স্নিগ্ধ প্রেমের মায়ায় পর্ব-০৮ও০৯

0
884

#স্নিগ্ধ প্রেমের মায়ায়
#পর্ব ৮&৯
#লেখিকা সাদিয়া জান্নাত সর্মি

আপুই কেমন আছো তুমি,
পিছন থেকে এমন একটা কথা শুনে আমি ঘুরে তাকিয়ে দেখি আমার ছোট্ট ফুপির মেয়ে ইলিয়ানা দাঁড়িয়ে। আমাকে ঘুরতে দেখে দৌড়ে আমার কাছে এসে বললো,,, আমাকে ভুলে গিয়েছিলে তাই না আপুই?
আমি ইলিয়ানা কে কোলে তুলে নিয়ে বসে বললাম,,
নাহ আমি কি আমার এই পিচ্চি আপুই টাকে ভুলে যেতে পারি? আমি তো তোমাকে খুব মিস করছিলাম ইলি।
ইলিয়ানা মুখ টা কালো করে বললো,, মোটেও না তুমি আমাকে মিস করছিলে না।যদি মিস করতে তাহলে আমাদের বাসায় যেতে আমার সাথে দেখা করতে কিন্তু তুমি যাও নি হুম।

ঠিক তখন কোথা থেকে যেন আফিয়া ওখানে চলে আসলো। আমার কোলে ইলিয়ানা কে দেখে মনে হয় আফিয়ার হিংসে হলো খুব, কাছে এসে ইলিয়ানা কে আমার কোল থেকে নামানোর চেষ্টা করতে করতে বললো,,,
তোদের বাসায় যায় নি বেশ করেছে। তুই আমার আপুর কোলে উঠেছিস কেন, এক্ষুনি নাম বলছি এটা আমার আপু তোর না।
আমি আফিয়া কে থামিয়ে দিয়ে বললাম,, এমন করে না আফিয়া।ও আমাদের বাসায় মেহমান হয়ে এসেছে তাছাড়া ও ছোট ফুপির মেয়ে। তুমি ওর সাথে এই বিহেব করছো কেন?
আফিয়া আমার কথায় কাঁদো কাঁদো চোখে বললো,, তুমি এখন আমাকে ভুলে ইলিয়ানা কে আদর করছো তাই না আপু,যাও তোমার সাথে কোনো কথা নেই আমার তুমি পঁচা আপু, ভালো আপু না।
আফিয়া চোখ মুছে দৌড়ে এখান থেকে চলে গেল। আমি ওর ব্যাপার স্যাপার কিছুই বুঝতে পারলাম না, ইলিয়ানা কে কোলে নিতে দেখে ও এমন করলো কেন কে জানে। আফিয়া চলে যাওয়ার পর ইলিয়ানা আমার গাল হালকা করে টানতে টানতে বললো,,
জানো আপুই আমার সাথে মাম্মাম পাপাই আর আফিফ ভাইয়াও এসেছে। আমি আফিয়ার কথা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে একটু করে মুচকি হাসলাম আর বললাম,, আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি এখন বাসায় গিয়ে রেস্ট নাও অনেক টা জার্নি করে এসেছো তো।

তুমি যাবে না আপুই?

আমার একটা কাজ আছে সেটা শেষ করে আসছি, তুমি যাও কেমন?
ইলিয়ানা হেসে বললো ঠিক আছে আপুই, তার পর আমার কোল থেকে নেমে বাসায় চলে গেল। ইলিয়ানা চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আমি একটা জোরে নিঃশ্বাস ফেললাম।যেই বিপদের মুখোমুখি আমি কোনদিন হতে চাই নি সেই বিপদ নিজে থেকে এসে আমার সামনে ধরা দিয়েছে।ফুপিরা যতো দিন আমাদের বাসায় আছে ততদিন পর্যন্ত আমার এই বাসায় থাকাটা সেইফ নয়। কারন আমার বিপদ হচ্ছে ফুপির ছেলে আফিফ। আগের সেই ভয়ানক স্মৃতি গুলো আবার জেগে উঠেছে মনের মধ্যে,নাহ আমি সেই স্মৃতি গুলো শুনে করতে চাই না। আমি এই কয়দিন মামার বাসায় গিয়ে থাকবো, ওখানে হৃদান ভাই আছে, আমার কোনো ভয় নেই। আমার কোন ক্ষতি হৃদান ভাই হতে দেবে না এটা আমি পুরোপুরি নিশ্চিত। এখানে বসে থাকতে আর ভালো লাগছে না, উঠে বাসার দিকে যেতে লাগলাম।তখন আফিফ বাসা থেকে বের হচ্ছিল, আমাকে দেখে একটু থমকে গেল, মুখের মধ্যে একটা বাঁকা হাসির রেখা টেনে আমাকে বললো,,, ভালো আছো তো স্নিগ্ধা?
আমি যার সামনে পড়তে চাইছিলাম না, ঘুরে ফিরে প্রথমে তার সামনেই আমাকে পড়তে হলো। ওর এই হাসি সুবিধার মনে হচ্ছে না, একটু ভয় পেয়ে গেলাম আমি। কাঁপা কাঁপা গলায় আস্তে করে বললাম,,হ্যা আমি ভালো আছি, তুমি কেমন আছো?

আফিফ মনে হয় আমার দ্বিতীয় কথা টা শুনতে পেলো না, তাই বললো,, এতো দিন ভালো থাকার জন্য অভিনন্দন তোমাকে স্নিগ্ধা, কিন্তু এখন আর ভালো থাকতে পারবে না কারণ আমি এসে গেছি এখন। তোমার জীবনের ভালো থাকা খারাপ থাকা সব কিছু এখন আমি ডিসাইড করবো। আমি একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসছি বলে আফিফ আমার সামনে থেকে চলে গেল। আমি ওকে দেখে তো এমনিতেই একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম এখন ওর কথা শুনে আরো বেশি ভয় করতে লাগলো। একটা সাইকো এই আফিফ,যেটা ভাবে ঠিক সেটাই করে,ওর যেটা চাই সেটা ও যেভাবেই হোক আদায় করে তবে ছাড়বে। আমি তাড়াতাড়ি করে বাসায় এসে রুমে চলে এলাম। ফুপি আর মামনি আমাকে ডাকছিল ওদের সাথে গল্প করার জন্য কিন্তু আমি মাথা ব্যথা করছে এই আল দিয়ে চলে এসেছি। রুমে এসে দরজা টা বন্ধ করে ধীরে ধীরে দিয়ে বিছানায় এসে শুয়ে পড়লাম, মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে আমার। দুই বছর আগের সব কিছু এখন আবার মনে পড়ছে,,,,,,,,,
সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার তাই হাফ কলেজের পর বাসায় ফিরছিলাম একা একা। সাথে নিয়ে আসা গাড়ি টা খারাপ হয়ে গেছে তাই ড্রাইভার ওটাকে ঠিক করতে ম্যাকানিকের কাছে নিয়ে গেছে। হেঁটে হেঁটে আসতেছি তখন হঠাৎ দেখি রাস্তার পাশে কিছু ছেলে মিলে একটা মেয়ে কে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে, দেখে মনে হচ্ছে যেন ওরা মেয়ে টাকে ডিস্টার্ব করছে। আমি এগিয়ে গেলাম ওদিকে, কাছাকাছি গিয়ে দেখি মেয়েটা কাঁদছে আর ওদের কে বলছে ওরা যেন ওকে ছেড়ে দেয়। আমি এই ব্যাপার দেখে চুপি চুপি আমার ফোন দিয়ে পুলিশ কে ফোন করে এখানে আসতে বলে পাশেই একটা গাছ ছিল তার আড়ালে লুকিয়ে পড়লাম। একটু পরে যখন পুলিশ আসছিল, তখন পুলিশের গাড়ির শব্দ পেয়ে ওরা সবগুলো পালিয়ে যায়। ছেলে গুলো পালানোর সময় আমি একটা ছেলে কে দেখে চমকে উঠলাম, অবাকের চরম সিমায় পৌঁছে গেছি আমি কারন ছেলে টা আর কেউ নয় ছোট ফুপির ছেলে আফিফ।আফিফ ও আমাকে দেখে নিয়ে ছিল। আমি ওখানে আর এক মুহূর্তও না দাঁড়িয়ে বাসায় চলে আসলাম, মাথায় বার বার একটা কথাই ঘুরছে আফিফ একটা বাজে ছেলে। রাস্তাঘাটে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে, ছিঃ আমি কখনো এটা ভাবিও নি যে আফিফ এমন একটা ছেলে।

সন্ধ্যার দিকে আমি রুমে বসে নোটস গুলো দেখছিলাম তখন আফিফ আমার রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমার পাশে এসে বসল। আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম আফিফ কে এমন করে আসতে দেখে,একে তো ও একটা বাজে ছেলে তার উপর ও আমার রুমে এসে দরজা বন্ধ করেছে কেন? আগে ও আমার সাথে ঘুরতে গেলেও কোনো ভয় লাগতো না কিন্তু এখন ও বাসায় আমার রুমে এসেছে এতেই ভয় লাগছিল। একটু রাগি গলায় বললাম,,

কি ব্যাপার আফিফ, তুমি আমার রুমে এইভাবে দরজা বন্ধ করে এসেছো কেন?

তোমার সাথে আমার কিছু দরকারি কথা আছে স্নিগ্ধা।

কি দরকারি কথা?আর আমার কোনো দরকারি কথা শোনার ইচ্ছা নেই, তুমি যাও এখান থেকে।

তুমি শুনতে না চাইলেও তোমাকে শুনতে হবে।আজ তুমি যা দেখেছো সেটা মন থেকে মুছে ফেলো, কাউকে বলবে না যেন ঐ কথা টা।

আমি আফিফের কথা শুনে ওর সাথে তর্ক জুড়ে দিলাম, কিছুক্ষণ কথা কাটাকাটির পর ও এমন একটা কথা বললো যেটা শুনে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে এলো। বললো,যদি আমি কাউকে ওর ব্যাপারে কিছু বলি তাহলে ও আমার এমন অবস্থা করবে যাতে আমি আর কখনো কাউকে কিছু বলার অবস্থায় না থাকি।ওর মতো একটা ছেলে আমার কি অবস্থা করতে পারে সেটা আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি কিন্তু আমি ওর হুমকি তে ভয় না পেয়ে পরদিন ফুপি কে সবকিছু বলে দিলাম। ওনার ছেলে যে রাস্তা ঘাটে মেয়েদের ইভটিজিং করে একটা জেনে ফুপি খুব রেগে গেলেন।আফিফ কে অনেক বকাঝকা করেন তিনি,এর কিছুদিন পর আফিফের নামে একটা মেয়ে রেপ কেস করে যার জন্য ওকে জেলে যেতে হয়। পরে কিভাবে জানি ছাড়াও পেয়ে যায়, কিন্তু আফিফের ধারণা ও আমার জন্য জেলে গেছে তাই জেল থেকে বের হওয়ার পর আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু পারে নি।তার কারণ ও ছাড়া পাওয়ার কয়েক দিন পরেই ফুপা ওকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেন,আর আজ যখন ও ফিরেছে তখন সোজা আমাদের বাসায় এসেছে।

বাইরে থেকে দরজা ধাক্কানোর শব্দ পেয়ে আমার ভাবনায় ছেদ পড়ল। উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দিয়ে দেখি মামনি দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দরজা খুলতে দেখে মামনি বললো,, স্নিগ্ধা তুমি কি করছো? বাইরে আফিফ কখন থেকে খুজছে তোমাকে,যাও গিয়ে ওর সাথে কথা বলো।
আমি মামনির কথা শুনে একটু ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম,, মামনি আর কয়েক দিন পর তোমার মেয়ের বিয়ে। এখন সে তার হবু বরের সাথে কথা না বলে অন্য ছেলের সাথে কেন কথা বলবে?

আরে তা নয়।আফিফ তো তোমার ভাইয়ের মতোই তাই না। তুমি ওর সাথে কথা বললে এমন কিছু হবে না, তাছাড়া ও আফিফ এতো দিন পরে দেশে ফিরেছে। একটু ভালো মন্দ কথা তো বলতেই পারো তুমি।

আমি পানসে মুখ করে বললাম,, আমার এখন আফিফের সাথে কথা বলার মতো মুড নেই মামনি তুমি যাও।

ঠিক তখনই কোথা থেকে যেন আফিফের উদয় হলো, মামনির পিছনে থেকে বেরিয়ে এসে বললো,,, চিন্তা করছো কেন স্নিগ্ধা। তোমার মুড নেই ভালো কথা, আমি মুড তৈরি করে দিচ্ছি।এসো আমার সাথে এই বলে আফিফ প্রায় এক রকম টানতে টানতে আমাকে বাসার বাইরে নিয়ে এলো। আমি ভিতরে ভিতরে ভয়ে কাপছি, আল্লাহ না করুক আফিফ আমার সাথে যেন কোনো মিস বিহেভ না করে। বাসার বাইরে বাগানের শেষ মাথায় নির্জন জায়গায় নিয়ে এলো আমাকে, তখন হয়তো ও নির্জন জায়গা খুঁজতে বের হয়েছিল। ওখানে নিয়ে এসে আমার হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,, স্নিগ্ধা তুমি হয়তো আন্দাজ করতে পারছো আমি তোমাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছি।

আমি ভয় পাওয়া চোখে ওর দিকে তাকালাম শুধু, কিন্তু কিছু বললাম না।
আমার চাহনি দেখে আফিফ একটু হেসে বললো,, একদম ঠিক ভেবেছো আমি তোমাকে এখানে তোমার ভুলের শাস্তি দিতে নিয়ে এসেছি। মিথ্যে মামলা করে মিথ্যে কেসে আমাকে ফাঁসিয়ে তুমি জেলে পাঠিয়ে ছিলে তাই না? এখন আমি তোমাকে তোমার মিথ্যে নাটকের শাস্তি দেবো।

আমি তোতলাতে তোতলাতে বললাম,, আমি কিছুই করিনি তোমার সাথে। এমন কি তোমার নামে কে কেস করেছিলো আমি তো সেটাও জানি না, তুমি ভুল ভাবছো আমাকে।হ্যা আমি হয়তো ফুপি কে তোমার ওই দোষের কথা বলে দিয়েছিলাম কিন্তু তার মানে তো এটা নয় যে আমি তোমাকে মিথ্যে মামলায় ফাসাবো।আর তোমার মতো ছেলে কে ফাঁসানোর দরকার পরে না কি, তুমি তো এমনিতেই খারাপ একটা ছেলে।কত মেয়ে কে তুমি রেপ করেছো কে জানে, ওই মেয়েটি কেও হয়তো করেছিলে তাই ও তোমার নামে কেস করেছে।

আফিফ আমার কথা শুনে প্রায় চেঁচিয়ে বললো,,শাট আপ। একদম চুপ, একটা কথাও যেন মুখ থেকে আর বের না হয় তোমার। আমার চরিত্রের সাফাই তোমাকে গাইতে হবে না, আমি তোমাকে যে কারণে এখানে নিয়ে এসেছি তুমি সেটা শোনো।

আমি ওর ধমক শুনে একটু কেঁপে উঠলাম,আস্তে করে মাথা নাড়িয়ে ওর কথায় হ্যা বললাম।আফিফ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে তার পর বললো,,
তোমাকে আমি একটা শর্তে ক্ষমা করে দেবো যদি তুমি আমার শর্ত টা মানো তাহলে আমি তোমার কোন ক্ষতি করবো না।
আমি একটু ভয় পাওয়া গলায় বললাম,,ক..কি শর্ত তোমার,বলো?

আফিফ উল্টো দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো,, তোমাকে আমি ক্ষমা করে দিবো যদি তুমি আমাকে বিয়ে করো তাহলে।
আমি আফিফের কথা শুনে চমকে উঠলাম, এই এইটা কি বলছে আফিফ। আমি ওকে বিয়ে করব মানে টা কি, ওর মতো একটা বাজে ছেলে কে আমি বিয়ে করবো এটা ও ভাবছে কি করে?
আমি কিছু বলার আগেই আফিফ আবার বললো,,, আমি জানি যে তোমার হৃদানের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে আর তুমিও ওকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছো। কিন্তু কোনো ব্যাপার না, তুমি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যাও বাকি কিছু আমি হ্যান্ডেল করে নেবো তুমি কিচ্ছু চিন্তা করোনা।
এতক্ষণ ধরে আমার আফিফ কে ভয় লাগছিল কিন্তু এখন ওর উপর রাগ হচ্ছে, প্রচুর রাগ হচ্ছে আমার। রাগে গজগজ করতে করতে বললাম,,আর যদি বিয়ে না করি তাহলে তুমি কি করবে আমার?
আফিফ আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে একটু হেসে বললো,, তাহলে তোমার প্রিয় মানুষটাকে আমি কেড়ে নেবো। আমার জীবনে তুমি জেলে ঢুকার কলঙ্ক লেপে দিয়েছিলে আর আমি তোমার জীবনে কষ্ট লেপে দিবো।
আমি হাসলাম, তার পর বললাম,,,যা খুশি করতে পারো তুমি, আমি তোমাকে বিয়ে করব না।

গুড,ভেরি গুড। এবার শুধু দেখতে থাকো আমি কি করি তোমার সাথে, ওকে বেইবি?
আমি একটা ঝারি দিয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম। বাসায় এসে মামনি কে বললাম, মামনি আমি একটু মামার বাসায় যেতে চাইছি,যাবো কি?
মামনি আমাকে যেতে দিলেন,বাধা দিলেন না আর। আমি একটু পরে রেডি হয়ে মামার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।ড্রাইভার আমাকে মামার বাসার সামনে এসে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল, বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবছি ভেতরে যাবো কিভাবে? কালকে হৃদান ভাই কে আমি যা বলেছি তার জন্য এখন হৃদান ভাই যদি আমাকে কিছু বলে তখন কি হবে আমার? ধুর যা হওয়ার হবে এতো কিছু না ভেবে আমি বাসার ভিতরে ঢুকলাম, বাসায় ঢুকেই প্রথমে হৃদান ভাইয়ের সামনে পড়লাম আমি।হৃদান ভাই তখন সোফায় বসে টিভি দেখছিল, হঠাৎ করে আমাকে দেখে একটু চমকে উঠলো সে। পরক্ষনেই নিজেকে সামলে নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই বললো,, স্নিগ্ধ ম্যাডাম হঠাৎ আমার বাসায় যে?
আমি কিছু না বলে ওর পাশে গিয়ে বসে বললাম,,মামী কোথায়,ডাকো তাকে।

হৃদান ভাই একটু মন খারাপ করার ভান করে বললো,, কেন মা কে কি দরকার এখন? তুই আমার কাছে এসেছিস আমার সাথে একটু কথা বল,আর এমনিতেও মা এখন বাসায় নেই। উনি উনার বান্ধবীর বাসায় গেছেন কাল কে, দুই দিন পর ফিরবেন তিনি।

আমি বললাম, আমি তো তোমাদের বাসায় বেড়াতে এসেছিলাম কিন্তু মামীই তো বাসায় নেই তাহলে আমি থেকে কি করবো এখন। আচ্ছা আমি এখন যাই হ্যা বলে বসা থেকে উঠে দাড়ানো মাত্রই হৃদান ভাই আমার হাত ধরে টেনে আবার ওর পাশে বসিয়ে দিলো।তার পর বললো,, এতো যাওয়ার শখ কেন তোর?মা নেই তো কি হয়েছে, আমি তো আছি না কি? আমাকে ওইরকম ভাবিস না যে খালি বাসায় আমি তোর সাথে কোনো রকম মিস বিহেভ করবো?
আমি একটু রাগি গলায় বললাম,,
আমি কি তোমাকে বলেছি এই রকম কিছু বলেছি তোমাকে?

না বলিস নি। কিন্তু তোর ভাব ভঙ্গিতে তো তাই বুঝা যাচ্ছে।
আমি কটমট করে তাকিয়ে বললাম,,
কি বললে তুমি?

হৃদান ভাই আমার কানের কাছে এসে স্লো ভয়েজে বললো,, বললাম তোকে ছাড়া আমি আর এক মুহূর্তও থাকতে পারছি না।

চলবে………… ইনশাআল্লাহ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে