সত্য ঘটনা অবলম্বনে | আমার অধিকার তুমি পর্ব : ১১

0
2896

সত্য ঘটনা অবলম্বনে
আমার অধিকার তুমি
পর্ব : ১১
লেখিকা: Gangster queen(ছদ্মনাম)

সকালে ঘুম থেকে উঠে কোন রকম নাস্তা খেয়ে সবার সাথে কথা বললাম সবাই খুব কান্নাকাটি করলাম। আমার কান্না করতে করতে খুবই খারাপ অবস্থা। এত কষ্ট কেন হচ্ছে আমার সবাইকে ছেড়ে চলে যাব সেইজন্য ।
১৯টি বছরের আপন মানুষ গুলোকে ছেড়েএক অন্য দুনিয়াতে পা রাখব আমি আজকে ।যদিও বা উৎসব আর ওর পরিবার সবাই আমাকে খুবই ভালোবাসে ।কিন্তু তাও নিজের আপন মানুষ গুলোকে ছেড়ে থাকা অনেক কষ্টের শুধু মেয়েরাই জানে সেই কষ্টের কথা। (শ্রাবণী মনে মনে মন খারাপ করে)

আপু তোমায় ছাড়া আমি কিভাবে থাকবো আমার তো খুবই কষ্ট হচ্ছে সেই ছোট্টবেলা থেকে আমরা দুজন একসাথে ।আমি পারবো না আপু তুমি প্লিজ যেওনা। ভাইয়াকে বলো না আমরা একসাথে থাকব (প্রিয়া কান্না করতে করতে)

সবাই ওর কথা শুনে আবার কান্না করে দিল। সবাই এখন আমাকে রেখে ওকে বোঝানো শুরু করছে ।মেয়েটার সত্যিই খুব কান্না করছে আমাকে ছেড়ে থাকেনি তো কোনদিন। এই বোনু তুই এমন করলে আমি কিভাবে থাকবো বলআমিও যে তোদের ছাড়া যেতে চাই না কিন্তু তোরাই তো বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লাগলি(শ্রাবণী কান্না করতে করতে)

হয়েছে হয়েছে এখন সবাই থাম তো। সকাল সাড়ে দশটা বাজে জাও শ্রাবণী রেডি হয়ে নাও। ওরা আবার দুপুর তাড়াতাড়ি চলে আসবে (মামি সবাই কান্না থামিয়ে)

তারপরে আমাকে রেডি করানোর জন্য পালার থেকে লোক আনা হয়েছে ।তাদের কাছে রেডি হতে গেলাম আমাদের বিয়েটা বৃহস্পতিবার হচ্ছে। কারণ বৌভাত শুক্রবার করবে। উনারা দুপুর 1 টা নাগাদ চলে আসছিল। তারপর এইখানে মসজিদে সবাই নামাজ পড়ে নিল। যেহেতু আমাদের আগেই বিয়ে হয়ে গেছে তো সবাই দুপুরের খাবার খেয়ে আমাকেও উৎসবের হাতে তুলে দেওয়া হল ।সবাই কান্নাকাটি করলাম অনেক। আর আমি কান্না করতে করতে সেন্সলেস হয়ে যাই তারপরে আমার আর কিছু মনে নাই। (শ্রাবণী)

এই পরী পরী উঠো পাখি। রাত আটটা বাজে তো খেতে হবে তো খেয়ে না হয় আবার ঘুমিও (উৎসব)

ওনার কথায় আস্তে চোখ খুললাম। আমি পুরাই অবাক আমি ফুলে ভরা সাজানো একটা রুমে শুয়ে আছি। এটাই মনে হয় আমাদের রুম আমি তো কান্না করছিলাম তারপরে কি হলো। আমি কোথায় উৎসব? (শ্রাবণী)

আমার পরী টা আমার রাজত্ব চলে এসেছে ।তুমি জানোনা আমার পরীকে আমার পরী বউকে আমি আমার রাজত্বে নিয়ে এসেছি। আর এটা তোমার রাজত্বের রাজা ও তোমার রুম (উৎসব মুচকি হেসে)

কিন্তু আমি তো কান্না করছিলাম হঠাৎ কি হল? (শ্রাবণী)

আমার পরী বউটা কান্না করতে করতে সেন্সলেস হয়ে গেছে।তাই তাকে কোলে করে নিয়ে আসছি আর এখন বাজে রাত আটটা 4 ঘন্টা ধরে তুমি ঘুমাচ্ছ ভাবা যায় (উৎসব গালে হাত দিয়ে বসে)

কি ইইইইইইইই। এতক্ষণ ধরে ডাকেননি কেন?(শ্রাবণী উৎকণ্ঠ হয়ে)

না রাতে তো জেগে থাকতে হবে ।তাই ভাবলাম এখন একটু রেস্ট নেওয়াই ভালো। যাতে আমার সাথে রাত জাগার সময় তোমার কোনো বাহানা না শুনতে হয়(উৎসব চোখ টিপ দিয়ে)

আপনি কি জানেন আপনি একটা অসভ্য বজ্জাত ব্যাটা (শ্রাবণী মিশ্রিত কন্ঠে)

এই পরী আমি তো তোমারই ব্যাটা অসভ্য হোক বা বজ্জাত । আগে ফ্রেশ হও তারপরে রাতের খাবার খাবা চল চল চল জলদি জলদি।(উৎসব তারা দিয়ে)

তারা সবাই আমার সম্পর্কে কি ভাবল। আর আমাকে বরণ না করে আনা হলো। এই প্রথম এই বাড়িতে বউ হিসেবে আসলাম তাও বরণ ছাড়া (শ্রাবণী মন খারাপ করে)

আরে আমার পরীটা বরণ করছে তুমি আমার কুলে ছিলা।বরণ করলো দেন আমি তোমাকে এখানে নিয়ে এসে শুইয়ে দিলাম। আছা এখন যাও ফ্রেশ হও দুপুরে তো তেমন ভাল মত খেতে পারোনি। এখন আমি খাবারটা নিয়ে আসবো নাকি সবার সাথে যেয়ে খাবা?(উৎসব)

না ফ্রেশ হয়ে সবার সাথে যেয়ে খাব।প্রথম দিনই নতুন বউ ঘরে বসে পটের বিবির মতো খাবে কেমন দেখায় না ।আর তাছাড়া 15 দিনে তো এখানে আছি ,তারপর তো ছয় মাসের জন্য আমাকে দূর দেশে নিয়ে যাবেন সবার সাথে একটু আনন্দ মজা করে যাই(শ্রাবণী মন খারাপ করে)

পরী আমার এত মন খারাপ করতে হবে না আমি থাকবো তো এখন জলদি এসো নাকি আমি হেল্প করব (উৎসব চোখ টিপ দিয়ে)

অসভ্য লোক একটা সব সময় খালি ফাজলামি (শ্রাবণী দাঁতে দাঁত চেপে)
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
ঠিক আছে আমি গয়নাগুলো খুলি মাথায় যে এতগুলা ক্লিপ লাগাইছে ওগুলো খুলে দেই ।দেন তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও। আর এখন গোসল করার কোন দরকার নেই। জাস্ট মেকআপ তুলেই হবে।(উৎসব ক্লিপ খুলতে খুলতে)

গয়নাগাটি ক্লিপ খুলে যেয়ে মেকাপ ধুয়ে ফেললাম। তারপরে এসে লাল কালার একটা কাপড় পড়লাম। তারপরে নিচে গেলাম।সবার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে সবাই মিলে রাতের খাবার খেয়ে নিলাম। আম্মু তো সেই জোরজবস্তি করে অনেকগুলা খাওয়াইছে।
তার কথা আমি নাকি খুব সুখায় গেছি এখন তিনি একটা গোলুমোলু বউ বানাইয়া ছাড়বে আমাকে।

আমি খুবই ভাগ্যবতী এমন একটা স্বামী এবং এমন একটা শ্বশুরবাড়ি পেয়ে। তারপর সবাই যে যার রুমে ঘুমাতে চলে গেল। আর যেহেতু কালকে বৌভাত ছেলেরা সবাই রান্নার ঐদিকের কাজে চলে গেল। আমি আর উনি উপরে চলে গেলাম।

আচ্ছা একটা কথা বলার ছিল আপনাদের বাড়ি নাকি ৮ তালা। আপনারা কয় তলায় থাকেন আর বাড়ির ফ্লাটের মধ্যে এরকম ডুপ্লেক্স সিস্টেম করেছেন আমার খুবই পছন্দ হয়েছে।(শ্রাবণী খাটে বসে)

আমাদের তিনতালা- চারতালা।তিন তালার মধ্যেই সিঁড়ি দিয়ে ডুপ্লেক্স সিস্টেমের করেছি। অস্ট্রেলিয়াতে এই টাইপের বাড়িগুলো দেখা যায় আমার ডিজাইন গুলো খুব ভালো লাগে। সেজন্য আমাদের টাও এভাবে করা তুমি বাইরের সিঁড়ি দিয়ে চলে যেতে পারবে চারতলার রুমে আবার এই ফ্ল্যাটের মধ্যে সিঁড়ি দিয়ে চারতলায় যাওয়া যায়। আমরা এখন চার তালাই আছি তিনতলায় ছোট বাবা -ছোট মা আর আম্মু থাকে। আর চার তলায় আমি আর নির্জয় (চাচাতো ভাই) থাকি। আর বাকি তিন চারটা রুম সবগুলো গেস্টরুম হিসেবে রাখছি। (উৎসব শ্রাবনীর পাশে বসে)

আচ্ছা নির্জয় কে দেখলাম না যে?(শ্রাবণী)

অত অস্ট্রেলিয়া পড়ালেখা করছে ওর বয়স 18 চলছে। চিঠি পাঠায় মাঝে মধ্যে আবার ফোনেও মাঝে মধ্যে কথা হয়। তোমার সাথে কথা বলিয়ে দেবো কোন একদিন। এখন সবার কথা বাদ এখন আমাদের দুজনের কথা হবে আমার আর তোমার ভালোবাসার কথা হবে। আর আমাদের দ্বিতীয় বাসর হবে(উৎসব শ্রাবণের কানে ফিসফিসিয়ে)

আপনার মাথা আমার মুন্ডু হবে (শ্রাবণী)

চলো চলো তুমি আর আমি নফল নামাজ টা সেরে নেই তারপরে কি হবে দেখা যাবে ।সেটা তোমাকে না ভাবলেও চলবে সেইটা আমি ভাবার জন্য আছি না(উৎসব)

তারপরে দুজনে নফল নামাজ পরলাম। (শ্রাবণী)

(#তারপরে_অনেক_কিছু_হইছে_আমার_বলতে_লজ্জা_লাগে__আপনারা_বুঝে_নিয়েন)

ফজরের আজান শুনে উঠে আমি ফ্রেশ হয়ে উনাকে উঠিয়ে ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়তে যেতে বললাম। উনি আমাকে 5 মিনিট বসতে বলে ফ্রেশ হয়ে আসলো। তারপর দুজনে একসাথে ফজরের নামাজ আদায় করলাম। আমি বের হব এমন সময় (শ্রাবণী)

পরী কই যাও। তোমায় যেতে বলছি এখন আমরা আরো দুই ঘন্টা ঘুমাবো তারপরে বের হবা বুঝতে পারছ।(উৎসব শ্রাবনীর হাত ধরে)

সবাই কি মনে করবে বলেন তো আপনি ঘুমান আমি যাই (শ্রাবণী ছোটার চেষ্টা করে)

তুমি চুপচাপ এখন আমার সাথে ঘুমাও তো ।এত কথা বলো না ঘুম পাইছে ঘুমাতে দাও (উৎসব)

তার কথার আর অনর হয় না। এরপর আর কী উনি আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে বাট আমার তো ঘুম আসছেনা কি করবো। উনার গালের চাপ দাড়ি গুলো আমার সেই লাগে। সেগুলো নিয়ে খেলা করা শুরু করলাম। খেলতে খেলতে আমিও ঘুমিয়ে গেলাম ঘুম ভাঙলো মিতুর ডাকে (শ্রাবণী)

বড় ভাবি বড় ভাবি ঘুম থেকে ওঠো আর কত ঘুমাবা একটু বলো না (মিতু মজা করে)

উনাকে ছাড়িয়ে গেট খুললাম তা বড় ভাবি বলছিস কেন সেইটা একটু বলতো বাঁদর মাইয়া( শ্রাবণী মিতুর কান ধরে)

বনু বনু ছাড় প্লিজ সরি আর বলব না প্রথমদিনই এত অত্যাচার। ভাইয়ার কাছে কিন্তু বিচার দিব। তুমি আমার ভাসুরের বউ তোমারে আমি ভাবি বলবো নাতো কি বলবো (মিতু অভিমানের সুরে)

তোর ভাসুর আগে না আমি আগে। আমি তোর বান্ধবী ক্লাস সিক্স থেকে ভাসুর হয়েছে 15 দিন ধরে। বুঝছো আমরা দোস্ত দোস্ত থাকব কোন ভাবি টাবি চলবে না (শ্রাবণী মিতুকে জড়িয়ে ধরে)

ঠিক আছে চল নাস্তা খাবি সবাই ডাকছে তো (মিতু)

তুই যা আমি তোর ভাইয়াকে নিয়ে আসছি (শ্রাবণী)

আচ্ছা জলদি আয় আমি নিচে গেলাম (মিতু)

আমি অনাকে দুই-তিনবার ডাকলাম। কিন্তু উনি উঠলো না তাই শাড়ির আঁচল কে চিকন করে উনার কানের মধ্যে সুড়সুড়ি দিলাম। হঠাৎ করে উনি আমার হাত ধরে আমাকে বিছানায় ফেলে আমার উপর উঠে বসলো (শ্রাবণী)

তা আমার পরীটার কি রোমান্সের খুব শখ জাগছে। এইভাবে ঘুম ভাঙ্গাআছো যে। (উৎসব দুই হাতে ধরে)

একদমই না রোমান্সের গুষ্টি কিলাই ।আমার ক্ষুধা লাগছে আমি এখন ব্রেকফাস্ট করবো জলদি ওঠেন ফ্রেশ হয়ে নিচে চলেন(শ্রাবণী ধাক্কাতে ধাক্কাতে)

আগে বলবা না তোমার ক্ষুধা লাগছে আচ্ছা পাঁচ মিনিট ওয়েট কর আমি মুখ ধুয়ে আসছি (উৎসব)

তারপরে উনি ফ্রেশ হয়ে আসলে আমরা দুজনে একসাথে ব্রেকফাস্ট করতে গেলাম। ব্রেকফাস্ট এরপর আমাকে বৌভাতের জন্য সাজানো হলো ।সব আত্মীয়স্বজনরা আসতে শুরু করেছে। আমাদের বাড়ি থেকেও সবাই চলে আসলো।সবাইকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেবো দেবো ভাব কিন্তু উৎসবের জন্য কান্না টাও করতে পারিনা। (শ্রাবণী)

পরী তুমি এখন যদি কাঁদছো না তুলে একটা আছাড় মারবো একটু পরে তো ঐ বাড়ি যাবে তো কান্নার কি হল (উৎসব শ্রাবণীর কানে ফিসফিসিয়ে)

আচ্ছা আর কান্না করব না সব সময় এত ভয় দেখান কেন আপনি (শ্রাবণী)

তুমি সব সময় এত কান্না করো কেন তুমি বুঝনা আমি তোমার কান্না সহ্য করতে পারিনা (উৎসব দাঁতে দাঁত চেপে)

আচ্ছা সরি আর কান্না করব না (শ্রাবণী মুচকি হেসে)

মনে থাকে যেন (উৎসব বলে চলে গেল)

তারপরে সবাই দুপুরে খেয়ে ওই বাড়ি গেলাম। ওই বাড়িতে দুইদিন থেকে খুবই মজা করেছি ঘুরেছি অনেক। আর উৎসব জামাই আদর পেতে পেতে অবস্থা খারাপ। বেচারা না পারে কিছু বলতে না পারে কিছু মানা করতে।
তারপর আমরা বাড়ি চলে আসলাম ঐদিন খুব কান্নাকাটি করলাম উৎসব পারে না আমাকে একটা আছাড় মারে। ও আমার কান্না সহ্য করতে পারে না তাই একটা ঝাড়ি দিয়ে থামিয়ে দিল (শ্রাবণী)

তুমি কান্না থামাবে প্লিজ (উৎসব দাঁতে দাঁত চেপে)

তারপর ও আর আমি বাড়ি চলে আসলাম।

এই দশদিন খুব ভালো কেটেছে আমাদের ।খুব মজা করেছি ঘুরেছি ফিরেছি সবার সাথে খুব আনন্দ করেছি। আমরা আমেরিকা চলে যাব দুইদিন পরে। যদিও ছয় মাসের জন্য যাব কিন্তু আমি কোনদিন একলা থাকি নি তো। ও থাকবে তাও একলা একলাই তো থাকতে হবে। রুমে বসে বসে গুলো ভাবছিলাম। ওএকটু কাজের জন্য বাইরে গেছে বলেছে দুপুরের আগে চলে আসবে (শ্রাবণী)

হঠাৎ করে আমার চোখ ধরল কেউ হঠাৎ আমার চোখ ধরলা কেন কি হয়েছে বল না এভাবে কই নিয়ে যাচ্ছো বোলবা তো?(শ্রাবণী)

আরেকটু আস্তে যাও এইতো চলে আসছি সারপ্রাইজড(উৎসব চোখ ছেড়ে দিয়ে)

মামা,মামী, বনু,চাচ্চু, চাচি মা রিংকি তোমরা সবাই হঠাৎ! (শ্রাবণী অবাক হয়ে)

দুইদিন পরে আমেরিকা চলে যাচ্ছিস। তাই উৎসবে আমাদের নিয়ে আসলো। এই দুইদিন সবাই একসাথে থাকবো সেজন্য। বললাম আমাদের বাড়িতে যেতে কিন্তু ওর এক কথা সবাই এই বাড়িতে থাকব দুইদিন খুব মজা করবো ঘুরবো সেজন্য আমাদের আজকে সকালে যেয়ে নিয়ে আসলো।(চাচ্চু ও মামা)

সবাইকে পেয়ে আমি খুব খুশি সবার সাথে সারাদিন গল্প করলাম খুব আনন্দে ছিলাম রাতে খাবার খেয়ে ঘুমাতে যাওয়ার সময়। Thanks a lot and I love you very much(শ্রাবণী উৎসব কে জড়িয়ে ধরে)

I love you 2 my pori. কিন্তু thanks কি জন্য? (উৎসব জড়িয়ে ধরে)

সবাইকে নিয়ে আসার জন্য আমার আর আনন্দকে দ্বিগুণ করার জন্য থ্যাংক ইউ সো মাচ। (শ্রাবণী)

এটে থ্যাংকস দেওয়ার কি আছে আমার বউ তুমি।
তুমি কিসে খুশি সেই দিকটা তো আমারই দেখতে হবে ।তাই নয় কি। এখন চলো ঘুমাই সকালে সবাই ঘুরতে যাব(উৎসব)

ঠিক আছে তারপর দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লাম। এই দুই দিন আমরা সবাই খুব মজা করেছি, অনেক জায়গায় ঘুরেছি ,সবাই মিলে শপিং করেছি ,খাওয়া-দাওয়া সব কিছু মিলে আমিতো প্রায় ভুলতে বসেছি আমি আর একদিন পরে আমেরিকা চলে যাব। রাতে ঘুমানোর সময় হঠাৎ করে উনাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম (শ্রাবণী কান্না করতে করতে)

কি কি হয়েছে পরী এমনভাবে কান্না করছো কেন কিছু কি হয়েছে প্লিজ আমায় খুলে বল কান্না থামাও প্লিজ (উৎসব উদ্বিগ্ন হয়ে)

আমরা তো পরশুদিন সকালে চলে যাব তাই খুব কান্না পাচ্ছে আমার। এই প্রথম আমি এত দূরে কোথাও যাব খুব ভয় লাগছে। (শ্রাবণী কান্নাজড়িত কণ্ঠে)

এজন্য কান্না করতে হবে তোমার ।তোমাকে কতদিন বলেছি আমার সামনে কান্না করবা না তুমি ।তোমার কান্না আমি সহ্য করতে পারিনা বুঝনা তুমি।#আমার_অধিকার_তুমি তোমার সুখ তোমার দুঃখ সব আমার অধিকার ।তুমি কান্না করতে পারবা না আমার সামনে বুঝতে পারছো তুমি ।আরেকবার পেঁপে করবে তো একটা আছাড় মারবো বলে দিচ্ছি চুপচাপ ঘুমাও (উৎসব দাঁতে দাঁত চেপে)

ঝাড়ি খেয়ে তাড়াতাড়ি কান্না মুছে ঘুমিয়ে পড়লাম না হলে বলা যায় না সত্যিই আছাড় মেরে বসবে বেটা বজ্জাত (শ্রাবণী মনে মনে)

বোকা হয়ে গেলে তাহলে এখন ঘুমাও প্লিজ (উৎসব)

আপনার জন্য তো দেখছি মনে মনে কথা বলাও যাবে না।(শ্রাবণী অবাক হয়ে)

তুমি চোখ বন্ধ করবা (উৎসব)

আপনি আবার আমার সাথে যে খারাপ ব্যবহার করছেন। আমি যাব না আপনার সাথে অসভ্য বজ্জাত লোক কোথাকার(শ্রাবণী অভিমানের সুরে)

বুঝেছি তোমাকে চুপ করানো যাবে না এর টিটমেন্ট কিন্তু আমার কাছে আছে তুমি কী চাচ্ছো সেইটা (উৎসব)

নআাআআআআআআআ। এইতো আমি ঘুমিয়ে গেছি গুড নাইট বলে উনারর বুকে মুখ গুঁজলাম।উনার টিটমেন্ট তো খালি রোমান্স আর রোমান্স আল্লায় জানে ওই দেশে একলা পাইলে কিনা করে সারাদিন। (শ্রাবণী মনে মনে)

আমাদের আমেরিকা যাওয়ার দিন সবাই আমাদের এয়ারপোর্ট দিতে আসলো ।সবাই খুব কান্নাকাটি করলাম তারপর উৎসবের ঝাড়ি তে আবার চুপ আমি। তারপরে দুজনে পাড়ি জমালাম ভিনদেশে। যেখানে সবাই অন্যরকম জানিনা সেখানে কিভাবে থাকবো ।ভালোবাসার মানুষটির সাথে হাত ধরে সব জায়গায় থাকা যায় ।কিন্তু আমি আমার একাকিত্বকে দূর করবো কিভাবে।উনি ওনার বিজনেস এর কাজে যাচ্ছে তার মানে উনি সারাদিন অফিসেই থাকবে ।আমি ঘরে একলা একলা কি করবো সেটা ভেবে এখন থেকেই আমার মনের অবস্থা খারাপ দেখা যাক কি হয়।

আমি আর উনি অনার অফিসের এমপ্লয়ীদের যেই অ্যাপার্টমেন্ট গুলো দেওয়া হয় তার পাশেই একটা বাংলো নিয়ে থাকবো।এমপ্লয়ীদের মধ্যে কিছু বাঙালি আছে এটা শুনে আমার খুবই ভাল লাগল তারা নাকি ফ্যামিলি নিয়ে এখানে থাকে। বাংলা তে গিয়ে আমি পুরাই অবাক এত সুন্দর বাড়ি আর এই দেশটা খুবই সুন্দর একটা দেশ আমার খুবই ভালো লেগেছে। খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাস্তাঘাট কত বড় বড় বিল্ডিং। বাংলো কেয়ারটেকার বাংলো পরিষ্কার করে রেখে গেছে। তাই যেয়ে ফ্রেশ হয়ে কিছু খাবার খেয়ে নিলাম এগুলো‌ আমরা আসার সময় নিয়ে এসেছি এইখানের একটা রেস্টুরেন্ট থেকে। তারপর একে দুজন একটু রেস্ট নিলাম।পরের দিন থেকে শুরু হয়ে গেল উনার ব্যস্ত লাইফ আমার একাকীত্ব ।অতটা ফিল হয় না কারণ পাশেই একজন বাঙালি ভাবি আছে উনি বাংলাদেশের চিটাগাং থেকে ওনার হাজবেন্ডের সাথে এখানে এসেছে। তাদের একটা মেয়ে বেবি আছে।ঐ ভাইয়াটা অফিস চলে গেলে উৎসব অফিস চলে গেলে আমি ভাবি আর রামিসা (মেয়েটা) খেলাধুলা করি রামিসা খুবই ছোট চার বছর বয়স। গল্প করি আড্ডা দেই এভাবে আমাদের এক মাস চলে গেল। (শ্রাবণী)

দুজনে মিলে ব্রেকফাস্ট করছিলাম এমন সময় আমার কেমন যেন লাগতে লাগল। একটু পরে অফিস চলে যাবে ওকে এখন বলা যাবেনা ।তাহলে খুব টেনসনে থাকবে ।যদি শরীর বেশি খারাপ লাগে বিকালে ওকে বলবো।(শ্রাবণী মনে মনে)

আমার পরীটার কি খুব অসুবিধা হয় একলা ।এইত আর 15 টা দিন পরই তারপর এত ব্যস্ত থাকবো না ।এখন একটুও নতুন আসছি তো কাজগুলোকে গুছিয়ে নিতে একটু টাইম লাগবে । 15 দিন পরে আমরা এখানে ঘুরে বেড়াবো ঠিক আছে মন খারাপ করে থেকো না আমি এখন আসি তাহলে।(উৎসব শ্রাবনীর কপালে কিস করে বেরিয়ে গেল অফিস)

এতক্ষণ বমি টাকে খুব কষ্টে আটকে রাখলাম এখন পরে বমি টা করে দিলাম। ভাবি আসলেই ব্যাপারটা জানালে ভাবি আমাকে এমন একটা কথা বলল সেটা শুনে আমি একটু শকড। তাও আমি শুরুতে ভাবিকে নিয়ে সামনের একটা ক্লিনিকে গেলাম। কালকে রিপোর্ট আসবে (শ্রাবণী)
*****************(চলবে)*******************

আগামী পর্বে শেষ করে দেব কী? আপনাদের গল্পটা কেমন লাগছে সেটা কমেন্ট বক্সে জানাবেন প্লিজ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে