“বখাটে বউ”(পর্ব-১৮)

0
2201

“বখাটে বউ”(পর্ব-১৮)

“শোনো, কাজল চোখের মেয়ে
আমার দিবস কাটে, বিবশ হয়ে
তোমার চোখে চেয়ে!”
সাদাত হোসাইনের কবিতার বই পড়ছি। হঠাৎ এই তিন লাইনে আটকে গেলো আমার হৃদয়। এই টুকু পড়তেই আমার কি হলো জানি না। আমি বিছানা থেকে নেমে সোজা আয়নার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে, নিজের চোখের দিকে চেয়ে রইলাম। এই চোখে আমি কোনো কালেও কাজল আঁকিনি। কখনো কারো জন্য কাজল আঁকতে ইচ্ছে করেনি। কেনো ইচ্ছে করেনি তা আমি জানি না, কখনো জানার চেষ্টাও করিনি। অথচ আজ তিন লাইন কবিতা পড়ে আমার অনুভূতির ঝটকায় হালকা হাওয়া শুরু হলো। এ হাওয়া ঝড় হয়ে যেনো বয়ে না যায়। ঝড় হয়েই বা কি হবে? আমার চোখে চেয়ে তো কারো দিবস বিবশ হয় না। আর সে অপেক্ষাও নেই আমার। কিন্তু আমার দিবস তো বিবশ হয়ে কাটছে আকাশ পানে চেয়ে। এত তারা চাঁদ সূর্য গ্রহ নক্ষত্র নিয়েও আকাশটা কিন্তু একলাই। অথচ জীবনের এত গুলো বছরে আমি এসব খেয়ালই করিনি কিংবা ভেবেই দেখিনি। আজ আমার বিবশ মনের ওপারে দাড়িয়ে আছে একটা মানুষ, যাকে আমি ভালোবাসি না। আমি বুঝে উঠতে পারি না তাকে ঘিরেই কেনো আমার এই বিষণ্নতা!
আমি যখন আকাশ নিয়ে ভাবনায় ভীষণ মগ্ন তখন, হঠাৎ চা হাতে যুথী রুমে এলো। বিছায় পড়ে থাকা কবিতার বইটা হাতে নিয়ে পাতা উল্টিয়ে দেখতে থাকলো। ওর মুখভঙ্গিমা দেখে মনে হচ্ছে, সে এক ইংলিশ ম্যাম, যে বাংলা ভাষা একদম বুঝে না। আমি চায়ে চুমুক দিতেই সে বললো-
__”দেখেন বন্ন আফা এই ব্যাডা দেখতে কি সুন্দর!”
আমি দেখলাম বইয়ের তলপিঠের মোলাটে লেখকের সুন্দর হাস্যজ্জ্বল একটা ছবি দেয়া আছে। আমি যুথীর কথার জবাব দিলাম না।
__”আফা এই পোলা ক্যাডা?”
__”এটা কবি, যে এই বইয়ের সব কবিতা লিখেছে।”
__”এমন পোলার লগে আপ্নের বিয়া হইলে ভালা হইতো।”
__”কেনো?”
__”সে আপনেরে নিয়া এক গামলা কবিতা ল্যাখতো।”
__”হইছে থাম। একজনকে বিয়ে করে তো জীবনটা তেজপাতা হয়ে গেছে। বিয়ের নাম একদম মুখে আনবি না। আমি ঘৃণা করি বিয়ে শাদীকে।”
__”বিয়ারে হ্যাট করেন আর যাই করেন আফা, এই পোলারে আগে দ্যাখলে হ্যার লগেই আপ্নের বিয়া দিলামনি।”
ওর ভাব দেখে মনে হচ্ছে সে যেনো আমাকে বিয়ে দেয়ার কন্ট্রাক্ট নিয়েছে। বললাম-
__”এ ছেলের বউ অথবা প্রেমিকা আছে। তোর মনের আশা পূর্ণ হতো না।”
সে হতবাক চোখে তাকিয়ে বললো-
__”আপ্নে জানলেন ক্যাম্নে?”
__”কাজল চোখ নিয়ে তো আর হুদাই লেখেনি, কোনো মেয়েকে নিয়েই লিখেছে নিশ্চয়ই। কবি লেখকদের লেখার অন্তরালে কেউ একজন থাকে। যার প্রতি অনুভূতি ঘিরেই তারা লেখে। যেমন রবি ঠাকুরের লেখার অন্তরালে তার বৌদি কাদম্বরী দেবী ছিলেন। পরে নাকি আরো অনেক মেয়েই এসেছিল রবি ঠাকুরের লেখার অন্তরালে। তবে তার বউ কখনো অন্তরালে ছিলেন সেটা শুনিনি। যদিও এসব শোনা কথা। আর ছেলেরা বোধ হয় বউকে নিয়ে এমন রোমান্টিক কবিতা লেখে না। যা লেখে সব অন্য মেয়েকে নিয়ে লেখে। হতে পারে সে প্রেমিকা।”
জানি না কি বুঝে এসব যুথীর মতো নির্বোধ মেয়েকে বললাম। আমার ভেতরে কি এমন আক্ষেপ লুকিয়ে আছে যে এসব কথা যুথীকে বলতে হবে? যুথী ওসব কথার মাথামুন্ডু কিচ্ছু না বুঝে বললো-
__”আপ্নে যদি কবি হইতেন তাইলে আপ্নের লেখার অন্ত আড়ালে ক্যাডায় থাকতো বন্ন আফা?”
ওর কথা শুনে হঠাৎ আমার মনে হলো সত্যিই তো কে থাকতো? অন্তরালে কেউ থাকতো না বলেই হয়তো আমি কবি বা লেখক হইনি। বললাম-
__”তুই থাকতি।”
সে চোখ কপালে তুলে বললো-
__”ওরে আল্লাহ! আমি ক্যান?”
__”আমার ইচ্ছা তাই। এখন তো বুঝেছিস যে আমি কেমন বকের ঠ্যাং মার্কা কবি হতাম?”
__”হ বুঝছি। যাইগা কাম আছে।”
কথাটা বলেই সে উঠে দাড়ালো। তারপর দরজার কাছে গিয়ে পেছন ফিরে চেয়ে বললো-
__”তয় আরেকটা কথা হইলো দুলাভাইরে রাখলেও পারতেন আপ্নের লেখার অন্ত আড়ালে। বস্তাখানেক বকের ঠ্যাং না হয় তারে নিয়াই ল্যাখতেন। বেচারা খুশিই হইতো।”
কথাটা বলেই সে দৌড়ে চলে গেলো। ওর কথা শুনে আমার খুব হাসি পেলো। আমি একাই হেসে লুটিয়ে পড়লাম। আমি খাতা কলম হাতে নিয়ে বকের ঠ্যাং লিখতে বসলাম। আগে পিছে কিছু না ভেবেই লিখলাম-
“আমার দিবস যেনো কাটছে ওগো
আকাশ পানে চেয়ে
তুমি শুনছো নাকি ছেলে?”
কিভাবে যেনো হুড়মুড় করে আমিও তিন লাইন লিখে ফেললাম। কি করে পারলাম সেটাই এক বিস্ময়কর ঘটনা। হঠাৎ মনে হলো আমার দিবস মোটেও আকাশ পানে চেয়ে কাটছে না। ভুল লিখেছি আমি, এমনটা মনে হতেই আমি ক্রস চিহ্ন দিয়ে লেখা কেটে দিয়ে নিচে লিখলাম।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


“আমি নই ফেলনা কোনো মেয়ে
সব বিবশতা কাটিয়ে নিয়ে
যাবো তোমায় ভুলে
তুমি শুনছো নাকি ছেলে?
আমি নই ফেলনা কোনো মেয়ে
তোমার জন্যে ভাবতে আমার
গেছে যেনো বয়ে
তুমি শুনছো নাকি ছেলে?”

এই আট লাইন লিখে ভয়ে লাফ দিয়ে দাড়ালাম। আমি যেনো ঘেমে নেয়ে এক হয়ে যাচ্ছি। কবিতা আর বর্ণিতা! ওহ নোহ! এজীবনে কবিতার ‘ক’ও বর্ণিতা কখনো লেখেনি আর সেখানে আজ আট লাইন লিখে না জানি কত কবিকে অজান্তেই আপমান করে বসেছি। এই আট লাইন বকের ঠ্যাং লিখে নিজেকে একটু একটু কবি কবি মনে না হলেও খুব শান্তি পাচ্ছি। ইচ্ছে করছে ঐ লাট সাহেব বান্দরটাকে পঁচিয়ে একটা কবিতা লিখি। কিন্তু আমার মাথায় আর কিছু এলোই না।

সব বিবশতা কাটিয়ে আমি কৃত্রিম খুশি আনার প্রচেষ্টা করে চলেছি। নিজেকে একলা সুখের খেয়ায় ভাসিয়ে হাসতে চাই আমি, উল্লাস করতে চাই আমি। কারণ যে সম্পর্কটাকে কখনো মন থেকে মানতেই পারিনি সেই সম্পর্কটাকে ঘিরে বিষণ্নতা বড্ড বেমানান। এটা বর্ণিতার সাথে যায় না। আমি নিজেকে ভালোবাসি আর নিজেকেই ভালোবাসতে চাই। তাই তো মনটাকে ভালো রাখার উপায় আমাকেই খুঁজতে হবে। অনেক ভেবে ভেবে বের করলাম একলা আকাশে এই একলা আমিটাই কিছু ভালোলাগা উড়াই। যুথীকে ডেকে বললাম-
__”ঘুড়ি বানাতে পারিস?”
সে চোখ কপালে তুলে বললো-
__”ঘুরি দিয়া কি করবেন বন্ন আফা?”
__”ঘুড়ির সাথে উড়বো। বল পারিস কি না?”
__”ওরে আল্লাহ! ঘুরি তো আর বিমান না। আপ্নে উড়বেন ক্যাম্নে?”
__”এত কথা বাদ দিয়ে বল পারিস কি না?”
__”বানাইয়া দিতে পারুম কিন্তু উড়বো কি না গ্যান্টি নাই।”
__”গ্যান্টি না গ্যারান্টি। ঘুড়ি যদি আকাশে না উড়ে তাহলে ওটা ঘুড়ি বানাতে পারা হলো?”
__”ঘুরির বডি কিন্তুক অন্য ঘুরিগেরে মতনই দ্যাখতে হইবো। খালি উড়বো না এই আর কি!”
__”ঘুড়ির বডি দেখতে এক রকম হলেই হবে নাকি? কি ঘোড়ার ডিম শিখেছিস তুই?”
__”আফা ঘোড়া কিন্তুক ডিম পাড়ে না।”
__”ওমা তাই নাকি? আমি তো জানতাম পাড়ে।”
__”কন কি? দ্যাখছেননি?”
__”এসব কথা বাদ দিয়ে আব্বুকে ডেকে আন। আব্বু নিশ্চয়ই ঘুড়ি বানাতে পারে।”
__”খালুজান আবার কবে ঘুরি উড়াইলো?”
ওর প্রশ্নে অতিষ্ঠ হয়ে বললাম-
__”বিয়ের পরে আব্বু আর আম্মু ঘুড়ি উড়াইছে। তাই বানাতে পারে। এখন যা ডেকে নিয়ে আয়।”
যুথী দৌড়ে গিয়ে আব্বুকে ডেকে আনলো।
আব্বুকে বললাম-
__”ঘুড়ি বানিয়ে দাও তো।”
আব্বু বিস্ময়ের স্বরে বললেন-
__”ঘুড়ি কি করবি?”
__”এটা দিয়ে নিশ্চয়ই ইফটিজিং করবো না?”
__”এটা দিয়ে ইফটিজিং করা গেলে তো হেব্বি হতো। জামাই ব্যাটাকে শায়েস্তা করতাম।”
__”শায়েস্তা তো তোমরা সবাই মিলে আমাকে করেছো।”
আমার কথায় আব্বুর মুখটা ভার হয়ে গেলো। বললেন-
__”শায়েস্তা নয় রে মা, চেয়েছি তোর একটা গোছানো জীবন হোক। একদিন আমরা পৃথিবীতে থাকবো না তখন তুই যে বড় নিঃসঙ্গ হয়ে যাবি। তাই চেয়ে ছিলাম…..”
__”জীবনটা কি গোছানো হলো আব্বু?”
__”ভাবতেই পারিনি যে গোছাতে গিয়ে তোর এলোমেলো জীবনটাকে ভেঙে চুরমার করে ফেলবো। স্যরি রে, ভেরী ভেরী স্যরি।”
__”যাই হোক, এখন ঘুড়িটা বানিয়ে দাও।”
আব্বু নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে বললেন-
__”এত বছর চর্চা নেই মনে আছে কি না কে জানে!”
__”যে টুকু মনে আছে সেটুকু নিয়েই শুরু করো।”

অনেক কষ্টে আমরা তিনজন মিলে একটা ঘুড়ি বানালাম।
যুথী বললো-
__”আফা এই ঘুরি ওড়বেনি তো?”
__”উড়বে না কেনো?”
__”খালুর ঘুরি দেইখা কিরাম যেন লাগতাছে।”
__”দেখা যাক উড়ে কি না।”

কেনো জানি মনে হলো খোলা আকাশে ঘুড়ি উড়ালে আমার মনটা ভালো হবে। ছুই ছুই সন্ধ্যায় যুথীকে সাথে নিয়ে ছাদে গেলাম ঘুড়ি উড়াতে। কিন্তু মনের যেনো কোনো হেলদোল নেই। পাশের ছাদে বারবার চোখ আটকে যাচ্ছে। ঘুড়ির দিকে তাকাবো নাকি পাশের ছাদে তাকাবো? কেনো যে একসাথে অনেক দিকে তাকানো যায় না! ধুর!
হঠাৎ পাশের ছাদে নায়কের আগমন ঘটলো, নায়িকা নায়ককে দেখে মুখ ভেংচিয়ে আকাশের দিকে তাকালো। নায়ক বিমুগ্ধ চোখে নায়িকাকে দেখছে। নায়িকা ডোন্ট কেয়ার মুখভঙ্গিমায় উপরে চেয়ে আছে, হাব ভাবএ যেনো সে ঘুড়ি উড়ানো মুখস্ত করছে গভীর মনোযোগে। মাঝে মাঝে নায়িকা আড়চোখে নায়কের দিকে তাকাচ্ছে, নায়কের দৃষ্টি কোন্ দিকে সেটা দেখার জন্য। নায়ক একটু ভাব নিয়ে আকাশ বাতাস আর গাছের পাতা দেখছে। নায়িকা আড় চোখে তার পাতা দেখা দেখছে। যুথী নামক কাবাবের হাড্ডিটা একবার নায়ক আর একবার নায়িকার দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছে। এদিকে ঘুড়িটা যে কোন্ দিকে যাচ্ছে তা কেউ জানে না।
ছাদে লাট সাহেবকে দেখে মনের গভীরে খুশির স্রোত বয়ে গেলেও বাহিরে আমি বিরক্তির ছাপ এঁকে রাখলাম। হঠাৎ যুথীর দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে সীমান্তর দিকে তাকিয়ে আছে। ধমক দিয় বললাম-
__”ঐ কি দেখিস?”
সে থতমত খেয়ে বললো-
__”কই কি দেখি?”
আমি চোখ পাকিয়ে বললাম-
__”বুইড়া ধাইড়া খোকাবাবুকে দেখার কি আছে রে?”
__”উ না, আমি তো পাতা দেখতাছি।”
__”পাতার কি দেখিস?”
__”ঐ গাছের পাতা এই গাছের পাতারে দেখতাছে। আর এই গাছের পাতাও লুকাইয়া ঐ গাছের পাতারে দেখতাছে। আমি তাগো দেখতাছি।”
আমি হতবাক হয়ে বললাম-
__”এক গাছের পাতা আরেক গাছের পাতাকে দেখছে?”
__”হ”
__”ফালতু কথা রাখ।”
হঠাৎ যুথী লাট সাহেবের দিকে তাকিয়ে বললো-
__”ও দুলাভাই আপ্নে ভালা আছেননি?”
সে মুখে এক চিলতে হাসি এঁকে বললো-
__”হ্যাঁ ভালো আছি। তুমি কেমন আছো যুথী?”
__”সেরাম ভালা আছি। আইসেন ঘুরি উড়াই।”
__”আমি তো এসব পারি না।”
__”আমি শিখাইয়া দিমুনে।”
ওদের কথা শুনে গা জ্বলতে শুরু করলো। আমার সাথে একটাও কথা না বলে যুথীর সাথে কথা বলছে। আমি কেমন আছি তা জানার দরকার নেই। যুথী কেমন আছে সেটা তার জানতে হবে। থাকবোই না ছাদে। আমি হনহন করে চলে আসতেই শুনলাম, সীমান্ত বললো-
__”আচ্ছা আরেক দিন উড়াবো। এখন একটা জরুরী কাজ আছে।”
যুথী আমাকে ডেকে বললো-
__”বন্ন আফা যাইতাছেন ক্যা?”
আমি রাগ করে বললাম-
__”ঘুম ধরেছে তাই চলে যাচ্ছি।”
__”ঘুরি তো নামাইতে হইবো আফা।”
আমি চেচিয়ে উঠে বললাম-
__”ঐ লাট সাহেবকে বল নামিয়ে দেবে।”
যুথী সীমান্তকে বললো-
__”আফা আপ্নেরে ঘুরি নামাই দিতে কইছে দুলাভাই। আইসেন ঘুরিডা নামাইয়া দেন।”
সীমান্ত বললো-
__”যুথী ঐ বখাটে মেয়েকে বলো, সীমান্ত এসব পারে না।”
যুথী আমার দিকে তাকিয়ে বললো-
__”আইচ্চ্যা। আফা লাট সাব এই সব পারে না।”
আমি বললাম-
__”কি পারে লাট সাহেব?”
যুথী তাকে বললো-
__”কি পারেন আপ্নে দুলাভাই?”
সে বললো-
__”যুথী তাকে বলো, সীমান্ত তার মতো বখাটে কাজ করতে পারে না। সে খুব ভদ্র ছেলে।”
যুথী আমার দিকে ঘুরে বললো-
__”আফা দুলাভাই আপ্নের মতো বখাইট্টা কাম করতে পারে না। লাট সাব সেরাম ভদ্র।”
আমি রেগে উঠে বললাম-
__”তাকে বল সে যেনো আমাকে নিয়ে টানাটানি না করে।”
যুথী ওর দিকে তাকিয়ে বললো-
__”দুলাভাই আপনে আফারে নিয়া টানাটানি কইরেন না। এর ফলাফল ভালা হইবো না কয়া দিলাম।”
সীমান্ত ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো-
__”তাকে বলো, বখাটে মেয়েকে টানতে সীমান্তর বয়েই গেছে।”
যুথী আমাকে বললো-
__”আফা আপ্নের মতন বখাইট্টা মাইয়ারে টানতে দুলাভাইয়ের বইয়াই গ্যাছে গা।”
আমি যুথীর কীর্তি দেখে প্যাঁচ কষে বললাম-
__”তাকে বল সে একটা ধেড়ে বুড়ো ফাজিল পাজি বদ বজ্জাত খোকাবাবু।”
যুথী কিছু না বুঝেই তাকে বললো-
__”দুলাভাই আপ্নে একখান ধাইড়া বুইড়া ফাজিল পাজি বদ বজ্জাত খোকাবাবু।”
যুথীর কথা শুনে লাট সাহেব বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে রইলো তার দিকে। যুথী ভ্যাবাচাকা খেয়ে বললো-
__”ওরে আল্লাহ আমার হাতে কত কাম আর আমি এইখানে কি করতাছি? এই যুতী এইখানে কি করস রে? কাম চুন্নি একখান! খালাম্মা আইজ সেরাম বকবেনি। যাই বাবাহ।”
যুথী নাটাইটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে দৌড়ে নিচে চলে গেলো। যুথীর কীর্তিকলাপ দেখে আমার খুব হাসি পেলেও হাসি চেপে রাখলাম। লাট সাহেবের প্রতি তীব্র ক্ষোভ থেকে আমি রাগে নাটাই ছেড়ে দিয়ে রুমে চলে এলাম।

বিঃদ্রঃ গল্পের কাহিনী এবং চরিত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিক। বাস্তবতার সাথে গল্প কখনোই মিলবে না। জীবন কখনও গল্পের মতো সাজানো গোছানো হয় না। গল্পটা শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য লেখা হয়েছে তাই বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাশিত নয়।

পরের পর্ব আগামীকাল……
Written by- Sazia Afrin Sapna

পর্ব-১৭
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/permalink/923888704708516/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে