গল্প:-দুলহানীয়া পর্ব:-(০৯)

0
997

গল্প:-দুলহানীয়া পর্ব:-(০৯)
লেখা:- AL Mohammad Sourav
!!
শুনেন এভাবে আপনি আমাকে যখন তখন কুলে উঠাবেন না? আপনি যেহেতু আমাকে ভালোবাসেন না সেহেতু আমার অনুমতি ছাড়া আমাকে স্পর্শ করাও ঠিক হয়না! তাও আপনি আমাকে কুলে তুলেন কোন অধিকারে? (আশফি)

আমি:- কেনো তুমি যখন আমাকে স্পর্শ করো তখন তো আমি কিছু বলিনা। তখন তুমি কোন অধিকারে আমাকে জড়িয়ে ধরো?

আশফি:- কারন আমি আপনাকে ভালোবাসি তাই আমার অধিকার আছে। আপনি যদি আমাকে ভালোবাসেন তাহলে স্পর্শ করতে পারেন। এবার বলেন আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন?

আমি:- নাহ আমি তোমাকে ভালোবাসি না! ঠিক আছে তোমাকে আমি স্পর্শ করবোনা। আর তুমিও আমাকে স্পর্শ করবে না! কথাটা মাথায় রেখে এরপর আমার সামনে আসবে মনে থাকে যেনো?

আশফি:- আমি তো আপনাকে স্পর্শ করবো কিন্তু আপনি করতে পারবেন না!

আমি:- করে দেখো তোমার কপালে শনির দশা লাগাবো। রাত অনেক হয়ছে এখন ঘুমাতে দাও।

আশফি:- আপনি ঘুমান আমি কি আপনার চোখ ধরে রাখছি নাকী?

আমি:- কানের কাছে কেনো গ্যান গ্যান করতেছো যাবে নাকী দুই চারটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিবো?

আশফি:- অনেক গুলি থাপ্পড় দিয়েছেন এমনিতেই আপনি আমাকে অনেক কষ্ট দিতেছেন? আমি কিন্তু আপনাকে এতটাও কষ্ট দেয়নি।

আমি:- তাহলে বুঝতে পারছো আমি তোমাকে সহ্য করতে পারিনা তাহলে চলে যাও।

আশফি:- আমি গেলে তো আপনার সুবিধা হবে! কাল সকালে আমাকে নিয়ে একটু ঘুরতে বের হবেন?

আমি:- নাহ পারবোনা আমার অফিসে কাজ আছে।

আশফি:- শুক্রবারে কাজ থাকে নাকী?

আমি:- হ্যা থাকে।

আশফি:- কাল অফিসে যেতে হবে না আপনি আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবেন!

আমি:- বলছি তো পারবোনা এখন আমাকে একটু ঘুমাতে দাও প্লিজ। আশফির দিকে তাকিয়ে দেখি চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে! মনে হচ্ছে আমাকে গিলে খাবে আমি চোখ বন্ধ করে শুয়ে পড়েছি আর কখন ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই। সকালে ঘুম ভাংগছে কারো ঘন নিশ্বাষে চোখ মেলে চেয়ে দেখি আশফি আমার বুকের উপে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। আমি ওর কপালে ছোট করে আদর করে দিয়েছি! আশফিকে দেখতে অনেকটা ছোট বাচ্ছা মেয়ের মত লাগছে আজকে মুড একদম ভালো হয়ে গেছে। ওকে সরিয়ে আমি উঠে ফ্রেশ হতে গেলাম। কিছুক্ষণ পর রুমে এসেছি দেখি আশফি কফি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। আমি দেখেও না দেখার মত করে ঘুরা ফেরা করতেছি।

আশফি:- কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে এত ভাব না দেখিয়ে খেয়ে নেন।

আমি:- খাবোনা তুমি নিয়ে যাও আমার এমনিতেই দেরিয়ে হয়ে গেছে।

আশফি:- কফিটা না খেলে আমি নিচে গিয়ে আম্মুকে বলবো আপনি আমাকে থাপ্পড় দিয়েছেন?

আমি:- মানে?

আশফি:- জ্বি যা শুনছেন তাই করবো এখন কফিটা খাবেন নাকী এই মগটা ভেংগে মায়ের কাছে যাবো।

আমি:- দাও কফিটা! আশফি অনেকটা আগ্রহের সাথে কফিটা দিয়েছে। একটু মুখে দিয়েছি বাহ দারুন তো কফিটা একদম মন ভরে গেছে।

আশফি:- কেমন হয়ছে কফিটা? তখনি আমি ওর দিকে কুলির মত করে ছুড়ে মারছি আর আশফির মুখে পড়েছে।

আমি:- ছিঃ এমন কফি কেও বানায় নাকী? একদম বাজে কফি ঠিক তোমার মত হয়ছে আশফি মনটা খারাপ করে কান্না করে চলে গেছে। আমি রেডি হয়ে নিচে গেছি দেখি আম্মা আব্বা সবাই মিটিং করতেছে। আম্মা আমি বের হচ্ছি।

আম্মা:- বের হচ্ছিস মানে আজকে তো তোর অফিস বন্ধ তাহলে এত সকালে কোথায় যাচ্ছিস?

আমি:- কাজ আছে!

আম্মা:- শুন আজকে আশফিকে নিয়ে একটু ঘুরে আয়।

আমি:- কাজ আছে আর আশফিকে বলেন নিজে গিয়ে ঘুরে আসতে। আমার সাথে যেতে হবে কেনো?

আব্বা:- শুন আলিফ গতকাল তকে দেখছি একটা মেয়েকে বাইকের পেছনে নিয়ে যেতেছিস। (আরে কাম তো সারছে)

আমি:- কখন দেখছেন? আমার পেছনে কোনো মেয়ে ছিলোনা।

ভাইয়া:- আলিফ মিথ্যা বলছিস কেনো?

আমি:- কি কি তুতলাতে তুতলাতে বলছি! মিথ্যা বলবো কেনো তখনি আশফি এসে বলে।

আশফি:- ভাইয়া আসলে গতকাল আমাকে কলেজে দিতে গেছিলো তখন হয়ত আমাকে দেখছেন আপনারা।

ভাইয়া:- ও তাই বলো।

ভাইয়া:- আলিফ তোর বউকে কলেজে নিয়ে গেছিস তো ভালো কথা এইটা লুকানোর কি আছে?

আব্বা:- ঠিক আছে এখন আশফিকে নিয়ে তুই ঘুরে আয়।

আশফি:- নাহ আব্বা এখন আমি যাবোনা আমার রেডি হতে দেরি হবে। আগামীকাল ঘুরতে যাবো আপনি আপনার কাজে চলে যান।

আমি:- ঠিক আছে! আমি যাই বলে বেড়িয়ে এসেছি। বাহিরে এসে স্নেহাকে ফোন করেছি স্নেহা ফোন রিসিব করছে।

স্নেহা:- কেমন আছেন?

আমি:- ভালো! আপনারা কি রেডি আছেন?

স্নেহা:- হ্যা রেডি আছি!

আমি:- থাকেন তাহলে আমি আসছি। বাইক নিয়ে স্নেহার বাসার সামনে গেলাম। ওর বাবা মা আর ছোট বোনকে নিয়ে রওনা দিলাম। আমি যেই ফ্লাট কিনেছি সেই ফ্লাটে ওদের নিয়ে গেলাম। মিস স্নেহা আজ থেকে আপনারা এই ফ্লাটে থাকবেন আর এই টাকা গুলি রাখেন আপনার আব্বাকে চিকিৎসা করাবেন।

স্নেহা:- আপনি কেনো এত কিছু করছেন?

আমি:- ঐ ভালো লাগে আর ভালোবাসা থেকে। আপনাকে যেই কাজ গুলি করতে বলছি আপনি সেই গুলি করবেন প্লিজ।

স্নেহা:- ঠিক আছে তাই করবো।

আমি:- তাহলে আজ থেকে শুরু করবেন কেমন।

স্নেহা:- কিন্তু একটা কথা কোনো মতে বুঝতে পারছিনা যাকে ছাড়া থাকতে পারবেন না তাহলে কেনো দূরে সরে দিতেছেন?

আমি:- দরকার আছে আপনাকে যা বলছি তাই করবেন? আর আপনি কিন্তু কথা দিয়েছেন সুতুরাং সেই কথা রাখার চেষ্টা করবেন। আমি গেলাম বিকালে রেডি থাকবেন কেমন?

স্নেহা:- ঠিক আছে!

আমি:- তাহলে এখন আসি কেমন? স্নেহার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসার দিকে এসেছি দুপুর গরিয়ে বিকাল হয়ে গেছে দেখি আশফি নিচে বসে আম্মার মাথায় তৈল দিতেছে। আমাকে দেখে আম্মা আশফিকে বলে।

আম্মা:- আশফি যাও আলিফ এসেছে দুজনে এক সাথে খেয়ে নাও।

আমি:- আমার খিদা নেই বলে উপরে চলে এসেছি। আশফি খানা নিয়ে আমার পিছু পিছু এসেছে।

আশফি:- খাবার টা খেয়ে নেন সকালে তো কিছু খাননি।

আমি:- তোমার বাকুয়াজ কফি খেয়ে মুখের সব সাদ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তুমি যাও তখনি আশফির দিকে তাকিয়ে দেখি ওর কপালে গালে ঠসার মত লাল লাল হয়ে আছে। আমার কাছ থেকে ঘুমটা দিয়ে লুকাতে চাচ্ছে।

আশফি:- আমি কিন্তু না খেয়ে আছি।

আমি:- তোমার চেহারা এই গুলি কি?

আশফি:- সকালে তো আপনার জন্য এই গুলি পড়েছে। মনে নেই কফি ছুড়ে মারছিলেন যে তখন তো ঠসা গুলি বেশি ছিলো এখন কমে গেছে।

আমি:- মেডিসিন দিয়েছিলে এগুলির মাঝে।

আশফি:- আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছিলেন? অবশ্য আমি মরে গেলেই আপনি অনেক খুশি হবেন। এখন দয়া করে খাবারটা খেয়ে নিয়েন আমি টেবিলে রেখে যাচ্ছি। (আশফি খাবার রেখে চলে যেতে ছিলো আমি পেছন থেকে ওর হাতটা ধরেছি) আমার হাত কোন অধিকারে ধরেছেন?

আমি:- যেই অধিকারে তুমি খাবার নিয়ে এসেছো সেই অধিকারে। বসো তুমিও খাবে আমার সাথে।

আশফি:- থাক আর আদর দেখাতে হবেনা আমাকে ছাড়ুন আমার কাজ আছে।

আমি:- তুমি খায়িয়ে দিলে আমি খাবো। তখনি আশফি আমার দিকে ভালোবাসার চোখে তাকিয়ে আছে। আমাদের দুজনের চোখ তো হাজারো রোমান্স করে নিতেছে চোখে চোখে। কিন্তু একজন একজনের কাছে যে অনেকটা দূরে।

আশফি:- বসেন তাহলে আমি খায়িয়ে দেয়। (আমি বসেছি আশফি খায়িয়ে দিতেছে)

আমি:- খাবার তো শেষ জটপট করে তুমি রেডি হয়ে নাও। তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো আর কিছু শপিং, ডাক্তার, রাতে ডিনার করে বাড়ী ফিরবো কেমন।

আশফি:- সত্যি যাবেন?

আমি:- হ্যা, চলো? (আশফি আজকে অনেক খুশি হয়েছে তাড়া তাড়ি রেডি হয়ে গেছে)

আশফি:- চলেন আমি রেডি আছি!

আমি:- হ্যা চলো! আশফিকে নিয়ে গাড়ী করে বের হলাম প্রথমে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম। আশফিকে ডাক্তার দেখে কিছু মলম জাতীয় মেডিসিন দিয়েছে।

ডাক্তার:- ঠিক হয়ে যাবে আর ১৫ দিন পর আবার এসে দেখিয়ে যাবেন কেমন।

আমি:- ঠিক আছে নিয়ে আসবো। আশফিকে নিয়ে বেড়িয়ে শপিং মহলে গেছি। ওকে কিছু শপিং করে দিয়েছি আশফি খুব হাসি খুশি লাগছে আজকে।

আশফি:- আজ অনেক দিন পর আমার খুব ভালো লাগছে।

আমি:- হ্যা তা তো লাগবেই তোমার শপিং শেষ হয়ছে নাকী আরো কিছু লাগবে?

আশফি:- কিছু কসমেটিক্স লাগবে।

আমি:- হ্যা চলো আশফিকে নিয়ে কসমেটিক্স দোকানে নিয়ে গেলাম। আচ্ছা আশফি তোমার যা যা লাগবে তা কিনে নাও আমি একটু আসতেছি।

আশফি:- ওকে তাড়া তাড়ি আসবেন কিন্তু?

আমি:- হ্যা! দোকান থেকে বেড়িয়ে স্নেহাকে ফোন করেছি। জিগেস করেছি সব কিছু ঠিক করে রাখছে কিনা?

স্নেহা:- হ্যা প্লান মতে সব কিছু ঠিক ঠাক আছে।

আমি:- আচ্ছা তাহলে শপিং মহলে চলে আসেন। আমি অপেক্ষা করতেছি কিছুক্ষণ পর স্নেহা এসেছে।

স্নেহা:- চলেন।

আমি:- শুনেন ও অনেক রাগী যদি রাগের মাথায় ওল্টা পাল্টা কিছু বলে তাহলে কিছু মনে করিয়েন না কিন্তু।

স্নেহা:- ঠিক আছে! বলে আমি ঐ দোকানের দিকে যাচ্ছি কিছুটা পথ গিয়ে স্নেহাকে বাহিরে রেখে আমি ভিতরে ঢুকেছি।

আশফি:- এত দেরি করলেন কেনো?

আমি:- একজনের সাথে দেখা করেছি। কিছু নিয়েছো?

আশফি:- বিল দেন।

আমি:- ঠিক আছে! বিলটা দিয়ে বাহিরে এসেছি আশফি আমার ডান হাতটা জড়িয়ে ধরে রাখছে আমি স্নেহাকে চোখ টিপ দিয়েছি যাতে এসে অভিনয় করে কিন্তু স্নেহা দাঁড়িয়ে আছে যখনি কাছে গেছি তখন তো আমি নিজেই অভাক হয়ে গেলাম স্নেহার আর আশফির কাজ দেখে।
!!
To be continue,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে