প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_৬

0
2209

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৬
#Writer_Afnan_Lara
?
মনে হয় ৯টা বেজে গেছে,রোডে মানুষের সমাগম বেড়ে আসতেসে
বাস থেমে আছে কারন সামনে দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে,কোন রুট এটা আহানা জানে না,এদিক ওদিক তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করতেসে ট্রেনটা কোনদিকে যাবে সেই জায়গার নাম টা কি?
এদিকে বাজার বসেছে হাটের মত,তরিতরকারি,ফল
মাছই বেশির ভাগ চোখে পড়তেসে,মনে হয় কিছুক্ষন আগেই নদী থেকে তুলে এনে বাজারে বিক্রি করতে আনা হয়েছে মাছগুলা,এখনও লাফিয়ে যাচ্ছে
ইলিশ,চিংড়ি মাছ চিনতে পারলো আহানা কিন্তু বাকিসব চিনলো না সে
কেমন একটা আঁটসে গন্ধ আসতেসে
শান্ত হেড ফোন খুলে পকেট থেকে একটা মাস্ক নিয়ে পরে নিলো
৩মিনিট পর ট্রেন চলে গেলো বাস ও সেই হাট পেরিয়ে চলে যাচ্ছে
শান্ত স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে মাস্কটা খুলে পকেটে পুরে নিলো
বাস এবার খুব জোরে গতি বাড়িয়ে দিলো
সাথে বাতাসের তোড়টাও বেড়ে গেলো,মনে হচ্ছে বাস দৌড়াচ্ছে
আহানার ১হাত লম্বা লম্বা চুলগুলো উড়ে শান্তর নাকে মুখের উপর পড়তেসে
.
হাইচ্ছুউউউউউউ!
আহানা চমকে তাকালো শান্তর দিকে
.
তোমার এই চুল বাঁধো বলতেসি,অসহ্যকর,কেন যে ম্যাম আমাকে এই বাসের দায়িত্ব দিলো,তাও দিলো তো দিলো এই মেয়েটার পাশের সিটটাই কপালে ছিল
আহানা মুখ বাঁকিয়ে খোঁপা করে নিলো,২মিনিটেই বাইরের বাতাসে ঘুম এসে গেলো তার,জানালায় মাথা ঠেকিয়ে ঘুমাচ্ছে সে
শান্ত এতক্ষণ ঘুমিয়েছে এবার সে বাইরের দৃশ্য দেখায় ব্যস্ত,বাসটা খালি বড় একটা রোড দিয়ে চলছে,মাঝে মাঝে কিছু কিছু দূর পাল্লার বাস চোখে পড়তেসে
ইকোনো,জোনাকি আর হিমাচল
রোদ এখন হাত ধুয়ে রোদের তাপ দিয়ে যাচ্ছে,বাস ভেদ করে গরম শান্তকে ধরেছে,আহানার পাশে বসায় শান্তর মুডটা এমনিতেও খারাপ হয়ে আছে তার উপর এত গরম!
আহানা জানালা আটকিয়ে জানালার গ্লাসে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমায় যার কারনে এক ফোটা বাতাস ও আসতেসে না
শান্ত একটু এগিয়ে গিয়ে জানালা খুলতে যেতেই আহানা জেগে গিয়ে চোখ বড় করে তাকালো শান্তর দিকে
.
আপনি কি করতেসেন এদিকে এসে,কি উদ্দেশ্য আপনার?
.
জানালা খুলতে খুলতে শান্ত দাঁতে দাঁত চেপে বললো রেপ করবো তাই
আহানা ভয় পেয়ে ওড়না ঠিক করে একটু পিছিয়ে গেলো
.
শান্ত ভেটকি দিয়ে জানালা খুলে নিজের সিটে ফিরে আসলো তারপর হেডফোনের দিকে তাকিয়ে ব্রু কুঁচকে সেটার প্যাঁচ খুলতে খুলতে বললো তুমি এসবের যোগ্যও না,নিজেকে এত বড় কিছু ভেবো না,শাহরিয়ার শান্ত যে মেয়েকে পাত্তা দেয় সে হাই ক্লাসের হয়
.
আহানা আর কিছু বললো না,শান্ত ঠিক বলেছে,আমি এমনিতেও কোনো ক্লাসের না
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
এসে গেছে রাঙামাটি♥
সবাই বাস থেকে নামতেসে ধীরে ধীরে
শান্ত রোডের পাশের একটা পাহাড়ের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে সবাইকে বলতেসে বাস থেকে নামার জন্য
আহানা নেমে দাঁড়াতেই ওর চোখে পড়লো একটা পাহাড়ের উপর,কি সুন্দর!!সবুজে ঘেরা,পাহাড় আহানার খুব প্রিয়,আগে যে আশ্রমে সে থাকত সেখানে একটা ক্ষেতের ওপারে একটা ছোট খাটো পর্বত ছিল,আহানা রোজ বিকেলে সেখানে ঘুরতে যেতো,ইস কি ভালোই না লাগতো তখন
আহানা একটু এগিয়ে গেলো পাহাড়টা দেখার জন্য,মনে হয় যেনো হাত দিয়ে ছোঁয়া যাবে পাহাড়টা
.
তোমাদের কি যেখানে সেখানে ঘুরার জন্য আনছিলাম??চুপচাপ টিমের সাথে থাকবা,নড়বড়ে যেনো না হয়
আহানা পিছন ফিরে শান্তর দিকে তাকাতেই শান্ত ওকে না দেখার ভান করে হেঁটে চললো
.
এই লোকটা শান্তিতে আমাকে একটু কিছু দেখতেও দিবে না,বেয়াদব!কচুর লিডার হইসে উনি,আমি এদিক ওদিক গেলে উনার কি সমস্যা?খালি আমাকে কথা শুনানোর ধান্ধায় থাকে
.
টিমের সবাই হেঁটে রেস্টুরেন্টের দিকে যাচ্ছে
এলিনা কোথা থেকে এসে শান্তর সাথে হাঁটা ধরলো
.
বেব তোমাকে বলসিলাম না আমি কাল রাতে কল করলে রিসিভ করবা!তুমি জানো?নওশাদ কল ধরে মজা করসে আমার সাথে
.
শান্তর হাসি পাচ্ছে কালকের ঘটনা মনে পড়ায়,মুচকি হেসে নওশাদের দিকে তাকালো সে
একটা গাছের পাতা টানাটানি করতেসে নওশাদ আর খাতায় কিসব লিখছে,ফিউচার উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আমাদের
.
এলিনা ওর দিকে তাকিয়ে বললো ওর তো খবর আছে
তুমি কি কাল দেখো নাই নওশাদ তোমার ফোন ধরে আমার সাথে মজা করতেছিলো?
.
নাহ তো, আমি তখন মেবি শাওয়ার নিচ্ছিলাম
.
ওহহ
.
দোস্ত!!
রুপা দৌড়ে এসে আহানাকে জড়িয়ে ধরলো
শান্ত ভাইয়া আমাকে তোদের বাসে উঠতে দেয়নি তাই আমাকে সেকেন্ড ইয়ারের বাসে উঠতে হয়েছে?
.
ওকে সমস্যা নেই,এখন তো আমরা একসাথে☺
.
জনপ্রতি পরোটা ২টা একটা ডিম আর ভাজি আর এক কাপ চা খাওয়ানো হচ্ছে সবাইকে
আহানা চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে দূরে শান্ত আর এলিনা বসেছে
এলিনা এসব বাদ দিয়ে অন্য খাবার অর্ডার করেছে,তেল জাতীয় খাবার এলিনা একটুও পছন্দ করে না,আর হাতে টাকা থাকতে এমন ফালতু খাবার খাবো কেন আমি?
.
খাওয়া শেষ করে সবাই এবার ঘুরতে বের হলো
.
স্যার ম্যাডামরা সবার পিছনে আসতেসে গসিপ করতে করতে,এত বড় দামড়া স্টুডেন্টদের তো আর হাত ধরে উঠানো লাগবে না তাই উনারা আস্তে ধীরে আসতেসে,আর সবাইকে দেখে রাখার জন্য তো গ্রুপ লিডার আছেই!
এলিনা ইয়া বড় হিল জুতা পরে এসেছে,পাহাড়ে উঠার সময় দুম করে স্লিপ খেয়ে পড়ে গেলো সে
.
এটা দেখে রুপা ফিক করে হেসে দিলো,সাথে নওশাদ,সূর্য আর রিয়াজ ও হেসে দিলো তবে মুখে হাত দিয়ে
.
এ্যা শান্ত দেখো না আমার পা মচকে গেসে আমি এখন হেঁটে উপর পর্যন্ত কি করে যাবো?এ্যা?হিল ও ভেঙ্গে গেছে আমার
শান্ত আহানার দিকে তাকিয়ে এগিয়ে এসে এলিনাকে কোলে তুলে হাঁটা ধরলো
.
হুহ যেভাবে আমার দিকে তাকিয়েছে মনে হয় যেনো আমাকে জেলাস ফিল করানোর জন্য এমনটা করলো
কচুর জেলাস হবো আমি,তাও এই বেয়াদবটাকে নিয়ে
.
এলিনা একটা ভাব নিয়ে আশেপাশের সবার দিকে তাকাচ্ছে,বাকিরা ওর দিকে তাকিয়ে জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে,শান্তর কোলে উঠা ইজ এ বিগ থিং
.
পাহাড়ের উপরে এনে শান্ত এলিনাকে নামিয়ে দিলো,এলিনা হিল হাতে নিয়ে চারিদিকটা দেখায় মন দিসে,পাহাড়ের চারপাশ দিয়ে রাস্তা বানিয়ে রাখা ছিল বলে শান্তর খুব একটা কষ্ট হয়নি এলিনাকে নিয়ে উঠতে
সবাই এদিক ওদিক হেঁটে হেঁটে দেখছে
এতটা উপরে তারা যে আশেপাশের বাকি সব পাহাড়ের শীর্ষস্থান দেখা যাচ্ছে,দূরে একটা পাহাড়ের উপর স্থানীয় লোকেরা চাষাবাদ করতেসে,কারো কারো পিঠের সাথে বালতিও আটকানো
আহানা রুপাকে নিয়ে দূরের একটা পাহাড় নিয়ে কথা বলতেসে
.
শান্ত পানি খেয়ে রিয়াজ আর নওশাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো
.
কিরে শান্ত ঐ ভুটকিরে কোলে নিয়ে তোর হাড় আস্ত আছে তো??
.
আরে সূর্য কি বলিস ওর তো ঢাকায় ফিরে হাড্ডি অপারেশন করাতে হবে
.
তোরা থাম,শান্ত একটা কথা বল তুই তো এলিনাকে পাত্তা দেস না তাহলে আজ ওরে কোলে তুলে এত বড় পাহাড়ে উঠতে গেলি কেন?
.
শান্ত আহানার দিকে তাকিয়ে আছে
.
রিয়াজ নওশাদকে একটা ধাক্কা মেরে ইশারা করলো ওকে
সূর্য ও ব্যাপারটা খেয়াল করলো,শান্ত আহানাকেই দেখছে শুধু
.
আরে নওশাদ বুঝিস না কেন শান্ত ভাই অন্য একটা মেয়েকে জেলাস ফিল করানোর জন্য এমন করেছে
.
আচ্ছা আচ্ছা
.
ওরা কি বললো শান্ত সেদিকে কান না দিয়ে আহানার দিকে তাকিয়ে আছে
.
পাহাড় দেখা শেষে শান্ত আর রিয়াজ বললো হইসে এবার সবাই পাহাড় থেকে নামো আমাদের এবার আরেকটা জায়গায় যেতে হবে
সবাই নামা ধরলো আস্তে আস্তে
আহানা হাঁটতে যেতেই ওর ওড়না আটকে গেলো পাহাড়ের উপরের একটা বন্য গাছের সাথে
.
রুপা অনেক টানাটানি করলো ওড়না ধরে তাও ছুটাতে পারলো না
.
আহানাও চেষ্টা করতেসে তাও ছুটাতে পারছে না
ওড়নাটা ভালো করেই আটকেসে,এমন একটা গাছের সাথে আটকেসে যেটার ঢালেও কাটা,পাতায় ও কাটা
আহানা আসতেসে না দেখে শান্ত ধমক দিয়ে বললো এতই যখন থাকার শখ তো থেকে যাও এখানে,ঢং করে আবার আমাদের সাথে আসতে গেছো কেন?
.
আহানা আর ভাবিস না,ওড়নাটা ছিঁড়া ছাড়া আর উপায় নাই,গাছ তো টাচ ও করা যাবে না,যে কাঁটা বাপরে বাপ,ছিঁড়ে ফেল দেরি হয়ে যাচ্ছে আমাদের
.
আহানা ভাবলো এই জামাটার ওড়না ছিঁড়ে গেলে আরেকটা ওড়না মিলিয়ে পড়বো কি করে,বাসায় যে ওড়নাগুলা আছে সেগুলা তো পুরান সব,সাথে ছিঁড়াও
আহানা এসব ভেবে গাছটার পাতা ধরে এক টান দিলো,গাছটা ছিল একটা কাঁটা গাছ
টান দেওয়ার ফলে আহানার হাত কেটে গেলো অনেকটা
.
একি এটা কি করলি তুই,সামান্য ওড়নার জন্য হাত কেটে ফেললি,বেকুব
.
আহানা হাত লুকিয়ে ফেললো
কিছু না তো চল যাই
.
আমি মাত্র দেখলাম কাটা গিয়ে রক্ত বের হচ্ছে আর তুই বলিস কিছু না?দেখি হাত দেখা আমাকে
.
তোমরা এখানে গসিপ করতে এসেছো?চলো বলতেসি!আমার কথা শুনো না কেন?ম্যামের কাছে বিচার দিতাম?
.
আহানা শান্তর ধমকে রুপার হাত ধরে হাঁটা ধরলো,রুপাকে হাত কাটা নিয়ে আর কিছু বলার সুযোগই দিলো না
.
সবাই এবার কাপ্তাই হ্রদ যাবে
সেখানে ট্রলারে করে যাবে সবাই,মোট ৬টা ট্রলার হায়ার করলো স্যাররা
আহানা রুপাকে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বসে আছে,সে সাঁতার জানে না,তাই ভয় করতেসে তার
শান্ত ফোন নিয়ে পাহাড়ের ভিডিও করতেসে,এলিনা মেকআপ নিয়ে ব্যস্ত
দুপাশে পাহাড় মাঝখান দিয়ে হ্রদ,সেটার উপর দিয়ে ট্রলার যাচ্ছে
ট্রলার থামলো একটু দূরে গিয়ে একটা সুন্দর পাহাড়ের সামনে,যেটার নিচে বিরাট একটা পাথর, উপরে গাছপালা
সবাই হইহুল্লড় শুরু করে দিসে,এমন অপরুপ দৃশ্য দেখেই সবাই তো রীতিমত অবাক
বসার থেকে দাঁড়িয়ে সবাই পাহাড়টা দেখতেসে
এলিনা একটু কোণায় গিয়ে দাঁড়িয়ে তার একটা ফ্রেন্ডকে বললো ছবি তুলে দিতে পাথর পাহাড়টার সাথে,ভিউটা জোস
আহানা আর রুপা পাথরটা নিয়ে তার পাশেই দাঁড়িয়ে কথা বলতেসিলো
এলিনার ফ্রেন্ড বললো আহানার চুল দেখা যাচ্ছে ছবিটাতে,ওকে সরাতে বললো
এলিনা বিরক্তি নিয়ে আহানাকে এক ধাক্কা দিয়ে বললো সরে যেতে
আহানা কিণারায় দাঁড়িয়ে ছিল তখন
এলিনার ধাক্কায় সে স্লিপ খেয়ে ট্রলার থেকে পানিতে পড়ে গেলো
রুপা চিৎকার দিয়ে উঠলো
আহানা সাঁতরিয়ে উপরে উঠার চেষ্টা করতেসে
কিন্তু যে সাঁতার জানে না সে বিপদে পড়ে সাঁতার কি করে পারবে?
রুপা চিৎকার দিয়ে বললো আহানা সাঁতার জানে না
.
এলিনা মুখে হাত দিয়ে বললো ইস আমি খেয়াল করি নাই,এখন এরে উঠাবে কে?
শান্তদের ট্রলারে ছিল ৭জন ছেলে বাকি সব মেয়ে,ছেলেগুলো পানিতে নামতে নানা বাহানা করতেসিলো,কেউ কেউ বললো পানিতে নামলে শার্ট ভিজে যাবে,কেউ বললো পানির গভীরতা বেশি
শান্ত আর কোনোদিক না ভেবেই ওর জ্যাকেট খুলে ঝাঁপ দিলো পানিতে
.
শান্ত!!
.
শান্ত পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আহানার হাত ধরে ফেললো আহানা আর একটুর জন্য ডুবেই যাচ্ছিলো
শান্ত আহানাকে কাছে টেনে এক হাতে আহানাকে ধরে আরেক হাতে ট্রলারের থাকা একটা ছেলের হাত ধরে উপরে উঠে আসলো পানি থেকে
আহানা নিচে বসে কাশতেসে যদিও এখনও জ্ঞান হারায়নি
রুপা তার ওড়না দিয়ে আহানার মাথা মুছে দিতেসে
শান্ত ট্রলারের শেষ প্রান্তে গিয়ে বসে তাকিয়ে আছে আহানার দিকে
এলিনা একটা রুমাল নিয়ে কাছে এসে শান্তর মাথা মুছে দিলো
.
শান্ত আহানার দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে আছে আর হাঁপিয়ে যাচ্ছে অনবরত
আহানা কাশি থামিয়ে শান্তর দিকে তাকালো
সাথে সাথে শান্ত আরেক দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো
কাপ্তাই হ্রদ এখনও ১০মিনিট ধরে দেখা বাকি
আহানা শীতে ভেজা শরীরে কাঁপতেসে বসে বসে
শান্ত নিজের জ্যাকেটটা ছুঁড়ে মারলো আহানার দিকে
.
এলিনা গাল ফুলিয়ে বললো তোমার জ্যাকেট ওকে দিচ্ছো কেন?দিতে হবে না
আহানা জ্যাকেটটা না নিয়ে আরেকদিকে ফিরে বসলো আর বললো লাগবে না আমার
এলিনা সাথে সাথে জ্যাকেটটা নিয়ে আসলো ওখান থেকে তারপর শান্তকে দিয়ে দিলো
শান্ত তার গায়ের ভেজা শার্ট খুলে জ্যাকেটটা পরে নিলো কারন শার্ট পুরো ভিজে গেছে তার
.
আহানা ওর ওড়না দিয়ে পুরো গা ঢেকে বসে আছে

সবাই ডাঙায় ফিরে আসতেই শশী ম্যাম আহানাকে দেখে চমকে বললেন একি ও এত ভিজলো কি করে?
.
ম্যাম এই এলিনা আহানাকে ধাক্কা দিতেই ও পানিতে পড়ে গেসিলো পরে শান্ত ভাই ওকে তুলেছে
.
কি বললে রুপা?আমি ধাক্কা দিয়েছি?আমি কি জানতাম নাকি ও এত কিনারায় দাঁড়িয়েছে?আজব তো!!
.
হইসে থামো তোমরা,আহানা বারতি জামা এনেছো?
.
না ম্যাম
.
এখন আর কি করার এই ভেজা জামায় থাকতে হবে,সবাই বাসে উঠো গিয়ে
শান্ত বাসের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে,সবাই বাসে উঠতেসে এক এক করে
.
আহানা তুই প্লিস একা বসিস বাসে আমি আজ তোর সাথে বসতে পারবো না
.
কেন?
.
আসলে আমার ইয়ে আসলে ও ঐ বাসে বসেছে তাই ওর সাথে গিয়ে বসবো
.
আহানা হেসে বললো ঠিক আছে তারপর সে গিয়ে আগের সিটে এসে বসলো
সবাইকে উঠিয়ে শান্ত সেই আবার আহানার পাশের সিটটাই খালি পেলো
চুপচাপ গিয়ে আবারও আহানার পাশে বসলো সে
আহানা দুহাত দিয়ে কাঁধ ধরে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে,জানালার কাঁচে আহানাকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে,চোখ বন্ধ করে আছে সে
শান্ত নিজের জ্যাকেটটা খুলে আবারও আহানার দিকে বাড়িয়ে ধরলো
আহানা আরেকদিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো,এবারও জ্যাকেটটা নিলো না
শান্ত এবার প্রচণ্ড রেগে গেলো
.
সমস্যা কি তোমার?সেধে সেধে জ্যাকেট দিচ্ছি নিচ্ছোই না এত ভাব কাকে দেখাও?ভুলে যেওনা কিছুক্ষন আগে তোমাকে আমি বাঁচিয়েছিলাম
.
কে বলেছিল বাঁচাতে?মরতে দিতেন,মরে গেলে আপনার জ্বালা যেতো
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে