গল্প:- দুলহানীয়া পর্ব:-(১০-শেষ)

0
1288

গল্প:- দুলহানীয়া পর্ব:-(১০-শেষ)
লেখা:- AL Muhammad Sourav
!!
আশফির সামনে তো স্নেহা আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করার কথা কিন্তু স্নেহা তো আমাকে শক দিয়েছে। ওল্টা আশফিকে জড়িয়ে ধরে আছে আর আশফিও স্নেহাকে জড়িয়ে ধরেছে।

আমি:- আশফি ওনি কে?

আশফি:- স্নেহা আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড। এই স্নেহা কোথায় ছিলি তুই? তকে কত খুঁজেছি তোরা আগের বাসাটা ছেড়ে দিয়েছিস কিন্তু আমাকে নতুন বাসার ঠিকানা পর্যন্ত দেসনি। আর তোর নাম্বার বন্ধ কেনো হা?

স্নেহা:- হ্যা আব্বু অসুস্থ হয়ে গেছে এরপর তুই তো অনেক করেছিস আর কত করবি তাই তোর কাছ থেকে দূরে সরে গেছিলাম।

আশফি:- কিন্তু কেনো?

স্নেহা:- যখন বলেছিস আমার প্লান মতে কাজ করতে গিয়ে আলিফ তকে ভুলে যাচ্ছে তখন আমার কাছে খুব খারাপ লাগছিলো। আর আমার জন্য তুই অনেক করেছিস! আমি একটা চাকরি পেয়েছি ঐটা দিয়ে এখন ভালোই চলে যাচ্ছে। আশফি তাহলে তুই তোর ভালোবাসার মানুষকে জীবন সাথী হিসাবে পেয়েছিস?

আশফি:- হ্যা আরে তোর সাথে তো বলা হয়নি আলিফের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। এই হচ্ছে আমার বর অনেক সুন্দর তাইনা?

স্নেহা:- আগে তো নাম শুনেছি এখন বাস্তবে দেখেছি। হ্যা অনেক সুন্দর তোর সাথে খুব মানিয়েছে।

আশফি:- আলিফ এই হচ্ছে আমার ছোট বেলার বান্ধবী স্নেহা। ওরা এক সময় আমাদের মত বড়লোক ছিলো কিন্তু ভাগ্যের কাছে আজ পরাজিত।

স্নেহা:- আশফি তকে কিছু কথা বলার ছিলো।

আশফি:- হ্যা বল। তখনি আমি স্নেহাকে থামিয়ে বলি।

আমি:- আশফি চলো বাসায় যাই অনেক্ষন হয়েছে বাসা থেকে এসেছি।

আশফি:- হ্যা যাবো স্নেহা তোর নাম্বারটা দে তো।

স্নেহা:- এই নে! (স্নেহার নাম্বারটা আশফিকে দিয়েছে স্নেহা আমার দিকে ঘৃনার চোখে তাকিয়ে আছে। বুঝতে পারছি স্নেহা কেনো এমন ভাবে তাকিয়ে আছে তাও বলি)

আমি:- আশফি এসো দেরি হয়ে যাচ্ছে। স্নেহার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আশফিকে সাথে করে বাসায় এসেছি। ফ্রেশ হয়ে ছাদে গিয়ে স্নেহাকে ফোন করেছি রিং হতেই রিসিব করেছে।

স্নেহা:- মিস্টার আলিফ আপনার কথা মত কাজ করতে পারবোনা।

আমি:- কিন্তু আশফি তো আমাকে লাভ করে না।

স্নেহা:- কে বলছে আপনাকে লাভ করে না? আশফি আপনাকে ছাড়া কোনো কিছু কল্পনা করতে পারেনা। আশফিকে আমি বলেছিলাম আপনাকে একটু পরীক্ষা করে দেখতে। কিন্তু বুঝতে পারিনি পরীক্ষা করতে গিয়ে আপনাদের ভালোবাসার মাঝে এতটা বড় ব্যবদান হয়ে যাবে। আশফি আপনাকে নিজের চাইতে বেশি ভালোবাসে ওকে আর কষ্ট দিয়েন না। আর আপনি আমাকে যা দিয়েছেন সব কিছু ফেরত দিয়ে দিবো কাল ফ্লাট খালি করে আমরা আগের বস্তিতে চলে যাবো।

আমি:- স্নেহা কোথাও যাবার দরকার নেই আপনি এই ফ্লাটে থাকেন।

স্নেহা:- কিন্তু আমি আপনার কথা অনুযায়ী কাজ করতে পারবোনা।

আমি:- কোনো কিছু করতে হবে না! এই ফ্লাটটা আপনার নামে আমি লিখে দিবো। আর হয়ত দেখা হবেনা কিন্তু ভালো থাকবেন বাই। ফোনটা কেটে কিছুটা চিন্তা করে রুমে এসেছি দেখি আশফি নিচে শুয়ে আছে। আমাকে দেখেও না দেখার মত করে চোখ বন্ধ করে নিয়েছে। আমি আশফিকে কুলে তুলে নিয়ে খাটের উপর শুয়িয়ে দিয়েছি।

আশফি:- কুলে উঠাতে মানা করেছি তাও উঠায়ছেন কেনো?

আমি:- সরি!

আশফি:- কেনো?

আমি:- এতদিন তোমার সাথে খারাপ আচরন করেছি বলে।

আশফি:- মানে?

আমি:- মানে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি আই লাভ ইউ।

আশফি:- ও এই কথা ঠিক আছে ক্ষমা করে দিয়েছি। এখন ঘুমাতে দেন আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে সকালে কাজ আছে।

আমি:- এমন ভাব করতেছো কেনো?

আশফি:- তো কি করবো?

আমি:- তোমাকে কিছু কথা বলার আছে আসলে স্নেহাকে আমি আগে থেকেই চিনি। স্নেহা আজ সব কিছু আমাকে খুলে বলেছে তুমি আমাকে ভালোবাসতে। এখন তো আমিও তোমাকে ভালোবাসি তাহলে আর ঝগড়া বা রাগ করে থাকলে কি হবে?

আশফি:- মানে স্নেহাকে কি করে চিন্তেন?

আমি:- স্নেহা আমার সাথে কাজ করে কিছু দিন ধরে। আমি স্নেহাকে বলে ছিলাম তোমার সামনে আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করতে যাতে করে তুমি আমাকে ঘৃনা করো আর দূরে সরে যাও। কিন্তু স্নেহা আজ সব কিছু বলে দিয়েছে।

আশফি:- ও আচ্ছা ঠিক আছে কাল সকালে আমি আমাদের বাড়ীতে চলে যাবো। আমাকে তারানোর জন্য আর কারো সাথে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে না।

আমি:- বলছি তো সরি তাও কেনো এমন করছো?

আশফি:- আমার ঘুম পাচ্ছে ঘুমাবো বলে শুয়ে পড়েছে। আমি আশফির পাশে শুয়ে পড়েছি কিছুক্ষণ পর চেয়ে দেখি আশফি ঘুমিয়ে গেছে আমি ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে গেছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি রুমটা ফাকা আশফির সব কাপর গুলি গুচানো একটা একটা করে ব্যাগে ঢুকিয়ে নিতেছে।

আমি:- আশফি ব্যাগে সব কাপড় ঢুকাচ্ছো কেনো?

আশফি:- বাড়ীতে চলে যাবো বলে ব্যাগ হাতে নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। আমি শুয়া থেকে উঠে হাত মুখ দুয়ে নিচে গেছি দেখি সবাই বসে আছে।

আম্মা:- বউমা চলে যাচ্ছে কেনো?

আমি:- ওর বাড়ীর কথা অনেক মনে পড়ছে তাই যাচ্ছে এতে আমি কি করবো?

আম্মা:- আশফিকে বাড়ীতে দিয়ে আয় আর তুই তো শ্বশুড় বাড়ীতে যাসনি একে বারে দুই কাজ হয়ে যাবে।

আমি:- আমার কাজ আছে যেতে পারবোনা।

আশফি:- তাহলে আমি একাই চলে যাই।

আমি:- ঠিক আছে এখন যাবে সারা দিন থেকে রাতে চলে আসতে হবে তাহলে আমি যাবো।

আশফি:- ঠিক আছে তাই হবে।

আমি:- তাহলে বসো আমি রেডি হয়ে আসতেছি। রুমে গিয়ে রেডি হয়ে নিচে এসেছি সবাই হাসা হাসি করতেছে। আমি চলো আশফি সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছে। বাহিরে এসে গাড়ীটা বের করেছি আশফি গাড়ীতে উঠে বসেছে আমি ড্রাইভ করতেছি। ঘন্টা খানেকের মধ্যে শ্বশুড় বাড়ীতে এসেছি শ্বশুড় মসায় একদম সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

শ্বশুড়:- কেমন আছো বাবা?

আমি:- ভালো আঙ্কেল আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন?

শ্বশুড়:- আব্বাজান বলো তাহলে ক্ষমা করে দিবো?

আমি:- ওকে আব্বাজান তখন আশফি মুচকি মুচকি হাসতেছে! আমাকে হাত ধরে আশফি বাড়ীর ভিতরে ঢুকেছে ভাবি সমন্দি শ্বাশুমা সবাই অনেক খুশি হয়েছে। সবার সাথে কিছুটা আলাপ করে রুমে নিয়ে গেছে আশফি। সকাল গরিয়ে দুপুর হয়েছে অনেকটা ভালো সময় কাটালাম দুপুরে লাঞ্চ শেষ করেছি। আশফি আমার সাথে সাথে থাকছে মনে হচ্ছে ও অনেক খুশি হয়েছে বিকালে নিচে গেছি দেখি আব্বা আম্মা ভাই ভাবি সবাই এসেছে শ্বশুড় বাড়ীতে।

আব্বা:- বেয়াই সাহেব তাহলে এতদিন পর আমাদের পরিবার গুলি এক হয়েছে?

শ্বশুড়:- হ্যা সব কিছু আসফির জন্য সম্ভব হয়েছে।

আম্মা:- আশফি মা অনেক লক্ষী আমার দুইটা বউমা পেয়েছি মনের মত ঠিক আমার মেয়ে ওরা। ওরা সবাই কথা বলছে আমি রুমে চলে এসেছি কিছুক্ষণ পর আশফি এসেছে।

আশফি:- শুনেন আমার এক বছরের মধ্যে একটা মেয়ে চাই।

আমি:- মেয়ে আনবো কোথায় থেকে?

আশফি:- মানে?

আমি:- হ্যা মেয়ে কোথায় থেকে আনবো? তুমি তো আমাকে ভালোবাসতে চাওনা?

আশফি:- কোথায় সেইটা তো আপনি আমাকে কাছে আসতে দেন না।

আমি:- তাই তবে আনতেছি কাছে বলে ওকে টান মেরে বুকের মাঝে নিয়ে এসেছি। আশফি একদম লজ্জা লাল হয়ে গেছে আমি ওর কপালে গালে ভালোবাসার স্পর্শ একে দিয়েছি আজ এতদিন পর আমাদের মাঝে সম্পর্কটা ভালো হয়েছে।

আশফি:- এমন ভাবে রোজ আমাকে ভালোবাসবেন কেমন?

আমি:- তাই?

আশফি:- হ্যা তাই। আশফিকে একদম আপন করে নিয়েছি এখন আর আমাদের মাঝে কোনো ঝগড়া হয়না। একদিনের কথা বলে আজ তিনদিন শ্বশুড় বাড়ীতে বেড়ালাম।

আমি:- আশফি বাড়ীতে যাবে নাকী এখানে থাকবে?

আশফি:- হ্যা যাবো আজকেই!

আমি:- ঠিক আছে! বিকালে দুজনে রওনা হলাম বাড়ীতে এসেছি এখন আমাদের দুজনের ভালোবাসা আর বুজা পরামর্শ দেখে সবাই অনেক খুশি। আশফির নামে কম্পানিতে এখন আমি দেখা শুনা করি আশফি এখন আর ঝগড়া করেনা বরং আমার অনেক কেয়ার করে দুজনে ভালোই চলছে ভালোবাসার সংসার। দুলহানীয়া আজ পূর্ণ বউ হয়ে গেছে আমি অনেক সূখে আছি।
!!
গল্পটা এখানে সমাপ্তি করা হলো কাল থেকে আবার নতুন গল্প দেওয়া হবে সবাই গল্পের পাশে থাকার জন্য আহব্বান করছি।
!!
……………………………সমাপ্তি……………………………

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে