প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_১৬

0
2184

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_১৬
#Writer_Afnan_Lara
?
আহানা হেঁটে বাড়ি ফিরছে হঠাৎ ওর সাথে দেখা হয়ে গেলো সেই মেয়েটার যার কাছে ও কানের দুল বিক্রি করেছিল
মেয়েটা আহানাকে চিনতে পেরে এগিয়ে আসলো
.
তুমি আমার কানের দুলটা কি করেছিলা?
.
শান্ত ভাইয়া আমার থেকে ১০০টাকা দিয়ে সেটা কিনে নিয়ে গেছে
.
ওহ
.
ভাইরে কি আপনি চিনেন?
.
আহানা হুম বলে হেঁটে চলে গেলো,বাসায় ফিরে ভাবতেসে সে শান্ত ওর দুলটা কেন কিনেছিল,আবার ওকে সেটা ফেরত ও দিলো
ভার্সিটিতে গিয়ে আহানা চারিদিকে শুধু শান্তকেই খুঁজে যাচ্ছে,কোথায় গেলো,আজ আসে নাই নাকি
আহানা এদিক ওদিক তাকিয়ে পিছন ফিরতেই শান্তর মুখোমুখি হলো
শান্ত মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে ওর দিকে,হাত দুটো পকেটে রেখে
আহানা ঢোক গিলে একটু পিছিয়ে গেলো,তারপর বললো রুপা ডাকতেসে
.
দাঁড়াও
.
কি?
.
রুপা তো ডাকতেসে না
.
আহানা চুপ করে থেকে বললো আসলে ঐ তখন ডাকতেসিলো
.
ওহ আচ্ছা,এতক্ষণ আমাকে খুঁজতেসিলে বুঝি?
.
নাহ তো,কে বললো?
.
ওহহহ,গুড
.
আমি যাই
আহানা কিছুটা দৌড়ে পালিয়ে আসলো,আজ শান্তর হাবভাব ঠিক লাগতেসে না তার
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
শান্ত আহানার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে,হঠাৎ কেউ একজন ওর হাত ধরে নিজের দিকে ফিরালো

এলিনা!
.
বেব!কি ব্যাপার বলোতো,তুমি কি আমাকে মিস করো না একটুও?আমি ভার্সিটিতে না আসলে একটু ফোন ও করো না,আর আমি করলেও রিসিভ করো না
.
শুনো এলিনা আমি আগেও বলেছি এখন আবার বলতেসি তোমার প্রতি আমার কোনো ফিলিংস নেই,শুধু শুধু সম্পর্কটাকে আগে বাড়াতে চাও কেন বলোতো?
.
আমি কিছু জানি না,আমার শুধু তোমাকে চাই,ব্যাস!
আহানা ক্লাসরুমে থেকে শান্ত আর এলিনাকে দেখতেছে,রুপা বললো ওদের কাপলটা কত কিউট
আহানা হেসে বললো হুম

আজ কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে বসে আছে আহানা,শান্তর মত করে ইটের কণা একটা একটা করে পানিতে ফেলতেসে সে
খুব জোরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো হুট করে,অবশ্য এতক্ষণ বাতাস ছিল,কিন্তু এভাবে বৃষ্টি এসে যাবে আবার গতিও বেড়ে যাবে তা একদমই ভাবেনি আহানা,উঠে মাথায় হাত দিয়ে দৌড়াতে যেতেই কেউ ওর হাতটা ধরে ফেললো
আহানা আটকে গিয়ে পিছনে তাকালো শান্ত ওর হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে,বৃষ্টির পানির কারণে একবার চোখ বন্ধ করছে আবার খুলছে
আহানা চুপ করে শান্তর মুখের দিকে চেয়ে আছে,শান্ত কিছুই বলছে না,চুপচাপ ভিজে যাচ্ছে সাথে আহানাকেও ভিজাচ্ছে
আহানা হাত মুচড়াচ্ছে ছাড়ানোর জন্য কিন্তু শান্ত ছাড়তেসে না
গাছ বাতাসের কারণে নড়তেসে বারবার যার কারণে ফুল সব ঝরে পড়ে যাচ্ছে আহানার মুখের উপর গোটা একটা ফুলের তোড়া পড়তেই আহানা মুখটা বাঁকিয়ে ফেললো
শান্ত আহানার হাত ছেড়ে দিলো,আহানা হাত দিয়ে ফুলের তোড়াটা সরিয়ে চুপ করে তাকিয়ে আছে শান্তর দিকে,বৃষ্টি থামেনি এখনও
শান্ত তার হাত বাড়িয়ে আহানার থুতনিতে লেগে থাকা একটা সবুজ পাতা সরিয়ে ফেলে দিলো
আহানা বুঝতে পারলো না শান্ত কেন এমন করছে,কিসব ভেবে আহানার মুখটা মূহুর্তেই ফ্যাকাসে হয়ে গেলো,সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে আসলো সে
শান্তর এবার হুস আসলো,মাথার চুল থেকে পানি ঝেড়ে গাছের শেকড়ে গিয়ে বসলো সে,কি হলো আমার,কেন করলাম এমন!!
আহানা দৌড়াতে দৌড়াতে অনেক দূরে এসে গেছে,আর একটু হাঁটলেই পিউদের বাসা
এবার হাঁটার গতি কমিয়ে দিলো সে,আমি আর যাব না কৃষ্ণচূড়া গাছটার নিচে,কোনোদিন ও না
শান্ত জ্যাকেটটা খুলে হাতে নিয়ে বসে আছে,কেন আমি আজ আহানার হাত ধরে ওকে আটকালাম,কেন আমার ওর থুতনির ঐ তিলটার প্রতি এত আকর্ষন,এলিনার ও তো তিল আছে গালে,তাহলে তার প্রতি আমার এমন ফিলিংস আসে না কেন,কেন আসে না
.
আজ আবারও আকাশদের বাসা থেকে বের হতেই আহানা দেখলো একটা রিকসা দাঁড়িয়ে আছে,আহানা রিকসায় না উঠে হাঁটা ধরতেই ছেলেগুলো কোথা থেকে এসে আহানার সামনে এসে হাত জোর করতে লাগলো ও যেন রিকসায় উঠে
১৬
আহানা বিরক্তি নিয়ে রিকসায় উঠে পড়লো
এমন কেন করছে ওরা,কাকে ভয় পাচ্ছে??
বাসায় ফিরে হাতে ৬হাজার টাকা নিয়ে কিছুক্ষন বসে রইলো সে,তারপর সেগুলো নিয়ে তারেক রহমানের বাসার দরজায় নক করলো
উনি দরজা খুলতেই আহানা হেসে সালাম দিয়ে বললো কেমন আছেন?
.
টাকা এনেছো?
.
আহানা চুপ করে থেকে বললো এনেছি
উনি টাকাটা হাতে নিয়ে ব্রু কুঁচকে বললেন এখানে দেখি ৬হাজার টাকা,বাকি ২হাজার কোথায়?আর এই মাসের ভাঁড়া ও তো বাকি
.
আঙ্কেল আমি বাকি ২হাজার টাকা কদিন পর দিয়ে দিব,এখন আমার হাতে টাকা নেই
মুখের উপর দুম করে দরজা লাগিয়ে চলে গেলেন তারেক রহমান
আহানা বাসায় ফিরে মন খারাপ করে খাটের উপর বসে আছে
কনিকা আপু ফোনে গেমস খেলতেসে,হঠাৎ আহানার মন খারাপ দেখে বললেন আহানা শুন তোকে একটা আইডিয়া দিই
.
হ্যাঁ বলো আপু
.
তুই এত ছোটাছুটি করে ১০০টা টিউশনি করে কি লাভ বল,যে টাকা পাস তা দিয়ে ঠিকমত বাসা ভাড়াও দিতে পারিস না,তোকে আমি একটা কিছু সাজেস্ট করতে পারি যদি তুই কিছু মনে না করিস??
.
না কিছু মনে করবো না,বলো
.
তুই টিউশনি ছেড়ে বাসা বাড়িতে কাজ কর,আমার চেনা এক বোনের নতুন বিয়ে হয়েছে,সে বুয়া খুঁজতেসে,সকালে সব কাজ করে দিয়ে তুই ভার্সিটিতে চলে যাবি,ব্যাস,মাসে ১০হাজার টাকা দিবে
.
আহানার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো কথাটা শুনে,চোখ মুছে বললো ওহহ আচ্ছা
.
কিরে করবি?কথা বলবো?
.
নাহ,থাক
.
শুন কোনো কাজই ছোট নয়,তোর তো টাকার দরকার,এই কটা টাকায় তো তোর চলে না তাই বললাম
আহানা হেসে বললো ধন্যবাদ আপু,আমি দেখি কি করা যায়
.
আহানা আরেকদিকে ফিরে শুয়ে পড়লো,খুব জোরে কান্না পাচ্ছে তার,চোখ মুছেই যাচ্ছে সে,তাও চোখে পানি এসে ভরে যাচ্ছে বারবার
ঠিক বলেছে আপু,বুয়াদের ও বেতন ভালো আমার থেকেও,আমার আর বুয়ার মধ্যে তো কোনো তফাৎ নেই,বুয়ারাও পেটের দায়ে মানুষের বাসায় কাজ করে আর আমিও পেটের দায়ে কাজ করি
.
কনিকা আপু আজ মুরগী রান্না করেছে,আহানা পাশে দাঁড়িয়ে তার ভাতের বাটিতে পানি ঢালতেসে
কনিকা আপু খেতে খেতে বললো আহারে আমরা কত গরীব,মানুষ একসাথে একটা মুরগি রাঁধে,আর আমি মুরগীটাকে ৪দিনের জন্য পিস করে রেখেছি,পিস গুলো প্যাকেটে করে উপরের তলার আন্টির ফ্রিজে রেখে এসেছি,আজ শুধু ২পিস রেঁধেছি তা নাহলে তোকেও দিতাম
.
সমস্যা নেই আপু
.
আহানা ভাতে পানি ঢেলে গুড়া মরিচ এক চামচ দিয়ে গুলে খাটে গিয়ে বসলো
কনিকার খাওয়া হয়ে গেছে,প্লেট ধুয়ে শুয়ে পড়লো সে
আহানা পানি দিয়ে গিলে গিলে ভাত শেষ করলো
আসলে মানুষ তার সুখের সময় কাউকে ভাগ দিতে চায় না
নানা বাহানা খুঁজে তা জানে আহানা,তাই শুধু শুধু এসব নিয়ে কষ্ট পায় না সে
কষ্ট তো পেয়েছিল প্রথমদিন,যেদিন সে এই বাসায় প্রথম এসেছিল,কনিকা আর মীম দুজনেই ছিল তখন,আহানার হাতে ১টা কানাকড়িও ছিল না বলে সেদিন সে না খেয়ে ছিল,শুধু সেদিন না আশ্রম থেকে বের হওয়ার পর কটা দিনই সে পানি ছাড়া কিছুই খাওয়ার জন্য পায়নি
সেদিন মীম আর কনিকা আহানার সামনে খাবার খেয়ে যে যার কাজে চলে গিয়েছিল,ঐদিন আহানা খুব কষ্ট পেয়েছিল,তার সামনে তারা দুজন অবশিষ্ট খাবার আলমারিতে রেখে তালা দিয়েছিলো
এরপর থেকে আহানা আর এসব দেখে কষ্ট পায় না
কনিকা ভেবেছে আহানা ঘুমিয়ে পড়েছে,সে তার মায়ের সাথে ফোনে কথা বলতেসে
.
হ্যাঁ মা আজ মুরগী রেঁধেছি,না গো,৪দিনের জন্য পিস কেটে আলাদা রেখেছি,কি করবো বলো,একদিনে রাঁধলে ঐ আহানাকেও দিতে হতো,তাই ২পিস ২পিস করে আলাদা করে রেখেছি,আরে না একসাথে গোটা একটা রাঁধলে ঐ মেয়েটাকে হাঁড় হলেও দিতে হতো,আমি সেটা দিব না,আমার কষ্টের কামাই শুধু আমি আর তোমরা খাবা,তারপর ও ঐ মেয়েটা ড্যাবড্যাব করে তাকায় থাকে,এক নাম্বারের ছেঁসড়া মেয়ে একটা,হুম মা,আচ্ছা বাই
.
আহানা সব কথা শুনলো,হাত দিয়ে চোখ মুছে উঠে বসলো,কনিকা চমকে উঠলো
আহানা শুনে নি তো,থাক শুনলেও কি,যা সত্যি তাই বললাম
আহানা চুপচাপ বিছনা থেকে উঠে পানি খেয়ে আবারও শুয়ে পড়লো
পরেরদিন মিষ্টিদের বাসার সামনে আসতেই কালকের ঘটনা মনে আসলো তার
সে কেঁপে কেঁপে শান্তর বাসা পেরিয়ে মিষ্টিদের বাসার ভেতরে ঢুকে গেলো
.
কি হয়েছে মিস?তুমি কি কেঁদেছো?
.
না তো
.
তোমার চোখ মুখ বেলুন হয়ে আছে,,আমার মা ও কাঁদলে এমন তার চোখ মুখ বেলুন হয়ে থাকে
.
আহানা হাত দিয়ে মুখ ঠিক করে হেসে দিয়ে বললো না,কই,,পড়ো ঠিক করে
.
মিষ্টিকে পড়ানো শেষে আহানা চুপচাপ বাসা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে,শান্ত দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল এতক্ষণ, আহানা শান্তকে খেয়ালই করলো না
.
এই মেয়েটার মাঝে মাঝে মন এমন খারাপ থাকে কেন?
.
শান্ত সোফার উপর থেকে তার জ্যাকেটটা পরে আহানার পিছু নিলো
.
হেঁটেই চলেছে দুজন,শান্ত হাঁপিয়ে গেছে কিন্তু আহানার কোনো বিরক্তি নেই,সে হেঁটেই যাচ্ছে
.
এত কষ্ট না করে রিকসা নিলেই হয়,আমার পা শেষ,এতদূরে কই যায় মেয়েটা?
.
অবশেষে আহানা তার বাসার সামনে আসলো
.
ওমা এতদূরে ওর বাসা, কিভাবে হাঁটলো এতদূর,আমি তো মনে হয় মরে যাবো,ডেইলি এমন হেঁটে বাসায় আসে নাকি?
শান্ত আহানার বাসার জানালা দিয়ে উঁকিবুকি দিচ্ছে,বাসার ভেতর ৩টা আলাদা খাট,পাশে রান্নাঘর মনে হচ্ছে
আহানা বিছানায় ব্যাগ রেখে ওড়না কোমড়ে বেঁধে তার কালকের পরা জামাটা ধুতে গেলো
শান্তকে খেয়াল করেনি এখনও
জামাটা উঠানে দিয়ে এসে এবার ঘর ঝাড়ু দিলো,শান্ত সব দেখতেসে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে
এবার তার বিছানা ঠিক করে বই নিয়ে বসলো,মনোযোগ দিয়ে পড়তেসে সে
শান্ত পাশের দেয়ালে হেলান দিয়ে একটা সিগারেট শেষ দিয়ে আরেকটা মুখে দিয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে,এই রোডে সব বাসা,সবগুলোর রঙ পানসে পাসনে,মনে হয় কয় হাজার বছর পুরোনো,আদিম যুগের,এই গলিতে আগে কোনোদিন আসেনি শান্ত
ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলাম সকাল ৯টা বেজে গেছে
আহানার পড়া শুনা যাচ্ছে না,শান্ত ৩টা সিগারেট খেয়েছে এতক্ষণ ধরে,এবার আবারও জানালায় এসে দাঁড়ালো সে
,আহানাকে রান্নাঘরে দেখা যাচ্ছে,সেখান থেকে একটা বাটি নিয়ে এসে খাটের উপর বসলো সে
আহানার হাতের বাটিতে কি আছে তা দেখে শান্তর মাথায় যেন বাজ পড়লো
আহানার হাতের বাটিটাতে শুধু ভাত আর কিছু নেই,ভাতগুলো পানিতে ডুবানো,আহানা সেটায় খুব তৃপ্তি করে খেয়ে যাচ্ছে,মাঝে মাঝে গলায় আটকে যায় তখন টেবিল থেকে পানি নিয়ে খায় সে
আহানার মনে হলো জানালায় কেউ আছে সে তাকাতেই শান্ত সরে গেলো সাথে সাথে
আহানা দেখতে পেলো না তাকে,আবারও খাওয়ায় মন দিলো
শান্ত দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে চুপ করে আছে,এটা কি খাচ্ছে এই মেয়েটা,রোজ এটা খায় নাকি??
না রোজ কেন খাবে,এত টিউশনি করায় টাকা তো কম পায় না মনে হয়,আর আমি যতদূর জানি ও ৩টা টিউশনি করায়,মিষ্টির মা ২হাজার টাকা দিবে বাকিরা কত দেয়,আর মিষ্টিকে তো নতুন পড়াচ্ছে সে তার মানে নিশ্চয় আগে আরেকটা পড়াতো সেটা ছেড়ে মিষ্টিকে পড়ায় এখন মেবি
কারন আমি তো ওকে এই ৩টা ছাড়া আর কোনো টিউশনি করতে দেখিনি,টিউশনিতে বেশি গেলে ৩হাজার করে দেয় নয়ত ২হাজার,আচ্ছা মাসিক বেতন মোট মিলিয়ে ৮হাজার ধরলাম,তাহলে এই খাবার খায় কেন,আমার বাসার বুয়াও তো আরও ভালো খাবার খায়
শান্ত জ্যাকেট ঠিক করে আহানাদের বাসার উপরের তলায় গেলো মালিকের বাসায়,দরজায় নক করতেই তারেক রহমান এসে দরজা খুললেন
শান্তকে দেখে কিছু বুঝতেসেন না তিনি,জিজ্ঞেস করলেন কি চাই?
শান্ত সালাম দিয়ে বললো আঙ্কেল আমি কি আপনার বাসার একটা ইউনিট ভাড়া নিতে পারি?
তারেক রহমান হেসে দিয়ে শান্তকে বললো ভিতরে আসতে
শান্ত ভিতরে গিয়ে সোফায় বসলো,উনি বললেন ৩তলায় একটা ইউনিট খালি আছে
.
তা কত ভাড়া আঙ্কেল?
.
তুমি কি একা থাকবে?নাকি আরও কেউ আছে
.
শান্তর মনে পড়লো,আহানার রুমে ৩টা খাট দেখেছিল,তারমানে সেখানে ৩জন থাকে
.
আঙ্কেল আমি আর আমার ২টো ফ্রেন্ড থাকবো
.
তাহলে জনপ্রতি ৪হাজার করে দিতে হবে
.
ওহহহ,৮হাজার থেকে ৪হাজার গেলে আর ৪হাজার থাকে,কদিন আগে এলিনা ১হাজার টাকা মাইর দিয়েছে আহানার,তাহলে আর থাকে ৩হাজার,ভার্সিটির ফিস ফার্স্ট ইয়ারের ৩হাজার আর আমাদের ৪হাজার,তার মানে আহানার হাতে এখন এক টাকাও নেই?তাই তো সেদিন কানের দুলের ২০টাকা দিতে চাইছিল না,কানের দুল বেচে চাল কিনেছিল!!সব রহস্যের সমাধান সামনে আসতেসে
.
আচ্ছা মাসে টাকা দিতে না পারলে কিছু বলেন?ইয়ে আসলে স্টুডেন্ট মানুষ তো আমি
.
না কিছু বলি না,কি বলবো আর,কিন্তু আমার বাসার নিচতলায় এক মেয়ে থাকে,সাথে আরও ২টো মেয়েও থাকে,সে মেয়েটা ২মাসের বেতন এখনও ঠিকমত দিতে পারছে না,সবসময় বকেয়াটা জমা দেয়

হাহাহা,কি নাম তার
.
আহানা
.
ওহহহ,কত মাসের টাকা দেয়নি?
.
গত মাস বাদে পুরোনো ২মাসের দেয়নি,কাল ৬হাজার দিয়ে বললো বাকি ২হাজার পরে দিবে,,এখনও আগের মাসেরটা বাকি,মোট মিলিয়ে এখনও ৬হাজার টাকা পাই আমি তার থেকে
.
আপনার বিকাশ আছে?
.
হ্যাঁ আছে তো,কেন?
.
আহানার রিলেটিভ হই আমি,জানতে এসেছিলাম ও আপনার বাসায় কেমন আছে,জানা হয়ে গেছে,আমি আপনাকে ৬হাজার টাকা বিকাশ করে দিব,নিয়ে আসবেন কেমন?
আর ওর থেকে টাকা চাইবেন না,এখন থেকে প্রতিমাসে আমি আপনাকে ৪হাজার টাকা বিকাশ করবো,ও জিজ্ঞেস করলে বলবেন ওর আত্নীয় দিয়েছে,নাম জানতে চাইলে বললেন রফিকুর রহিম
.
কিন্তু তোমার নাম তো শাহরিয়ার শান্ত
.
যেটা বলেছি সেটা বলবেন,এর জন্য আপনাকে আমি বিকাশের টাকা উঠানোর বারতি ফিসটার সাথে বারতি বোনাস ও দিবো
.
কিরকম?
.
২০০০/৩০০০/৪০০০টাকা
.
আচ্ছা ঠিক আছে
.
শান্ত সানগ্লাস পরে একটা ভাব নিয়ে চলে যেতে নিতেই
উনি বললেন চা খেয়ে যেতে
.
শান্ত পিছন ফিরে বললো আজ আহানাকে রাতে দাওয়াত দিয়ে খাওয়াবেন কেমন?
উনি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানালো,শান্ত বের হয়ে যাওয়ার সময় আহানার রুমের জানালায় এসে আবারও দাঁড়ালো
আহানা জামা পরে চুল আঁচড়াচ্ছে,ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য
শান্ত মুখটা গম্ভীর করে চলে আসলো সেখান থেকে,বাইক আনেনি সাথে করে,একটা রিকসা নিয়ে উঠলো সে
এই মেয়েটার জীবনটা এমন কেন,আমি তো জানতামই না এসব,কিভাবে জানবো?কাউকে বুঝতেই দেয় না মেয়েটা!
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে