স্তব্ধের স্নিগ্ধতা পর্ব-১৩

0
1200

#স্তব্ধের_স্নিগ্ধতা
#মাশফিয়াত_সুইটি(ছদ্মনাম)
পর্ব:১৩

অরিত্রি শিকদার,রুশি,নাতাশা একসঙ্গে পাশাপাশি বসে আছে তাদের ঠিক সামনে সোফায় বসে আছে স্তব্ধ।অরিত্রি শিকদার একটা কাগজ স্তব্ধের দিকে এগিয়ে দিতেই স্তব্ধ প্রশ্ন করল,

– এই পেপারটা কিসের মম?

– তোর আর স্নিগ্ধতার ডিভোর্স পেপার চটজলদি সাইন করে দে।

স্তব্ধের মুখটা গম্ভীর হয়ে গেল তিক্ষ্ম কন্ঠে বলল,
– আর ইউ ক্রেজি মম স্নিগ্ধকে কেন ডিভোর্স দিতে যাব আমি?

– ভুলে যাস না তোর ড্যড তোকে জোর করে বিয়েটা করিয়েছে অন্যের কারণে কেন নিজের জীবন নষ্ট করবি?

– তোমাকে কে বলেছে আমি অন্যের জন্য নিজের জীবন নষ্ট করছি?

– মানে?

– আচ্ছা ধরো তোমার কথায় পেপারে আমি সাইন করে দিলাম তারপর কি হবে?

– নাতাশার সঙ্গে তোর বিয়ে দিব।

স্তব্ধ মৃদু হেসে বলল,
– কিন্তু নাতাশাকে তো আমার জীবন সঙ্গিনী হিসেবে পছন্দ নয়।

নাতাশা বিচলিত কন্ঠে বলল,
– স্তব্ধ কি বলছো এসব?

– আমি আমার মমের সঙ্গে কথা বলছি কেউ মাঝখানে কথা না বললে খুশি হতাম।

রুশি হাত দিয়ে নাতাশাকে থামিয়ে দিল অরিত্রি শিকদার বললেন,
– আমার নাতাশাকে পছন্দ এছাড়া বিয়ের পর সব ঠিক হয়ে যাবে ভালো লাগা শুরু হবে।

– আমিও তো এটাই বুঝাতে চাচ্ছি তোমায়, স্নিগ্ধর সঙ্গে বিয়েটা যখন হয়ে গেছে ধীরে ধীরে সম্পর্ক ঠিক হয়ে যাবে আর এ ক’দিনে স্নিগ্ধর প্রতি আমার একটা মায়া জম্মে গেছে ওকে ছেড়ে দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

– স্তব্ধ মুখে মুখে তর্ক করবি না যা বলছি তাই কর এতে সাইন করে দে তুই সাইন করলে স্নিগ্ধতাও সাইন করতে বাধ্য থাকবে।

স্তব্ধ মায়ের হাত থেকে পেপারটা নিয়ে দেখতে লাগল উপস্থিত সবার মুখে হাসি স্পষ্ট। কিন্তু হাসিটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না স্তব্ধ পেপারটা ছিঁড়ে অসংখ্য টুকরো করে অরিত্রি শিকদারের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,

– ড্যড না হয় আমায় জোর করে বিয়ে দিয়েছে কিন্তু তুমি কি করছো? বিবাহিত ছেলের ডিভোর্স করিয়ে অন্য মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিতে চাচ্ছো তাও আবার অমতে।

– তুই বুঝার চেষ্টা কর।

– আমি কিছু বুঝতে চাই না স্নিগ্ধকে আমি ছাড়ছি না বিয়ে যেভাবেই হোক ও আমার ওয়াইফ এটাই বড় পরিচয়, ওর প্রতি আমার একটা মায়া জম্মে গেছে এই মায়া থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয় এছাড়া আমার এমন কোনো পিছু টান নেই যে ওকে ছেড়ে দিতে হবে জীবনটা আমার, কে আমার জীবনে থাকবে আর থাকবে না আমাকেই ডিসাইড করতে দাও তুমিও স্নিগ্ধকে ছেলের বউ হিসেবে মেনে নাও এটাই ভালো হবে।

রুশির দিকে তাকিয়ে,
– আন্টি বাংলাদেশে ছেলের কি অভাব পড়েছে যে বোনের ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে ঠিক করতে হবে? ঠিক করেছ মানলাম এখন তো আমি বিবাহিত তারপরেও কেন বিবাহিত ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে চাইছো? ছেলের অভাব পড়লে ড্যডকে বলো ভালো একটা ছেলে খুঁজে দিবে যেভাবে আমার জন্য স্নিগ্ধকে খুঁজে এনেছে।

স্তব্ধ উঠে অরিত্রি শিকদারের ঘর থেকে বেরিয়ে গেল রুশি আর নাতাশার মুখটা চুপসে গেছে অরিত্রি শিকদার ছেলের কথাগুলো শুনে অবাক হয়ে গেছেন।

রাতুল শিকদার এদের কানাঘুষা টের পেয়ে আজ অফিসে যাননি।অরিত্রি শিকদার যখন স্তব্ধকে ঘরে ডাকলেন তখনি সতর্ক হয়ে আরিয়াকে নিয়ে দরজার আড়ালে দাড়িয়ে ছিলেন সবটা শোনার জন্য প্রথমে এদের কথা শুনে বেশ রেগে গিয়েছিলেন কিন্তু স্তব্ধের বলা কথাগুলো শুনে মুহূর্তেই মনে মনে খুশি হয়েছেন।

রাহেলা বেগমের ঘরে রাতুল শিকদার আর আরিয়া এসে বসলো ওদের সঙ্গে তিহানও যোগ দিল। রাহেলা বেগম পান চিবোতে চিবোতে বললেন,

– কিরে তোদের বাপ মেয়েকে এত খুশি লাগছে কেন?

– আরে মা আর বলো না তোমার নাতি তো স্নিগ্ধতাকে মেনে নিয়েছে উহু মেনে নিয়েছে বললে ভুল হবে অরিত্রির মুখের উপর কথাও বলে দিয়েছে।

– বিস্তারিত বল।

আরিয়া পুরোটা রাহেলা বেগমকে বলতেই তিনিও খুশি হয়ে গেলেন। সবার হাতে একটা করে পান দিয়ে,
– এই খুশিতে একটা পান খা, আমি বলেছিলাম না আমার স্তব্ধ দাদুভাই আর যাই করুক না কেন সম্পর্কের মান বুঝে।
______________

আজ কলেজে তিহানের জয়েনিং ডেট। নতুন কয়েকজন শিক্ষক জয়েন করায় কলেজের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।তিহান কলেজে প্রবেশ করে আশেপাশে তাকালো প্রিন্সিপালের সঙ্গে দেখা করতে হবে কিন্তু প্রিন্সিপালের রুম কোনদিকে তা জানা নেই কাকে জিজ্ঞেস করবে ভাবতে ভাবতে সামনে এগিয়ে গেল একটা মেয়েকে দেখে ডেকে বলল,

– এই পিচ্চি মেয়ে শুনো।

মেয়েটি আশেপাশে তাকিয়ে তিহানের দিকে দৃষ্টি দিল তিহান মৃদু হেসে বলল,
– তোমাকেই ডেকেছি আচ্ছা প্রিন্সপাল স্যারের রুম কোথায় বলতে পারবে?

মেয়েটি রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
– আমাকে দেখে আপনার পিচ্চি মনে হয়? চোখে সমস্যা নাকি?

– তোমাকে দেখে তো পিচ্চিই মনে হচ্ছে।

– ইডিয়ট।

বলেই মেয়েটি রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে হাঁটা ধরলো তিহান পুনরায় ডেকে বলল,
– পিচ্চি প্রিন্সিপালের রুমটা তো দেখিয়ে দিয়ে যাও।

মেয়েটি যেতে যেতে বলল,
– পারবো না খুঁজে নিন।

তিহান ক্লান্ত কন্ঠে বলল,’ছোট ছোট মেয়েদের পিচ্চি বললেও দোষ?

কলেজের একজন স্টুডেন্টকে জিজ্ঞেস করে অবশেষে প্রিন্সিপালের রুম খুজে পেল তিহান।প্রিন্সিপালের রুমে ঢুকতেই বেশ অবাক হলো মনে মনে বলল,’এই পিচ্চি ঝগড়ুটে মেয়ে এখানে কেন?’

তিহানকে দেখে প্রিন্সিপাল খুশি হয়ে স্বাগতম জানালো এবং বাকিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে এবার সেই মেয়েটিকে দেখিয়ে বললেন,

– ইনি হচ্ছেন শিরিন সুলতানা ফাইন্যান্সের শিক্ষিকা হিসেবে কলেজে নতুন জয়েন করেছেন।

তিহানের চোখগুলো বড় বড় হয়ে গেছে চমকায়িত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
– ইনি শিক্ষিকা!

– হ্যা।

– আমি তো ভেবেছিলাম কলেজের স্টুডেন্ট।

প্রিন্সিপাল হেসে দিলেন শিরিন দাঁত কিড়মিড় করে বলল,
– মাথায় গোবর থাকলে এসব ভাবাটাই স্বাভাবিক।

– আমার মাথায় গোবর?

– তা নয় তো কি? আপনার মাথায় অনেক গোবর আছে সাথে সমস্যাও থাকতে পারে সময় থাকতে ভালো ডাক্তার দেখান।

– মিস ঝগড়ুটে বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে আপনি মেয়ে বলে কিছু বললাম না।

– আপনি কিছু বললে আমি কি ছেড়ে দিব? আপনার সব কয়টা চুল ছিঁড়ে দিব।

– মেয়েরা এছাড়া পারেটা কি? আমি আপনাকে মাথায় তুলে আছাড় মা’রবো।

শিরিন প্রিন্সিপালের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে,
– স্যার দেখুন এই অসভ্য লোকটা আমার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করছে।

প্রিন্সিপাল ঝগড়া থামানোর জন্য,
– আহা আপনারা এখন এভাবে ঝগড়া করবেন না ঝগড়ার জন্য বাকি দিন পরে আছে।

শিরিন ক্রুব্ধ স্বরে বলল,
– আমায় কেন বলছেন? ঝগড়া তো এই খাটাস ব্যাটায় করছে।

তিহান ধমক দিয়ে,
– এবার কিন্তু সত্যি সত্যি আপনাকে মাথায় তুলে আছাড় দিব।

শিরিন কিছু বলতে যাবে তৎক্ষণাৎ প্রিন্সিপাল থামিয়ে দিল অনেক কষ্টে দু’জনের ঝগড়ার ইতি টেনে দু’জনকে দু’দিকে সরিয়ে দিল।

পুরো অনুষ্ঠানে ঝগড়া করতে না পারলেও দৃষ্টি দিয়ে দু’জন দু’জনকে ঝলসে দিয়েছে।
_________

রুশি দুই মেয়েকে নিয়ে গতকাল নিজের বাড়িতে চলে গেছে তবে ফোন করে অরিত্রি শিকদারকে বারবার কু বুদ্ধি দিয়েই যাচ্ছে।তিহান সোফায় বসে আছে আর বিড়বিড় করে কিছু বলছে, স্নিগ্ধতা কফির মগ এগিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করল,

– ভাইয়া কাকে বিড়বিড় করে বকা দিচ্ছেন?

তিহান কফির মগ হাতে নিয়ে বলল,
– আজ একটা ঝগড়ুটে মেয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছে জানো ভাবী মেয়েটা অনেক ঝগড়ুটে।

– ভাইয়া আপনি তো কলেজে গিয়েছিলেন।

– হুম মেয়েটার সঙ্গে তো কলেজেই ঝগড়া হয়েছে।

– কেন ঝগড়া হলো?

– মেয়েটা দেখতে পিচ্চিদের মতো তাই আমি পিচ্চি বলে ডেকেছি কিন্তু পরে শুনি সে নাকি আমার মতোই কলেজে নতুন টিচার হিসেবে জয়েন করেছে এতে আমার দোষ কিসের তাকে দেখলে বয়স বুঝা যায় না।

স্নিগ্ধতা মৃদু হাসলো,তিহান ব্রু নাচিয়ে,
– তুমি হাসছো ভাবী?

– কই না তো।

– যত খুশি হেসে নাও ওই ঝগড়ুটে মেয়েকে যদি টাইট দিতে না পেরেছি আমার নামও তিহান শিকদার না হু।

– আগে কফি খেয়ে নিন তারপর কিভাবে টাইট দিবেন ভেবে দেখা যাবে।

– আচ্ছা।
.
.
.
নিশ্চিন্তে স্তব্ধ ঘুমাচ্ছে আর তার ঠিক পাশে শুয়ে ঘুমন্ত স্তব্ধকে এক দৃষ্টিতে দেখে যাচ্ছে স্নিগ্ধতা। ঠোঁটে লাজুক হাসি, জাগ্ৰত স্তব্ধের থেকে ঘুমন্ত স্তব্ধকে অধিক ভালো লাগছে স্নিগ্ধতার। জেগে থাকলে লজ্জায় স্তব্ধের দিকে তাকানোরও সাহস নেই কিন্তু ঘুমালে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে থাকলেও সমস্যা নেই কেউ দেখতেও পারবে না লজ্জায়ও পড়তে হবে না। স্নিগ্ধতার ইচ্ছে হচ্ছে স্তব্ধকে ছুঁয়ে দিতে যদি ঘুম ভেঙ্গে যায় সেই ভয়ে ইচ্ছেটা দমিয়ে রাখলো।

স্তব্ধের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল,’একেই কি বলে ভালোবাসা? আমিও কি আপনাকে ভালোবাসি স্তব্ধ? হয়তো ভালোবাসি তবে কখনও হয়তো মুখ ফুটে বলা হবে না আপনি কি বুঝে নিতে পারবেন আমার ভালোবাসা?’

তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় চোখের পাতা বুজে গেল ঘুমে তলিয়ে গেল স্নিগ্ধতা।

আজানের ধ্বনিতে স্তব্ধের ঘুম ভেঙ্গে গেছে রাতে দেরিতে ঘুমানোয় স্নিগ্ধতা এখনও ঘুমিয়ে আছে। স্তব্ধের একবার স্নিগ্ধতাকে ডাকতে ইচ্ছে করল কিন্তু মন সায় দিল না স্নিগ্ধতার কপালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।

একে একে সব ছেলেরা নিজেদের কর্মক্ষেত্রে চলে গেছে। তিহান ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে জয়েন করেছে সেকেন্ড ইয়ারের ব্যবসায় বিভাগের প্রথম ক্লাসটাই আজ তার কিন্তু রাস্তায় জ্যামের কারণে ক্লাসে আসতে পনের মিনিট দেরি হয়ে গেছে।

তিহান ক্লাসের দরজার সামনে দাড়াতেই ভেতরে শিরিনকে দেখতে পেল। শিরিন নিজের মতো ক্লাস নিচ্ছে, শিরিনের ক্লাস ছিল থার্ড পিরিয়ডে কিন্তু তিহানের দেরি হওয়ায় প্রিন্সিপাল তাকে এই ক্লাসে ঢুকিয়ে দিল। তিহান ডায়রীতে রুটিন চেক করে বলল,’রুটিন তো ঠিকই আছে তাহলে এই ঝগড়ুটে এই পিরিয়ডের ক্লাসে কি করে?’

তিহান গলা খাঁকারি দিয়ে শিরিনকে উদ্দেশ্য করে বলল,
– হ্যালো মিস শুনুন।

শিরিন ব্রু কুঁচকে তিহানের কাছে এসে,
– কি?

– এখন আমার ক্লাস নেওয়ার কথা আপনি কেন এসেছেন?

– প্রিন্সিপাল স্যার বলেছেন তাই।

– আচ্ছা আপনি যান আমি আমার ক্লাস নেই।

– উহু আমি যখন এসেছি আমিই ক্লাস নিব আপনি থার্ড পিরিয়ডে এসে নিজের ক্লাস নিয়েন।

– বললেই হলো নাকি? রুটিন অনুযায়ী আমার ক্লাস সো আমি নিব।

– একজন টিচার হয়ে টাইম মেইনটেইন করে চলতে পারেন না আবার বড় বড় কথা বলেন আপনার পনের মিনিট লেইট হয়েছে তাই বাইরে গিয়ে দাড়ান আমাকে আমার ক্লাস করতে দিন।

বলেই শিরিন ক্লাসের ভেতরে ঢুকে গেল।তিহান বাইরে গিয়ে দাড়িয়ে দাড়িয়ে বলতে লাগল,’আমি কি ইচ্ছে করে দেরি করেছি নাকি? সব দোষ তো ওই জ্যামের।’

দুপুরের খাবার খেয়ে বিছানায় শুয়ে আছে স্নিগ্ধতা মোবাইলের রিংটোন বাজতেই ঠোঁটের কোণে হাসি প্রশস্ত হলো। ফোনটা কানে ধরতেই অপরপাশ থেকে স্তব্ধ বলল,
– খেয়েছ দুপুরে?

– হুম, আপনি?

– খেয়েছি, কি করছো?

– কিছু না।

– আচ্ছা বিকেলে রেডি হয়ে থেকো আমরা ঘুরতে বের হব।

কোনো উওর না শুনে স্তব্ধ কল কেটে দিল,স্নিগ্ধতা যেন এটাই চেয়েছিল খুশি মনে কোন পোশাক পরবে ঠিক করতে লাগল।
_____________

বর্ষায় হাওরের ভিন্ন এক সৌন্দর্য দেখা যায় এই সৌন্দর্য মন ভালো করতে বেশ পটু, বর্ষায় হাওর ভ্রমণ কম বেশি সবারই ভালো লাগে।স্তব্ধ প্রতিবছর বর্ষায় বন্ধুদের সঙ্গে হাওর ভ্রমণে বের হয় এখনও বর্ষাকাল চলছে হাওরগুলো পানিতে পরিপূর্ণ।

হাওরের নাম শুনলেই প্রথমেই মনে পড়ে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন হাওর।দুপাশের জলাধার এবং কনকনে শীতল বাতাস যেকোন মানুষের মন ভালো করার ওষুধ।

দীর্ঘক্ষণ ড্রাইভিং করে স্নিগ্ধতাকে নিয়ে মিঠামইনে পৌঁছালো স্তব্ধ। গাড়িতে বসেও স্নিগ্ধতা জানতো না কোথায় যাচ্ছে তারা জায়গাটা দেখে চিনতে অসুবিধা হলো না।গাড়ি একপাশে সাইড করে স্নিগ্ধতার হাত ধরে সামনে এগুতে এগুতে স্তব্ধ বলল,

– এটা হচ্ছে মিঠামইন হাওর আগে অনেকবার বন্ধুদের সঙ্গে আসা হয়েছে ভাবলাম এবার না হয় বউ নিয়ে আসি।

স্নিগ্ধতা মুচকি হেসে বলল,
– একবার আমার সব বান্ধবীরা মিলে এখানে ঘুরতে আসার প্লান করেছিল আমারও আসার ইচ্ছে ছিল বাবা রাজি হলেও মা রাজি হয়নি তাই কখনও আসা হয়নি আজ আপনি ইচ্ছেটা পূরণ করে দিলেন।

স্তব্ধ স্নিগ্ধতার সঙ্গে আরেকটু ঘেষে দাড়িয়ে,
– এর জন্য তো আমি একটা গিফট তোমার থেকে ডিজার্ভ করি তাই না?

– কি গিফট?

– বেশি কিছু না একটা চুমু দিলেই হবে আমি কিছু মনে করবো না।

স্নিগ্ধতা চোখ গরম করে,
– আপনার মুখে কিছু আটকায় না লজ্জা শরম নেই?

– লজ্জা নারীদের ভূষণ এছাড়া বউকে চুমু দিতে লজ্জা কিসের দিনে দশ বারোটা চুমু খাওয়া স্বামীদের প্রধান কর্তব্য।

– নিয়মটা নিশ্চই আপনি বানিয়েছেন?

– আশ্চর্য জানলে কিভাবে!

– আপনার সঙ্গে কথা বলা মানে লজ্জা শরম বিসর্জন দেওয়া।

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে