নীরবে ভালোবাসা পর্ব-১৩ এবং শেষ পর্ব

0
1340

গল্প:#নীরবে_ভালোবাসা
লেখিকা:#সুরভী_আক্তার
#পর্ব:১৩(শেষ)

ঘরে এসে রুমের দরজা আটকে দিলাম। ফোন চেক করতেই মুখে হাসি ফুটল। কারণ সৈকত দুইবার ফোন দিয়েছিল। তখন সাধারণত আমি টিভির ঘরে ছিলাম।

ওরে ফোন দেওয়ার পর ও ফোন ধরল না।আমি হতাশ হলাম।জানি সে ব্যাস্ত হয়ত পরে ফোন দিবে।
আমি বরং ফোন নিয়েই থাকি।

লাবণ্য হাতে একটা বই নিয়ে বিছানায় হেলান দিয়ে বসলো আর ফোনটা পাশে রাখল ‌।তারপর আবার চেক করল রিং মোডে আছে কি না!

সৈকত তবুও ফোন দিল না।কাল কি সুন্দর ছিল দিনটা।রাগ ভাঙালো আমার,ভালোবাসলো আমাকে।
আর আজ?

আজান হচ্ছে চারিদিকে। লাবণ্য উঠে নামাজ শেষ করল।তারপর খাওয়া-দাওয়া।

তারপর গিয়ে আবারো শুয়ে পড়ল। ঘুমিয়ে সময় কাটানোর চেয়ে আর সহজ উপায় দুইটা নেই।

কালকের মত ভুল আজ করবে না সে।ঐ বাড়িতে থাকলেও ওড়নায় সেফটিপিন মেরে রাখতো আর শাড়ি পরলে তো সেফটিপিন কনফার্ম। কিন্তু কালকে সৈকতের সাথে ঝগড়া করতে করতেই সে সেফটিপিন লাগানোর কথা ভুলে গেছে।আর সৈকতও ওর রাগ ভাঙানোর জন্য কি একটা পায়তারা বের করেছিল!

তাই আজ সে সেফটিপিন লাগিয়ে ভালোমতন শুয়ে পড়ল।

___________
সময়টা তখন বিকাল ৪টা নাগাদ। অনেক সময় ঘড়ি না দেখেও শুধু মাত্র আকাশ দেখেই সময় বুঝা যায়। অবশ্য আগের মানুষ তো এভাবেই সময় নির্ধারণ করত।

সৈকত এসেছেই দেরিতে। গোসল আর খাওয়া দাওয়া করে একদম রুমে এসেছে সে।
লাবণ্যর কাজিন গুলো অবশ্য ছাড়ত না কিন্তু ও ক্লান্ত বলায় ছেড়ে দিয়েছে।
ঘুষ হিসেবে বিকালে তারা ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সৈকতও মেনে নিয়েছে।

রুমে এসেই তার চোখ পড়ল লাবণ্যর ওপর।কি সুন্দর বিছানায় শুয়ে আছে। কিন্তু চুলগুলো মুখের সামনে আসায় ঠিকমতো সাইড থেকে বোঝা যাচ্ছে না চেহারা।

সৈকত দরজাটা শব্দ ছাড়া ভালোমত লাগিয়ে দিয়ে বিছানার দিকে এগোচ্ছে।
সে চায় না আগের মত ডিস্টার্ব করুক কেউ!

হাত দুটো একসাথে দিয়ে গুটিসুটি মেরে ঘুমোচ্ছে লাবণ্য। সৈকত তার দুইপাশে হাত রেখে তার দিকে ঝুকলো। কিন্তু তার কোন নড়াচড়া নেই।
বেশ গভীর ঘুম তাহলে!
তা দেখে বাঁকা হাসলো সৈকত।তারপর তার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে থাকলো সে।
মিনিট দুয়েক পরেই চোখ সরিয়ে লাবণ্যর চোখের দিকে তাকালো।
যদিও চোখ বন্ধ আছে তবুও জানালায় টাঙানো পর্দার ফাঁক দিয়ে আসা আলোকরশ্মি চোখে মুখে ছড়িয়ে দিয়েছে সোনালী আলোর স্নিগ্ধতা।

মন চাইছে kiss দিয়েই ফেলি কিন্তু সাহস হচ্ছে না!

এভাবেই দুই চার বার চোখ আর ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ সৈকত kiss করেই ফেলল।

তাও আবার একদম deeply।

____________
গায়ের ওপর ভারী কিছু অনুভব হতেই ঘুমের মধ্যে বিরক্ত লাগতে শুরু করলো। এদিকে গরমের সাথে দমও বন্ধ হয়ে আসছে।
চোখ খুলতেই দেখি সৈকত আমার উপর!
আমি কি স্বপ্ন দেখছি?
না!তা কেন হবে?

আমি কিছুক্ষণ বোকার মত থাকলাম কিন্তু পরক্ষণেই তাকে সরানোর চেষ্টা করতে লাগলাম।
যেহেতু সৈকত সম্পুর্ণ ভর আমার উপর দিয়ে দিয়েছিল আর নিজের জ্ঞানের মধ্যে ছিল না তাই তাকে সরাতে বিশেষ কোন কষ্ট করতে হলো না।

ওকে সরিয়েই আমি জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলাম কিন্তু সৈকত শুধু একবার বড় করে শ্বাস নিল।

আমি রাগি চোখে তার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সে আরামে একহাতে ভর দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

তাতে আমার রাগ আরো বেড়ে গেল।আমি তার দিকে এগিয়ে গিয়ে তার টি-শার্টের কলার ধরে তার উপর উঠে বসে বললাম”আমার ঘুমের সুযোগ নিচ্ছেন? চেহারা দেখে তো বোঝা যায় না আপনার হাড়ে হাড়ে এত শয়তানি!”

আমার কথা শুনে সৈকত আমাকেই তার নিচে এনে আমার উপর সব ভর ছেড়ে দিল।

“সরেন! আপনার ভর তো আমার কাছে হাতির মত,মেরে ফেলবেন নাকি?”

আমার কথা শুনে সৈকত একদম আমার নাকের কাছে তার মুখ এনে বলল”ঘুমের সুযোগ তো নেই নি জানেমান! আসলে তোমার কাজিন গুলো মানে আমার শালিকারা ঘুরতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তো আমি ভাবলাম যে তোমাকেও নিয়ে যাই,না মানে না নিয়ে গেলে তো তুমি আবার অভিমান করবা,তাইনা?”

ওর প্রত্যেকটা কথা বলার সময় ওর ঠোট আমার নাক স্পর্শ করেছে।
ও সবসময় জেনে বুঝেই এরকম কোন কাজ করে যাতে আমি ওর কথার পিঠে কোন জবাব না দিতে পারি‌।

“তার সাথে kiss এর সম্পর্ক কি?”

“তোমাকে ঘুম থেকে ডাকছিলাম কিন্তু তুমি উঠছিলেই না তাই দিয়েছি,আর দেখো টেকনিক কাজও করে গেল”

“এ..বার অন..অন্তত সরেন”

সাথে সাথেই সৈকত সরে গেল।

“যান আপনি রেডি হন আর আমিও হচ্ছি”

__________
নদীর ধারের মৃদু বাতাসে সৈকতের সামনের ছোট চুলগুলো মাঝেমাঝে উড়ছে।
আবার মাঝেমাঝে হাত দিয়েও চুলগুলো সরিয়ে দিচ্ছে।
ওর দৃষ্টি নদীর দিকে আর আমার তার দিকে।

তার পরনে আমার দেওয়া সেই পাঞ্জাবি আর ঘড়ি। সেই সাথে পরেছে কালো ট্রাউজার।
আর আমার গায়ে নীল শাড়ি।আম্মু একদিন দিয়েছিল বিয়ের আগে।
তার সাথে মিলিয়েই পরেছি।

কাজিন গুলো নেই। ওদের বাঁদরামির জন্য আমি ভয়ে ছিলাম যে নতুন কিছু যাতে করে না বসে।

অবশ্য তারাও বুঝেছে আমাদের privacy দরকার তাই ওরাও আমাদের একা ছেড়ে দিয়েছে।
ওরা রাস্তার বীপরীতে আছে। সন্ধ্যায় একসাথে এক জায়গায় উপস্থিত হয়ে বাড়ি ফিরব।

“কিছু খাবে?”

“হুম?”(আনমনে উত্তর দিলাম আমি)

“এই!”

“ক..কি?”

“কই হারায় গেলা?”

“কোথাও না!(আপনার মাঝে)। কিছু বলবেন?”

“বলছি কিছু খাবে?”

“না এখন ইচ্ছা করছে না”

“আচ্ছা এখানেই থাকো আমি আসছি”

“কোথায়?”

“আরে সারপ্রাইজ!”

“কিন্তু!”

“আরে wait না!”

কিছুক্ষণ পর সৈকত আসলো তবে খালি হাতে।তবে কি জন্য গিয়েছিল?

কোথায় গিয়েছিলেন?

এত প্রশ্ন কেন করো তুমি বললাম না সারপ্রাইজ?
সময় হলেই জানতে পারবে।এখন চলো সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে

বলেই সৈকত আমার হাত ধরে সামনে এগোলো।পুরাটা রাস্তায় হাত ধরে রাখল সে। এমনকি আমার কাজিন দের সামনেও ছাড়লো না।
ওদের তো রীতিমত খোঁচাখুঁচি শুরু হয়ে গেছে।তা দেখে সৈকত আমাকে তার একদম পাশে নিয়ে আমাকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরেই সামনে এগোতে লাগলো আর ওদের উদ্দেশ্য বলল”তোমরা তাড়াতাড়ি খালামুণি হও এটা কি তোমরা চাও না?আরে এভাবে খোচালে তো তোমার বোন আমার কাছেই আসবে না,কি বলো?”

এটা শুনে মনে হলো আমি মাটির নিচে চলে যাই।ওরা একথার উত্তর দিল না কিন্তু না তাকিয়েও বুঝলাম ওরা মুচকি মুচকি হাসছে।সৈকতও হাসছে কিন্তু হাসছি না আমি।

কিছুক্ষণ মাথা নিচু করেই সামনে এগিয়ে গেলাম তারপর সামনে তাকালাম। সন্ধ্যায় আবহাওয়া টা ঠান্ডা থাকে।পরিবেশও সুন্দর।

আশেপাশে তাকাতে গিয়ে সৈকতের সাথে চোখাচোখি হলো।কেউ চোখ সরালাম না।
সৈকতের চোখের দৃষ্টি দেখে মনে হচ্ছে সে অনেক কিছুই বলতে চায় আমাকে তবে একান্তই ব্যক্তিগত।

ওভাবেই হাঁটতে হাঁটতেই হঠাৎ সৈকত আমাকে তার দিকে টান দিতেই তার বুকে গিয়ে পড়লাম। হঠাৎ এমন হওয়ার কোন কারণ খুঁজে পেলাম না।মাথা তুলে সৈকতের দিকে তাকাতে গেলেই দেখি সেও আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমি ইশারায় জিজ্ঞেস করলাম কি হলো। তখন সে বললো”দেখে চলতে পারো না?ইট ছিল! পড়ে গেলে কোলে করে নিয়ে যেতে হত, সামনে দেখে হাটো।”

বলেই হাত ধরে সামনের দিকে এগোলো সে।

__________
বাসায় এসে আমরা সবাই অল্প খাওয়া দাওয়া করে যে যার রুমে চলে আসলাম। সৈকত আসেনি।
সে আবারো বাইরে গেছে।

সে ফিরল আধা ঘন্টা পর।এসেই আমার চোখ বেঁধে দিল তারপর রুমেই বসিয়ে রাখলো।তারপর কিছুক্ষণ পর বলল চোখের বাঁধন খুলতে।আমি বাঁধন খুলেই দেখলাম সে হাঁটু গেড়ে বসে আছে আমার সামনে তারপর সে তার পিছন থেকে একটা গোলাপ বের করে আমার সামনে ধরল আর বলল”আমাদের বিয়েটা আকস্মিক হয়ে যায়। অজানা অচেনা দুইটা মানুষ যাদের একটা সামান্য বন্ধুত্ব পুর্ণ সম্পর্কেও হয়নি তাদের বিয়ে।
আমাদের একে অপরকে জানার জন্য সময় দরকার ছিল যেটা তোমার জন্য আমরা পেয়েছিলাম। সেই সময়টাতে আমি তোমাকে পছন্দ করতে শুরু করি তাই যখন হঠাৎ তোমার বন্ধুর সাথে দেখেছিলাম আমি ভুল বুঝেছিলাম কিন্তু আমি তোমাকে বিশ্বাস করি।সেটা তোমাকে হারানোর ভয় ছিল তাই সেইরকম একটা রুড বিহেভ করে গেছি কিন্তু তুমি চাইলে রাগারাগি করতে পারতে কিন্তু সহজেই বুঝিয়ে দিয়েছ সেটা আমার ভুল ছিল আর সম্পর্কে বিশ্বাস খুব জরুরি।তাই এরকম ভুল আর করতে চাই না কিন্তু যদি কোনদিন এরকম করি তাহলে বুঝবে সেটা আমার মুখের কথা মনের নয় যদি আমার শর্তে রাজি হও তাহলে এই গোলাপ গ্রহণ করো।”

এতক্ষণ আমি মন দিয়ে ওর সব কথা শুনলাম,প্রতিটা কথায় আছে আশার আলো আর অনুশুচনা।তাই আমি বিনা বাক্য তার হাত থেকে গোলাপ নিলাম।

গোলাপ নিতেই এবার সে তার পিছন থেকে একটা রিং বের করল।তারপর সেটা সামনে ধরে বলল”যখন কথা দিয়েই ফেলেছ সারাজীবন পাশে থাকার তাহলে তুমি আমার কাছে বন্দী জানেমান!
জানিনা কখন! কিন্তু পবিত্র সম্পর্কে হয়ত আল্লাহই ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেন so বেশি কিছু বলতে চাই না সোজা কথায় বলতে #নীরবে_ভালোবাসা দিয়ে গেছি তোমাকে আর আবারো জানতে চাই will you be mine forever?
রাজি থাকলে এই আংটিটা নাও”

ওর এইসব কথা শুনে অজান্তেই মনে প্রচুর ভালোলাগা সৃষ্টি হচ্ছে তাহলে কি আমিও তাকে…. ভালোবাসি?

আমি কখন যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছি টেরই পাইনি। এবার সৈকত হাসিমুখে সযত্নে আংটিটা পরিয়ে দিল আমাকে।

তারপর উঠেই প্রথমেই হাঁটুতে হাত রাখল।ইশশ! এতক্ষণ বেচারা আমার জন্য বসে ছিল?
আমি সাথে সাথেই ওকে ধরিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিলাম।তারপর ওর দিকে তাকালাম।ও কিছুক্ষণ ওর হাত পা গুলো সোজা করে আমার দিকে এগিয়ে এসে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল তারপর আরো কাছে এসে জড়িয়ে ধরল।তারপর বলল”আমার একটা আবদার রাখবে?”

ওর কথায় আমি কিছু না বুঝেই হুম বলে দিলাম।

প্রমিস?

আচ্ছা প্রমিস! এবার বলেন

সৈকত আমার সাথে আরেকটু মিশে তার নাক আমার গলায় ঘষে কানের কাছে মুখ এনে বলল”আমি তোমার সন্তানের বাবা হতে চাই,May I?”

ওর কথা শুনে আমি পুরা সকড হয়ে গেলাম।আমি ভাবিই নিই ও ওর কথার জালে আমাকে ফাঁসিয়ে আমার কাছ থেকে এরকম কিছু চাইবে।

ও আমাকে ছেড়ে আমার দিকে তাকাতেই আমি মাথা নিচু করে ফেললাম।

সৈকত আমার গালে হাত রেখেই বলল”তুমি চাও না?”

“আ..আমি?”

“ওকে ওকে বলতে হবে না,just একবার আমাকে জড়িয়ে ধরো”

ওর বলতে দেরী কিন্তু আমার ধরতে না।তাও আবার হালকা ভাবে না একদম ওর গায়ের সাথে মিশে গেছি।তা দেখে সৈকত হাসলো তাতে আমার আরো লজ্জা লাগলো তবুও আমি তাকে ছাড়লাম না।

সে হেসে আমার কানের পাশের চুলগুলো সরিয়ে আমার পিঠে আলতো হাত রাখলো। পিঠের কিছুটা অংশ উন্মুক্ত থাকায় আমি কেঁপে উঠলাম।

“এবার ছাড়ো”

আমি তবুও ছাড়লাম না আর কিছু বললামও না।

“তুমি যদি না ছাড়ো তাহলে আমি আমার নেক্সট গিফট কিভাবে দিব?”

আমি ওকে ছেড়ে ওর দিকে প্রশ্নসূচক নয়নে তাকিয়ে রইলাম”আরো কিছু আছে?”

“Wait”

বলেই সৈকত টেবিলের ওপর থেকে একটা প্যাকেট দিল আর চোখের ইশারায় খুলতে বললো

প্যকেট খুলে দেখলাম একটা মেরুন রঙের শাড়ি আর কালো কানের দুল।সেটা থেকে চোখ সরিয়ে সৈকতের দিকে তাকাতেই ও বললো”কেমন?”

“অনেক সুন্দর! আমার অনেক পছন্দ হয়েছে”

“আরে তোমার জন্য না তো!”

আমি ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে বললাম”তো কার জন্য আমার সতিনের জন্য?”

এটা শুনে সৈকত হেসে দিয়ে বলল”আমার বাবুর আম্মুর জন্য”

এটা শুনে আমিও বললাম”হায় আল্লাহ! আমার সতিনও আছে আর তার বাচ্চাও!”

এটা শুনে সৈকত টাস্কি খেল আর বুঝলো তার মত আমিও মজা করেছি তাই বললো,”না গো! আমার future baby যার আম্মু আমার present lovely wife”

এটা শুনে আমার মুখে মুচকি হাঁসি চলে আসলো।

তারপর সৈকত আমার কাছে এসে কোমর জড়িয়ে ধরে বলল”মানে আমার উচিৎ ছিল তোমাকে প্রথমে গিফট দেওয়া বাট দিতে পারি নি সেটা আমার ব্যার্থতা বাট এখন দিয়ে দিলাম”

আমি তার কাছে গিয়ে তার গলা জড়িয়ে বললাম”তাহলে শাড়িটা কি বাবুর আম্মু বাবুর সাথেই পরবে নাকি বাবু ছাড়াও পড়তে পারবে?”

“যাকে দিয়েছি তার মন হলেই পড়তে পারবে”
বলেই আমার নাকের সাথে নাক লাগিয়ে চোখ বন্ধ করল। আজ নিজেকে পরিপুর্ণ লাগছে,কিছুদিন পর হয়ত আবারো…

_________
২বছর পর…

সৈকত আর ফারিন একে অপরকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে আর আমি জেগে জেগে তাদের দেখছি। এখন নিজেকে বেশি পরিপূর্ণ লাগছে।আমি সৈকতের নামের সাথে মিলিয়ে নাম রাখতে চেয়েছিলাম কিন্তু সৈকত আমার নাম(ফারিহা)এর সাথে মিলিয়ে রেখে দিয়েছে।

আমি সৈকতের গালে হাত রাখতেই সে হালকা নড়ে চোখ খুলল তারপর উঠে বসে চোখ মুছতে মুছতে বলল”কি খবর বাবুর আম্মু?”

“বাবুকে পেয়ে আমাকে ভুলে গেছেন?”

“না জানেমান”

“That’s good”

সৈকত হাসলো তারপর বললো”তারপর?”

“Kiss me”

সৈকত আমার দিকে এগিয়ে কিস করতে নিতেই ফারিন উঠে গেল। তখন সৈকত ওকে কোলে নিয়ে নিল।

“তুই কিরে? আমার ভালোবাসা তো সব তুই ই নিয়ে নিলি”

“দেখ বাবু, তোমার আম্মু তোমাকে হিংসা করে, ছিঃ ছিঃ”

“Because I love you”

এই কথা শুনে সৈকত আমার গলায় একহাত রেখে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দিল।কে জানে ছোট্ট ফারিনের কি হলো সে এবার চুপটি করে আমাদের দুজনকে দেখতে লাগল আর হঠাৎই হেসে উঠলো।ওর হাসি শুনে আমরা একে অপরকে ছেড়ে হেসে দিলাম।তারপর ফারিনকে কোলে নিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলাম আর সৈকত এগিয়ে এসে আমাদের একসাথে জড়িয়ে ধরল।

*****🥀সমাপ্ত🌷*****

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে