Monday, October 6, 2025







বাড়ি"ধারাবাহিক গল্প"তৈমাত্রিক পর্ব-৩৭ এবং শেষ পর্ব

তৈমাত্রিক পর্ব-৩৭ এবং শেষ পর্ব

#তৈমাত্রিক
#লেখিকা; Tamanna Islam
#পর্বঃ ৩৭ {অন্তিম পর্ব}

🌸🤍🌸

।।

।।

।।

দেখতে দেখতে কেটে যায় আরো দুই মাস। ইতোমধ্যে মেহের খানিক বড়ো হয়েছে। কিন্তু তাকে দেখে বোঝা যায় না যে সে মাত্র দুই মাসের বাচ্চা। আয়ুশ,লায়লা খতুন বা কণার আসা যাওয়া প্রায় প্রত্যেক দিন লেগেই থাকে। আয়ুশ তো মাঝে মাঝে অফিস ছেড়েও এসে পরে মেহেরের জন্য। আর যদি মেহের একবার আয়ুশ কে দেখেছে তাহলে তো হলোই। তখন মনে হয় তার মাকেও তার লাগে না। তবে এখনো আয়ুশ & মেহরামের বিয়ে টা হয় নি। সবাই চায় পুরো বিধিবিধান মেনে বিয়ে টা করাতে। বিয়ে হয় নি তবে খুব শীঘ্রই হয়ে যাবে। তবে সবার খুশি এখন মেহের কে ঘিরেই। মেহরাম ঠিক আগের মতো হয়ে গেছে। এখন সে হাসতে জানে। খুব কষ্টে এসেছে মুখের তার এই হাসিটা। সম্পূর্ণ টাই নিজের মেয়ের জন্য। সবাই মেলাতে যায় যে আসলে মেহের দেখতে হয়েছে কার মতো। সবাই বলে মেহের পুরো মেহরামের কার্বান কপি কিন্তু মেহরামের কাছে তার মেয়েকে ঠিক তনুর মতো লাগে। মাঝে মাঝে মনে হয় তনুই ঘুড়েফিরে এসে পরেছে মেহরামের কাছে। মেহের হওয়ার সাত দিন পর মেহরাম আর আয়ুশ মিলে মেহেরকে নিয়ে তনুর কবরের পাশে গয়েছিলো। তবে মেহরাম কাদে নি। একবার তনুর দিকে তো আরেকবার মেহেরের দিকে তাকাচ্ছিলো। আয়ুশ আজ সকালে মেহরামদের বাড়ি এসে মেহের কে দেখে গিয়েছে। এখন সে অফিসে। তবে লায়লা খাতুন আর কণা মেহরামদেরই বাড়িতে। কথা বলার ফাকেই আরেক প্রসঙ্গ উঠে আসে।

লায়লা;; আপা আসলে বলছিলাম কি যে দুই মাস তো পার হয়ে গেলো। এবার না হয় আয়ুশ আর মেহরামের বিয়ে টা….

আতিয়া;; হ্যাঁ আমিও তাই বলতে চাইছিলাম। কেননা ডেলিভারি তো হয়েই গিয়েছে। আর মায়ের হায়েজ নেফাসের তো ৪৫ দিন পার হয়ে গিয়েছে এবার সব ঠিক আছে আর বিয়ে করাও জায়েজ।

কনিকা;; তাহলে আর কি ভালো দিন দেখো, দেখে শুনে দিয়ে দাও দুইটার বিয়ে।

লায়লা;; মেহরাম আর আয়ুশের সাথে একটা বার কথা বলা উচিত।

আতিয়া;; আয়ুশকে বিকেল বেলা অফিস থেকে আসতে বলুন এখানে তারপর দুইজন কে সামনা সামনি বসিয়ে না হয় কথা বলা যাবে।

কনিকা;; হ্যাঁ তাই কর।

কণা;; তার মানে এবার পুরো পাক্কা যে বিয়ে খাবো।

লায়লা;; আরে হ্যাঁ।

যেই ভাবা সেই কাজ। বিকেল বেলা অফিসে কাজের চাপ কম থাকলে লায়লা খাতুন আয়ুশকে মেহরামদের বাড়িতে আসতে বলে। আয়ুশ বেশ কিছুক্ষণ পর এসেও পরে। বাড়ির ভেতরে এসেই দেখে হলরুমে বসে বসে সবাই আড্ডা দিচ্ছে। তবে মেহরাম মেয়েকে খাওয়ানো নিয়ে তুলকালাম কান্ড বাধিয়ে ফেলেছে। মেহরামের এমন জংলি মার্কা অবস্থা দেখে আয়ুশ ফিক করে হেসে দেয়। কিন্তু মেয়ে কে খাওয়াতে না পেরে মেহরাম যেমন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে এখন আয়ুশের এমন হাসি দেখে রাগে বোম হয়ে গেলো।

মেহরাম;; খুব হাসি পাচ্ছে তাই না, মানে খুব একদম। হাসো হাসো।

আয়ুশ;; না মানে আসলে আমি তো এমনি হাসছিলাম আর কি। আহাম…আহাম..

মেহরাম;; না না থামলে কেন হাসো বেশি করে হাসো। আমার জ্বালা তো কেউ আর বুঝে না। বাপরে বাপ। গলা, গাল, মুখ, হাত একদম লেপ্টে ফেলেছে।

আয়ুশ;; বাচ্চা দের আস্তে ধীরে সুন্দর করে খাওয়াতে হয়। এভাবে ঠেসে ধরে খাওয়ালে তো এমনই হবে। দাও দেখি আমাকে দাও।

মেহরাম;; বাব্বাহ,, খুব অভিজ্ঞতা দেখি আপনার।

আয়ুশ;; জ্বি এখন আপনি আমাকে দিন আমি খাওয়াচ্ছি। এগুলো আপনার কর্ম নয়।

আয়ুশ প্রথমে মেহরামের কাছ থেকে মেহেরকে কোলে তুলে নেই। তারপর ওয়েট টিস্যু পেপার দিয়ে মেহেরের গলা মুখ সব মুছে দেয়। মেহরামের হাত থেকে খাবারের বাটি টা নিয়ে আস্তে করে খাইয়ে দিতে থাকে। আর এটা ওটা কত্তো কিছু বলছে। মেহের যেন এখন খিলখিল করে হাসছে আর খাচ্ছে। মেহরাম তো অবাকের চরম পর্যায়ে। আর বাকি সবাই গালে হাত দিয়ে তাদের কান্ড দেখছে। দেখতে দেখতে দশ মিনিটের মধ্যেই খাওয়ানো শেষ হয়ে গেলো। যা মেহরাম গতো আধা ঘন্টা তেও পারে নি। খাওয়ানো শেষ হলে আয়ুশ বাটি টা মেহরামের হাতে দিয়ে দেয়। ফিডারে করেই কিছুটা পানি খাইয়ে দেয়। মেহরাম হাতে বাটি নিয়েই হাবলার মতো করে তাকিয়ে আছে। আয়ুশ তা দেখে বলে ওঠে…..

আয়ুশ;; বাচ্চাদের এভাবে খাওয়াতে হয়, তোমার মতো যুদ্ধ করে নয়। বুঝলে

মেহরাম;; বাহহ কতো সুন্দর করে খেলো তাহলে আমি কি দোষ করেছিলাম।

আয়ুশ;; কীভাবে খাওয়াতে হয় তা জানো?

মেহরাম;; মানে বলছিলাম কি যে আগে কি বাচ্চা সামলানোর কাজ করতে নাকি তুমি।

আয়ুশ;; বাচ্চাদের সামলাতে কাজ করতে হয় না, ভালোভাবে করলেই হয়।

কণা আয়ুশের কোল থেকে মেহের কে নিয়ে বাড়ির বাগানে ঘুড়তে চলে আসে, সাথে আকাশও চলে যায়। এবার মেহরাম আর আয়ুশ একসাথে বসে পরে আর বাকিরাও।

আয়ুশ;; তো মা ডেকেছিলে কি হয়েছে?

লায়লা;; বিয়ে কবে করবি?

আয়ুশ;; যেদিন তোমরা করতে বলবে আর মেহরামের মত থাকবে সেইদিনই।

লায়লা;; ভাবছিলাম যে এখনই করে ফেললে কেমন হয় মানে ৪৫ দিন তো পার হয়ে গেছে। আর এখন সবকিছু নরমাল আছে সাথে মেহরাম আগে থেকে সুস্থও আছে। তাহলে

আয়ুশ;; তোমরা সবাই এক কথা বলছো?

আতিয়া;; হ্যাঁ বাবা সবাই।

আয়ুশ;; মেহরাম রাজি থাকলে আমার কোন আপত্তি নেই।

কনিকা;; মেহরাম, তুই কি বলিস..!

মেহরাম;; আমার কিছুই বলার নেই। যা ভালো বুঝ

লায়লা;; তাহলে কোন একটা ভালো দিন দেখে বিয়ের দিন তারিখ সব ঠিক করে ফেলি।

অবশেষে সবার মতামতেই বিয়ে ঠিক করা হয়। আজ থেকে শুরু করে ঠিক তিনদিন পর আয়ুশ আর মেহরামের বিয়ে। বিয়ে টা যেহেতু ঘরোয়া ভাবেই হবে তাই বাড়ির মানুষ জন ছাড়া তেমন কেউ নেই। তবে ঘরোয়া ভাবে হবে বলেই যে আয়োজন কম হবে তা কিন্তু নয়। আস্তে আস্তে সব আয়জোন করা হচ্ছে। মাঝ খানে দু-দুটো দিন যেন চোখের পলকেই কেটে গেলো। পুরো বাড়ি কে সাদা আর নেভি ব্লু কালারের মরিচ বাতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। বাড়িটা যেন দূর থেকেও ঝলমল করছে। বাড়িতে কেমন একটা জমকালো ভাব। সবাই এটা ওটা বলছে, হাসছে, কাজ করছে। কণা বাড়িতে যায় নি। মেহরামের সাথেই থেকে গিয়েছিলো। তার মা জোর করলে মেহরামই বলে কয়ে রেখে দেয় তাকে। কণা মেহের কে নিয়ে আছে। আর মেহরাম বাড়ির এই সবকিছু ঘুড়ে ঘুড়ে দেখছে। ঘুড়তে ঘুড়তেই হঠাৎ করে মেহরামের চোখ আটকে যায় টি-টেবিলের ওপরে থাকা তনুর ছবির দিকে। মেহরাম মুচকি হাসে। তখনই আকাশ দৌড়ে আসে মেহরামের কাছে ফোন নিয়ে। দেখে আয়ুশের ফোন। মেহরাম কিছু টা দূরে গিয়ে রিসিভ করে৷

মেহরাম;; হ্যালো..

আয়ুশ;; হাই মেহেরের মা।

মেহরাম;; 😆😅

আয়ুশ;; মেহেরের আম্মা শুনতে আছো নি মোর কতা..!

মেহরাম;; এই কি বলো এগুলা, কি ধরনের ভাষা।

আয়ুশ;; হাহাহা,,হাহাহা। মজা করছিলাম। কি করো?

মেহরাম;; কিছুই না শুধু সারা বাড়ি তে ঘুড়ে বেড়াচ্ছি।

আয়ুশ;; বাকি সবাই কি করে আর মেহের কোথায়?

মেহরাম;; বাকি সবাই কি এটা ওটা কাজ করছে। মানে বিয়ে বলে কথা। কিন্তু আমার না কেমন যেন লাগছে মানে বিয়ে তো ঘরোয়া ভাবে তাহলে এত্তো মাতামাতি।

আয়ুশ;; আরে বিয়ে এটা মাতামাতি থাকবে না।

মেহরাম;; মেহের কণার কাছে।

আয়ুশ;; ওহহ আচ্ছা।

মেহরাম;; হুমম

আয়ুশ;; আচ্ছা শুনো..

মেহরাম;; বলো

আয়ুশ;; আমি না একটা প্ল্যান করেছি।

মেহরাম;; সেটা কি?

আয়ুশ;; আমাদের বিয়ের শপিং তো এখনো হয় নি তাই না। তো আমরা এক কাজ করবো। আমার জন্য বিয়ের কাপড় তুমি কিনবে আর তোমার জন্য আমি কিনবো কেমন..!

মেহরাম;; কিন্তু যদি তোমার পছন্দ না হয় তাহলে!

আয়ুশ;; আরে ধুর তোমার চয়েজ আমি জানি, পছন্দ হবে না মানে আলবাদ হবে। তবে আমি তো আছি আমার চিন্তায় যদি তোমার পছন্দ না হয় তো।

মেহরাম;; আরে না হবে। আর না হলে আবার যাবে, গিয়ে আবার কিনে আনবে।

আয়ুশ;; এ্যাহ্ 😟

মেহরাম;; হ্যাঁ

আয়ুশ;; 😵

মেহরাম;; আরে মজা করছি পাগল।

আয়ুশ;; উফফ বাচলাম।

এভাবেই কতোক্ষণ কথা বলে কেটে গেলো। বিকেলের দিকে আয়ুশ & মেহরাম, আতিয়া, কণা আর লায়লা খাতুন গেলেন বাইরে। মেহের তার নানুর সাথে বাড়িতেই আছে। তবে আয়ুশ আর মেহরাম আলাদা আলাদা গেলো কাপড় কিনতে। আয়ুশ প্রথমেই চলে গেলো মেয়েদের শো-রুমে। আর মেহরাম ছেলেদের। সেই কখন থেকে মেহরাম একটার পর একটা কাপড় দেখেই চলেছে কিন্তু কোন মতেই পছন্দ হচ্ছে না। মেহরামের সাথে সবাই রয়েছে কিন্তু আয়ুশের সাথে কেউ যায় নি। যায় নি বলতে আয়ুশ সাথে নেয় নি। কাপড় উলোট পালোট করতে করতেই একটা শেরওয়ানি মেহরামের চোখে বাধে। শেরওয়ানি টা পুরো সাদা কালারের আর তার মাঝে স্টোনের কাজ করা। ভারি সুন্দর দেখতে। মেহরাম ঠিক করলো সেটাই নিবে। কিন্তু এদিকে নিজের সামনে এতোগুলো লেহেঙ্গা সিস্টেমের জামা দেখে আয়ুশের মাথা ঘোড়াচ্ছে। এর আগে সে মেয়েদের এমন জামা কখনোই কিনে নি হ্যাঁ অবশ্য কণার জন্য নিয়েছে কিন্তু সেগুলো সিম্পল ছিলো। দোকানের মালিক নিজেও হয়রান হয়ে গিয়েছেন। তবুও আয়ুশের পছন্দ হয় না। অবশেষে আরো কিছু কালেকশন নিয়ে এলো এগুলোই দোকানের একদম লেটেস্ট। খুব কষ্টে বেছে বেছে একটা জামা হাতে তুলে নেয় আয়ুশ। একদম মন মতো পেয়েছে এবার। সেটাই প্যাক করে নিয়ে এসে পরে। আয়ুশ বাইরে বের হয়েই দেখে মেহরাম দাঁড়িয়ে আছে। একহাত কোমড়ে দিয়ে আরেকহাত দিয়ে কপালে ঠেকিয়ে রোদ আসাকে বাধা দিচ্ছে। আয়ুশ বুঝলো যে অনেক দেরি করে ফেলেছে সে। আয়ুশ গিয়ে মেহরামের সামনে দাড়াতেই মেহরাম তাকে কতো গুলো ঝাড়ি মেরে দেয়। আর কণা খিলখিল করে হেসে দেয়। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যারও পরে আসে সবাই। জিনিসপত্র সব এসে সোফার ওপর রেখে দিয়েই মেহরাম আগে মেহেরকে কোলে তুলে নেয়। কতোক্ষণ নিয়ে থেকে তারপর মেহেরকে আয়ুশের কোলে দিয়ে দেয়। আর মেহরাম বসে সবার সাথে কথা বলতে থাকে। সেই রাত টা সবার এভাবেই কেটে যায়। তবে মেহরাম আর আয়ুশ একে ওপর কে নিজেকের ব্যাগ গুলো খুলতে মানা করে। বাড়িতে গিয়ে তারপর সব দেখতে বলে। এক সময় কথা বলতে বলতে আয়ুশ আর তার মা চলে যায়। সবার কাছ থেকে বিদায় নিতে থাকে

আয়ুশ;; কিরে চল (কণার উদ্দেশ্যে)

কণা;; না না আমি যাবো না। আমি এখানেই থাকবো আমি মেয়েদের পক্ষ থেকে। আমার কতো শখ ছিলো যে নিজের বোনের বিয়েতে কত্তো মজা করবো। মেয়েদের তরফ থেকে থাকবো কিন্তু আল্লাহ কপালে দিয়েছে একটা হারামী ভাই। আমি যাবো না বাড়ি আমি এখানেই থাকবো। কাল আসিস তুই যা।

আয়ুশ;; হপ আমার পক্ষ থেকে থাকবি, চল।

কণা;; না না না

মেহরাম;; আয়ুশ, থাক না। জেদ করছে থাক। তুমি যাও

কি আর করার আয়ুশ কণাকে মেহরামের কাছেই রেখে গেলো। আয়ুশ আর তার মা চলে এলো সবাইকে বলে। অনেকক্ষণ বাইরে ছিলো তাই সবাই অনেক ক্লান্ত মেহরাম ওপরে নিজের রুমে চলে গেলো। গিয়েই বিছানাতে গা এলিয়ে দিলো। তারপর আস্তে আস্তে উঠে নিজের ব্যাগ থেকে আয়ুশের পছন্দ করে কেনা কাপড় টা বের করলো। সত্যি বলতে মেহরাম একটানা ঠিক কতোক্ষন যে জামার দিকে তাকিয়ে ছিলো জানা নেই। ভীষণ সুন্দর জামা টা। তবে অবাক ভাবেই দেখা গেলো যে আয়ুশের শেরওয়ানির সাথে মেহরামের জামা মিলে গেছে। মেহরামের জামা টাও সাদা তবে ভারি কারুকাজ করা। এইসব বসে বসেই মেহরাম ভাবছিলো তখনই আয়ুশের ফোন আসে। মেহরাম ধরে…

মেহরাম;; হ্যালো

আয়ুশ;; পছন্দ হয়েছে?

মেহরাম;; তোমার চয়েজ এতো ভালো হলো কবে থেকে?

আয়ুশ;; অনেক আগে থেকেই আমার চয়েজ ভালো ছিলো শুধু তুমিই দেখতে পেতে না।

মেহরাম;; হয়েছে এবার বলো শেরওয়ানি কেমন হয়েছে?

আয়ুশ;; অনেক বেশি সুন্দর আর দুইজনের টাই একদম মিলে গেছে। আমার মতে সাদা সুভ্রতার আর পবিত্রতার প্রতীক।

মেহরাম;; হ্যাঁ।

মেহরাম আর আয়ুশ কথা বলে রেখে দেয় সেইদিনের মতো। সবই ঠিকঠাক ভাবে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে ভোরের আলো ফুটে ওঠে। আজ আয়ুশ & মেহরামের বিয়ে। মেহের ও মনে হয় এতো সকালে ঘুম থেকে উঠে না যতোটা তাড়াতাড়ি আজ মেহরাম কে ঘুম থেকে টেনে তোলা হয়েছে। ফ্রেশ হয়ে এসে পরে। তারপর কণাকেও টেনে তোলে। কণা যে ঘুম কাতুরে উঠে না। অবশেষে মেহরাম কাতুকুতু দেওয়া শুরু করে তারপর কণা উঠে পরে। বাড়িতে গতরাতে সবাই ঘুমিয়েছিলো কিনা সন্দেহ। মেহরাম নিচে গেতেই দেখে আতিয়া আর কনিকা শ্বাস নেবার সময় পাচ্ছে না সাথে মেহরামের বাবা আর চাচাও। তড়িঘড়ি করে সব কিছু করছে। মেহরাম কিছুটা অবাকই হয় সবার এমন অবস্থা দেখে। মেহরাম নিচে সিড়িতে দাঁড়িয়ে ছিলো তখনই কানে মেহেরের কাদার শব্দ ভেসে আসে। মেহরাম দ্রুত উঠে রুমে চলে যায় গিয়ে দেখে কণা কোলে নিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা করছে। কণার কাছ থেকে মেহেরকে নিয়ে তাকে দুধ খাইয়ে দিতে থাকে আর কণা ততোক্ষণে ফ্রেশ হয়ে আসে। প্রায় সবকিছুই ঠিক কিছুক্ষন পর আয়ুশ আর তার বাবা মা এসে পরবে আর সাথে কাজিও। মেহরাম রেডি হচ্ছে, কণা তাকে হেল্প করছে টুকিটাকি। মেহের হলরুমে তার নানুর কাছে। বেশকিছুক্ষন পর মেহরাম রেডি হয়ে এসে পরে নিচে। সবার নজর একবার মেহরামের দিকে যায়। ভারী মিষ্টি লাগছে দেখছে। সাদা কাপড় যেন একদম মানিয়ে তুলেছে তাকে। মেহরাম গিয়ে সবার মাঝেই বসে পরে। মেহের মেহরাম কে দেখে হেসে দেয়। মেহরাম মেহেরের সাথে বসে খেলছিলো। তখন আতিয়া একটা বাটিতে ক্ষীর নিয়ে মেহরাম কে খাইয়ে দিতে থাকে। তার বেশকিছু সময় পরেই আয়ুশ এসে পরে। আয়ুশ আর তার মাকে দেখে সবাই এগিয়ে যায়। কাজিও এসে পরেছে। সবার সাথে কুশল বিনিময় করে আয়ুশ আর মেহরাম একসাথে বসে পরে সোফাতে। আয়ুশ মেহরাম কে এক নজর মাথা থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত দেখে নিয়ে মুচকি হাসে। মেহের কণার কোলে। আয়ুশ & মেহরামের সামনেই কাজি বসে পরে। তাদের পাশেই সবাই বসে আছে। সবার মুখেই হাসি। কণা মেহের কে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কণা ফিসফিস করে মেহের কে বলে ওঠে…..

কণা;; তুই ই এই প্রথম মেয়ে হবি যে কিনা নিজের বাবা-মার বিয়ে দেখছিস। কত্তো লাকি।

কণার কথায় মেহের হেসে দেয়। আর ওদিকে ইসলামের বিধি-বিধান মেনে তিন বার কবুল বলে আয়ুশ আর মেহরামের বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের পর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মেহরাম এসে পরে আয়ুশদের বাড়িতে সাথে মেহেরও। কণাও এসে পরেছে। আয়ুশদের বাড়িতে আসার পর লায়লা খাতুন মেহের কে কোলে নেয় আর কণা গিয়ে মেহরাম কে আয়ুশের ঘরে বসিয়ে দিয়ে আসে। কিন্তু মেহের তো মেহরামকে ছাড়া থাকে না তাই বাধ্য হয়েই মেহের কে মেহরামের কাছে দিয়ে আসতে হয়েছে। মেহরাম এখন আয়ুশের রুমে। রুম টা তেমন ভাবে সাজানো না হলেও একদম হালকা ভাবে সাজানো হয়েছে। তাতেও অনেক ভালো লাগছে। কিন্তু মেহরাম মেহেরকে কোলে নিয়ে সারাঘরে পায়চারি করছে। এভাবেই থাকতে থাকতে এক সময় রুমের দরজা খোলে আয়ুশ ভেতরে আসে। দরজার কিছুটা কটকট শব্দ হলে মেহরাম হাতের ইশারাতে থামিয়ে দেয় আয়ুশকে। আয়ুশও ব্যাপার টা বুঝতে পেরে আস্তে ধীরে কাজ করতে থাকে। মেহরাম মেহেরকে নিয়ে ঘুম পারাচ্ছিলো। আয়ুশ এক ধ্যানে মেহরামের দিকে তাকিয়ে থেকে মুচকি হাসে তারপর মেহরামের পেছনে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে। মেহরামের কাধে নিজের থুতনি রেখে সেও মেহেরের দিকে তাকিয়ে থাকে। আয়ুশ & মেহরামের একসাথে ছোয়া পেয়ে মেহের যেন আরো বেশি হেসে ওঠে ঘুমের মাঝেই। মেহের ঘুমিয়ে গেলে মেহরাম তাকে বিছানাতে শুইয়ে দেয়। এবার ঘুড়ে আয়ুশের দিকে তাকায়। দেখে আয়ুশ নিজেই ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

মেহরাম;; কি হয়েছে তাকিয়ে আছো কেন। ভালো লাগছে না দেখতে?

আয়ুশ;; অনেকটা বেশিই ভালো লাগছে।

মেহরাম;; তোমাকেও।

আয়ুশ;; আমি তোমাকে ভালোবাসি।

মেহরাম;; আমিও।

আয়ুশ এগিয়ে গিয়ে মেহরামের দুইহাত ধরে। তারপর তার কপালে চুমু একে দেয়।




আয়ুশ মেহরামের বিয়ের পর সময়ের চাকা ঘুড়িয়ে কেটে যায় আরো ৫ বছর। সময় আসলেই খুব দ্রুত চলে যায়। এই ৫ টা বছরে কি না পালটে গেছে। জীবনের এক নতুন মোড় গ্রহন করেছে। জীবনের কালো ছায়া টা যেন অনেক দূর হয়ে গিয়েছে। আর জীবন কে রাঙিয়ে দিয়ে গেছে এক নতুন ধাচে। আয়ুশ আর মেহরাম নিজেদের খুশিতে জীবন চলাচ্ছে। মেহের অনেক বড়ো হয়ে গেছে। সে এখন দুষ্ট-মিষ্টি একটা বাচ্চা। যে পুরো ঘরে দৌড়ে বেড়ায়। সবাইকে জ্বালিয়ে বেড়ায়। বাড়িকে মাতিয়ে রাখে। বাবার আদরের দুলালি আর মায়েরও। তবে দিন শেষে মেডামের জন্য বাড়িতে এত্তোগুলো বিচার আসে। এই ছেলের নক ফাটিয়ে দিয়েছে, এই ছেলের সাথে ঝগড়া করেছে। বাগানের মালিকে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিয়েছে আরো কত্তো কি। মেহরাম তাকে বকলে সোজা বাবাই বাবাই বলে আয়ুশের কাছে চলে যাবে। আয়ুশ মেয়েকে শাসন করবে তো দূর উলটা বাবা মেয়ে মিলে মেহরামের নামে চুগলি করে বেড়ায়। আর মেহরাম সময় পেলেই বাবা মেয়ে কে বকে দেয়। এই টুকু বয়সেই এই দশা এই মেয়ে বড়ো হলে কি করবে মেহরাম তা ভেবে পায় না। লায়লা খাতুন তো মেহেরের জান আর মেহের নিজেও দাদি বলতে পাগল। মেহের যখন আস্তে আস্তে কথা বলতে শিখে তখন সবার আগে ‘বাবাই’ বলাটাই শিখেছিলো। সেইদিন আয়ুশ খুশির চোটে কেদে কেদে মেহরাম কে জড়িয়ে ধরেছিলো। তবে মেহের এখন কিছুটা তুতলিয়ে কথা বলে। স্কুলে দেওয়া হয়েছে মেহেরকে। আয়ুশের অফিসে যাবার সময় আয়ুশ তাকে স্কুলে দিয়ে তারপর অফিসে যায়। ওহহ হ্যাঁ কণার বিয়ে হয়ে গেছে,,বিয়ে পাগল মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেছে 😅। সেও ভালোই চলছে নিজের হাসবেন্ড আর শশুড়বাড়ির লোকদের সাথে।


~বিকেল বেলা~

মেহের;; বাবাই বাবাই বাবাই

আয়ুশ;; হ্যাঁ আমার মামনি আসো।

আয়ুশ বাইরে বাগানের সাইডে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলো তখনই মেহের দৌড়িয়ে দৌড়িয়ে আয়ুশের কাছে আসে। আয়ুশ হাত পাতে আর মেহের দৌড়ে এসে আয়ুশের কোলে উঠে পরে। বাবা মেয়ে মিলে খুনশুটি করছিলো তখনই মেহের আসে বাগানে ফোনে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে। বাড়ি থেকে ভিডিও কল দিয়েছে। তাদের সাথেই মেহরাম কথা বলছে। মেহরাম আয়ুশ আর মেহেরের কাছে গিয়ে ফোন ধরে। তারা কথা বলছে। মেহের তো বেশি কথা বলতে গিয়ে দম ছাড়ছে বারবার তবুও থামছে না। কথা বলবেই। আকাশকে মামা মামা বলে পাগল বানিয়ে দেয়। আকাশও অনেকটা বড়ো হয়ে গিয়েছে।

.
.
.

এখন সন্ধ্যা বেলা, সন্ধ্যা না আসলে রাতই বলা চলে। চারিদিকে কেমন একট শীতল বাতাস। পরিবেশ টা মনোমুগ্ধকর। আকাশে অনেক বড়ো চাঁদ উঠেছে। তারা গুলো কেমন মিটমিট করছে। আয়ুশ ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে আছে তখনই মেহরাম হাতে দুই কাপ কফি নিয়ে ছাদে আসে। একটা কফি আয়ুশের দিকে এগিয়ে দেয়। আয়ুশ কফিটা নেবার সময় মেহরামের গালে টুক করে একটা চুমু খায়, মেহরাম হেসে দেয়। তখনই মেহের আসে ছাদে। হাতে তার কি যেন

মেহের;; মাম্মাম

মেহরাম;; হ্যাঁ সোনা।

মেহরাম মেহের কে নিয়ে ছাদের এক সাইডে বসে পরে সাথে আয়ুশও বসে। মেহরাম খেয়াল করলো যে মেহেরের হাতে কি যেন। মেহরাম মেহেরকে কোলে নিয়ে বলে ওঠে…

মেহরাম;; হাতে কি সোনা?

মেহের;; মাম্মাম আমি এতা পেয়েছি রুমে।

মেহরাম;; দেখি তো কি?

মেহরাম মেহেরের হাত তুলে দেখে একটা ফটো ফ্রেম আর সেটা মেহরাম আর তনুর। মেহরাম দেখে হেসে দেয় এক গাল।

মেহের;; মাম্মাম এতা কে। অনেকতা তোমাল মতো দেখতে। আমি তো ভুলেই গিয়েতিলাম যে কোনতা তুমি আর কোনতা সে। মাম্মাম কে এতা (তনুর উদ্দেশ্যে)

মেহরাম;; এটা তোমার মাম্মামের জীবন। তোমার মাম্মম এর দুনিয়া আগেও ছিলো, আছে আর থাকবে।

মেহের;; তাহলে আমি কি 😒।

মেহরাম;; হাহাহা, হাহাহা আরে মা তুমি তো আমার কলিজা। আমার সব।

মেহের;; আর বাবাই।

মেহরাম;; নাহ, বাবাই কিছুই না। বাবাই নেই

আয়ুশ কফি খাচ্ছিলো মেহরামের কথা শুনে আয়ুশের কাশি উঠে পরে। কপাল কুচকে মেহরাম কে বলে ওঠে..৷

আয়ুশ;; এএইইইইই…!

মেহরাম;; হিহিহিহি,, আরে বাবা মজা করছি।

মেহের;; মাম্মাম, এই আমাল কি হয়। (তনুকে দেখিয়ে)

মেহরাম;; তার নাম তনু, আর সে তোমার ছোট মা হয়।

মেহের;; উনি কোথায় তাকেন, আমি তো দেখি না।

মেহরাম;; উনাকে দেখা যায় না কিন্তু উনি সবসময়ই আমাদের সাথে থাকেন।

মেহের;; কিন্তু আমি তো উনাকে দেখবো।

মেহরাম মুচকি হেসে মেহের কে কোলে তুলে নেয়। তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে…

মেহরাম;; ওই যে ওপরে দেখো।

মেহরাম তার আঙুল দিয়ে আকাশের দিকে তুলে মেহের কে দেখায়। মেহের ও তার মাম্মামের ইশারাতে আকাশের দিকে তাকায়।

মেহরাম;; ওই তো আকাশের সবচেয়ে বড়ো যেই তারা টা আছে, আর যেটা সবচেয়ে বেশি ঝলমল করছে সেটাই তোমার তনুমা।

মেহের;; তাই..!

মেহরাম;; হ্যাঁ

মেহের;; তনুমা আমাকে ভালোবাসে তো?

মেহরাম;; সবথেকে বেশি, আমার থেকেও অনেক বেশি। এত্তো বেশি (দুইহাত ছড়িয়ে দিয়ে)

মেহরামের কথায় মেহের দুইহাত মুখে দিয়ে হিহিহি করে হেসে ওঠে। সাথে আয়ুশ আর মেহরাম ও। মেহরাম আয়ুশের দিকে তাকালে আয়ুশ গাঢ় এক হাসি দেয়। এভাবেই ছাদের ওপর থাকতে থাকতে মেহের মেহরামের কোলেই ঘুমিয়ে পরে। মেহরাম এতোক্ষন অবাক হয়ে কি যেন ভাবছিলো। হঠাৎ আয়ুশ তাকে ডাক দিলে আয়ুশের ডাকে মেহরামের হুশ ফিরে আসে। মেহরাম মেহের কে আয়ুশের কোলে দিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। অনেক পুরনো একটা বক্স বের করে আর তার ভেতর থেকে একটা ডায়েরি। ডায়েরি টা অনেক বছর যাবত লিখা হয় না। এটা মেহরামের সেই আগের ডায়েরি টা। আজ হুট করেই আগের পুরনো সব স্মৃতি গুলো তরতাজা হয়ে উঠলো। মেহরাম ডায়েরি টা নিয়ে ছাদে চলে গেলো। ছাদের এক কিণারে আগুন লাগানো ছিলো। মেহরাম ডায়েরিটা নিয়ে আগুনের পাশে বসে পরে। আয়ুশ মেহেরকে কোলে নিয়ে শুধু মেহরাম কে দেখছে। মেহরাম কিছু না বলেই ডায়েরি টা শেষ একবার ভালোভাবে দেখে নেয়। এটাতেই তার জীবনের সব গল্পকাহিনী লিখা আছে। আর কিছু না বলেই মেহরাম ডায়েরি টা আগুনে দিয়ে দেয়। আগুনের তীব্র তাপে ডায়েরি টা আস্তে আস্তে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। আর মেহরাম অপলক হীন ভাবে তাতে তাকিয়ে আছে। আয়ুশ কিছুই বলে না শুধু একটা কথা ছাড়া।

আয়ুশ;; কেন পুড়ালে?

মেহরাম;; কারণ সেইসব কথার এখন আর কোন মানেই হয় না, কোন মুল্য নেই সেইসব কিছুর। মূল্যহীন একদম।

মেহরাম আগুনের দিক তাকিয়ে কথা টা বলেই আয়ুশের দিকে তাকায়। আয়ুশ মুচকি হেসে মাথা নিচু করে ফেলে। খানিক সময় পর মেহরাম এসে আয়ুশের কাধে মাথা রাখে। আয়ুশ একহাতে নিজের মেয়ে আরেক হাতে মেহরাম কে জড়িয়ে ধরে। এভাবেই সেইদিন চলে যায়। পরেরদিন সকাল হয়ে যায়। আজ আয়ুশের অফিসে আর মেহেরের স্কুল দুটোই বন্ধ। তারা সাজ সকালেই গাড়ি নিয়ে বাইরে এসে পরেছে। মেহের গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। আর বাতাসে তার বড়ো বড়ো চুল গুলো উড়ে যাচ্ছে। মেয়ে হয়েছে পুরো মায়ের মতো। মায়ের চুল গুলোও যেমন অনেক বড়ো মেয়ের চুল গুলোও এই বয়সেই কোমড় অব্দি। মেহের অনেক জিজ্ঞেস করেছে মেহরাম কে যে আমরা কোথায় যাচ্ছি কিন্তু “এটা সারপ্রাইজ” এই বলেই মেহরাম চুপ। আয়ুশ আর মেহরাম সামনে বসেছে আর মেহের পেছনে। অবশেষে গাড়ি একটা জায়গায় এসে থেমে পরে। আয়ুশ মেহের কে নিয়ে নেমে পরে। আর মেহরাম নিজে একা নেমেই সোজা পথে চলে যায়। রাস্তা টা অনেক ফাকা। আর গাড়ি যেখানে থেমেছে তার সামনে বিশাল একটা জায়গা। আসলে এটা কবরস্থান তবে অনেক সেফ আর ভালো একটা জায়গা। আর আজ তনুর মৃত্যুবার্ষীকি। তাই মেহরাম এখানে এসেছে। মেহরাম প্রতিবছরই এখানে আসে। এইদিনে, এই তারিখে, ঠিই এই সময়েই। তবে আজ মেহের কে নিয়ে। মেহরাম গিয়ে তনুর কবরের পাশে বসে পরে। আর রাস্তার ওপারে আয়ুশ মেহের কে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেহের অপলক ভাবে তার মাম্মামের দিক তাকিয়ে আছে। মেহরামের আর কি প্রতিবারের মতো নিজের বোনের কাছে গিয়ে বিলাপ পারা শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু আজ মেহরাম বেশি কান্না করছে না কেন যেন তার অনেক বেশি খুশি লাগছে। প্রায় দুই ঘন্টা পরে মেহরাম সেখান থেকে এসে পরে। মেহেরের কত্তো প্রশ্ন মেহরাম সবকিছুরই উত্তর দেয় তাকে।

.

এখন সবাই নিজেদের বাড়িতে এসেছে। কণা বেড়াতে এসেছে নিজের মায়ের কাছে। তাদের দেখে সবাই আরো বেশি খুশি। তবে এবার বাড়ির বাগানে মেহের দৌড়াচ্ছে আর মেহেরের পিছন পিছন মেহরামও হাতে খাবার নিয়ে দৌড়াচ্ছে। দৌড়াতে দৌড়াতে আয়ুশ মেহেরকে ধরে ফেলে। আয়ুশ মেহের কে নিয়ে নিজের কাধের ওপর বসিয়ে দেয়। আর তখন যেন মেহরাম একটু শান্তি পায়। আস্তে আস্তে মেহের কে খাইয়ে দিতে থাকে। এক সময় খাওয়ানো শেষ হয়ে যায়। আয়ুশ আর মেহরাম মেহেরের সাথে খেলছিলো আর হাসছিলো ঠিক তখনই কণা তার হাতে একটা ক্যামেরা নিয়ে তাদের কাছে আসে।

কণা;; এভরিওয়ান স্মাইল প্লিজ…!

এই বলেই কণা ক্যামেরা টা তাদের দিকে ধরে ছবি তোলার জন্য আর মেহরাম-আয়ুশ & মেহের সবাই হেসে দিয়েই খুনশুটি করতে থাকে। আর তাদের এই মাত্রাতিরিক্ত হাসি মাখা মুখটা ক্যামেরা তে ছবি হিসেবে বন্দি হয়ে যায়। এভাবেই চলতে থাকে আয়ুশ & মেহরামের রঙিন জীবনকাহীনি ❤️।



~~সমাপ্ত 🍂

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ