শুধু তোমায় ঘিরে পর্ব-০৮ এবং শেষ পর্ব

0
1958

#শুধু_তোমায়_ঘিরে💞
#Writer_Nondini_Nila
#Last_Part

চোখ খুলে নিজেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় একটা অন্ধকার রুমে পেলাম। এত শক্ত করে হাত বেঁধেছে যে প্রতিটা শিরায় শিরায় ব্যথা করছে। কিছু আমার মাথাই ঢুকছে আমাকে কে এখানে নিয়ে এলো?আস্তে আস্তে মনে পড়লো তখনকার কথা তাহলে সে আমাদের শত্রু ছিল।
কিন্তু বাসায় তো গার্ড এর অভাব নেই তাদের মাঝে আমাকে ধরে আনলো কিভাবে। এখন কি হবে আমি এখান থেকে মুক্ত হব কিভাবে?
আমি নিজের হাত নিজে ছড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু পারছিনা শক্ত কিছু দিয়ে বেঁধে রেখেছে ছোটাতে গিয়ে আরও হাত জ্বলছে। আমি ছড়ানোর চেষ্টা বাদ দিলাম মুখের পটটি টা খোলার চেষ্টা করছি। তখন দরজা খুলে কেউ বের হল অন্ধকারে সেই কালো লোকটাকে দেখতে পেলাম।তার সাথে আর একটা লোক এসেছে ফর্সা করে তাদের তাকে আমি চমকে ওঠে কারণ সে দেখতে একদম মাহের এর মতো। সে আমার সামনে এসে বিচ্ছিরি রকমের হাসি দিয়ে বললো কি ব্যাপার ম্যাডামের দেখছি জ্ঞান ফিরেছে।
বলে আমার একদম কাছে এসে বলল,
বাহ মাহেরের পছন্দতো ভেরি নাইস। কি হট এমন মাল পেল কোথায়?তাইতো বলি যে কিনা মেয়েদের সহ্য করতে পারত না সে একটা মেয়ের প্রেমে পড়ে তাকে একদম বিয়ে করে ফেলল।
ছেলেটা বিশ্রী ভাবে কথা বলছে একদম সহ্য হচ্ছে না আমার কথা বলতে হুট করে আমার হাত স্পর্শ করল, আমি চমকে হাত সরানোর চেষ্টা করলাম।
মত মুখ করে লোটটার দিকে তাকিয়ে আছে। লোকটা স্পর্শ করতে গিয়েও করল না তারপরে বলল,
সো সুইট সো হট বেবি তোমাকে এক রাতের জন্য হলেও আমার চাই।
বলে আমার গাল টেনে ধরে অন্যদিকে চলে গিয়ে কাউকে ফোন দিলো বুঝতে পারলাম মাহের কে ফোন দিয়েছে।
ফোন দিয়ে বলে উঠলো,
মাহের তুই যদি তোর বউকে অক্ষত চাস তাহলে আমার পেনড্রাইভ আমার লোকজনের কাছে দিয়ে দে। না হলে তার বউয়ের এমন হাল করব তুই ওর দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে যাবি।
ওপাশ থেকে মাহির কি বললে আমি শুনতে পেলাম না তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হলো। লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
মাহের তোর সর্বনাশ করার অস্ত্র আমি পেয়ে গেছি এবার তো এমন হাল করবো আমি শুধু দেখতে থাক।
এদিকে মাহের আশার দিয়ে নিজের ফোনটা ভেঙে ফেলল আমি ওর শরীর কাঁপছে। চিৎকার করে বলতে লাগল কু* এত বড় সাহস ও আমার কলিজায় হাত দিয়েছে ওকে আমি টুকরো টুকরো করে কাটবো।
রুস্তম এগিয়ে এসে বলল স্যার এত হাইফাই হবেন না। মাথা ঠান্ডা করুন ম্যাডাম কিন্তু ওদের কাছে বন্দী আমাদের যা করতে হবে সাবধানে।
কিন্তু মাহের নিজেকে ঠান্ডা করতে পারছে না কি করবে ভেবে পাচ্ছেনা ও লোক লাগিয়েছে যেখানে থাকতে পারে কিন্তু পারছে না।
চোখ বন্ধ করে নিজের পিয়সির মুখটা দেখতে পেল। কয়েকদিন ধরে ওর সাথে কথা বলছিল না আজকে সে দূরে দুই হাতে মাথা চেপে ধরে চিৎকার করে উঠল।
সারাটা রাত চলে গেলো ছোঁয়া চেষ্টা করো নিজেকে ছাড়াতে পারল না শুধু আল্লাহই ডাকছে আর বলছে মাহের আপনি তাড়াতাড়ি চলে আসেন আমাকে মুক্ত করুন।
মাহের সিদ্ধান্ত নেয় পেনড্রাইভ ফেরত দিবে।কিন্তু তখনই আর একটা কথা মাথায় আসার পর নিজের দলবল নিয়ে সেদিকেই অগ্রসর হতে থাকে। ওর ধারণাই ঠিক ছোয়ার খোঁজ পেয়ে যায়
নিহাল আরাম সে আরেক পাশে বসে ড্রিঙ্ক করছে।ওরা যে রুমে বসে ড্রিংস করছে তার পাশে রুমে ছোয়াকে বন্দি করেছে। ও তো নিশ্চিন্তে বসে আছে যে মাহি নিজের ভালোবাসার মানুষকে না পেয়ে পেনড্রাইভ দিতে রাজি হয়ে যাবে অবশ্যই ফেরত দিতে রাজি হয়ে যাবে আর তার পর ও নিজের কথা রাখবে না ওর ভালবাসার মানুষ কে ও ভোগ করে ছাড়বে।
মাতাল হচ্ছে আর এসব ভাবছে। তখনই আক্রমণ করে মাহেরা এইখানে মাহেরকে দেখেও ভড়কে চাইনিজ অথবা অবস্থায় দাঁড়িয়ে পড়ে।
তুই এখানে কিভাবে?
মাহের হেসে বলে তুই কি ভেবেছিস আমি তোর নিশানা খুঁজে পাবো না। তুই আমার কলিজায় হাত দিবি আর আমি তোকে ছেড়ে দেবো এত কাঁচা ভেবেছিস মাহের কে! মাহি নিজের জিনিস আগলে রাখতে জানে শত্রুদের বিনাশ করতে জানে।
নেশাতুর অবস্থায় নিহাল মাহেরের উপর আক্রমন করতে চাই কিন্তু ও তো দুর্বল হয়ে গেছে মাহের সাথে পেরে ওঠে না নেহালের লোককে মেরে আধমরা করে দেয় মাহের এর লোক
আর মাহের নিহাল কে মারতে মারতে মুখ দিয়ে রক্ত বের করে ফেলে। নিহাল আধমরা হয়ে নিচে পড়ে আছে মাহের ওর মুখ টেনে ধরে বলে,
কি বলছিলি তুই আমার ছোঁয়ায় কে স্পর্শ করবি। এই হাত দিয়ে তুই ওর গাল স্পর্শ করেছিস?
বলে মাহের আর হাতে মধ্যে বন্ধুক দিয়ে শুট করে। নিহাল আর্তনাদ করে ওঠে ব্যাথায়।
একদম মরমর অবস্থা করে নিহাল কে টেনে ধরে বলে,
কিরে পেনড্রাইভ নিবি না।
নিহাল আরেক হাতে মাহেরের পা চেপে ধরে বলে,
ভাই আমাকে প্রাণে মারতে পারবি না তুই তুইতো আমাকে খুব ভালবাসিস তাই না আমাকে ক্ষমা করে দে।
নিহালের কথা শুনে মাহের হা হা করে হেসে ওঠে চোখের কোনায় জল জমেছে তাও হাসছে।
হ্যাঁ খুব ভালোবাসি তো তাই তো এভাবে আমার পেছনে কলকাটি নেরেছিলি। যেদিন তুই আমাকে বাসার সবার সামনে নিজে মালতির আন্টির ছেলে কে খুন করে আমার নাম দিয়ে আমাকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল সেইদিনই আমার মন থেকে তোর প্রতি ভালোবাসা শেষ হয়ে গিয়েছিল।
আমাকে ক্ষমা করে দে আমি ভুল করেছিলাম আমি বাসার সবার কাছে স্বীকার করে নেব তুই করিস নি আমি করেছিলাম।
ক্ষমা আমি তাকে করবা না কিন্তু তোকে আমি মারব না।আর বাসার সবার সামনে স্বীকার করলেই কি না করলেই কি আমার তাতে কিছুই যায় আসে না।আমার কেউ নেই অন্য কারো কাছে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার কিছু আছে আমি একা আমার কাউকে চাই না।
বলে মাহের ওঠে ভেতরে দৌড়ে গেল। ছোয়া নিজের হাত সরানোর চেষ্টা করছিল তখনই মাহির কে দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে,
মাহের গিয়ে ওর মুখের বাধন খুলে দেয়। একেকে শরীরে সব বাঁধন খুলে দেয়।নিজেকে বাঁধন মুক্ত পেয়ে মাহের কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরি। ভয়ে আমার হাত পা কাপছে। মাহের ও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। তারপর আমার সারা মুখে চুমু খেয়ে বলে,
তুমি ঠিক আছো তোমার কোন ক্ষতি হয়নি তো কথাও আঘাত পাওনি তো।
আমি মাথা নেড়ে বলি না আমার কিছু হয়নি।
মাহের স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আমাকে নিয়ে বেরিয়ে আসে।

মাহেরের থেকে জানতে পারি মাহেরের শত্রু মানে বিপক্ষে দল আমাকে কিডন্যাপ করেছিল মাহেরকে ট্যাপে ফেলার জন্য।
আমি বাসায় এসে সারাটা সময় মাহের কে জড়িয়ে ধরে বসে র‌ইলাম। ভয়ে এখনো আমার হাত-পা কাঁপছে বুকের ভেতর টিপটিপ করছে।
সুইটহার্ট এত ভয় পেয়ো না আমি আছি তো তোমাকে কিছু হবে না।
না আমি ছাড়বো না আমার খুব ভয় করছে আপনি আমার সাথে থাকুন।
আছে তো এই যে আমি তোমার সাথে আছি।
সারারাত মাহের কে ধরে রইলাম আমার খুব ভয় করছিল।
মাহের চিন্তিত হয়ে আমাকে বুকে নিয়ে বসেছিল। আমি ঘুমিয়ে পড়লে আমকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
দুদিন পর আমি ভয় কাটিয়ে উঠতে পারলাম।
মাহের এখন বাসার বাইরে বেশিক্ষণ থাকে না বাসায় থাকে বেশি সময়।আজকে মাহের এর থেকে যে নে আমি নিজে রান্না ঘরে গেলাম। মাহের পছন্দের খাবার রান্না করবো। খাবার টেবিলে মাহের খুব তৃপ্তি করে খেলো। আমি মুগ্ধ হয়ে ওর খাওয়া দেখলাম।যেটা দুদিন আগে করতে চেয়েছিলাম ওই ক্রাইসিস এর জন্য আমি পূরণ করতে পারিনি আজকে করলাম। আমি মাহেরের পছন্দমত শাড়ি পরে সাজগোজ করলাম।মাহের সন্ধ্যার আগে কোথায় গিয়েছিল সন্ধ্যার পরে বাসায় এসে আমাকে এত সাজগোজ অবস্থায় দেখে চমকে ওঠে আর হাঁ করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে। মুগ্ধ হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি লজ্জায় মাথা নিচু করে আছি।
সুইটহার্ট এত সাজগোজ করেছ কেনো আমাকে কি পাগল করতে চাইছ?এভাবে আমার সামনে আসলে যে আমার অনেক কিছু করে ফেলতে ইচ্ছে হয় আমি যে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারিনা। কিন্তু আমি তো তোমার অনুমতি ছাড়া কিছু করতে চাই না।
আমি এগিয়ে এসে মাহের কে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মাথা রাখলাম,,,
আমি তো চাই আপনি কিছু করুন। আমাকে ভালোবাসুন। আপনার ভালোবাসার রঙে নিজেকে রাঙাতে চায়।
সেই দিন আমাদের নতুন জীবন শুরু হয়। ভালোবাসার নতুন অধ্যায় তৈরি করি। আমাদের দুটি দেহ এক হয়।মাহের পাগলের মত ভালোবাসে ওর ভালোবাসায় নিজের সুখ খুঁজে পায়।
আমাদের ভালোবাসা ময় জীবন ভালো কাটছিল একমাস পর হঠাৎ সেই অচেনা লোকটা এসে উপস্থিত বাড়িতে সে আর কেউ না যে আমাকে কিডন্যাপ করেছিল। কিন্তু অদ্ভুত একা না সাথে একজন বয়স্ক লোক ও মহিলা তাদের আমি চিনি না। কিন্তু ওই লোকটাকে দেখে ভয়ে কাঁপতে লাগি। কিন্তু সে আমার কাছে এসে আমার ভয় ভাঙায় আর তা বলে তাতে আমার চোখ বড় বড় হয়ে যায়।ওই ছেলেটা মাহের এর ভাই আর সাথে ভদ্রলোক মাহের এর বাবা ও পাশের মহিলা মা।
আমি শুনে তাড়াতাড়ি মাথায় কাপড় ভালো করে দিয়ে তাদের সালাম করি।
ওই ছেলেটা মাহের এর ভাই আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি ওনি আমাকে কিডন্যাপ করেছিল ছেলেটা আলাদা করে কথা বলে ক্ষমা চাইলো আর দুই ভাইয়ের কথা সব বলল।আমি অবাক হয়ে সব শুনলাম।

আধা ঘন্টা পর মাহের এলো আর এসে তাদের দেখে ক্ষেপে গেল। চিৎকার চেঁচামেচি করতে লাগলো আমি চেষ্টা করেও থামাতে পারলাম না গার্ড ডেকে সবাইকে বাসা থেকে বের করলো তারপর মাথা হাত দিয়ে বিছানায় হেলান দিয়ে আছে।
আমি এসে মাহের এর পাশে বসে মাথায় হাত রাখলাম।মাহের আমার কোলের উপর মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে র‌ইলো আমি কপালে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম তারপর মাথা নিচু করে কপালে চুমু দিলাম।
আপনি তাদের ক্ষমা দিন।তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে।
আমি পারবো না জোর করো না।
কিন্তু তারা তো আপনার আপন জন। তাদের থেকে এভাবে মুখ ফিরিয়ে নিয়েন না।যা হয়েছে ভুলে যান।
মাহের উঠে চলে গেল।
সারাদিন বাসায় এলো না রাতে এলো। আমি আর এসব কথা বললাম না শুনবে না। তাই আর বললাম না।খেতে ডাকলাম মাহেদ তাতেও কিছু বলে না চুপ করে শুয়ে আছে আমি কাছে হাত দিয়ে টাচ করে ডাকলাম।
আমি খাব না ডেকো না।
ব্যর্থ হয়ে খাবার রেখে এলাম আমি কিছু খাইনি মাহের এর জন্য ছিলাম ও খেলনা তাই আমি ও খেলাম না।
বিছানায় এসে শুয়ে পরলাম।মাহের কাত হয়ে শুয়ে আছে আমি নিজেই এগিয়ে ওর বুকে জায়গা করে নিলাম। আর বললাম,
আচ্ছা আপনার যা ইচ্ছা তাই করেন তবুও আমার সাথে এভাবে কথা না বলে থাইকেন না আমার খুব কষ্ট হয়।
মাহের আমাকে জরিয়ে করলো শক্ত করে ওর চোখ দিয়ে পানি পরছে যা আমি টের পাচ্ছি। ওর চোখের পানি আমার ঘারে পরছে।
আপনি কাঁদছেন?
মাহের বাচ্চাদের মত কাদছে আমি কা করবো বুঝতে পারছিনা।
মাহের নিজে থেকে বলল,
ছোঁয়া জানো আমার যখন তেরো বছর তখন বাসা থেকে তারিয়ে দেয় আমাকে কতো বুঝিয়ে ছিলাম আমি কিছু করিনি কিন্তু কেউ আমার কথা শুনেনি।সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল।
আমি কোথায় যাব কি করবো বুঝতে পারছিলাম না তখন আমার দেখা হয় আব্বাস আলী খান মাফিয়া চক্রের লিভারের সাথে তিনি আমাকে নিজের কাছে নেন আর নিজের মতো তৈরি করে।উনি মারা যাবার পর থেকে আমি লিডার উনি খারাপ হলেও আমাকে আদর ভালোবাসা দিয়ে নিজের ছেলের মতো করে মানুষ করেছে। আর নিজের বাবা মা আমার খোঁজ ও নেয়নি আজ এসেছে ফিরিয়ে নিতে ক্ষমা চাইতে।
আমি আর সহ্য করতে পারছি না মাহের এর এতো কষ্ট আমি নিজেই মাহের এর ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে চুমু খেতে লাগলাম।যাতে এসব থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। প্রথমে মাহের রেসপন্স না করলেও কিছু ক্ষন পর থেকেই নিজেই আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে।
আবার ভালোবাসায় মেতে উঠে। দিন চলতে থাকে আমি আর মাহেরকে ওর পরিবারের কথা বলিনি।ও কষ্ট পায়।
আমি ওকে কষ্ট দিতে চাইনা। কিছু দিন ধরেই আমার শরির টা ভালো না বমি বমি আসে। কিছু খেতে পারিনা। এই অবস্থা দেখে মাহের চিন্তা বসে গেছে আজকে আমাকে নিয়ে হসপিটালে এলো আর পরিক্ষা করে এলো রিপোর্ট কাল দেব।
পরদিন মাহের রিপোর্ট হাতে মিষ্টি নিয়ে এসেছে আর আমাকে এসেই জরিয়ে ধরে চিৎকার করে বলল,
সুইটহার্ট আমি বাবা হতে যাচ্ছি আমার যে কি খুশি লাগছে। আনন্দে আমি পাগল হয়ে যাব‌। আমার আর তোমার সন্তান আস্তে চলেছে যে আমাকে বাবা বলবে।
কথা বলতে বলতে নিচে বসে আমার কোমরে থেকে শাড়ি সরিয়ে চুমু খেল আমি চোখ বন্ধ করে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
খুশিতে আমার চোখেও জল চলে এসেছে।
সারাটা দিন মাহের বাবুকে নিয়ে তার জল্পনা কল্পনা বলতে লাগলো। এতো খুশি হবে আমি আশা করি নি মাহের এর আনন্দ দেখে আমি ও খুশি হয়।সেইদিন বিকেলে মাহের এর ভাই নিহাল বাবা মা নিয়ে আসে আমি মাহের এর হাত ধরে বলি।
প্লিজ মাহের ওদের ক্ষমা করে দিন চলুন আমরা ফিরে যায়। মাহের তাদের ক্ষমা করে দেন আমি বুঝতে পারছি আপনার অনেক কষ্ট হয়েছে।আমি ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছি বাবা মা না থাকার কষ্টটা আমি বুঝি। আপনি তো এতদিনে বুঝেছেন।তারা ভুল করেছি অন্যায় করেছে কিন্তু ক্ষমা তো চাইসে নিজের ভুলটা তো বুঝতে পেরেছে।তাহলে আমরা কি পারিনা তাদের একটু সুযোগ দিতে তাদের সাথে নিয়ে নতুন করে সব কিছু শুরু করতে। আমাদের সন্তান একটা সুন্দর পরিবারে জন্ম হোক তার বাবা-মা দাদা-দাদি সবাই আছে। সে যেন সবার ভালোবাসা পায়।তাদের বয়স হয়েছে এই বয়সে তাদের এত কষ্ট টা কি ঠিক হবে। যে কটা দিন বেঁচে আছে আমরা কি পারি না তাদের সুখে রাখতে।

মাহের নীরবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। অনেক ‌কিছু বললাম তারপর মাহের আমাকে রেখে বাইরে চলে এলো। আমি আল্লাহকে ডাকছি যেন মাহের রাজি হয়ে যায়।
বাইরে এসে আমার মুখে হাসি ফুটে উঠল। মাহের তার মাকে জরিয়ে ধরে কাদছে একে একে সবাই কে জরিয়ে ধরলো।
সবার চোখে জল আমার চোখেও জল চলে এলো।
সেদিন আমরা মাহেরের বাবা-মার সাথে মাহের বাড়িতে চলে আসি। শুরু হয় আনন্দের দিন মাহের মাফিয়া বস ছেড়ে দেয়। নিহাল তো ভালো হয়ে গেছে। এর মাঝে আর একটা জিনিস জানতে পারি ঐশী আর নিহাল প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। তো তাদের বিয়েটাও দ্রুত সেরে ফেলি। দুই বান্ধবী এক বাড়িতে বউ হয়ে এসেছি। আনন্দের সাথে কাটছে। আমার প্রেগনেন্ট এর পাঁচ মাস চলছে। মাহের তো আমাকে নরতেই দেয় না শুধু বসে বসে আমার সেবা-যত্ন করে চলেছে।
সবাই আমার খুব সেবা-যত্ন করছে। দেখতে দেখতে দশ মাস চলে গেল। যেদিন আমাকে ব্যথার জন্য আইসিসিতে ঢুকানো হলো মাহিরের মুখটা একদম শুকিয়ে একটুখানি হয়ে গেছিলো। আমিও ভয় পাচ্ছিলাম খুব এখান থেকে বের হতে পারব তো। কিন্তু আল্লাহ সহায় ছিল সমস্ত বিপদ কাটিয়ে আমি ও আমার মেয়ে খুব সুস্থ ছিলাম। মাহের তো আমার কাছে যে আমার সারা মুখে হাজারের বেশি চুমু দিলো। ভয়ে মানুষটার কি অবস্থা হয়েছে? এত ভালবাসে কেন লোক তো আমাকে কে জানে?
আমাদের মেয়েটা একদম মাহের মত হয়েছে দেখতে। মাহের তো তাকে চোখে হারায় আর তার নাম দিয়ে দিয়েছে।
মাহি।

সমাপ্ত।

আমার মাহের আর ছোঁয়ার জন্য দোয়া করবেন।ওরা যেন সারা জীবন এভাবে একসাথে থাকতে পারে ভালোবেসে। পুরো গল্পটা কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ সবাই জন্য ভালোবাসা অবিরাম।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে