুশিটা কিন্তু দূর থেকে অনুভব করতে ভুললো না পাঁচ বন্ধু। এটা যে অন্য রকম একটা প্রশান্তি দেয়। সেই প্রশান্তির লোভ সামলাতে না পেরে দূর থেকে লক্ষ্য করছে তারা। কখন যে পাঁচ জনের চোখের কোণে পানি চলে এসেছে তা বুঝতেই পারেনি।

🔥🔥🔥

২ দিন পর…..

ড্রয়িংরুমে সোফায় বসে চার বন্ধু আলাপ করছে। মেঘ রুমে বসে মোবাইলে কথা বলছে।মাইশা চায়ের ট্রে হাতে কাঁপতে কাঁপতে ওদের সামনে এলো। এই হৃদয়কে সে একটু বেশি ভয় পায়। সেদিনের ঘটনার পর মাইশা হৃদয়ের সামনে পরতে চায় না। এখন আসতে চায়নি।কিন্তু রাণী বেগম মাইশাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে পাঠিয়ে দিয়েছে। চায়ের কাপগুলো টি-টেবিলে কাঁপা কাঁপা হাতে রাখতেই সবাই সচকিত হয়ে ওর দিকে তাকালো। এতে সে আরেকটু ভড়কে গেলো। দ্রুত সেখান থেকে কেটে পরতে চাইলে রোদ বললো,

— হেই মাইশা শুনো।

মাইশা চমকে উত্তর দিলো,
— জ্বি বলেন।

— প্লিজ সবাইকে একটু সার্ভ করে দাও।

মাইশা চোখ কপালে তুলে বললো,
— আমি!

— হ্যাঁ তুমি।

মাইশা আড়চোখে একবার হৃদয়ের দিকে তাকালো। দুজনের চোখে চোখ পরে গেলো। মাইশা ভীতি চোখে মাথা নিচু করে সামনে এগিয়ে গেলো। সবার হাতে চায়ের কাপ তুলে দিলো। হৃদয়ের দিকে কাপ বাড়াতে গিয়ে ঠকঠক করে কাঁপতে লাগলো। হৃদয় কপাল কুঁচকে মাইশার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
মেয়েটার ওপর কখনও হৃদয় রাগ দেখানি তবুও সে তাকে ভয় পায়।আকাশ,রোদ,বর্ষণ মুখ টিপে হাসতে লাগলো। রোদ ইচ্ছে করে মাইশার পাশ ঘেঁষে যাওয়ার সময় হালকা ধাক্কা দিলো। এতে ঘটে গেলো আরেক বিপত্তি। মাইশার হাতের চায়ের কাপ থেকে চা ছিটকে হৃদয়ের প্যান্টের ওপর পরে গেলো। মাইশা ভয়ে চোখ দুটো গোল হয়ে গেলো। ভয়ার্ত কন্ঠে থতমত খেয়ে বললো,

— সসসরি!

হৃদয় স্বাভাবিক ভঙ্গিতে দাড়িয়ে শান্ত গলায় বললো,
— ঠিক আছে কোন সমস্যা নেই।

মাইশা ভয়ে সেখান থেকে দৌড় দিলো। বাকি তিনজন হৃদয়ের দিকে বিস্মিত চোখে তাকিয়ে রইলো। তাদের বিশ্বাস হচ্ছে না এটা হৃদয়। আকাশ তো মুখ ফসকে বলেই ফেললো,

— তুই আসলেই হৃদয়?

বর্ষণ মুখ হা করে মাথা নাড়িয়ে বললো,
— আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। যে হৃদয় মেয়েদের থেকে এতো দূরে থাকতো। এতখনে অন্য কেউ হলে তার কলার ধরে মুখে ঘুষি মারতো।আর সে কিনা স্বাভাবিক রয়েছে এখনো।

রোদ হাই তুলতে তুলতে বললো,
— আরে ভাই তোরা এখনো কিছু বুঝিসনি। আমি তো সেই কবেই বুঝে গেছি। আমাদের হৃদয়ের মাইশাকে দেখলে কুচ কুচ হোতা হে।

হৃদয় লাজুক হাসি দিয়ে মাথা নিচু করে ফেললো। এতো ওরা তিনজন একসাথে চিৎকার করে উঠলো। তখুনি চৈতীর আগমন। দৌড়ে এসে আকাশের হাত জড়িয়ে ধরে পাশে বসে পরলো। খুশিতে গদগদকন্ঠে বললো,

— আকাশ আমি এসে পরেছি। তুমি আমায় ভালোবাসো না বলো? আমি তো তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি। এই বলো না?দেখো তোমার জন্য সেজেছি আমি। আমার দিকে তাকাও।

আকাশ প্রথমে বিরক্তিতে কপাল কুচকালেও চৈতীর দিকে তাকিয়ে চোখ দুটোতে মুগ্ধতা ছেয়ে গেলো। মেয়েটা তাকে নিয়ে অনেক পাগলামি করে। অনেক ভালোওবাসে। কিন্তু আকাশ তাকে নিয়ে ততটা ভাবেনি কখনও।তবে আজ মেয়েটার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবলো অনেক ভুল করেছে এতদিন এই মেয়েকে ভালো না বেসে।সত্যি অনেক ভুল করেছে। নাহ্ এখন একে ভালোবাসতেই হবে। মুচকি হেসে বললো,

— খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে।

চৈতী খুশিতে লাফিয়ে উঠলো। আকাশ ওর প্রশংসা করেছে। এর থেকে বেশি খুশির কি হতে পারে! আকাশ ওর দিকে নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। ইস, এমন পাগলী মেয়েটাকে সে কি করে দূরে সরিয়ে রেখেছিলো?তার জন্য বড্ড বেশি আফসোস হচ্ছে। কিন্তু বেশি আফসোস করা হলো না। তার আগেই মেঘ বেশ গুরুগম্ভীর ভাবে নিয়ে সবার মাঝে হাজির হলো। সবার দিকে একবার তাকিয়ে বললো,

— তৈরি হো সবাই।

বর্ষণ সামনের চুলগুলো পেছন দিকে হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
— কোথায় যাচ্ছি?

মেঘ বললো,
— সুইজারল্যান্ড।

রোদ খুশি হয়ে বললো,
— ঘুরতে ভাই😍?

মেঘ মুচকি হেসে বললো,
— না, নতুন মিশনের জন্য।

হৃদয় ভ্রু জোড়া ঈষৎ কুঁচকে বললো,
— কেস কি?

মেঘ সামনের সোফায় আরাম করে বসে বললো,
— AKR কোম্পানির ওনারের ছেলে সুইজারল্যান্ড ঘুরতে গিয়ে গায়েব হয়ে গেছে। তাকে খুঁজে আনার দায়িত্ব আমাদের ওপর পরেছে।

🔥🔥🔥

এয়ারপোর্টের দাড়িয়ে আছে পাঁচজন। একদম নায়কের সাজে সজ্জিত সবাই। উদ্দেশ্য এখন সুইজারল্যান্ড। ল্যাগেজ নিয়ে একেকজন স্টাইল মেরে দাঁড়িয়ে আছে। ভাব-সাবের একটা ব্যাপার আছে তো। হৃদয় তো বাসা থেকে আসতেই চাচ্ছিলো না। আসলে মাইশাকে ছেড়ে তার আসতে ইচ্ছে করছিলো না। রোদ, হৃদয়ের পিঠে জোরে চাপর মেরে বললো,

— চিন্তা করিস না ভাই। এই মিশনটা কমপ্লিট করে আসি। তারপর তোর আর মাইশার বিয়ের ব্যবস্থা করবো।

হৃদয় একবার চোখ পাকিয়ে তাকালো। তবে মনে মনে সে খুশি। মাইশাকে সে আসলেই অনেক মিস করছে।মেঘ রোদের পাশে দাঁড়িয়ে বললো,

— অন্যের বিয়ের ঘটকালি করেছিস। তোর বিয়ের কি হবে?

রোদ বিষয়টা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করলো,
— আমার বিয়ে মানে?

মেঘ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,
— হইছে আর ভান ধরতে হবে না। তুই যে পাপড়ি নামের এক মেয়ের প্রেমে পরেছিস সে খবর কিন্তু আমি জানি।

রোদ চোখ দুটো রসগোল্লা বানিয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে রইলো। সে তো পাপড়ির খবর কাউকে দেয়নি। আকাশ পাশে দাড়িয়ে মাথা চুলকে বোকার মতো প্রশ্ন করে বসলো,

— আমার এখন চৈতীকে এতো ভালো লাগে কেন রে? আগে তো ওকে সহ্য করতে পারতাম না।

বর্ষণ মুখ টিপে হেসে বললো,
— এতদিন যে চোখের সামনে থাকা পিউর গোল্ডের জিনিস রেখে সিটি গোল্ডের জিনিস দেখেছিস তাই।

আকাশ বললো,
— হতে পারে ভাই।

বর্ষণ চার জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললো,
— আমিও একটা মেয়েকে পছন্দ করি। বিয়ে করলে তাকেই করবো।

হৃদয় হাই তুলে অলস ভঙ্গিতে বললো,
— হুম জানি সানিয়া তার নাম। রোদের পছন্দের মেয়ে পাপড়ির কাজিন।

বর্ষণ এতে কোন রিয়েক্ট করলো না। কারণ ওরা পাঁচ বন্ধু একে অপরের খবর রাখে। মেঘ ওদের কথা শুনে মুখ ফসকে আনমনে বলে ফেললো,

— আমার কিন্তু ফাইজাকে পছন্দ হয়েছে।

মেঘের কথা শুনে সবাই একসাথে আস্তে করে”ওহো” বলে চেচিয়ে উঠলো। এয়ারপোর্টে না থাকলে শিস বাজিয়ে টেবিল থাপড়ানো শুরু করে দিতো। মেঘ জিহ্বায় কামড় দিয়ে উল্টোদিকে ঘুরে গেলো। সে এখন এই কথাটা বলতে চায়নি। অবশ্য ও না বললেও বাকিরা খবর পেয়ে যেতো। হৃদয় একগালে হেসে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললো,

— বুঝেছি, সবাই ডুবে ডুবে জল খাচ্ছে। তাই এবারের মিশন কমপ্লিট হলে পাঁচ বন্ধু একসাথে নিজেদের পছন্দের মানুষকে বিয়ে করবো।

পাঁচ বন্ধু তাতে একমত পোষণ করলো। খুশিতে মনটা তাদের নেচে উঠছে। তবে আপতত এসব সাইডে ফেলে যেই কাজের উদ্দেশ্য যাচ্ছে তা সঠিকভাবে কমপ্লিট করতে হবে। তাই সিরিয়াস মুডে সামনের দিকে এগুলো। এনাউন্সমেন্ট হতেই তারা বিমানে উঠে গেলো।IS গ্যাং-এর গন্তব্য এখন সুইজারল্যান্ড।

~~~~একটা ভালো বই, বন্ধুর সমান। আর একটা ভালো বন্ধু লাইব্রেরীর সমান। তাই বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক হোন।

~~~~~~~~~~~~#সমাপ্ত~~~~~~~~~~~~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে