বর্ষণের সেই রাতে- ২ পর্ব-৬৬+৬৭

0
1572

#বর্ষণের সেই রাতে- ২
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

৬৬.

আজ রিক-স্নিগ্ধার বিয়ে। সারা বাড়িতে সকলের আনন্দ, হৈচৈ আর কাজের মধ্য দিয়ে কাটছে। কিন্তু অনিমা এখনো ঘুম থেকে উঠতে পারেনি। কেউ ওকে ডাকতেও আসেনি কারণ আদ্রিয়ান সবাইকে বারণ করে দিয়েছে। শরীরে জ্বর না থাকলেও অনিমার একটু রেস্ট দরকার। সময় হলে আদ্রিয়ান নিজেই ডাকতে যাবে। জানালা দিয়ে রোদের আলো সরাসরি চোখে এসে পড়তেই এতো আলোতে অনিমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠে বসতে গিয়ে বুঝতে পারল বেশ দুর্বল, মাথা ভার ভার লাগছে। কোনরকমে বসে, পিটপিটে চোখে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল সকাল সাড়ে এগারোটা বাজে। বেশ চমকে উঠল ও। এতো কখন বেজে গেলো? তারপর মনে পড়ল আজতো রিক আর স্নিগ্ধার বিয়ে। আর ও এখনো ঘুমাচ্ছে? কিন্তু কাল রাতে রুমে এসে ঘুমালো কখন? নাহ, ওকে উঠে এখন নিচে যেতে হবে। সকলে কী ভাবছে কে জানে? অনিমা উঠে দাঁড়িয়ে শাড়িটা ভালোভাবে পরে নিল। এরপর বের হতে নেবে তখনই খাবারের ট্রে নিয়ে আদ্রিয়ান রুমে ঢুকল। ট্রে টা টি-টেবিলে রাখতে রাখতে বলল,

” উঠে পড়েছো? কেমন লাগছে এখন?”

অনিমা ভ্রু কুঁচকে বলল,

” উঠে পড়েছো মানে? কত বেলা হয়েছে দেখেছেন? কেউ ডাকতেও আসেনি আমায়।”

” আমি বারণ করেছি।”

” বারণ করেছেন মানে? আজ বাড়িতে বিয়ে আর আমি? বাড়ির বউ হয়ে এতক্ষণ অবধি ঘুমাচ্ছি? কী বলবে সবাই?”

আদ্রিয়ান পকেটে হাত রেখে অনিমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল,

” কে কী বলবে সেই চিন্তা তোমার করার প্রয়োজন নেই। কাল রাতে কত জ্বর ছিল খেয়াল আছে তোমার? সারারাত জেগে ছিলাম তোমার জন্যে। বারবার বলেছি নিজের খেয়াল রাখো একটু কিন্তু আমার বকা না শোনা অবধি তুমিতো কথা শোনার মানুষ-ই নও।”

অনিমা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল আদ্রিয়ানের দিকে। আদ্রিয়ান সারারাত জেগে ছিল ওর জন্যে? আর ও কি-না পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছিল? আদ্রিয়ান বলল,

” এভাবে তাকিয়ে না থেকে তাড়াতাড়ি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসুন। কাল রাতেতো তেমন কিছুই খাওনি। দুধটাই যা খাওয়া হয়েছে। শরীর এমনিতেই দুর্বল হয়ে আছে। যাও।”

অনিমা ভাবল এমনিই দেরী হয়ে গেছে উঠতে। খেতে গেলে আরও সময় নষ্ট হবে। তাই ইতস্তত করে বলল,

” কিন্তু_”

অনিমা কথা শেষ করার আগেই আদ্রিয়ান বেশ রাগী দৃষ্টিতে তাকালো। কারণ ও জানে অনিমা কী বলবে। অনিমা আর কথা বাড়ানোর সাহস পেলো না। ভদ্র মেয়ের মতো মাথা নেড়ে চলে গেলো ওয়াশরুমে। লোকটাকে অকারণেই ভয় পায়। যেখানে এটা ও জানে যে ওকে সামান্য আঘাত করতেও আদ্রিয়ানের হাত কাঁপবে। তাহলে এই ভয় কীসের? এটাকে কী ভয় বলা যায়? নাকি এটা অনিমার আদ্রিয়ানের প্রতি শ্রদ্ধা? যার কারণে আদ্রিয়ানের কোন কথা অমান্য করতে পারেনা ও।

________

কিছুক্ষণ আগেই রিক আর স্নিগ্ধার বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হলো। এখন অতিথিদের খাওয়াদাওয়া চলছে। অনিমা দেরী করে নিচে নামাতে কয়েকজন একটু কানাঘুষা করা শুরু করেছিল ঠিকই কিন্তু মিসেস রিমাও হাসি মুখে সঙ্গে সঙ্গে তাদের জবাব দিয়ে দিয়েছে। অনিমা শুধু মুচকি হেসে সরে এসেছিল ওখান থেকে। ওনারাও আর কিছু বলার মত মুখ পান নি। আসলে নিজের পরিবার যদি ঠিক থাকে তাহলে বাইরের মানুষ সুযোগ পায়না। হাসান কোতয়াল খানিকটা দেরী করেই পৌঁছেছেন আজ। অনিমা ওনাকে দেখে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিয়েছিল। কারণ এবার বেশ লম্বা সময় পর নিজের বাবার সাথে দেখা হয়েছে ওর। ওর মামা-মামি এলেও অর্ককে কোথাও দেখতে পেলোনা অনিমা। তাই হাসান কোতয়ালকে অর্কর বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে উনি বললেন কয়েকদিন আগেই অর্কর বেশ বাজেভাবে এক্সিডেন্ট হয়েছে। হাত পায়ের অনেক জায়গাতে ফ্র্যাকচার হয়েছে। সুস্থ হতে বেশ সময় লাগবে। কখনও পুরোপুরি স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারবে কি-না সেটাও জানা নেই। অনিমা ভীষন অবাক হলো কথাটা শুনে। এতো বড় একটা ঘটনা আর ওকে কেউ জানায়নি? হাসান কোতয়ালকে কথাটা জিজ্ঞেস করতেই উনি একপ্রকার এড়িয়ে গেলেন। তাই অনিমাও আর জিজ্ঞেস করেনি।

আদ্রিয়ান সহ বাড়ির সকল ছেলেরা গেস্টদের খাওয়ানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে প্রচন্ড ব্যস্ত আছে তাই অনিমা, অরুমিতা, স্নেহা, তনয়া, রাইমা সবাই মিলে স্নিগ্ধার কাছে চলে গেল। বিকেলের দিকে সব কাজকর্ম সেড়ে সব রিল্যাক্স হওয়ার পর বসার ঘরে এসে বসল সবাই। সবাই মিলে কথাবার্তা বলে ডিনার শেষ করে ফ্রেশ হতে হতে অনেকটা রাত হয়ে গেলো। সময়মতো রিক-স্নিগ্ধাকে বাসর ঘরে পৌঁছে দিয়ে নিজেরা নিজেদের মতো বিশ্রাম করতে চলে গেল। এবার বিচ্ছুবাহিনীর সেই চির পরিচিত দুষ্টুমি আবার শুরু হল। এবারও রিক-স্নিগ্ধার বাসর ঘরে ওদেরকে বিরক্ত করার ফন্দি এঁটেছে। আদিব, নাহিদ, আশিস, তীব্র, অরুমিতা, স্নেহা, তনয়া আর জাবিনতো আছেই সাথে আজ অনিমাও যোগ দিয়েছে। আদিব বলল,

” আজকের প্লানটা ফ্লপ হলে মোটাও চলবে না। গতবার ডাহা লস হয়েছে। কী খিচুড়ি পাকিয়েছিলো এরা কে জানে?”

বলে অনিমার দিকে তাকিয়ে একটা হতাশ নিশ্বাস ত্যাগ করল আদিব। অনিমা ঠোঁট চেপে হালকা হাসল। এই রহস্যের সমাধান ওরা এখনো করতে পারেনি। এবারের প্লানটা হচ্ছে দরজার নিচে ফোন রেখে একটু পরপর লাউড স্পিকারে গান চালিয়ে দেওয়া। তো প্লান মতো অনিমা ফোনটা দরজার নিচে রাখতে যাবে তখনই সামনে আদ্রিয়ান হাত ভাঁজ করে এসে দাঁড়ালো। অনিমা আদ্রিয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখে ও চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে। অনিমা ফোনটা নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে জোরপূর্বক একটা মেকি হাসি দিল। বাকিরা একে ওপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। এরপর যা হওয়ার তাই হলো। আদ্রিয়ানের এক ধমকে উপস্থিত সবাই একপ্রকার দৌড়ে পালালো। শুধু অনিমা পড়ে রইল। অবস্থা বেগতিক দেখে নিজেও জাবিনের রুমের দিকে ছুট লাগাতে যাবে তার আগেই আদ্রিয়ান শক্ত করে হাত ধরে ফেলল। তারপর সাথেসাথেই অনিমাকে কোলে তুলে নিয়ে বলল,

” মানুষ দিন দিন বড় হয় কিন্তু আপনি বাচ্চা হচ্ছেন। রুমে চলো বাচ্চামো বের করছি আমি।”

অনিমা মুখ কাঁচুমাচু করে তাকিয়ে রইল আদ্রিয়ানের দিকে। না জানি এখন আবার কোন নতুন এঙ্গেলে টর্চার করবে।

_________

রাত সাড়ে তিনটা বাজে। স্নিগ্ধা আর রিক পাশাপাশি শুয়ে আছে। দুজনে দুজনের দিকে ফিরে শুয়ে আছে। দুজনের দৃষ্টি দুজনের চোখের দিকে। বলা, না বলা সমস্ত কথা যেনো চোখেচোখেই সেড়ে নিচ্ছে ওরা। বেশ অনেকটা সময় পর রিক মুচকি হেসে হাত বাড়িয়ে স্নিগ্ধার সামনে আসা চুলগুলো কানের পিঠে গুঁজে দিয়ে বলল,

” এভাবে আর কতক্ষণ দেখবে? এতক্ষণ দেখে শান্তি হয়নি?”

স্নিগ্ধা হেসে বলল,

” তোমাকে একপলক দেখেই আমার শান্তি। কিন্তু সারাজীবন দেখলেও তৃষ্ণা মেটেনা।”

রিক স্নিগ্ধার দিকে আরেকটু এগিয়ে গিয়ে বলল,

” সারাজীবন আপনারই থাকব ম্যাডাম। যতখুশি দেখে নিতে পারবেন। এখন আপাতত ঘুমিয়ে পড়। অনেক রাত হয়েছে।”

স্নিগ্ধা রিকের বুকে মুখ গুঁজে বলল,

” তোমার মুখে ‘তুমি’ শুনতে কিন্তু বেশ লাগছে।”

রিক হালকা আওয়াজ করেই হেসে দিয়ে বলল,

” বকবক থামিয়ে ঘুমিয়ে পড়।”

স্নিগ্ধা আলতো করে রিককে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে ফেলল। রিকও স্নিগ্ধাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়ে মাথায় একটা চুমু দিল। স্নিগ্ধার উন্মুক্ত শরীর চাদর দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে দিল। এরপর স্নিগ্ধার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে আপনাআপনি ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেড়িয়ে এলো ওর।

_________

সময় নিজের গতিতে এগিয়ে চলেছে। দেখতে দেখতে আরও ছয়টা মাস পার হয়ে গেছে। এই ছ’টা মাস যেন একটু বেশি-ই দ্রুত পার হয়ে গেলো। সকলের জীবন এখনো একই ধারায় চলছে। কারো সম্পর্কেরই কোনরকম পরিবর্তন ঘটেনি। সবকিছুই আগের মতই আছে।

আদ্রিয়ান স্টুডিওতে বসে বসে ফোন স্ক্রোল করছে। আজ ওর সাথে রিকও এসেছে। অভ্রতো সবসময়ই থাকে। আদিব আর আশিস দুজনকেই আদ্রিয়ান কাজে পাঠিয়েছে। হঠাৎ করেই আদ্রিয়ানের ফোন বেজে উঠল। আননোন নাম্বার দেখে আদ্রিয়ান একবার রিকের দিকে তাকাল তারপর ফোনটা রিসিভ করে ‘হ্যালো’ বলতেই ওপাশ থেকে কবির শেখ বলল,

” আদ্রিয়ান, তোমাকে এখনো বলছি আমার পেছনে লাগা ছেড়ে দাও। নিজে নিজের মত থাকো আমায় আমার মত থাকতে দাও। তুমি আমার ভাগ্নে হও। আমি আগের সব ভুলে যাব। শুধুশুধু শত্রুতা বাড়িয়ে লাভ কী?”

আদ্রিয়ান হাতের নখ দেখতে দেখতে মুচকি হেসে বলল,

” ভয় পেলে মামা?”

” না, সাবধান করছি। তোমার খালুর বের হতে আর মাত্র কয়েকটা মাস। এখনো বলছি আমাদের পেছনে না লাগাটাই ভালো হবে।”

আদ্রিয়ান হালকা আওয়াজ করে হেসে বলল,

” তোমাদের পেছনে লাগাটাই আমার কাজ মামা। আমি তোমাকে এরচেয়ে বেটার সল্যুউশন দিচ্ছি। এসব ছেড়ে দাও। আমিও তোমার পেছন ছেড়ে দেব। আর সেটা না পারলে এরকম ফোন-টোন করে নিজের মোবাইলের ব্যালেন্স শেষ না করাই বেটার।”

কথাটা বলে আদ্রিয়ান ফোনটা রেখে দিল। লাউড স্পিকারে থাকায় রিক সবটাই শুনতে পেয়েছে। রিক একটা লম্বা শ্বাস ফেলে বলল,

” মামা হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার মানুষ নয়। নিশ্চয়ই কিছু করছে।”

আদ্রিয়ান গম্ভীর কন্ঠে বলল,

” জানি। আমি চাইছিই সেটা। আগেরবার প্রমাণের অভাবে ওনার কিচ্ছু করতে পারিনি। আমি চাইছি এবার উনি নিজেই সব করুক। কিন্তু সমস্যা একটাই। ওনার ফার্স্ট টার্গেট অনি-ই হবে। আই নো দ্যাট। কারণ উনি জানেন ওকে আঘাত করলেই আমায় দুর্বল করা সম্ভব। কিন্তু এটাই বুঝতে পারছিনা যে অ‍্যাটাকটা করবে কোন দিক দিয়ে।”

রিক কিছু বলবে তার আগেই ওদের জন্যে খাবার নিয়ে চলে এলো সার্ভেন্ট। অভ্র এতক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। আদ্রিয়ান বলাতে ওও বসে পড়ল খেতে। খাওয়ার মাঝে হঠাৎই আদ্রিয়ান বলে উঠল,

” আমার বোনকে রিজেক্ট করার কারণটা কী অভ্র?”

অভ্র বিষম খেয়ে গেল আদ্রিয়ানের আচমকা এমন প্রশ্নে। রিকও অবাক হয়ে তাকাল। অভ্র কোনরকমে পানি খেয়ে নিজেকে সামলে একটা ঢোক গিলে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বলল,

” জি স্যার?”

আদ্রিয়ান এবার অভ্রর দিকে তাকিয়ে বলল,

” জাবিনকে ফিরিয়ে দেওয়ার রিজন কী? আর হ্যাঁ এটা বলোনা যে তোমার গার্লফ্রেন্ড আছে বা তুমি কমিটেড। কারণ ঐ গাধিটা তোমাকে না চিনলেও আমি তোমাকে খুব ভালোভাবে চিনি। গার্লফ্রেন্ড অনেক দূরের কথা তোমার যেয়ে কোন স্বাভাবিক মেয়ে বন্ধুও নেই সেটা আমার চেয়ে ভালো কেউ জানেনা। আসল কারণটা বলো।”

#চলবে…

#বর্ষণের সেই রাতে- ২
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল

৬৭.

আদ্রিয়ানের কথাগুলো শুনে অভ্র চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। ও জানতো যে আদ্রিয়ানের কাছ থেকে কিছু লুকিয়ে যাওয়া ভীষণ কঠিন হবে। তবুও চেষ্টা করতো যাতে আদ্রিয়ানের সামনে স্বাভাবিক থাকতে পারে। এ বিষয়টা যাতে আদ্রিয়ানের কানে না যায় সেটা নিয়ে যথেষ্ট সচেতন ছিল ও। কিন্তু তবুও কীকরে আদ্রিয়ানের কানে কথাগুলো পৌঁছে গেলো ও নিজেই জানেনা। যদিও আদ্রিয়ানকে ও যতটা চেনে তাতে এটা অসম্ভব কিছুই না। রিক নিজেও অবাক হয়ে গেছে এই কথা শুনে। অভ্র একটা শুকনো ঢোক গিলে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করতে শুরু করে দিল। কিছুতেই বাক্য সম্পূর্ণ করতে পারছেনা। আদ্রিয়ান হালকা ধমক দিয়ে বলল,

” আমি _ তুমি_ করা বন্ধ করে স্পষ্টভাবে বলো!”

অভ্র এবার নিজেকে একটু শান্ত করল। লম্বা করে দুটো শ্বাস নিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলল,

” স্যার, জাবিন বাচ্চা মেয়ে। আবেগে পড়ে ও আমায় ওসব বলে ফেলেছে। আমি বুঝতে পেরেছি স্যার ওর ব্যাপারটা। আমি কিন্তু ওকে প্রশ্রয় দেইনি। আমি এভাবে না করলে ও শুনতো না আমার কথা। তাই আমাকে বাধ্য হয়েই এসব মিথ্যা বলতে হয়েছে। তবে স্যার এসবে ওর কোন দোষ নেই। ছোট তাই__”

কথাটুকু বলে অভ্র মাথা নিচু করে ফেলল। আদ্রিয়ান নিজের থুতনিতে হাত রেখে সরু চোখে কয়েক সেকেন্ড অভ্রর দিকে তাকিয়ে বলল,

” ভালোবাসো ওকে?”

অভ্র চমকে তাকাল আদ্রিয়ানের দিকে। রিক এখনো চুপচাপ বসে আছে। কারণ ব্যাপারটা এখনো ওর কাছে পরিষ্কার না। অভ্রকে চুপ থাকতে দেখে আদ্রিয়ান আবার বলল,

” আমি কিন্তু এখনো আমার উত্তরটা পাইনি। ভালোবাসো জাবিনকে? আর হ্যাঁ, আমি শুধুমাত্র সত্যিটা জানতে চাইছি। ইউ নো আই হেইট লাইয়িং।”

অভ্র জানে এখন আদ্রিয়ানকে মিথ্যা বলার পরিণাম ভালো হবেনা। আর ও আদ্রিয়ানকে মিথ্যা বলতে পারেও না। সত্যিতো এটাই যে ও জাবিনকে ভালোবাসে। প্রথম থেকেই জাবিনের প্রতি নিজের দুর্বলতা খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছিল ও। তাইতো সবসময় জাবিনকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতো। কারণ ও জানতো যে জাবিন ওর বসের বোন। ওদের দুজনের স্ট্যাটাস সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু যত দিন যাচ্ছিল জাবিনের পাগলামো, অধিকার খাটানো, ওকে জ্বালাতন করা এসবে আটকে গেছিল অভ্র। ভালোবেসে ফেলেছিল জাবিনকে। কিন্তু জাবিনও যে ওকে ভালোবেসে ফেলবে সেটা ও ভাবতেও পারেনি। আর যখন জানলো তখন নিজের অনুভূতিকে চেপে রেখে জাবিনকে মিথ্যা বলে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল। কারণ ও চায়নি আদ্রিয়ানের বিশ্বাস ভাঙতে, নিজের সীমার বাইরে যেতে। কিন্তু আজ আর কিছুই করার নেই। আদ্রিয়ানের সামনে ওকে নিজের সত্যিটা প্রকাশ করতেই হবে। তাই অভ্র স্হির কন্ঠে বলল,

” হ্যাঁ। না চাইতেও ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। ভালোবাসি আমি ওকে।”

আদ্রিয়ান হালকা হাসল। এবার রিকের মুখেও হাসি ফুটেছে, কারণ এতক্ষণে ব্যাপারটা ওর বোধগম্য হয়েছে। আদ্রিয়ান আবার বলল,

” এবার সত্যি করে আরেকটা কথা বলে ফেল। তোমার কী মনে হয়? জাবিনের ভালোবাসাটা শুধুই আবেগ?”

অভ্র এবারও কিছু সময়ের জন্যে চুপ হয়ে গেল। কারণ ও জানে জাবিনের ভালোবাসাটাও সত্যি। আদ্রিয়ান যাতে জাবিনকে বকাবকি না করে তাই শুরুতে এভাবে বলেছিল। কিন্তু আদ্রিয়ান যে ওকে এভাবে চেপে ধরবে সেটা বুঝে উঠতে পারেনি। অভ্র হালকা করে গলা ঝেড়ে বলল,

” না স্যার শুধু আবেগ নয়। আমি জানি আমাকে সত্যি সত্যিই ভালোবাসে।”

আদ্রিয়ান এবার একটু সোজা হয়ে বসে ভ্রু কুঁচকে বলল,

” তাহলে সমস্যাটা কোথায় ছিল?”

রিকও এবার কৌতূহলী চোখে তাকিয়ে আছে অভ্রর দিকে, আসল কারণটা জানার জন্য। অভ্র ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে বলল,

” স্যার আমি ভেবেছিলাম যে__”

আদ্রিয়ান অভ্রর কথা শেষ হওয়ার আগেই বলল,

” যে তোমার আর ওর সম্পর্ক হওয়া সম্ভব নয়। আমি তোমাকে কী চোখে দেখবো। আমি এই সম্পর্কটা কীভাবে নেবো। আদৌও মেনে নেব কি-না। তোমার প্রতি আমার বিশ্বাস ভেঙ্গে যাবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তাইতো?”

অভ্র চোখ নামিয়ে নিলো। কথাগুলোতো সত্যি। এইকারণেই তো নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিল ও জাবিনের কাছ থেকে। আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ চুপ থেকে এবার নরম গলায় বলল,

” আমার এখন মনে হচ্ছে আমি এই কয়েক বছরে তোমাকে ভালোভাবে চিনলেও তুমি এখনো আমাকে ঠিকভাবে চিনে উঠতে পারোনি অভ্র। তোমার কী সত্যি মনে হয় এসব ফ্যামলি আর স্ট্যাটাস দেখে বিচার করার মতো মানুষ আমি? আমার কাছে আমার বোনের খুশিটাই সবার আগে অভ্র। আর তোমাকেও আমি আমার পিএ এর চেয়েও বেশি নিজের ভাই মনে করি। ভাবলে কীকরে এই সামান্য কারণে আমি কোনরকম বাঁধা দেব কিংবা অখুশি হব?”

অভ্র মাথা নিচু করে আছে। ও সত্যি জানেনা কেন তখন এসব করেছে, কেন এসব ভেবেছে। ও শুধু এইটুকুই জানে যে তখন ওর যেটা ঠিক বলে মনে হয়েছিল ও সেটাই করেছে। কিন্তু এখন আদ্রিয়ানের কথা শুনে ওর মনে হচ্ছে তখন একবার অন্তত আদ্রিয়ানের সাথে কথা বলে দেখা উচিত ছিল। এইটুকু বিশ্বাস তো করাই যেতো আদ্রিয়ানকে। অভ্র অপরাধী দৃষ্টিতে তাকালো। আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,

” যা হয়ে গেছে, সেটা হয়ে গেছে। দেখো, আমার বোনের তোমাকে পছন্দ। তোমাকে আমার বোনের হাজবেন্ড হিসেবে মেনে নিতে এর চেয়ে বড় কোন কারণের প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয়না। বাবা-মাকে আমি বুঝিয়ে নেব। কিন্তু আমার বোনকে এবার মানানোটা কঠিন হবে।”

অভ্র একটু অবাক দৃষ্টিতে তাকালো। আদ্রিয়ান বলল,

” জাবিনকে এবার তোমাকেই মানাতে হবে। আমি ওকে যতটা চিনি ও একবার মুখ ঘুরিয়ে নিলে ওকে আবার সেদিকে ফিরিয়ে নেওয়া মুশকিল। তার ওপর যখন জানতে পারবে যে তোমার কোন গার্লফ্রেন্ড নেই, সবটাই ঢপ ছিলো তখন তো__ অল দ্যা বেস্ট।”

একটু থেমে আদ্রিয়ান এবার একটু শক্ত কন্ঠে বলল,

“তবে হ্যাঁ বিয়েটা কিন্তু তোমাকে জাবিনকেই করতে হবে। এখন ওকে কীভাবে রাজি করাবে সেটা তুমি ভাববে। আর যদি না করাতে পারো তাহলে জানোই তো আমি কী করতে পারি।”

কথাটা বলে অভ্রর দিকে একটু তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকাল আদ্রিয়ান। অভ্র আবার একটা ঢোক গিলল। সামনে থাকা পানির গ্লাসটা নিয়ে এক নিমেষেই ফাঁকা করে ফেলল। কী একটা ঝামেলায় এসে পড়ল। জাবিনকে যতোটা ও চিনেছে তাতে এতো সহজে সে মানবেনা। কম কষ্টতো দেয়নি মেয়েটাকে। আদ্রিয়ান আবরার জুহায়েরের বোন বলে কথা, এতো তাড়াতাড়ি মানার কথাও না। সামনে গিয়ে সব সত্যিটা বলার পর না জানি কোন টর্নেডো যাবে ওর ওপর দিয়ে। না মানাতে পারলে আবার এই আদ্রিয়ান নামক সিংহ ওর কী অবস্থা করবে কে জানে? মানে জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ টাইপ ব্যপার-স্যাপার। কেনো যে তখন নিজে নিজেই পাকামো করে সব বুঝে নিতে গিয়েছিল কে জানে? অভ্র একটু মেকি হেসে বলল,

” স্যার আ-আমি একটু আসছি।”

কথাটা বলে টিস্যু পেপার দিয়ে হাত মুছে কোনমতে ওখান থেকে চলে গেল অভ্র। আদ্রিয়ান অভ্রর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে হালকা আওয়াজ করে হেসে দিল। রিকও বলল,

” শুধুশুধু ছেলেটাকে ভয় দেখালি।”

আদ্রিয়ান প্লেটে চামচ নাড়তে নাড়তে বলল,

” দরকার ছিল। আমার বোনটাকে কম কাঁদায়নি। এবার নিজেও একটু ভুগে নিক।”

রিক এবার একটু নড়েচড়ে বসে কৌতূহলী কন্ঠে বলল,

” কিন্তু তুই কীকরে জানলি বলতো ব্যাপারটা?”

আদ্রিয়ান চেয়ারে হেলান দিয়ে তৃপ্তির এক হাসি দিয়ে বলল,

” আমার বউটা একদম আমার মত হয়ে যাচ্ছে। সবদিকে নজর থাকে। কয়েকমাস আগে থেকেই ও হালকা পাতলা খেয়াল করেছিল যে অভ্র আর জাবিনের মধ্যে কিছু একটা চলছে। শুরুতে গুরুত্ব না দিলেও পরে ইগনোর করতে পারেনি। গত সপ্তাহেই আমাকে বলেছিল এই ব্যাপারে। আর আমি জানতাম ও এমনি এমনি কিছু বলবে না। তাই ওকে বলেছি জাবিনকে খোলাখুলিভাবে জিজ্ঞেস করে সবটা জেনে নিতে। জাবিনই সবটা বলেছে ওকে। আর ও আমাকে।”

রিক হেসে দিয়ে বলল,

” বাহ! যেমন মিয়া তার তেমন বিবি। যাই হোক তোর কী মনে হয় আমাদের ঘাড় ত্যাড়া বোন এতো সহজে মানবে?”

আদ্রিয়ান একটু ভাবুক কন্ঠে বলল,

” মনেতো হয়না। বেচারাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে।”

আদ্রিয়ান আর রিক দুজনেই একসঙ্গে হেসে খাওয়ায় মনোযোগ দিল। কিছুক্ষণ নিরবতার পর রিক ছোট্ট এক শ্বাস ফেলে বলল,

” সময় কিন্তু এগিয়ে আসছে আদ্রিয়ান। আমাদের সতর্ক থাকবে হবে।”

আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ চুপ থেকে গম্ভীর কন্ঠে বলল,

” আমি জানি। কিন্তু কথা হচ্ছে ওনারা কিছু করার আগে আমরাও এগোতে পারব না। সাদা গুটি দখল করে বসে আছে কি-না। কিন্তু ভয় একটাই। আমিও মানুষ, ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। কিন্তু সেই ভুলের কারণে বড় কোন মাশুল না দিতে হয়।”

রিক কোন উত্তর না দিয়ে চুপ করে বসে রইল। সত্যিই ভবিষ্যতে যে ঝড় আসতে চলেছে সেটা সামলানো সহজ হবেনা।

________

আবরার মেনশানে ঢুকে আদ্রিয়ান আর রিক দুজনেই অবাক হল। কারণ বাড়ির সকলেই বসে আছে আর সকলেই বেশ খুশি। ভেতরে ঢুকে চারপাশে তাকিয়ে আদ্রিয়ান বলল,

” কী ব্যাপার? সব এতো খুশি যে? কী হয়েছে?”

আদ্রিয়ান কথাটা বলতে বলতেই অনিমা মিষ্টি ভর্তি একটা প্লেট নিয়ে আদ্রিয়ানের সামনে এসে পুরো একটা মিষ্টি আদ্রিয়ানের মুখে ঢুকিয়ে দিল। এরপর রিকের সামনে গিয়ে একই কাজ করল। ওরা দুজনই বোকার মতো তাকিয়ে আছে আর মিষ্টি চিবুচ্ছে। অনিমা হেসে দিয়ে বলল,

” সুখবর আছে!”

সবাই হেসে দিল একসঙ্গে। শুধু স্নিগ্ধা বাদে। ও দ্রুত পদে রুমে চলে গেল। রিক কিছুই বুঝলো না। অনিমা ইশারা করতেই রিকও স্নিগ্ধার পেছন পেছন রুমে গেলো। আদ্রিয়ান অনিমার দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে চোখের ইশারায় জিজ্ঞেস করল কী হয়েছে। অনিমা মুখে হাসি ধরে রেখেই বলল,

” স্নিগ্ধা প্রেগনেন্ট।”

কথাটা শুনে আদ্রিয়ান কিছুক্ষণ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল অনিমার দিকে। এরপর হেসে দিল। আবরার মেনশানে সবাই আজকে বেশ খুশি। বাড়িতে নতুন অতিথি আসতে চলেছে বলে কথা।

রাতে অনিমা চুল বাঁধছে আর আদ্রিয়ান বিছানায় হেলান দিয়ে বসে ল্যাপটপে নিজের কাজ করছে। অনিমা চুল বাঁধার ফাঁকে ফাঁকে দেখছে আদ্রিয়ানকে। চুল বাঁধা শেষ করে আদ্রিয়ানের পাশে গিয়ে বসে বলল,

” শোবেন না?”

আদ্রিয়ান ল্যাপটপে চোখ রেখেই বলল,

” হুম, হয়ে গেছে। আর একটু।”

” আর দরকার নেই শুয়ে পড়ুন।”

” আরে বাবা অলমোস্ট হয়ে গেছে, আরেকটু!”

অনিমার একটু রাগ হল। পাত্তাই দিচ্ছেনা ওকে লোকটা! ও এবার রেগে গিয়ে নিজেই ল্যাপটপটা বন্ধ করে দিল। আদ্রিয়ান ভ্রু কুঁচকে অনিমার দিকে তাকিয়ে বলল,

” এটা কী হল?”

অনিমা চট করেই উঠে দাঁড়িয়ে হাত ভাঁজ করে বলল,

” এতো তাড়াতাড়ি আমি পুরোনো হয়ে গেছি তাইনা? তাকাতেই ইচ্ছে করছেনা আমার দিকে?”

আদ্রিয়ান ওর মতো করে কোণাকুণি স্টাইলে ভ্রু বাঁকিয়ে বলল,

” এটা কেমন কথা হলো? কাজ করছিলাম তাই__”

অনিমা রাগী কন্ঠে বলল,

” হ্যাঁ হ্যাঁ সব বুঝেছি।”

আদ্রিয়ান অনিমার হাত ধরে টেনে কোলে বসিয়ে দিল। এরপর অনিমার কোমর জড়িয়ে ধরে বলল,

” আজকাল একটু বেশিই বুঝে যান আপনি। আমাদের বিয়ের ষাট বছর পার হয়ে গেলেও তুমি আমার কাছে ঠিক তেমনই থাকবে যেমন প্রথম দিন ছিলে।”

অনিমা মুচকি হাসল। এই ছেলে সেকেন্ডের মধ্যেই ওর রাগ ভাঙানোর ক্ষমতা রাখে। অনিমা আদ্রিয়ানের গলা জড়িয়ে ধরে বলল,

” রিক-স্নিগ্ধার বিয়ের মাত্র ছ’মাস হয়েছে। স্নিগ্ধা প্রেগনেন্ট। পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যেই ওদের একটা বেবী আসবে। ছোট্ট একটা পুচকি। ভাবতেই ভালো লাগছে।”

আদ্রিয়ান অনিমার গালে আলতো করে আঙুল ছুঁইয়ে বলল,

” হুম, তাতো লাগছেই।”

অনিমা বেশ অনেকটা সময় চুপ করে থাকল। মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত করে,চোখ বন্ধ করে লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে বলল,

” আমার একটা বাচ্চা চাই, রকস্টার সাহেব।”

আদ্রিয়ান অবাক দৃষ্টিতে তাকাল অনিমার দিকে। অনিমা চোখ বন্ধ করে মাথা নিচু করে রেখেছে। আদ্রিয়ান কিছক্ষণ অনিমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,

” এদিকে তাকাও।”

অনিমা চোখ বন্ধ করেই না বোধক মাথা নাড়ল। মাথা নিচু করে শক্ত হয়ে বসে আছে একদম। অনিমার অবস্থাটা বুঝতে পেরে আদ্রিয়ান অনিমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

” আসবেতো! আমাদেরও বেবী আসবে। কিন্তু সেটা এখন না আরেকটু সময় নাও।”

অনিমা মুখ ফুলিয়ে ছলছল চোখে তাকাল আদ্রিয়ানের দিকে। অর্থাৎ ওও ‘মা’ হতে চায়। আদ্রিয়ান বলল,

” আরে বাবা আমি কী বারণ করেছি। বাবা হওয়ার ইচ্ছেতো আমারও আছে। কিন্তু সময়তো আর পেরিয়ে যাচ্ছেনা তাইনা? এতোটাও বয়স হয়ে যায়নি আমাদের। এটলিস্ট তোমার অনার্সের ফাইনাল এক্সামটা শেষ কর তারপর ভাবব আমরা, ঠিক আছে?”

অনিমা কিছু বলল না শুধু আদ্রিয়ানের বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে রইল। কারণ ও জানে তর্কে আদ্রিয়ানের সাথে ও পারবেনা। কিন্তু স্নিগ্ধার প্রেগনেন্সির খবর পাওয়ার পর থেকেই ওর ভেতরে ‘মা’ হওয়ার সুপ্ত ইচ্ছেটা হঠাৎ করে জেগে উঠেছে।

#চলবে..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে