অপ্রিয় প্রিয়জন পর্ব-১৩

0
313

#অপ্রিয়_প্রিয়জন
#Fiza siddique
#পর্ব-13 (রোমান্টিক)

হটাত করেই বৃষ্টিকে কোলে তুলে নিয়ে নিয়ে ছাদের দিকে যায় মেঘ। ছাদে এসে ভীষণ অবাক হয় বৃষ্টি। পুরো ছাদটা ফেয়ারি লাইট দিয়ে সাজানো, ছাদের মাঝে একটা দোলনা, সেটা পুরোটা সাদা ফুল দিয়ে সাজানো। পুরো ছাদে গোলাপের পাঁপড়ি, লাভ শেপের বেলুন দিয়ে ভরা। সবকিছু দেখতে দেখতে বৃষ্টি নেঘকে একপ্রকার ভুলে গেছে। ঘুরে ঘুরে সবকিছু দেখায় ব্যাস্ত বৃষ্টি হটাত করে পেটে কারোর ছোঁয়া অনুভব করে। ওর বুঝতে আর বাকি নেই এটা কে হতে পারে। তাই মুচকি হেসে মানুষটার শক্ত বুকে মাথা এলিয়ে দেয়। মেঘও পরম আবেগে জড়িয়ে নেয় তার প্রিয়তমাকে।

বেশ কিছুক্ষন সময়টা এভাবে উপভোগ করে মেঘ বৃষ্টিকে দোলনায় বসিয়ে টুপ করে ওর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ে। মেঘের হটাত এমন আক্রমনে বৃষ্টি থ হয়ে যায়। জীবনে প্রথম কোনো ছেলে বৃষ্টিকে এত কাছ থেকে ছুঁয়ে দিচ্ছে, সে আর কেউ নয় তার হাজবেন্ড। এসব ভাবনার মাঝে মেঘ বৃষ্টির পেটের কাছের শাড়িটা একটু সরিয়ে সেখান নক ঘষতে থাকে। এবার বৃষ্টির আর সহ্য করতে পারেনা। এক হাতে খামচে ধরে মেঘের চুল। হালকা ব্যাথা পেলেও মেঘ মুচকি হেঁসে দুই হাতে কোমর জড়িয়ে ধরে আবারো নাক ঘষতে থাকে। আর সহ্য করতে না পেরে বৃষ্টি কোনরকমে বলে,”ম ম মেঘ কি ক করছেন, ছাড়ুন প্লীজ।”

বৃষ্টির কথায় বাঁকা হেসে মেঘ বৃষ্টির পেটের আরও কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলে,” কি করলাম আমি বৃষ্টিরানী। যা করার তো তুমি করেছো, আমাকে পুরো পাগল করে দিয়েছো।” মেঘের প্রতিটা কথার সাথে সাথে মেঘের ঠোঁট বৃষ্টির পেট স্পর্শ করে। এর ফলে জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকে বৃষ্টি। বৃষ্টিকে আরো পাগল করে দিতে ছোটো ছোটো চুমুতে ভরিয়ে দেয় পুরো পেটে। তারপর কোল থেকে মাথা তুলে বৃষ্টির হাত নিজের হাতে নিয়ে আঙ্গুলের ভাঁজে আঙ্গুল গলিয়ে দেয়। তারপর এক হাতে বৃষ্টির নীচু করে মুখের থুতনি ধরে উঁচু করে বলে, জানো আমার অনেকদিনের ইচ্ছে ছিলো তোমার সাথে একসাথে ছাদে বসে চন্দ্রবিলাস করার। যেখানে তুমি তোমার চাঁদ দেখতে ব্যাস্ত থাকবে আর আমি আমার চাঁদটাকে। এখনও সবকিছু আমার কাছে স্বপ্নের মতো লাগছে। এই যে মনে হচ্ছে আমি তোমাকে বাস্তবে নাহ স্বপ্নে ছুঁয়ে দিচ্ছি। তোমাকে নিজের হাতে শাড়ী পড়িয়ে দিয়েছি, তোমাকে ছুঁয়ে দিয়ে…………

মেঘ আর কিছু বলতে পারলোনা তার আগেই বৃষ্টি মেঘের মুখে হাত দিয়ে আটকে দিলো, আর লজ্জায় মেঘের বুকে মুখ লুকালো।

মেঘ আবারও বৃষ্টির কানের কাছে লো ভয়েসে বলে ওঠে, শোননা! আজ যদি কিছু ভুল হয়ে যায় তাহলে কিন্তু দোষ দিওনা। নিজেকে সামলানো অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ছে বৃষ্টিরানী। মেঘের কথায় বৃষ্টি মেঘের বুকে থেকে বলে ওঠে, আপনি আমার স্বামী। আমার উপর আপনার সম্পূর্ণ অধিকার আছে। আর মনের অধিকার তো অনেক আগেই ডিয় দিয়েছি আপনাকে মেঘ।

ব্যাস মেঘও পেয়ে গেলো অনুমতি। এবার ঝট করে বৃষ্টিকে কোলে তুলে নিয়ে বলে, তবে অধিকার যখন পেয়েছি একটু তো অধিকার দেখাতেই হয় বৃষ্টিরানী। বলেই চোখ টিপ মেরে নিজেদের রুমের দিকে পা বাড়ায়। আর এদিকে বৃষ্টি লজ্জায় মেঘের বুকে মুখ লুকায়।

রুমে এসে বৃষ্টিকে কোল থেকে নামিয়ে বেডে শুইয়ে দেয়। তারপর একটা কানের দুল খুলে সেখানে একটা চুমু দেয়, অপর কানের দুল খুলে দিয়ে একই কাজ করে। তারপর গলায় পরে থাকা হারটা আস্তে করে খুলে সেখানেও চুমু দেয়। এভাবে আস্তে আস্তে সব গয়না খুলে দেয় মেঘ বৃষ্টির। আর মেঘের এমন অত্যাচারে বৃষ্টির জান যায় যায় অবস্থা। এক মরণব্যাধী, সুখের মরণব্যাধী বলে মনে হয় বৃষ্টির। চোখ বন্ধ করে বিছানার চাদর খামচে ধরে মেঘের ভালোবাসা অনুভব করতে থাকে। মেঘ আস্তে করে বৃষ্টির কপালে নিজের ঠোঁট ছোঁয়ায়। তারপর সময় নিয়ে একটা দীর্ঘ চুমু দেয়। এরপর দুইচোখের পাতাতে, নাকের ডগায়, সারামুখে চুমুতে ভরিয়ে দেয়। এদিকে মেঘের আচরণে থরথর করে কাঁপতে থাকে বৃষ্টি। নিজের খেই হারিয়ে ফেলছে বারবার। এক অজানা সুখে নিজেকে ভীষণ সুখি মনে হচ্ছে তার।

মেঘ কিছুক্ষন এক দৃষ্টিতে তার প্রিয়তমাকে দেখতে থাকে। তারপর নিজের ঠোঁট এগিয়ে এনে আলতো করে চুমু এঁকে দেয় প্রিয়তমার ঠোঁটে। এবার আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে ডান হাত বৃষ্টির চুলের মাঝে দিয়ে ডুব দেয় বৃষ্টির ঠোঁটে। মেঘের এমন আবেদনময়ী ডাকে আর নিজেকে সংযত রাখতে পারেনা বৃষ্টি। তাই দুই হাতে মেঘের চুল আঁকড়ে ধরে নিজেও রেসপন্স করতে শুরু করে। এভাবেই দুজনে মেতে ওঠে ভালবাসার আদিম খেলায়। যেখানে দুটো মনের সাথে মিলন হলো দুটো আত্মারও।
_____________

সকালের সূর্যের আলো মুখে পড়ায় ঘুম ভেঙে যায় বৃষ্টির। পিটপিট করে চোখ খুলে নিজের অবস্থান বুঝতে গিয়ে নিজেই লজ্জায় পড়ে যায়। মেঘের খালি বুকের উপর মাথা দিয়ে শুয়ে ছিলো, এটা ভাবতেই এক আলাদা শিহরণ বয়ে যায় সারা শরীর জুড়ে। কাল রাতের কথা মনে পড়তেই লজ্জায় দুইহাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে নেয় বৃষ্টি। তারপর নিজের হাতের আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে দেখে মেঘকে। কি কিউট ভাবে ঘুমাচ্ছে। দেখে কেউ বলবেই না এই মাসুম ছেলেটা এতটা দুষ্টু হতে পারে। সারারাত ঘুমাতে দেয়নি বৃষ্টিকে, ভোরের দিকেই চোখ লেগেছিলো তাও অভ্যাসবসত সকাল সকাল ঘুম ভেঙে যায়।

মেঘের ঘুমন্ত চেহারা দেখে বৃষ্টির মাথায় একটা ইচ্ছে উঁকি দেয়। কিন্তু ইচ্ছেটা পুরন করবে কী করবেনা ভাবতে ভাবতেই টুপ করে মেঘের গালে একটা চুমু খেয়ে বেড থেকে নামতে যাবে তখনই হেচকা টানে মেঘের বুকের উপর গিয়ে পড়ে বৃষ্টি। হটাত করে এমন হওয়ায় থতমত খেয়ে যায় বৃষ্টি। সামনে তাকাতেই দেখে মেঘ দুষ্টু হেঁসে তাকিয়ে আছে বৃষ্টির দিকে। এবার মেঘ বৃষ্টির কোমড় ধরে আরো কাছে টেনে নেয় তারপর বলে, এটা কেমন কথা বউ? তুমি সকাল সকাল আমাকে মর্নিং কিস দিলে আর আমি সেটা রিটার্ন না দিয়ে কিভাবে থাকি বলো? তোমার হাজবেন্ড আবার আদরের ব্যাপারে অনেক দয়ালু। বলেই মুচকি হাসে।

মেঘের এমন কথায় বৃষ্টি ভীষণ লজ্জা পায়, সাথে নিজের উপর রাগও হয়। কি দরকার ছিলো নিজের ইচ্ছেটা পুরন করার। কিন্তু ও বা কি করবে, মেঘকে এভাবে বাচ্চাদের মতো ঠোট উল্টে ঘুমাতে দেখে নিজেকে আর আটকাতে পারেনি। কিন্তু এখন যে মেঘ এটা নিয়ে ওকে অনেক লজ্জা দেবে সেটা ভালই বুঝতে পারছে। তাই কোনরকমে ওখান থেকে কেটে পড়তে চাইলো। কিন্তু মেঘ সেটা হতে দিলোনা। বৃষ্টিকে নিজের সাথে আরও মিশিয়ে নিয়ে বলে ওঠে, ” মর্নিং কিস দিকে ভালো কথা, তবে সঠিক জায়গায় দাওনি তো। দিস ইজ নট ফেয়ার। এবার ঝট করে আমার ঠোঁটে কিস দাওতো দেখি।”

দেখুন অনেক বেলা হয়ে গেছে। আমাকে উঠতে দিন, নতুন বউ বেলা করে উঠলে সবাই কি মনে করবে বলুন তো?

বৃষ্টির কথায় মেঘ বাঁকা হেঁসে বলে ওঠে, হু আমিও তো সেটাই বলছি। জলদি করে আমাকে মর্নিং কিসটা দাও। তাহলে আমিও তোমাকে ছেড়ে দেবো। আচ্ছা থাক, আমার জিনিস আমিই নিয়ে নিচ্ছি। বলেই মেঘ বৃষ্টিকে নীচে ফেলে যেই ঠোঁটে কিস করতে যাবে তখনি বৃষ্টি হাত দিয়ে মেঘের মুখ চেপে ধরে আর বলে,

ছি মেঘ। আপনি একজন ডক্টর হয়ে এসব কী করছেন বলুন তো? এখনও তো ব্রাশ করিনি আমি। কতো উনহাইজেনিক বলু…………
ব্যাস আর কিছু বলতে পারলোনা তার আগেই বৃষ্টির হাত দুটো নিজের দুই হাতে চেপে নিজের ঠোঁটের সাথে বৃষ্টির ঠোঁট মিলিয়ে দেয়। প্রথমে বৃষ্টি ছটফট করলেও কিছুক্ষনের মধ্যেই শান্ত হয়ে গিয়ে নিজেও রেসপন্স করতে শুরু করে।

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে