আশিকি Part-12

0
1918

❤#আশিকি❤
#Madness_Of_Love
#Writer_Sanjana_Fahmida_Shabnam
#Part_12

আমাল অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সানার দিকে। আর সানাহ‌ও যেন হারিয়ে যাচ্ছে আমালের দৃষ্টির গহীনে। আমালের এক হাত সানার কোমর জড়িয়ে আছে। ( স্টোরি পিকের মতো?) হঠাৎ সানার ধ্যান ভেঙে যায় ও আশেপাশে তাকিয়ে দেখে সবাই ড্যাবড্যাব করে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে।

সানাহ আমালকে হালকা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। হঠাৎ ঘোরের মাঝে ধাক্কা লাগায় আমাল পিছিয়ে যায় তাও নিজেকে সামলে নেয়।

সানাহঃ হাও ডেয়ার টাচ মি,,,(রেগে)

আমালঃ এক্সকিউজ মি ম্যাম আমি আপনাকে না টাচ করলে এতক্ষনে আপনার কোমরে সোয়াহাহ হয়ে যেত।?

সানাহঃ আসলেই তো,,, ( মনে মনে)

আমালঃ u should thanked me. কিন্তু থ্যাঙ্ক ইউ বলার বদলে আপনি আমাকে ধাক্কা দিচ্ছেন সাথে ঝাড়িও হাও রুড,,,,

সানাহ মনে মনে গিল্টি ফিল করছে বেচারা ওকে হেল্প করলো আর ও বেচারা কে ধাক্কা প্লাস ঝাড়ি শুনিয়ে দিল।

আমাল এখনো চোখ ছোট ছোট করে সানার দিকে তাকিয়ে আছে হয়তো স্যরি শোনার অপেক্ষায়। সানাহ আমতা আমতা করে স্যরি বলতে নিলেই হঠাৎ ওর খেয়াল হয় আমাল এখানে কি করে। আমাল নিশ্চয়ই ওকে ফলো করতে করতে কলেজ অবদি চলে এসেছে।

কথা গুলো ভাবতেই রাগ উঠে যাচ্ছে সানার।।সানাহ রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে আমালের দিকে তেড়ে গিয়ে বলে।

সানাহঃ ইউউউ,,, আমার পিছু পিছু কলেজ অবদি চলে এসেছো তুমি।? তুমি কি ভাবো আমি কিছু বুঝি না। তোমাদের মতো ছেলেদের চেনা আছে আমার। তুমি আসলেই এক নম্বরের BBN। সেজন্যই সেদিনের এতো অপমানের পরেও আমার পিছু পরে আছো।

আমালঃ what is BBN?? ??

সানাহঃ বেশরম বেহায়া নির্লজ্জ তিনটে মিলে BBN। একদম তোমার জন্য পারফেক্টলি তৈরি। ( আমালের মুখের উপর বলল)

আমাল সানার কথায় হাসবে না রাগ করবে বুঝতে পারছে না। BBN এর ফুল ফর্ম শুনে হাসবে নাকি ওকে এতো বড় অপবাদ দিয়েছে তার জন্য রাগবে।

আমালঃ এক্সকিউজ মি এটা তোমার একার কলেজ না I’m also a student of this college ?

আমালের কথায় সানাহ চুপ হয়ে গেল। সানাহকে চুপ করে থাকতে দেখে আমাল আবার বলতে শুরু করলো।

আমালঃ ইট্ট্স ওকেই মিস সানাহ। নিজেকে ব্লেম করার দরকার নেই একচুয়ালি “বারে বারে দেশো ম্যায় এসি ছোটি ছোটি বাতে হোতি রেহতি হ্যায়”।?

সানাহঃ ????

আমালকে একটা মেয়ের সাথে ঝগড়া করতে দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখছিল আবিদ। ব্যাপারটা বুঝার জন্য দ্রুত আমালের কাছে চলে আসে ও।

আবিদঃ কি হয়েছে আমাল?? তুই চিনিস এনাকে এভাবে ঝগড়া করছিস কেন?? ( আমালের দিকে তাকিয়ে)

আমালঃ আমি কোথায় ঝগড়া করছি এয়ার,,, তুই শুধু শুধু আমাকে ব্লেম করবি না। আমিতো মিস সানাহ কে পড়ে যাওয়া থেকে বাচিঁয়েছি।কিন্তু কোথায় ইনি আমাকে থ্যাংকস বলবে তা না ইনি গায়ে পড়ে আমার ঝগড়া করছেন?। আমাকে ইনসাল্ট করছে আর BBN ও বলছে,,, ( মুখ ছোট করে)

আবিদঃ BBN ???

আমালঃ বেশরম বেহায়া নির্লজ্জ তিনটে মিলে একটা ফর্ম ?

আবিদ কিছুক্ষন শক্ড হয়ে থেকে জোরে জোরে হেসে দেয়।

আবিদঃ OMG আমি এরকম শর্ট ফর্ম প্রথম বার শুনলাম। ?????? ইউ আর গ্ৰেট মিস…

সানাহঃ সানাহ,,,, ?

আমালঃ ??? তোকে আমি পরে দেখে নিব আবিদের বাচ্চা। হেসে নে যত ইচ্ছে। ( মনে মনে)

আবিদঃ ওকেই ওকেই এখন হাসা বাদ দিয়ে মেইন টপিকে আসি,,,, ( অনেক কষ্টে হাসি আটকে) আমি জানি না দোষ কার তাও আমার বন্ধুর তরফ থেকে আমি ক্ষমা চাইছি। আ’ম স্যরি সানাহ। আমরা যেহেতু এক কলেজেই পরি ঝগড়া বাদ দিয়ে ফ্রেন্ড হয়ে থাকা যায় না??

সানাহঃ আপনার ফ্রেন্ড হ‌ওয়া যায় কিন্তু এনার না ?( আমালের দিকে তাকিয়ে)। আমার ক্লাসের সময় হয়ে গেছে I have to go….

সানাহ আবিদকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায়।

সানাহ চলে যেতেই আবিদ আমালকে জিঙ্গেস করলো।

আবিদঃ এখন বল ব্যপারটা কি আর মেয়েটা কে ছিল,,,

আমালঃ তোর এই আশিক বন্ধুর #আশিকি।

আবিদঃ দ্যাট্স মিন এটাই সে মেয়ে ?এখন আমাকে ভালোভাবে এক্সপ্লেইন করে বল কেমনে কি। কোথা থেকে খুঁজে বের করলি তোর জুলিয়েটকে।

আমাল সানার সাথে এক্সিডেন্ট হওয়া থেকে শুরু করে একটু আগের সব ঘটনা খুলে বলল।

আবিদঃ যাই বলিস না কেন আমাল মেয়েটা পুরোই বারুদ ??তোর লাইফটা পুরোই তেজপাতা হইয়া যাইবো দোস্ত ??

In Class Room….

সানাহ ক্লাসে এসেই সবার সাথে ভালো ফ্রেন্ডশিপ করে ফেলেছে। সানাহ অনেক মিশুক তাই কারো সাথে মিশতে ওর বেশি সময় লাগে না।

সানাহ সেকেন্ড বেঞ্চে বসে আছে ওর পাশের সীটে একটা ছেলে বসা। সানাহ টুকটাক কথা বলছে ছেলেটার সাথে।

ক্লাসে টিচার ঢুকতেই সবাই দাঁড়িয়ে যায়। টিচার সবার সাথে পরিচয় হচ্ছেন যেহেতু আজকে প্রথম ক্লাস।

আমালঃ Can I come in….

সানাহ আর টিচার সহ সবাই দরজার দিকে তাকাতেই দেখে আমাল আর আবিদ দাঁড়িয়ে আছে।

টিচারঃ কাম ইন আমাল।

আমালঃ থ্যাংকস,,,

আমাল আর আবিদ ভিতরে প্রবেশ করে। আমাল সানার পাশের সিটের ছেলেটাকে চোখ রাঙিয়ে উঠে যেতে ইশারা করতেই ছেলেটি হন্তদন্ত করে উঠে একদম পেছনে চলে যায়। সানাহ ছেলেটির এভাবে উঠে চলে যাওয়াতে অনেক অবাক হয়। আমাল বাঁকা হেসে সানার পাশে বসে পরে। আবিদ অন্য সাইডে গিয়ে বসে পরে।

আমালঃ একটা কথা বলার ছিল সানাহ,,, ( আস্তে আস্তে)

সানাহ আড়চোখে আমালের দিকে তাকিয়ে বলল,,

সানাহঃ হোয়াট??

আমালঃ তুমি তখন ঠিক ধরেছিলে আমি তোমাকে ফলো করছি ??

সানাহ রেগে আমালের দিকে তাকালো। দাঁত কটমট করতে করতে বললো ও।

সানাহঃ তুমি আসলেই,,,

আমালঃ BBN I know,,,, সানার আগে আমাল বলে ফেলল.?

এভাবে শুরু হয়েছে আমালের জালাতন। পুরো ক্লাস টাইম আমাল সানাহকে টিস করে রাগিয়েছে। এভাবে কেটে যায় অনেক দিন। আমালের জ্বালাতন কমার বদলে দিন দিন বেড়েই চলছে। সানাহ প্রচন্ড বিরক্ত হয় আমালের কথা গুলোতে তাও আমাল থেমে নেই। সানাহকে রাগানো যেন ওর ডেইলি রুটিন।

রাতে,,,

বিছানায় বসে ব‌ই পরছে সানাহ। কিন্তু কিছুতেই পড়ায় মন দিতে পারছে না ও। বারবার শুধু আমালের খেয়াল আসছে মনে। ও পাশে থাকলে অন্য রকম একটা অনুভূতি হয় সেটা আমালের সামনে প্রকাশ করে না ও। আমালের কথা মনে পরতেই আনমনে হেসে ফেলে সানাহ। আসলে আমালের পাগলামো গুলো সানার অনেক ভালো লাগে কিন্তু সেটা ও প্রকাশ করে না। আমালের সব কিছুতেই সানাহ ভালোলাগা খুঁজে পায়। আমালের স্মাইলটা সানার অনেক পছন্দ। কখনো আমালকে স্মাইল ছাড়া দেখে নি ও। আমালের ঠোঁটে অলওয়েজ স্মাইল থাকবেই। মাঝে মধ্যে সানাহ গভীর ভাবে চিন্তা করে এতো হাসি খুশি কেউ কিভাবে থাকতে পারে। এই হাসিটার প্রতিই গভীর ভাবে দূর্বল হয়ে পরছে সানাহ।

সানাহ আমালের কথা গুলো ভেবে ব্লাশিং হচ্ছে এমন সময় ফোন বেজে উঠে ওর।

সানাহঃ হ্যালো আসসালামু আলাইকুম (কল রিসিভ করে)

আমালঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম লাভ। কি করছো নিশ্চ‌ই আমার কথা মনে করছো আর আমাকে মিস করছো।

আমালের কন্ঠ শুনে হার্টবিট আবারো বেড়ে গেল ওর। আমালের মুখে লাভ শব্দটা সোজা হৃদয়ের গভীরে লাগে। অনেক বার আমালকে না করেছে সানাহ এসব নামে যেন ওকে না ডাকে। কিন্তু আমালতো আমাল‌ই।

সানাহকে চুপ করে থাকতে দেখে আমাল আবারো বলল।

আমালঃ বাহ আর সময় তো আমাকে রিন পাওয়ার হোয়াইট দিয়ে ধূয়ে ফেলো কিন্তু আজ এতো চুপচাপ ব্যপার টা কি।

সানাহঃ ক কই চুপ করে আছি আর তোমাকে বলেছিনা আমাকে কল করে ডিস্টার্ব করবে না। ?সারাদিন কলেজে জ্বালাও তাও তোমার শান্তি হয় না রাতে কল করেও জ্বালাতন শুরু করো।

আমালঃ এটা ভালোবাসা শুরুর প্রথম ধাপ লাভ।

সানাহঃ তোমাকে ভালোবাসতে আমার বয়েই গেছে ?

আমালঃ ভালো না বাসলে এতক্ষন আমার কথা ভাবছিলে কেন??

সানাহঃ ক ক‌ই তোমার কথা ভাবছি। এসব ফালতু কথা পাও কোথা থেকে ( হচকিয়ে গিয়ে)

আমালঃ আমি সব‌ই বুঝি সানাহ। সো ডোন্ট ট্রাই টু সে লাই,,

সানাহঃ ব্যাঙ বুঝো,,, ?

সানাহ ফোন কেটে বালিশের নিচে গুঁজে রাখলো।

আমালঃ উফফফ কবে যে আমার লাভ স্টোরি শুরু হবে কে জানে ?

To be continued….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে