হৃদস্পর্শ ( সিজন ২) পর্ব ২১

0
999

হৃদস্পর্শ ( সিজন ২) পর্ব ২১
জামিয়া পারভীন তানি

“ জীবনের রঙ, বারেবারে মুছে যায়।
নতুন রঙে আবার রাঙিয়ে নিতে হয়।”

আলিফের কাছে শিম্মি কথাটা শুনে চোখ বড়বড় করে তাকায়। আলিফ আবার বলে,
“ আমি বিয়ে করতে চাইনি, পরিস্থিতির স্বীকার। তবে তোমাকেই ভালোবাসি, যদি তুমি বদলে না যাও তবে তোমার মাঝেই সুখ খুঁজে নিবো। আর সুপ্তি সুস্থ হয়ে গেলে বুঝে যাবে রেহান মারা গেছে ।

আমাকে আর রেহান ভাববেও না, নিজে থেকেই দূরে সরে যাবে। আর বাচ্চার আশায় ওকে বিয়ে করিনি। ওর সুস্থতার জন্য ওকে বিয়ে করেছি। তোমার বাচ্চা তোমাকে এনে দিবো, সেটা দত্তক হিসেবে। ”

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


শিম্মি আলিফকে জড়িয়ে ধরে, আর কাঁদোকাঁদো গলায় বললো,
“ তুমি অনেক ভালো, আমি সাময়িক হিংসার বশে অন্ধ হয়ে গেছিলাম। তাই তোমাকে অপমান করে ফেলেছি। মাফ করে দিও আমাকে, আর ও সুস্থ হয়ে গেলেও ওকে যেতে দিওনা। একাকিত্ব আবার ওকে কষ্ট দিবে। আবার ও পাগল হয়ে যাবে। ”
“ পরের টা পরে দেখা যাবে। বাদ দাও এসব। ”

শিম্মির থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আলিফ আবার বললো,
“ খুব ক্ষুদা লেগেছে, খেতেও দিবেনা আমায়! ”

শিম্মি নিজের মাথায় আস্তে করে আঘাত দেয় , আর বলে,
“ তুমি বসো, আমি এক্ষুনি খাবার নিয়ে আসছি। ”

°°°

সাইমা সজীবের কোলে মাথা দিয়ে ঘুমাচ্ছে, সজীব সাইমার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। পারিবারিক কলহের জন্য মেয়েটার সাথে যাচ্ছেতাই ব্যবহারের জন্য সজীব নিজেও নিজেকে খুব অপরাধী ভাবে। দাম্পত্য জীবনের বেশির ভাগ সময় শুধু ঝগড়া ই হয়েছে।
হটাৎ সজীব “ উউউউ” করে চিল্লিয়ে উঠে। পিঠে হাত দিয়ে খেয়াল করে সাইমা মিটিমিটি হাসছে। বুঝতে বাকি নেই সাইমা চিমটি কেটেছে সজীবের পিঠে। সজীব তখন সাইমা কে কাতুকুতু দেওয়া শুরু করে। আর সাইমা কৈ মাছের মতো লাফাতে শুরু করে।

কোনোরকমে নিজেকে সামলে উঠে বললো,
“ দুই বাচ্চার বাপ হয়ে গেছো, ফাইজলামি ছাড়লা না।”

সজীব ও মুখ ভেঙিয়ে বললো,
“ দুই বাচ্চার মা হইছো, শাড়িটাও ঠিক করে পড়া জানলে না।”

সাইমা আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখে শাড়ির কুচি খুলে গেছে, পুরো পেট দেখা যাচ্ছে। আঁচল ও ঠিক নেই, সব কিছু বোঝা যাচ্ছে। চুলগুলো খোলা, নিজেকে দেখে পুরো পাগলীর মতো লাগছে।
সাইমা তাড়াতাড়ি নিজেকে ঠিক করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন হ্যাচকা টানে সাইমা সজীবের বুকের উপর পড়ে যায়।
“ একদম পাগলী লাগছে, আরেকটু পাগলী বানিয়ে দিই। ”
সাইমা সজীবকে ধাক্কা দিয়ে বলে,
“ ধুর্রররর…. ”

সজীব সাইমাকে তবুও কাছে টেনে নিয়ে আপনমনে আদর করতে থাকে।
°°°
“ ওটা কে? তুমি ওকে জড়িয়ে ধরে কেনো আদর করছিলে?”

সুপ্তির কথায় আলিফ চমকে উঠে, শিম্মিকে ছেড়ে দিয়ে সুপ্তির দিকে তাকিয়ে লজ্জা পায়, ওর পোশাক ঠিক নেই। তাড়াতাড়ি করে সুপ্তির দিকে এগিয়ে যায়। আর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলে,
“ তুমিও যেমন আমার বউ, সেও আমার বউ। ”
“ তাহলে ওকে আদর করছো, আমাকে কেনো করোনা?”
আলিফ কি করবে বুঝতে পারছেনা, সুপ্তির ওড়না টা মাথায় জড়িয়ে দেয়, আর বলে,
“ আগে ঘরে যাও, সুন্দর করে সাজুগুজু করে আসো, তারপর আদর দিবো।”
সুপ্তি নিজে তো ঘরে যায়, আলিফের কলার ধরে টেনে নিয়ে ভিতরে যায়। আলিফ বাধ্য হয়ে সুপ্তির সাথে যায়।

আলিফের কথায় শিম্মি চোখ বড় বড় করে তাকায়, কিছুটা লজ্জা পেয়ে ভিতরে চলে যায়। কষ্ট হচ্ছে স্বামীর সাথে অন্য মেয়েকে দেখে, তবুও এটাই হয়তো ছিলো তার ভাগ্যে। তাই মেনে নিতেই হবে নিজের ভাগ্য কে।

সুপ্তি আলিফ কে জোর করে জড়িয়ে ধরে, আর বলে,
“ তুমি ওকে কখনোই ধরবে না, ওর সাথে দেখলে তোমার সাথে কথা বলবো না ।”
“ দেখো সুপ্তি, ও আমার স্ত্রী। আর ওর কাছে আমি হাজারবার যাবো। তুমি যদি এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করো তো তোমাকে আবার তাড়িয়ে দিবো। ”
“ রেহান তুমি খুব খারাপ হয়ে গেছো, আমাকে আর চালোবাসোনা তাইনা!”
“ রেহান না, আমাকে আলিফ বলে ডাকবে। ”
“ কেনো? ”
“ রেহান মরে গেছে, আর আমি আলিফ।”
“ মরে গেছে মানে কি নাম চেঞ্জ করে ফেলেছো?”
“ হ্যাঁ। ”
“ আচ্ছা আলিফ বলেই ডাকবো কিন্তু ওর কাছে যেওনা প্লিজ।”
“ ওর নাম শিম্মি, ওকে আপি ডাকবা। কারণ ও তোমার বড় সতীন। ”
“ তাহলে সতীন বলেই ডাকিইইই!”
আলিফ রাগে ধমক দিয়ে বলে,
“ বাড়াবাড়ি করো না, আপি বলতে বলেছি, সেটাই বলবে। ”

সুপ্তি প্রায়ই কাঁদোকাঁদো স্বরে বলে,
“ মারো মারো তুমিও মারো, সবাই মিলে আমাকে মেরে ফেলো। কেউ ভালোবাসে না আমায়! শুধুই কষ্ট দেয়।”
আলিফ সুপ্তির হাত দুটো ধরে বলে,
“ ছোট বাচ্চা নও তুমি, গ্রাজুয়েট মেয়ে হিসেবে পাগলামি করার কোনো মানে হয়না।”
“ আচ্ছা আর কাঁদবো না। একটা পাপ্পা দাও তাহলে!”
“ মানেএএএএ……”
“ ওকে দিলে, ওমন টা। ” বলেই আলিফের মুখের কাছে মুখ নিয়ে আসে সুপ্তি।

আলিফ সুপ্তি কে সরিয়ে দেয়, আর দরজা টা বন্ধ করে দেয়। মনে মনে ভাবে,
“ সব গুলো পাগল, দু’দুটো পাগল সামলাতে গিয়ে আমিই না পাগল হয়ে যায়।”

°°°
“ কক্সবাজার যাবে!” সজীব সাইমার হাতে বিমানের দুটো টিকিট তুলে দেয়। সাইমা অবাক হয়ে তাকায়,
আর বলে,
“ যাবো কিনা জিজ্ঞেস করছো! নাকি হুকুম দিচ্ছো? ”
“ যদি বলি দুটোই। ”
“ আর বাচ্চাদের কে দেখবে?”
“ ওদের কে নিয়েই যাবো, ওদের রেখে যাবো নাকি?”
“ আমি কি রেখে যেতে চাইছি? প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্য দেখে স্নেহা খুব খুশি হবে। ”
“ হুম, আরেকটা কথা ছিলো.. ”
“ কিহহহহ?”
“ সজল আর ওর বৌ আসবে, সামনের বসন্তে। ”
“ বসন্তের রঙ দিয়ে আমাদের রাঙিয়ে দিতে, তাই না!”
“ কতদিন পরে ভাই আসবে, ভাবতেই অবাক লাগে। ”
“ ওরা তো আমার উপরে রাগ করেই চলে গেছিলো, হটাৎ আসতে চাচ্ছে যে!”
” ওখানে থাকলে বাবার সম্পত্তি লিখিয়ে নিবে কিভাবে! ”

সাইমা বিদ্রুপের হাসি হাসে, সজীব অবাক হয়।
“ কি হলো? ”
“ কি আবার হবে! সজল কতটা বদলে গেছে দেখেছো?”

চলবে….

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে