গল্প:- বিয়ের_বন্ধন_session_২ পর্ব:-(০১)

0
1814

গল্প:- বিয়ের_বন্ধন_session_২ পর্ব:-(০১)
লেখা_AL_Mohammad _Sourav

বিয়েটা ভালোই ভালোই হয়েছে আমি অনেক খুশি, কারন তসিবার সাথে আমার বিয়েটা হয়েছে। মনের মাঝে অনেক সূখ নিয়ে বাসর ঘরে ঢুকেছি, দেখি তসিবা ঘোমটা দিয়ে দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে মোনাজাত ধরে রাখছে। আমি গিয়ে পাশে বসেছি প্রায় ১০ মিনিট ধরে বসে আছি, কিন্তু তসিবার মোনাজাত শেষ হচ্ছেনা মনে হচ্ছে আল্লাহর কাছে একটু বেশি কিছু চাচ্ছে। আমি বসা থেকে উঠে যাবো তখনি আমিন কথাটা শুনতে পেলাম কিছুটা নিজেকে স্থির করে নিয়ে আবার তসিবার সামনে বসেছি। আমি ঘোমটা ওঠাবো তখনি তসিবা বলে,,,

তসিবা:- আমাকে বিয়ে করেছেন কেনো? (তসিবার এমন প্রশ্ন শুনে আর ঘোমটা আর ওঠালামনা তবে আমি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে লাগলাম। তখন আবার বলে,,,) কি হলো বলেন কেনো আমাকে বিয়ে করেছেন? (এবার নিরবতা ভেঙ্গে উত্তর দিলাম,,,

আমি:- উত্তরটা একটু পরে দেয় তার আগে কিছু কথা বলি কেমন?

তসিবা:- হ্যা বলেন কি কথা বলতে চান।

আমি:- এতক্ষণ মোনাজাত ধরে আল্লাহর কাছে কি চেয়েছেন শুনতে পারিকি?

তসিবা:- দরকার নেই শুনার! তবে আমি আল্লাহর কাছে চেয়েছি তা তো পূরুন হবেই। এখন বলেন আমাকে কেনো বিয়ে করেছেন আর আমাকে কি ভালোবাসেন।

আমি:- যদি বলি আপনাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি তাহলে সবটা ভুল হবে কারন আমাদের বিয়েটা হয়ছে পরিবারের মাধ্যমে। সবাই আমার জন্য আপনাকে ভালো মনে করছে, আর আমিও চিন্তা ভাবনা করে দেখলাম আপনি ভালোই হবেন তাই বিয়েটা করা। হয়ত কিছুটা সময় লাগবে আমাদের দুজন দুজনকে বুঝতে তবে আমাদের দুজনের মধ্যে বিশ্বাস রাখতে হবে।

তসিবা:- কিন্তু আমি আপনাকে এত সহজে বিশ্বাস করতে পারবোনা।

আমি:- কিন্তু কেনো?

তসিবা:- আজকের আগে আপনার সাথে আমার আর কোথাও কোনো সময় দেখা হয়ছে?

আমি:- না!

তসিবা:- আপনি আমার এলাকার বা পাড়া প্রতিবেশির কেও হোন?

আমি:- তাও না!

তসিবা:- আপনি আমার স্কুল, কলেজের বা ফেসবুকের কোন ফ্রেন্ডলীষ্টে আছেন?

আমি:- কোনো টাতে নাই!

তসিবা:- তাহলে আমি আপনাকে কি করে বিশ্বাস করবো বলেন?

আমি:- তাহলে এখন আমাকে কি করতে হবে আপনার বিশ্বাসের জন্য?

তসিবা:- আপনার কিছু করতে হবেনা। আজ থেকে আপনি আপনার মত আর আমি আমার মত করে থাকবো। আমাদের এই বিয়ের বন্ধনটা শুধু ঘরের বাহিরে থাকবে ঘরের মধ্যে আপনি আলাদা যায়গাতে আর আমি আলাদা যায়গাতে থাকবো। আমার যদি আপনার প্রতি বিশ্বাস চলে আসে, মানে আমি যদি আপনার হাতে আমার প্রানটা তুলে দেওয়ার মত বিশ্বাস করি তাহলে আপনাকে আমি আমার স্বামী হিসাবে মেনে নিবো আর আপনার সাথে সংসার করবো।

আমি:- আপনি কি নাটক মুভি এসব একটু বেশি দেখেন তাইনা?

তসিবা:- আপনি কি বলতে চাচ্ছেন তা আমি বুঝতে পারছি তবে উত্তরটা আমার কাছে আছে কিন্তু এখন দিতেছিনা সময় হলে দিয়ে দিবো।

আমি:- আচ্ছা তা সময়টা কবে হবে শুনি?

তসিবা:- যখন হবে তখন তো প্রশ্নের উত্তর শুনতে পাবেন, আর শুনেন আমার উপর কোনো জোর জবস্থি চলবেনা, কোনো রকম হুকম জারি চলবেনা, আমার যেই কাজটা ভালো লাগবেনা সেইটা আমাকে করতে বলবেন না।

আমি:- এই কথা গুলি বিয়ের আগে আমাকে জানালে পারতেন তাহলে আপনাকে বিয়ে তো দূরের কথা আপনার দ্বাড়ে কাছে দিয়ে হাট চলা করতামনা।

তসিবা:- বিয়ের আগে আপনি আমাকে জিজ্ঞেস করছেন কখনো?

আমি:- সময়টা পেয়েছি কখন আজকে তো দেখতে গেছিলাম আর আজকে আমার ঘারে আপনার মত একটা পেত্নি জুটাই দিয়েছে।

তসিবা:- কি আমি পেত্নি? আমার বান্ধবী নিলু আমাকে ঠিক বলছে বাসর ঘরের কথাটা একদম সত্যি হয়েছে।

আমি:- আপনার বান্ধবী বাসর ঘর সম্পর্কে কি বলছে?

তসিবা:- আপনাকে বলতে যাবো কেনো? আর শুনেন আপনাকে না আমার বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে ছিলনা কিন্তু মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বিয়েটা করেছি।

আমি:- আপনার মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে নয় বরং আমার মত একটা স্মার্ট ছেলে আর চাকরিজীবী দেখে বিয়েটা করেছেন। মনে হয় প্রেম করে ছেকা খেয়েছেন এখন বাসর ঘরে আমার সাথে জ্বাল মিঠাচ্ছেন। দেখি অনেক হয়েছে বাহানা আমাকে আপনার বিশ্বাস করতে হবেনা আজকে বাসর রাত আর এই রাতে প্রতিটা নতুন স্বামী স্ত্রী যা যা করে আমরাও তাই করবো আসেন কাছে আসেন বলে তসিবার হাতটা ধরেছি তখনি তসিবা হাতটা এক টানে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,,,

তসিবা:- খবরদার যদি আপনি আমার অনুমতি ছাড়া আমার শরীরে কোনো দিন স্পর্শ করেন তাহলে আমি ঘেচাং করে দিবো। আর আপনি কোনো দিন বাবা হতে পারবেন না।

আমি:- কি ঘেচাং করে দিবেন? তখনি কথাটা আমি বুঝতে পারছি। ছিঃ আপনি এত খারাপ মনের অধিকারী আমার ভাবতেও ঘৃনা করছে আপনার সাথে আমার বিয়ে হয়ছে। আপনাকে আমি ভুল করেও কোনো দিন স্পর্শ করবোনা, অনেক হয়ছে আপনার সাথে সংসার করার ইচ্ছেটাই আমার নষ্ট হয়ে গেছে যান আপনার যা খুশি তা করেন কিছুই বলবোনা আপনাকে।

তসিবা:- হ্যা আমি খারাপ আমার সাথে কেনো সংসার করবেন? আমি জানি কেনো আমাকে বিয়ে করেছেন?

আমি:- কেনো বিয়ে করেছি?

তসিবা:- আমি অনেক সুন্দর দেখতে আর আমার কোনো ভাই বোন নেই আমার বাবার যত সম্পত্তি আছে সব কিছু তো আমার নামে তাই বিয়ে করেছেন।

আমি:- আপনি এতটা অহংকারী তোমার সাথে কথা বলাই বৃথা দেখি সরো আমি তোমার মুখ দেখতে চায়না আমি এখন ঘুমাবো।

তসিবা:- ঘুমাবেন মানে?

আমি:- (তখনি কিছুটা ভাব নিয়ে বলছি,,,) তো কি করবো? (আর তখন তসিবা এমন কথা বলছে শুনে আমি বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেছি)

তসিবা:- আমার অনেক খিদা লাগছে যান আমার জন্য খাবার নিয়ে আসেন।

আমি:- মানে এখন কোথায় থেকে খাবার নিয়ে আসবো রাত বাজে ২টা সবাই ঘুমায় গেছে আমি পারবোনা আপনি নিজে গিয়ে খাবার নিয়ে আসেন?

তসিবা:- আপনার মাথা ঠিক আছে তো নতুন বউ হয়ে বাড়ীতে এসেছি ভালো করে সিঁড়িটা চিনা হলোনা আর আমি গিয়ে খাবার নিয়ে আসবো কি করে?

আমি:- তাহলে আমি কোথা থেকে খাবার আনবো আর তাছাড়া আমাকে যদি কেও এত রাতে খাবার ঘরে দেখে তাহলে সবাই সকালে আমাকে নিয়ে মজা করবে।

তসিবা:- আমার অনেক খিদা লাগছে আর আমি বেশি খিদা সহ্য করতে পারিনা প্লিজ কিছু একটা ব্যাবস্থা করেন।

আমি:- প্রথম দিনে আপনি আমাকে যা খেলা দেখাচ্ছেন মনে হচ্ছে বাকী জীবনটা তেজপাতা ছাড়া কিছুই পাবোনা। ঠিক আছে আপনি একটু অপেক্ষা করেন আমি খাবার নিয়ে আসতেছি! তসিবাকে রেখে দরজাটা খুলে বাহিরে গেছি সব লাইট বন্ধ করা আমি মোবাইলের আলো জ্বেলে খাবার ঘরে গিয়ে তসিবার জন্য খাবার নিলাম। তারা তারি করে রুমের দিকে চলে আসছি যখনি রুমে ঢুকবো তখনি ভীতর থেকে কিছু কথা শুনতে পাচ্ছি,,,

আরে জানু তুমি কোনে চিন্তা করোনা দেখো আমি এই বোকাটাকে কি করে সায়েস্তা করি। আমাকে এখন পর্যন্ত ভালো করে দেখতে পারেনি আর স্পর্শ করা তো দূরের কথা। তুমি নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে থাকো আগামী কাল কলেজে আমাদের দেখা হবে কেমন। তখনি আমি খাবার প্লেট হাতে রুমে ঢুকেছি আর তসিবা আমাকে দেখে তুতলাতে তুতলাতে বলে,,,

তসিবা:- খাবার পেয়েছেন দেন আমার অনেক খিদা লাগছে। (তসিবাকে কিছু না বলে আমি ওকে প্লেট এগিয়ে দিলাম।) বারে প্লেট দিতেছেন কেনো আমাকে খাওয়াই দেন।

আমি:- কেনো আপনার সাথে কি আপনার হাত নেই?

তসিবা:- আছে কিন্তু এই গহনা ঘাটি খুলতে আর এখন উয়াশ রুমে যেতে পারবোনা প্লিজ খাওয়েন দেন।

আমি:- ঠিক আছে তাহলে ঘোমটা উঠান তখনি তসিবা ওর ঘোমটা উঠিয়েছে বাহ তসিবাকে বউ সাজে একটু বেশি সুন্দর লাগছে। আমি তসিবাকে খাইয়ে দিতে লাগলাম তসিবা খেতেছে পানি খাইয়ে আমি উয়াশ রুমে গেছি হাত দুইতে এসে দেখি তসিবা ঘুমে ভিবোর হয়ে আছে। আমি তসিবার কপালে ছোট করে কিস করে ওর পাশে শুয়ে পড়েছি। আরে আমি তো আমার পরিচয়টা দিলামনা ছোট করে পরিচয়টা দিয়ে দেয় কেমন। আমি আল মোহাম্মদ সৌরভ একটা কম্পানিতে চাকরি করি আব্বু, আম্মু, বড় ভাই তবে ভাইয়া তার বউ নিয়ে অন্য কোথাও থাকে আর আপুর বিয়ে হয়ছে। এখন ঘুমায় বাকী কথা আগামী কাল সকালে হবে।

সকালে ঘুম থেকে উঠেছি আজান শুনে ফজরের নামায পড়তে চলে গেলাম। নামায পড়ে এসে দেখি তসিবা শুয়ে আছে তবে ওর শাড়ীটা সরে গেছে আমি চাদরটা টেনে ওর উপর দিতে ছিলাম তখনি মহা রানী লাফ মেরে বসে গেছে,,,

তসিবা:- কি করছিলেন আপনি?

আমি:- কিছুনা চাদরটা আপনার শরীরের উপর দিতে ছিলাম।

তসিবা:- আমার তো মনে হচ্ছে অন্য কিছু তবে নিজের চোখ গুলোকে হেফাজত করে রাখবেন আর শুনেন আমার থেকে সব সময় নিজেকে ১ হাত দূরে রাখবেন কেমন? (কথা গুলি বলে তখনি তসিবা খাঠের উপর থেকে তারাহুরা করে নামতে ছিলো আর টেবেশ করে নিছে পড়ে গেছে। আমি ইচ্ছা করলে ধরতে পারতাম কিন্তু ইচ্ছে করে ধরেনি।) তখনি তসিবা বলে আপনি দেখছেন আমি পড়ে যাচ্ছি তাও আমাকে ধরেননি কেনো?

আমি:- কারন আমার বাবা ডাক শুনার অনেক ইচ্ছা আছে তাই আপনাকে স্পর্শ করিনি। কথাটা বলে রুম থেকে বেড়িয়ে আসতেছি আর ঠিক তখনি তসিবা বলে,,,To be continue,,,
!!
গল্প:- বিয়ের_বন্ধন_session_২ পর্ব:-(০১)
লেখা_AL_Mohammad _Sourav

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে