ভালোবাসায় তুমি আমি পর্ব-২৪+২৫

0
912

#গল্পঃভালোবাসায়_তুমি_আমি
#পর্ব২৪
#লেখিকাঃ রাদিয়াহ রাফা রুহি

পরদিন সকালে নীলা সারা শরীরে তীব্র ব্যাথা নিয়ে ঘুম থেকে উঠলো। মাথা টা হাত দিয়ে চেপে ধরে বিছানা থেকে নামলো এবং নিচের দিকে তাকালো। তাকিয়েই ওর চোখ গুলো বড় বড় হয়ে যায়।নীলা একদম উলঙ্গো অবস্থায় ছিলো।

আমি উলঙ্গো কেন?নীলার মাথা টা প্রচন্ড ব্যাথায় দবদব করছিলো।কিন্তু ও সঙ্গে সঙ্গেই কিছুতেই মনে করতে পারলো না ওর সাথে ঠিক কি হয়েছে।
গতকাল রাত্রে ও এক্সাক্টলি ঠিক কি কি কান্ড ঘটিয়েছে। মাতাল অবস্থায় ও শুভ্রকে সমানে জড়িয়ে ধরিয়েছিলো। এবং ওর গায়ের উপর বমি ও করে দিয়েছিলো। ওই ঘটনা গুলো মনে পরতে ঝট করে নীলার ঘুমের রেশ কেটে যায়।
আর তারাতাড়ি করে নিজের জামা কাপড় গুলো নিয়ে সেগুলো পড়ে ফেলে। নীলা দৌঁড়ে ঘরে ঘর থেকে বেরোতেই যাচ্ছিলো তখনি সে দেখলো একজন পরিচারিকা এক বাটি হ্যাঙ্গোভার স্যুপ নিয়ে আসছে।

মেডাম আপনি উঠে গেছেন।আর আমার হ্যাঙ্গোভার স্যুপ টাও রেডি!

আচ্ছা আর আপনাদের স্যার কোথায়? নীলা নরম গলায় জিজ্ঞেস করলো। কারণ ও গিল্টি ফীল করছিলো।

তুমি আর আমায় হাবি বলে ডাকছো না কেন?

নীলার পিছন দিক থেকে একটা স্পষ্ট গলার স্বর ভেসে এলো।

এবং নীলা ইমিডিয়েটলি মাথা ঘুরে তাকালো।

শুভ্র হঠাৎ করে লম্বা লম্বা পা ফেলে নীলার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। ওর দৃষ্টি ছিলো গভীর আর মনোমুগ্ধকর এবং ওর এক্সপ্রেশন ছিলো বরফের মতো শিতল। দেখে মনে হচ্ছিলো তা যেন যে কাউকেই পাথর করে তুলতে পারে।

নীলা মাথা নিচু করে আছে। লজ্জা করছে ওর খুব।কি কি করেছে সে গতকাল রাতে। সে পারলে এক্ষুনি যেন সেখান থেকে পালিয়ে যাবে।কিন্তু তা না করে সে মাথা নিচু করেই দাঁড়িয়ে রইলো।

শুভ্র এসে নীলা সামনে দাঁড়িয়ে পরল। কি হলো বলো আমাকে আর হাবি ডাকছো না কেন।আর রাতে তুমি এ্যালকাহোল কোথায় পেয়েছিলে।

পরিচারিকা টি মিটিমিটি হাসছে। তা শুভ্রর চোখে পরতেই বললো তুমি স্যুপ টা আমাকে দাও।পরিচারিকা আর কোনো কথা না বলে শুভ্রর হাতে স্যুপ দিয়ে দিলো আর সেখান থেকে চলে গেলো।

আসো বসবে বিছানায় গিয়ে। শুভ্র স্পষ্ট দেখতে পারছিলো যে নীলা গতকাল রাতের বিষয় টা নিয়ে গিল্ট ফীল করছে।

নীলা কোনো কথা না বলে মাথা নিচু করেই বিছানায় গিয়ে বসে পরলো।

শুভ্র স্যুপ টা নিয়ে চামচে করে নীলার মুখের সামনে ধরলো।

হা করো।খেয়ে নাও তোমার শরীর দুর্বল। নিজের তো অবস্থা খারাপ করেইছো সাথে আমারও।

নীলা তাও কোনো কথা বললো না।চুপচাপ স্যুপ মুখে পুরে নিলো।
স্যুপ খাওয়ানো শেষ করিয়ে শুভ্র স্যুপ বোল টা টি টেবিলে রেখে নিলার মুখ সযত্নে মুছিয়ে দিলো।

অন্যদিকে ঘুরেই আছে।

শুভ্র শান্ত দৃষ্টিতে নীলার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমার দিকে ঘুরে তাকাও।

নীলা তাও তাকালো না।

কি হলো তাকাও। তাকাও বলছি।কিছুটা জোরে চেচিয়ে।

নীলা ভয়ে ভয়ে শুভ্রর দিকে তাকালো। ওর দিকে তাকিয়েই আবার চোখ বন্ধ করে ফেললো।
নীলা কিছুতেই শুভ্রর চোখে চোখ রাখতে পারছিলো না।

চোখ খুলো। কি সমস্যা তোমার। তোমার সাহস করে হয় ওই সব জিনিস খাওয়ার আর তুমি পেলেই বা কোথা থেকে এই বাড়িতে তো কেউ ড্রিংক করে না।

নীলাকে চুপ থাকতে দেখে শুভ্রর রেগে যায়।

নীলা তুমি কি বলবে নাকি আমি অন্য ব্যবস্থা নিবো।কোন টা চাও বলো। আর আমি যদি জানতে পারি তুমি কোথা থেকে পেয়েছো তার অবস্থা খুব খারাপ করে দিবো।আমি জানি তুমি নিজে এটা আনো নি। কারোর থেকে নিয়েছো।
কি হলো বলো। ডেম ইট।

শুভ্রর চেচানো শুনে নীলা ভয়ে কেদে দিলো। আর গড়গড় করে বলে দিল।

আসলে গতকাল রাতে আমি বাইরে কিছু পরে যাওয়ার আওয়াজে বেরিয়ে দেখি দাড়োয়ান কাকা—–

দাড়োয়ান কাকা কি– শুভ্র ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলো।

নীলা আমতা আমতা করে বললো দাড়োয়ান কাকা খাচ্ছিলো আর আমি জানতাম ওই বোতল টাই মদ আছে।এখানে দাড়োয়ান কাকার কোনো দোষ নেই আমিই জোর করে নিয়ে এসেছি। উনি আমাকে দিতে চান নি।

শুভ্রর চোয়াল নিমিষেই শক্ত করে ফেলে।আর বাইরে বেরিয়ে যেতে নিলে নীলা উঠে শুভ্রর হাত টেনে ধরে।

আপনি যাবেন না।আমার আপনার সাথে কিছু কথা আছে। প্লিজ আমার জানা খুব দরকার সেগুলো।

শুভ্র নীলার এরকম আকুতি ভরা কন্ঠে শুনে নিজেকে শান্ত করছে। লম্বা লম্বা শ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করছে।

নীলা ভ্রু দুটো কুচকে আকুতি ভরা নয়নে তাকিয়ে আছে শুভ্রর দিকে।

শুভ্র পিছনে ফিরে তাকালো নীলার দিকে। বলো কি বলবে।

আপনি আমাকে ভালোবাসেন শুভ্র প্লিজ বলুন।

শুভ্র নীলার প্রশ্নের কি উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না।কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললো—+

হঠাৎ এই প্রশ্ন করলে যে।

না বলুন। আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন না।আমি জানি আপনি আমাকে ভালোবাসেন তাও একবার আপনার মুখ থেকে শুনতে চাই।

শুভ্র এটাই চাইছিলো যে একদিন নীলা নিজেই তাকে বলবে– তার কাছে জানতে চাইবে আমি ওকে ভালোবাসি কি না।শুভ্র নিজের মনে একটা উষ্ণ সুখ অনুভব করলো। আজ সে বলবে যে সে নীলাকে ভালোবাসে।কারণ সেও যে নীলার চোখে তার জন্য ভালোবাসা দেখতে পেয়েছে।

নীলা শুভ্রর কাছে উত্তরের আশা করছে।সে শুধু একবার শুনতে চাই ভালোবাসি কথা টা।

শুভ্রর এক নিমিষেই সব রাগ গলে একবারে জল হয়ে গেছে। শুভ্র মুচকি হেসে নীলার দিকে আরও কিছু টা এগিয়ে গেলো। তারপর আলতো করে নীলার নরম সফটেস্ট গালে হাত দিলো —

নীলা শুভ্রর হাতে নিজের হাত রাখলো। অপলক নয়নে তাকিয়ে আছে।নীলার মনে হচ্ছে সে আজ কে পৃথিবীর সব থেকে সুখি মানুষের একজন হতে চলেছে।

আমি তোমাকে ভা——-

শুভ্র আর কিছুই বলার আগে

তখনি তুহিনা প্রায় দৌড়ে এলো। শুভ্র— শুভ্র

শুভ্র নীলাকে ছেড়ে দিয়ে তুহিনার দিকে লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে গেলো।

কি হয়েছে তোকে এতো অস্থির দেখাচ্ছে কেনো। কি ব্যাপার। কি হয়েছে?

শুভ্র সর্বনাশ হয়ে গেছে।

কি হয়েছে বল আমায়।

শুভ্র আমাকে বাড়ি যেতে এক্ষুনি। ফুয়াদ খুব অসুস্থ হয়ে পরেছে।

কি হয়েছে ওর।তুই যাহ এতো টেনশন করিস না।আমি এদিক টা সামলে নিবো।

কিন্তু তুই তো জানিস এর মধ্যে প্রায় বেশ কয়েক বার নীলার উপর —-
কিছু বলার আগেই ওর চোখ গেলো নীলার উপর

শুভ্র মাথা নেড়ে না করলো।এখানে কিছুই না বলার জন্য।

তুহিনা চিন্তিত হয়েই বললো এখান থেকে একটু আয় প্লিজ। একবার নীলার কে দেখে শুভ্র কে প্রায় টেনে সেখাম থেকে নিয়ে গেলো।

নীলা চাতক পাখির মতো ওদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। ছলছল চোখে। কি হচ্ছে সব কিছু যেনো নীলার মাথার উপর দিয়ে গেলো। কি বলছিলো তুহিনা এক্ষুনি। ফুয়াদ কে? মনে তো হলো তুহিনার খুব কাছের কেউ। আর আমাকে নিয়ে কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেলো।

নীলার চোখ থেকে জল গরিয়ে পরলো।
সে বিছানায় ধপাস করে বসে পরলো।

শুভ্র তুহিনা কে চলে যেতে বললো। একদিনে সব দেখে নিবে। তাছাড়া গার্ডসরা তো আছেই।তুহিনা চলে গেছে ওর বাসায়।

শুভ্র সোফায় বসে আছে চিন্তিত হয়ে।এমন সময় ফিহা খুব সাবধানে পা ফেলে উপরে যাচ্ছে। উদ্দেশ্য নীলার রুমে যাওয়ার। এখানে শুভ্রকে দেখে ভয়ে ভয়ে সে উপরে উঠছে।যাতে শুভ্র একটুও বুঝতে না পারে।

সে কিছুটা উপরে উঠতেই দৌড়ে নীলার রুমের দিকে চলে গেলো।

শুভ্র সব কিছুই খেয়াল করেছে।ফিহার এহেন কান্ড দেখে শুভ্র এতো চিন্তার মধ্যেও হেসে ফেললো। এই বাচ্চা টির উপর এতো দিনে অনেক মায়া পরে গেছে।আর আমার ওর উপর এই আলাদা যে টান এটা কেন শুভ্রর এখনো অজানা।কে হয় মেয়েটা ওর কেন আমার এই অদ্ভুত টান। কেনো???শুভ্রর এর উত্তর টা সত্যিই জানা নেই।

ফিহা গিয়ে দেখে নীলা বসে আছে। সে একদম হাপিয়ে গেছে।তার মাঝে মাঝেই শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আর একটু দৌড়ানোর ফলে এখন সে অনেকটাই হাপাচ্ছে।

মা —- হাপাতে হাপাতে ডেকে উঠলো ফিহা।

নীলার একটা রিনরিনে কন্ঠে ধ্যান ভেঙে গেল। আর তার ভ্রু দুটো কুচকে গেল।সে ফিহাকে হাপাতে দেখে বললো।

আরে এঞ্জেল কি হয়েছে হাপাচ্ছো কেন। কি হয়েছে মা।নীলা তড়িঘড়ি করে উঠে ফিহাকে কোলে তুলে নিয়ে খাটে বসিয়ে দিলো।

নীলা ফিহা কে গ্লাসে করে পানি এগিয়ে দিলো।
মুখের সামনে ধরলো ফিহা পানি খেয়ে নিলো।

মা আমি তো বাবাকে ভয় পাই।তোমার কাছে আসছিলাম তখন দেখলাম নিচে বাবা বসে আছে। তাই দৌড়ে এসেছি।ফিহা এখনো অনেকটাই হাপাচ্ছে।

ঠিক আছে এঞ্জেল আর কথা বলতে হবে না।তুমি চুপটি করে বসো।নীলা ফিহাকে টেনে নিজের কাছে এনে জড়িয়ে নিলো।

আর একটা চিন্তার ভাজ পরলো তার কপালে। এতো ছোট একটা বাচ্চা একটু দৌড়ানোর জন্য এতো টা হাপিয়ে গেলো।বুঝতে পারলো সে কিছু।সে তো সারাদিন বাড়ি থাকতো না।আর ফিহাকেও অতো টা সময় দেওয়া হয়নি।কিন্তু এই দুদিনে সে খেয়াল করেছে এঞ্জেল মাঝে মধ্যে জোরে শ্বাস নেই। আর শরীর রীতিমতো কেমন হয়ে যায়। সেদিন যখন ফিহার মধ্যে অন্যরকম লেগেছিলো শাশুড়ী মা প্রায় আমার থেকে ওকে জোর করে নিয়ে গেছিলো অন্য রুমে।আমি কিছু বলতেই পারিনি।

ফিহা কিছুটা চুপ থেকে বললো মা আমাকে একটু ঘুড়তে নিয়ে যাবে।আমার খুব ইচ্ছে বাবা তুমি আমি একটু ঘুরতে যাবো।আমাকে বাবা একটুও ভালোবাসে না মা। তোমার মতো।যেমন তুমি আমাকে ভালোবাসো।বাবা আমাকে কেনো ভালোবাসে না মা তুমি কি জানো। আমার তো খুব কষ্ট হয়।

ফিহা এখন কিছুটা স্বাভাবিক লাগছে।হাপাচ্ছে না।

নীলা ফিহার এরকম একটা কথা শুনে হতবাক হয়ে গেলো। এতো টুকু একটা বাচ্চার মনেও যে এতো একটা কষ্ট রয়েছে সে এতো টা ভাবেই নি।নীলার ফিহার কথা ফেলতে পারলো না। সে জানে বাবা মার অভাব টা একটা বাচ্চার মধ্যে কি প্রভাব ফেলতে পারে।ছোট বেলা থেকে আমি যে কষ্ট পেয়েছি আমি এঞ্জেলকে পেতে দেব না। এঞ্জেল ওর বাবা মা দুজনেরই ভালোবাসা পাবে।আমি ওকে ওর বাবার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হতে দেবো না।

ঠিক আছে মা আমরা আজ কে সন্ধ্যায় ঘুরতে বেরোবো। ঠিক আছে।

সত্যিই আমরা ঘুরতে যাবো মা। ফিহা নীলাকে জড়িয়ে ধরেই বললো। কিন্তু বাবা যদি না যায় তখন।

হ্যাঁ আমি তুমি আর তোমার বাবাও যাবে। এটা এঞ্জেল এর কাছে তার মায়ের প্রমিস। নীলা ফিহার গালে আলতো করে ছুয়ে বললো।

আমাকে যে করেই হোক শুভ্রকে রাজি করাতেই হবে।এঞ্জেল কে দেওয়া কথা আমি রাখবই যে করেই হোক।

এদিকে দরজায় দাঁড়িয়ে থেকে শুভ্র সবটাই শুনেছে।সে ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলো।ভেতরে আসার আগে ফিহার বলা সব কথায় শুনেছে।

চলবে—–

#গল্পঃভালোবাসায়_তুমি_আমি
#পর্ব২৫
#লেখিকাঃ রাদিয়াহ রাফা রুহি

শুভ্র দৌঁড়ে আসছে হসপিটালের ভেতরে একটা বছর তিন এক এর বাচ্চাকে কোলে করে নিয়ে।বুকের নিচে রক্তে লাল হয়ে যাওয়া একটা সাদা প্রিন্সেস গাউন। সাদা রক্ত হীন হয়ে যাওয়া একটা নরম মুখ।সারা শরীর নীল বর্ন ধারণ করেছে।আর গোল হয়ে কুঁকড়ে যাওয়া একটা শরীর । ঢুকেই ডক্টর ডক্টর বলে চেচাচ্ছে। শুভ্র একদম পাগলের মতো করছে।

ভেতর থেকে একটা নার্স এসে বললো।কি হয়েছে স্যার প্লিজ ডক্টর কে ডাকুন। এই মেয়েটা কে বাঁচান।

নার্সটি দেখেই বুঝে গেছে মেয়েটির হার্টে ব্লক আছে তাছাড়া তো কারোর শরীর এই ভাবে নীল হবে না।

তারাতাড়ি ডাকুন না। এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছেন ডক্টর কে ডাকুন তারাতাড়ি।

নার্স বাচ্চা মেয়েটি কে একটা স্ট্রেচারে শুইয়ে দিতে বললো মেয়েটিকে।শুভ্র শুইয়ে দিয়েও ওর একটা হাত ধরে আছে।

নার্স টি ডক্টর কে ডেকে আনলেন। ডক্টর এসে দেখে বাচ্চাটির খুবই নাজেহাল অবস্থা। একি এই বাচ্চাটির তো দেখে হচ্ছে মনে ব্লক আছে।

শুভ্র এক মুহুর্তের জন্য থমকে গেলো। চোখ থেকে জল গড়িয়ে পরলো না চাইতেও। ব্লক—- অস্ফুট স্বরে বলে উঠলো শুভ্র।

এতো কিছু বলার সময় নেই মিস্টার চৌধুরী। আমি আপনাকে পরে বুঝিয়ে বলছি সব টা।ওকে এক্ষুনি কেবিনের ভেতর শিফট করতে হবে।নার্স কুইকলি নিয়ে যান না হলে খুব মুশকিল হয়ে যাবে।তারাতাড়ি করুন।আপনারা খুব দেরি করে ফেলেছেন।

নার্স টি তারাতাড়ি বাচ্চাটিকে কেবিনের ভেতর নিয়ে গেলো।

শুভ্র তখনও বাচ্চাটির হাত ধরেছিলো হাতে টান পরতেই হাত টা শুভ্রর হাত থেকে ছেড়ে গেলো।

শুভ্র দেখা বসে পরলো।

দেখুন মিস্টার চৌধুরী আপনি এই ভাবে ভেঙে পরবেন না।বাচ্চাটি আপনার কি হয় তারাতাড়ি বলুন। আর না হলে আমরা অপারেশন শুরু করতে পারবো না।

শুভ্র কিছুটা অস্পষ্ট ভাবেই বলে দিলো বাচ্চাটি আমার মেয়ে। ওকে বাচান ডক্টর যে করেই হক ওকে বাচাতে হবে ডক্টর।

ডক্টর কিছু টা অবাক হলেও কিছুই বললো না।শুভ্রর একটা সাইন নিয়ে অপারেশন থিয়েটারের ভেতরে চলে গেলেন।

শুভ্র সেখানেই বসে কেঁদে উঠলো হুহু করে।একটা পুরুষ মানুষ যে এইভাবে কাঁদতে পারে সেটা শুভ্রকে না দেখলে বুঝা যেতো না।

হ্যাঁ সেই বাচ্চা মেয়েটি আর কেউ নয় ফিহা।
ফিহারই হার্ট ব্লক আছে।

শুভ্র নিজেকে কিছুটা শান্ত করে নিজের বাসায় ফোন করে বাকি সবাইকে হসপিটাল আসতে বললো।

কি জবাব দেব আমি মা কে কি জবাব দেব ফিহার কিছু হলে যে নিজেকে কোনো দিন ক্ষমা করতে পারবো না আমি।

শুভ্র নিজের মাথায় হাত দিয়ে কপাল চাপরাচ্ছে।তার নীলার কথা শোনা উচিত হয়নি আজ যদি নীলার কথা না শুনতো তাহলে এতো কিছু কক্ষনো হতো না। শুভ্রর চোখ দুটো কান্নার কারণে লাল হয়ে গেছে।চোখ গুলো ফোলা ফোলা হয়ে গেছে। চোখের নিচে কালো হয়ে গেছে।

কতক্ষন পর মোল্লিকা,, কাকন,, প্রাপ্তি, হিয়া সবাই হন্তদন্ত হয়ে হসপিটালে দৌঁড়ে ছুটে আসছে।

হিয়াকে নিয়ে আসতে চাইনি কিন্তু সে জোর করেই চলে এসেছে। কাকন আর প্রাপ্তি ওরা হিয়ার হুইল চেয়ার ঠেলে আনছে।

মোল্লিকা এসেই শুভ্রকে এইভাবে বসে থাকতে দেখে অবাক হয়ে গেছে।

শুভ্র আমার নাতনি ফিহা কোথায়। মোল্লিকা কাঁদতে জিজ্ঞেস করলো।

শুভ্র বসে থেকেই অপারেশন থিয়েটারের দিকে আঙুল দিয়ে দেখালো।

মোল্লিকা সেখানে থাকা চেয়ারে বসে পরলো। এতো দিন যেটার জন্য ভয় পাচ্ছিলাম সেটাই হলো এখন কি করবে। মোল্লিকা মুখে হাত চেপে কাঁদছে।

হিয়াঃ আর ভাবি,,ভাবি কোথায় ভাইয়া।তোরা তিন জন তো এক সাথে বেরিয়েছিলি।

শুভ্র এক ধ্যানে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। এখনো সে কেদে যাচ্ছে।

প্রাপ্তিঃ শুভ্র ভাই প্লিজ বলুন নীলা কোথায়। ওকে দেখতে পারছি না কেন। প্রাপ্তি কাকনের দিকে তাকিয়ে বললো প্লিজ কাকন শুভ্র ভাই কে বলতে বলো।নীলার বড় কোনো বিপদ হয়নি তো।

কাকনঃ শুভ্র এই ভাবে চুপ করে থাকিস না। তুই যদি এইভাবে চুপ করে থাকিস তাহলে আমরা বুঝবো কি করে এক্সাক্টলি কি হয়েছে।

সবার চোখে মুখে বিষন্যতার ছাপ। সবার চোখেই পানি।সবার চোখেই পানি।

শুভ্র দুই হাটুর উপর দুই হাত রেখে মাথা নিল ডাউন করে বসে আছে। আর চোখ দিয়ে পানি ফেলছে।

কাকন গিয়ে শুভ্রর দুই বাহুতে হাত দিয়ে শান্ত ভাবে জিজ্ঞেস করলো ভাবি কোথায়??

মোল্লিকাঃ তোরা তিন জন তো খুব খুশি মনেই বেরিয়েছিলি। আমার নাতনি টা তো কত দিন পর বাবা মায়ের সাথে কত টা খুশি ছিলো। নীলা কোথায় শুভ্র বল।

মোল্লিকা একেবারেই ভেঙে পরেছে।

শুভ্র এবার কাকন কে জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো।

নীলাকে কেউ তুলে নিয়ে গেছে।কান্না ভেজা গলায় শুভ্র বললো।আমি কিচ্ছু করতে পারিনি।কিচ্ছু না। আমি স্বামী হিসেবে নিজের স্ত্রীকে রক্ষা করতে অক্ষম। আমার নীলার কথা শুনা ঠিক হয়নি।আজ সন্ধ্যায় বেরোনো টায় যে আমাদের কাল হয়ে দাঁড়াবে আমি বুঝি নি।

কথা টা যেনো সবার কানে বিশের কাটার মতো গিয়ে লাগলো। মোল্লিকা হিয়া প্রাপ্তি সবাই এবার শব্দ করে কেদে দিলো।
———————-*———————*—————–
ফ্ল্যাসব্যাক—-

শুভ্র নীলার এরকম অনুরোধ ফেলতে পারেনি।আর নীলা যে ফিহাকে কথা দিয়েছিলো সেটা তো শুভ্র জানে। সে চাই না নীলা ফিহার কাছে ছোট হয়ে যাক। আর নীলা বিয়ের পর এক এই একটা আবদার করেছে আর শুভ্র সেটা ফেলতে পারেনি। তাই সে রাজি হয়ে যায়।

নীলা ফিহাকে সাজিয়ে দিচ্ছে। একটা সাদা প্রিন্সেস গাউন পরিয়ে দিলো ফিহাকে।আজ ফিহা অনেক খুশি। ফিহাকে চুপ টি করে বসিয়ে দিল।সেও চুপ করে বসে বসে তার মাকে দেখে যাচ্ছে। আজ ফিহা কারনে অকারণে হেসে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে সে হাতে চাঁদ পেয়ে গেছে।

নীলা আজকে একটা ব্ল্যাক শাড়ি পরেছে। হিয়ার কাছ থেকে একটু কাজল আর লিপস্টিক এনে পরে নিল। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক,চোখে কাজল।তাতেই তাকে অনেক সুন্দর লাগছে।

নীলা তোমাদের কি হলো।বের হতে হবে তো নাকি।

হ্যাঁ আমি এবং আমার মেয়ে দুজনেই রেডি একদম।

শুভ্র নীলার দিকে তাকাতেই ওর চোখ যেনো স্থীর হয়ে যায়। ব্ল্যাক শাড়ি তে নীলা কে খুব সুন্দর লাগছে।আর আজ প্রথম নীলাকে সাজতে দেখলো।লিপস্টিক দেওয়া ঠোঁট যেনো শুভ্রর চোখে নেশা লাগিয়ে দিচ্ছে। নীলার কমল নরম ঠোঁট তাকে কাছে টানছে।।
ওয়াও ওয়ান্ডারফুল! হোয়াট এ্যা বিউটি। এতো টা সুন্দর কেন তুমি কথা গুলো শুভ্র জোরেই বললো।

নীলা শুনতে পেয়েই বললো কি বললেন আবার বলুন।কিছু টা লজ্জা মিস্রিত কন্ঠে। আস্তে করে বললো। আর ওভাবে হা করে তাকিয়ে থাকার কি আছে। এর আগে কি দেখেন নি নাকি আমাকে।

উম হুম দেখিনি তো ঠোঁটে লিপস্টিক চোখে কাজল।ব্ল্যাক শাড়ি। একজন খুব রূপবতী তরুণীর কারিশমা ফুটে উঠেছে। নিজেকে সামলানো যে দায় হয়ে পরছে মেডাম।

শুভ্র সু্যোগে বুঝে নীলাকে এক টানে কাছে নিয়ে আসলো।

নীলা চোখ গুলো ইয়া বড় বড় করে ফেলে।সেদিনের কথা মাথায় আসতেই মুখ টা চেপে ধরলো সে। এখন কি সত্যিই শুভ্র ঠোঁটে লিপস্টিক দেওয়ার জন্য আমার ঠোঁটে—-

গতকাল রাতে তো বেশ আমাকে তুমি বলছিলে হাবিও বলেছো।আর এখন লজ্জা পাচ্ছো।
নীলার পেটে শুভ্র আস্তে আস্তে স্লাইড করছে।

এই আপনি কি করছেন কি।নীলা রীতিমতো কাপছে।

কেন দেখতে পারছো না কি করছি।বউকে আদর করছি।এত দিন অনেক ছাড় দিয়েছি।রাতের মতো জড়িয়ে ধরতে বলবে না।নাকি আমিই ধরবো।

ছাড় দিয়েছেন মানে।আপনি কিন্তু খুব অসভ্য হয়েছেন।ছাড়ুন বলছি।

নীলা শুভ্রর বুকে হাত দিয়ে সরানোর চেষ্টা করছে।

একটু জড়িয়ে ধরতে দাও।
আজ এসব বলতে শুভ্রর কোনো রকম কোনো দ্বিধা কাজ করছে না।

এদিকে যে ফিহা বসে আছে তাদের তো সে দিকে খেয়ালই নেই।

ফিহা এসব দেখছে।সে ভাবছে তার মাকে বাবা মাড়ছে।হুম আমাকে তো ভয় দেখানো হয় তাই না । দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।এক্ষুনি দাদুনকে ডেকে আনছি।আমার সামনে আমার মাকে মাড়ছো দুষ্টু বাবা একটা। সে চুপিচুপি পা ফেলে চলে গেলো।

এদিকে এরা এখনো নিজেদের নিয়েই ব্যাস্ত।শুভ্র দুষ্টু হাসি দিয়ে নীলার ঠোঁটের দিকে নিজের মুখ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

নীলা চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে ফেললো। এই লোকটার কি কোনো কান্ডজ্ঞান নেই। কি হয় মাঝে মাঝে এই লোকটার উনিই জানেন।

ক–ক্ক-ক্ক- কি করছে—-

নীলা আর কিছুই বলতে পারলো না।তার ঠোঁট জোড়া কারো ঠোঁটে আবদ্ধ হয়ে গেছে।তরল কিছু অনুভব হতে নীলা শুভ্রর কোর্ট টা খামচে ধরেছে।

শুভ্র নীলার গালে হাতে দিয়ে নীলাকে চুমু খেয়ে যাচ্ছে।নীলার মিষ্টি রসালো ঠোঁট শুষে নিতে থাকে।

নীলা শুভ্রর পেটে হাত দিয়ে সরানোর চেষ্টা করছে।মুখ দিয়ে উম উম শুব্দ ছাড়া কিছুই বের হচ্ছে না।

তার সারা শরীরে যেন একটা শিহরণ বয়ে গেলো।

শুভ্র এখনো নীলার ঠোঁট নিজের মুখে নিয়ে আছে।বেশ কিছুক্ষন পর সে নীলাকে ছেড়ে দিলো।

দুজনেই হাপাতে লাগলো।নীলা উল্টো দিকে ঘুরে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে লাগলো।অদ্ভুত একটা ভালো লাগা কাজ করছে তার।

শুভ্রর তারাতাড়ি নিচে নেমে আসলো। মুখে হাত দিয়ে সোফায় বসে আছে সে এখন।

এদিকে মোল্লিকা তো ফিহার কথা শুনে প্রায় ছুটে আসছিলো আর দেখলো শুভ্র নিচে নেমে আসছে।তিনি আর উপরে গেলেন না।হইতো তিনি বুঝতে পেরেছেন।উনি মুচকি হাসি দিয়ে বললো ফিহা তোমার বাবা তো এখানে। তোমার বাবা কি তোমার মাকে মাড়তে পারে।তোমার ভুল হয়েছে বুঝতে।

কিন্তু দাদুন আমি তো দেখলাম যে মাকে টেনে ধরেছে।

মোল্লিকা এবার আহাম্মক হয়ে গেলো। কথা ঘুড়ানোর জন্য বললো —আচ্ছা ফিহা তোমরা না আজ ঘুরতে যাচ্ছো।

এক মুহুর্তেই ফিহার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।হ্যাঁ দাদুন আমরা ঘুরতে যাচ্ছি।বাবা আমাকে আর মাকে নিয়ে যেতে রাজি হয়েছে।

তখনি নীলাকে নিচে নেমে আসতে দেখে শুভ্র হাটা ধরলো।

নীলা মাথাটা নিচু করে মোল্লিকাকে বিদায় জানিয়ে ফিহাকে নিয়ে বাইরে আসলো।

শুভ গাড়িতে উঠতে নিলে নীলা বলে উঠলো আমরা আজ গাড়িতে যাবো না প্লিজ। এখান থেকে পার্কে হেটে যেতে ২০ মিনিট লাগবে।আমরা কি হেটে যেতে পারি। আর নদীর পাড়ে হাটবো। গাড়ি নিয়ে কি করবেন।

না গাড়িতে যাবো আমরা উঠে এসো।

ও বাবা মা যেটা বলছে শুনো না।বলেই ফিহা মাথা নিচু করল।

অনেক অনুরোধ করায় শুভ্র আর কথা বাড়ালো না।আর বেশি দুরের পথ না।সব ইচ্ছা যখন রাখলাম এটা বাদ যায় কেন। আমি ওদের সাথে থাকতে কেউ কিছু করার সাহস পাবে বলে মনে হয় না।

চলো যাওয়া যাক তবে।

নীলা আর ফিহা শুভ্রর পিছনে হেটে হেটে যাচ্ছে।

তারা প্রথমে পার্কে আর নদীর পাশে দিয়ে হেটে বেরিয়েছে। সামনে একটা রেস্তোরাঁয় গিয়ে তিন জন বসেছে। ফিহা এটা সেটা বলছে।

খাবার খাওয়ার পর সেখান থেকে বেরিয়ে আবার হাটা ধরে।

এর মধ্যে নীলা একটাও কথা বলে নি।আর শুভ্র মাঝে মধ্যে টুকটাক কথা জিজ্ঞেস করেছিলো।

হঠাৎ ওর হাতে কোনো নরম কচি হাতের স্পর্শ পেতেই নিচে তাকালো। দেখলো ফিহা অর হাত ধরে আছে।

একটা হাত দিয়ে নীলার আর একটা হাতে আমার একটা আঙুল ধরে আছে। কেন যেন এই মুহুর্তে সে ফিহাকে কিছুই বলল না বরং একটা মুচকি হাসি দিয়ে তিন জনেই হেটে যাচ্ছে।এই মুহূর্ত টা তিন জন খুবই উপভোগ করছে। নীলাও মুচকি হাসছে।

হঠাৎ ফিহা দাঁড়িয়ে পরল। আর আঙুল দিয়ে দেখালো বাবা আমি আইসক্রীম খাবো এনে দেবে।

নীলাও বললো হ্যাঁ শুভ্র জান না এই মুহুর্তে আইসক্রিম হলে মন্দ হয় না।

ঠিক আছে তোমরা এইখানে দাঁড়িয়ে থাকো আমি এক্ষুনি নিয়ে আসছি। এখান থেকে নরবে না।

ঠিক আছে আপনি নিয়ে আসুন।

এত আনন্দের মধ্যে শুভ্র কিছু একটা ভুলেই গিয়েছিল।

সাধারণত রাত নয়টার পর এই রাস্তায় বেশি লোকজন যায় না।

হঠাৎ ওদের সামনে একটা গাড়ি এসে এক টানে নীলাকে গাড়ির ভেতর তুলে নিলো। আচমকা এমন টা হওয়ায় নীলার হাত থেকে ছিটকে পড়ে
ফিহা।পরে নাক ফেটে রক্ত বেরিয়ে আসে।আর শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

নীলা চিৎকার করে একবার শুভ্রকে ডেকে উঠে।শুভ্র পিছনে ঘুরে যা দেখে তার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। শুভ্রর পা যেনো নরতেই চাইছে না স্থীর হয়ে গেছে। ফিহা হাত বাড়িয়ে বাবা বাবা বলে ডাকছে।

শুভ্র দৌঁড়ে আসছে। ফিহার গায়ে রক্ত দেখে অনেক টা ঘাবড়ে যায়। সে ফিহাকে
কোলে তুলে নিলো।

যেন লোক গুলো এটারি অপেক্ষা করছিল কখন শুভ্র অদের থেকে দুরে যাবে আর কখন অরা তুলে নিয়ে যাবে।

—-+++++—–
সবটা শুনে সবাই একদম স্তব্ধ হয়ে গেছে।

কে আমাদের এত বড় ক্ষতি করলো।হিয়া কেদে কেদে বললো।
সবাই কান্না করছে মোল্লিকা তো কপালে হাত দিয়ে কেদে যাচ্ছে।

তখনি ভেতর থেকে ডক্টর বেরিয়ে এল।

ডক্টর কে বেরিয়ে আসতে দেখে শুভ্র উঠে দাঁড়ালো।—–

চলবে—-

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে