বউ Part- 15 (last)

0
1969

Story: বউ
Part- 15 (last)
writer: #Nur_Nafisa
.
.
বিয়ের পূর্ব পর্যন্ত তারা ফোনে প্রেম করে দিনগুলো কাটিয়ে দিয়েছে। রিয়াদ তার বাবাকে বলে স্কুল থেকে পুরো ৭দিনের ছুটি নিয়ে নিয়েছে। গায়ে হলুদের প্রোগ্রাম যার যার বাসায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিয়ের প্রোগ্রাম কমিউনিটি সেন্টার এ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ নাফিসাকে পার্লারে পাঠায় নি। পার্লারের লোক সেন্টারে আনা হয়েছে। কেননা দুবছর আগের রিস্ক কেউ নিতে প্রস্তুত নয়।
সাজানোর পরপর ই ফটোগ্রাফার তাদের দুজনের একত্রে ফটোশুট করে নিয়েছে।
বিয়ে পড়ানোর সময় রেহানের পাশে নাফিসাকে বসানো হয়েছে ঠিকই কিন্তু রেহান তাকে একবারের জন্যও দেখতে পারেনি। দেখবে কিভাবে! নাফিসা ইয়া বড় ঘোমটা টেনে বসে আছে।
পরিবারের সদস্যরা প্রায় সবাই অবাক! মেয়েটা এতো বড় ঘোমটা টেনে বসে আছে কেন! এখনকার মেয়েরা তো ঘোমটাই দেয় না!
আর রেহান বেচারা ভয় পাচ্ছে! তার পাশে বসা মেয়েটি কি তার বউ নাফিসা নাকি অন্য কেউ!
আশেপাশে মানুষ থাকার কারণে কোনো কথাও বলতে পারছে না। অবশেষে যখন সিগনেচার করলো তখন নিশ্চিত হলো এটা নাফিসা ই।
বিশেষ আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বিয়ে কার্য সম্পাদিত হয়েছে।
.
রিজোয়ান আহমেদ রেহানের হাতে নাফিসাকে তুলে দিলো।
মি ও মিসেস চৌধুরী নাফিসার বাবামায়ের সাথে কুশল বিনিময় করে বাড়ির বউকে নিয়ে বাসায় ফিরেছে।
.
মি ও মিসেস আহমেদ আজ শূন্যতা অনুভব করছে। তাদের মেয়েটা কি বড় হয়ে গেছে! আজ শশুর বাড়ি পাঠাতে হলো একমাত্র মেয়েকে। থাকবে কিভাবে তাদের পাগলীটাকে ছাড়া। কিন্তু কি করার, এটা যে প্রকৃতির নিয়ম! এখন শুধু এটাই প্রত্যাশা, তাদের পাগলী মেয়েটা ভালো থাকুক। সকল বাবামায়ের ই চাওয়া….
.
অন্যদিকে মি ও মিসেস চৌধুরী মহা খুশি। তারা একটা মেয়ে পেয়েছে। মেয়ের অভাব টা তাদের পূর্ণ হয়েছে নাফিসাকে পেয়ে। ছেলের বউ হিসেবে নয়, নিজের মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করেছে তারা নাফিসাকে।
.
রেহান রুমে এসে দেখলো সম্পূর্ণ রুম সাদা আর লাল গোলাপ ফুলে সজ্জিত। খাটের মাঝখানে লম্বা ঘোমটা টেনে বসে আছে এক লাল পরি।
দরজা লক করে জুতা খুলে, ফোনটা বেড সাইড টেবিলে রেখে খাটে এসে বসলো রেহান। দু’হাতে ঘোমটা তুললো বউ কে দেখার জন্য। নাফিসা চোখ বন্ধ করে আছে। ফর্সা মুখে মেকাপে সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তুলেছে। চোখের উপর নিচে মোটা করে কাজল আর্ট করা। ঘন কালো ব্রু গুলো আর্ট করা। গোলাপি ঠোঁট জোড়া লাল লিপস্টিকে ঢেকে আছে। গাল দুটো গোলাপি আভা ছাড়িয়েছে। তার উপর নাফিসার চোখের পাতাজোড়া ঘন ঘন কাপছে। রেহানের ঠোঁটে প্রশস্ত হাসির রেখা ফুটে উঠলো। মুহুর্তে “মাশাল্লাহ ” বলে বউ এর কপালে ভালোবাসার স্পর্শ একে দিলো।
নাফিসা চোখ মেলে তাকালো ঠিকই কিন্তু রেহানের দিকে তাকাতে পারছে না।
.
রেহান- এটা কি আমার পাগলী বউটা?
.
নাফিসা নিচের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলো।
.
রেহান- বউটা এমন নিরব কেন!
.
নাফিসা কোন জবাব দিলো না। রেহান নাফিসাকে কোলে নিয়ে বারান্দায় চলে গেলো। রেহানের বারান্দা টা অনেকটা বড়। ছোট একটা রুমের মতোই বলা যায়। বারান্দার লাইট অফ করে রেহান নাফিসাকে কোলে নিয়েই একটা টুলে বসলো। নাফিসা এখনো চোখ নিচেই নামিয়ে রেখেছে।
.
রেহান- বউ, আকাশে তাকাবে একটু?
.
নাফিসা গ্রিলের ফাকে আকাশে তাকিয়ে দেখলো পরিষ্কার আকাশ জুড়ে লাখো তারা ঝিকিমিকি করছে আর পরিপূর্ণ চাঁদটা বিস্তীর্ণ আলো ছড়াচ্ছে। নাফিসার মন উৎফুল্ল হয়ে উঠলো। আশ্চর্যমাখা হাসি নিয়ে রেহানের দিকে তাকালো। রেহানের মুখেও হাসির ঝিলিক! চাঁদের আলোতে দুজনের চেহারা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
নাফিসা রেহানের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। রেহান গোল্ডেন শেরওয়ানী পড়েছে, টপার বোতাম টা খোলা। চাঁদের আলোয় রেহানের ফর্সা গলাটা ও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।ইচ্ছে করছে গলায় ঠোঁটের ছোয়া লাগাতে। ফর্সা চেহারা ক্লিন সেভ করা, চুলগুলো কিছুটা এলোমেলো হয়ে কপালে পড়ে আছে, ঠোঁট জোড়া গোলাপি, ঘন কালো চোখের মনি জোড়া এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। নাফিসা যেন সেই দৃষ্টির মাঝে ডুবে যাচ্ছে।
.
রেহান- বউ দেখেছো! আজ গগন, নক্ষত্র এবং চদ্রও আমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। কেমন লেগেছে সারপ্রাইজ টা?
.
নাফিসা- সত্যিই অনেক সুন্দর! অনেক অনেক ধন্যবাদ।
.
রেহান- উহুম, ধন্যবাদ এভাবে দিলে হবে না। স্পেশাল কিছু করতে হবে….
.
নাফিসা এবার ধন্যবাদ জানাতে স্পেশাল কিছু করলো। রেহানের কাধ থেকে হাত সরিয়ে মুখটা ধরে দীর্ঘক্ষণ সময় নিয়ে ঠোঁটে ভালোবাসার স্পর্শ একে দিলো।
.
রেহান- বেস্ট গিফট ফর মি, ডেয়ার….. লাভ ইউ।
.
নাফিসা- লাভ ইউ টু…..
.
রেহান- হানিমুনে যাবো কোথায় আমরা, বলো?
.
নাফিসা- বাংলাদেশের সকল সুন্দর ও মনোরম জায়গাগুলোতে।
.
রেহান- ওকে… সব জায়গায় আবার রিয়াদকে টেনো না…
.
নাফিসা- হিহিহিহি…. ওকে।
.
রেহান- এই হাসিটা যেন সবসময় মুখে লেগে থাকে।
.
নাফিসা- তুমি আমার নিরব ভাষা গুলো বুঝো কিভাবে?
.
রেহান- ফর এক্সাম্পল?
.
নাফিসা- সারাদিন আমি ঘোমটা টেনে বসে ছিলাম। একবারও বলোনি ঘোমটা সরাতে। আবার রুমে এসে ঠিক আমি যেভাবে প্রত্যাশা করেছি, তুমি সেভাবেই আমার ঘোমটা সরিয়েছো।
.
রেহান- উত্তর তো একটাই প্রকাশ করবো। ভালোবাসি তাই, সব বুঝে যাই।
তবুও একবার কনফিউজড ছিলাম, এটা আমার বউ কিনা! হাহাহা….
.
নাফিসা- ঘুম পেয়েছে আমার খুব।
.
রেহান- ঘুমাও।
.
নাফিসা- কোথায় ঘুমাবো! তোমার কোলে বসে!
.
রেহান- হুম…
.
নাফিসা- স্টুপিড, এভাবে ঘুমানো যায়! বিছানায় যাবো…
.
রেহান- (নাফিসাকে কোলে নিয়ে রুমে বিছানার দিকে যেতে যেতে) দেখোতো আমাদের জন্য কত সুন্দর ভাবে ফুল দিয়ে বিছানা সজ্জিত করা হয়েছে, এখানে ঘুমানো কি শোভা পায়!
.
নাফিসা- তাহলে কি নিচে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সারারাত বিছানা দেখবো!
.
(রেহান জবাব না দিয়ে লাইট অফ করে নাফিসাকে নিয়ে শুয়ে পড়লো।)
.
রেহান- নো, সজ্জিত বিছানায় আমরা অন্যকিছু করবো।
.
নাফিসা- কি?
.
রেহান- ভালোবাসা বিনিময় করবো…
.
নাফিসা- (রেহানকে জড়িয়ে ধরে) অনেক বেশি, ভালোবাসি, তোমায় আমি, মাই হ্যান্ডসাম বর।
.
রেহান- সারাজীবন ভালোবাসতে চাই #বউ ……..
.
(শুভ সমাপ্তি)
.
অসংখ্য ধন্যবাদ ও অফুরন্ত ভালোবাসা গল্প পড়ার জন্য, শেষ পর্যন্ত সাথে থাকার জন্য ও আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য। গল্পটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে তা আবারো জানাতে ভুলবেন না…. ইনশাল্লাহ দীর্ঘ সময় পর আবার গল্প নিয়ে হাজির হবো। আবার নাফিসাকে ভুলে যাবেন না কিন্তু। ভুলে গেলেও আপনাদের জন্য আবার নতুন গল্প এনে মনে করিয়ে দিবো নাফিসাকে ?। আল্লাহ হাফেজ….
.
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
[ নোটিশ………..
আমার গল্প কেউ কপি করবে না… যদি কারো ইচ্ছে হয় শেয়ার করতে পারেন, কিন্তু কপি করবেন না!
মানুষ এতোটা নির্বোধ কিভাবে হয়!
এমন কাজ কিভাবে করতে পারে তারা!
তাদের মাঝে কি মানবতাবোধ বলতে কিছুই নেই!
তাদেরকে কি মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়!
অন্যের লেখা কিভাবে তারা নিজের নামে চালিয়ে যায়!!!
তারা পশুর চেয়েও অধম! আরে, পশুও তো তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, নীতি, পদ্ধতির মধ্যে চলে। কপিবাজ দের সেই ন্যূনতম বোধ টুকুও নেই! তাহলে কি তারা অন্যের লেখা কপি করে এমন নিজের নামে চালিয়ে দিতো!!! ভালো লাগলে শেয়ার করতে পারতি, পাবলিকের কাছে নিজেকে তুলে ধরতে নিজের বিবেক-বুদ্ধি তে ভালো কিছু করে দেখা, অন্যের লেখা চুরি করে কেন চোর হিসেবে নিজেকে পরিচিত করছিস!!! পুরো গল্পটা কপি করতে পারিস, আর লেখক/লেখিকার নামটা সাথে কপি করতে কি খুব কষ্ট হয়! যত্তসব ইতর, ভণ্ডামি! ঘৃনা প্রকাশ করছি তাদের প্রতি যারা গল্প কপি করে নিজের নামে প্রচার করে….!
আমি আবারও বলছি পাঠকদেরকে, নূর নাফিসার গল্প কেউ কপি করবেন না। গল্প পড়তে আমার নিজস্ব পৃষ্ঠাকে ফলো করতে পারেন। আর যেখানে যেখানে পোস্ট করার আমি নিজেই করবো। আর আমার সাহায্য করতে যারা আমার লেখা নিজের নামে প্রচার করছে তাদের রিপোর্ট দিন।
গল্প লেখা আমার পেশা না। গল্প লিখে আমি কোনো পারিশ্রমিক পাই না। শখের বসে, আপনাদের বিনোদন দিতে গল্প লিখি। এতে আমার ক্ষতি ছাড়া কোন লাভ হচ্ছে না। তার উপর এই কপিবাজদের অত্যাচার সহ্য হচ্ছে না! আমি এমন ঘটনা আরো দেখলে গল্প লেখা বন্ধ করে দিবো……… (Nur Nafisa)]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে