গল্প:-লাভ_স্টোরি_Session_2পর্ব:-(১০শেষ)

0
1411

গল্প:-লাভ_স্টোরি_Session_2পর্ব:-(১০শেষ)
লেখা_AL_Mohammad_Sourav
!!
গাড়ীটা চালাচ্ছি আনমনা হয়ে বার বার তসিবার কথা গুলো খুব মনে পড়ছে। তসিবার চেহারাটা চোখের সামনে বেসে ওঠছে। যাক তসিবা অনেক ভালো থাকুক এইটা চাই। বাড়ীতে আসতে আসতে রাত হয়ে গেছে। আমি বাসার ভীতরে ঢুকছি তখনি,,,
আপু: ভাই তুই একা তসিবা কোথায়?
আমি: আগে ভীতরে আসতে দিবি নাকি? মনে হচ্ছে তসিবা তোদের কাছে সব। আমি এই বাড়ীর কেও নয়?

আপু: এমন ভাবে বলছিস কেনো? তুই তো আমাদের সব তসিবাকে দেখছি না তাই জিগেস করছি।
আমি: তসিবা আরো কয়দিন থাকবে ওদের বাড়ীতে। ওর ভাবির কই দিন পড়ে ডেলিবারি হবে। তাই তসিবা বলছে কই দিন থাকবে।
আপু: তাহলে তুই আরো কই দিন থেকে আসতি। তসিবা একা একা থাকতে পারবে বলে আমার মনে হয়না।

আমি: আমার ভালো লাগেনা তাই চলে আসছি। আমি এখন রুমে যায় আমার ক্লান্ত লাগছে। আমি রুমে চলে আসলাম এসে ফ্রেশহয়ে মোবাইল টা হাতে নিলাম। ভাবসি তসিবার আম্মুর কাছে একটা কল করে তসিবার খবরটা নেই। না কল করা যাবেনা তসিবা যদি কিছু মনে করে। দুর কিছু ভালো লাগছেনা একটা কল করে দেখি। আমি কল করলাম তিনবার রিং হওয়ার পর কলটা রিসিব করছে। আমি আওয়াজ শুনে বুঝতে পারছি এইটা তসিবা।

তসিবা: কি হয়ছে কল করছেন কেনো?
আমি: তুমি রিসিব করেছো? যাক ভালো হয়ছে বলো তুমি কেমন আছো?
তসিবা: আমি যেমনি থাকিনা কেনো। দয়া করে আপনি আর কোনো দিন কল না করলে খুশি হবো।
আমি: ঠিক আছে ভালো থেকো বাই,,বলে কলটা কেটে দিলাম। মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেলো,, তসিবা এমন কথাটা বলতে পারলো? দুর তসিবার কথা ভেবে আমি কি করবো। তসিবা তো আমাকে এখন আর লাভ করেনা। খাঠের উপড় শুয়ে পড়লাম তসিবার কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেছি ঠিক মনে নেই। সকালে ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেশহয়ে নাস্তা না,, করে সোজা অফিসে চলে গেলাম। কয়েক দিনের কাজ গুলো চেক করছি তখনি,, মনে পড়ে গেলো তসিবা যে বলছে ওর ডির্ভোস পেপারটা পাটিয়ে দিতে। উকিলের কাছে কল করে একটা ডির্ভোস এপ্লিকেশন করতে বলে দিয়েছি। বলছে এক সাপ্তাহের মধ্যে পেয়ে যাবো ডির্ভোসের পেপার। না তসিবাকে আমি ডির্ভোস দেবোনা ও নিজে আমাকে দেক তাই উকিল কে কল করে না করে দিয়েছি। দুপুরের আজ কিছু খেলাম না,, প্রিয়ার সাথে এখন আর আগের মত কথা হয়না। এভাবে তিন দিন চলে গেলো তসিবার কথা এখন একটু কম মনে পড়ে তবে রুমে আসলে তসিবার স্মৃতি গুলো খোব যন্ত্রনা দেই। আজ সকালে অফিস যেতেছি তখনি,,,

আব্বু: সৌরভ তোর মোবাইলটা কি বন্ধ করে রাখছিলি?
আমি: হ্যা,, একটু বন্ধ ছিলো। অফিসে একটা মেটিংয়ে ছিলাম তাই। কেনো ফোন করে ছিলেন?
আব্বু: হ্যা,,, তবে তোর নাম্বার তো কোনো দিন বন্ধ থাকে না। তাই জিগেসা করলাম। তসিবার সাথে কথা হয় তোর প্রতিদিন?
আমি: হ্যা কথা হয় এখন আমি অফিসে যাই। বলে বাসা থেকে বেড়িয়ে আসলাম। আজ বাইক নিয়ে অফিসে যাবো রাতে রাস্তায় অনেক জ্যাম থাকে তাই। আমি বাইক চালাচ্ছি রাস্তায় প্রিয়ার সাথে দেখা। বাইক থামিয়ে প্রিয়াকে পেছনে বসালাম।
প্রিয়া: সৌরভ তোমার সাথে আসার কিছু কথা আছে। তোমার সময় হবে একটু আমার কথা গুলো শোনার জন্য?
আমি: হ্যা হবে। চলো আজ সারাদিন তোমাকে দিলাম।
প্রিয়া: সত্যি তুমি আজ সারাদিন আমার সাথে থাকবে? তাহলে চলো আমরা কোথাও থেকে ঘুরে আসি?

আমি: না কোথাও যাওয়া যাবেনা। তবে কোনো রেস্টুরেন্ট আজ দুপুরে আমারা এক সাথে লাঞ্চ করবো।
প্রিয়া: ঠিক আছে চলো আমরা একটু এই পার্কে বসি।
আমি: ঠিক আছে চলো। প্রিয়া আর আমি দুজনে পার্কে অনেক্ষন বসলাম। প্রিয়াকে তসিবার সব কথা খোলে বললাম। সব কথা শোনে প্রিয়া অনেক খুশি হয়ছে।তারপর দুজনে বসে অনেক গল্প করলাম। প্রিয়া চলো এখন ওঠা যাক।
প্রিয়া: হ্যা,, চলো তবে আজ আমার পছন্দের একটা রেস্টুরেন্ট খেতে যাবো আমরা।
আমি: ঠিক আছে চলো। আমি বাইক চালাচ্ছি প্রিয়া পেছনে বসে আছে। তখনি,,,
প্রিয়া: সৌরভ বাইক থামাও আমরা আজ এই রেস্টুরেন্ট লাঞ্চ করবো।

আমি: হ্যা চলো,, প্রিয়া আর আমি ভীতরে ঢুকলাম। আরে এইটা তো ঐ রেস্টুরেন্ট তসিবাকে নিয়ে আসছিলাম যে। তসিবার কান্ড গুলো মনে পড়ে গেলো আমার,, আর একটু ভালো লাগছেনা। প্রিয়া চলো অন্য কোনো রেস্টুরেন্ট লাঞ্চ করবো।
প্রিয়া: আমি বুঝতে পারছি সৌরভ তুমি কি ভাবছো। সত্যি কথা বলতে তুমি সেই দিন আমার কাছ থেকে দুরে চলে গেছো। যেইদিন তুমি বিয়ে করেছো,, তুমি তসিবাকে ভালোবেসে ফেলছো। আমি আজ সারা দিন তোমার সাথে আছি কিন্ত তুমি প্রতিটা কথাই তসিবাকে নিয়ে বলো। সৌরভ তুমি তসিবাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসো,, তুমি ওর সামনে দাড়ালে তোমাকে তসিবা ফিরিয়ে দিবেনা। বলে প্রিয়া রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে চলে গেলো। আমি রাতে বাসায় আসছি দেখি আব্বু আম্মু সবাই নিছে বসে আছে।

আম্মু: সৌরভ তুই আজ অফিসে যাসনি। তাহলে সারা দিন কোথায় ছিলি?
আমি: একটা কাজ ছিলো,, বলে রুমে চলে আসলাম। ফ্রেশহয়ে তসিবার আম্মুর মোবাইলে কল করলাম। রিং হচ্ছে কিন্ত কেও রিসিব করছেনা। দুই তিনবার দিলাম রিসিব হয়নি,, আর ট্রাই করলাম না। রাতে একটা কাগজে লিখলাম,,,( আব্বু আমি বাড়ী ছেরে চলে যাচ্ছি,, তসিবা আর কোনো দিন এই বাড়ীতে আসবেনা। তসিবাকে আমি অনেক অপমান করছি এই কই দিনে। এই জন্য হয়তো তসিবা আর আসবেনা। আমার জন্য দোয়া করবেন আর আম্মু আপুকে দেখে রাখবেন। আমাকে খুজার চেষ্টা করবেননা। আমি একটু একা কোথাও থেকে ঘুরে আসি) লিখে খাঠের উপড় মোবাইল আর কাগজটা রেখে কিছু টাকা আর ব্যাগটা নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম। রাতের বাসে কক্সবাজার চলে আসলাম এসে সারা কক্সবাজার দেখলাম। এভাবে অনেক যায়গায় ঘুরলাম অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হলো। আজ তিন মাস ধরে বাড়ীর কোনো খবর নেই আমার কাছে। তাই আজ আবার ঢাকা ফিরে আসলাম,, ট্রেনে করে আসছি কমলাপুর এসে নামলাম। আমি বের হয়ে রিক্সায় ওঠবো। তখনি,, রানাকে দেখতে পেলাম সাথে একটা বোকরা পরা মহিলা আছে। তারমানে তসিবা আর রানা দুজন দুজনকে বিয়ে করে নিছে। যাক ভালো হয়ছে আমি রিক্সায় ওঠে বললাম যেতে। তখনি,, রানা এসে আমার হাত ধরে ফেলছে।

রানা: সৌরভ কেমন আছো?
আমি: ভালো আছি। তোমরা কেমন আছো?
রানা: হ্যা ভালো আছি। তসিবা কেমন আছে?
আমি: মানে,, তসিবার খবর তো তুমি জানো। আমি কি করে বলবো?
রানা: কি বলো তুমি? তসিবা তো আমার কাছে নেই।
আমি: তাহলে তসিবা কোথায়, আর এই মহিলা কে?
রানা: ও আমার বউ সান্তা। তুমি চলে আসার কিছুদিন পর আমি তসিবাকে বিয়ে করতে বলি। কিন্ত তসিবা রাজি হয়নি,, তসিবা বলছে সে তোমার জন্য সারা জীবন এভাবে একা একা কাটিয়ে দেবে।

আমি: তসিবাকে কল করছি কিন্ত সে রিসিব করেনি। কিন্ত তসিবা এখন কোথায় আছে তুমি জানো?
রানা: সঠিক জানিনা,, তবে বাড়ীতে হবে।
আমি: আচ্ছা ধন্যবাদ তোমাকে। আমি তারা তারি করে বাসায় আসলাম এসে দরজায় নক করলাম। একটু পর দরজাটা আপু খুলে দিয়েছে। আপু আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিয়েছে। তারপর আব্বু আম্মু দুলাভাই এসেছে সবাই আমাকে দেখে অনেক খুশি হয়ছে। একটু পর আমার রুমে গেলাম দেখি দরজা ভীতর দিয়ে লক করা। আমি টুকা দিতেই দরজাটা এসে খোলে দিলো। আমি ভীতরে ঢুকতেই কেও একজন আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলো। আমি গায়ের গন্ধ শুকে বুঝতে পারলাম এইটা তসিবা। আমিও জড়িয়ে ধরলাম দুজন দুজনকে জড়িয়ে কথা বলছি। তুমি এখানে কি করছো?

তসিবা: কোথায় থাকবো শোনি? আর আপনি কোথায় গেছিলেন? জানেন আপনি যেইদিন অনেক গুলো কল করছেন। কিন্ত রিসিব হয়নি তখন আমি রানার সাথে কথা বলছিলাম। রানা আমাকে সব বলে দিয়েছে যে আপনি কেনো আমার জীবন থেকে সরে যেতে চাইছেন। তারপর আমি কত বার ট্রাই করছি আপনার নাম্বারে কিন্ত বন্ধ বলছে তখন আমার বুকের ভীতরটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছিলো। তারপর বাসার নাম্বারে কল করে জানতে পারি আপনি একটা কাগজে লিখে মোবাইল রেখে বাড়ী ছেরে চলে গেছেন। তারপর সকালে আমি ঢাকা চলে আসি আর আব্বুকে সবকিছু খুলে বলি।এরপর আমি আপনাকে অনেক যায়গায় খুজ করছি এমনকি প্রিয়ার সাথে কথা বলছি কিন্ত কেও আপনার কোনো খুজ দিতে পারেনি।

আমি: স্যরি আর এমনটা হবেনা। এবারের মত ক্ষমা করা যায়না।
তসিবা: আপনি কেনো ক্ষমা চাইবেন? আমি দোষ করেছি আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।
আমি: তুমি কোনো দোষ করোনি সব দোষ তো আমার। এবার একটু ছারবে আমাকে?

তসিবা: না ছারবোনা, আপনি না চাইলে আমি আপনাকে জড়িয়ে ধরবো,, অফিসে টিফিন নিয়ে যাবো,, আপনার ট্রাইটা বেদে দেবো,, আর রাতে খাঠের উপড় আপনার বুকের উপড় মাথা রেখে ঘুমাবো।
আমি: তা আর বলতে হবেনা। আমি অফিসে গেলে তোমাকে ঘন্টা ঘন্টা ফোন করবো।তখনি সবাই এসে রুমে হাজির।
আব্বু: হয়ছে অনেক ঝগড়া এবার আমাকে একটু সান্তি দাও। নাও ধরো এই দুইটা টিকেট আগামি সাপ্তাহ তোদের হানিমুনে সিংঙ্গাপুর যাবি। আর আসার সময় আমার জন্য একটা গিফট নিয়ে ফিরবি।
আমি: একটা কেনো? অনেক গুলো নিয়ে আসবো।
আপু: বোকা এইটা এই গিফট নয়?
আমি: তাহলে কি গিফট?
আপু: তসিবা তুমি এই বোকাটাকে কিছু শিখাওনি? তখনি,,, লজ্জাই আমার বুকের মাঝে মুখ লুকিয়ে নিছে তসিবি।

আমি: ঠিক আছে নিয়ে আসবো। একটা পুতুল নিয়ে আসবো সবাই এক সাথে হেসে উঠলো। তারপর সবাই চলে গেলো।
তসিবা: শোনেন আজকের পর থেকে আপনি আর কোনো মেয়ের দিকে তাকাবেন না। আমার অনেক কষ্ট হয়।
আমি: ওকে তাকাবোনা। বলে তসিবাকে টান মেরে আবার বুকের মাঝে নিয়ে আসলাম। তসিবা আমাকে আপন করে নিয়েছে। এখন তসিবা আগের চাইতে একটু বেশি দুষ্টামি করে আমার এখন তসিবার দুষ্টমি গুলো খোব ভালো লাগে। এভাবে প্রতিটা দিন আমাদের মিষ্টি ঝগড়া আর দুষ্ট ভালোবাসা দিয়ে জীবন চলে যাচ্ছে।

গল্পটা কেমন হয়ছে তা কিন্তু জানাবেন সবাই। আজ রাত আটটা নতুন গল্প সবাই রেডি থাকবেন!
………………………………সমাপ্তি……………………………….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে