সে পর্ব-০৬

0
1333

#সে
#পর্ব_৬
#মুন্নি_আক্তার_প্রিয়া
__________________
ছেলেটির শক্ত হাতের কবল থেকে নিজেকে বাঁচানো আমার পক্ষে দুঃসাধ্য। এই সিচুয়েশনে কোনো মেয়ের নিজেকে রক্ষা করার মতো বোধবুদ্ধি থাকবে না। মনেপ্রাণে আল্লাহ্কে ডেকে চলেছি। চিৎকার করছি। আমি জানি, আমার চিৎকার কারো কান পর্যন্ত পৌঁছাবে না। কিন্তু তবুও ব্যাকুল মন সম্ভ্রমহানির কবল থেকে বাঁচতে চাইছে। সুন্দর পৃথিবী, সুন্দর ভোরটা দেখতে চাইছে। পেছনের দরজার বামদিকে খুপরীর মতো একটা অন্ধকার রুমে আমায় নিয়ে যেতে চাচ্ছে ছেলেটি। এখানে এসে শরীরের যত শক্তি আছে সব খাঁটিয়ে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছি। চিৎকার করছি। ছেলেটি আমার সাথে পেরে উঠছিল না। না পেরে আমার গালে থাপ্পড়ও বসিয়ে দেয়। হাত ধরে টানতে থাকে। তবুও দমে যাইনি। শক্তিতে যতটা কুলাচ্ছে আমি জোরজবরদস্তি করছি সঙ্গে চিৎকার করছি।

কথায় আছে রাখে আল্লাহ্ মারে কে! যেখানে স্বয়ং আল্লাহ্’ই রয়েছে রক্ষা করার জন্য তখন দুষ্টুলোক কী করে তার উদ্দেশ্য হাসিল করবে? আমি গেইটের দিকে কতগুলো ছেলেকে দেখতে পাই। চিৎকার করার মুহূর্তে এবার ছেলেটি আমার মুখ চেপে ধরে। এত শক্ত করে ধরেছে যে আমি শব্দ করতে পারছি না। তখন মাথায় এলো অন্য বুদ্ধি। ছেলেটির অণ্ডকোষ বরাবর হাঁটু দিয়ে মারতেই ছেলেটির হাত আলগা হয়ে যায়। ব্যথায় কুকিয়ে ওঠে। সেই সুযোগে আমি ছেলেগুলোর উদ্দেশ্যে দৌঁড় দিয়ে চিৎকার করি। হন্তদন্ত হয়ে তারাও আমার দিকে এগিয়ে আসে। কাঁদতে কাঁদতে আমার বেহাল অবস্থা। শুধু এতটুকুই বলতে পারি,’ঐ…ঐখানে একটা ছেলে আছে। তাকে ধরুন। আমাকে বাঁচান।’

তখন ঐ ছেলেটিকে দৌঁড়ে পালাতে দেখে এখানকার তিনজন ছেলেও দৌঁড় দেয় তার পেছনে। এবার মনের সব শক্তি, জোর শেষের পথে। সেন্সলেস হয়ে যাই আমি। এরপর আর কিছু মনে নেই আমার।

যখন জ্ঞান ফিরে তখন নিজেকে আবিষ্কার করি নিজের ঘরে। ঐ ঘটনার কথা মনে পড়তেই চিৎকার করে কেঁদে উঠি। পাশে মা বসেছিল। আমায় জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন। সান্ত্বনা দিয়ে বলেন,’কাঁদিস না মা। কিছু হয়নি। শান্ত হ। শান্ত হ।’
আমি নিজেকে শান্ত করতে পারছিলাম না। বাচ্চাদের মতো হাউমাউ করে কাঁদছিলাম। আমার বারবার মনে হচ্ছে, ঐ ছেলেগুলো যদি না থাকত তাহলে আমার কী হতো? একথা মনে পড়তেই বাঁধভাঙা কান্নারা আমায় পেয়ে বসে। মা-বাবা অনেক বুঝিয়ে-শুনিয়েও আমার কান্না থামাতে পারে না। কিন্তু কান্নার গতি কিছুটা কমে আসে। মা আমায় বুকে জড়িয়ে ধরে ঘুম পাড়িয়ে দেয়।

সকালে ঘুম ভাঙার পর কিছু্ক্ষণ বিছানায়ই বসে থাকি। কিছুতেই কাল রাতের কথা মাথা থেকে বের করতে পারছি না। রাজ্জাক গিয়ে মাকে ডেকে আনে। মা এসে মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন,’এখন কেমন লাগছে মা?’
আমি কিছু না বলে নিষ্পলকভাবে শুধু চেয়ে রইলাম। কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যেই রুদ্র ঘরে আসে। মাকে জিজ্ঞেস করে,’আপনারা রেডি হন নি এখনো?’
‘আমরা রেডি-ই। তোমার আঙ্কেলও ঘরেই।’ বললেন মা।

রুদ্র এবার আমাকে বলল,’নবনী চলো। তাড়াতাড়ি রেডি হও। ঐ কুত্তার বাচ্চারে জেলের ভাত খাওয়াব।’
আমি এবারও নিরব রইলাম। রুদ্রও আর কিছু বলল না আমায়। ও সোজা বাবার কাছে চলে যায়। আর মা আমায় রেডি করে দেয়। যতবার কাল রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথাটা মাথায় আসছে ততবারই ভয়ে আমার হাত-পা কাঁপছে। কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। বাবা-মা, আমি এবং রুদ্র থানায় গিয়ে কেস করে আসি। স্কুলেও যাই না বেশ ক’দিন। ভয়ে কেমন জানি একদম গুমড়ে গিয়েছি। বান্ধবীরা আসে। সময় দেয়। সাহস জোগায়। শুধু নিজেই পারি না নিজেকে বোঝাতে। আমি জানিও না এই ভয় আমার মন থেকে কবে যাবে অথবা আদৌ যাবে কী-না!

বান্ধবীরা প্রায়ই প্রাইভেট, কোচিং মিস দিয়ে আমার বাসায় এসে পড়ে থাকে। কতবার আমায় স্কুলে নিয়ে যেতে চেয়েছে। আমি যাইনি। সাহস হয়নি আমার। বারবার মনে হয়, যদি আবার এমনকিছু হয়? বাবা-ও অনেকবার চেষ্টা করেছেন। যখন দেখলেন আমার মনের ভীতি একেবারেই কমছে না তখন সময় দিলেন আমায় স্বাভাবিক করতে। মাকে বলতে শুনেছি,’নয়না এখন থেকে নবনীকে সময় দিও। ওর সাথে গল্প করো। আগে মেয়ে স্বাভাবিক হোক। সুস্থ হোক। স্কুলে পড়ে যাওয়া যাবে। ওকে ঠিকমতো খাওয়াবে।’

আমায় স্বাভাবিক করতে চেষ্টার কমতি রাখছে না কেউ। কিন্তু ঐযে ভয় তো আমার মনে চেপে বসেছে। রোজের কাছে শুনেছিলাম সেদিন যেই ছেলেগুলো দেবদূত হয়ে এসেছিল ওরা ছিল বরপক্ষ। বরের বন্ধু এবং কাজিন। ওরা সেই ছেলেটিকে ধরে বেধরম পিটিয়েছে। বিয়ে বাড়ির অনেকের কানে এই ঘটনার কথা চলে গেছে। রুদ্র যখন এসে ওকে দেখে মাথা ঠিক রাখতে পারেনি। এই ছেলেটির নাম তপন। রুদ্রর চরম শত্রু। রুদ্র এসে এমন মাইর শুরু করে যে ছেলেটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। অতিরিক্ত মাইর খেয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছে। ময়মুরুব্বিরা না আটকালে রুদ্র হয়তো তপনকে সেখানেই মেরে ফেলত।
.
বারান্দার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছি। উড়ে যাওয়া পাখির সংখ্যা গোনার চেষ্টা করছি। কখনো পারি তো কখনো আবার গুলিয়ে ফেলছি। দু’সপ্তাহেরও বেশি হবে আমি বাইরে যাই না। বাবা প্রাইভেট টিউটরকে বাড়িতে এসে পড়াতে বললেন। কোচিং, ক্লাসের পড়া বান্ধবীরা বাসায় এসে বুঝিয়ে দিয়ে যেত। এভাবে আর কতদিন চলবে আমার জানা নেই। ইচ্ছে করে মুক্তি পেতে। কিন্তু আমি পারি না। ভয় হয় ভীষণ।

কোথা থেকে তখন রোজ দৌঁড়ে এসে আমায় পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। চমকে গেলেও ওকে দেখে শান্ত হই। ওর পিছু পিছু দেখতে পাই তিথি, লিমা, শান্তা, মৌ, জেরিন, আর রাকাকে। বলে রাখি, আমার বন্দি জীবনে ওরা আমায় অনেকটা সময় দিচ্ছে। রোজের সঙ্গে ওদেরও অনেক ভালো একটা সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে। মৃদু হাসলাম আমি। রোজ বলল,’ঝটপট রেডি হয়ে নাও। আমরা সবাই ঘুরতে যাব।’
‘তোমরা যাও। আমি যাব না।’
‘ইশ! বললেই হলো যাব না? তোর জন্য আজ আমরা কেউ স্কুলে যাইনি। এই দেখ একদম রেডি হয়ে এসেছি। সবাই মিলে আজ প্রচুর ঘুরব। প্রচুর আনন্দ করব।’ বলল তিথি।

আমি হালকা হেসে বললাম,’তোরা ঘুরে আয়।’
রুদ্রকে তখন ঘরে আসতে দেখে অবাক হই। রুদ্রও যাবে নাকি? সে শার্টের হাতা গোছাতে গোছাতে বলে,’পিচ্চি তাড়াতাড়ি রেডি হও। তোমার কোনো বাহানা আমরা কেউ শুনব না।’
আমি এবারও না করলাম। মা এসে আমায় রাজি করায়। বিরাট একটা গ্যাং মিলে আমরা ঘুরতে যাচ্ছি। রুদ্র, অন্তু, কাউসার, ইলিয়াস, রোজ, তিথি, লিমা, শান্তা, মৌ, জেরিন, রাকা, রাজ্জাক, রিশান আর আমি। এতগুলা মানুষ মিলে আমরা কোথায় যাব সেটা এখনও আমার অজানা। একটা মিনি বাস ভাড়া করা হয়েছে। আমি বসেছিলাম তিথির সাথে। রুদ্র তিথিকে বলল,’আপু কিছু মনে না করলে আমি নবনীর সাথে বসি?’

তিথি হেসে বলল,’না ভাইয়া, সমস্যা নেই। বসেন।’
রুদ্র আমার পাশে বসে ইচ্ছে করে কাঁশি দেয়। ‘এহেম, এহেম।’
আমি একবার ওর দিকে তাকিয়ে আবার জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। এতদিন পর বাইরে বের হয়ে একটু ভালো লাগছিল। ভালোমতো নিঃশ্বাস নিতে পারছি।
‘নবনী কী করো?’
রুদ্রর বোকা বোকা কথা শুনে আমি হাসব নাকি কিছু বলব বুঝতে পারছিলাম না। কথা বলার জন্যই হয়তো এসব বলছে।
‘কথা বলবে না পিচ্চি?’ জিজ্ঞেস করল রুদ্র। আমি বললাম,’বলেন। শুনছি।’
‘শুধু শুনলে তো হবে না। কথা বলতে হবে।’
‘আচ্ছা।’
‘কেমন আছো?’
‘ভালো। আপনি?’
‘কত ভালো?’
‘এমন বোকা বোকা প্রশ্ন করছেন কেন?’
‘আমি তো সেই হাসি-খুশি পিচ্চিটাকে দেখতে চাচ্ছি। কিন্তু পিচ্চিটা হাসে না কেন? এমন মনমরা হয়ে রয়েছে কেন?’
‘ভালো লাগছে না।’

রুদ্র নিজেও এবার চুপ হয়ে গেল। বাকিরা গান গাওয়া শুরু করেছে। সমস্বরে গান গাচ্ছে সবাই। মনে হচ্ছে আমরা কোনো পিকনিকে যাচ্ছি। আমারও ইচ্ছে করছে ওদের সাথে যোগ হই। কিন্তু কোথায় যেন একটা দ্বিধা! অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা বিশাল একটা নদীর সামনে গিয়ে পৌঁছাই। নদীর পাড়ে আসার কারণ কী বুঝলাম না। তবে হ্যাঁ, নদী জায়গাটা আমার পছন্দ। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে নৌকায় ঘুরতে। এজন্যই কি তাহলে এখানে আসা হয়েছে? সামনে এগিয়ে দেখলাম রুদ্র নাকি আগে থেকেই নৌকা ভাড়া করে রেখেছে। সবাই ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উঠলেও আমি আর রুদ্র উঠলাম ডিঙি নৌকায়। এই নৌকায় চড়তেই আমি পছন্দ করি। আমার পছন্দ অনুযায়ীই কি রুদ্র সব করছে?

কোনো প্রশ্ন করিনি কাউকে। চুপচাপ নৌকায় উঠে মাঝখানে বিছানো পাটির ওপর বসে পড়ি। নৌকার এক মাথায় মাঝি এবং অন্য মাথায় রুদ্র। মাঝি গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে বৈঠা চালাচ্ছে নদীর স্রোতে। একটু এদিক-সেদিক হেলতে-দুলতে নৌকা বিরামহীনভাবে চলছে। রুদ্র আমায় অবাক করে দিয়ে একটা গান ধরে।

‘Aasman ke parre ek jahaan hai kahin
Jhooth sach ka waha qyeda hi nahi
Roshni mein waha ki alag noor hai
Saaye jismon se aage jahaan jaate hai
Chal wahan jaate hain
Chal wahan jaate hain
Pyaar karne chalo
Hum wahan jaate hain..’

রুদ্রের গানের সুরে ঝলমলে করা রোদ মেঘের আড়ালে লুকিয়ে গিয়ে ঘাপটি মেরে থাকে। নীল আকাশে এখন উড়ো মেঘের ছড়াছড়ি। বৃষ্টির মাধ্যমেই কি আকাশ রুদ্রর গানকে সমভর্থ্যনা জানাচ্ছে? তাই, হবে হয়তো। মাঝি বলল,’বৃষ্টি হইব মনে হইতাছে। নৌকা কি পাড়ে নিমু?’
‘না। আপনি নৌকা চালান।’ বলল রুদ্র।
এবারে আর আমি চুপ করে থাকতে পারলাম না। ভয়ে ভয়ে বললাম,’বেশি বৃষ্টি হলে যদি নৌকা উল্টে যায়? যদি পড়ে যাই? আমি কিন্তু সাঁতার পারি না।’

রুদ্র হেসে ফেলে আমার কথায়। ওর জায়গা ছেড়ে আমার পাশে এসে বসে।
‘আমি থাকতে তোমার কোনো ভয় নেই।’
আমি সরাসরি রুদ্রর চোখের দিকে তাকাই। ও চোখে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকার সাধ্যি নেই আমার। অন্যদিকে চোখ ফেরানোর সাথে সাথে ঝুপঝুপ করে বৃষ্টি পড়া শুরু করে। প্রথমে ছোটো ছোটো ফোঁটায় আর এখন বড়ো বড়ো ফোঁটায়। প্রবল বর্ষণ হচ্ছে। নদীতে পড়া প্রতিটি বৃষ্টির ফোঁটা বিন্দু সৃষ্টি করছে। একটা, দুইটা করে অসংখ্য বিন্দুরেখা। একটা আরেকটার সঙ্গে মিলিয়ে যাচ্ছে। এদিকে আমরা তিনজনও ভিজছি। রুদ্র আমার হাত ধরে বলে,’ভয় নেই। আমি আছি।’

কিছু্ক্ষণ মৌন থেকে নিজেই বলল,’আমি রিলেশন করি না, কারো সাথে মিশি না এজন্যই। আমার অনেক শত্রু রয়েছে। এরা আমার ক্ষতি করতে না পারলেও চেষ্টা করে আমার কাছের মানুষদের ক্ষতি করার। তোমার সঙ্গে আমার ভালোই মেলামেশা হয়েছে। শত্রুরা ফলোও করেছে। তপনও এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে। আমি নিজে থেকে না বললে, যেই বলুক না কেন তাদের কথা বিশ্বাস করবে না। তোমায় ডাকার হলে আমি নিজেই ডাকব। নিজেই আসব। যখন শত্রুরা তোমায় টার্গেট করেই নিয়েছে তখন আর তোমায় আমি ছাড়ছি না। আমি ছাড়ব না তোমায়। তোমার সাথে আছি। তোমার পাশে আছি।’

রুদ্রর কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথে নৌকা দুলে ওঠে। ভয়ে রুদ্রর হাত খাঁমচে ধরি আমি। চোখমুখ বন্ধ করে বলি,’পড়ে যাব, পড়ে যাব!’
রুদ্র হেসে ফেলে। আমার দু’হাত ধরে বলে,’আমি আছি তো!’
‘ভয় করছে।’
‘লিমা বলেছে নৌকায় উঠলে নাকি পানিতে পা ভেজাও? পা নামাও।’
‘না, না। অসম্ভব।’
‘বললাম তো কিছু হবে না।’
রুদ্র নিজেই আমার পা পানির মধ্যে নামিয়ে দেয়। এবার আমি রুদ্রকে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে বলি,’একবার পড়ে গেলে মরেই যাব আমি!’
রুদ্র মুগ্ধ করা হাসি হেসে বলে,
‘Seenein se tum mere aake lagg jaao na
Darte ho kyun zara paas toh aao na..
Dhun meri dhadkano ki suno
Chal wahan jaate hain
Chal wahan jaate hain
Pyaar karne chalo
Hum wahan jaate hain..
Chal jaate hai..
Koi subha wahan raat se na mile
Ud ke waha chalo aao tum hum chale..
Chal jaate hai।’

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে