Sunday, October 5, 2025







হ্যাকারের_লুকোচুরি পর্ব-৯

হ্যাকারের_লুকোচুরি পর্ব-৯

লেখা- sharix dhrubo

ঔইদিনের মত ইনভেস্টিগেশন শেষ করে কোয়ার্টারের পথ ধরলো রাফি। মনটা খুব ছটফট করছে রাফির। একের পর এক চ্যালেঞ্জ চলেই আসছে রাফির সামনে। রাতে খাবার টেবিলে বসে মনে পড়লো বাবার কথা। বাবার বলা প্রতিটা উপদেশ আবারো যেন মনে মনে শুনতে পেলো রাফি। নাহ, ছোটবেলা থেকেই চ্যালেঞ্জ পচ্ছন্দ করতো রাফি। হোক তা যতই জটিল, রাফিকে কখনো দমাতে পারে নি। রাতের খাওয়াদাওয়া শেষ করে কিছুক্ষণ পায়চারি করে রাফি। সভাপতি মেয়েটাকে বুঝতে না দিয়ে কিভাবে ওই ৪ জনের তথ্য আদায় করা যায়। কিছুক্ষণ ভাবনাচিন্তা করে শুতে গেল রাফি।
সকালে অফিসে পৌছালো রাফি, অফিসে পৌছানোর পর রিসিপশন থেকে জানিয়ে দেয়া হলো ডাইরেক্টর স্যার রাফিকে দেখা করতে বলেছে। অফিসে ঢুকতে না ঢুকতেই ডাইরেক্টর স্যারের ডাক পেয়ে রাফি সোজা স্যারের রুমে গেলো।

রাফি – স্যার, আমাকে ডেকেছেন ?

ডাইরেক্টর – হ্যাঁ রাফি, এসো এসো। বসো। একটা দরকারী ব্যপারে তোমার সাথে কথা বলার ছিলো।

রাফি – বলুন স্যার।

ডাইরেক্টর – দেখো রাফি আমি তোমার কথামত মাফিয়া গার্ল এর বিষয়ে হায়ার অথরিটির সাথে কথা বলেছি। হায়ার অথরিটি বলছে মাফিয়া গার্লের কোন অস্তিত্ব নেই। পুরোটাই একটা কভারআপ। মাফিয়া গার্ল নামের কোন হ্যাকারের কোন অস্তিত্ব নেই।

রাফি – কিন্তু স্যার আমরা একটা দুর্দান্ত লীড পেয়েছি যা আমাদের মাফিয়া গার্ল পর্যন্ত পৌছে দিতে পারে।

ডাইরেক্টর – রাফি, আমি জানি তুমি আমাদের টিমের সবচেয়ে চৌকস অফিসার এবং তোমার চিন্তাভাবনার সাথে সবার চিন্তা মিলবে না কিন্তু এটা কেন ভুলে যাচ্ছো আমাকেও কারো না কারো কাছে জবাবদিহিতা করতে হয়।

রাফি – কিন্তু স্যার এই লীডটা অনেক সম্ভাবনাময়, কিছু না কিছু তো আমরা বের করতেই পারবো।

ডাইরেক্টর – রাফি, বি প্রাকটিক্যাল। আমি জানি তোমার ভেতর সেই স্পৃহা আছে কিন্তু বাস্তবে তোমার কাছে কোন পাক্কা ইভিডেন্স আছে যা মাফিয়া গার্লের অস্তিত্ব প্রমান করে??

রাফি ভাবনায় পড়ে গেলো, কারন এখন পর্যন্ত মাফিয়া গার্ল সম্পর্কে কোন শক্ত প্রমাণ রাফি বা রাফির টিমের কাছে নেই। জংঙ্গী সংগঠন ধরিয়ে দেয়া ঘটনার একমাত্র প্রমান Mafia Boy নামের নোটটি ও অটোমেটিকলি ডিলিট হয়ে গেছে। মাফিয়া গার্ল যেসব ট্রাক ফেলে রেখে গেছে তা শুধু রাফিই খুজে পেয়েছে আর সবগুলোই ডি‌কোড করার পর উধাও হয়ে গেছে।

রাফি – কিন্তু স্যার…?

ডাইরেক্টর – (গম্ভীর গলায়) কোন কিন্তু নয়। I am ordering you to drop this Mafia Girl case right now.

রাফি আর কোন কথা বাড়ালো না, ডাইরেক্টর স্যার আরো কিছু কেসের ব্যপারে রাফির সাথে কথা বললো। কেসের ফাইলগুলো হাতে নিয়ে নিজের ডেস্কে এসে বসলো রাফি।
চেয়ারে হেলান দিয়ে মাথার পেছনে হাত রাখলো রাফি। হায়ার অথরিটি কেন মাফিয়া গার্লের অস্তিত্ব মানতে চায় না! ব্যাংক লুটের ঘটনা ডার্ক ওয়েবের সবাই কম বেশী জানে। তবে এটা ঠিক যে কোন প্রাতিষ্ঠানিক প্রমান নেই মাফিয়া গার্লের বিরুদ্ধে।
রাফি অর্থাৎ মাফিয়া বয় ই হয়তো একমাত্র পার্সন যার সাথে মাফিয়া গার্ল কমিউনিকেট করে। এমন সব আজিব কিসিমের ক্লু রেখে যায় যা চোখের সামনে থাকলেও চোখে পড়ে না। এই যেমন ব্যাংক লুটের ঘটনাটাই ধরুন না, সারা দুনিয়ার সব মানুষ xyz সেচ্ছাসেবী সংগঠনকে আর ১০ টা সেচ্ছাসেবী সংগঠন মনে করলেও একমাত্র এইদেশের এবং বিশেষ করে যে সব কলেজে এদের শাখা রয়েছে তারা ছাড়া আর কেউ ই জানে না এই সংস্থাটির মূল ইথিক্স যে এই সংস্থার সদস্য ছাড়া আর কেউ এখানে ডোনেট করতে পারে না। এই কারনেই কি মাফিয়া গার্ল এই ক্লু টি ছেড়ে গেছে? যেন মাফিয়া বয় এটা খুজে পায়? সাইবার দুনিয়ার সবাই জানে মাফিয়া বয় এর ন্যাশন্যালিটি তাই মাফিয়া গার্ল ও যে এটা জানে তাতে কোন সন্দেহ নাই। তাহলে কি মাফিয়া গার্ল চাচ্ছে যে মাফিয়া বয় ওর পিছু নিক?

“আআআআআআ………….আআআআআআ” মাথা চেপে ধরে কিছুক্ষণ চ্যাচালো রাফি। এই মাফিয়া গার্ল আমাকে পাগল করে দেবে। যাইহোক অফিসিয়ালি এই কেস নিয়ে আর এগোনো সম্ভব নয়। তাই রাফি তার টিমের সবাইকে ডেকে এই কেস রিলেটেড সকল ডকুমেন্টস ও ডাটা এনে জমা দিতে বললো।
টিমমেট সবার মন ভেঙ্গে গেলো, সবাই কারন জানতে চাইলে রাফি জানালো হায়ার অথরিটি থেকে অর্ডার এসেছে এই ইনভেস্টিগেশন বন্ধ রাখার।
সবাই সব ডাটা ও ডকুমেন্টস জমা দিয়ে গেলো রাফির কাছে। রাফি সবকিছু সাজিয়ে রাখতে রাখতে একটা কল পেল।
আননোন ল্যান্ডলাইন নাম্বার, রিসিভ করলো রাফি,

রাফি – হ্যালো, রাফি স্পিকিং।

– ( কাশি দিয়ে) জ্বী, আমি জানি।

রাফি – হু ইজ দিস?

– রুহী বলছি, সেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিস থেকে।

রাফি একটু নড়েচড়ে বসলো, কি ব্যাপার? এই মেয়ে এখন ফোন দিলো?

রাফি – জ্বী মিস রুহী, বলুন?

রুহী – হমমমমম, আমি আপনার অর্ডার সম্পর্কে খোঁজ নিলাম। বললো স্পেশাল অর্ডার, যেন সাহায্য করি। বলুন কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

রাফি চট করে ভাবনায় চলে যায়। ডাইরেক্টর স্যার ত অফিসিয়াল ইনভেষ্টিগেশন বন্ধ রাখতে বলেছেন। পার্সোনালী তো ইনভেস্টিগেশন তো করতেই পারে রাফি যেখানে ইনফরমেশন নিজে ফোন দিয়েছে রাফিকে।

রাফি – জ্বী আমার কিছু পুরাতন ব্যাচের ছাত্রছাত্রীদের তথ্য লাগবে, আপনি সময় দিলে আমরা সামনাসামনি এই বিষয় আলোচনা করতে পারি।

রুহী – সরকারি লোক আপনারা, দেশের কলিজা। আপনারা বললে আমাদের মত ছা পোষা জীব কিভাবে না করি। বলুন কবে আপনার সুবিধা হয়।

রাফি – (একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে) সম্মান দিলেন নাকি অপমান! যাইহোক শুক্রবার সময় হবে? বিকালে? ৪ টা কি ৫ টার দিকে?

রুহী – বেছে বেছে শুক্রবারটাই সময় হলো আপনার। (তাচ্ছিল্যর ভংগিমায়) ঠিক আছে, আমাদের শাখা অফিসের সামনে চলে আসবেন।এখন রাখছি।
বলেই ঠাশ করে মুখের উপর ফোনটা কেটে দিলো।
নতুন একগাদা কেস আসার কারনে রাফি সাতপাচ না ভেবে সেইসব কেসে ডুবে যায়। কাজকর্ম শেষ করে রাফি তার টিমের সাথে কফি আড্ডায় বসলো। কমবেশী সবার মন মরা দেখে রাফি নিজেই প্রসংগ টানলো

রাফি – কি ব্যপার, এভাবে বাংলা পাঁচের মত মুখ করে রেখেছো কেন সবাই?

কারো মুখে কোন জবাব না পেয়ে রাফি আবার বলতে শুরু করলো,

রাফি – মাফিয়া গার্ল কেসটা ড্রপ হওয়ার কারনে কি তোমরা এই চেহারা বানিয়ে রেখেছো?

সবাই হ্যাঁ সূচক মাথা দোলায়।

রাফি – আচ্ছা তোমরা কি চাও? কেসটা নিয়ে কি করা যায়।
সবাই উৎসুক হয়ে এক একটা প্লান দেয়া শুরু করলো
– স্যার আমরা গোপনে কেসটা নিয়ে কাজ চালাতে পারি।
– এখন হাতে যে সব কেস রয়েছে সেসব কেস ততটা কঠিন নয় যে দিনের পুরোটা সময় তাতে দিতে হবে।
– বেশ ফ্রী টাইম থাকে আমাদের হাতে। চাইলেই আমরা ইনভেষ্টিগেশন কন্টিনিউ করতে পারি।

রাফি – কিন্তু ডাইরেক্টর স্যার ত অফিসিয়ালি কেসটা ড্রপ করতে বলেছেন।
– স্যার, আপনি যদি অনুমতি দেন তো আনঅফিসিয়ালি আমরা কেসটা সলভ করতে চাই।

রাফি – তাহলে তোমরা সবাই আনঅফিসিয়ালি কেসটা নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছো?
– (সবাই একসাথে) Yes sir.
রাফি মনে মনে দারুণ খুশি হলেও কাউকে বুঝতে দিলো না। স্বাভাবিকভাবেই টিমের কাছে জানতে চাইলো

রাফি – ওকে তাহলে তোমাদের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে আবার কেসটা রি ওপেন করা যাক, কি বলো?
সবাই উৎসাহের সাথে বলে উঠলো -অবশ্যই স্যার.

রাফি – তাহলে কাজে লেগে পড়ো। আচ্ছা আমি যে বিশেষ ব্যাংকে খোঁজ নিতে বলেছিলাম যে ওই দিন আর কেও এই সংস্থাটিতে ডোনেশন করেছিলো কি না, তার কি হলো?
– স্যার আমি ওইদিনই মেইল করে দিয়েছিলাম, তারা রিপ্লাই দিয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার তারা জানাবে।
রাফি – ওকে গুড। আর যে চারজনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে কলেজ থেকে তাদের সাথে কি যোগাযোগ করা হয়েছে?
– জ্বী স্যার, দুইজন ডোনেশনের কথা স্বীকার করেছে কিন্তু অন্য দুইজন এই ব্যপারে কিছুই জানে না। তাদের ব্যাংক স্টেটমেন্টের কোন গোলমালের কথা জানতে চাইলে তারা বললো যে তাদের কোন টাকা চুরি যায় নি। এমনকি তারা গত ৫ বছরে এই সংস্থাটিকে কোন ধরনের অর্থসহায়তাও করে নি।

রাফি – আজব, তাদের টাকা চুরি যায় নি স্টেটমেন্টেও কোন গোলমাল নেই অথচো টাকা এলো কিভাবে!
– স্যার, মাফিয়া গার্ল এর কাছে যদি সত্যিই হাইব্রিড হাইড্রা থেকে থাকে তাহলে এটা কোন বিষয়ই না।
রাফি – কেমন?
– হাইব্রিড হাইড্রা অনায়াসে এই কাজ করবে। ফরেন ট্রানজেকশন মূলত ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার প্রোটকল মেইনটেইন করে। ট্রানজেকশন কনফার্মেশন একটা মেইইল বা এসএমএস এর মাধ্যমে করা হয়। এখন হাইড্রা যদি আগের থেকেই সিস্টেম হ্যাক করে বসে থাকে তাহলে সে প্রতিটা মেইল বা এসএমএস এর বিষয়বস্তু পড়তে ও পরিবর্তন করতে সক্ষম। উধাহরণস্বরূপ মি x এর একাউন্ট থেকে ফান্ড ট্রান্সফার হবে মি y এর একাউন্টে। ট্রানজেকশনের মাঝপথে যদি হাইড্রা ট্রানজেকশন কনটেন্ট চেন্জ করে দিয়ে মি x এর বদলে মি z এর একাউন্ট বসিয়ে তাহলে মি y টাকা পাবেন মি x এর কাছ থেকে ঠিকই কিন্তু রিসিভার সিষ্টেম শো করবে টাকাটা মি x পাঠায় নি, পাঠিয়েছে মি z. এক্ষেত্রে মি z এর ব্যালান্স কমবে না, বিদেশী ব্যাংকের সিস্টেমও ইরর শো করবে না কারন সেখানে মি x টাকা পাঠিয়েছে আবার দেশী একাউন্টেও গড়মিল হবে না, শুধু দেখাবে টাকাটি মি z পাঠিয়েছেন মি y কে।

বেশ জটিল বিশ্লেষণ হলেও রাফি ব্যপারটা বুঝতে পারলো। ওই বিশেষ ব্যাংকে থাকা বিদেশীদের একাউন্ট থেকে টাকাগুলো সংস্থার ব্যাংক একাউন্টে পাঠানো হয়েছিলো ঠিকই কিন্তু সংস্থাটির ব্যাংক একাউন্টে টাকাটা জমা হয়েছে ওই দুই ডোনারের নামে যারা আদৌ কোন ট্রানজেকশনের ব্যপারে জানে না।
রাফির কাছে হাইব্রিড হাইড্রার ক্ষমতা এই দুই দেশের দুই ব্যাংকের দূরত্ব থেকেও বেশী মনে হতে লাগলো। রাফির আন্দাজ হতে থাকলো কতটা ভয়ংকর এক ভার্চুয়াল দানবের পিছু নিয়েছে তারা।
মাফিয়া গার্লের তৈরী হাইইব্রিড হাইড্রা যদি এতটাই ক্ষমতাধর হয় তাহলে সেটা তো থাকতে পারবে না এমন কোন সাইবার প্লেস নাই। যে ভাইরাস একটা এনক্রিপটেড ট্রানজেকশন ক্রাক করে দুই ব্যাংককে দুই হিসাব ধরায় দিতে পারে তার কাছে কোন ফায়ারওয়্যাল ব্রেক করা কোন ব্যপার না। রাফি কিছুটা ভয় পেলেও বিষয়টা কাউকে বুঝতে না দিয়ে ভাবতে লাগলো কি করা যেতে পারে এই দানবের সাথে পেরে উঠতে হলে।
পরদিন সকালে অফিসের স্বাভাবিক কাজকর্ম সেরে সব টিমমেট একজায়গায় সমবেত হলো।

রাফি – আজ তো সেই বিশেষ ব্যাংক থেকে মেইইল আসার কথা, মেইল কি এসেছে?
– না, এখনো কোন মেইইল আমরা রিসিভ করি নি।

রাফি – আচ্ছা টিম, তোমাদের কি মনে হয়, মাফিয়া গার্ল আসলে কি চায়?
মোটামুটি সবাই টেনশনে পড়ে গেলো। মাফিয়া গার্ল সম্পর্কে সবার যতটুকু ধারনা আছে তাতে তার সম্পর্কে মন্তব্য করার পক্ষে যথেষ্ট নয়।

রাফি – এটা কোন টেষ্ট নয় যে তোমাদের ১০০% একিউরেসী নিয়ে জবাব দিতে হবে। Do your best guess.
– স্যার, আমার মনে হয় সে একজন দেশপ্রেমিক, দেশের জন্য কিছু করতে চায়।
– শুধুমাত্র দেশের ভেতরকার জংঙ্গী সংগঠনকে ব্যবহার করে পুরা ৫০ দেশে এদের কার্যক্রম সমূলে উৎপাটন করার ব্যবস্থা করেছে সে। বলতেই হয় সে কিছু পজেটিভ চিন্তাই করছে।
– সে হয়তো কিছু বদলাতে চাচ্ছে, কারনটা হয়তো এখনো আমাদের অজানা।
রাফিও ভাবতে থাকলো আসলে কি উদ্দেশ্যে সে মাফিয়া গার্লকে খুঁজছে? একজন ক্রিমিনালকে ধরতে! নাকি মাফিয়া বয়কে কেন এত সাহায্য করতেছে সে এটা জানতে। লক্ষ্য যা ই হোক উদ্দেশ্য একটাই, মাফিয়া গার্লকে খুজে বের করা।
এমন সময় ডাইরেক্টর স্যার রাফি কে রুমে ডাকলেন।
রাফি – আমায় ডেকেছেন স্যার?
ডাইরেক্টর – এসব কি রাফি? বলেই একটা কাগজ ছুড়ে মারলেন রাফির দিকে।
কাগজটা তুলে নিয়ে রাফি পড়ে দেখলো সেই বিশেষ ব্যাংক মেইলের রিপ্লাই দিয়েছে তারই এক কপি। ওইদিন ব্যাংক থেকে মোট ৬ টা ট্রানজিকশন হয়েছে ওই সংস্থাটির একাউন্টে।

রাফি – স্যার আসলে…..

ডাইরেক্টর – (রাগের সূরে) রাফি কেন তুমি ভুলে যাচ্ছো এটা সরকারী একটি প্রতিষ্ঠান, এখানে কোন অফিসিয়াল মেইল পার্সোনালী পাওয়া যায় না, কয়েকটা উপরমহলের ইমেইলও সিসি তে রাখা হয় আর প্রতিটা মেইইল রেকর্ড হয়। আমি তোমাকে যেটা ড্রপ করতে বলেছি সেটা ড্রপ করো আর মাফিয়া গার্ল নামের ভূত মাথা থেকে নামিয়ে ফেলো। না হলে তোমার সাথে সাথে তোমার টিম মেম্বারদের ক্যারিয়ারে ফুলস্টপ বসে যাবে। শেষবারের মত বলছি, Drop this case.
রাফি আর কোন কথা না বলে চুপচাপ রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছিলো তখন আবারো
ডাইরেক্টর – (নম্র সূরে)এদিকে এসো রাফি। আমার কথা এখনো শেষ হয় নি।
রাফি – বলুন স্যার ( বলে স্যারের টেবিলের সামনে চলে গেল)
ডাইরেক্টর – কাগজটা রেখে যাও।
রাফি কিছুটা লজ্জায় পড়ে গেলো আর কাগজটা টেবিলে রেখে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। কিন্তু ওর যা ইনফরমেশন দরকার তা সে পেয়ে গেছে। ৪টা আনঅথরাইজড ট্রানজেকশন এবং ২ টা অথরাইজড।
টিম মেম্বারদের কাছে এসে রাফি পুরোটা খুলে বললো। তারপর

রাফি – দেখো এই মাফিয়া গার্লের জন্য তোমাদের চাকরী রিস্কে ফেলতে চাইই না আমি। I will handel this case from now. আমার যদি কোন সাহায্যের প্রয়োজন হয় তো আমি তোমাদের ডাকবো। আর হ্যাঁ কেসের প্রোগ্রেসও জানাবো রেগুলার। এখন যাও, গিয়ে যার যার কাজে মন দাও।
সবার মন ভেঙ্গে গেল আবার। হয়তো এই পয়েন্টে এসে সবাই ইচ্ছার থেকে চাকরীর মূল্যটাই বেশী ভেবে নিলো। তাই কথা না বাড়িয়ে যে যার কাজে মনযোগ দিলো।
রাফি ও যথেষ্ট ধাক্কা খেলো ডাইরেক্টর স্যারের কথায়। এতটা ক্ষেপে যাবেন তিনি এটা রাফি ভাবতেও পারে নি।
নিজের ডেস্কে বসে অন্যান্য কাজ করতে করতে ভাবছিলো কিভাবে মাফিয়া গার্লকে খুজে বের করবে। হঠাৎ করেই মনে পড়লো শুক্রবার তো বাকী ৪ জনের ইনফরমেশন পাওয়া যাবে। দেখা যাক কি হয়।
পরদিন
রাফি প্রায় আধঘন্টা ধরে দাড়িয়ে আছে xyz সংস্থার কলেজ শাখা অফিসের সামনে। ঘড়িতে বাজে ৪ টা! অতি উৎসাহে আধাঘন্টা আগেই চলে এসেছিলো রাফি। বারবার ডানে বায়ে দেখছিলো কখন উকি দেন সভাপতি ম্যাডাম। তখনই পাশের এক টং চা এর দোকান থেকে বের হতে দেখা গেলো সভাপতি ম্যাডামকে। কাছাকাছি এসে,

রুহী – সেই কখন থেকে দেখছি আপনি এদিক সেদিক তাকাচ্ছেন আর অফিসের সামনে ঘুরঘুর করছেন? মতলসবটাই কি হ্যাঁ?

রাফি – (ইতস্তত বোধ করে) দেখুন আপনার সাথে আমার..

রুহী – (কথা শেষ করতে না দিয়ে) কি , আপনার সাথে আমার কি, হুউ?

রাফি – (বিব্রত) এপয়েন্টমেন্ট ছিলো।

রুহী – (গম্ভীর ভাবে) জানি আমি। মজা করছিলাম। আসুন ভেতরে (বলে অফিসের ভেতরে গিয়ে বসলো)
রুহীর ব্যবহারে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েও নিজেকে সামলে নিলো রাফি আর রুহীর সাথে সাথে অফিসে ঢুকলো।

রুহী – বলুন আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি।
রাফি পকেট থেকে একটি কাগজ বের করে রুহীর হাতে দিলো।
কাগজটা পড়তে গিয়ে রুহীর নজর স্থীর হয়ে গেলো। ৪ টি টোকেন নাম্বার।

রুহী – এই জিনিস আপনার কাছে কিভাবে এলো। ডোনারদের টোকেন নাম্বার অনেকটা ডোনারদের পাসওয়ার্ডের মত যা শেয়ার করা সম্পূর্ণরুপে সংস্থার আইন পরিপন্থী।

রাফি – তাহলে আপনার এটাও বোঝা উচিত যে আমি যে ইনভেস্টিগেশনের উদ্দেশ্যে এখানে এসেছি সেটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

রুহী – কিন্তু আপনি কি জানেন এই টোকেন নাম্বারের তথ্য কমপ্রোমাইজ করার অপরাধে তাদের সদস্যপদ বাতিল হতে পারে?

রাফি – ( কিছুটা গম্ভীর হয়ে) আপনি কি জানেন সরকারী কাজে বাধা দেয়ার অপরাধে আপনার কি হাল হতে পারে?

রুহী – (নরম হয়ে) জানি জানি, এত উত্তেজিত হবার কি আছে। অপেক্ষা করুন, প্রায় ২৮-২৯ বছরের পুরাতন স্টুডেন্ট। কিছুটা সময় লাগবে। বলে রুহী পাশের রুমে গিয়ে নথি ঘাটতে শুরু করলো।

——————???——————

এমন সময় রাফির কাছে একটা ফোন এলো। নাম্বারটাই বলে দিচ্ছে জরুরী কিছু।

গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ