seeing with you part-21+22

0
1367

#seeing_with_you
Episode – 21 #কোথায়_সে
Writer – Zaira Insaan

কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ে সে। এদিকে টেনশনে ঘুম হারাম হয়ে যায় মুরাকের। কি একটা জ্বালা কিছুতেই শান্তি নেই শনি গ্ৰহন লাগছে তার জীবনে। টেনশন চিন্তা ভাবনা এসবের মধ্যেই রাত কাটিয়ে দেয় মুরাক।
সকাল হতেই মুরাক আবার ফোন চেক করে, না কোন পরিবর্তন হয়নি আগের মতই আছে ব্লক। বিরক্তিতে মুখ দিয়ে তিক শব্দ করে সে আর না পেরে ইভানকে কল করে ইভান রিসিভ করতেই মুরাক একটু শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করে,, মুনতাহা কোথায়, না মানে কল করছিলাম রিসিভ করছে না সে দাদির অসুখের জন্য কথা বলার আছে একটু দাও তো।” এমন উল্টো পাল্টা কথা শুনে কিছু বুঝে না ইভান কিন্তু কথা বলার সময় মুরাকের কন্ঠস্বর কেঁপে উঠছে আর তাড়া নিয়ে কথা বলছে সে। ইভান ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে বলে,, ভার্সিটি গেছে আজকে।” রাগ ও বিরক্ত প্রকাশ পায় তার মুখে তাও কোনমতে ‘আচ্ছা’ বলে ফোন কেটে দেয়। হালকা চমকে উঠে ইভান তার ব্যবহারে এমন কেন করছে সে? আর মোমোর সাথে কি সর্ম্পক তার? এসব প্রশ্ন এখন তার মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগল।
।।।।।
।।।।।
নাস্তা না করেই ভার্সিটির সামনে ১০ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছে সে। কখন ছুটি ‌হবে আর মোমোর সাথে কথা বলে মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং দূর করবে। দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যথা হয়ে যায় তার কিন্তু ছুটি হওয়ার নাম নেই বিরক্তিতে বিড়বিড় করে বলে উঠে,, কি এমন পড়ালেখা করে তলায় ফেলতেছে আজকের মধ্যে কি বিদ্যাসাগর করবে নাকি ধুর!!”
পাঁচ মিনিট পরই ছুটি হয় সব ছেলে মেয়েরা গল্প করতে করতে বেড়িয়ে আসছে কিছু মেয়ে তো হা করে তাকিয়ে আছে মুরাকের দিকে মুরাক তাদের দিকে তাকাচ্ছে না। সে শুধু ব্রু কুঁচকে মোমো কে তালাশ করছে। একটা মেয়ে মুরাকের সামনে এসে বলছে,, কি, কাকে খুঁজছেন? মুরাক মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলে,, মুনতাহা কে।” মেয়েটি বলে,, কোন মুনতাহা? মুরাক বিরক্তিতে বলে,, কয়টা মুনতাহা আছে এখানে? মেয়েটি বলে,, সাতটা মুনতাহা আছে, আপনার সামনেও একজন দাঁড়িয়ে আছে।” মেয়েটির কথা শুনে পিছনে একদল ছেলে মেয়ে হো হো করে হেসে দিল মুরাক ব্রু উঁচু করে বলে,, মুনতাহা তাসরিন মোমো কে, ও তো এখানেই পড়ে না ওর কথায় বলো!!” বিরক্তিতে নাক মুখ কুঁচকে টিটকারি মেরে বলে মুরাক। মেয়েটি সুর টেনে বলে,, ও~~~ মোমো, মোমো তো আজকে ভার্সিটি আসে নাই। মুরাক অবাক হয়ে বলে,, কিহ? মোমো আজকে আসে নাই? কিন্ত ওর ভাই তো… তুমি সিউর তো যে ও আজকে আসে নাই? মেয়েটি হাসি মুখে বলে,, আরে ভাইয়া কি যে বলেন, আমার পুরো ভার্সিটি খবর থাকে কে আসে কে আসে না সো আপনি যান।” তারপর মেয়েটি আস্তে করে বলে,, নাহলে আপনার উপর ক্রাস খেতে খেতে এখানে অর্ধেক মেয়ে মরেই যাবে।” মুরাক আশেপাশে তাকালো সত্যি সত্যি অনেক মেয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে সাথে কিছু ছেলেও মুরাক আর এক মুহূর্ত দেরি না করে গাড়িতে উঠে বসে গাড়ি স্টাট দেয়। রাস্তার এক পাশে গাড়ি থামিয়ে সে চিন্তা করতে লাগল মোমো কোথায় থাকতে পারে হঠাৎ তার রিতুর কথা মনে পড়লো মোমো তো রিতুকে সব কিছুই বলে সে সাথে সাথে কল করে রিতুকে প্রথম বারে রিসিভ না করলেও দ্বিতীয় বারে রিসিভ করে মুরাক বলে,, তুমি কোথায় আর মোমো কি তোমার সাথে আছে? রিতু ব্যস্ত স্বরে বলে,, আরে না আমি ঢাকায় আর মোমোর সাথে আমার ৪দিন কথা হয় নায় কেন কি হইছে? মুরাক কিছু না বলে ফোন কেটে দেয় আবার গাড়ি স্টাট দেয়।
।।।।।
।।।।।
সন্ধ্যা নেমে এলো কিন্তু কোথাও মোমো কে খুঁজে পাচ্ছে না সে এক জায়গায় গাড়ি থামিয়ে বেরিয়ে আসে হঠাৎ ইভান কল দেয় রিসিভ করে মুরাক অপাশ থেকে ইভান বলে,, ভাইয়া আপা কি তোমার সাথে আছে? মুরাক অবাক হয়ে বলে,, না কেন সে ঘরে যায় নি? ইভান চমকে উঠে বলে,, না সে আসি নি।” মুরাক এবার বলে,, ও আজকে ভার্সিটি ও আসি নি।” ইভান অবাকের চরম পর্যায় গিয়ে বলে,, কিহ? ও তো বলেছিল ও ভার্সিটি যাচ্ছে তাহলে আপা কোথায়? মুরাক ও চমকে যায় তার কথা শুনে। তাহলে সত্যি করে মোমো কোথায়? মুরাক ফোন কেটে চিন্তা করতে লাগল মোমো কোথায় হতে পারে তার মাথায় রিদান ও শেফালীর চেহারা ভেসে ওঠে সে তৎক্ষণাৎ রিদানকে কল করে। রিদান ও শেফালী বসে কথা বলে বলে হাসছিল রিদানের মোবাইলে মুরাকের কল দেখে দুজনেই হাসি বন্ধ হয়ে যায় রিদান ফোন উঠিয়ে বলে,, হ্যালো!
মুরাক সাথে সাথে বলে,, @@##**$$ বল মোমো কোথায়? রিদান বলে,, মোমো কোথায় মানে আমি কি জানি ও কোথায়!” মুরাক প্রচন্ড রেগে বলে,, দেখ মাথা খারাপ করিছ না আমি জানি তুই মোমো কে গুম করে রাখছোস এখন বল ও কোথায়।” রিদান দাঁড়িয়ে বলে,, মোমো কে গুম করতে যাব কেন আজব! আমি সত্যি করেই জানিনা ও কোথায় অনেক দিন ধরেই কথা হয়নি ওর সাথে, এখন আমার টেনশন হচ্ছে কোথায় হতে পারে ও।” মুরাক চেঁচিয়ে উঠল,, সকাল থেকে ও কোথায় কেউই জানেনা, মিথ্যা বলে ঘর থেকে বের হয়ছে এখনো পর্যন্ত ওর কোন খবর নাই আর তুই বলছিস তুই জানোস না।” রিদান বলে,, দাঁড়া আমি আসছি বল তুই কোথায় দুজনেই খুজবো ওকে।” মুরাক একটু শান্ত গলায় বলল,, ডিসি হিলের ওখানে।”
‘ দাঁড়া আমি আসছি ‘ বলেই ফোন কেটে দেয় রিদান। শেফালী দাঁড়িয়ে বলল,, কি হয়েছে আবার ও তোমাকে কল করল কেন? রিদান ওর দিকে তাকিয়ে বলে,, সকাল থেকে মোমো কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ওকেই খুজতে যাচ্ছি আমি আর মুরাক!” রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলে শেফালী ঠোঁট বেঁকে বলে,, দুশমনের সাথে খুজতে যাচ্ছো, বাহহ! রিদান পিছনে তাকিয়ে বলে,, বন্ধু ও আমার দুশমন না।” বলে বেরিয়ে যায় রিদান।
।।।।।
।।।।।
কিছুক্ষণ পরেই রিদান ডিসি হিলের ওখানে আসে রিদান মুরাকের কাছে গিয়ে বলে,, সব খানে খুঁজে দেখছিস? মুরাক তাকিয়ে বলে,, কিছু জায়গায় দেখা হয়নি।” রিদান তার হাত ধরে বলে,, চল দুজনেই খুঁজে দেখি, চট্টগ্রাম এর মধ্যেই তো থাকবে এর বাহিরে তো আর যেতে পারবে না চল।” গাড়ির কাছে যেতে নিলে মুরাক তার ধরে শান্ত গলায় বলে,, সরি তোকে গালি দেওয়ার জন্য।” রিদান এক ব্রু উঁচু করে বুকে দুহাত গুজে বলে,, ১৫ বছর ধরে অনেক গালি দিলি এগুলোর জন্য মাফ চেয়ে নে।” মুরাক মাথা নিচু করে বলে,, অসংখ্য সরি!” রিদান হেসে তার মাথায় চাটি মেরে বলে,, আচ্ছা হয়ছে, এখন চল রাত হয়ে যাচ্ছে পরে তাকে খুঁজতে কষ্ট হবে।” মুরাক গম্ভীর হয়ে মাথা নাড়ে তারপর যে যার গাড়িতে করে সব জায়গায় গিয়ে ছবির মাধ্যমে খুঁজতে লাগল।

চট্টগ্রামে সব জায়গায় খুঁজেও মোমো কে পাওয়া যায়নি। অনেকেই মোমো কে দেখছে বলে এদিক সেদিক ঘুরিয়েছে তাদের। এগারোটা বেজে গেলো দুজনেই চরম হতাশ হয়ে যায় আর এদিকে ইভান ও মোমোর সব বান্ধবীর সাথে কথা বলে জানতে চেষ্টা করছে কিন্তু সবাই বলছে কেউই জানেনা সে কোথায়। মুরাকের ভয় করছে ভয় ভয় কন্ঠে বলে,, যদি মোমোর কিছু হয়ে যায়? রিদান বলে,, কিছু হবে না, মেয়েটি কি বোকা নাকি গাধা যে উধাও হয়ে গেল সবাই কে টেনশনে রেখে অদৃশ্য হয়ে গেছে!!” মুরাক অন্য দিকে তাকিয়ে একটু চিন্তা করে আবার রিদানের দিকে তাকায় বলে,, “পুলিশের কাছে চল!!”

(চলবে…)

#seeing_with_you
Episode – 22 #সত্যটা
Writer – Zaira Insaan

রাত সাড়ে এগারোটায় পুলিশ থানায় বসে আছে রিদান ও মুরাক দুজনেরই মাথা গরম কারণ সামনের পুলিশটি পান চিবিয়ে মুখে টুস টাস আওয়াজ করে কথা বলছে।‌ মুরাকের মেজাজ খারাপ হয়ে যায় বলে,, মুখ পরিষ্কার করে কথা বলেন!” পুলিশ দাঁত কেলানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নেয় তারপর বলে,, তারমানে মুনতাহা নামের মেয়েটি সকাল থেকে নিখোজ।” রিদান ঠান্ডা মাথায় বলে,, জ্বী…। কিছু বলার আগে পুলিশের কল আসে লোকটি ইশারা করে যেতে বলে পাশে থাকা আরেকটি লোক বলে,, যান এখন সকালে আসবেন।” রিদান মুরাক একে অপরের দিকে তাকিয়ে বিরক্তিতে উঠে বেরিয়ে আসে। হাঁটতে লাগলো তারা দুজন কারো মুখে কোন কথা নেই সামনে পার্কে এসে পড়ে তারা দুজনেই এক বেঞ্চে বসে দুজনেই আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে তাও তারা কোন কথা বলছে না। হয়ত লজ্জায় বা আগের মত সেই বন্ধুত্ব টি নেই। আকাশের দিকে তাকিয়ে তারা নানান কথা ভাবছে হঠাৎ রিদান বলে উঠে,, আগের দিন গুলো কত সুন্দর ছিল না রে? মুরাক ‘হুম’ বলে চুপ হয়ে যায়। আবার সেই নিস্তব্ধতা নির্জন পরিবেশ। এভাবেই তাকিয়ে থাকতে থাকতে তারা বেঞ্চের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ে।
।।।।।
।।।।।
ভোর সাড়ে পাঁচটায় ফোনের রিং টোনে ঘুম ভাঙল মুরাকের সাথে সাথে রিদানেরো ফোন চেক করতেই দেখে ইভান লেখা মুরাক রিসিভ করে ওপাশ থেকে ইভান শান্ত গলায় বলে,, ভাইয়া আপা চলে আসছে বাসায় তোমরা তাড়াতাড়ি আসো।” তারপর ফোন কেটে দেয় সে মুরাক কানের কাছ থেকে ফোন সরিয়ে বিচিত্র রকমের চেহারা করে ফেলে যেন এ মুহূর্তে ইভান কি বলল তার মাথার উপর দিয়ে গেল রিদান চোখ ডলতে ডলতে বলে,, কে কল করছে? ” ইভান, মোমো বলে বাসায় চলে আসছে ” বলে মুরাক। অবাক হয় রিদান সাথে মুরাক ও রিদান বলে,, কিহ, মোমো চলে আসছে কোথায় ছিল সে কাল? মুরাক বলে,, আমি জানিনা ইভান শুধু ওতটুকুই বলে রেখে দিছে চল মোমোর বাসায়।” দুজনেই উঠে দাঁড়ায় তারপর মোমোর বাসায় রওনা দেয়।
।।।।।
।।।।।
মোমোর বাড়ির সামনে গাড়ি থামায় তারা দেখে মোমো বাহিরেই দাঁড়িয়ে আছে সাথে ইভান ও। গাড়ি থেকে নেমে সামনে এগোয় তারা মোমো পেছনে ফিরে তাকায়নি কিন্তু উপস্থিতি টের পেল, রিদান কিছু বলার আগে রোকেয়া ঘর থেকে বেরিয়ে আসে রাগে চোখ মুখ শক্ত করে আছে মোমো ‘আম্মু’ বলার সাথে সাথে ঠাঁটিয়ে চড় মেরে দিল রোকেয়া। সবাই অপ্রস্তুত হয়ে যায় মোমো তো ভেবাচেকা খেয়ে গেল মুরাক মনে মনে বলছে,, কোথায় এসে জড়িয়ে ধরবে তা না করে সোজা চড় মেরে দিল বাপরে পুরো ডেঞ্জারাস মহিলা।’ রোকেয়া মোমোর হাত চেপে ধরে ঘরে ঢুকে গেল রিদান হা করে ছিল ইভান তাদের দিকে একবার তাকিয়ে ঘরে ঢুকে গেল তার পিছু পিছু মুরাক রিদানও। ঘরে ঢুকে রোকেয়া শাসানো কন্ঠে জোরে বলেন,, কোথায় গিয়েছিলি তুই।’
মোমো আমতা আমতা করে বলল,, হালিশহর!” এটা শুনার সাথে সাথে সবার চোখ চড়ুইগাছের মত হয়ে গেল। রোকেয়া ‘কিহহ’ বলে উঠেন ইভান বলে,, ওখানে কেন গেলি এত দূর? মোমো ঠোঁট ভিজিয়ে বলে,, আসলে আমি কাল ভার্সিটিই যাচ্ছিলাম পথে ময়ূরী সাথে দেখা ও বলল ওর বিয়ে হালিশহরে চট্টগ্রামে কিছু বাজার করতে আসছিল তো ও আমাকে জোর করে হাত ধরে নিয়ে গেল।” মুরাক রিদান দুজনেরই মাথা গরম হয়ে যায় চুপ করে আছে তারা। রোকেয়া রেগে তেজি গলায় বলেন,, এতো বড় হয়ে বাচ্চার মত সব কারবার ফোন কোথায় তোর? মোমো মাথা নিচু করে বলে,, আছে কিন্তু দুদিন ধরে চার্জ না দেওয়াতে মরে গেছে।” রোকেয়া রেগে আরো বলেন,, তোর আব্বা চলে যাওয়ার পর মনে হয় এসব করে করে তোরা দুই ভাই বোন আমাকে জ্বালিয়ে মারবি, গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল আমার যখন জানতে পারলাম তুই নিখোঁজ, আর না বলে এত দূর হালিশহরে কেন গিয়েছিলি বিয়ে খেতে? তুই নিখোঁজ জানার পর কেউই শান্তিতে থাকতে পারিনি এ দুজন সারারাত তোকে খুজেছিল। মুরাক ও রিদানের দিকে ইশারা করে বলেন মোমো তাদের দিকে এক পলক তাকিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়। রোকেয়া আরো বলেন,, আত্নীয় স্বজন ফোনের উপর ফোন করে করে আরো পাগল বানিয়ে দিচ্ছিল আমায় বলছে বাপ মরে যাওয়ার পর প্রেম করে পালিয়েছে।” পাশে ইভান তার মায়ের হাত ধরে থামায় বেশ রেগে আছেন তিনি রাগে ফুঁসছে। কিছুক্ষণ পরেই মাথা ঠান্ডা হয় তার রিদান ও মুরাক চলে যেতে নিলে রোকেয়া ও ইভান থামিয়ে দেয় তাদের কেননা তারা একদিন না খেয়ে ছিল তারা জোর করে তাদের খেয়ে যেতে বলে মুরাক ও রিদান রোকেয়া মাথা গরম দেখে রাজি হয়। মোমো আর দাঁড়িয়ে না থেকে হনহন করে নিজের রুমে চলে যায়। কোন মেয়ে সবার সামনে চড় খাওয়ার পর নির্লজ্জের মত দাঁড়িয়ে থাকবে। মোমো গিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়।
দুপুর গড়িয়ে এলো কিন্তু মোমো রুম থেকে বের হচ্ছেনা ইভান এসে দরজা খুলল নিজের টেকনিক এ। মোমো ফিরে তাকালো ইভান হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে পাশে বসে বলে,, আমি জানি তুই আম্মুকে মিথ্যা বলছিস, এখন আমাকে সব সত্যটা বল।’ মোমো না তাকিয়ে বলে,, মানে? আমি যা বলিছি সব সত্যিই বলেছি!” ইভান ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে,, সব মিথ্যা এখনো মিথ্যা বলছিস, আমি জানি তুই ওইরাতে বালিশ মুখে চেপে কেঁদেছিলি!” মোমো অবাক হয়ে তাকায় ইভান আবার বলে,, বল আমাকে সব বল।’ মোমো রেগে উঠে দাঁড়ায় বলে,, “আব্বু চলে যাওয়ার পর আমার জীবন তছনছ হয়ে গেছে আব্বু ছিল তখন আমার জীবনো সুন্দর ছিল এখন সব বেইমান বিশ্বাসঘাতক। আর হ্যা আমি মিথ্যা বলেছি হালিশহর আমি নিজেই একলা গিয়েছি নিজেকে শান্ত করার জন্য মোবাইল ইচ্ছে করেই অফ করে দিয়েছিলাম যেন কেউ আমাকে আবার বিরক্ত করতে না পারে কোন বান্ধবীর বিয়ে টিয়ে ছিল না।” বলে রেগে সে আঙুল দিয়ে ওড়না মুড়িয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে ইভান তার হাতের দিকে তাকায় মোমো কখনো এমন করিনি আজকেই সে রাগে গিজগিজ করছে পারলে এখনিই সব ধ্বংস করে দিবে। বেশ কিছুক্ষণ পরেই সে নিজেই শান্ত হয় তাকে শান্ত হতে দেখে ইভান বলে,, খেয়ে নে এবার!’ মোমো বলে,, খাবো না নিয়ে যা। ইভান এবার রাগ দেখিয়ে বলে,, যদি না খাস তাহলে আমি ছোট হয়েও বড় ভাইয়ের দায়িত্ব পালন করব।’ মোমো না বুঝে বলে,, মানে? ইভান হাত দেখিয়ে বলে,, ঠাঁটিয়ে চড় মেরে খাওয়াবো তোকে!” মোমো ফিক করে হেসে দেয় তার কথা শুনে। তারপর ইভান তাকে বসিয়ে নিজের হাতে খাওয়ানো শুরু করে। মোমো এখন নিজেই শান্ত হয়ে আছে।
।।।।।
।।।।।
রাত একটায় ছাদে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে মনোযোগ সহকারে তাকিয়ে আছে মুরাক। সে জানে যে সকালে মোমো যা বলেছে সব মিথ্যায় বলেছে। সত্যটা লুকিয়ে মিথ্যা বলেছে। আকাশের দিকে তাকিয়ে হতাশ গলায় বলে,, পরিস্থিতি কি কখনো ঠিক হবেনা? কি কখনো ঠিক হবেনা আমার আর মোমোর সর্ম্পক? এই দূরত্ব কখন কমবে? আমার বন্ধুত্ব কবে ঠিক হবে? রিদানের সাথে কবে আগের মত ঠিক হব? কখন এইসব দুনিয়ার ঝামেলা ঠিক হবে? কখন আগের মত হবে? অতীতে একটা ভুল কি আমার সারা জীবন পস্তাতে হবে? না অতীতের মধ্যে তো আমার ভুল ছিল না! শেফালী মান্নান ওই শাকচুন্নী টা বানোয়াট কথা বলে মোমো কে আমার কাছ থেকে দূর করছে, না আমার থেকে সব কিছুই ঠিক করতে হবে ঠিক না হলেও জোর করে ঠিক করবো আমি ঠিক করবোই করবো, আমি একটা জিনিস বুঝিনি রিদান আমার সাথে এতো ভালোভাবে কথা বলছিল কেন? সব ওই রিদান টায় প্লেন করছে শেফালীর সাথে, এক পেঁচা আরেক পেচিঁর সাথে মিলে প্লেন করছে। আমার সব কিছুই ক্লিয়ার করতে হবে….

(চলবে…)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে