কাল্পনিক আলাপন

0
668
— হ্যালো, কাকে চাই ? ——- চুমু চাই।একটা খুব…..উউউউউব গভীর আবেগে পরিপূর্ণ।আপাতত একটাই চাই।পরেরটা একটু ভেবে জানাচ্ছি। — আমি বলেছি আপনি কাকে চাচ্ছেন ? ——- আপনি বোকা নাকি ! মেয়েরা কি যার তার কাছে আদর সোহাগ চায় ? আমি যাকে চাই অল্পের চাইতে আরেকটু বেশি কাছে, সে এই মুহূর্তে ফোনের ওপর পাশে আবেগের গলা চেপে ধরার অপচেষ্টায় ভীষণ ব্যস্ত আছে। — এই আপনার লজ্জা করে না এভাবে অসভ্যের মত কথা বলতে ?
——- এই আপনার বিবেকে বাঁধে না একটা মেয়েকে ঘন্টার পর ঘন্টা কোথাও অপেক্ষায় বসিয়ে রাখতে ? — আমি ! কখন ? কাকে ? কিভাবে ! ——- ন্যাকামো ছাড়ুন। — আপনাকে এখনও একটিবার চোখের দেখা না দেখেও স্পষ্ট বুঝতে পারছি আপনি নিঃসন্দেহে আগুণ সুন্দরী। ——- খবরদার প্রসঙ্গে পাল্টাবেন না বলছি। — প্রসঙ্গ পাল্টাতে যাব কোন সাহসে ! কেবল আগুণ সুন্দরীরাই নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানোর বিশেষ গুণের অধিকারী হয়।আপনার কথার সুনিপুণ খোঁচায় সেটাই আঁচ করছিলাম। ——- আজব তো ! আমি কি করেছি ? — সেদিন ছাতিমতলায় আসার কথা বলেও এলেন না কেন ? জানেন, শুধু এই আপনার জন্য আমি বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে জ্বর নিয়ে বাড়ি ফিরেছি।কাউকে এভাবে অপেক্ষায় রাখানোটা কত বড় অন্যায় তা কি বোঝেন ? ——– আমারও তো সেই একই অভিযোগ।সেদিন তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আমার লাল শাড়ির আঁচলটা রিক্সার চাকার সাথে বেঁধে ছ্যাত করে গেল ছিঁড়ে ! তারপরেও আমি বাড়ি ফিরে যায় নি।বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে শুধু আপনার অপেক্ষায় ছিলাম। — হুম, বুঝতে পেরেছি।সবটাই সময়ের ব্যবধান।চেয়েছিলাম খালিপায়ে হেঁটে হেঁটে ছাতিম তলায় ঘ্রাণ কুড়াব।তবে ফুটপাত ধরে কিছুদূর হাঁটার অভিজ্ঞতাটা খুব একটা সুখকর ছিল না।তাই বাধ্য হয়ে পেছন ফিরতে হল বাড়ির পথে।ঘটনা কিন্ত এখানেই শেষ নয়।অতঃপর এই গরীবের স্যান্ডেল বাবাজীও বেশিদূর সঙ্গ দিল না।কিছুদূর যেতে না যেতেই গেল পটাস করে ছিঁড়ে ! মুচি মামাকে তাই দিতে হয়েছিল আপনার জন্য ঘড়িতে জমিয়ে রাখা সময়ের অনেকখানি ! এবার ছাড়ুন পুরোনো কথা।আজ কণে দেখায় আলোয় আমায় রাঙাতে একটু আসবেন কি ?
——- কেন আসব আমি ? — কেন আবার ! ওই যে আমার জ্বর নামাতে। ——- জ্বরের জন্যে ডাক্তারের কাছে গেলেই হবে।তাছাড়া আমার আর কোনো লাল শাড়ি নেই। — ওহ্ বালিকা ! আপনি কি সত্যিই বোঝেন না।নাকি সব বুঝেও না বোঝার ভান করে থাকেন ? এ জ্বর নামাতে ডাক্তারের কাছে যেতে নেই।আর শুনুন, লাল শাড়ির প্রয়োজন নেই।আপনার জন্য রক্তলাল আলতা নিয়েছিলাম সেদিন একটা তাতেই হবে। ——- কি হবে ? — হেমন্তের লাল বৃষ্টি হবে। ——- এই ঝিকিমিকে রোদ্দুরে বৃষ্টিকাব্যের ব্যাপারটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না ! — একদমই নয়…একবিন্দুও নয় ! আমি ঝিকমিকে রোদেও বৃষ্টি নামাতে পারি। ——- আর কি পারেন ? — কারো জন্যে সীমাহীন অপেক্ষার প্রহর গুণতে পারি। ——- তবে আমি যে কারো অপেক্ষা নামক কঠিন পরীক্ষা নিতে চাই না ! — তবে কি চান ? ——- ওহ, শুরুতে বলি নি বুঝি ! — হবে হবে…আজ হেমন্তের লাল বৃষ্টিতে সব হবে।আচ্ছা শুনুন তো, কোথাও কোনো অঘটনে কারো কি পুরোনো জ্বরটা নামবে ? ——- কিছু প্রশ্নের উত্তর বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে চোখের ভাষায় দেয়ার জন্য তুলে রাখতে হয়।অধৈর্য না হয়ে বালিকাকে আরেকটু কাছে আসতে দিন…খুব কাছে। ।।।।।।।।।।।। #জিনিয়া_জেনিস

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে