নিশি_কাব্য পর্ব-১৯

0
684

নিশি_কাব্য পর্ব-১৯
(রোমান্টিক সংসারে গল্প)
লেখা- Rudro Khan Himu

–কি ব্যাপার ঘুমাও নাই কেন?কি
ভাবছো এতো?
নিশির কথায় ভাবনায় ছেদ হলো।
–তোমাকে জড়িয়ে না ধরলে যে ঘুম আসে না। আমাদের
সম্পর্ক নিয়ে আর নতুন জায়গায় কিভাবে কি করব এটা ভাবছিলাম।
–এতো ভাবার কি আছে?
–যদি ভাবার কিছু না থাকে তাহলে অন্যকাউকে নিয়ে
ভাবি?
–ভেবেই দেখ মেরে হাড় ভেঙে দিব হুহ।
–আমার বউকে ছাড়া অন্যকাউকে নিয়ে ভাবতেই পারি
না। চলো আজ রাতে আকাশের
চাঁদ দেখে রাত পার করি।( চিন্তা মুক্ত হওয়ার সবচেয়ে ভাল মাধ্যম)
–কাল অনেক সকালে উঠতে হবে। এতো রাত জাগলে যদি
শরীর খারাপ করে আর তাছাড়া ঘুম থেকে উঠতেও
পারবে না।
-সেসবের জন্য তুমিতো আছোই। তুমি থাকতে চিন্তা নাই
এসবের । এখন চলো।
-আমি যাবো না।
-ও তাই আচ্ছা আমিও দেখছি কীভাবে না যেয়ে থাকো।
তোমাকে কী করে নিয়ে যেতে হবে তা ভালোই জানা
আছে।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



অতঃপর নিশিকে
কোলে তুলে সাদে নিয়ে গেলাম। পুতুল বউ লজ্জায় চোখ
বন্ধ করে বুকে মুখ লুকিয়ে রাখছে।
সাদে সুন্দর বসার জায়গা আছে সেখানে আমি বসে
নিশিকে দেখছি আর পুতুল বউ আমার কোলে মাথা রেখে
চাঁদ দেখছে ।
আমার দিকে তাকিয়ে বলল
-এই তুমি চাঁদ না দেখে আমাকে কী দেখছো? চাঁদ দেখার
জন্যে সাদে নিয়ে আসছে।
-আমার আসল চাঁদটাই তুমি। চাঁদের আলোতে তোমাকে
আরো ভীষণ সুন্দর লাগছে তাই তোমাকেই দেখছি।
-হইছে।আর মিথ্যা বলা লাগবে না।
-তোমার কাছে সত্যি বললেও মিথ্যা
হয়ে যাই,না?
দুজন দুজনের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। যেন
চোখের পলকই পড়ছে
না।
অনেকক্ষণ ধরে আমরা গল্পও করলাম।
-এই আমার ঘুম আসছে। এখন ঘুমাব।
-তাহলে ঘুমাও।
নিশি আমার কোলেই চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণের মধ্যেই
ঘুমিয়ে পড়লো।
ঘুমন্ত অবস্থায় নিশি নতুন রূপ ধারণ করছে। এই মেয়ের যে
কত রূপ তার ঠিক
নাই। একেক সময় একেক রূপ ধারণ করে।
আমি নিশিকে তুলে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আমিও ঘুমিয়ে
পড়লাম তখন রাত২টা বাজে।.
–এই সাব্বির উঠো। ভোর হয়ে গেছে। নামায
পড়তে হবে।
–এতো তাড়াতাড়ি ভোর হয়ে গেল? আরেকটু ঘুমাই প্লিজ।
–সেই জন্যেই এতো রাত জাগতে নিষেধ
করেছিলাম। উঠো বলছি তাড়াতাড়ি।
–তাহলে আদর দিতে হবে।
–যাহ দুষ্টু ।দিতে পারবো না।
–আমিও উঠবো না।
পুতুল বউটি আমার কপালে আলতো করে চুমু এঁকে দিলো।
আমিও দিলাম তবে কপালে নয় ঠোঁটে। হিহিহি।
নিশি লজ্জায় মুখ লুকালো আমার বুকে জড়িয়ে ধরে।
অনেকক্ষণ পর আজানের সুর শোনা গেল ।ঘড়িতে
তাকিয়ে দেখি ৪:৩০টা বাজে ।
আমি অবাক হলাম।
–জানতাম তুমি সহজে উঠবে না তাইতো আধা ঘণ্টা আগে
তোমায় ঘুম থেকে তুলেছি।
-বাব্বাহ !আমার পুতুল বউয়ের দেখছি খুব বুদ্ধি।
–হুমম। নেও এখন চলো নামায পড়ি।
দুজনে এক সাথে নামায পড়ে নিলাম।তারপর আবার কয়েক
ঘণ্টা ঘুমিয়ে সকালে
–নিশি আজকে কাজের প্রথম দিন কিন্তু যেতে মন
যাচ্ছে না। তোমার পাশে পাশে
থাকতে মন যাচ্ছে।
-রোজইতো আমার পাশে পাশে থাকো। দেখো বাবু তুমি এই কাজটা অনেক কষ্টে পেয়েছ।

-হুমম সত্যি । একটা কাজের জন্য অনেক জায়গা খুজে খুজে করেছি অনেক কষ্টের জোগাড় হয়েছে কাজটা।
– পরীর জন্য আমাদের দ্বিতীয় অধ্যায়ের শুরু আজ থেকে। পিচ্চি বর আস আগের মত তোমাকে রেডি করে দেই।
— হ্যাঁ পরিয়ে দাও।
— একদম তোমাকে রাজপুত্রের মত লাগছে।
— ও তাই বলতে বলতে নিশির খুব কাছে চলে গেলাম। নাকের সাথে নাক ঘষাঘষি করলাম। আলতো করে কানের লতিতে কামড় বসিয়ে দিলাম।
— যা দুষ্ট। মেয়ের বাবা হয়েছে এখনও দুষ্টমি কমলো না।
— আমাদের ভালোবাসা কখনো শেষ হবে না গো পুতুল বউ। দুগালে দুটি হাত রাখলাম নাকে একটা পাপ্পি দিলাম। দুজন চোখে চোখে তাকিয়ে আছি। আস্তে আস্তে কোমরে হাত রাখলাম লিপ কিস করার জন্য এগিয়ে আসছি ঠোঁট স্পর্শ হবে এমন সময় পরী কেঁদে উঠলো।
নিশি আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে পরীকে কোলে তুলে নিল।

যাওয়ার আগে মা মেয়েকে একসাথে চুমু দিয়ে গেলাম ।
টুরিস্ট গাইডেরে চাকরিটা খুবই ভালো কাটছে আমার ।

এখন টাকা-পয়সার বেশি সমস্যা নেই। পরিবারের সব কিছু ভালভাবে চলে যাচ্ছে ।

সারাদিন তো অন্য মানুষ দেরকে ঘুরতে নিয়ে যাই। আজ চলো আমরা সপরিবারে ঘুরে আসি।

নিশি আজকে আমরা সুন্দর সুন্দর
জায়গায় ঘুরবো।দুপুরে বাইরে থেকেই খাবো।
–হুমম।চলো এখনই বের হই।
–আগে ব্রেকফাস্ট তো করে নিই।তারপর আমি
গোসল করে জুম্মার নামাজ পড়ে এসেই রেডি হয়ে বের
হবো। আজ
কিন্তু তোমায় শাড়ি পরতে হবে।
–তুমি পড়ায়ে দিলে পড়বো । ঠিক আছে আমিই পড়িয়ে
দিব। সকালে একসাথে নাস্তা করলাম। দুপুরে নামাজ
পড়ে এসে রেডি হলাম।
আমি শাড়ি
পড়ায়ে দিলাম ।
যতবারই শাড়ি পড়েছে প্রতিবার
আমাকে পড়িয়ে দিতে হতো। নিশি ভালো
করে শাড়ি পরতে পারতো না। ইচ্ছা করেই শিখে নি।
আমি বলে খুব সুন্দর শাড়ি পড়াতে পারি। আমারও শাড়ি
পড়াতে ভীষণ ভালো লাগে।
বুঝেনইতো বউকে শাড়ি পড়িয়ে দেবার মজাই আলাদা ।
অনেক বছর আগে আম্মুর কাছ থেকে শাড়ি পড়া
শিখেছিলাম। সেদিন শিখার জন্য আমাকেই শাড়ি পড়তে
হয়েছিলো।
আম্মু আর দাদী দেখে ওরে হাসাহাসি করা। এখন
ভাবতেও লজ্জা লাগে। শুধুমাত্র বউকে শাড়ি পড়াতে
পারার জন্য এমন করা। সেই ইচ্ছাও পূর্ণ হলো। নিশি
আমার কোন ইচ্ছাই
অপূর্ণ রাখে না।
.
.

দেখোতো কেমন লাগছে।
খুব সুন্দর করে সেঁজেছে আমার পুতুল বউটা। নিশিকে দেখে নতুন
করে প্রেমে পড়ে গেলাম।এত্তো সুন্দর লাগছে কি আর
বলবো। ইচ্ছা করেই বললাম
–একটুও ভালো লাগছে না।
নিশি মন খারাপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো। এমন
কথা আশা করে নি।
বেশি মন খারাপ হলে এখনই কেঁদে চোখের কাঁজল লেপ্টে
যাবে সুন্দর
সাঁজটাও নষ্ট হয়ে যাবে। নিশি এতো কষ্ট করে আমার
জন্যে সাঁজলো আর আমি
কি বলে ফেললাম ।
–ওলে আমার সুন্দরী পরীরে মা আমার পুতুল বউ। আমি এমন কথা বললাম আর তুমি বিশ্বাস করে
নিলে? তোমাকে এত্তো এত্তো সুন্দর লাগছে। পরীরাও
দেখলে নিশ্চিত লজ্জা পাবে গাল টেনে বললাম।
চলো তাহলে যাওয়া যাক ।
–হুমমম
.
নিশি প্রাকৃতিক পরিবেশেই ঘুরতে খুব ভালোবাসে।
দুপুরের খাবার বাইরে থেকে খেয়ে ঘুরতে লাগলাম
প্রকৃতির মাঝে। আজকের আবহাওয়াটাও
অনেক সুন্দর।দক্ষিণা বাতাস বইছে । আবহাওয়াটা হালকা
ঠান্ডা ঠান্ডা।
ঘুরতে ঘুরতে কখন যে দুপুর থেকে বিকাল আর বিকাল
থেকে সন্ধা হয়ে গেছে বুঝতেই পারি নি। আমার মনে হয়
এমন মিষ্টি সুন্দরী বউয়ের সাথে ঘুরলে কারোর সময়ের
প্রতি খেয়াল থাকবে না ।খুব মজা করলাম ।এখন বাড়িতে
যেতে হবে। হঠাৎ নিশি মার্কেট করতে চাইলো। বাধ্য
হয়ে মার্কেটে যেতে
হলো। বরাবরের মতো এবারও নিশির জিনিস আমি
আমরা দুজন একাই জিনিস
পছন্দ করলাম। নিশি আমার জন্য কালো
শার্ট আর জিন্সের প্যান্ট পছন্দ
করলো।আর আমাদের লক্ষী মেয়েটার জন্য একটা শব্দ ফ্রক নিলাম।
আর আমি সুন্দর একটি হালকা গোলাপি রংয়ের শাড়ি পছন্দ করলাম। এদিকে
পকেটে হাত দিয়েই দেখি আর তেমন টাকা নেই। মনটাই
খারাপ হয়ে গেলো।এখন বলতেও খারাপ লাগছে। নিশি
আমার দিকে তাকিয়ে
কি যেন ভাবলো তারপর বললো
–আজ আর কিছু কিনবো না।পরের সপ্তাহে মনভরে
কেনাকাটা করবো কিন্তু।
তারমানে বুঝে গেছে আমার মন
খারাপের কারণ। আমিও খুশিতে রাজি হলাম। নিশি
কেনাকাটা তেমন পছন্দ
করতো না। যখন বুঝতে পারলো আমি
নিত্যনতুন পোশাকে নিশিকে দেখতে খুব পছন্দ করি তখন
থেকেই কেনাকাটা
ভালো লাগে । নিশি আগে আমার পোশাক
কিনবে তারপর নিজের পোশাক কিনে।
দোকানীদের বিল দিয়ে মার্কেট থেকে বেরিয়ে
আসলাম।
-আমার কোন দোষ নেই। আমিতো জানতাম
না তুমি কেনাকাটা করবে আজ। তাই টাকা বেশি
এনেছিলাম না।
–আমি কি এতার জন্য কিছু বলেছি তোমায় ?
–না। আচ্ছা তুমি প্রতিবার কীভাবে বুঝো আমার মন
খারাপ?
-এতো ভালোবাসি তোমায় আর এটুকু বুঝবো না।
তাছাড়া তুমিও তো বুঝে ফেলো ।তোমার ঐ চোখের
ভাষা আমি বুঝতে পারি। আর এমন প্রশ্ন করছো কেন?
তার
মানে তোমার বিশ্বাস হয়না আমি তোমাকে
ভালোবাসি?
–তুমিও না কথার শুধু অন্যমানে খুঁজে বের করো।
–আমি অন্যমানে বের করি? জেনেশুনে তাহলে ওমন প্রশ্ন
করো কেন বলো?
এইরে আরো রেগে যাওয়ার আগেই কিছু করতে হবে।
ওইতো সামনে ফুসকাওয়ালা। নিশিতো ফুসকা পাগলী।
–আর বলব না ।ভুল হইছে ।এবার রাগ করতে হবে না চলো
ফুসকা খাই। নিশির জন্য একপ্লেট ফুসকা
অর্ডার দিলাম।
–এই তুমি খাবে না ?
–আমার খেতে ইচ্ছে করছে না।
–জানি তোমার ফুসকা ভালো লাগে না। তবুও তোমাকে
খেতে হবে। তোমাকে ছাড়া আমি একা কখনও খেতে
পারবো না।

.
.কি আর করার। আরেকপ্লেট ফুসকা অর্ডার
দিলাম। অহনার জন্য হলেও খেতে হবে।
দুজনে একসাথে ফুসকা খাচ্ছিলাম। নিশিতো এমনভাবে
খাচ্ছে যেন আরো
৪-৫প্লেট ফুসকা দিলেও খেয়ে ফেলবে।
এদিকে আমি আস্তে আস্তে খাচ্ছি। এমন সময় পরী কান্না শুরু করলো এই মেয়েকে সামলাতে পারেনা কিসের বাবা হয়েছে।
চলবে ?
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে