একথোকা কৃষ্ণচূড়া এবং আপনি পর্ব-২০ এবং বোনাস পর্ব

0
1239

#একথোকা_কৃষ্ণচূড়া_এবং_আপনি
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ২০

স্নিগ্ধ সকাল,হালকা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি তার সাথে মন ভালো করার মতো মৃদ্যু মন্দ বাতাস।বাগানের পাশের গাছটায় অসংখ্য কদম ফুল ফুটেছে।কি যে সুন্দর লাগছে গাছটা দেখতে বলার বাহিরে।একধ্যানে বাহিরে তাকিয়ে থেকে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করছিলো প্রাহি।কিন্তু ওর তো খেয়ালই নেই।হাওয়ার সাথে বৃষ্টির ছিটাতে ও ভিজে গিয়েছে অনেকখানি।সে তো তার মতোই বারান্দায় দাঁড়িয়ে।
আজ শুক্রবার তাই প্রাহির ভার্সিটি নেই।অর্থ’রও অফিস নেই।সে আপাততো ঘুমাচ্ছে।কাল অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করেছে বিধায় এখন ঘুমটা এতো গাঢ়োভাবে ঝেকে ধরেছে।কিন্তু ঘুমের ঘোরে নড়তেই অনুভব করে পাশে কেউ নেই ওর।পাশ হাতরে বেড়ায় কিন্তু নেই।ধপ করে চোখজোড়া খুলে ফেলে অর্থ।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে আটটা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট।আজ শুক্রবার তাও এতো সাতসকাল বেলা মেয়েটা কোথাও গেলো।উঠে বসলো অর্থ হাই তুলে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো।পরক্ষনেই বারান্দায় দিকে চোখ যেতেই ভ্রু-জোড়া কুচকে যায় ওর।আরেকটু এগিয়ে গিয়ে ভালোভাবে লক্ষ্য করতেই সকাল সকাল মেজাজটা তুঙ্গে উঠে যায় ওর।ধুপধাপ পা ফেলে বারান্দায় গিয়ে গম্ভীর স্বরে ধমকে উঠে অর্থ,
‘ স্টুপিড মেয়ে।বৃষ্টিতে ভিজে নিজের কি অবস্থা করেছো হ্যা? থাপ্পড় দিয়ে গাল লাল করে দিবো।’
আকস্মিক এমন ঠাঠানো ধমক খেয়ে লাফিয়ে উঠে প্রাহি।ভয়ে পেয়ে পিছনে ফিরে অর্থকে দেখলো।পরক্ষনে আবারও অর্থ’র কথাগুলো স্মরন করে নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে যে ও সম্পূর্ণ ভিজে গেছে।প্রাহি ভয়ে ভয়ে তাকায় অর্থ’র দিকে।অর্থ এখনো রাগি চোখে তাকিয়ে ছিলো।প্রাহি তাকাতেই আবারও জোড়ে ধমক দেয়,
‘ যাও! চেঞ্জ করে আসো।এইবার ঠান্ডা লাগালে কোন ডাক্তার দেখানো হবে না।আমি নিজে গিয়ে বাগানে এই বৃষ্টির মাঝে গাছের সাথে বেধে রাখবো বেয়াদপ মেয়ে।এতোটা কেয়ারলেস কেউ কি করে হতে পারে।যতো জ্বালা হয়েছে আমার।একটা কথাও শোনে না।এমন বুঝদাত মেয়ে নিজের ভালোমন্দটুকু বুঝে না।সব কি আমাকে বলে বলে করানো লাগবে?দাঁড়িয়ে আছো কেন?যাও!’
এমন জোড়ে জোড়ে ধমক দেওয়ায় প্রাহির চোখের কোণে জল জমেছে।অর্থ কয়েকদিন যাবত এমনি করছে।কথা শুনলে মধুর কন্ঠে কথা বলে।আর তার কথার কোন বেতিক্রম হলে ধমকে ধামকে প্রাহির অবস্থা নাজেহাল করে দেয়।এমনটা বিগত একসপ্তাহ যাবত।একসপ্তাহ আগে প্রাহির ঝুম বৃষ্টি দেখে নিজেকে সামলাতে পারেনি।হিয়া আর ও মিলে ছাদে গিয়ে বৃষ্টিতে ইচ্ছেমতোন ভিজেছে।হিয়ার আবার অসুখ বিসুখ কমই হয়।তাই ওর শুধু একটু ঠান্ডা লেগেছিলো।ওষুধ খেতেই সেরে গেছে।কিন্তু প্রাহি শরীর কাপিয়ে জ্বর এসেছে।তিনদিন পর্যন্ত নিস্তেজ শরীর নিয়ে পরে ছিলো।সর্বক্ষন অর্থ ওর পাশে পাশে ছিলো।সেই তিনটা দিন অর্থ’র মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছিলো না।প্রাহিকে দিনরাত সেবা করে সুস্থ করেছে।সেই থেকেই প্রাহির জন্যে কঠিন কঠিন সব ধারা জারি করেছে অর্থ।সেখান থেকে একটু ব্যাতিক্রম হলেই প্রাহিকে ধমকের উপর রাখে অর্থ।
প্রাহি ড্রেস-চেঞ্জ করেই ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আসলো।অর্থ’র দিকে না তাকিয়েই হনহনিয়ে রুমের বাহিরে চলে গেলো।অর্থ তা দেখে রাগি গলায় বলে,
‘ হ্যা এইভাবে যেতে নিয়ে সিড়ে দিয়ে উলটে পড়ে পা ভাঙ্গো খালি একবার।আমি তারপর তোমাকে কোলে নিয়ে দোতলা থেকে নিচে ফেলে দিবো বলে দিলাম মেয়ে।’
অর্থ’র এমন কথায় প্রাহির পাজোড়া থেমে গেলো। মুখ গোমড়া করে আস্তে আস্তে হেটে নিচে চলে গেলো। অর্থ রাগি চেহারা নিয়েই ওয়াশরুমে চলে গেলো ফ্রেস হতে।
এদিকে নিচে নেমে দেখে কেউ উঠেনি আজ শুক্রবার সেই জন্যে।হেনা আর রায়হানা বেগম এখনো উঠেনি ।প্রাহি কিচেনে গিয়ে কি রান্না করবে ভাবছে। হঠাৎ ভাবলো আজ বৃষ্টি পরছে।বাড়িতেও সবাই আছে।প্রাহি ঝটপট খিচুরি রান্না করবে আর কষা গোস্ত রান্না করবে ভেবে নিলো।যা ভাবা সেই কাজ প্রাহি নেমে পরলো নিজের কাজে।খিচুরি চুলোয় বসিয়ে গোস্তো কষাচ্ছে প্রাহি।এর মাঝে উপর থেকে অর্থ’র কন্ঠ শোনা গেলো।অর্থ সোফায় বসে নিউজপেপার পরছে।প্রাহিকে বলছে এককাপ লেবু চা করে দিতে ওকে।অর্থকে দেখে ওর মনটা আবারও খারাপ হয়ে গেলো।প্রাহি চুপ-চাপ চা’টা বানিয়ে সার্ভেন্ট্স দিয়ে পাঠিয়ে দিলো।কিন্তু কিছুক্ষন পর মেয়েটি সেই চা নিয়ে ফেরত আসায় প্রাহি ভ্রু-কুচকে জিজ্ঞেস করেছে,
‘ কি হয়েছে?এটা নিয়ে ফেরত এসেছো কেন?’
মেয়েটা বললো,
‘ স্যার বলেছে যে চা’টা যে বানিয়েছে দিয়েছে সেই যেন নিয়ে যায়।মানে আপনাকেই নিয়ে যেতে বলেছে।’
প্রাহি রাগ নিয়ে তাকালো অর্থ’র দিকে।তারপর চুলোর আঁচ কমিয়ে চা’টা নিয়ে মুখ অন্ধকার করে অর্থ’র কাছে গিয়ে কাপটা টি-টেবিলের উপর রেখে যেতে নিতেই আবারও অর্থ’র গম্ভীর কন্ঠে,
‘ চা’টা হাতে কে দিয়ে যাবে?’
প্রাহি রাগি চোখ তাকালো।মন চাচ্ছে এই চা’টা এখন লোকটার মাথায় ঢেলে দিতে।রাগে ফোসফোস করতে করতে চা’টা অর্থ’র হাতে দিয়ে চলে গেলো।এদিকে উপর থেকে সবটাই খেয়াল করেছে হেমন্ত।নিচে নেমে এসে অর্থ’র পাশে বসে বললো,
‘ কি হয়েছে ভাই?ও এমন রেগে আছে কেন?’
অর্থ দীর্ঘশ্বাস ফেললো,
‘ আর বলিস না হেমন্ত।তোর বান্ধবী আমার একটা কথাও শোনে না।আরে নিজের ভালো তো পাগলেও বুঝে।সাতসকাল বেলা বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আমি ঘুম থেকে উঠে গিয়ে দেখি বৃষ্টির পানিতে ভিজে পুরো শরীর ভিজিয়ে রেখেছে।এই কারনেই রাগে ধমক দিয়ে ফেলেছি।সেই কারনেই ম্যাডাম এমন মুখ ফুলিয়ে আছে।কিন্তু এতে আমার কিছু যায় আসে না।ওকে লাইনে আনার জন্যে ধমকে ধমকে কথা বলতে হবে।নাহলে এই মেয়ে কথা শোনার মানুষ না।’
হেমন্ত হাসলো।বললো,
‘ তাহলে ভালোই করেছো।তা এখন কিচেনে কি করছে?’
অর্থ একপলক রান্নাঘরে কর্মরত প্রাহিকে দেখলো।যে আপাততো কোমড়ে উড়না বেধে কাজ করায় ব্যস্ত।সেদিকে তাকিয়ে থেকেই বলে,
‘ কি জানি।কখন থেকে দেখছি কি জানি রান্না করছে।’
হেমন্ত সোফায় মাথা এলিয়ে দিয়ে বলে,
‘ মা বাবা, বড়মা,বড়বাবা এখনো উঠেনি।উনারা ঠিক আছেন তো?’
অর্থ বললো,
‘ মা’র শরীরটা ভালো না।উনার বুকে ব্যাথাটা বেড়েছে।আর।চাচ্চু’র বাতের ব্যাথাটা বেড়েছে।এই জন্যেই বোধহয় এতো দেরি হচ্ছে।’
‘ আচ্ছা ভাই আমি উনাদের নিয়ে বিকেলে হাসপাতালে যাবোনি।’
‘ তার কোন প্রয়োজন নেই আমিই বিকেলে ইব্রাহিমকে আসতে বলেছি।উনাদের কষ্ট করে জার্নি করা লাগবে না।’
এর মাঝে হিয়াও উঠে এসেছে।এসে সোফায় বসে বললো,
‘ আর সবাই কোথায়?’
হেমন্ত বললো,
‘ প্রাহি রান্নাঘরে।বড় মা আর আব্বু’র শরীরটা ভালো নেই।তাই তারা এখনো আসে নি।’
হিয়া বললো,
‘ তাহলে আমি ভাবিকে গিয়ে হেল্প করি গিয়ে।’
‘ যা!’
হিয়া রান্নাঘরে চলে গেলো।গিয়ে দেখে প্রাহি সালাদ কাটছে।হিয়া মুচঁকি হেসে বলে,
‘ ভাবি কোন হেল্প লাগবে?’
প্রাহি বললো,
‘ হেল্প করলে এক কাজ করো।প্লেটগুলো একটু ধুয়ে টেবিলে রাখো।একটু পর তো সবাই খেতে চলে আসবে।’
হিয়া চলে গেলো কাজে।প্রাহি সালাদ কাটা শেষ করে বললো,
‘ হিয়া শেষ হয়েছে?’
‘ হ্যা ভাবি এইতো!’
‘ তাহলে এক কাজ করো মা বাবা আর কাকা কাকিমাকে ডেকে দিয়ে আসো।অনেক সকাল হয়ে গিয়েছে।দুপুরেরও রান্না করতে হবে।আমি টেবিলে খাবার সাজিয়ে দিয়েছি।তুমি এই সালাদটা রেখে আসো গিয়ে আর সবাই ডেকে দেও।’
হিয়া প্রাহির কথামতো চলে গেলো। প্রাহি এইফাকে দুপুরের জন্যে রান্নার ব্যবস্থা করে ফেলেছে। রান্নাঘরের কাজ শেষ করে ডায়নিং এ আসতেই।দেখে সবাই এসে বসেছে।প্রাহি গিয়ে সবাইকে খিচুরি বেড়ে দিলো। খিচুরির ঘ্রানে মো মো করছে পুরো বাড়ি।খিচুরি খেয়ে সবাই প্রাহির প্রসংশা করলো। শুধু অর্থ বাদে।অর্থ খেয়ে উপরে চলে গেলো।প্রাহি মন খারাপ করে তাকিয়ে রইলো সেদিকে।তারপর টেবিল পরিষ্কার করে রান্নাঘরে গিয়ে দুপুরের রান্না করবে কিন্তু হেনা এসে বলে,
‘ দুপুরের রান্না আমি করি।সকালে তো তুমি রান্না করেছো।যাও রেস্ট নেও গিয়ে।আমি রান্না করছি।’
‘ আমি তাহলে হেল্প করি?’
হেনা বেগম মুচঁকি হেসে বলে,
‘ সব তো তুমি তৈরি করে রেখেছো।আমি শুধু রান্না করবো।আর হেল্প লাগলে সুমি(কাজের মেয়ে) আমাকে হেল্প করবে।তুমি যাও।’
প্রাহি আর কি বলবে বের হয়ে আসলো রান্নাঘর থেকে।তার আপাততো রুমে যাওয়ার কোন ইচ্ছে নেই।লোকটা সকাল সকাল ওকে যেইভাবে ধমকেছে প্রাহি আর কথাই বলবে না লোকটার সাথে।কিন্তু যাবে কোথায় ও?ছাদে বা বাগানে যাবে তাও পারবে না বৃষ্টি হচ্ছে।প্রাহি মুখ গোমড়া করে রুমের দিকে অগ্রসর হলো।

#চলবে____________

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

#একথোকা_কৃষ্ণচূড়া_এবং_আপনি
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#বোনাস_পর্ব
‘ এখনো রাগ কমেনি?’ অর্থ’র কথায় প্রাহি আরো শক্ত করে চোখ বুজে ফেললো।

আজ সারাদিনে ও অর্থ’র ধারকাছেও আসেনি।হয় হেমন্ত নয়তো হিয়ার সাথেই থেকেছে।কিন্তু রাতে কি আর দূরে থাকা যায়?সেই অর্থ’র কাছেই ওর আসতে হলো।প্রাহি রুমে এসে চুপচাপ সুয়ে পরেছে বিছানায়।কিন্তু লোকটার বুকের উষ্ণতা না পেলে কি ঘুম আসে ওর?উহু একটুও নাহ।কিন্তু কিছু করার নেই।তার যে অভিমান হয়েছে ভীষন।
লোকটা ওর অভিমান ভাঙ্গাতেও আসেনি একবার।সুন্দরভাবে একটু কথা বললেই তো প্রাহির অভিমান ভেঙ্গে যেতো।ঠিক তখনি উপরিউক্ত কথাটা বলে উঠে অর্থ।প্রাহি থম মেরে বসে আছে।কোন কথা বলবে না ও লোকটার সাথে।অর্থ মুচঁকি হেসে প্রাহিকে পিছন হতে ঝাপ্টে ধরলো।আকস্মিক শীতল হাতের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠলো প্রাহির শরীর।ওর পেটের উপরে রাখা অর্থ’র হাত খামছে ধরলো।অর্থ প্রাহির কানে ঠোঁট ছোয়ালো আলতোভাবে।ভীতর শুদ্ধ কেঁপে উঠলো ওর এরূপ ছোঁয়ায়।অর্থ ওর কানের কাছেই ফিসফিসিয়ে বলে,
‘ এতো বেশি রাগ করে লাভ নেই।যতোক্ষন মুখ ফুলিয়ে রাখবে আমি কিন্তু ততোক্ষন চুমু খাবো তোমায়।’
আতকে উঠে প্রাহি।দ্রুত অর্থ’র দিকে ফিরে অর্থ’র বুকে মুখ গুজে দিলো।অস্পষ্ট স্বরে বললো,
‘ খুব খারাপ আপনি।খুব খারাপ।’
অর্থ হেসে প্রাহিকে জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে।আদুরে কন্ঠে বললো,
‘ তোমারই তো।’
কথটা কর্ণপাত হতেই প্রাহির ঠোঁটের কোণেও মুচঁকি হাসি ফুটে উঠে।
_______________
ইন্ডিয়ার মুম্বাই শহরের এক নামি দামি রেস্টুরেন্টে মুখোমুখি হয়ে বসে আছে ইলফা আর জয়।ইলফা জয়ের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়লো,
‘ আমাকে এতো তাড়াহুড়োয় ইন্ডিয়া আসার জন্যে কেন বললেন মিঃ জয়? আমাকে দিয়ে আপনার কি কাজ?আর আমার সম্পর্কে এতোসব ডিটেইল্স পেলেন কিভাবে আপনি?’
জয় শয়তানি হাসি দিলো।আয়েশি ভঙ্গিতে বললো,
‘ তোমার ঠিকানা যোগার করা আমার বা’হাতের কাজ। আর রইলো তোমাকে ইন্ডিয়ায় আসার জন্যে বলার কারন।তার একমাত্র কারন হলো প্রাহি আর অর্থকে আলাদা করা যেকোন ভাবে।’
ইলফা চক্ষু কপালে উঠে গেলো।পরপর সরাসরি নাকচ করে বলে,
‘ অসম্ভব।এতো চেষ্টা করেছি আমি।কিন্তু ওদের ওদের আলাদা করে পসিবল না।’
‘ তোমার অর্থ’কে চাই?’
ইলফা তাচ্ছিল্য হাসলো,
‘ হাহ্! ওই গুমড়োমুখোকে কে চায় আমি?এই ইলফা?হাহ্ আমার তো শুধু ওর সম্পত্তি আর টাকা পয়সা চাই।ওকে বিয়ে করে শুধু বিয়েটা করতে পারলেই হতো ও ওর মতো থাকতো আর আমি ওর টাকা পয়সা নিয়ে আমার মতো মজমাস্তি করতাম।কিন্তু বাস্টার্ডটার পেছনে বিগত কয়েকবছর যাবত ঘুরেছি।এতো এতো ভাবে সিডিউস করার চেষ্টা করেছি।কিন্তু এই ছেলে আমার দিকে ফিরেও তাকাতো নাহ।’
জয় চিন্তায় পরে গেলো পরক্ষনে কিছু একটা ভেবে বাঁকা হেসে বললো,
‘ প্রাহির মা হাসপাতালে ভর্তি।তুমি গিয়ে যেকোনভাবে শুধু প্রাহির মা’কে সেখান থেকে সরিয়ে ফেলবে।এর পরে আমরা কি করবো তা নিশ্চয়ই তোমাকে বোঝাতে হবে না?’
ইলফা মুখশ্রী চকচক করে উঠলো।পরক্ষনে ভ্রু-কুচকে জয়ের দিকে তাকিয়ে বললো,
‘ কিন্তু তুমি আমাকেই কেন এইসব করাচ্ছো?তুমি নিজে কেন বাংলাদেশ যাচ্ছো না?’
জয় দাঁতে দাত চেপে বললো,
‘ ওই অর্থ’র বাচ্চা আমাকে ধরার জন্যে ওর গার্ডসদের পাহারা হিসেবে রেখেছে সবখানে।আমি চেয়েও যেতে পারছি নাহ।’
‘ ভয় পায় অর্থকে?ভীতু একটা!’
জয় হিংশ্র চোখে তাকালো।ইলফা ওই চোখ দেখে ভয় পেয়ে গেলো।তুতলিয়ে বলে,
‘ আমি রাজি।আমি রাজি।শুধু আমার সাথে অর্থ’র বিয়ে হলেই হলো।’
জয় বাঁকা হাসলো ইলফার এতো ভয় পাওয়া দেখে।
______________পরেরদিন সন্ধ্যে
‘ শুনছেন?’
‘ হুম বলো!’ প্রাহির কথায় জবাব দেয় অর্থ।
প্রাহি অস্থির কন্ঠে বলে,
‘ আপনার ব্যস্ততার কারনে আর মা আর কাকা অসুস্থ থাকার কারনে আম্মুকে দেখতে যেতে পারলাম না আজ।আম্মুকে দেখার জন্যে মনটা কেমন জানি করছে।’
প্রাহির কথায় মন খারাপের আভাষ পেয়ে অর্থ প্রাহিকে আদুরেভাবে নিজের বুকে টেনে নিলো।ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,
‘ আমি বলেছিলাম তোমাকে তুমি গিয়ে দেখে আসো।কিন্তু গেলে না।এখন মন খারাপ করছো কেন?’
প্রাহি ধীর কন্ঠে বললো,
‘ যেতেই তো নিয়েছিলাম এর মাঝে মা’র বুকে ব্যাথাটা বেরে যায়।তাই আর যাওয়া হয়নি!’
প্রাহি কপালে চুমু খেয়ে বলে,
‘ চিন্তা করো না।সব ঠিক আছে ওকে।আমি আম্মু’র কেভিনের সাথে চারজন গার্ড্স রেখেছি
আর পার্মানেন্ট নার্স ডাক্তার তো আছেই।সমস্যা হলে উনারা আমাকে ফোন করবেন।’
প্রাহি মাথা নাড়ালো।অর্থ’র বুকে চুপটি করে পরে রইলো।কেমন যেন করছে প্রাহির মনটা।কিছু একটা খারাপ হতে চলেছে ওর মনটা বারবার কু ডাকছে।প্রাহি মনে মনে শুধু আল্লাহ্কে স্মরন করতে লাগলো।এখন তিনিই ওর এই চিন্তা কমানোর মালিক।

#চলবে______
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে