Love Marriage Part-07

0
1223

Love Marriage
মুমতাহিনা জান্নাত মৌ
পর্ব ০৭
দিশা টেনশনে কিছুতেই ঘুমাতে পারছে না।
একদিকে ইশান আর তানিয়া একই বাড়িতে একসাথে আছে।
অন্যদিকে আবার ইশানের সাথে সে চ্যালেঞ্জ নিয়েছে।
সে এখন কি করবে?
অনেক ভেবেচিন্তে সে একটা বুদ্ধি বের করলো।

দিশা তার শাশুড়ীকে বললো মা আপনাকে আজ বাড়ি যেতেই হবে।
দিশার শাশুড়ী এবার রেগে গেলো।
বার বার কেনো দিশা তাকে বাড়ি যাওয়ার কথা বলছে।

তিনি রাগ হয়ে বললেন তোমার বাবা কি দুইদিনেই হাঁপিয়ে গেলো?
যেভাবে বার বার বাড়ি যেতে বলছো মনে হচ্ছে আমরা অনেক বেশি খাচ্ছি।
যে আর সামলানো যাচ্ছে না।

দিশা বললো ছিঃ মা এসব কি বলছেন?
আপনি যদি সারাবছর এখানে থাকেন কোন সমস্যা নেই আমাদের।
কিন্তু আপনি এখানে আর একদিন থাকলে অনেক বড় বিপদ হয়ে যাবে।

–বিপদ?
কিসের বিপদ?

–আমি শুনলাম বাবা বাসায় কোন এক মেয়ে কে নিয়ে এসেছে।

–কে সে?

–আমি তো সেটা বলতে পারবো না।
তবে আমি শুনলাম বাবা তাকে নিজেই কই থেকে যেনো এনেছে।

–তুমি কার থেকে শুনলে?

–শুনলাম একজনের কাছ থেকে।

–তোমার শশুড় কে আগে ফোন দেই।
দেখি কে সে?

–না,না।
এই ভুল করবেন না।
তাকে যদি ফোন দিয়ে জানান তাহলে তো মেয়ে টাকে বাড়ি থেকে বের করে দেবে।
তখন আপনি তো হাতেনাতে তাকে ধরতে পারবেন না।

দিশার শাশুড়ী কেঁদে উঠলো।
এই বয়সে ওনার ভীমরতি ধরেছে রে!
সেই জন্য আসার সময় একবার ও বারন করলো না।
একবারও বললো না যে,
ইশানের মা তুমি যেনো বেশিদিন থেকো না।
তাড়াতাড়ি চলে এসো।

ইরা বললো কি হয়েছে মা?

–বেশি দেরী করিস না মা।
তাড়াতাড়ি ব্যাগ গুছিয়ে নে।
বাড়ি যেতে হবে।

–কেনো?

–এই উত্তর আমি তোকে দিতে পারবো না।
অনেক লেট হয়ে যাবে।

ইরা তার মায়ের উপর রাগ হলো।
কান্না করা বাদ দিয়ে বলো কি হয়েছে?

–তোর বাবা নাকি বাসায় কোন এক মেয়ে এনেছে?

সেই কথা শুনে ইরা বললো কি বলছো এসব?
বাবা এমন কাজ করতেই পারে না।

হঠাৎ ইরার মনে হলো আজ তো বাসায় তার স্বামী আসার কথা।
সে আবার কাউকে আনলো নাকি?
তাছাড়া বাবা তো জীবনেও এ কাজ করবেন না।
আর ইশান তো নয় ই।
তার মানে?
তার স্বামী,,,,,
ইরা এবার চিৎকার দিয়ে উঠলো।

ইরা বললো মা এটা হয় তো তোমার জামাই এর কাজ।
আজ তো ওর আসার কথা ছিলো।
আর এক মুহুর্ত ও দেরী করা যাবে না।
তাড়াতাড়ি চলো।
ইরাও কাঁদতে লাগলো।
তার সন্দেহ হলো তার স্বামী কাউকে এনেছে।

দিশা বললো আজকাল ছেলেমানুষের কোন গ্যারান্টি নাই?
বাড়িতে বউ না থাকলেই অন্য খানে সুযোগ খোঁজে।
কে জানে কার কপাল পুড়লো?

দিশার শাশুড়ী আর ননদ সেই কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে চলে গেলো।
তারা এতোটাই টেনশনে ছিলো যে দিশা কে একবারের জন্যও বললো না তুমি যাবে কিনা?
দিশা ও সুযোগ পেয়ে গেলো।
সে আর গেলো না।

দিশার কিছুটা হলেও টেনশন কমে গেলো।
কারন তার শাশুড়ী আর ননদ বাসায় চলে গেলে তানিয়া বেশি একটা ঘুরঘুর করতে পারবে না।
কারন তানিয়া বাসায় আসলে তার শাশুড়ী এক মুহুর্তের জন্যও তাকে হাতছাড়া করে না।
কারন তার শাশুড়ীর মাথায় তেল দিয়ে দেওয়া,
চুল বেঁধে দেওয়া,
আরো অনেক কাজ তানিয়ার থেকে করে নেয়।
তানিয়া এই জন্য এ বাড়িতে বেশি থাকতে চায় না।

ইশানের মা আর বোন বাসায় পৌঁছলো।
ইশান তার মায়ের গলা শুনে হাসতে লাগলো।
সে ভাবলো দিশাও এসেছে।
আর মনে মনে বললো আমার সাথে চ্যালেঞ্জ নিয়েছে!
বেচারা!!!
রাত টা পার হতেই এসে হাজির।
ইশান ভাব নিয়ে বিছানায় শুয়ে থাকলো।
সে ভাবলো আমি নিজের থেকে কথা পর্যন্ত বলবো না।

এদিকে ইশানের মা চিৎকার চেঁচামেচি করতে লাগলো।
কিন্তু বাসায় তো কেউ নাই।
ইশানের বাবা অফিস গেছে।

ইরা তার স্বামীকে ফোন দিলো।
তার স্বামী জানালো সে এখনো বাসায় আসে নি।
ইরা বললো বাঁচলাম বাবা।
তার স্বামী বললো কি বলছো এসব?
ইরা বললো তুমি ওসব বুঝবে না।

ইশানের মা রান্নাঘরে ঢুকে দেখে কেউ নাই।

এবার তিনি তার বেডরুমে গেলেন।

কিন্তু গিয়ে যা দেখলেন তা দেখে তার মাথা ঘুরতে লাগলো।
একটা মেয়ে গায়ে মাথায় কাপড় দিয়ে শুয়ে আছে।
ইশানের মা কাঁদতে লাগলো আর বললো ইরা তুই কই?
তোর বুড়া বাপ টা তো বিয়ে করেছে।
আর তার বেডরুমেই থেকেছে।
এই বয়সে আমার কপাল পুড়লো রে!!!
আমি এখন কই যাবো?

ভালোবেসে তার হাত ধরে বিয়ের আসর থেকে পালিয়েছি।
এইজন্য আমার বাপ টা হার্ট অ্যাটাক এ মারা গেছে।
সেই জন্য এখনো আমি অনুশোচনা করি।
আমার মা তার মৃত্যুর সময়ও আমার মুখ দেখে নি।
আমি কত টা কষ্ট চাপা দিয়ে শুধু তোদের মুখের দিকে তাকিয়ে সংসার করছি।

কিন্তু তোর বাপ এই বয়সে এটা কি করলো?
আমার সাথে এতোবড় প্রতারণা করতে পারলো?

ইরা দৌঁড়ে এলো তার মায়ের রুমে।
সেও অবাক হলো!!
তার বাবা মার বিছানায় কে শুয়ে আছে?

ইশানের মা কোন কিছু না ভেবেই ঝাটা হাতে নিয়ে দিলো উড়াধুরা মার।

তানিয়া তো সেই জোরে চিৎকার করে উঠলো।
বাবা রে বাঁচাও।
মরে গেলাম।

ইরা বললো মা এটা তানিয়া।
তার মা ইরা কে বললো তুই ও তাহলে চিনিস একে?
তোরা সবাই এক জোট হয়েছিস?
এই বলে আবার মারতে লাগলো।

তানিয়া বললো খালা আমি?
আমি তানিয়া?

ইশানের মা এতোটাই রেগে আছে যে কারো কথায় তার কানে ঢুকছে না।

ইরা তানিয়া কে বললো মুখ থেকে কাপড় টা সরা।
তাহলেই তো মা চিনতে পারে।

তানিয়া বললো ইরা আপা বাঁচাও আমায়।
খালা তো সে সুযোগ ই দিচ্ছে না।

ইরা তার মাকে আটকানোর অনেক চেষ্টা করলো।
কিন্তু তার মা ইরা কেও ফেলে দিলো।

এদিকে তানিয়া ইশানের মায়ের সাথে গোল্লাছুট খেলতে লাগলো।
একবার খাটের উপর ওঠে আর একবার নিচে নামে।
এইভাবেই কিছুক্ষন চলছিলো।

ঘরের মধ্যে এতো বেশি চিৎকার হচ্ছিলো যে ইশান ও চলে এলো।

ইশান বললো মা কি হয়েছে?
তানিয়ার পিছু ধাওয়া করছো কেনো?

ইশান তার মায়ের হাত থেকে ঝাটা টা কেড়ে নিলো।
তারপর তার মায়ের হাত দুটা ধরলো।
ইশানের মায়ের শরীর একদম হাঁপিয়ে গেছে।
তিনি কোন কথাই বলতে পারছেন না।
তিনি শুধু পানির নাম নিতেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন।
কারন টেনশনে আর জোরে জোরে চিল্লানোর ফলে তার প্রেশার হাই হয়েছে।

ইরা তার মায়ের জন্য পানি আনলো।
এবং ইশান তাকে বিছানায় শুয়ে দিলো।
ইশান তার মায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।
আর ইরা কে বললো ডাক্তারের কাছে ফোন দে।
ইরা তাই করলো।

এদিকে তানিয়া জোরে জোরে কাঁদতে লাগলো।
সে ব্যাগ গোছাতে লাগলো।
আর এক মুহুর্ত ও নয়।
এ বাড়িতে সে আর আসবেই না।
ইশান তাকে আটকালো।
আর বললো কি হয়েছে তানিয়া?

তানিয়া কাঁদতে কাঁদতে বললো আমি খালার বিছানায় একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
ভাবলাম খালা থাকতে তো বিছানায় বসাও যায় না।
তাই যেহেতু খালা নাই এই সুযোগে একটু বিছানায় ঘুম পাড়ি।
তাই খালা আমাকে এমনভাবে মারলো।
আমি কি এমন দোষ করেছি?
শুধু তো একটু শুয়েছিলাম।
তাছাড়া আজকেই এসব ধুয়ে দিতাম।

ইরা বললো না না সেজন্য না।
তুই ভুল ভাবছিস তানিয়া।

ইরা ইশান কে সব কথা বলে দিলো।
যে দিশা তাদের বোকা বানিয়েছে।

সে কথা শুনে ইশান খুব রেগে গেলো।
সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে এতো কিছু হয়ে গেলো?
তার মা হলো হাই প্রেশারের রোগী।
আর কিছুক্ষন এরকম করতে থাকলে না জানি কি হতো?
ইশান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানালো।

ইশান দিশা কে ফোন দিলো।
ফোন পেয়ে দিশা তো সেই খুশি!!!
মনে মনে ভাবলো কেমন বোকা বানালাম?
সে আনন্দে ফোন ই ধরলো না।

ইশান আবার ফোন দিলো।
দিশা একটু ভাব দেখালো।
এবার ফোন টা ধরলো।
দিশাঃকি ব্যাপার ইশান সাহেব?
কেমন বোকা বানালাম?
ভাবছো আমিও ওদের সাথে গিয়েছি?
আর আপনি কখন আসতেছেন?
না রওনাও দিয়েছেন?
আমাকে নিতে আসলেও কিন্তু যাবো না।
দেখি আমাকে ছাড়া কতদিন থাকতে পারেন?

ইশানঃচুপ করো বেয়াদব মেয়ে।
সবাই বলে তুমি একটা ফাজিল মেয়ে।
এক নাম্বারের বেয়াদব।
আজ আমি নিজেও বলছি শুধু তুমি বেয়াদব না এক নাম্বারের দুষ্টু মেয়ে।
সব বিষয় নিয়ে ফাজলামি করতে করতে তোমার সাহস অনেক বেড়ে গেছে।
তুমি একদম মাথায় উঠে নাচতেছো?
আমি তোমাকে অনেক বেশি ছাড় দিয়ে ফেলছি।
আজ যদি আমার মায়ের কিছু হতো তোমাকে একদম খুন করে ফেলতাম।

দিশাঃকি বলছো তুমি?
কাকে বলছো এসব?

ইশানঃআমি যাকে ফোন দিয়েছি তাকেই বলছি।
আর তোমাকে এ বাড়িতে আসতে হবে না।
কেউ আর যাবে না তোমাকে আনতে।
তুমি ওখানেই থাকো।
খুব শখ বাবার বাড়িতে থাকার তাই না?
সারাজীবনের জন্য থাকো।
তুমিও নিজের থেকে আর আসবে না।

দিশাঃকি করেছি আমি?

ইশানঃএখনো বলছো কি করেছো?
মাকে কি বলেছো?
মা সেই উত্তেজনায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে।
আর কিছুক্ষণ এরকম করলে না জানি আজ কি হতো?
তোমার সাথে কথা বলতেই আমার কেমন জানি লাগছে।
ফোন রাখো।
জীবনেও আর ফোন দিবে না তুমি।
আমাকে নিয়ে সন্দেহ করো তাই না?
তানিয়ার প্রতি কোন ফিলিংস থাকলে তোমাকে তো এতো কাহিনী করে বিয়ে করতাম না?
ওকেই করতাম।

দিশাঃআমার ভুল হয়েছে।
আমি সত্যি বুঝতে পারি নি এতো কিছু হয়ে যাবে।
সরি বলছি।

ইশানঃচুপ করো।
কিসের সরি?
যদি মার কিছু হতো?
মাকে তোমার এই সরি কি ফিরিয়ে দিতে পারতো?

দিশাঃবললাম তো ভুল হয়েছে।
মা এখন কেমন আছে?
আমি এখনি আসছি।

ইশানঃখবরদার এ বাড়িতে আর আসবে না।
তোমার আসার কোনো দরকার নেই।
যদি আসতেছো তাহলে কিন্তু মা অপমান করে বের করে দিবে।
তুমি আমার সাথে ফাজলামি করো ঠিক আছে।
আমি মানিয়ে নিলাম।
তুমি আমার বাবা মার সাথেও ফাজলামি করা শুরু করেছো?

দিশা কাঁদতে লাগলো।
বললাম তো ভুল হয়েছে।
আর হবে না এমন।
তুমি প্লিজ নিতে এসো আমাকে।
আমি বাড়ি যাবো।
প্লিজ ইশান।।।

ইশান কল কেটে দিলো।
আজ আর দিশার চোখের পানি তার মন গলাতে পারলো না।

ইশানের চোখে পানি এসে গেলো।
কারন সে তার মা কে অনেক বেশিই ভালোবাসে।
তার মা কষ্ট পাবে দেখে এখন পর্যন্ত সে বলে নি যে সে তার প্রেমিকাকেই বিয়ে করেছে।

কারন তার মা প্রেমের বিয়েকে আর সাপোর্ট করে না।
তারাও প্রেম করে বিয়ে করেছিলো।
কিন্তু তার বিনিময়ে তিনি তার বাবা কে হারিয়েছিলেন।
তার মাকে এতো কম সময়ে বিধবা করেছিলেন।
এই জন্য তার মা তার মুখ দেখবে না দেখে প্রতিজ্ঞা করেছিলো।
এইজন্য ইশানের মা Love Marriage এর কথা শুনলে অনেক বেশি রেগে যায়।

কিন্তু তার মেয়ে ইরাও Love Marriage করেই বিয়ে করেছে।
তবে তার স্বামী ঘর জামাই থাকে।
কারন তার মা বাবা কেউ নাই।
এতিমখানায় বড় হয়েছে ছেলেটা।
তাই ইশানের মা কে সবাই অনেক বুঝিয়ে রাজি করিয়েছে।
কিন্তু তার ছেলে ইশান কে তিনি কোন ভাবেই এই ভুল করতে দিবে না।
সে যাতে প্রেম না করতে তার জন্য তার মা তার সাথে সাথে কলেজে যেতো।
কিন্তু এভাবে আর কত দিন ইশান কে তিনি পাহারা দিবেন?
তাই ইশানের কাছে প্রমিজ করে নেন যে সে যেনো কোন প্রেম না করে।
কোন মেয়ের দিকে না তাকায়।
তার মা নিজে পছন্দ করে সবচেয়ে সুন্দর ও ভালো মেয়ের সাথে তার বিয়ে দেবে।

ইশান সেদিন তার মার কাছে প্রমিজ করলেও দিশা কে দেখে আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে নি।
তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বসে।
দিশার ও ভালো লেগে যায় তাই সে আর ইশানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে নি।

ইশানের মা পরে যখন তানিয়ার সাথে তার বিয়ে ঠিক করে তখন ইশান বলে যে সে একজন কে পছন্দ করে।
তাকেই বিয়ে করতে চায়।
ইশানের মা কোনভাবেই রাজি হয় নি সেদিন।
তাই তো ইশানের চাকরি না হতেই বেকার ছেলের জন্য পাত্রী দেখা শুরু করে দেন।

ইশান মাঝে মাঝে ভাবে মা কে বলা দরকার সত্য টা।
কারন মা যেদিন নিজেই শুনবে সেদিন খুব কষ্ট পাবে।
ইশানের প্রতি তার ভালোবাসা,বিশ্বাস আর কিছুই থাকবে না।
ইশান ঠিক করলো এবার তার মাকে সত্যি টা বলে দেবে।
তাছাড়া সে কিছুতেই শান্তি পাচ্ছে না।

দিশা এবার নিজেই ফোন দিলো।
কিন্তু ইশান কল কেটে দিলো।
দিশা আবার কল দিলো।
ইশান এবার রাগ করে দিশার নাম্বার টাই ব্লক করে দিলো।

এদিকে ইশানের মায়ের এখনো জ্ঞান ফেরে নি।
ডাক্তার এখনো আসতেছে না।
ইশান তাই তার মাকে কোলে করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলো।

ইশানের বাবা বাসায় এসে সব শুনলেন।
এবার তিনিও রেগে গেলেন।
এ কোন ধরনের ফাজলামি?
বেয়াদবির একটা লিমিট থাকা দরকার।
শেষমেশ আমার নামে মিথ্যা বদনাম করেছে।

এবার কেউ আর দিশা কে সাপোর্ট করলো না।
সবাই রেগে গেলো।

দিশা কখনোই ভাবে নি এই সামান্য একটা মিথ্যা কথার জন্য এতো কিছু হয়ে যাবে।
সে কাঁদতে লাগলো।
তার খুব খারাপ লাগছে।

ইশানের মা সুস্থ হলো।
সবাই খুব টেনশনে ছিলো।
ইশানের বাবা এবার ইশানের মায়ের উপর রাগ দেখালো।

দিশা না হয় ফাজলামি করে বলেছে আর তুমি সেটাই বিশ্বাস করলে?
এতোবছর সংসার করে তাহলে কি লাভ হলো?
আমাকে এখনো চিনলে না?
এই আমাকে তুমি বিশ্বাস করো?
এই তোমার বিশ্বাসের নমুনা?

ইশানের মা বললো আমি বুঝতে পারি নি।
দিশা যে তোমাকে নিয়েও ফাজলামি করবে তা আমি ভাবি নি কখনো।

ইশানের মা ইশান কে বললো খবরদার দিশা যেনো এ বাড়িতে আর না আসতে পারে।
ওর অনেক ফাজলামি সহ্য করেছি।
অনেক ছাড় দিয়েছি আমি।
এবার আর ওকে ক্ষমা করবো না।
তুই ওকে কোনো ফোন ও দিবি না।
আর আনতেও যাবি না।
ও যদি নিজে আসে তাহলে কেউ ওকে বাড়ি উঠতে দেবে না।
দরকার নেই এমন বউ এর।
ওর মুখ যেনো আমাকে আর দেখতে না হয়।

আমরা একটু ওদের বাড়িতে থাকতে চেয়েছি দেখে ও এই মিথ্যা কথা বলে আমাদের পাঠিয়ে দিলো।
আমি জীবনেও আর ও বাড়িতে যাবো না।

ইশান বললো মা তুমি শান্ত হও।
আর কোন কথা বলো না।
আর তুমি যেটা ভাবছো সেটা নয়।
আসলে দিশা তানিয়ার কথা শুনে এরকম করেছে।
আমি আর তানিয়া একাই বাসায় থাকি তাই ও তোমাদের কে চালাকি করে পাঠিয়ে দিয়েছে।

ইশানের মা এবার রেগে গেলো।
তুই এখনো তোর বউ কে সাপোর্ট করছিস?
তাহলে ও আসলো না কেনো?
তোকে নিয়ে যদি সত্যিই ভাবতো সে তাহলে শুধু আমাদের একা পাঠাতো না।
সেও আসতো।

ইশান চুপ হয়ে গেলো।
কারন সে সবাই কে এটা কি করে বলে যে দিশা আর সে চ্যালেঞ্জ নিয়েছে যে কে কার কাছে আগে আসে?

তার মা বললো এই মেয়ে টা আমার আগে থেকেই পছন্দ না।
আমার আর ইচ্ছা হচ্ছে না ওর মুখ দেখার।

ইশান কোন কথা না বলে ঘর থেকে বের হলো।
কারন সে জানে দিশা একটু চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে।
সে এসব কাজ করে মজা পায়।
তার খুব আনন্দ লাগে।
ইশান ছাড়া আর কেউ তাকে ভালো করে চেনে না।
আর চিনবেও না।

দিশা বেয়াদবি করেছে ঠিক আছে কিন্তু তাকে ছাড়া ইশান থাকবে কি করে?
এদিকে মা তো দিশার মুখ দেখবে না বলে প্রমিজ করে বসে আছে।

ইশান খুবই ভেংগে পড়লো।
কারন সে বুঝতে পারছে দিশা নিশ্চয় অনেক কান্নাকাটি করছে।।।
তাকে সে ছাড়া আর কেউ সামলাতে পারবে না।
নিশ্চয় খাওয়া দাওয়া করাও ছেড়ে দিয়েছে।
কারন দিশা সবার বকা সহ্য করতে পারলেও
ইশানের বকা সে কিছুতেই সহ্য করতে পারে না।
ইশান একটু চোখ বড় করে কথা বললেই সে এমন পাগলামি শুরু করে যে কেউ তাকে থামাতে পারে না।

ইশান আফসোস করতে লাগলো।
রাগের মাথায় পাগলি টাকে তখন কি কি বললাম?
কি জানি কি করছে এখন?
ইশানের এতো কষ্ট হচ্ছে যে কাউকেই বোঝাতে পারছে না সে।

সে মনে মনে ভাবলো দিশা তুমিও কি আমাকে বুঝতে পারছো না?
রাগের মাথায় না হয় অনেক কথাই বলেছি।
বাড়িতে আসতে বারণ করেছি।
তাই বলে তুমিও নিজের থেকে আসবে না?
তুমিও যদি রাগ করে থাকো আমিও রাগ করে থাকি তাহলে কে আমাদের মিল করে দেবে?
তুমি প্লিজ এসো।
আমি তোমাকে ছাড়া আর এক মুহুর্ত ও থাকতে পারছি না।
ইশানের চোখে পানি এসে গেলো।

দিশা এর আগেও কলেজে অনেক ফাজলামি করেছে ইশানের সাথে।
যার জন্য ইশান কে অনেক অপমানিতও হতে হয়েছে।
আর ইশান রাগ করে দিশা কে অনেক বকেছিলো।
একবার তো দিশা কে চড় ও মেরেছিলো।
দিশা তখন যে যে কান্ড করেছিলো তা সীমার বাহিরে।
ইশানের আজ সেসব ঘটনা মনে পড়ে গেলো।
আর দিশার জন্য দুশ্চিন্তা হতে লাগলো।
রাগের মাথায় যদি খারাপ কিছু করে বসে?

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,
কেমন লাগলো গল্পটি অবশ্যয় জানাবে।
সবাই সবার মতামত কমেন্টে জানাবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে