এই প্রেম তোমাকে দিলাম পর্ব-০১+০২

0
5648

#এই প্রেম তোমাকে দিলাম
#সূচনা_পর্ব
#আফিয়া_আফরিন

“হাঃ, হাঃ, তোমার কিভাবে মনে হলো তোমার মত এরকম একটা মেয়ের সাথে আদিত্য অর্থাৎ আমার মত একটা ছেলে সিরিয়াস প্রেম করবে? টাইম পাস ছিলো ইয়ার, জাস্ট টাইম পাস।”
হাত উঁচিয়ে কথাগুলো বলল আদিত্য।
তিথি অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আদিত্যের দিকে। এটা কি সেই আদিত্য, যে গত দুইদিন আগে পর্যন্তও তিথি কে পাগলের মত ভালবাসতো!

আদিত্যের বলা কথাগুলো তীরের মতো বুকে বিধঁলো।

“টাইম পাস ছিলো? তুমি আমার সাথে ভালোবাসার নাটক করেছো? কিন্তু কেন?”

“প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।”

“প্রতিশোধ? কিসের প্রতিশোধ?”

“আদিত্য চৌধুরীকে সবার সামনে থাপ্পড় মারার প্রতিশোধ! মনে নেই?”

তিথি এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলো। এবার আদিত্যের কথা শুনে ধপাস করে পাশে থাকা গাছের গুঁড়ির উপর বসে পড়ল।

“সামান্য একটা থাপ্পরের জন্য তুমি আমার সাথে ভালোবাসার নাটক করলে আদিত্য? এর চেয়ে ভালো তুমি আমায় মেরে ফেলতে পারতে।”

“এইতো এখন ব্রেকআপ করলাম। এটা কেও কিন্তু মেরে ফেলা বলে, তবে ইনডিরেক্টলি! আমি জানি তুমি আমায় পাগলের মতো ভালোবাসো, তাই সেই সুযোগটাই নিলাম।”

“আমাকে এত সস্তা মনে করো না। মনে করেছো তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। বেঁচে থেকে দেখাবো।
আমাদের এক বছরের সম্পর্কের দাম তোমার কাছে নাই থাকতে পারে, কিন্তু আমি তো ভালোবেসে ছিলাম, আমার কাছে আছে!”

তিথির চোখে পানি টলমল করতেছে। প্রতিটা কথা বলতে তার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। আদিত্য আবার বললো,
“শোনো, আজ থেকে আমার আর তোমার সম্পর্ক এখানেই এবং এই মুহূর্তেই শেষ! আমার গার্লফ্রেন্ড হওয়ার যোগ্যতা তোমার নেই।”

আদিত্য চলে গেল। তিথি ওখানে বসে দুই হাতে মুখ ঢেকে অঝোরে কেঁদে ফেললো।
সে তো আদিত্যকে ভালোবাসতো, সত্যি কারের ভালোবাসা যাকে বলে!
আর এই আদিত্যই কিনা শুধুমাত্র টাইম পাস করল গত এক বছর ধরে, হায়রে মানুষ!

অনেকক্ষণ যাবৎ তিথির ফোন ভাইব্রেট করছে। তার চিন্তাভাবনার শক্তি ক্রমেই অসাড় হয়ে আসছে। ফোন হাতে নিয়ে দেখল ওর বেস্টফ্রেন্ড রিনি ফোন করেছে। কথা বলার ইচ্ছা নাই বিধায় সে ফোন কেটে অফ করে রাখলো।

বেশ কিছুক্ষণ বসে থেকে ফুটপাথ ধরে হাঁটা শুরু করল। শরীর আর কুলাচ্ছে না। হাটঁতে গেলেও পা জড়িয়ে আসছে। তিথি একটা রিকশা ডেকে রিকশায় উঠে বসলো।

দশ মিনিট পর বাসার সামনে আসতেই রিক্সার আমাকে থামতে বলল। রিক্সা থামতেই তিথি একশো টাকার নোট এগিয়ে দিল।

রিকশাওয়ালা হেসে বলল, “তিরিশ টাকা ভাড়া আফা। একশো টাকা ভাংতি হইবো না আমার কাছে।”

তিথি আশেপাশে তাকিয়ে বলল, “আমার কাছেও ভাংতি নেই, মামা।”

রিক্সাওয়ালা এবার ভাল করে তাকালো তিথির দিকে। চোখ ফোলা ফোলা দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, “কি হইছে আপা আপনার?”

“কিছু না। আপনি পুরো টাকা টাই রাখেন মামা। আবার কখনো দেখা হলে ফেরত দিয়েন।”

টাকা দিয়ে তিথি ভিতরে গিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। যাদের বোঝানোর দরকার নাই তারা ঠিকই বোঝা যায়, আর যাকে বুঝানোর দরকার হয় সেই মানুষটাই নির্মমভাবে ছেড়ে চলে যায়।

তিথি সোজা নিজের রুমে ঢুকে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিয়ে, বিছানায় গা এলিয়ে দিলো।
.
.
তিথির মা বাইরে থেকে দরজা ধাক্কাচ্ছে অনেকক্ষণ হলো।
কিন্তু ওর কোনো হেলদোল নাই, চুপচাপ বসে আছে।
অনেকক্ষণ পর্যন্ত দরজা ধাক্কা তিথির মা ফারজানা বেগম সাড়াশব্দ না পেয়ে ধরে নিলো হয়তো তার মেয়ের মন খারাপ, না হয় কোন কারণে রেগে আছে।

ফারজানা বেগম দরজার ওপাশ থেকেই বললো, “কি হইসে তোর? বন্ধু বান্ধবের সাথে ঝগড়া করে এসেছিস নাকি আদিত্যর সাথে?”

আদিত্যর কথা উঠতেই তিথির দুই চোখ দিয়ে অঝোর-ধারায় পানি পড়তে লাগল।
ভাবতেই কেমন অবাক লাগে, এই মানুষটা আর তার নেই। অথচ এক বছর আগেই সারা জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সে তিথির জীবনে এসেছিল।
তার প্রতিশ্রুতি কি এতটাই ভঙ্গুর ছিলো, এতটাই মিথ্যা ছিল, যার কোনো দামই নাই!

ঠিক উঠে গিয়ে রুমের আলো জ্বালিয়ে ফ্রেশ হতে গেলো। চোখে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করলো।
ড্রইং রুমে এসে দেখল ওর বাবা আর চাচ্চু মিলে গল্প করছে। তিথি তাদের পাশ কাটিয়ে রান্নাঘরে ঢুকলো।

“মা, এক কাপ চা দিও তো।”

“আগে বল কি হইসে তোর?”

“কিছু না মা। চা টা রুমে দিয়ে যেও একটু প্লিজ।”

পৃথিবীর লোক আর কিছুক্ষণ পরেই ফারজানা বেগম চা নিয়ে এলেন।
তিথি তার মায়ের কোলে মাথা রেখে বলল, “মা,আমি কি খুব বেশিই খারাপ?”

“বোকা মেয়ে, এসব কি কথা? খারাপ কেন হবি?”

“তাহলে মানুষ এরকম ভাবে ছেড়ে চলে যায় কেন?”

“কে এমন করল, বল দেখি আমায়?”

তিথি দীর্ঘশ্বাস চেপে বললো, “কেউ না।”

“হ্যাঁ, মানুষজনের কথা বাদ দে। মানুষের ধর্মই হলো ছেড়ে চলে যাওয়া! শুধুমাত্র তুই যাকে এত ভালবাসি সে ছেড়ে চলে না গেলেই হলো।
জানিস মা, আদিত্য ছেলেটা না অনেক ভালো। প্রথমে তো বুঝতে পারি নাই, পরে ওর সাথে কথাবার্তা বলে না বুঝলাম।”

তিথি কিছু বলতে গিয়েও চুপ করে গেলো। সে কিভাবে বলবে তার মানুষটা আর তার নেই! সে তাকে চরম ভাবে অপমান করে ছেড়ে চলে গিয়েছে। সমস্ত বিশ্বাস ভেঙ্গে কাঁচের টুকরোর মতো ভেঙ্গে দিয়েছে!
.
তিথি বালিশে মুখ গুঁজে বসে রয়েছে। চোখের পানিও আপনাআপনি বন্ধ হয়ে গেছে। চোখের এক ফোটা অশ্রু এর দাম আছে, ওরাই বা আর কত কষ্টে বিসর্জন হতে পারে!

তিথি ভাবতে লাগলো আরো তিন মাস আগের কথা। যখন আদিত্যের কথা তার পরিবার জানতে পেরে গিয়েছিলো। সে আদিত্যর কথা স্বীকার করতেই তার বাবাসহ সবাই নাকোচ করে দেয়। বলেছিল এসব প্রেম ভালোবাসার কোন অর্থ নাই।
আজ তার আব্বু আম্মু কথাটাই সত্যি হলো!
নিশাত একরকম নিজের পরিবারের সাথে তুমুল যুদ্ধ করেছিল। সে নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। এমনকি তার মা-বাবার সাথে কথা বলা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিলো। একটা কথা বলতে আসতেই মেজাজ দেখা তো।

অবশেষে মেয়ের এইরকম বেগতিক অবস্থা দেখিয়ে মনসুর সাহেব এবং ফারজানা বেগম সব মেনে নিয়েছেন।

এখন এটা ভেবে তিথির কষ্ট হচ্ছে যে, যার জন্য এত কিছু সে কই?
সেতো তাকে পুরোপুরি ভাবে এলোমেলো করে দিয়ে চলে গেল?
কি দরকার ছিল এমন ভালোবাসার, না ভালোবাসার অভিনয় করার?
তিথি দীর্ঘশ্বাস ফেললো। কান্না রা সব একসাথে ডুকরে উঠছে। কিন্তু তাকে তো কাঁদলে হবে না, শক্ত হতে হবে।
এতটাই শক্ত হতে হবে যে আদিত্যের যেকোনো স্মৃতি সে সহজে ভুলতে পারে!
কিন্তু, এ কি আদৌ সম্ভব??
.
.
.
চলবে,,

#এই_প্রেম_তোমাকে_দিলাম
#পর্ব_০২
#আফিয়া_আফরিন

মাত্র তো এক বছরের সম্পর্ক ছিল। তাতেই কি ভয়ঙ্কর মায়া পড়ে গেছে মিথ্যা মানুষটার উপর!
যার কন্ঠ শুনে ভোরে ঘুমের আবরণ ভাঙতো, এবং যার কন্ঠ শুনে রজনী কেটে যেতো, সেই মানুষটাকে সারা জীবনের জন্য হারিয়ে ফেলল তিথি।
হারিয়ে ফেললো বললো ভুল হয়, সেতো হারাতে চায় নাই। ওই মানুষটা নিজে থেকেই হারিয়ে গিয়েছে!
ভাবতেই বুক ফেটে যাচ্ছে।

নির্ঘুম একটা রাত কেটে গেল তিথির। সে জানে এরপরে রাত গুলোও তার নির্ঘুম কাটবে। ঘুমেরাও যে বড্ড বেশি স্বার্থপর; আদিত্যর মতো।

সকাল সকাল তিথির মা নাস্তার জন্য ডাক দিলে সাথে সাথে না করে দিলো। ভার্সিটিতে পর্যন্ত গেল না।
মোটকথা তার কোনো কিছুতেই ভালো লাগছিলো না। বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই মরে গিয়েছে। শুধুমাত্র, বেঁচে থাকতে হবে বলে তার এই বেঁচে থাকার অভিনয় করা।
না হলে তার মূল্যহীন জীবন রাখার কোনো মানেই হয় না। ঘরের মধ্যে বন্দি হয়ে থাকতেও ভালো লাগছে না তিথির। তাই বিকাল দিকে ছাদে গেলো।

হুট করে মনে পড়লো কাল থেকে তার ফোন বন্ধ। তিথি ফের সিঁড়ি দিয়ে নেমে দৌঁড়ে গিয়ে ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে মোট আটষট্টি টা মিসডকল উঠে আছে। চেক করে দেখলো সবকটা তার বন্ধুদের নাম্বার!

তিথি হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার চেক করলো। ভেবেছিলো আদিত্য হয়তোবা কোন মেসেজ বা কল করবে।
কিন্তু না, আশাভঙ্গ হতে হলো তাকে!
সে নিজে একবার আদিত্যকে মেসেজ দিতে চাইলো।
মেসেজ করতে গিয়ে দেখে, আদিত্য তাকে সব জায়গা থেকে ব্লক করে দিয়েছে।
একরাশ হতাশা নিয়ে বিছানায় বসে পড়ল তিথি।
এমন সময় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তার বন্ধুরা তাকে কল করলো।

তিথি কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে আকাশ ধমকে বললো, “তিথির বাচ্চা তিথি, খুব বড়লোক হয়ে গেছোস তুই তাই না? ফোন দিলেও তোর পাত্তা পাওয়া যায় না?”

তিথির আরেক বান্ধবী লিসা মুখ বাঁকিয়ে বললো,” বুঝোস না, প্রেম করে আমাদের বান্ধবী আমাদের ভুল হয়ে গেছে।”

তিথি মলিন কন্ঠে বললো,” এমন কিছু না,দোস্ত। কি খবর তোদের?”

“আমাদের খবর ভালোই। তোর কি হয়েছে? এভাবে কথা কেন বলছিস? কাল ভার্সিটিতে এলি, কিন্তু আমাদের সাথে দেখা না করে চলে গেলি কেন? আর কখন চলে গেলি সেটাও আমরা জানলাম না? পরে আদিত্য ভাই বললো, তুই নাকি চলে গেছিস!
তারপর থেকে একের পর এক ফোন দিয়ে যাচ্ছি, ফোনেও পাচ্ছি না। অনলাইনে নাই তুই। কি নাটক শুরু
করছিস?”

“বাদ দে, অরিন কোথায়?”

“ও গ্রামের বাসায় গেছে। নেটওয়ার্কের সমস্যা মনে হয়, তাই জয়েন করতে পারে নাই। তোকে কাল অনেকবার ফোন করেছে। পরে তো বিরক্তি নিয়ে হাবিজাবি বলতে বলতে চলেই গেলো।”

“ওহ।”

আকাশ তিথির মলিন কন্ঠ শুনে বুঝলাম কিছু একটা হয়েছে। কিন্তু কলে কিছু বলল না, লিসা জয়েন আছে বলে। এই মেয়েটা একটু বাঁকা স্বভাবের। খুঁচিয়ে কথা না বললে এর বোধহয় পেটের ভাত হজম হয়না।

আকাশ আলাদাভাবে তিথি কে ফোন করলো।
তিথি ফোন করতে আকাশ কড়া কন্ঠে বললো,”মিথ্যা কথা বলবি না তিথি, কিছু হইছে কি তোর?”

আকাশ তিথির সেই স্কুল লাইফের বেস্ট ফ্রেন্ড। তিথি নির্বিঘ্নে সমস্ত কথা একমাত্র আকাশের সাথেই শেয়ার করতে পারে। তাই এবারও সমস্ত দ্বিধা কাটিয়ে বললো,
“আদিত্য আমার সাথে ব্রেকআপ করেছে দোস্ত!”

“হোয়াট?”

“হ্যাঁ। সে নাকি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমার সাথে ভালোবাসার নাটক করেছে, অর্থাৎ টাইম পাস করেছে।”

“প্রতিশোধ? কিসের প্রতিশোধ?”

“ওই যে মনে নাই আমাদের ভার্সিটির প্রথম ক্লাসে ওর সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে গিয়েছিলাম, সেদিন ওকে একটা থাপ্পর মেরেছিলাম সেইটার প্রতিশোধ!”

আকাশ দাঁত কিড়মিড় করে বললো,” এইটা কোন ইস্যু হলো নাকি? দেখ, নতুন কেউ জুটেছে তাই তোর সাথে ব্রেকআপ করছে। শালার ক্যারেক্টার এর মধ্যে সমস্যা!”

“থাক বাদ দে, আমার কপালে যা লেখা ছিল তাই হইসে।”
“কিসের বাদ দিব? ছাড়বো না আমি ওকে।”

নাহ। কিছু করতে হবে না। এর বিচার আল্লাহ একদিন ঠিক করবে দেখিস। আমি তো টাইম পাস করার জন্য ওর জীবনে যাই নাই, ভালো তো বেসেছিলাম সত্তিকারের! আমার ভালোবাসার জোর যদি সামান্য একটু থাকে, তাহলে পস্তাবে একদিন ওই ছেলে। একটা কথা জানিস তো, জীবন কিন্তু চক্রের মত ঘূর্ণায়মান! ঘুরতে ঘুরতে এমন এক জায়গায় আসবে সেদিন আর কূলকিনারাও খুঁজে পাবেনা।”
.
.
পরদিন সকাল সকাল তিথি ক্যান্টিনে গিয়ে আকাশের সাথে দেখা করে দুজন মিলে একসাথে ক্লাসে গেলো। তিথি নিজেকে যথাসম্ভব স্বাভাবিক রেখেছে। হাসিখুশি ভাবেই নিজেকে সবার কাছে উপস্থাপন করেছে।
একটা সময় আদিত্যের সাথেও দেখা হল। আদিত্য কে দেখে তিথি ভালো খারাপ কোনো রিয়্যাকশন করে নাই। আকাশ ও চুপচাপই ছিল।
আদিত্য শুধুমাত্র তিথির দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি হেসে ওখান থেকে চলে গেল। তিথি আড়চোখে দেখল সবই। পরিশেষে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।
.
.
.
.
পরের দিন ক্যাম্পাসে এসে দেখি তার বন্ধু-বান্ধব কেউ আসে নাই। তিথি অরিন কে ফোন করল। অরিন জানালো, ‘সে আসতে পারবে না, গ্রামের বাড়ি থেকে এখনো আসে নাই।’
তারপর আকাশকে ফোন করল। আকাশ জানালো, ‘দরকারী একটা কাজে এসে আটকে গেছে।’

তিথি একরাশ বিরক্তি নিয়ে লাইব্রেরী রুমের দিকে এগোলো। সময় কাটানোর জন্য বই পড়াই এখন শ্রেয়! না হয় বাড়ি চলে গেলে মাতাকে হাজারটা প্রশ্ন করবে।

লাইব্রেরীতে ঢুকতেই তার চক্ষু চড়কগাছ!
আদিত্য সামনে একটা বই মেলে ধরে চেয়ারের উপর বসে আছে, আর তার কোলে উল্টোদিক ফিরে একটি মেয়ে বসে আছে। আদিত্য তার ঘাড়ে মুখ গুঁজে বসে আছে।
সাথে সাথে তিথির সারা শরীর ঘৃণায় শিউরে উঠলো। দৌড়ে লাইব্রেরী থেকে বের হলো।
রীতিমতো হাত-পা কাঁপছে তার। এমন একটা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।
এখন ব্রেকআপ হয়ে গেছে, সত্যি! কিন্তু একটা সময় তো প্রিয় মানুষ ছিলো। তাকে অন্য একটা মেয়ের সাথে এমন অবস্থায় দেখাটা যে কতটা কষ্টকর, সেটা এ মুহুর্তে তিথি হাড়েহাড়ে বুঝতে পারছে!
তিথি নিজেকে সামলে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো। উদ্দেশ্য তিথিকে তাদের রিএকশন কেমন হয় সেটা জানা?

তিথিকে দেখামাত্রই মেয়েটা তড়াক করে লাফিয়ে উঠলো। তিথি মেয়েটাকে চেনে। নাম শিমি! আদিত্যের সাথে একসাথেই পড়ে।

শিমি আদিত্যর দিকে তাকিয়ে বললো,”এই সে না? তোমার এক্স গার্লফ্রেন্ড ছিল!”

আদিত্য উপর নিচ মাথা ঝাঁকালো।
.
.
.
.

চলবে…….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে