psycho_is_back? part_20(রহস্য খোলার পর্ব)

0
2106

psycho_is_back?
part_20(রহস্য খোলার পর্ব)
#apis_indic(সুরাইয়া সাত্তার)❤
এক পর্যায় আমরা বন্ধু থেকে বেশি কিছু হয়ে যাই।।যার নাম ছিল না!!
কারণ হাবিব বিবাহিত ছিল, তার সংসার ছিল, সন্তান ছিল,,তাই আমরা ওখানেই সব স্টোপ করে দেই।।এভাবে কেঁটে যায় কয় সপ্তাহ।। এর মাঝে এক দিন অফিসে বড় একটি ডিল পাওয়ার উপলক্ষে একটি পার্টি থ্রো করে।। সেদিন হাবিব অনেক ড্রিংস করে ফেলে এবং অসুস্থ হয়ে যায়।।যে হেতু পার্টি ওদের বাসায় থ্রো করা হইসিলো,, তাই তাকে রুমে দিতে যাই।।তার তো কোনো জ্ঞান ছিল না।।আর সেইটাই যেন আমার ভুল ছিল,, সে রাতে না চাইতোও আমরা ভুল করে বসি।।এর পর থেকেই হাবিব গাছাড়া ভাব চলে এসে পরে,, আর আমি আমার মাঝে তার অংশ বুঝতে পারি।।এবং তাকে জানাই।।আর সে ছুটে চলে আসে,, আসবেই বা না কেন এ যে তার সন্তান আমি আমার পেটে ধারণ করেছি।।এরপর আমরা আমাদের নতুন দুনিয়া শুরু করি।।যেখানে আমি আর হাবিব ছিলাম।।একদিন হাবিব বের হয়ে যাওয়ার পর একজন মেয়ে আসে,, তার সাথে একজন মধ্য বয়সি মহিলা।।তাদের দেখে চিন্তে অসুবিধে হয়না আমার,, সে যে তার প্রথম স্ত্রী,, আর তার মা।।তাদের সাথে একটি ১৩ বছরে ছেলে ও একটি ২ বছরের মেয়ে ছিল।।মালা(হাবিবের স্ত্রী) বলতে লাগে,,

—–কেন করলে এমন??

আমি তখন বুঝতে পারিনি কি বলছেন তিনি।।
—-মানে?

—–মানে? বলে একটি পেপার ছুড়ে দিলেন তিনি।।

আমি পেপারসটি হাতে নিয়ে দেখি ডিভোর্স পেপার।।তার মানে হাবিব তাকে ডিভোর্স দিবে,, ভেবে আনন্দ ফুঁটে উঠলো মনে।।যা শুধু ক্ষনিকের জন্য ছিল।।কথায় বলে না অন্যের সুখ-শান্তি নষ্ট করে কখনো সুখি হওয়া যায় না।।আমারও তাই হলো।।

সেদিন মালা অনেক আকুতি-মিনতি করেছিল যেন তাকে ফিরিয়ে দেই।।কিন্তু আমি যে সার্থপর হয়ে গেছিলাম।।তাই তাকে ফিরিয়ে দেই।।কারণ প্রাণ থাকতে আমি যে তাকে ছাড়তে পারবো না।।তখনি সেই ১৩ বছরে বাচ্চাটি আমার কাছে এসে বলে,,

—–আন্টি,, আমার পাপাকে ফিড়িয়ে দেও,, যানো সে এখন আর খেলে না আমার সাথে,, আগের মতো কথাও বলে না,, আমাকে খাইয়েও দেয় না।।খুব কষ্ট হয় আমার।।প্লিজ!! বলে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল সেই ছেলেটি।।

সেদিন আমি শতাব্দ হয়ে যাই।।হব না কেন?? আমিও তো মা হতে চলছি।।
তখন হাবিবের মা বলেছিলেন,,,

——তুমি আমার সংসার ভেঙ্গেছো! তুমি এ জিবনে না শান্তি পাবে আর না ও জিবনে।। একটি একটি মার অভিশাপ।। মনে রেখ অবৈধ তোমাদের সম্পর্ক।। জানোতো এসব মেয়েদের কি বলে? রক্ষিতা বলে।।

আমি সেদিন শুধু চোখে পানি ফেলেছি,, সত্যিই অনেক বড় ভুল আমি করেছি।।হাবিব তার পরিবারকে অনেক ভালবাসতো,,আয়মান তার জান ছিল।।আমার জন্য সে সব ছেড়ে দিতে রাজি ছিল।।কিন্তু অন্যের সুখ করে কেমনে সুখি হতাম।।

আমার সাথে থাকা কালিন হাবিবকে লক্ষ করাতাম ও খুশি বাহিরে থাকলেও ভিতরে ভিতরে মরে যাচ্ছিল।।তাই সব ছেড়ে নিজের ভালবাসার বিসর্জন দিয়ে ওকে দূরে ঠেলে দেই।।এক প্রকার ইগনোর করতে লাগি।।একদিন এসব নিয়ে খুব ঝগড়া হয় আমাদের মাঝে।।আর হাবিব আমাকে ছেড়ে চলে যায়। যা আমি চাইছিলাম।।সে চলে গেল।।

আর একবারো পিছনে তাকায়নি হয়তো তাকালে আর যেতে পারতো না।।এভাবে কাঁটছিল দিন গুলি আমার,,দূর থেকে দাড়িয়ে দেখতাম আমি হাবিবকে আর তার পরিবারকে কত হাসি খুশি তারা।আয়মানের সেই হাসিটি যেন ফিরে এসেছে তার মুখে।।একদিন আয়মানের সাথে দেখা হয়ে যায়।।

সে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল,,
—-আন্টি তুমি অনেক ভাল তোমাকে ধন্যবাদ আমার পাপাকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য।।

—-ধন্যবাদের কিছু নেই আব্বু তোমার পাপা তোমাকে অনেক ভালবাসেন তাই ফিরে গেছেন।।
বলেন মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে চলে আসচ্ছিলাম তখন মালার সাথে দেখা হয়,,
আমাকে দেখে মালা বলতে লাগে,,,

—–দেখলে তো বৈধ শক্তির জোড়! তোমাদের মতো মেয়েতো হাজার আসে যায়।।কিন্তু ভাগ্য লাগে কারো বউ হতে।।রক্ষিতারা সেই রক্ষিতাই থাকে।।

আমি কিছু বলিনি,, শুধু হেসে বলেছি,,
—-ভাল থাকবেন চলি!!

বলে সেদিন চলে আসি তোমার কাছে মা!!সত্যি মা কারও বউ হতে ভাগ্য লাগে।। আমি যে অনেক বড় পাপি মা।। আমার বাচ্চা বাবার নাম পাবে না মা কখনো আমি জানি।।যদি আমার কিছু হয়ে যায়,, আমার নামে আমার মেয়ের নাম রেখ।।

সেদিন আমার কায়নাতের কথায় খুব খারাপ লাগলেও খুশি হয়েছি সে আমার মেয়ে নিজে পুড়ে ছাই হয়ে অন্যের সংসার জুড়ো লাগিয়েছে।।
এর পর দেখতে দেখতে ডেলিভারি সময় এসে যায়।।এর মাঝে কায়নাতের শরীর খারাপ হতে লাগে,,
ও বলতো মা আমি আর বাচ্চবো না মা।।আমার বাচ্চার কি হবে মা?? ওর যে মাও থাকবেনা আর বাবাও মা আমার মেয়ের কি হবে।।

সত্যই কুহু হওয়ার সময় কায়নাত মারা যায়।।কুহুকে হাতে নিয়ে হাসপাতালের করিডরে বসে আমি দিশেহারা।।তখন আমি না পেরে হাবিবকে কল করি।।আর কল পেতেই হাবিব ছুটে চলে আসে।।কায়নাতে কবর দেয়া হয়।।হাবিব যেন শতব্দ হয়ে যায়।।তার মেয়ে কুলে নিয়ে কাঁদতে লাগে।।

এভাবে কেঁটে যায় তিনদিন,, হাবিব কুহুকে নিয়ে কাটিয়ে দেয় তিনদিন।।তার মাঝে আমি হাবিবকে বলি ওর চলে যাওয়া উচিত।।কিন্তু সে যেন কিছু শুন্তে রাজি না।।৭ দিনের মাথায় ওর ফুল পরিবার এসে হাজির হয়।।অনেকে অনেক কথা বলে,, হাবিবের মা তার সন্তানদের দুহায় দিয়ে তাকে নিয়ে যায়।।কিন্তি হাবিব কুহুকে নিতে চায়,, যা মালা চায় না।।এক পর্যায় এ নিযে তর্ক শুরু হয়।।

তারা এক পর্যায় এটা বলতে লাগেন,, কায়নাতের চরিত্র ভাল না আর কুহু হাবিবের সন্তান না।।অন্যর সন্তান হাবিবের ঘারে চাপি দিচ্ছি আমরা।।এবং মালা আয়মানের কসম দিয়ে বসে আর বলে,, ওকে তাদের সাথে নিলে বা কোনো সম্পর্ক রাখলে আয়মান, আর তানহাকে নিয়ে ট্রেনের নিচে পরে যাবে।।তারপর থেকে আর কখনো তাদের সাথে যোগাযোগ রাখেন নি তারা।।

আর মাসে মাসে কুহুর জন্য হাবিব টাকা পাঠাতো যা এহসানের বাবা দিয়ে যেত।।এটুকু বলে নানুমা দম নিলেন।। আর চোখের পানি ছেড়ে দিলেন।।নানু মার সামনে বসে থাকা সবাই শতাব্দ।। আমি কাঁদতে কাঁদতে নানু মাকে জড়িয়ে ধরি।।সে দিন নানু মা আমাকে একটা বক্স এগিয়ে দেন, যা মা আমাকে দিতে বলে গেছেন।।
_______________________★

এদিকে হাবিব তার রুমে বসে সেই ছোট কুহুর সাথে তুলা ছবি দেখে কাঁদছেন,, তিনি চাইলেও যে তার মেয়েকে আদর করতে পারছেন না।। কতবড় হয়েছে তার মেয়ে, দেখতে ঠিক কায়নাতের মতো হয়েছে।।হাবিব ছবি দেখতে ব্যস্ত তখন রুমে মালা ঢুকে,, আর তার হাতে প্রতিবারের মতো সেই ছবি দেখে মাথা আগুন জ্বলে উঠে এবং ফোঁসফোঁস করতে করতে বের হয়ে যেতে নেয় তখন হাবিব বলে উঠে,,

—–অতীতের জের ধরে আর কত বর্তমানকে নষ্ট করবে মালা।।আমি ভুল করেছি আমি মানি… তাই বলে এভাবে আর কত মুখ ফিরিয়ে রাখবে আমার থেকে?? এবারতো এসব ভুলে আমরা আগে বাড়তে পাড়ি?

তখনি মালা রাগে বলতে থাকে,,
—-পারতাম আরো আগে ভুলে যেতে তুমি দিচ্ছো কই ভুলতে?? হাবিবের হাতে ছবি গুলো নিয়ে বলতে লাগে আবার,,

—–এই যে তোমার আকড়ে রাখা স্মৃতি! আমাকে ভুলতে দিচ্ছে কই? হুম বল প্রতি রাতে এগুলো ধরে কাঁদ,, আর আমাদের অপরাধী করে তুলো তুমি।। তোমার কাছে আমাদের চেয়ে এসব দামি।।আমি থাকি বা মরে যাই কি আসে যায় বলো।।
বলে ঘর থেকে বের হতে নেয়।।আর তখন হাবিব মালাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগে আর বলতে লাগে,,,

—–মালা প্লিজ!! আমার জিবনে তোমরা যেমন ইম্পরট্যান্ট তেমনি কুহু ও।।ওতো আমরি অংশ।
তখনি মালা ধাক্কা মারে হাবিবকে আর বলে,,
—-তাহলে ছেড়ে দেও আমাদের নিজের অংশ নিয়ে বাঁচ বলে বের হয়ে যায়।।আর যাই হোক কোনো মেয়ে যে তার স্বামীর ভাগ দিতে পারে না।।

_______________________★
সেদিনের পর থেকে নানুমার অবস্থা খারাপ হতে লাগে,, আপনা মানুষ গুলো ও পরিবর্তন হতে লাগে।।আন্টি মা, মামা,, তাদের আমার প্রতি করা আচরণে পরিবর্তন চলে আসে।।

যা খুব কষ্ট দায়ক।।যেমন–তারা আমার সাথে এক টেবিলে বসে খায় না,, আগের মতো কথা বলে না।।কেমন একটা গাছাড়া ভাব।।মাঝে এমন ভাব তারা প্রকাশ করে যেন তারা আমার প্রতি বিরক্ত।। আন্টি তো আমাকে আন্টি মা ডাকতে না করে দিয়েছেন।।

আর যত সম্ভব নিজের রুমে থাকতে বলেছেন।।হয়তো আমি নাজায়েজ বলে ইগনোর শুরু করেছেন তারা।।এসব কিছুই ইউসুফ খেয়াল করছিল।।সে যত সম্ভব আমাকে হাসি খুশি রাখতো।।আমি ভার্সিটিতে যাওয়া স্টার্ট করি।।একমাত্র যতক্ষণ ওখানে থাকি বান্ধুবি দের সাথে হাসি খুশি থাকি।।

একদিন ভার্সিটি থেকে বাসায় চলে আসি তখনি একটা কল আসে,,,
কলটা রিসিভ করতেি সাথে সাথে হাত থেকে ফোনটা পরে যায় আমার।।আর আমি দৌড়ে বের হয়ে যাই।।চোখ থেকে অনর্গল পানি পড়ছে,,মনে মনে আল্লাহ ডাকচ্ছি।।সে যেন…..!!

_________________________
ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।।আজ হয়তো ক্লিয়ার হয়ে গেছেন সবটা আপনারা???

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে