শুধু তুই পর্ব-১৭+১৮

0
2537

#শুধু তুই
#পর্বঃ১৭
#Tanisha Sultana (Writer)

ফুল স্পিডে গাড়ি ডাইভ করছে সায়ান। নিজেকে খুব আসহায় মনে হচ্ছে। বারবার তুলির কথা মনে পড়ছে। তুলির জন্য মনের মধ্যে একটা শুন্যতা কাজ করছে কিন্তু সায়ান মানতে নারাজ। কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছে না তুলির মতো মেয়ে সায়ানের মনে জায়গা করে নিয়েছে।

“নাহহহ আমি তুলিকে ভালোবাসতে পারি না। আমার অনিশ্চিত জীবনে কোনোভাবেই আমি তুলিকে জড়াতে চায় না৷ আমি ভাববো না তুলির কথা। ভুলে যাবো তুলিকে। কিন্তু পারছি না কেনো?

হঠাৎ গাড়ির ব্রেক ফেল হয়ে যায়। একটা গাছের সাথে বারি খায়। মাথায় প্রচুর ব্যাথা পায়। রক্ত পড়ছে প্রচুর।

” চোখ খুলে সায়ান অবাক হয়ে যায়। কারণ সায়ান তুলির রুমে। চোখ খুলে সামনে তাকিয়েই তুলির ছবি দেখে। সেটা দেখেই বুঝে যায় এটা তুলির রুম। সায়ান মাথায় হাত দিয়ে দেখে ব্যান্ডেজ করা।
পাশে তাকিয়ে দেখে তুলি ফোন দেখছে

“আমি এখানে কেনো?

সায়ান উঠতে উঠতে বলে

” ও মা আপনি জানেন না

“জানলে কি জিজ্ঞেস করতাম

” তাও ঠিক। আসলে আপনি আমাকে অতিরিক্ত মিছ করছিলেন তো তাই ঘুমের মধ্যে হেঁটে হেঁটে চলে এসেছেন

“সাট

” আপ

সায়ান রাগী দৃষ্টিতে তাকায় তুলির দিকে। তুলি হাঁসে

“কাল আপনি রাস্তায় পরেছিলেন বাবা নিয়ে এসেছে আপনাকে।

সায়ান মাথায় হাত দিয়ে ভাবছে

” মাাাাাাাা

তুলি চিৎকার করে মা কে ডাকে। সায়ান কানে হাত দেয়

“স্টুপিটের মতো চিৎকার করছেন কেনো?

” স্টুপিটরা চিৎকার করে বুঝি?

“ইডিয়েট

তুলির মা দৌড়ে আসে

” কি হয়েছে

“তোমার জামাই খাবো খাবার আনো

তুলির মা সায়ানের সাথে দু একটা কথা বলে চলে যায়।

” জামাই কে?

তুলি আশেপাশে তাকিয়ে বলে

“আপনি ছাড়া এখানে আছে কে?

” আমি জামাই না

“তাহলে কি

সায়ানের ফোন বেজে ওঠে। সায়ান রিসিভ করতে যায় তুলি ফোনটা নিয়ে যায়

” হেলো

ওপাশ থেকে জুঁই বলে

“সায়ান কোথায়?

” আমার সাথে

“ওর কাছে দাও ফোনটা

” ও কথা বলবে না

“কেনো?

“আমার স্বামী পরোনারীর সাথে কথা বলবে না

” সায়ান বলেছে

“না সায়ানের অর্ধাঙ্গিনী বলছে

” সাধু সাজছে এখন তাই না। আমার সংসার ভেঙে সাধু সাজা হচ্ছে।

“আপনার সংসার আমার স্বামী ভাঙে নি

” তাই না কি? তাহলে আমার স্বামীকে কে খুন করেছে?

“এখানে গন্ডগোল আছে

” কোনো গোন্ডগোল নেই। আমার বাচ্চার দায়িত্ব কে নেবে? কেনো আমার মেয়ে বাবার আদর থেকে বঞ্চিত হবে? সায়ান যদি দায়িত্ব না নেই তাহলে আমি পুলিশকে সব বলে দেবো

“রিলাক্স। এতো হাইপার হচ্ছো কেনো? তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে কেউ তোমার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে কথা গুলো বলাচ্ছে।

” তুমি বেশি কথা বলছো

“তুমি আমার বোনের মতো। জুজুকে আমিও খুব ভালোবাসি। আমি জানি না তোমরা কেনো এমন করছো। কি চাও তোমরা। এমন করো না বোন। কি পাবে বলো? হয়ত তোমার আর তোমার বাবার জোরাজোরিতে সায়ান তোমায় বিয়ে করবে। একটা কথা বলো তো তুমি যদি সায়ানকে জোর করে বিয়ে করো তোমার মরে যাওয়া স্বামীর কি ভাববে। সে কতোটা কষ্ট পাবে।

তুলি কথা গুলো জুঁইয়েরও খুব ভালো লাগছে। সত্যি কথাই তো বলছে তুলি।

” সবার চিন্তা ভাবনা এক না।

“হুম কিন্তু তুমি ভেবে দেখো আমি ভুল বলিনি। নিজের চিন্তাভাবনাকে ভালো কাজে ব্যবহার করো। দেখো তোমার জীবনটাও সুন্দর হবে তুমিও ভালো থাকবে

জুঁইকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তুলি ফোন কেটে দেয়। মনে মনে সায়ানের বকা খাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে। এই বুঝি শুরু করলো

” আপন
তুলি সায়ানকে থামিয়ে

“প্লিজ বইকেন না। আমার মতো একটা মাসুম শিশুকে বকতে আপনার বিবেক বাধা দেয় না। কেমন পাষান আপনি।
ইনোসেন্ট ফেস করে বলে তুলি। তুলির মুখ দেখপ সায়ানের হাসি পাচ্ছে।

” আচ্ছা আমি মেয়ে হিসেবে কেমন

“জঘন্য

” বউ হিসেবে

“বাজে

” ধুর আপনি মিথ্যা বলছেন। আমি খুব ভালো

“আমি কখন বললাম খারাপ

” এই তো বললেন

“খারাপ বলি নি

” তার মানে আমি ভালো

“তাও বলি নি

” শালা হনুমান

বিরবির করে বলে তুলি

“কি বললেন

” আপনার মাথা

তুলির মা আসে। সায়ান ওয়াশরুমে চলে যায়।

“মা খাবার রেখে যাও

” ঠিক আছে

খাবার দিয়ে তুলির মা চলে যায়। জিসান তুলিরে ফোন দেয়

“বল

” এইমাত্র তোদের বাড়ি থেকে একটা মেয়ে বেরিয়ে গেলো কে ওইডা

“আমাদের বাড়ি থেকে মেয়ে

” হুম৷ নীল ড্রেস

“আমি তো দেখি নি

” কানা না কি তুই

“হপ দাঁড়া আমি খোঁজ নিচ্ছি

” লাভ ইউ বেবি

“আলগা পীরিত দুরে রাখ

তুলি ফোন রেখে ভাবছে কে ছিলো।

” আমি খাবো

সায়ান হাত মুখ মুছতে মুছতে বলে

“খাবার রেডি

সায়ান খেতে বসে। রুটি ছিড়ে গালে দেওয়ার আগে তুলির দিকে তাকিয়ে দেখে তুলি হা করে তাকিয়ে আছে

” এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো

“আমার বরটাকে দেখছি। কতো কিউট দেখলে খালি দেখতেই ইচ্ছে হয়।

” আপনাকে সেদিন ওইভাবে চলে আসতে বললাম।

“উদ্দেশ্য ছাড়া তুলি কোনো কাজ করে না। আপনার সাথে ভালো বিহের করার পেছনে বড় কোনো উদ্দেশ্য আছে। যা খুব তাড়াতাড়ি আপনি জানতে পারবেন। আপনি হয়ত ভাবেন আমি আপনাকে ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছি তাই আপনার সব ভুলে গেছি

” ভাবার কি আছে? সত্যি তাই

তুলি হো হো করে হাসে

“আমি ভালোবাসবো তাও আপনাকে সিরিয়াসলি আপনার এটা মনে হয়

সায়ান ভাবতে থাকে

” সত্যি তো আমি এরকম ভাবলাম কেনো? এমন তো নাও হতে পারে।

তুলি সায়ানের সামনে হাত নারায়

“হেলো কি ভাবছেন

” কিছু না

সায়ান খাবার মুখে দেয়।

“আমার বাবা কেনো আমাকে আপনার সাথে বিয়ে দিয়েছে সেটা এখন বুঝতে পারলাম আমি।

” কি কারণ

“দেখু তেতো আর তেতো তো একসাথে থাকতে পারে না। তাই বাবা তেতো আর মিষ্টি মিলিয়ে দিছে

” মানে

“মানে বুঝবেন না. আপনি এমন কেনো? আমার বাবার খাবার খাচ্ছেন অথচ আমাকে খেতে বলছেন না

” আমার খিদে পেয়েছে আমি খাচ্ছি। আপনার টা আপনি বুঝবেন

“কি সুন্দর বিচার আপনার

তুলিও খাওয়া শুরু করে। কার থেকে কে বেশি খেতে পারে। পাল্লাপাল্লি করে খাচ্ছে দুজন। তুলি ফাস্ট হওয়ার জন্য এতো এতো খাবার মুখে পুরেছে এখন চিবতে পারছে না। সায়ানের খাওয়া শেষ। তুলির অবস্থা দেখে সায়ান হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। তুলি মুগ্ধ হয়ে সায়ানের হাসি দেখছে।

হাসলে কতো সুন্দর লাগে মানুষটাকে অথচ সব সময় গোমড়ামুখো হয়ে থাকে। তুলির আর চিবোনোর কথা মনে নেই। ও তাকিয়ে আছে সায়ানের দিকে। আর তখনই ভেসে আসে একটা গানের সুর
#শুধু তুই শুধু তুই আর চাইছি না কিছুই।

চলবে

#শুধু তুই
#পর্বঃ১৮
#Tanisha Sultana (Writer)

“সায়ান

সায়ান তুলি দুজনই দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে সায়ানের মা বাবা। সায়ানের মা সায়ানের কাছে এসে জড়িয়ে ধরে কেঁদে বলে

” তুই ঠিক আছিস বাবা

“হুম মা ঠিক আছি

তুলি সায়ানের মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। সায়ানের মা একবার তুলির দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়

” চল বাড়ি ফিরতে হবে

“মা রেডি হয়ে নি

সায়ান শার্ট ঠিকঠাক করে। তুলি মাথা নিচু করে বসে আছে। সায়ানের বাবাও কিছু বলছে না৷ তুলি বেশ ভালো বুঝতে পারছে ওনারা তুলিকে নিবে না।

” তুমি একটু বাইরে যাও তো

সায়ানের বাবা আর তুলি চমকে সায়ানের মায়ের দিকে তাকায়।

“শুনতে পাও নি কি বললাম

” যাচ্ছি

সায়ানের বাবা চলে যায়।

“এখন আমাকে কাঁচা গিলে খাবে। যেমন শাশুড়ী তেমন ছেলে। আমার হয়েছে মরন। সব সময় এদের কথা শুনতে হয়।

তুলি বিরবির করে বলছে

” কি বিরবির করছো

“কককই ককককিছু না তো

তুলি তুতলিয়ে বলে

” এরকম জামা পড়ে বর শশুর শাশুড়ীর সামনে বসে আছো লজ্জা করছে না

“নাহহ

” লজ্জা থাকলে তো করবে। শাড়ি কোথায় তোমার?

“না মানে আমার শাড়ি নেই

” আমি তোমার এতো এতো শাড়ি দিলাম ওগুলো কই?

“রেখে এসেছি

” ভালো করছো। থ্রি পিছ আছে

“হুম আছে
তুলি মাথা নিচু করে বলে। সায়ানের মা আলমারি খুলে একটা নীল থ্রি পিছ বের করে।

“একা ড্রেস চেঞ্জ করতে পারবে

তুলি মাথা নারায়। মানে না

“মা কে একটু ডেকে দিন মা হেল্প করবে

” আমি হেল্প করছি

সায়ানের মা তুলিকে থ্রি পিছ পরিয়ে দেয়। চুল আঁচড়ে টেনেটুনে খোপা করে দেয়। তুলির খুব ভালো লাগছে। তুলির খুব করে ইচ্ছে করছে শাশুড়ীকে জড়িয়ে ধরতে কিন্তু সাহস হচ্ছে না। সায়ান আসে

“মা চলো

” তুই তুলিকে কোলে নে

সায়ান আর তুলি তো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে মায়ের দিকে

“আমি হুইল চেয়ারে যেতে পারবো জাস্ট একটু ধাক্কা দিলেই হবে

” সায়ান ওকে নিয়ে আয়

সায়ানের মা চলে যায়। সায়ান তুলির দিকে তাকিয়ে বলে

“আমার মায়ের ওপর জাদুটাদু করছেন না কি?

” হুমমমম। বস করে রেখেছি

“তাই তো মনে হচ্ছে। আপনাকে তো দুচোখে দেখতে পারতো না আর আজ এতো কেয়ার করছে

” আমিও তাই ভাবছি। কেচটা কি?

“সেম টু ইউ

” গাড়িতে বসে দুজন পাল্লা দিয়ে ভাববো এবার ধাক্কা দেন

“ইডিয়েট

সায়ান তুলির হুইলচেয়ার ঠেলে নিয়ে যায়

“দাঁড়ান দাঁড়ান

” কেনো?
সায়ান দাঁড়িয়ে পরে। তুলি বলে ওঠে

তন্নি

মেয়েটা তুলির কাছে আসে।

“তোকে দেখতে আসলাম। তো তুই এমন খালাম্মা সেজে কোথায় যাচ্ছিস?

তন্নির কথায় সায়ান মুখ টিপে হাসছে। টেনেটুনে চুল খোপা করলে সত্যি খালাম্মা খালাম্মা লাগে। তুলি রেগে বলে

” চলে যাচ্ছি

“ও মা কেনো?

” তো কি তোর খালাম্মা ডাক শোনার জন্য বসে থাকবো না কি?

“সরি। প্লিজ যাস না

” যে হবে রে।

তন্নি মুন খারাপ করে। তন্নি তুলি কাজিন। ওদের বাসা তুলির বাসার পাশেই।জিসান তুলেকে এই মেয়ের কথাই বলেছিলো।
তন্নি নিচু হয়ে তুলির কানে কানে বলে

“বোইন সকালে একটা ছেলেরে দেখলাম

” কোন ছেলে

“আরে তোর ফ্রেন্ড

” ফ্রেন্ড কারে কয়?

“তুলি নেকামি করবি না

” নেকামি কেমনে করে?

“ভালো হচ্ছে না কিন্তু

” কি খারাপ হচ্ছে

“ওই ছেলেডারে ভাল্লাগছে 🙈 ক্রাশ খাইছি

” কেমনে খাইলি? তিতা না মিঠা

তন্নি তুলির চুল ধরে টান দেয়। তুলি রেগে যায়

“মনে মনে ভাবছিলাম পোলাডারে পটায় দিমু কিন্তু এখন আর না

” প্লিজ বোইন এমন করিস না

“করবোই রে। কিচ্ছু করার নাই। মিস্টার গোমড়ামুখো থুক্কু জামায় চলেন

তুলি তন্নিরে চোখ মেরে চলে যায়।

সায়ানের বাবা ডাইভ করছে সায়ানের মা পাশে বসে আছে। সায়ান আর তুলি পেছনে বসেছে।

“ওই শুনেন

” আপনার থেকে অনেক বড় আমি রেসপেক্ট দিয়ে কথা বলুন

“শুনো না

” বফ না আমি আপনার

“শুনছেন

“বিয়াই লাগি না

” ওই শালা শোন
একটু জোরে বলে তুলি।
সায়ান বড় বড় চোখ বড় বড় করে তুলির দিকে তাকায়। তুলি দাঁত দিয়ে জিভ কাটে

“কি বললেন আপনি?
সায়ান রেগে বলে

” শুনেন নাই। ঠিক আছে আবার বলছি ওই

সায়ান তুলির মুখ চেপে ধরে

“শুনছি আর বলতে হবে না। স্টুপিট

তুলি উম উম করে

” বোবা হইলেন না কি?

তুলি সায়ানের হাতে জোরে একটা চিমটি কাটে। সায়ান চিৎকার দিয়ে হাত সরিয়ে নেয়। সায়ানের বাবা মা পেছনে তাকায়

“কি হয়েছে? (মা)

” মশা কামড়েছে

“কিহহহ আমাকে মশা বললো। কেমন খারাপ লোকরে বাবা
মনে মনে বলছে তুলি। সায়ান আস্তে আস্তে বলে

” চিমটি কাটলে কেনো

“ইয়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়য়েে

তুলি খুশিতে এক চিল্লান দেয়। সায়ান কান চেপে ধরে। সায়ানের বাবা গাড়ি থামায়। সবাই তুলির দিকে তাকিয়ে আছে। তুলি এক হাত দিয়ে কান ধরে বলে

” সরি

“ইটস ওকে বাট ষাঁড়ের মতো চিল্লানোর কারণ কি? সায়ান বলে

” আজ আপনি আমাকে তুমি করে বলেছেন।

আজ মানে? সায়ানের মা বলে

“আপনার সাধু ছেলে আমাকে সম্মান দিয়ে আপনি করে বলতো। আজ ফাষ্ট তুমি কটে বললো।

সায়ানের বাবা মুচকি হেসে গাড়ি চালানো শুরু করে। সায়ান চুপচাপ বসে আছে।

” ভাবছি আমিও আর আপনি করে বলবো না তুমি করে বলবো। কেমন হবে?

“জঘন্য

” তবুও বলবো। আফটার আল একটা মাএ বর কি না

“বর আবার কয়ডা থাকে

” সাধারণত একটা থাকে তবে আমার দুইটা থাকবে

“মানে

” আপনি তো আমাকে ডিভোর্স দিলেন তো আমার আবার বিয়ে করতে হবে তাহলে তো দুইটা বর হবে

“চুপ করে একটু বসেন না।

” হুর

তুলি বাইরে তাকিয়ে দেখে জুজু দৌড়াচ্ছে ওদের গাড়ির পেছনে।

“আংকেল গাড়ি থামান

সায়ানের বাবা গাড়ি থামায়।

” কি হয়েছে

জুজুও গাড়ির কাছে আসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলে

“পাপা

সায়ান গাড়ির দরজা খুলে জুজুকে কোলে নেয়

” তুমি এখানে? গাড়ির পেছনে দৌড়াচ্ছিলে কেনো?

জুজু কেঁদে দেয়

“মামনিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নানাভাই খুব বকেছে মামনিকে। আমাকেও বকেছে। বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেছিলো। তারপর থেকে মামনিকে পাচ্ছি না। অনেক খুঁজেছি

সায়ান জুজুর চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে

” কাঁদে না মা। আমি দেখছি

“আমাকে তো মামনি ছাড়া কেউ ভালোবাসে না। মামনি বলে যাদের বাবা নেই মাথার ওপর ছায়া নেই তাদের কেউ ভালোবাসে না। আমার তো বাবা নেই তাই আমাদের কেউ ভালোবাসে না

জুজুর কথা শুনে সায়ান তুলি সায়ানের বাবা মা সবার চোখে পানি এসে যায়। বাবা ছাড়া সত্যি পৃথিবীটা অন্ধকার।

“আমি আছি তো।

সায়ান জুজুকে নিয়ে গাড়িতে বসে। তুলিকে জড়িয়ে জুজু কাঁদছে। জুজুকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা তুলির নেই। তুলির খুব রাগ হচ্ছে জুজুর নানাভাইয়ের ওপর।

তুলি আর জুজু লুডু খেলছে। সায়ান জুঁইকে খুঁজতে গেছে।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে