Sunday, October 5, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"এক মুঠো প্রেম রঙ্গনাএক মুঠো প্রেম রঙ্গনা পর্ব-১৯+২০

এক মুঠো প্রেম রঙ্গনা পর্ব-১৯+২০

#এক_মুঠো_প্রেম_রঙ্গনা
লাবিবা ওয়াহিদ
| পর্ব ১৯ |

———————-
–“ছিহ!”

মেয়েলি কন্ঠস্বরে শুনে ইরা’দ পাশ ফিরে তাকালো। নওরি তাঁর থেকে কিছুটা দূরত্বে দাঁড়িয়ে। চোখে-মুখে একরাশ বিস্ময়। হয়তো প্রত্যাশা ছিলো না, ইরা’দের অধর সি!গারে!টকে আগলে নিবে। তবে ইরা’দের ভিন্ন রূপ দেখে নওরি অসম্ভব চমকালো। ইরা’দ কয়েক সেকেন্ড নিবিড় দৃষ্টিতে নওরির দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো। নওরি শুকনো ঢোঁক গিললো। ইরা’দের চোখ-মুখ রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। অত্যন্ত রাগ যেন পুরো মুখশ্রী গ্রাস করে নিয়েছে। ইরা’দ দায়সাড়া ভাব নিয়ে শূণ্যে ধোঁয়া ওড়ালো। নওরি দূরে সরে দাঁড়ালো। এই দৃশ্য তাঁর জন্যে ব্যথাতুর। ইরা’দও কীরকম বেপরোয়া! পাশে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে তাও সে কি না নির্বিকার ভঙ্গিতে স্মোক করছে? নওরি নজর ঘুরিয়ে সামনে তাকালো। যথেষ্ট দূরেই আছে ইরা’দের থেকে। পরিবেশ শান্ত। দমকা হাওয়ার শো শো শব্দ ব্যতীত কোনো শব্দ নেই। রাস্তা থেকে দুই একটি রিকশার টিং-টাং শব্দ আসছে। যা খুবই ঝাপসা। কী প্রগাঢ় নিস্তব্ধতা। ইরা’দ না থাকলে হয়তো নওরি কিছুটা ভয় পেতো। কিন্তু ভয় তাকে ছুঁতে পারেনি এখনো।

–“অসময়ে ছাদে কী করছেন?”
পুরুষালি ভরাট কন্ঠস্বর শ্রবণ হতেই নওরি ঘাড় বাঁকিয়ে তাকায়।
–“উত্তর দিতে বাধ্য নই।”
–“আমি ভ!য়ংকর রেগে আছি। জানেন?”
নওরি একপলক ইরা’দের মুখের দিকে তাকিয়ে দমে গেলো। আর প্রত্যুত্তর করলো না সে৷ ইরা’দও আর ঘাটলো না নওরিকে।
–“আপনি স্মোক করেন?”
–“হু। মাঝেমধ্যে!”

ইরা’দের সোজাসাপ্টা স্বীকারোক্তি।
–“একটা মেয়ে আপনার সামনে দাঁড়িয়ে। আপনি তাও স্মোক করছেন।”
–“নতুন কিছু নয়।”
ইরা’দের কন্ঠস্বরে রাগ প্রকাশ পাচ্ছে। তাঁর উপর বরাবরের মতোই বাঁকা জবাব। নওরি ইরা’দকে কিছু বলার সাহস পেলো না। উচ্ছন্নে যাক, নওরির কী? ইরা’দ পুণরায় এক টান দিয়ে বলে,
–“স্মোক স্বাস্থ্যের জন্যে ক্ষতিকর জেনেও সকলে এটাতেই কেন অভ্যস্ত জানেন? এটা মন হালকা করে, টান দিলে মনে হয় ধোঁয়ার সাথে ধোঁয়াশাময় রাগ, বেদনা সব বেরিয়ে যায়। আপনি তা বুঝবেন না।”

নওরির কাছে ইরা’দের লজিক পুরোই বিশ্রী লাগল, যা সে মুখে প্রকাশ করলো না। যে জিনিস স্বাস্থ্যের জন্যে জন্যে ক্ষতিকর হতে পারে, সেটা কখনোই মানসিক শান্তির পথ হতে পারে না। মানসিক শান্তির জন্যে আরও অগণিত পথ আছে। নওরির নিরবতায় ইরা’দ আবার বললো,
–“তবে কেউ একজন বারণ করলে আমি কখনোই এটা ছুঁবো না।”
–“তাহলে বিয়ে করে ফেলুন। আপনার মা তো আপনাকে বিয়ে দেবার জন্যে প্রস্তুত।”

রাগটা সবে মাত্র কমে এসেছিলো ইরা’দের। নওরির এরূপ উক্তি আগুনে ঘি ঢালার মতোই লাগলো ইরা’দের। কিংবা “যার জন্যে করেছি চুরি, সেই বলছে চোর” প্রবাদের মতো লাগলো। গরম চোখে তাকালো নওরির দিকে। নওরি তখন ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিলো ইরা’দের পানে।
–“আপনার মুখ থেকে এসব শুনতে চাইছি না।”
–“কেন? ভুল বললাম?”
–“অনেকটাই!”

নওরি পিটপিট করে ইরা’দের পানে তাকিয়ে বলে,
–“আচ্ছা। কিন্তু আপনি বাসায় না গিয়ে ছাদে কী করছেন? আমি যতদূর জানি আপনি বাড়িতেই ছিলেন না। তাহলে কী করে সকলের চোখে ফাঁকি দিয়ে ছাদে আসলেন?”
–“বাসার অবস্থা সম্পর্কে অবগত আছি। এজন্য-ই পাশের ছাদ টপকে এই ছাদে এসেছি!”

নওরি চোখ বড়ো বড়ো করে তাকালো ইরা’দের পানে। কী ভয়ানক ছেলেরে বাবা। নওরি নিজেকে সামলে পুণরায় বললো,
–“জানেন আপনার মা কতটা কাঁদছে?”
–“জানি। এজন্যই বাসায় যাচ্ছি না। আমাকে দেখে আরও কাঁদবে। বিয়ের জন্যে জোর-জবরদস্তি তো আছেই!”
–“বিয়ে করতে কী সমস্যা আপনার?”

ইরা’দ এবার নওরির দিকে তাকালো। গভীর নজরে।
–“আপনার বোঝার বয়স হয়নি। বোঝার হলে এতদিনে বুঝে যেতেন। যেদিন বোঝার বয়স হবে সেদিন জানাবো।”
–“আমি যথেষ্ট বুঝি।”
–“একদম-ই না।”

নওরি মুখ ফিরিয়ে নিলো। আবারও নিরবতা ছেয়ে গেলো ছাদটিতে। ইরা’দ সি!গারেট ফেলে দিয়েছে। রাগটা মূলত তাঁর রাজনৈতিক সমস্যার কারণে। গার্লস স্কুলের সামনে বার করার অনুমতি ইরা’দের কাছে না পেয়ে ইরা’দের বিপক্ষ দলের থেকে অনুমতি পেয়ে গেছে। মূলত তাঁরা কিছু টাকার বিনিময়ে নিজেদের বিবেক-বুদ্ধি বিক্রি করে দিয়েছে। বিপক্ষ দলের সাথে এমনিতেই সবসময় ইরা’দের দলের দ্বন্দ্ব লেগেই থাকে। সেখানে এরকম একটা অবস্থায় বড়ো রকম ঝামেলা ঘটবেই। ইরা’দ মূলত সেসব ব্যাপারেই রাগাম্বিত, চিন্তিত। এমতাবস্থায় নওরিকে তাঁর একাকীত্বে কাছে পেয়ে কিছুটা শান্তি মিললো যেন। মস্তিষ্ক শান্ত হয়ে গেলো যেন।

ইরা’দ বুঝলো এখনই সু্যোগ, নওরি সম্পর্কে জানার। তাই ইরা’দ সময় বিলম্ব না করে নওরির দিকে প্রশ্ন ছুঁড়লো,
–“বাড়িতে কে কে আছে?”

সচ্ছ, সুন্দর বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়া নওরি হঠাৎ এরূপ প্রশ্নে নড়েচড়ে দাঁড়ালো। একরাশ বিষণ্ণতাও তাকে গ্রাস করলো।
–“কী হলো? ঠিকাছেন?”
নওরি চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শুধায়,
–“কেউ নেই আমার!”
–“সেটা কী করে সম্ভব? সেদিন বললেন মা নেই, আজ বলছেন কেউ নেই?”

নওরি হাসলো। তাচ্ছিল্যের হাসি। তাঁরা, নক্ষত্রে ভরপুর অম্বরে শূণ্য দৃষ্টি মেলে মৃদু স্বরে আওড়ায়,
–“যার জীবন থেকে মা চলে যায়, তাঁর চারপাশের মানুষগুলাও তাকে ছেড়ে চলে যায়। মা হীন সন্তান থেকে যায় আজীবন শূণ্য কলসের মতো।”

ইরা’দ মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রয় নওরির দিকে। এলোমেলো হলেও কথাগুলো সুন্দর। তবে ব্যথাতুর। ইরা’দ অনুভব করলো তাঁর বক্ষস্থলের বা পাশটি কেমন খালি হয়ে আসছে।
–“তাঁরা কোথায়?”
–“সব বলতে নেই।”

নওরি আর এক মুহূর্ত-ও ছাদে না দাঁড়িয়ে হনহন করে চলে যায়। ইরা’দ তাঁর যাওয়ার পানে তাকিয়ে বলে,
–“সব না বললেও সব জেনে নেয়াটা বেঠিক নয়।”

এরমাঝে হঠাৎ ইরা’দের ফোনটা ভাইব্রেট করে ওঠে। ইরা’দ ফোন বের করে দেখলো নিখিল ফোন করেছে৷ ইরা’দের নাম্বার দুইটা। একটা পরিবারসহ সবাই জানে আর অপরটি ব্যক্তিগত। যেটা বাড়ির কেউ-ই জানে না। একমাত্র নিখিল বাদে। নিখিল সেই নাম্বারেই কল করেছে। ইরা’দ এদিক ওদিক তাকিয়ে কল রিসিভ করলো,
–“শালা কই তুই? অনেক তো পলায়ে ছিলি। এখন তো দয়া করে বাড়ি ফির। তোর বাসা থেকে তো আমাকে কল দিতে দিতে পাগল করে দিচ্ছে।”
–“যাচ্ছি।”

———————
এক সপ্তাহ কেটে গেলো। নওরি তাঁর টিউশনি এবং এডমিশনের প্রিপারেশন নিয়ে মহা ব্যস্ত। তবে মাঝেমধ্যে কিছু একটা ভুলে যাচ্ছে সে। যার ফলে তাকে হতাশা ঘিরে ধরে। কিন্তু সে হার মানেনি। চেষ্টায় নিজেকে ব্যস্ত রাখে। এছাড়া মাহির দেয়া অনুপ্রেরণা তাঁর দমে যাওয়া মনোবলকে ফিরিয়ে আনে, শক্ত করে।

ইদানীং এ নিদ্রকে এক ধরণের খেলনা ব!ন্দুক কিনে দিয়েছে ইরা’দ। যেটার ট্রেগার চাপলেই এক ধরণের মিউজিক বেজে ওঠে। এটা নিয়ে নিদ্র’র আনন্দের শেষ নেই। সারাদিন, রাত এটা তাঁর হাতে থাকবেই। রাতে ঘুমোতে গেলেও বালিশের পাশে রেখে ঘুমোয়।

এখন বাজছে সকাল আটটা। স্কুলের ইউনিফর্ম পরে পা টিপে টিপে সারিফার রুমে প্রবেশ করলো নিদ্র। হাতে তাঁর সেই বন্দুক। দুষ্টু বুদ্ধি তাঁর মস্তিষ্কে কিলবিল করছে। দাঁত কেলিয়ে সারিফার কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়ালো। সারিফা তখন এলোমেলো হয়ে ঘুমোচ্ছে। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সে। নিদ্র মুখ চেপে হাসি দিয়ে ট্রেগার চাপলো। সাথে সাথে বিকট মিউজিক বেজে উঠল। সেই মিউজিকের শব্দে সারিফা ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে বসলো। বোকা চাহনিতে চারপাশে নজর বুলালো। নিদ্র ফিক করে হেসে দেয়। সারিফা নিদ্র’র দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো সবটা। পরবর্তীতে যখন বুঝলো নিদ্র’র অকাজ সম্পর্কে, তখনই উচ্চস্বরে চিৎকার দিয়ে উঠলো সারিফা। চোখে-মুখে রাগ তাঁর সুস্পষ্ট!
–“নিদ্র’র বাচ্চা! তুই আমার ঘুম ভাঙছিস কেন? নিদ্র রে! তোকে তো আজ…”

সারিফা নিদ্রকে ধরার পূর্বেই নিদ্র খিলখিলিয়ে হেসে দ্রুত পালালো। নিদ্র রুম থেকে চলে গেলেও সারিফার গালমন্দ থামলো না। অবিরত বলেই গেলো। একসময় মাথা ধরে গেলো তাঁর। সারিফা আবার শুয়ে পরলো। ঘুমানোর চেষ্টা করলো।

নওরি ক্লান্ত ভঙ্গিতে বাসায় প্রবেশ করলো। চার তলায় ব্যাচ পড়ায় সে। এই এপার্টমেন্টের বেশ কয়েকজন বাচ্চাকে নিয়েই এই ব্যাচ। ব্যাচটা পড়ায় এক স্টুডেন্টের বাসায়। সকাল সাতটা থেকে আটটা। সপ্তাহে পাঁচদিন। তবে নওরি কিছুটা বিষণ্ণ৷ এক দুইটা সাবজেক্ট বুঝতে কিছুটা সমস্যা হয় তাঁর। এডমিশন নিয়ে চিন্তায় তাঁর চোখের নিচে কালি পরেছে। পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে পড়তে হলে তো তাকে ভালো একটা প্রিপারেশন নিতে হবে। কিন্তু এই পথে তাকে বারবার ধাক্কা খেতে হচ্ছে। বৈঠকঘর অতিক্রম করতেই দেখলো হাতে গান নিয়ে নিদ্র মুখ টিপে হাসছে। নওরি ক্লান্ত ভঙ্গিতে বললো,
–“হাসছো কেন নিদ্র?”
–“সাবানাকে সাবান দিয়ে ডলেছি নৌরি ফুল৷ এখন মনে হচ্ছে আকাশে উড়ছি আমি।”

নওরি নিদ্র’র কথার আগা-মাথা কিছুই বুঝলো না। শুধু এইটুকু বুঝলো, সাবানা হচ্ছে সারিফা। এটা নিদ্র’র দেয়া নিকনেম। নওরির চোখে ঘুম থাকায় নিদ্রকে আর কোনো প্রশ্ন করলো না। সোজা তাঁর রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে ফেললো। দরজা লাগানোর শব্দ কান খাড়া করে শুনতেই ফ্রিশা মাথা তুলে তাকালো। নওরি ফ্রিশাকে শাসিয়ে শুধায়,
–“বিরক্ত করবি না। আমার ঘুম প্রয়োজন।”

——————–
দুপুরে নওরির ফোনে কল আসলো। ঘুমটা কাচা হয়ে এলো ফোনের রিংটোনে। কপালে কয়েকটি ভাঁজ ফেলে পিটপিট করে তাকালো। বালিশের কাছে ফোন হাঁতড়ে হাতে নিলো। নাম্বার সেভাবে নজরে এলো না। মাহি ভেবে নওরি কল রিসিভ করে ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে ওঠে,
–“হ্যালো।”
–“এই অসময়ে আপনি ঘুমোচ্ছেন? খাওয়া-দাওয়া নিশ্চয়ই স্বপ্নে করে নিয়েছেন?”

পুরুষালি কন্ঠস্বর শুনে নওরির ঘুম উড়ে গেলো৷ বদ্ধ চোখ জোড়া মেলে দিয়ে বলে,
–“কে? কে আপনি?”
–“ইরা’দ বলবো নাকি নিদ্র?”

নওরি তড়িৎ উঠে বসে। টেবিলে রাখা ছোট ঘড়িতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। একটা বেজে ঊনচল্লিশ! সময় দেখে নওরির চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম। অস্ফুট স্বরে আওড়ায়,
–“সর্বনাশ!”
–“কিসের সর্বনাশ?”

নওরি হুঁশ এলো। কান থেকে ফোন নামিয়ে দেখলো আননোন নাম্বার। ইরা’দের নাম্বার! নওরি ফোন কানে লাগিয়ে বললো,
–“এ সময়ে কল দিলেন যে?”
–“খাওয়া-দাওয়া করেছেন?”
–“আমার প্রশ্নের উত্তর এটা নয়।”
–“না খেয়ে আসলে আমিও আমার উত্তর দিবো না। কল কাটছি। দশ মিনিট পর আবার কল দিবো। তখনো যদি না খান তাহলে আপনার বাসায় আসতে বাধ্য হবো!”

বলেই ওপাশ থেকে খট করে কল কাটার শব্দ হলো। নওরি হ্যাবলার মতো ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলো।
–“মহা ঝামেলা তো! বাসায় কেন আসবে? মা!রপিট করতে? ধুর, কী ভাবছি!”

এমতাবস্থায় নওরির পেট মুঁচড়ে উঠলো খুদায়। অদ্ভুত শব্দও হলো পেটের ভেতর থেকে। নওরি পেট চেপে বসে রইলো হতভম্ভ হয়ে। প্রচুর খুদা পেয়েছে বুঝতে পারলো। তাই দেরী না করে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

দশ মিনিট পরে ইরা’দ কল দিলেও নওরি ইরা’দ এবং ফোনের কথা ভুলে গেলো। সে আপাতর নূরজাহানের সাথে বসে টিভি দেখতে ব্যস্ত। ফোন তাঁর রুমেই।

মিনিটখানেক পর কলিংবেল বেজে ওঠে। নূরজাহান ঘাড় বাঁকিয়ে পিছে ফিরে বলে,
–“নিশ্চয়ই সারিফা এসেছে। আমি..”
নূরজাহান উঠতে নিলে নওরি তাকে বসিয়ে দেয়। আশ্বাস দিয়ে বলে,
–“আপনি বসুন আন্টি, আমি দেখছি!”

বলেই নওরি উঠে দরজা খুলতে যায়। সদর দরজা খুলতেই তাঁর চোখ কপালে উঠে গেলো। হন্তদন্ত হয়ে মাথায় কাপড় দিয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো ইরা’দের পানে। ইরা’দ দেয়ালে এক হাত হেলিয়ে বলে,
–“ইরা’দ তাঁর কথা রাখে। সরে দাঁড়ান!”

————————–
~চলবে, ইন-শা-আল্লাহ্।
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

#এক_মুঠো_প্রেম_রঙ্গনা
লাবিবা ওয়াহিদ
| পর্ব ২০ |

——————————
–“ইরা’দ তাঁর কথা রাখে। সরে দাঁড়ান।”

নওরি হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে। ইরা’দের দিকে হতবিহ্বল দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রইলো কিয়ৎক্ষণ। কিছু মুহূর্তের জন্যে বাকশক্তিও হারিয়ে ফেললো৷
–“শুনতে পাননি?”
–“কেন এসেছেন?”
–“কথা রাখতে।”
–“কোন কথা?”
–“কলের কথা ভুলে গেছেন? অলরেডি বিশ মিনিট হয়ে গেছে।”

নওরি মনে পরলো ইরা’দের বলা কথাগুলো। ফোনের কথা তো মাথাতেই ছিলো না। খাওয়া-দাওয়া করে নূরজাহানের সাথেই বসে পরেছিলো। নওরি কিছু বলার জন্যে প্রস্তুতি নিতেই নূরজাহানের কন্ঠস্বর কর্ণধারে প্রবেশ করলো।
–“কে এসেছে নওরি? আরে! আমার বড়ো নিদ্র যে। বাইরে দাঁড়িয়ে কেন? ভেতরে আসো!”

ইরা’দ নওরির দিকে তাকিয়ে চোখ তাকিয়ে আড়ালে চোখ টিপ দিলো। নওরি বিষম খেলো। ইরা’দ বাহির থেকে নওরির একদম নিকটে এসে দাঁড়ায়। নূরজাহান ততক্ষণে ভেতরে চলে গেছে। ইরা’দকে নিজের কাছে আসাতে নওরি নিঃশ্বাস গলায় আটকে গেলো। মাথা উঁচু করে ইরা’দের দিকে তাকাতেই ইরা’দ মৃদু স্বরে বলে,
–“আপনাকে স্পর্শ করার ইচ্ছে নেই। কিন্তু আপনি চাইলে আমি নিজে থেকে আপনাকে দরজার সামনে থেকে সরিয়ে দিবো!”

ইরা’দের এরূপ উক্তিতে নওরি চোখ কপালে উঠে যায় অবস্থা। কথাগুলোও কেমন শিহরণ বইয়ে দিলো সর্বাঙ্গে। নওরি তড়িৎ নিজ থেকে সরে দাঁড়ালো। হতবুদ্ধি সব হারিয়ে ফেলেছে একদম। ইরা’দ ঘাড় বাঁকিয়ে নওরির দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি দিলো। অতঃপর নওরিকে আপাদমস্তক দেখে বলে,
–“সাদাতেও আপনাকে সুন্দর লাগছে। হাতে চুড়ি থাকলে হয়তো আরও সুন্দর লাগতো।”

বলেই হনহন করে ভেতরে চলে গেলো। নওরি গোল গোল চোখে ইরা’দের যাওয়া দেখলো। কী আজব ছেলে। এর মতিগতি বোঝার জো নেই। ইরা’দ সামনে থাকলে নওরি তো পুরোই বো!কা বনে যায়। কী হচ্ছে তাঁর সাথে? অদ্ভুত!

——–
–“ইরা’দ বাবা, এই সময়ে আসলে যে!”
ইরা’দ নূরজাহানের সোফার পেছনে মূর্তির মতো দাঁড়ানো নওরির দিকে একপলক চাইলো। অতঃপর গলা খাঁকারি দিয়ে বলে,
–“মা নেই। চায়ের তৃষ্ণা পেয়েছে। তাই এখানে চলে আসলাম!”

নওরির কেন যেন মনে হলো ইরা’দ মিথ্যে বলছে। আদৌ চা খাওয়ার জন্যে এসেছে নাকি অন্যকিছু? নূরজাহান সুর তুলে বলে,
–“ও আচ্ছা। কিন্তু ভাবী কোথায় গেলো?”
–“বলতে পারছি না। হয়তো শপিং এ।”
–“ভাই কী ব্যাংকে?”
–“হ্যাঁ। নানুও ঘুমোচ্ছে।”
–“ভালো করেছো এসে। নওরি চা বানিয়ে খাওয়াবে তোমাকে।”

নওরি চমকে তাকালো নূরজাহানের পানে। ইরা’দের দিকে তাকাতেই ইরা’দ চমৎকার হাসি দিলো। এই হাসি দেখে নওরির ভেতরটা কেমন ধ্ক করে উঠলো। নূরজাহানের অবাধ্যও হলো না। নওরি কিচেনে চলে গেলো। চা বানাতে বানাতে ভাবছে ইরা’দের কান্ডগুলো। ইরা’দের বাঁকা কথা, তাঁর আলাদা কেয়ার করা, রাগ দেখানো সবই তাঁর মস্তিষ্কে তরঙ্গিত হচ্ছে। গম্ভীর স্বভাব অন্যদের ক্ষেত্রে দেখলেও নিজের ক্ষেত্রে কখনো দেখেনি নওরি। হয়তো ইরা’দের কান্ডগুলো কোনো কিছুর ইঙ্গিত, যা নওরির মন আন্দাজ করলেও মস্তিষ্ক অবুঝ হয়ে আছে। এছাড়া নওরি তো এসব ভাবতে নতুন শহরে আসেনি। এসেছে জীবনকে নতুন সুযোগ দিতে। নিজেকে শক্তভাবে তৈরি করতে। তাহলে? সব কেন এলোমেলো লাগছে তাঁর?
–“কী ভাবছেন এত?”

নওরির ধ্যানে ছেদ ঘটে পুরুষালি ভরাট কন্ঠস্বরে। নওরি ঘাড় বাঁকিয়ে তাকায়। ইরা’দ দাঁড়িয়ে। দৃষ্টি সন্দিহান।
–“আপনি এখানে?”
–“চায়ের খোঁজ নিতে আসলাম। না জানি উল্টো পাল্টা কিছু মিশিয়ে দেন।”
–“মেশাবো কেন?”
–“আমিও তাই ভাবছি। আপনার থেকে এসব আশানুরূপ নয়। আপনি তো সরল মানুষ।”

নওরি হাসলো। তাঁর হাসির সাথে তাল মিলিয়ে ইরা’দ হাসলো। যদিও ইরা’দের নিবিড় দৃষ্টি নওরির হাসিতে।
–“আপনি কী সবসময়ই এমন মজার মানুষ?”
–“ওমা! মজার মানুষ? আসলেই?”
–“মাঝেমধ্যে।”
–“আমার স্বভাব রংধনুর মতো। কখনো হাসি, কখনো রাগি। কখনো আবার আপনার মতে মজার মানুষ৷”

নওরি পুণরায় হাসলো। ইরা’দ দুই ধাপ এগোলো। ইরা’দের আগানো দেখে নওরির হাসি উড়ে গেলো। পিছিয়ে পেছনের শেল্ফের সাথে লেপ্টে গেলো। ইরা’দ শেল্ফে এক হাত রেখে নওরির দিকে ঝুঁকে বললো,
–“সত্যি বলবো?”
–“ক..কী?”
–“কাঁপছেন কেন?”
–“স..সরুন।”
–“গরম লাগছে। পারবো না। বাই দ্য ওয়ে, সত্যিটা বলি। আমি আপনার উপর রেগে আছি। অল্প! এখন আপনার হাতের চা খেলে রাগ ঝড়ে যাবে। সেদিন তো আপনার স্টুপিড বিড়ালটার জন্যে চা খেতে পারিনি। আজ খুব তৃপ্তি সহকারে খাবো!”

কোথা থেকে আবারও ইরা’দের পায়ে সুঁড়সুঁড়ি লাগলো। যাকে বলে মারাত্মক ধরণের সুঁড়সুঁড়ি। ইরা’দ ছিটকে দূরে সরে দাঁড়ালো। নওরির পায়ের কাছে ফ্রিশা অবস্থান করছে। ইরা’দের বুঝতে বাকি রইলো না ফ্রিশা সেদিনের মতোই তাঁর পায়ে এসে বসেছে। বিরক্তিতে ইরা’দের কপালে পরেছে কতশত ভাঁজ। নওরি পায়ের কাছে ফ্রিশাকে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। আরেকটুর জন্যে তো দম আটকে মা!রা পরতো সে৷ ইরা’দ বিরক্তি প্রকাশ করে বললো,
–“ওকে! তবে আগের বারের মতো আমার চা পান করায় যেন ব্যঘাত না ঘটায়! আপনার বিড়ালকে সাবধান করে দিন!”

ফ্রিশা পিটপিট করে ইরা’দের দিকে তাকালো। অতঃপর কয়েক ধাপ এগোতেই ইরা’দ লম্বা লম্বা পা ফেলে বেরিয়ে যায় কিচেন থেকে। ফ্রিশা ইরা’দের পেছনে ছুটতে গেলে নওরি ওকে কোলে তুলে নেয়।
–“মিঁয়্যাও!”
–“তাকে বিরক্ত করিস না! আমার সাথে থাক!”
–“মিঁয়্যাও!”

এমন সময়-ই নিদ্র এলো। নিদ্র এসে নওরির কাছে ফ্রিশাকে চাইলো।
–“ফ্রিশাকে আমায় দাও।”
–“কেন?”
–“নিদ্র ভাইয়া বলেছে। ভাইয়া ওইদিনও ফ্রিশার জন্যে চা খেতে পারেনি। আমায় দাও। আমি ওকে নিয়ে ছাদে যাবো!”

—–
–“ইরা’দ বেশ তৃপ্তি নিয়ে চা পান করলো। আজ কোনো বাঁধা, বিপত্তি নেই। কী মজা করেই না খেয়েছি।”

নওরি দূরে দাঁড়িয়ে নিরবে শুনলো শুধু। নূরজাহান ইরা’দের সম্মুখেই বসে। নওরি শূণ্য কাপটি টি-টেবিলে রেখে বলে,
–“যেজন্য এসেছি। সারিফা বললো নৌরি ফুলের পড়া বুঝতে সমস্যা হয়!”

নওরি চমকে তাকালো ইরা’দের পানে। সারিফা কী ইরা’দকে তাঁর সমস্যার কথা বলে দিয়েছে? নূরজাহান অবাক হয়ে বলে,
–“তাই নাকি? আমি তো জানতাম না? নওরি? এটা কী সত্যি?”
নওরি মাথা নিচু করে ফেলে। খুবই ধীর গলায় জবাব দেয়,
–“জ্বী আন্টি!”
নূরজাহান কিছু বলার পূর্বেই ইরা’দ বলে ওঠে,
–“আজ থেকে আমি আপনাকে পড়াবো নওরি। চাচী, তোমার বাসায় আসা-যাওয়া বাড়লে তোমার কোনো সমস্যা হবে না তো?”

ইরা’দের মুখে “আপনি” সম্বোধনটা নওরির ভীষণ লজ্জাজনক লাগলো। কী ভাববে নূরজাহান তাকে? বেমানান এই সম্বোধন নওরিকে যেন মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে একদম। নূরজাহান বলে,
–“কীসব বলছো তুমি বাবা। কিসের সমস্যা? আসো। এতে নওরির-ই উপকার হবে।”

—————–
এডমিশনের দিন যেন ঘনিয়ে এসেছে। ইরা’দ নওরিকে বেশ ভালোভাবেই পড়িয়েছে। ইরা’দ রাজনীতি ভালো জানলেও তাঁর জ্ঞান ভান্ডার দেখে নওরি ভীষণ মুগ্ধ। নূরজাহান আন্টির কাছে শুনেছে, ছাত্রজীবনে ইরা’দ ভীষণ ভালো ছাত্র ছিলো। পড়াশোনাতেও তাঁর অধিক ধ্যান ছিলো। তাইতো সময়-সাপেক্ষে বইয়ের সাথে বন্ধুত্ব করে উঠেছিলো চরম গম্ভীর মানুষ। কথা কম বলাও তাঁর স্বভাবের অন্যতম। কিন্তু নওরির সামনে কী করে যে তাঁর স্বভাবটি ব্যতিক্রম ধারণ করে তা তার জানা নেই।

ইরা’দ রাজনীতি ভালোবাসতো। এজন্যই একজন রাজনীতিবিদ হয়ে দেখিয়েছে। এই পজিশনের জন্যে সে কয়েক বছরের পরিশ্রম ঢেলেছে। যেরূপ পড়াশোনা করেছে, সেই পর্যায়ে চাকরি করতে গেলে আজ তাঁর ভালো পজিশন হতো। কিন্তু ওইযে, মন-মস্তিষ্কে রাজনীতি ধারণ করেছে সে। রাজনীতিও অবশ্য খারাপ নয়। তবে খারাপ লাগা এক জায়গাতেই আটকে। মা!রা-মা!রি এবং সংঘর্ষে। মৌসুমির তো এটা ভেবেই প্রেশার বেড়ে যায়, যে তাঁর পড়ুয়া ছেলে এসবে কী করে জড়িয়ে গেলো।

নওরি একবার জিজ্ঞেস-ও করেছিলো। ইরা’দ মুচকি হাসি দিয়ে বলেছিলো,
–“আমাদের দেশটায় আসল নেতার বড্ড অভাব। এ দেশের যা দু!র্নীতি, তাতে সব দেখেও না দেখার ভান ধরা আমার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি নিজে একজন সৎ নেতা হয়ে দেখাবো। যার জবানের মতোই হবে তাঁর কাজ-কর্ম। আবার আমি নিজেকে নিয়েও প্রসংশা করছি না। মানুষ মাত্র-ই ভুল। আমারও আছে। মহান নই আমি। তবে ভুলগুলো শুধরে নেবার চেষ্টা করি।”

ইরা’দকে বুঝতে নওরির জন্যে একটা মাস-ই যথেষ্ট ছিলো। ইরা’দকে যত দেখেছে ততই মুগ্ধ হয়েছে। ঘর এবং বাহির কতটা নিখুঁত ভাবে সামলায়। ক্লান্ত শব্দটা তাঁর মধ্যে ধারণ করতে দেখেনি নওরি।

এক সপ্তাহ পর এডমিশন। নওরি টিউশনির থেকে ছুটি নিয়ে দিন-রাত এক করে পড়ছে। তাঁর একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পাওয়া। এ নিয়ে ইরা’দের সাহায্যও ছিলো ব্যাপক। সময় এখন সন্ধ্যা সাতটা ঊনিশ। মাগরিবের নামাজ সেরে নওরি পড়তে বসেছে। মিনিটখানেকের মধ্যেই কলিংবেলের শব্দ পেলো। নওরি জানে কে এসেছে। কিছুক্ষণ পর ইরা’দ আসলো।
–“দেখি কী পড়ছেন!”

নওরি হঠাৎ পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়লো ইরা’দের দিকে।
–“আপনি কেন আমায় “আপনি” সম্বোধন করেন? ধারণা করছি আপনি আমার থেকে প্রায় দশ-এগারো বছরের বড়ো! এত বড়ো ছেলে হয়ে আমার মতো পিচ্চি মেয়েকে “আপনি” সম্বোধন করছেন। এটা বড্ড অস্বস্তিকর আমার জন্যে!”

—————————
~চলবে, ইন-শা-আল্লাহ্।
ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন।

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ