কে কোথায় যায়? পর্ব:১

0
2064

কে কোথায় যায়? পর্ব:১
——-‘এত কাঁদলে কি চলে?মেয়েটাতো ঢাকায় যাচ্ছে মাত্র!তোমার এই বাধভাঙ্গা কান্না দেখলে ওর আর যাওয়ার ইচ্ছে থাকবে?’
মিসেস ফাতিমা চৌধুরী আঁচল দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বললেন,
——–‘তুমি কি আর মায়ের মমতা বুঝো?দশ মাস দশ দিন পেটে রেখে দুনিয়ার মুখ দেখিয়েছি।তুমি অতসব বুঝবা না!’
বিরক্তি নিয়ে মিঃ রহমান বললেন,
——‘হ্যাঁ!আমিতো কিছুই বুঝিনা।জন্মের পর থেকে তোমার মেয়ের অশন বশন কে করেছে? এসব হিসাব নিকাশ করলে তুমি হেরে যাবা, বুঝছো?’
মিসেস ফাতিমা চৌধুরী হতচকিত হলেন!হতচকানো কন্ঠে বললেন,
——–‘কী বললা?জন্মের পর মেয়েটার জন্য আর কিছুই করিনাই আমি?’
মি: রহমান ছোট করে জবাব দিলেন,
——-‘না’
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


নীহারিকা লাগেজ নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নামতে নামতে হেঁসে উঠলো। মিসেস ফাতিমা ও মি:রহমান মেয়ের হাসি দেখে থেমে গেলেন।
নীহারিকা হাসতে হাসতে বললো,
———‘কি চলছে এইখানে?’
———‘তোকে ছাড়া ভালো থাকবো কেমন করে বলতো?তোর বাবা এটা বুঝার চেষ্টাই করছেনা!’
——–‘তাই নাকি?মা আরেকটু আগে যদি ঘুম থেকে উঠাতে তাইলে আরেকটু সকালে পৌঁছে যেতাম।কত দূর!”
নীহারিকাকে সোফায় বসিয়ে মিসেস ফাতিমা চোখের জল মুছে বললেন,
-“সত্যি অনেক দূর!তোর নানুর চিকিৎসার জন্য দুইবার গেছিলাম ঢাকায়। আর বাসে উঠলে আমার কেমন জানি বমি বমি ভাব হয়।আচ্ছা চলছে গাড়ি চলুকন একটু পরপর রাস্তায় জ্যামে আটকে থাকে কেন?গাড়ি থামলেই আমার বমি আসে।’
মি: রহমান বিরক্ত মুখে বললেন,
——–‘আচ্ছা রাস্তায় জ্যাম থাকলে ওরা কি করবে?গাড়ির ওপর দিয়ে গাড়ি চলে যাবে? তোমাকে নিয়ে এই আরেক জ্বালা!তাই তোমায় নিয়ে কোথাও যেতে চায়না।’
মিসেস ফাতিমা অভিমানী সুরে বললেন,
——–‘তাতো হবেই!চুলে পাক ধরেছে,কলপ মেরে চলি!চামড়া কুকড়ে গেছে। এখনতো আর ভালো লাগার কথা না।’
মি: রহমান বার্গার মুখে দিতে দিতে বললেন,
——–‘সারাজীবন বাকাটা বুঝে এসেছো।তোমায় নিয়ে আর পারিনা।গাড়ি জোরে চললে চিৎকার করো আর গাড়ি জ্যামে আটকালে আনো বমি!’
মিসেস ফাতিমা ইনোসেন্ট মুখ করে বললেন,
———‘যাবোনা আর তোমার সাথে। আমিতো কুৎসিত। অনেক স্বপ্ন নিয়ে তোমার সাথে সংসার কেন যে করতে গেলাম!’
মি:রহমান বার্গার আধটু প্লেটে রেখে কিছু বলতে যাবেন ঠিক তখনি মিসেস ফাতিমা আবার ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলেন,
———‘বড় দুই ছেলেটাকে পাঠাইছো ঢাকায়।বিয়ে করে বউ বাচ্চাকে নিয়ে পাড়ি দিল ঢাকায়। মায়ের খোঁজ কেউ নেই?’
মি:রহমান আবার চোখ বড়বড় করে বললেন,
——–‘আবার আমায় দোষ দিচ্ছো?আমি পাঠাইছি নাকি হ্যাঁ?’
নীহারিকা মা-বাবার মাঝে এসে দাঁড়াল। দুজনের হাঁটুতে হাত রেখে গেঁজ দাঁত হাসি দিয়ে বললো,
———‘পড়াশোনা করতে যাব,দোয়া আর আশির্বাদ করবানা আমায়?’
মা-বাবা দুজনেই নীহারিকাকে জড়িয়ে ধরে রইলেন।
নীহারিকা মা-বাবার কাছে খানিক সময় পার করে যথাসময়ে বাস স্টেশনে গেল।
বাড়ি থেকে একটি রিকশা নিল বাস স্টেশনে পৌছানোর জন্য। রিকশা চলছে বাস স্টেশনের উদ্দেশ্যে।
মার বারবার শৈশবের স্মৃতি জেগে উঠছে।দিন যাবে,দিন আসবে,বাড়াবে ব্যবধান।সবুজ মাঠের সাথে অবুঝ মন হয়তো এই জনমে আর হবে না!
চলবে…..
®ইভা আহমেদ চৌধুরী
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে