প্রেয়সীর ছোঁয়া (পর্ব ১১

0
923

প্রেয়সীর ছোঁয়া (পর্ব ১১)
জামিয়া পারভীন তানি

“ আচ্ছা আদু, তোমার মাহিরার কথা মনে পড়ে না!”
“ পড়ে তো! কিন্তু সে তো আমার প্রেমিকা ছিলো। আর মাহিরার সাথে সম্পর্ক টাও অবৈধ ছিলো। বৈধ করতে চাইলেও সুযোগ পাইনি তো! তাছাড়া বিয়ে করা বউয়ের সামনে, I mean বৈধ সম্পর্কের কাছে অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে আফসোস করলে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা ও নারাজ হবেন। ”
“ আমাকে সত্যিই ভালোবাসো তো!

নাকি মাহিরা ভেবে দুঃখ ভুলে থাকো!”
“ সত্যি বলতে দুদিন আগেও তোমাকে তেমন করে ভালোবাসতে পারিনি। তবে বুঝতে পেরেছিলাম তুমি আমার প্রতি দুর্বল হয়ে গেছো। হুমম হয়তো বোনের খুনী ভেবে প্রতিশোধ নিতে এসেছিলে! কিন্তু আমি নির্দোষ জেনে তুমি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছো! তোমার চোখের গভীরে তাকিয়ে আমার অন্যরকম ফিলিংস হয়। মনে হতো তুমি শুধু আমার জন্যই এসেছো! তাই তোমাকে পাওয়ার লোভ সামলাতে পারিনি। এটা ভালোবাসা কিনা জানিনা কিংবা শারীরিক চাহিদা কিনা তাও জানিনা! তবে তোমার মাঝে যাদু আছে, যা আদনান কে আফরার থেকে আলাদা করতে পারবে না! ”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



আফরা আদনানের নাক চেপে ধরে বললো,
“ তা দুই দিনে আমায় খুঁজে পেলে কিভাবে? ”
“ তোমার বাবার কাছে থেকে ঠিকানা নিয়েছি আর আমি মাহিরার সাথে প্লান করেই রেখেছিলাম বিয়ের পর হানিমুনে মাহিরার জন্মভূমি ঘুরে দেখবো! মাহিরা আর আমি তখন থেকেই আমার পাসপোর্ট রেডি করে রেখেছিলো। ভিসার আবেদন ও করা ছিলো। কিন্তু মাহিরা চলে যাওয়ায় সব প্লান ভেস্তে যায়। আর আব্বু তো আছেই পার্টির নেতা। ভিসা পেতে বেশী দেরি হয়নি। চলে আসলাম প্লান অনুযায়ী হানিমুনে। তা হানিমুনে এসে তো বউ আদর না করে থাকা যায়না! তাই একটু আদর করেছি তোমায়। কিছু মনে করোনি তো আবার? ” আদনান উচ্চস্বরে হাসি দেয়।

আফরা আদনানের বুকে কয়েকটা কিল দেয়।
“ পাজি ছেলে, লজ্জা ও নেই। ”
কথাটা বলে আফরা আদনানের বুকে মাথা রাখে। শীপে বসে ঝর্নার পানি পড়া উপভোগ করছে আর আদনানের সাথে গল্প করছিলো আফরা। হালকা পানির ছিটা এসে দুজনের গায়ে লাগছিলো। গরমের দিন হওয়াতে নায়াগ্রা তে বেশ ভালোই লাগছিলো দুজনের। সামারে নায়াগ্রার ফলস দেখতে মনে হয় অনেক উঁচু থেকে জলধারা পড়ছে আর ধোঁয়ার মতো সৃষ্টি করছে বিশাল এরিয়া ঘিরে। হেলিকপ্টার দিয়ে এই ধোঁয়াশা ভালো বোঝা যায়। কিন্তু শীতকালে অনেকটা জায়গায় তুষার জমে। তখন সাদার মাঝে পানির ধারা বয়ে চলেছে মনে হয়।
আফরা যদিও আগে এসেছে, তবুও ওর ইচ্ছে হচ্ছে পানিতে নামার। কিন্তু স্রোত এতো বেশী যে পানিতে নামলে স্রোতের টানে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে অথবা ডুবে যেতে পারে। তবুও আফরা আদনাকে বলে উঠে,
“ আদু, চলোনা শীপে দড়ি বেঁধে পানিতে নামি। ”
“ তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে আফরা! দড়ি ছিড়ে দুজনকে তলিয়ে নিবে, এতো স্রোত।”
“ জানো! ছোটবেলায় কি হয়েছিলো? ”
“ বলো। ”
“ আব্বু, আম্মু, আমি আর মাহি চারজন হেলিকপ্টার এ করে এখানে এসেছিলাম। দুই বোনে খুব এনজয় করছিলাম। হটাৎ করে মাহিরা জানালা দিয়ে ঝুকে দেখতে গিয়ে প্রায়ই পড়ে যাচ্ছিলো। আব্বু ওর পা না ধরলে ও কোথায় যে হারিয়ে যেতো বলার মতো না ! তখন বেঁচে গেলেও ওর শত্রু ওকে বাঁচতে দিলোনা। ”
“ মন খারাপ করোনা, প্রেমিকা বলে নয়। মাহিরাকে যে খুন করেছে তাকে শাস্তি দিয়েই ছাড়বো। ”
“ আমি জানি খুনী কে?”
“ কে?”
“ সেটা ঢাকা গেলেই জানতে পারবে। ”

আদনান নিশ্চুপ হয়ে যায়, নিজেকে ধিক্কার দিতে থাকে। কেমন প্রেমিক সে, যে তার প্রেয়সী কে শত্রুর ছোবল থেকে রক্ষা করতে পারেনি! আর এখন আফরা! পারবে তো সব বিপদ থেকে আফরা কে রক্ষা করতে! মাহিরার খুনের পিছনে দুজনের হাত থাকতে পারে! কাজের মেয়ে নাইলা, না হয় অনাথ মেয়ে নাদিরা। আর এরিক টাই বা কে? অনেক প্রশ্ন জমে আছে আদনানের মনে। সব কিছুর সমাধান করতে হবে। শুধু প্রয়োজন সময়ের।

আফরা আদনানকে চুপ থাকতে দেখে আদনান এর গালে চুমু দেয়। এরপর বলে,
“ শীপ থেকে নেমে আমরা লাঞ্চ করবো, এরপর গার্ডেনে ঘুরবো। ”
আদনান অন্যমনস্ক দেখে আদনানের বুকে আস্তে করে ধাক্কা দেয় আফরা। এতে আদনান ব্যালেন্স হারিয়ে শীপ থেকে পানির দিকে পড়ে যেতে শুরু করে। আদনান আত্ম চিৎকার করে কোনভাবে আফরার এক হাত ধরে। এমন ঘটনা ঘটবে আফরা নিজেও বুঝতে পারেনি। আদনান আফরার হাত ধরে পানিতে স্রোতের টানে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। আফরা কিছু বুঝতে না পেরে help me , help, please help me, বলে চিৎকার শুরু করে। আফরা শীপের উপর শুয়ে আদনানের এক হাত নিজের দুইহাত দিয়ে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে। আফরার চিৎকারে শীপের থাকা কয়েকজন যুবক আর কানাডার পুলিশ এগিয়ে আসে। সবার প্রচেষ্টায় অবশেষে আদনান কে তুলে আনতে পারে।

আদনানকে তোলার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলে । দ্রুত কানাডার ডক্টর এবিসি ম্যানেজমেন্ট করে। আদনান কে ঘুমের ওষুধ দিয়ে দেয়। শীপ তীরে ভিড়তেই আফরা আদনানকে দ্রুত এম্বুলেন্স এ করে হসপিটালে নিয়ে যায়। হটাৎ করে এক্সিডেন্ট করায় আদনানের হার্টবিট, প্রেশার বেড়ে গিয়েছিলো। হসপিটালে না নিলে আদনানের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আফরা ফুঁপিয়ে কাঁদছে তখন থেকে। ফাজলামো করতে গিয়ে কতো বড় বিপদ সে ডেকে এনেছে। আফরা নিজেও ভয়ে কুকড়ে গেছে। শুধু চিন্তা করছে আদনান কিভাবে সুস্থ হবে!

চলবে……

কারোও মনে প্রশ্ন জাগলে বলতে পারেন, সব উত্তর দিবো।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে