Khatarnak Isq Part-01

0
5103

#Khatarnak_Isq.[Impossible_Love]
#Sumaiya_Moni.
#Part_01.
_______________________
একটি ছেলে বড় বড় পা ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে নাইট ক্লাবের ভেতরে। কিছু মেয়েরা ছেলেটির দিকে অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে।
কালো শার্ট ও জ্যাকেট,কালো রঙের জিন্স,ডান কানে ছোট্ট গোল কালো রঙের ইয়ার রিং। চুল গুলো সোনালি রঙের। ঘাড়ে বাদুরের কালো রঙের ট্যাটু আর্ট করা। গায়ের রং দুধের মতো সাদা। শার্টের দুটি বোতাম খোলা। যার কারণে উনমুক্ত ফর্সা বুক দেখা যাচ্ছে। সামনের ছোট সাদা চুল গুলো কঁপালে পড়ে ভ্রু ডেকে আছে। প্রচণ্ড হ্যানসাম ছেলেটি। গম্ভীর মুড নিয়ে হেঁটে একটি টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ায় সে। সেখান থেকে একটি ওইসকির বোতল নিয়ে গ্লাসে ঢেলে মুখে দিতে যাবে ঠিক তখনি শট ড্রেস পড়া একটি মেয়ে এসে ছেলেটির কানে কানে বলে,
-“হেই এলেন লেট্’স গো টু দ্যা রুম।”

এলেন মুচকি হাসে। মেয়েটি নেশাক্ত চোখে এলেনের দিকে তাকিয়ে হাসি মাখা মুখে এলেনের হাত ধরে হাঁটা ধরলে এলেন মেয়েটিকে ক্লাবের বাহিরে নিয়ে আসে। মেয়েটি কিছু বলে না। খুশি খুশি এলেনের সাথে হাঁটতে লাগলো। এলেন ক্লাবের বাহিরে এসে থেমে যায়। মেয়েটির দিকে ঘুরে তাকায় । মুখের সামনে ঝুঁকে আস্তে করে বলে,
-“ক্লোস ইউর আইস।”

মেয়েটি মুচকি হেসে চোখ বন্ধ করে ন্যায়। কিছুক্ষণ পর আবার আস্তে করে মেয়েটির কানেকানে বলে,
-“ওপেন ইউর আইস।”

মেয়েটি চোখ মেলে তাকায় । ঘাবড়ে যায় সে। কারণ এখন সে নিজেকে জঙ্গলে আবিষ্কার করছে। ভীত চোখে এলেনের দিকে তাকায় । এলেনের ঠোঁটে রহস্যময় হাসি । যেই হাসির মানে,সামনে বিপদের লক্ষন। মোটেও সুবিধাজনক লাগছে না এলেনকে। উপায় না পেয়ে মেয়েটি এলেনকে ধাক্কা দিয়ে দৌঁড়ে পালাতে লাগল। কিন্তু মেয়েটি দৌঁড়ে বেশিদূর যেতে পারেনি। আচমকা এলেন মেয়েটির সামনে এসে দাঁড়ায়। থেমে যায়। এত দ্রুত এলেনকে সামনে এসে দাঁড়াতে দেখে অবাক হয়ে যায় মেয়েটি। অন্য দিকে দৌঁড় দিতে নিলে এলেন খপ করে মেয়েটির হাত ধরে ফেলে। ওর কাছে টেনে নিয়ে মেয়েটির পেছন থেকে চুলের মুঠি ধরে রাখে। মেয়েটি এলেনের কাছ থেকে পালানোর চেষ্টা করছে । মানুষের রক্তের গন্ধে এলেনের আসল রূপ প্রকাশ পায়। ঠোঁটের কোণার দাঁত দুটি বড় আঁকার ধারন করে । চোখের মনি দুটি লাল হয়ে যায়।মেয়েটি ভয়পেয়ে চিৎকার দিয়ে থাকে। কিন্তু তার চিৎকার জঙ্গলের ভেরতেই সীমাবদ্ধ। এলেন দ্রুত মেয়েটির ঘাড় কাত করে গলায় কামড় বসিয়ে দেয়। সর্বশক্তি দিয়ে মেয়েটি জোরে চিৎকারের দেয়। চিৎকারের শব্দ প্রতিধ্বনি হয়ে জঙ্গলের চার দিক ছড়িয়ে পড়ে। জঙ্গল হালকা কেঁপে ওঠে। বিশাল বড় একটি গাছ থেকে কিছু বাদুর ডানা ঝাপটে ওড়ে যায়।
_______________________
জোরে চিৎকার দিয়ে বিছানার উঠে বসে আলফি। তিরতির করে গাঁ থেকে ঘাম ঝড়ছে। শরীরও থরথর করে কাঁপছে। বিছানার পাশেই ছোট একটি টেবিল রাখা। তার উপর সাদা রঙের একটি টেবিল লাইট, কাঁচের জগ আর গ্লাস রাখা। রীতিমতো শরীরের কাপুনির জন্য জগ থেকে পানি ঢেলে খাওয়া মুশকিল হয়ে গেছে। ভয়ংকর সপ্ন দেখেছে আলফি। আজ এক সপ্তাহ পর্যন্ত ঘুমাবার পর এই একি সপ্ন দেখছে। ঘড়ির দিকে তাকায় আলফি। আগের রাত গুলোর মতো আজও তিনটের দিকে ঘুম ভেঙে গেছে । ঠিক এই টাইমেই সপ্নের কারণে ওর ঘুম ভেঙে যায়। চোখ বন্ধ করে সপ্নটির কথা মনে করতে থাকে।

ঘন জঙ্গল। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার । আকাশে গোল প্লেটের মতো চাঁদ ভেসে বেড়াচ্ছে। আলোকিত চারদিক। দূর থেকে কোন একটি পেঁচা ও অদ্ভুত প্রানীর ডাক শুনা যাচ্ছে । আরো কিছু দূর পা চালিয়ে হেঁটে চলল আলফি। হঠাৎ-ই থমকে দাঁড়ায়। ওর সামনে বড় একটি কালো রঙের পাহাড় দেখা যাচ্ছে। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পাহাড়ের আশে পাশে তাকিয়ে দেখছে। হুট করেই অদ্ভুত বিকট শব্দ শুনতে পায়। পিছনে ঘুরে তাকায় আলফি। কিচ্ছু দেখতে পায় না। ভয়তে রূহ বার বার কেঁপে উঠছে। সাহস নিয়ে আবারও পাহারটির দিকে ফিরে তাকায়। না চাইতেই পাহারটির ভেতরে যেতে ইচ্ছে করছে ওর। পাহাড়ের মুখটি ছিল বিশাল বড়। অনায়াশে ভেতরে যাওয়া যাবে। কিন্তু পাহাড়ের ভেতরে বেশ অন্ধকার । হাতে লাইট নেই যে আলোর দরুণ পাহাড়ের ভেতরে যাবে। তারপরও মনে সাহস জুটিয়ে ছোট ছোট পা ফেলে হেঁটে চললো পাহাড়ের দিকে।গুহার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মন বলছে ভেতরে যেতে,আবার বলছে ভেতরে গেলে বিপদের সম্মুখীন হবে। দুটানায় পড়ে যায়। চোখ বন্ধ করে মন স্থির করে। তারপর চোখ খুলে ডান পা রাখতেই পাহারটি কাঁপতে লাগলো। এমন ভাবে কাঁপছে পাহাড়ের উপর থেকে ছোট ছোট পাথরের টুকরো গুলো খষে খষে জমিনে পাড়ছে। এদিক, সেদিক দুলছে আলফি। কিছুক্ষণ পর কাঁপনি থেমে যায়। সব কিছু নরমাল,ঠিক আগের মতো। আলফি ডানে বামে তাকাল । বুকে ফু দিল। বাম পা আগে রাখতেই সামনের মাটি ফাঁকা হয়ে যায়। পা ফষকে পড়ে গেল পাহাড়ের নিচে। জোরে চিৎকার দিয়ে উঠল আলফি………!

এটুকু দেখেই আলফি চোখ মেলে তাকায়। এখন আবার ভয় লাগছে। গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। পানির খুব প্রয়োজন । কাঁপা কাঁপা হাতে পানির জগ থেকে পানি ঢেলে পান করল। গ্লাস রেখে নিজেকে স্বাভাবিক করে।

-“জানি না কেন বার বার এই একই সপ্ন দেখছি আমি। কী আছে ঐ অন্ধকার পাহাড়ের গুহার ভেতরে? এই সপ্নের রহস্য কী? সবটা অজানা!”

বিড়বিড় করে বলে আলফি। আজ রাতও নির্ঘুম কাটিয়ে দিতে চায় সে। বিছানা থেকে নেমে বারান্দার দরজা খুলে বাহিরে আসে। আজ আকাশে চাঁদ নেই। পুরো শহর একেবারে নিস্তব্ধ । সবাই বেঘোরে ঘুমিয়ে আছে। কিন্তু আলফির চোখের ঘুম উধাও। ছোট নিশ্বাস টেনে কার্ণির ধরে দাঁড়ায়।
.
.
.
সকাল সাতটা বাজে। আলফি নাস্তা তৈরি করে ওর মামা জিনান কে ডাকতে তার রুমে প্রবেশ করল। জানালার পর্দা সরাতেই উষ্ণ মিষ্টি রৌদ্দ এসে জিনানের চোখে পড়ল। আলফি ওর মামার দিকে তাকায়। তিনি নড়েচড়ে চোখ মেলে তাকায়। মুচকি হেসে আলফির উদ্দেশ্যে বলে,
-“গুড মরনিং আলফি ।”

-“গুড মরনিং মামা । নাস্তা রেডি,তাড়াতারি ওঠো।”

-“জি।”

বিছানা থেকে নেমে জিনান ওয়াশরুমে দিকে পা বাড়ায়। আলফি বিছানা গুছাতে শুরু করে। গুছানো শেষ হলে নিচে চলে আসে। টেবিলে খাবার দেওয়ার সময় আলফির চোখ পড়ে দেয়ালে। সেখানে দু জন ব্যাক্তির ছবি টাঙান। একজন মহিলা,আরেক জন পুরুষ। তাদের চেহারার সাথে আলফির চেহারা কিছুটা মিল আছে। জিনান নিচে নেমে আলফিকে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে সরু নিঃশ্বাস টেনে মাথার হাত রেখে বলে,
-“আলফি।”

আলফির ধ্যান ভাঙ্গে। তাকে দেখে খাবার ভাড়তে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। জিনান আলফিকে জিজ্ঞেস করে,
-“খুব মিস করিস?”

আলফি ওর মামার দিকে মমতাময় দৃষ্টিতে তাকায়।বলে,
-“মম,ড্যাডকে মিস করাটা কী স্বাভাবিক নয়?”

-“স্বাভাবিক! কিন্তু ইদানিং মিস একটু বেশি করছো? তার কী কোনো যথেষ্ট কারণ আছে? ”

আলফি বড়ো নিশ্বাস ফেলে । বলে,
-“মামা,খুব একা মনে হয় নিজেকে। এমন মনে হয় আমি একাকীত্বে ভুগছি। কারো সাথে মিশতে মন চায় না,কথা বলতে মন চায় না। নিজেকে একাকিত্বের মাঝে বিলিন করে দিতে মন চায়।”

জিনান আলফির হাত ধরে একটি চেয়ারে বসিয়ে পাশের চেয়ারে বসে বলে,
-“নিজেকে একা মনে করবে না কখনো। যখন তুমি নিজেকে একা মনে করবে তখন একাকীত্বতা চার দিক থেকে তোমাকে ঘিরে ধরবে। নিজেকে সব সময় প্রকৃতির মাঝে মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করবে। কলেজের সবার সাথে মিশবে,কথা বলবে,সময় কাটাবে। দেখবে সবাই তোমাকে আপন করে নিবে। তোমার একাকীত্ব দূর হয়ে যাবে। কী ঠিক আছে? ”

আলফি মাথা উপর,নিচে নাড়ায়,তার উত্তর ‘হ্যাঁ’।
জিনান মৃদু হেসে বলে,
-“সামার ভ্যাকেশনে কোথায় যাবে বলো?আমি তোমাকে নিয়ে যাব?”

-“আমার কলেজের ফ্রেন্ড দের সাথে জঙ্গলে ক্যাম্পিং এ যাব। তাই…..।”

-“ওকে,ওকে আমি তোমাকে যেতে নিষেধ করব না। যাচ্ছো কবে?”

-“পরশু বিকেলে।”

-“ঠিক আছে যাও । এখন কলেজে যাবে?”

-“হ্যাঁ।”

-“আচ্ছা,নাস্তা সেরে রেডি হয়ে নেও। আমি অফিসে যাওয়ার আগে তোমাকে কলেজে ড্রপ করে দেব।”

-“হুম।”
‌.
.
.
.
ভ্যাম্পায়ার কিংডম……

গতকাল রাত্রে একদল ভ্যাম্পায়ার ছয়টা জ্যান্ত মানুষ ধরে নিয়ে এসেছে ভ্যাম্পয়ার রাজ্যে । একটা নারী,দুইটা কিশোর -কিশোরী, আর বাকি গুলো যুবক। ভ্যাম্পায়ার রাজ্যে আজ যেন রক্তের উৎসব চলছে।ওদেরকে একটা রক্তের গর্তে বেঁধে স্যাম ও তার দলের লোকরা আনন্দ করছে, নাচছে, গান করছে। গর্তে তাজা ও শুকনো রক্তের ভ্যাঁপসা গন্ধ। যন্ত্রণায় মানুষ গুলো ছটফট করছে।
স্যাম ভ্যাম্পায়ারদের থামিয়ে চিৎকার করে একটা যুবতী মেয়েকে দেখিয়ে বলে উঠলো,
-“এই সুন্দরী নারীর রক্ত আমি পান করতে চাই।
লিসার,এই সুন্দরী মেয়েটিকে আমার কাছে নিয়ে এসো।”

লিসার নামের একজন ভ্যাম্পায়ার মেয়েটির কাছে এগিয়ে গেলো।রক্তের গন্ধ পেলেই ভ্যাম্পায়ার দের আসল রুপ প্রকাশ পায়।স্যামেরও তাই হলো। আঙুল বড় বড় নখ আর মুখের ভিতর দুপাশে চারটা লম্বা দাঁতে স্যামকে কেমন বীভৎস দেখাচ্ছে। নখ দিয়ে মেয়েটির গলা ছিদ্র করতে গেলেই কিং এবিল এর উপস্থিতি টের পেয়ে থেমে যায়। স্যাম,লিসার সহ প্রত্যেকটা ভ্যাম্পায়ার কিং এবিলের দিকে তাকিয়ে আছে। কোনো মানুষকে ধরে এনে রাজ্যে হত্যা করে রক্ত পান করবে। কিং এবিল এটা পছন্দ করেন না। মানুষের রক্ত খাবে,যত খুশি তত। কিন্তু সেটা প্রাশাদের বাহিরে । মানুষের রক্তের ভ্যাঁপসা গন্ধ তিনি সহ্য করতে পারেন না। ভীষন রাগ হয় তার। মাথা নিচু করে সকল ভ্যাম্পায়ার রা দাঁড়িয়ে আছে।

কিং এবিল কিছুক্ষণ মানুষ ও রক্তের গর্তের দিকে তাকিয়ে রইলেন।তারপর ক্ষিন নজরে স্যামের চোখে চোখ রেখে প্রশ্ন করলেন,
-“স্যাম,তুমি আমার নিয়ম ভঙ্গ করেছো। এর জন্য তোমার ও বাকি ভ্যাম্পায়ার দের শাস্তি হবে,সেটা তুমি নিশ্চয় জানো?”

কিংয়ের কথায় স্যাম,লিসার বাকি ভ্যাম্পায়ার রা ভয়তে মাথা নত করে রাখে।
স্যাম ভয়ে কাচুমাচু হয়ে বলে,
-“কিং ভুল হয়ে গেছে।ক্ষমা চাচ্ছি। মাফ করে দিন।”

-“ক্ষমা আমি করব না। শাস্তি পেতেই হবে তোমাকে।”কিছুটা রাগী কন্ঠে বললো ।

-“মাফ করে দিন কিং। আর এমন ভুল হবে না।” হাত জোর করে বলে স্যাম ।

-“মাফ করতে পারি এক শর্তে।”

-“কী শর্ত! বলুন কিং? ”

-“এই মানুষ গুলোকে যেখান থেকে ধরে নিয়ে এসেছো। সেখানে রেখে আসবে।”

-“জি,কিং।”

-“আর হ্যাঁ! এমন ভুল দ্বিতীয় বার হলে,তোমার মৃত্যু নিশ্চিত ।”

স্যাম মাথা নিচু করে রাখে। কিং এবিল চলে যায় কক্ষ থেকে । স্যাম ক্রোধে ফেটে যাচ্ছে । ভ্যাম্পায়ার দের আদেশ দেয় মানুষ গুলোকে তাদের স্থান ফিরিয়ে দিতে ।
.
এবিল তার ছেলে আরলেনের কক্ষে আসে। আরলেন তার কক্ষে বসে ফোন টিপছিল আর ব্লাড খাচ্ছিল।

এবিল তার সাথে করে মন্ত্রী ইয়াঙ্ক কে নিয়ে প্রবেশ করেন। আরলেন কিং কে দেখে ফোন বিছানার উপর ছুড়ে ফেলে গম্ভীর কন্ঠে বলে,
-“হাউ আর ইউ ড্যাড?”

-“ফাইন! তুমি কি কাল ক্লাবে গিয়েছিলে আরলেন?”

-“ওহ! ড্যাড,কত বার বললাম আমাকে এলেন বলে ডাকো। আরলেন নামটা বিগ হয়ে যায়। আমি এই নামটা টলারেট করতে পারি না।” বিরক্ত নিয়ে এলেন কথাটা বলল।

কিং এবিল কিছুটা গম্ভীর কণ্ঠে বলেন,
-“নাম নিয়ে কথা বলতে আসিনি আমি। তোমার নামটা আমি রেখেছি। আরলেন বলেই ডাকব আমি। এখন প্রশ্নের উত্তর দেও আমার!”

-“হ্যাঁ,গিয়েছিলাম।”

-“কাউকে পেলে?”

-“নো ড্যাড!”

-“বাট ইমতিয়াজ কে খুঁজতেই হবে আমাদের।”

-“ড্যাড,আমি আছি। খোঁজে বের করবই জ্বীনের চিলড্রেনকে।” কিছুটা রাগী কন্ঠে বলে এলেন।

-“কাজটা তোমার একার নয়।এরোন,স্যাম,লিসার কেও দেওয়া হয়েছে। ”

-“ওদের কথা জানি না।বাট আমি ট্রাই করব ইমতিয়াজকে খুঁজে বের করার।”

-“গুড মাই সন। ইয়াঙ্ক চলো।” বলেই কক্ষ ত্যাগ করেন তিনি।

রাগী ভাব নিয়ে এলেন ব্লাড খেতে আরম্ভ করেন।
.
.
.
জিনান আলফিকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে অফিসে চলে যায়। আলফি কলেজের ভেতরে প্রবেশ করার সময় একটি মেয়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়। মেয়েটি আলফিকে ইচ্ছে করে ধাক্কা দিয়েছে,সেটা মেয়েটির চেহারা দেখেই বুঝা যাচ্ছে । মেয়েটির মুখে ছিল শয়তানি হাসি । আলফি মেয়েটির দিকে তাকায়। মেয়েটি দু হাত গুজে দাঁড়ায়। ওর পাশে আরো কয়জন ছেলে,মেয়ে এসে দাঁড়াল। আলফি ওর পড়ে যাওয়া ব্যাগটি তুলে নিয়ে হাঁটা ধরল। কারণ,ওর কোনো ইচ্ছে নেই ওদের সাথে কথা বলার। বড়লোক ঘরের মেয়ে জেনিফা । সবার সাথেই ঝগড়া,মারামারি করে থাকে। কেউ কিছু বলে না ও’কে । আলফির সাথে জেনিফার কোন শক্রতা নেই।
আলফি ছোট থাকতেই ওর মম,ড্যাড কার এক্সিডেন্ট মারা যায়।ভাগ্যক্রমে আলফি ওর মামা জিনানের কাছে থাকার কারণে বেঁচে যায়। তারপর থেকেই ওর মমের এক মাত্র ভাই জিনানের কাছেই বড় হয় । আলফির মামা একটি ছোট প্রাইভেট কম্পানিতে জব করেন। তিনি এখনো বিয়ে করেন নি। তার অবশ্য কোনো কারণ নেই। তিনি এভাবেই থাকতে চান। আলফি কয়েকবার জোর করেছিল। কিন্তু তিনি রাজি হননি। আলফি বেশ সুন্দরী ছিল। চোখ দুটো মায়াবী। গায়ের রং শ্যামলা ।একবার কোনো ছেলে ওর দিকে তাকালে চোখ ফেরানো মুশকিল হয়ে যায় । আলফির চেহারার প্রতি বড়ো হিংসা জেনিফার। যার কারণ আলফিকে অপমান করার কোনো ত্রুটি রাখে না। সুযোগ পেলেই অপমান করে। আর আলফি বেচারা মাথা নিচু করে জেনিফার অপমান সহ্য করে যায়। ক্লাসরুমে পা রাখতেই জয়,এনা,লিনা,ম্যারি,জি-তাও এর সাথে দেখা হয়ে যায়। ওরা আলফির বেস্ট ফ্রেন্ড।এক সঙ্গে অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ে। জয়,লিনা,এনা,ম্যারি লন্ডনের বাসিন্দা হলেও।জি-তাও কোরিয়ান। জি-তাও কোরিয়ান থেকে এখানে এসেছে তার পরিবারের সাথে। ওরা বাংলা ও ইংলিশ ভাষা পারলেও। জি-তাও এতটা পারে না। তবে এখানে এসে ওদের থেকে অনেকটা বাংলা ভাষা শিক্ষেছে।

ম্যারি আলফির হাত ধরে টেনে বেঞ্চে বসিয়ে বলে,
-“আলফি আজকেও কি জেনি হারামি তোকে ধাক্কা দিয়েছে?”

-“ছাড় তো ওসব কথা। এখনি স্যার এসে পড়বে।” আলফি ব্যাগ কাঁধ থেকে বেঞ্চে নামিয়ে রাখতে রাখতে বলে।

-“কিছু বলব বমি।” জি-তাও বলে।

ওর কথাটা শুনে সবাই জি-তাও এর মুখের দিকে তাকায়। জয় জি-তাও এর কাঁধে হাত রেখে বলে,
-“বলি না,আমি হবে।”

-“মিস্টেক!”

-“বলো জি-তাও।” আলফি বলে।

-“ওঁখে(ওঁকে) আমরা পিঠিয়ে(পিটিয়ে) কলেজ ছাড়া হরবো(করবো)।”

জি-তাও এর টেনে টেনে বলা কথা শুনে আলফি বাদে সবাই হাসতে লাগল। জি-তাও ওদের মুখের দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

-“চুপ কর। এভাবে হাসার কি আছে। জানিসই তো জি-তাও বাংলা ভাষা ঠিক মতো বলতে পারে না।” আলফি কিছুটা ধমকের স্বরে বলে ওদের।

সবাই চুপ হয়ে যায়। লিনা বলে,
-“জাস্ট চিল দোস্ত,আমরা মজা করেছি।”

জয় কিছু বলতে যাবে তার আগেই ক্লাস টিচার এসে পড়ে। সবাই চুপ হয়ে যায়। এবং ক্লাসে মন দেয়।
.
.
.
.
.
.
.
Continue To……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে