প্রেমের আটফোড়ন পর্ব-০৩

0
1313

#প্রেমের আটফোড়ন🍁🍁
#writer : Arshiya shidratul falak
#পর্ব :৩

বাইকের সামনে হনহনিয়ে গেল অধরা । গিয়ে বলতে লাগলো,,,

এই যে মিস্টার কানা যে হইছেন বাড়ির লোক জানে???

,,,এই মেয়ে বেশি কথা বলবেন না,,,

কি একে তো বাইক দিয়ে ধাক্কা মারলেন তার উপর আবার এমন বিহে…..

কথাটা আর বলতে পারলনা,, তার আগে গালে ঠাস করে চড় পড়লো চড়টা এতোটাই জোরে ছিল যে অধরা জ্ঞান হারালো,,,

চোখ খুলে নিজেকে কাজী অফিসের সামনে উপস্হাপন করলেন,, তারপাশে রিহান ও কয়েকটা ছেলে দাড়িয়ে আছে,,,

ছেলেগুলোকে কিছুটা চিন্তিত দেখা যাইতাছে।অধরা বুঝে উঠতে পারছে না সে কাজী অফিস আসলো কিভাবে। সে তো এখন টিউশনি থাকার কথা। তাহলে কাজী অফিস কেন। যতদূর মনে পরে বাইকের সাথে তার এক্সিডেন হয়, তারপর থাপ্পর খায়,, পরবর্তী কিছুই মনে আসছে না,,,

হায় আল্লাহ আমি কাজী অফিস কেন আসলাম,, ও মনে হয় ঐ ছেলেগুলোর মধ্য কেউ বিয়ে করবে,, তাই সাক্ষী হিসাবে আমাকে আনছে,, তাই বলে এভাবে আনতে হয় আমাকে বল্লেই তো চলে আসতাম,,, কিন্তু মিষ্টার রিহান চৌধুরি আপনাকে তো আমি ছাড়ছিনা, আপনাকে দেখে নেব পরে আগে বিয়ের কাজ সমপূর্ন করি,, তারপর আপনার কাজ,, একে তো আমার একদিনের টিউশনি মিস করাইছেন তারওপর আবার থাপ্পর এক্সিডেন,, সব একেবারে শুধে আসলে নেব,,, আমাকে আপনি চিনেন নাই।আমার ভিতু ফেইস দেখছেন। কিন্তু ঝাঝটা একখনো বাকি 😎😎

মনে মনে এসব বলতে থাকে। তখন রিহান তার পাশে একটা রেজিস্ট্রার পেপার দরিয়ে বলে নিন সাইন করুন।

রেজিস্ট্রার পেপার দেখে তো অধরার চোখ কপালে,,,

কি হল নেন সাইন করুন,,,

কেন আমি এসবে কেন সাইন করতে যাব। আমি কি পাগল হইছি নাকি। এসবে সাইন করতে যাব

ভালোই ভালোই সাইন কর বলছি,,( রেগে)

আজিব কেন সাইন করব ??

কারন তোমাকে বিয়ে করব তাই সাইন করবে??

এতক্ষন অধরা মনে করেছিল হয়তো ভুলভাল কিছু হবে। এখন যখন রিহানের মুখ থেকে শুনলো সে তো শক খাওয়ার অবস্হা।

এই ছেলে আপনি কি বলছেন জানেন???আপনার কাছে হয়তো এই জিনিসটা মজার হতে পারে কিন্তু আমার কাছে না সো এসব আবল তাবোল কথাবার্তা বাদ দিন,,

এই মেয়ে আমাকে একদম রাগাবেন না বলে দিলাম যা বলছি তাই করেন। নয়তো কিন্তু খারাপ কিছু হবে।

পাশে থাকা রৌদ্দুর তাদের ঝগড়া দেখে অধরাকে ডাক দিল,,, অধরা কান্না মিশ্রিত কন্ঠে রৌদ্দুরের সামনে গিয়ে দাড়াল,, তারপর রৌদ্দুর অধরাকে একটা রুমে নিয়ে গেলো,,,

সেখান থেকে ১০ মিনিট পরে বাহির গয়ে সোজা গিয়ে সাইন করে দিলো। কোনো শব্দও করলো না ,,
অধরার এমন কান্ডে সবাই অবাক হয়ে আছে,,,
সবার মনে একই প্রশ্ন জাগছে যে রৌদ্দুর অধরাকে কি এমন বলল যে অধরা সোজা সাইন করে দিলো,,,
তাদের ভাবনা ছেদ ঘটিয়ে অধরা রৌদ্দুরকে ডাকলো,,

ভাইয়া সাইন করেছি আর কি করব এখন….

তোকে আর কিছু করতে হবে না বাকিটা রিহান করবে…..।।

আচ্ছা ঠিক আছে..

তাদের এমন কথা বার্তা । আর অধরার হাসি মাখা মুখখানি দেখে সবাই মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো,, শুধু রিহান ছাড়া।

রিহানও রেজিস্ট্রারপেপারে সাইন করে বিয়ে সমপূন্ন করলো। এবার রৌদ্দুর বলতে লাগলো রিহানকে,,,

আমার এই এতিম বোনটাকে কষ্ট দিস না রিহান,, সে যে বড্ড একা,,, কেউ নেই তার পৃথিবীতে,, কিন্তু বোন তুই টেনশন করবি না আজ থেকে এই ভাই আছে তোর পাশে ছায়ার মতো,,,, শুদু ভাইকে বিশ্বাস করে যা,,,

রৌদ্দুরের এমন কথা কেউ বুঝলো না তবে অধরার কেউ নেই। এটা শুনে রিহানের কাছে খারাপ লাগলো, কিন্তু এখন এসব বিষয়ে কোনো পাত্তা দিল না এখন মাথায় শুধু রাগ আর রাগ,, কিন্তু অপর পাশে আকাশ, হিমেল, তুর্য বোকার মতো তাকিয়েই আছে কেউ কিছু বলে না ,,, সবার এমন কাহিনী দেখে হিমেল বলেই ফেলল,,,

কি রে রৌদ্দুর বোন ভাই কিছুই তো মাথায় আসছে না,,,

আরে বোকা অধরা এতিম,, সো আমিও অধরার বাবা মা নাই আমারও নাই,, অধরা একা আমিও একা,, এখন মোট কথা হলো আমারও বোন নাই অধরারও ভাই নাই। তাই আজ থেকে আমি অধরার বড় ভাই অধরা আমার ছোট বোন এই সিম্পল বিষয়টাকে বুঝিস না,,,,

এটা বলার সাথে সাথেই রিহান, আকাশ, হিমেল, তুর্য সবাই এসে রৌদ্দুরকে জরিয়ে ধরে।অধরা তো অভাক হয়ে আছে তাদের এমন কান্ডে। তখন রৌদ্দুরকে ছাড়িয়ে
রিহান বলতে থাকে…

এই তকে না একদিন বলছি নিজেকে কখনো একা ভাববি না আমরা আছি তোর সাথে,, এতটাই পর ভাবিস আমাদের তাইনা,,,

আরেনা বোকা ছেলে কথাই কথা বল্লাম তোরাই তো আমার আপন সব চাইতে কাছের ভাই +বন্ধু
এবার অধরা পাশ থেকে বলেই ফেল,,,

তাহলে বোনকে বাদ দিলা তাই তো,, তোমার কথায় আমি বিয়ের জন্য রাজি হইছি। কারন পৃথীবিতে আমার কেউ নাই,, একমাত্র তুমিই সেই প্রথম ব্যক্তি যে আমাকে নিজের বোন মনে করে দুফোটা চোখের পানি মাটিতে ফেলেছো। হয়তো এক মায়ের পেটের ভাই বোন হতে পারিনি,, তবে তোমাকেই আমার ভাই বলে সম্ভোধন করলাছি (কান্না মিশ্রিত কন্ঠে)

তারপর রৌদ্দুর অধরার পাশে গেল,, তাকে জরিয়ে কান্না করতে করতে বল্ল,,
পাগলী বোন আমার,,
______________________________

বাড়ির দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে রিহান আর অধরা,,,

অধরা তো ভাইয়ের কথায় বিয়ে করে ফেলল। কিন্তু এখন ভাবাচ্ছে তাকে যে ছেলের সাথে তার এক সেকেন্ড মেচ হয় না সে ছেলের সাথে সারাজীবন কাটাবে কি করে,,, আর রিহানের বাড়িঘর দেখে তো মনে হচ্ছে অনেক বড় লোক । সেখানে সে অধরা কিছুইনা অনাথ একটা মেয়ে ,,,,,, অধরাকে কি রিহানের পরিবার মেনে নেবে, বিষেশ করে রিহান সে কি মেনে নেবে, হয়তো রাগের মাথায় বিয়ে করছে ঠিকই কিন্তু পরে কি মেনে নেবে। এমন হাজার চিন্তা ভাবনায় বিভোর হয়ে আছে অধরা। ভাইয়ের ওয়াদা রাখার জন্য বিয়ে করল কিন্তু এখন কি হবে তার।

__________
দরজায় কলিং বেল চাপ দিতেই,, রেহানা এসে দরজা খুলে দিলেন,, ভাইকে দেখে খুশি হয়ে জরিয়ে ধরলেন এটা রেহানার প্রতিদিনরই রুটিন দরজা খুলে ভাইকে আগে জরিয়ে ধরবে পরে বাকি সব। ভাইকে ছাড়িয়ে পাশে ফিরে দেখে অধরা,, চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে,, অধরাকে দেখে হতভম্ব হয়ে ভাইকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো,,

ভাই অধরা এখানে কেন, তুমি কি করে চিনো তাকে, তোমাদের তো আমি কখনো পরিচয় করাই নাই। আর সে তো আজ নতুন ভার্সিটিতে আসলো,, আর এখন তো রাত এই রাতে সে এখানে কেন,,, কি রে অধরা তুই কিছু বল,,,
অধরা বোকার মত রেহানার দিকে তাকিয়েই রইল চুপচাপ। কিছুই বলল না।

রিহানও কিছুই বললনা সোজা রুমের ভেতর গেল। গিয়ে বাবাকে ডাকতে লাগলেন। রিহানের এমন জোরে ডাকাডাকির আওয়াজে বাবা তাড়াতাড়ি নিচে নেমে এলেন,,, অধরা এখনো বাহিরে সে তো ভয়ে একাকার,,, রেহানা তাকে একহাত দিয়ে জরিয়ে বার বার জিজ্ঞেস করছে কিন্তু প্রতিউত্তর কিছুইনা,, মেয়েটা কাপছে রেহানা সেটা বুঝতে পেরে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলো,,,,,
রিহানের বাবা তার সামনে আসায় বাবাকে বলতে লাগলো,,,

বাবা আমি বিয়ে করেছি।।

বাবা আর রেহানা তো বড় ধরনের শক খেলেন,, ছেলে কি বলছে এগুলো,,,, মানছে সে ছেলেকে বিয়ের জন্য প্যারা দিচ্ছিলো বাট এটা কিভাবে হলো, সবার মাথায় একই প্রশ্ন,,,

রেহানা তো মনে মনে অনেক খুশি কারন তার বেস্ট ফ্রেন্ড যে ভাবিতে পরিনত হবে সেটা কখনো ভাবেনাই,,

রিহানকে বাবা চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,,

কিভাবে কি করে এসব হলো,,,,

তার এমন প্রশ্নে রিহান ব্রুকুচকে বলল,,

তোমার দরকার ছিল ছেলেের বউ দেখার। এনে দিয়েছি,, সো এত প্রশ্ন করবে না ,।নাও সো বি কেয়াফুল ইউ,,,,,,,,,,
বলেই হনহনিয়ে রুমের দিকে চলে গেল,, আধরা তো বোকার মতো সব দৃশ্যে দেখে যাচ্ছে আর ভয়ে কাপছে,,বাবা আস্তে আস্তে অধরার সামনে গেলে,, অধরা তো এবার কাচুমাচু হয়ে আছে,,,,,,,

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে