ভালোবাসায় তুমি আমি পর্ব-৮+৯

0
994

#গল্প_ভালোবাসায়_তুমি_আমি
#পর্ব (৮)
#লেখিকাঃ রাদিয়াহ রাফা রুহি

ভাড়ি বেনারশী পড়ে বসে আছি বাসর ঘরে।এই বেনারশির তাড়নায় নিজেকে নিজের কাছে বুঝা মনে হচ্ছে। কি থেকে কি হয়ে গেলো কিছুই বুঝতে পারলাম না। হঠাৎ এমন হবে তা বুঝি নি। যার সাথে শুধু মাত্র এক দিনই দেখা হয়েছে আজ সে আমার সামী। হ্যাঁ আমার বিয়ে হয়ে গেছে। আর আমার কোনো উপায় ছিলো না এই বিয়েটা করা ছাড়া। এখনো মাথাটা ভাড় হয়ে আছে। সেদিনের পর থেকে এই ছয় দিনের মধ্যে আজকে অব্দি যা কিছু আমার সাথে হয়েছে সব কিছু ভাসছে চোখের সামনে—-

———-+++++————-+++++————-
ফ্লাস ব্যাক
—————

নীলাকে রিশিকা ঘরে টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় শাহানা খান দেখে ফেলে। তারপর তিনি বুঝতে পারে কিছু একটা হতে চলেছে।

শাহানাঃএতো দিন সব মুখ বুজে সহ্য করেছি। ওই রাক্ষসী টার ভয়ে ইমরানকে কিছু বলতে পারিনি। আর আজও যদি আমি চুপ করে থাকি এই বাচ্চা মেয়েটার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে আমি নিজেকে কোনো দিন ক্ষমা করতে পারবো না। এতে আমার যা হওয়ার হোক। উনি এসব পাচকান না ভেবে বাড়ির লেন্ড লাইন থেকে ফোন করলেন মিস্টার খান কে।

উনি তারাতারি মিস্টার খানকে বাড়ির লেন্ড লাইন থেকে ফোন করে আসতে বলেন।

ফোন ধরেই ব্যাস্ততা দেখান।উনি প্রথমে আসতে চাননি। সব মিথ্যা বলে বিশ্বাস করেনি।

তারপর দাদি(শাহানা খান) ধমক দিয়ে বলে তুই তোর মাকে মিথ্যা বাদী বলছিস এইটা দেখার জন্যই তোকে মানুষ করেছি। এক্ষুনি যদি বাসায় না আসিস তাহলে অনেক বড় কিছু হয়ে যাবে। আমি তোকে হুকুম দিচ্ছি।

অগ্যতা মিস্টার খান আসতে বাধ্য হয়। এসে আমার চিল্লানো শুনে দরজা ধাক্কা দেই আর আমাকে এরকম অবস্থায় দেখেন। উনি নাকি মিসেস খান একটা থাপ্পড় ও মেরেছেন।আর আমাকে এই অবস্থা দেখে অনেক নাকি চিন্তায় পরে গেছিলেন। তারপর হসপিটাল নিয়ে আসেন।

জ্ঞান ফিরে নিজেকে হসপিটালের বেডে আবিষ্কার করি। এতো বছরে যাকে আমায় নিয়ে চিন্তিত দেখি নি আজ নাকি তিনি আমার জন্য এতো টা ডেস্পারেট হয়ে পরেছেন ভাবতেই অবাক লাগছে।। আর আমার জন্য নাকি মিসেস খানকে চর ও মেরেছেন। এটা শুনে তো আমি আরও অবাক।

তারপর হসপিটাল থেকে দু দিন পর বাড়ি ফিরি। আর এসেই জানতে পারি মিস্টার খান দুজন সার্ভেন্ট রেখেছেন। সার্ভেন্ট দুজন হাসবেন্ড ওয়াইফ।

এই ছয় দিন আমাকে একটা কাজও করতে দেইনি। আমার তাদের সাথে খুব ভাব হয়ে গেছে এই ছয় দিনে। এই কদিন দাদিও আমাকে খুব যত্ন করেন বয়স্ক মানুষ আমার জন্য আর কতই করবে।
আর মিসেস খানের মধ্যে কোনো প্রকার অনুতপ্ত নেই।

সার্ভেন্ট রেখেছেন জন্য মিসেস খান এটা নিয়ে অনেক ঝামেলা করেছেন।

এর মধ্যে আমার আর কলেজ যাওয়া হয়নি।
প্রাপ্তিকে বাড়ির লেন্ড লাইন থেকে লুকিয়ে একবার ফোন করেছিলাম। সব নোটস গুলো যেনো আমাকে দিয়ে দেই।

হঠাৎ দাদি এসে আমাকে আরও চমকে দেওয়ার মতো আরও একটি খবর দেই আজই নাকি আমার বিয়ে। সেটাও মিস্টার খানও জানেন। উনিও রাজি আমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য। আর দাদি এটাও জানতে পারেন মিসেস খানকে কথা বলার সময়।

আমাকে যার সাথে এরা বিয়ে দিতে চাইছে সে নাকি একটা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। আর এই কথা টা মিস্টার খান জানেন না যে মিসেস খান আমাকে একটা প্রতিবন্ধীর সাথে ঠিক করেছে। আর ছেলেটা প্রতিবন্ধী হওয়াই আমার ছবি দেখেই ছেলের বাড়ির লোক বিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায় আমার সাথে।

আর এই কথা শুনে আমি যেনো আরও ভেঙে পড়ি। আমি দাদিকে বলি দাদি যে করেই হোক বিয়েটা বন্ধ করো। দাদি কিছু বলেন নি তখন।

আর বিয়ের বেনারশী পরে ঘরে বসে আছি আর চোখের পানি ফেলছি।

বর আসার এক ঘন্টা আগে দাদি এসে আমাকে বাড়ি থেকে পালানোর । তারপর দাদি আমাকে পালাতে সাহায্য করে। আর আমার উদ্দেশ্য হলো প্রাপ্তির বাসায় যাওয়া। একবার আমি ওর কাছে থেকে ওর বাসার ঠিকানা নিয়েছিলাম।

সবাই যখন বর এসেছে শুনে বর নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পরে তখনই দাদি আমাকে চিলেকোঠার ঘর থেকে সবার অগচরে বের করে দেন বাড়ির পিছন দরজা দিয়ে । দাদি আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেই। এই বাড়িতে দাদিই একমাত্র যে কি না আমাকে ভালোবাসেন। তারপর আমি দাদির থেকে দ্রুত বিদায় নেই।

——-আমি দৌঁড়চ্ছি আর ভাবছি এতক্ষনে হয়তো সবাই জানতে পেরে গেছে আমি পালিয়ে এসেছি। আর ভাবছি এখন যদি জানতে পারে দাদি আমাকে পালাতে সাহায্য করেছে তাহলে দাদির কি হবে। না আর ভাবতে পারছি না।

–দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে একটা গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায় আর অজ্ঞান হয়ে যায়।

তারপর যখন জ্ঞান ফিরে তখন আমি নিজেকে সম্পুর্ন আলাদা একটা জায়গায় দেখতে পায়। তারপর আস্তে আস্তে চোখ খুলে দেখি একটা মাঝ বয়সি মহিলা আর একটা মেয়ে হুইল চেয়ারে বসা আমার দিকে অতুল আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছেন।

আর কতক গুলো সার্ভেন্ট দাঁড়িয়ে আছে।

আমি উঠতে যাবো ——-তখনি মহিলাটি বলে একি মা উঠছো কেন। তোমার শরীর ঠিক নেই তুমি শুয়েই থাকো।
আমি শুয়ে পড়ি।

আর পরক্ষনেই আরেক জনের দিকে চোখ পড়ে একি এটা তো সেদিনের সেই লোকটা। আমি উনার বাসায় কি করে। উনাকে দেখে তো আমার চোখ গুলো ছানাবড়া হয়ে গেছে।

আমি আনমনেই বলে উঠি আপনি।

লোকটা আমার কথার উত্তর না দিয়ে
আমাকে জিজ্ঞেস করে এখন কেমন লাগছে।

নীলাঃ আগে বলুন আমি এখানে কেনো।

শুভ্রঃ প্রশ্নটা আমি আগে করেছি তাই আপনি আগে বলুন এখন আপনার শরীর কেমন।

নীলাঃ আমি এখন ঠিক আছি । এখন বলুন আমি এখানে কিভাবে এলাম।

শুভ্রঃ দেখুন যেহেতু আপনি আমার বাড়িতে সেহেতু আমিই আপনাকে এখানে এনেছি তাই না।

আমি কিছু বলার আগেই হুইল চেয়ারে বসা মেয়েটা বলে উঠে—-

হিয়াঃ আহ ভাবি এতো কথা বলো না তো তুমি অসুস্থ। এখন তুমি বিশ্রাম নাও।

মেয়েটির মুখে ভাবি ডাক শুনে আমি তো পুরো অবাক কি বলে মেয়েটা।

সাথে সাথেই অই লোকটার দিকে তাকায় আর লোকটাও তাকায় আমার দিকে—

নীলাঃ এসব আপনারা কি বলছেন। আর ভাবি মানে।

শুভ্রঃ আরে তোমরা আমার কথা তো শুনো।
আমি তোমাদের সব কিছু বলছি।

উনি আরও কিছু বলতে যাবেন তার আগেই ভদ্র মহিলাটি আমার দিকে এগিয়ে এসে বললেন —-

মোল্লিকাঃ তোমার নাম কি নীলা। আর তুমি অজ্ঞানই বা কি করে হলে। মা তুমি ভয় পেয়ো না আমি আছি তো আমি তোমাদের আবার বিয়ে দেবো।কোনো চিন্তা করো না। তুমি অজ্ঞান থাকা অবস্থায় আমরা কাজি ডেকে রেখেছি।আমি আবার তোমাদের বিয়েটা দেখতে চাই। যাতে শুভ্র আর কিছু বলতে না পারে আর আমি অকে কিছু বলতেও দিবো না।

নীলাঃ আপনি আমার নাম কি করে জানলেন।আর আপনারা এসব কি বলছেন বিয়ে মানে।আমি কেনো বিয়ে করতে যাবো।
আমি হাত জোর করে বললাম প্লিজ আন্টি আমাকে যেতে দিন।

উনাদের কতো করে বুঝালাম কিন্তু আমার কথা কিছুতেই শুনলেন না। উনারা ভাবছেন আমি এই লোকটা কে দেখে ভয় পেয়ে নাকি এখান থেকে চলে যাওয়ার কথা বলছি।

শুভ্রকে কিছুই বলতে দিলো না অর মা আর না আমাকে।

এতক্ষনে যেনে গেছি লোক টার নাম শুভ্র আর হুইল চেয়ারে বসা মেয়েটা তার বোন।

শুভ্র অনেক বার বলার চেষ্টা করলো সত্যিটা কিন্তু কিছুতেই শুনলো না। উনি বলে দিলেন উনার সিদ্ধান্তই শেষ কথা।

আমাদের রেজিষ্ট্রেশন করালেন আর কাজি দিয়ে বিয়ে দিয়ে দিলেন। আমি কবুল বলতে চাচ্ছিলাম না বলে কি উপায় আছে।

আমি কান্না করতে করতে আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

জ্ঞান ফিরে আমি নিজেকে বিছানায় দেখি আমার বুঝতে অনেক টা সময় লেগে গেলো আমার সাথে আজকে কি হয়েছে।
—————————————————–
বর্তমান
———-
কারোর দরজা খুলার আওয়াজে আমি কল্পনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসি আর চমকে যায় কারণ আমি আজকের ঘটনায় ভাবনায় মগ্ন ছিলাম!

চলবে——-

#গল্পঃভালোবাসায়_তুমি_আমি
#পর্ব ( ৯ )
#লেখিকাঃ রাদিয়াহ রাফা রুহি

হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে চমকে যায়।
।তারপর দেখি শুভ্র বাবু আসছেন।
উনি দরজা টা লাগিয়ে দিলেন।

আমি একটু নড়েচড়ে বসলাম। প্রথম কোনো ছেলের ঘরে অন্য রকম লাগছে। এই অনুভূতি টা ঠিক বুঝানোর মতো না। এর আগে তো কোনো দিন কোনো ছেলের সাথে কথা অব্দি বলিনি। আর আজকে কিনা এই ছেলের সাথে রাত কাটাতে হবে। এমন কেন ফিল হচ্ছে। কি অদ্ভুত আর নিতে পারছি না। রীতি মতো কাপছি আমি কেন এমনটা হচ্ছে নিজেও জানি না।

আর একটা কথা ভেবে খুব রাগ হচ্ছে।
আর রাগ করেও বা কি করবো। এখানে উনারও তো কোনো দোষ নেই।কিন্তু আমাকে জানতে হবে যে ওই মেয়েটা আমাকে কেনো ভাবি বললো। আর ওই মহিলাই বা কিভাবে আমার নাম জানলো।
এই ব্যাপার টাই আমার মাথায় ঢুকছে না।প্রশ্ন গুলোর উত্তর জানা আমার খুব দরকার।

আমি উনার দিকে একটু তাকালাম।
দেখলাম উনি আস্তে আস্তে
দরজা টা বন্ধ করে মাথাটা নিচু করেই ঢুকছেন। আমিও মুখটা নিচু করেই রাখলাম। কারণ আমার খুব নার্ভাস লাগছে।এই নার্ভাসনেস টা আমাকে কাটাতেই হবে। আর যতো গুলো প্রশ্ন ভেবে রেখেছি করবো। আর উনাকে উত্তর দিতে হবে।

শুভ্র ঘরে ঢুকে ভাবছে কি বলবো এই মেয়েটাকে। পায়চারি করে যাচ্ছে শুভ্র। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে পায়চারি করেছে। শুভ্র খুব ঘামছে। এইটা কি হচ্ছে। আমি ওর সামনে যেতে পারছি না কেন। কেনো এইরকম অনুভুতি হচ্ছে।

আমি দেখলাম উনি পায়চারি করেই যাচ্ছে।
নিরবতা ভেঙে বললাম কি সমস্যা আপনার এতো রাতে পায়চারি করছেন কেনো। উনি শুধু আমার দিকে তাকালেন একটু। তারপর স্থির হয়ে দাড়ালেন কোনো কথা বললেন না।

আমার খুব রাগ হলো আমি উনার সাথে কথা বলছি আর উনি কোনো কথায় বললেন না।
আমি খাট থেকে নেমে কিছুটা সামনে যেতেই আমার মাথাটা ঘুরছিল আর আমি চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে নিলাম– একি আমি এখন পরলাম না কেন। — আমি চোখ পিটপিট করে তাকালাম। প্রথমে এক চোখ পরে আরেক চোখ।খুলেই দেখি উনি আমাকে ধরে আছেন—-

আমি উনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনি আমার দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে আছেন।
অদ্ভুত একটা শিহরণ বয়ে গেলো।

উনার সেই অদ্ভুত চোখ যুগল এতো মহনীয় কেন লাগছে।হালকা মৃদু আলোই উনার মুখ দেখা যাচ্ছে! কি অসম্ভব ভালো লাগছে উনাকে। আমি উনার দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম। আর গলাটা একটু খেকিয়ে বললাম —আ-আ আমাকে কি এই ভাবেই ধরেই রাখবেন নাকি-!

উনি আমার দিকে তাকিয়েই আছে। আমি আর একটু জোরে কাশি দিলাম আর নড়লাম সোজা হওয়ার জন্য। উনি টের পেয়ে পরক্ষণেই আমাকে সোজা করে দিলেন।আর উল্টো দিক মুখ করে দাড়ালেন।

শুভ্র এতোক্ষন নিজের মধ্যে ছিল না কি সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে এই মেয়ে কি আমাকে অকালেই মারতে চাই নাকি!

নীলা আর চুপ করে থাকতে পারলো না। তার যে আর ভালো লাগছে না।

নীলাঃ এই যে শুনছেন —-আমার আপনাকে কতক গুলো প্রশ্ন করার আছে।কিন্তু আমাকে আপনি প্রশ্ন করার সুযোগই দিচ্ছেন না। অনেক প্রশ্ন করার আছে— সেগুলো জানা আমার খুব দরকার।

শুভ্রঃ আমি জানি আপনি কি জানতে চান— কিন্তু আপনি আগে সুস্থ হোন আমি সব কিছু বলবো আপনাকে। এখন আপনি শুয়ে পড়ুন— ডক্টর আপনাকে রেস্ট নিতে বলেছে—শান্ত মৃদুস্বরে বললো শুভ্র।অন্য দিকে মুখ ফিরিয়েই।

নীলা যেনো এই রিনরিনে মিষ্টি কন্ঠের মহোতে পড়ে গেলো। কি সুন্দর কন্ঠ।নীলা নিজেকে সংযত করলো।

নীলাঃ না না আমি এক্ষুনি সব জানতে চাই। প্লিজ বলুন প্লিজ —

আমি উনার কথা কোনো ভাবেই মানলাম।না আমি জেদ ধরে বসলাম।শুনবো বলে।

শুভ্রঃ ঠিক আছে। বলুন কি কি জানতে চান আপনি —–

নীলাঃ আমি কিভাবে আপনার বাড়ি আসলাম — আমি একটা গাড়ির সামনে পরেছিলাম। তাহলে আপনি আমাকে কি করে পেলেন।আর ওই মেয়েটাই বা আমাকে ভাবি কেন বললো আর ওই মহিলা মানে আপনার মা উনি আমার নাম জানলেন কি ককরে বিয়েই বা কেনো দিলেন —-

এক সাথে সব প্রশ্ন করে ফেললাম উনাকে—- এতো কথা বলার ফলে আমি একটু জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছিলাম —

শুভ্রঃ আরে আরে রিলেক্স! উনি আমাকে বিছানায় বসিয়ে দিলেন দুই বাহু ধরে –এতো গুলো প্রশ্ন এক সাথে করলে কোনটার আন্সার আগে দিবো —

-তারপর উনি এসে আমাকে পানির গ্লাস এগিয়ে দিলেন। আমি পানি নিয়ে ঢকঢক করে গিলে খেয়ে ফেললাম।

শুভ্রঃ সব কিছু জানতে চাইলেন কিন্তু আমি কে সেটাই জানতে চাইলেন না শুধু।
মেডাম আমি কিন্তু আপনার বর —আর আমার ব্যাপারে জানতে চাইলেন না।

নীলার দিকে একটা দুস্টু হাসি দিয়ে—- কি হলো মেডাম—চুপ কেনো

নীলাঃ না এমনি ।। আচ্ছা বলুন সবকিছু না জানা অব্দি আমার শান্তি হবে না।

শুভ্রঃ ওকে শুনুন তবে — আপনি দোঁড়ে এসে আমার গাড়ির সামনেই পড়েছিলেন। আর ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যান। আপনাকে ডাকি কিন্তু আপনার জ্ঞান ফিরে নি তারপর আপনাকে আমার বাড়ি নিয়ে আসি। আর এখন আমার গাড়ির সামনে একজন পরেছে তাকে তো আর আমি ফেলে রেখে আসতে পারি না তাই আপনাকে আমার বাসায় নিয়ে আসি।

— ডক্টর এসে আপনাকে দেখে চলে যায়—আর আমি আমার মা—আর বোন অদের কিছু বলবো তার আগেই আপনার জ্ঞান ফিরে আসে।

নীলাঃ তাহলে ওই মেয়েটা মানে আপনার বোন আমাকে ভাবি কেনো ডাকছিল।

শুভ্রঃ সে অনেক কাহিনি—-শুনুন তবে–
তারপর শুভ্র নীলাকে সবকিছু খুলে বলে অর সাথে হওয়া এইক’দিনের সব কিছু।

আর আমার মা বোন ওরা ভেবেছে আপনিই আমার সেই বাচ্চার মা আর আমার বউ। আর সময় টাও ছিলো সাত দিনের দিন আর আপনাকেও আমি সে দিনই আনি তাও
আবার কোলে করে তার ওপর অজ্ঞান আপনি আমি ঘাবড়ে যায় অতো কিছু মাথায় ছিলো নাকি।তাও আমি বলতে চেয়েছি। অরা আমার কোনো কথা শুনে নি—-

নীলা এতক্ষনে সবটা বুঝতে পারলো কেনো অই মেয়েটা আমাকে ভাবি বলছিল।

নীলাঃ হুম সব টা বুঝলাম।—-কিন্তু উনারা আমার নাম কি করে জানলেন?

শুভ্রঃ কারোর ব্যাগে যদি সুন্দর করে নেম প্লেট ঝুলানো থাকে তাহলে কি নামটা জানা খুব কঠিন মেডাম।

শুভ্র নীলার দিকে বাঁকা চোখে তাকিয়ে বললো কথাটা।

নীলা এতো কিছুর মধ্যে ভুলেন গেছিলো যে ও ওর ব্যাগ টা এনেছিল। যার মধ্যে ওর কিছু বই আর দুই তিন টা জামা কাপড়।

নীলাঃ অহ হ্যাঁ আমি তো ব্যাগ এনেছিলাম।এতো কিছুর মধ্যে ভুলে গেছি। আমার ব্যাগ টা কোথায় বলুন তো।

শুভ্রঃ আগে বলুন যে ব্যাগে কেন আপনার নেম প্লেট। এই প্রথম দেখলাম কেউ তার ব্যাগে নেম প্লেট রাখে।

নীলাঃ ওই নেম প্লেট টা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড প্রাপ্তি আমাকে দিয়েছে। মেলা থেকে আমার জন্য নিয়ে এসেছিলো। আর ওর ইচ্ছে যে আমি যেনো নেম প্লেট টা ব্যাগের সাথেই রাখি।

চলবে—

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে