ভেজা চুলে পর্ব-৮+৯+১০

0
839

#ভেজা_চুলে
#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)
#পর্ব-৮

“টানা চল্লিশ ঘন্টা পাশবিক অত্যাচারিত হওয়ার কষ্ট বুঝতে পারেন মিস ধানী লংকা?আমার বুবুকে ১৭ জন মিলে টানা ৪০ ঘন্টা পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছিল।সেই ৪০টা ঘন্টা পাগলের মতোন খুজেছিলাম বোনকে। আর যখন আরহান ভাই বুবুকে পেলো! জানেন কী অবস্থায় ছিল?
তখনো বুবুর উপরে একজন তার কামনা মেটাতে ব্যস্ত।
কখনো ভেবে দেখেছেন?আপনার প্রিয়তমা, আপনার বাগদত্তা তার নিস্তেজ রক্তাক্ত দেহের উপর এমন অত্যাচার?

তবুও আমার বোন বেঁচে ছিল। হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করেও লড়ছিল।
বিধাতা চায়নি তাই আজ সে নেই।সেই মানুষটা আরহান ভাইয়ের বুকেই মাথা রেখে শেষ শ্বাস ত্যাগ করে।”

কথাগুলো বলার সময় ইনহানের কন্ঠস্বর বেশ কঠিন ছিল।
হাতের মুঠ শক্ত করে রেখেছিল।
তার দিকে তাকিয়ে পত্রী জিজ্ঞেস করল,

“বিচার হয়নি তাদের?”

“ফাসি হয়েছে সবার।”

“আপনাদের সাথে শত্রুতা ছিল?”
“না।”
“তাহলে?”
“বুবু একটা সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান চালাতো।সেখানে একদল মেয়েকে পাচারকারীদের হাত থেকে বাঁচায়। তারাই পরবর্তীতে……”

মাধুর্য এগিয়ে এসে শক্ত হাতে ইনহানের হাত আঁকড়ে ধরে।
হয়তো সে এভাবেই তাকে স্বান্তনা দিচ্ছে।
ইনহান বিস্ময় চোখে মাধুর্যের দিকে তাকিয়ে বলে,

“ভেবে ধরেছেন তো?”
“বন্ধুদের হাত ভেবে ধরতে হয়?”
“যদি আর না ছাড়ি?”
“সমস্যা নেই।বন্ধু হয়েই না হয় রইলাম।”

তাদের কথোপকথনে পত্রী হঠাৎ বলে উঠে,

“আর আমি?”
“তুমি? তুমি তো দুধভাত।”

ইনহানের জবাবে তিনজনের মধ্যে হাসির দমক পড়ে গেলো।

প্রহরশেষের আলোয়
রাঙা সেদিন চৈত্রমাস–
তোমার চোখে দেখেছিলাম
আমার সর্বনাশ।।

এ সংসারের নিত্য
খেলায় প্রতিদিনের প্রাণের মেলায় বাটে ঘাটে হাজার লোকের
হাস্য-পরিহাস–
মাঝখানে তার তোমার
চোখে আমার সর্বনাশ।।

আমের বনে দোলা লাগে,
মুকুল প’ড়ে ঝ’রে–
চিরকালের চেনা গন্ধ
হাওয়ায় ওঠে ভ’রে।

মঞ্জরিত শাখায় শাখায়, মউমাছিদের পাখায় পাখায়,
ক্ষণে ক্ষণে বসন্তদিন
ফেলেছে নিশ্বাস–

মাঝখানে তার তোমার
চোখে আমার সর্বনাশ।

রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করে অর্ণির দিকে তাকায় ওয়াহেদ।
কেমন গোল আলুর মতোন চোখ করে তাকিয়ে আছে মেয়েটা।
আচ্ছা মেয়েটা কী জানে?এই গোল আলু চোখের মেয়েকে ওয়াহেদ ভালোবাসতে শুরু করেছে?
তাকে দেখলেই কেমন মনের মধ্যে নদীর বালি ঝড়ে পড়তে লাগে?
কেমন হাবুডুবু অনুভূতি হয়?
রাতে যখন মেয়েটা তার সো কল্ড প্যালাজো হাটুর উপরে উঠিয়ে রাখে তখন তার কেমন অনুভূতি হয়?

হয়তো জানে না। জানলে এমন দুঃসাহসিক কাজ কী সে করতো?
কবে যে তাকে ঘরে তুলবে! ভাবতেই মিষ্টি দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে এলো তার বুক চিড়ে।

“আপনি আবৃতি করেন?”
“করা নিষেধ না কী?”
“বেশ ভালো লাগলো।আমি তো আকাম্মাইয়া। কিছুই পারি না।”

“আমি তো জানি যে মেয়েরা কিছুই পারে না, তারা রান্না ভালো পারে।”

“রান্না আর আমি?আন্ডা, আন্ডা পারি আমি।”

অর্ণির কথায় ওয়াহেদ হেসে তার দিকে ঝুকে বলল,

“সব মেয়েরাই ডিম পারে। আর কিছু পারুক না পারুক।ডিম না পারলে বাচ্চা আসবে কই থেকে?”

বলেই শিষ বাজাতে বাজাতে ওদিকে চলে গেলো।অর্ণি বিজ্ঞানের ছাত্রী সে ভালোভাবে জানে ওয়াহেদ কী বলেছে।
এ ছেলে তো! ভাবতেই গা শিউরে ওঠে অর্ণির।লজ্জায় মুখ রাঙা।

সাকিব প্রায় জোর করেই মাধুর্যের ঘরে ঢুকেছে। মাধুর্য তখন টিভিতে মগ্ন।গোপাল ভাড় দেখছে। সাকিবকে সে দেখেও দেখছে না।
সাকিব তার পাশে গা ঘেঁষে বসেছে।মাধুর্য সরে যেতে চাইলে তার মুখোমুখি বসে পড়ে সে।
ধপ করে মাধুর্যের রাগ কমে যায়।
কারণ এটা সাইকোলজির ব্যপার।যদি আপনার সাথে কেউ রাগ করে তবে আপনি তার সামনাসামনি বসে পড়ুন। তার রাগ কমতে বাধ্য।

“তামসী সারা দিন খাইনি।”
“আমার কী?”
“ক্ষিধে পেয়েছে মোনাই।”
“বাড়ি যাও। লোকে দেখলে নিন্দে মন্দ করবে।”
“করুক না।তাতে কী?”
“বেয়াদবের থেকে দূরে থাকো।”

হঠাৎ বাহিরে বাতাস শুরু হয়েছে। ঝড় উঠছে। বিদুৎ চলে যেতেই আইপিএস চালু হলো।টিভি বন্ধ হয়নি। কারণ মাধুর্যের ঘরের টিভি বিদ্যুৎ না থাকলেও ঘন্টা খানেক চলে।
সাকিব মাধুর্য হাত নিয়ে খেলা করছে।

“ভুল করছো দাদা ভাই। বাড়ি যাও।”

“তোর বিষাক্ত চুমুর বিনিময়ে আজ মরতে ইচ্ছে করছে। ভিলেন হতে ইচ্ছে করছে তোর সিনেমায়। দিবি আজ অবাধ্য হতে?তোর সবটা নিতে?”

সাকিবের কথায় চমকে উঠে মাধুর্য। ভালোভাবে খেয়াল করে দেখে সাকিবের চোখ ভীষণ লাল।যেভাবে ঢুলছে সে নেশাগ্রস্ত।
মাধুর্য পুরো বাড়িতে প্রায় একা।তার চিৎকার কারো অবধি পৌঁছাতে পারবে না। সাকিবের শক্তির সাথে সে পারবে না।তবে কী তাকে সত্যি কলঙ্কের ভাগীদার হতেই হবে?

চলবে

#ভেজা_চুলে
#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)
#পর্ব-৯

মেয়েদের ছোট্ট জীবনে অনেকের সাথে লড়তে হয়। ঘরের সাথে,পরের সাথে কখনো বা নিজের সাথে।
মাধুর্য এখন লড়ছে তার নিজের সাথে। সাকিবের কথায় স্পষ্ট সে নেশায় বুদ অথচ মাধুর্য তো সুস্থ।
সে সব ভাবতে পারছে, চিন্তা করতে পারছে।
এখন যদি সে হাক-ডাক করে তারেকা বানু এবং সাকিবের বাবা অবশ্যই মাধুর্যের দোষ ধরবে।
চরিত্র নিয়ে কথা শোনাতে পিছপা হবে না।
আবার এদিকে এ বাড়ি থেকে ও বাড়ির দূরত্ব বেশ। সচরাচর শব্দ কী পৌঁছাতে পারবে?
জীবন টা সিনেমা নয়। কিন্তু সিনেমার গল্পগুলো জীবন থেকেই নেওয়া হয়।সিনেমা বা নাটক দিয়ে জীবন চলে না অথচ জীবনের কাহিনি নিয়েই সিনেমা নাটক হয়। আজ এমনি এক নাটকের অংশীদার মাধুর্য।

ভেতরে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাধুর্য বাহিরে স্বাভাবিক।
সাকিবের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলো না।
নেশায় মানুষ পশুর থেকে অধম হয়ে যায়।হিতাহিত জ্ঞানশূন্য মানুষ হিংস্র পশুর ন্যায়।
সাকিবের দিকে তাকিয়ে মাধুর্য জিজ্ঞেস করলো,

“ভাত নেই।নুডুলস পাকিয়েছি। খাবে?”

সাকিব মাথা দুলিয়ে স্বীকার করলে মাধুর্য উঠে যায়। সাকিব তখন ঢুলুঢুলু অবস্থায় বিছানায় বসে। মাধুর্য কল দিতে থাকে তার ছোট মামাকে।
কিন্তু অভাগী যেদিকে যায় সাগর শুকিয়ে যায়।
মামা ফোন না তোলায় কল দেয় রৌদ্র কে।

রৌদ্র যখন ঘরে এলো সাকিব তখন প্রায় ঘুমে।
মাধুর্যের ফোনকল পেয়ে দ্রুত ছুটে এসেছে সে। মাধুর্য তখন নুডুলসের নাম করে অন্য ঘরে দরজা দিয়েছে।
এমন নয় সাকিব কিছু বলেনি।তাকে বেশ ডাকাডাকি করেছে।চেচামেচি করেছে। মাধুর্য চুপচাপ তখন অন্য ঘরে বসে আছে।

রৌদ্র এলে মাধুর্য ভাইয়ের আশ্রয়ে যেন নতুন জীবন পেলো।
সাকিবকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে রৌদ্র বোনকে নিয়ে অন্য ঘরে চলে যায়।এ ঘটনা কাউকে জানানো যাবে না। বিশেষ করে তারেকা বানুকে। কারণ সে জানলে দোষ তো সব মাধুর্যের হবে।

বরপক্ষ চলে গিয়েছে। সকাল সকাল ইনহান বেরিয়েছিল মাধুর্যকে খুঁজতে তবে দেখা মিলেনি।
মাধুর্য আজ বেশ বেলা করে ঘুমিয়েছে। ও বাড়িতে বিয়ের ধুম পড়েছে। ছাদের এ পাশ থেকে দেখা যায়। সেদিনের ঘটনা সে ভুলেনি। তাই যেতে চাচ্ছে না৷
একা একা নীরবতা ঢের প্রিয় তার।

“শুনলাম মাধুর্য না কী বরপক্ষের সাথে ঝামেলা করেছিল?এই মেয়ের আসলেই দোষ আছে। দাদী ঠিক বলে লক্কর জক্কর ভালা না?”

জেরিনের কথা শুনে খুশবু সব’টা সাকিবের মায়ের কাছে বলে। সাকিবের মা তার ছেলের হবু বউ কে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করতেই বলল,

“আপনার কী মনে হয় আমার মুখের ভাষা বস্তি মার্কা?আমি ওমন ভাষা বলি না।”

জেরিনের এমন জবাবে খুশবু জবাব দেয়,

“আমি কী মিথ্যে বলছি?তুমি বলোনি?লক্কর জক্কর ভালা না?”

“সব কথাই নিজেদের দিকে নাও ক্যান?”

“তুমি বলেছো।”

“বোনেরা মিলে গ্যাং চালাও না কী?গুন্ডাবাহিনী? ”

“হ্যাঁ আমরা গুন্ডাবাহিনী আর তুমি কী?উইড ব্যবসায়ীর চামচা?”

“এই মেয়ে এই?সাহস কম না?”

“তুমি বললে ভালো আমরা বললে দোষ? ”

“সবাই ক্যান তোমার বোনের পিছনেই লাগে?এটা ভাবছো কখনো?”

“কারণ তোমাদের মতোন ফাজিল,শয়তানের নানীদের জবাব দেয় না বলেই আজ এই অবস্থা। জবাব দিলে বেয়াদব খেতাব পেতে হয়। যদি সময় মতো জবাব দিতো তবে কী আর তোমাদের মতো চুনোপুঁটি সাহস করে এসব বলার?”

“খুশবু মুখ সামলে কথা বলো।”
“তুমি মুখ সামলাও। না হলে পানের সাথে বিচুটি পাতা বেটে খাইয়ে মুখ বন্ধ করে দিবো।”

রাগে দুঃখে খুশবুর কান্না পাচ্ছে। মানুষ এত বেহায়া হয় কী করে?এদের আর কোনো কাজ নেই?এরা না কী আবার এই শিক্ষিত সমাজের অংশ!
জানে না কীভাবে সম্মান দিতে হয় আর এসেছে সম্মান নিতে।

জেরিন এসেছে মানে মাধুর্য এবাড়িতে না আসাই ভালো।তারেকা বানু কম ছিল কী যে এই মেয়েটাও হাজির।

বিকেলবেলা মাধুর্য বসে আছে নিজের ঘরের বারান্দায়। থ্রি এ এম উপন্যাস পড়ছিল। হঠাৎ করে তার ফোন বেজে উঠে। বইয়ে চোখ রেখেই মাধুর্য কল রিসিভ করে বলল,

“আসসালামু আলাইকুম।”
“আমি আরহান বলছিলাম।”

ভারী,সাবলীল এবং তীব্র পুরুষ কন্ঠস্বর শুনে মাধুর্যের শুধু মনে হলো,

“ভাগ্যকে কখনো নিমন্ত্রণ দিতে হয় না।জন্ম,মৃত্যু এবং অনেক কিছুই আমাদের না জানিয়ে যথা সময়ে চলে আসে।”

চলবে

#ভেজা_চুলে
#সাদিয়া_খান(সুবাসিনী)
#পর্ব-১০

“আপনি কী কমফোর্টেবল?”

বাইকে উঠে ওড়না ঠিক করতে করতে মাধুর্য জবাব দেয়,

“আসলে, মামা ব্যতীত কারো সাথে এভাবে যাওয়া হয়নি।তাই আর কি। ”

“আমি দুঃখিত। আপনাকে সাথে নিতে বলা হয়েছে।”

আরহানের কন্ঠে স্পষ্টতা।
“সমস্যা নেই। তবে হেলমেটটা পরতে পারবো না।দম বন্ধ লাগে।”

“তাহলে বেশ।আমার বুকপকেটে একটা রোদচশমা আছে। এটা নিয়ে পরুন।”

“আরে না। প্রয়োজন নেই।”
“গ্রামের রাস্তা বেশ ধুলোময় ম্যাম।আপনি আগামী কয়েক ঘন্টা আমার কাছে অন্যের আমানত।”

মাধুর্য কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ চশমা হাতে নেয়৷
কিছুক্ষণ আগে যখন আরহান কল দিয়েছিল তখন তাকে বলেছিল
তৈরী হয়ে নিতে।তারা বিয়ের কেনাকাটা করতে যাবে। যেহেতু বিয়েটা হয়েছে। এখন শুধু অনুষ্ঠান বাকী।

মাধুর্য এবং আরহানের ভাগে পড়েছে পোশাক বাছাইয়ের বিষয়। ছেলেরা যেহেতু সবাই এক রকম পাঞ্জাবী তাই মাধুর্যকে নিয়ে এসেছে আরহান।মেয়েদের শাড়ির জন্য সাবু’স কালেকশন আছে। ইনহান আগে ভাগেই কয়েকটা নমুনা বেছে রেখেছে।

যেহেতু বিয়ের অনুষ্ঠান তাই স্বভাবগত কারণেই লাল এবং হলুদ পাঞ্জাবী দেখছিল আরহান। তবে এই দুই কালারের পাঞ্জাবী সরাসরি নাকচ করে দিলো মাধুর্য।

“লাল অথবা হলুদ কী ভালো হতো না?”

“আপনি জানেন না? পুরুষের জন্য লাল এবং হলুদ রঙ পরিধান ইসলামে নিষিদ্ধ।”

“জানা ছিলো না।”
“আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,
“আমি নবীজি কে দেখেছি, তিনি ডান হাতে রেশম ধরলেন এবং বাম হাতে স্বর্ণ, অতঃপর বললেন, আমার উম্মতের পুরুষদের জন্য এ দু’টি বস্তু হারাম ।’’
( আবু দাউদঃ ৪০৫৭, নাসায়িঃ ৫১৪৪, ইবন মাজাহঃ৩৫৯৫)

নবীজি আরও বলেন,
“আমার উম্মতের মধ্যে এমন কিছু লোক সৃষ্টি হবে, যারা ব্যভিচার, রেশম, মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল সাব্যস্ত করবে ।”
(সহীহ বুখারীঃ ৫৫৯০)

মহানবী আরো বলেছেন,

“এই রঙ কাফেরদের জন্য, এই রঙের কাপড় পরিধান করো না ।”
(মুসলিমঃ ২০৭৭)

মাধুর্যের জবাবে বেশ পুলকিত বোধ করলেন আরহান।
মুচকি হেসে বলল,

“বাহ্!আপনি তো বেশ অনেক জানেন।”

“হয়তো। যা জানা প্রয়োজন আমি ততটাই জানি।আচ্ছা অন্য কালার দেখি?চাইলে মিক্সড লাল বা হলুদ নিতে পারেন।”

“আমরা না হয় একটু ভিন্ন পরবো।আপনার পছন্দ সই নিয়ে নিন।”

ছেলেদের জন্য কেনাকাটা করে মাধুর্যকে নিয়ে শাড়ির শো-রুমে এসেছে আরহার। সেখানে আগে থেকেই জেরিন এবং সাকিব ছিল।মাধুর্যকে দেখে ইনহান এগিয়ে গিয়ে বলল,

“উফফফ চারপাশে কী গরম। ঝালে গরম লেগে যাচ্ছে। আরে! এ কে এসেছে?এ তো মিস ধানী লংকা। তাইতো বলি এত গরম কেনো লাগছে।”

ইনহানের কথায় মুচকি হাসি হেসে তার পাশে দাড়ায় মাধুর্য।
আরহান সাকিবের সাথে কুশল বিনিময় করে ইনহান কে জিজ্ঞেস করে আর কেউ এসেছে কী না।
ইনহান জানায় এসেছে, ওরা গিয়েছে আইসক্রিম আনতে।
লোক পাঠাতে চেয়েছিল তবে পত্রী,খুশবু শয়ন কে নিয়ে বাহিরে আছে।

সাকিব মাধুর্যের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রায় তিনদিন পর আজ মাধুর্যকে দেখতে পাচ্ছে সজ্ঞানে।

কালো সালোয়ার কামিজে দারুণ লাগছে মাধুর্য কে।মাথায় দেওয়া ঘোমটার জন্য বউ বউ একটা ভাব এসেছে।
মাধুর্যের হাতে শুধু একটা রোদ সমস্যা।

একজন কর্মচারী তাদের শাড়ি দেখাচ্ছিল। জেরিনের পছন্দ হলো লাল রঙের শাড়ি এদিকে মাধুর্য বেশ সময় ধরে হাতে নিয়ে বসে আছে কলা পাতা রঙের শাড়ি নিয়ে। সে মুখে কিছুই বলছে না। জেরিন তার পছন্দ মতো সবটা করছে।

শাড়ি পছন্দ করার ক্ষেত্রে মাধুর্য কোনো চাহিদা দেখায়নি কারণ জেরিন তার ইচ্ছার কোনো মূল্য দিবে না।

চলে আসার সময় হলে সাকিব মাধুর্যকে তাদের সাথে যেতে বললে আরহান সাকিব কে বলল,

“ভাই আমি ওকে নিয়ে এসেছি আমানত হিসেবে। আমিই ম্যামকে দিয়ে আসবো।”

আরহানের কথায় দ্বিমত করার সুযোগ সাকিব পায়নি কারণ মাধুর্য তার পূর্বেই আরহানের বাইকে উঠে বসেছে।কেমন একটা ঝিম ঝিম অনুভূতি হচ্ছে সাকিবের মাথার পিছনটায়। মনে হচ্ছে তীব্র যন্ত্রণা দিয়ে কেউ নিয়ে যাচ্ছে তার প্রাণবায়ু।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে