নারীর সতীত্ব পর্ব-১৯

0
1406

#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_১৯
Wohad Mahmud

আমার খুব রাগ হচ্ছিল। বিয়ে করে যেদিকে যাবি যা, আমাদের মাথার উপরে আসার কী দরকার। সোহেলের কাছে থেকে ওর বাবার ফোন নাম্বার নিয়ে এখানে আসতে বললাম। তারপর ওর বাবা এসে এসব কান্ড দেখে রাকিবকে কে কিছু না বলে থাপ্পড়াতে শুরু করে দেয়। সেই সাথে নিজের ছেলেকেও।

আমি বুঝতে পারলাম না। এখানে রাকিবের কী দোষ? রাকিবকে কেন থাপ্পড় দিল?

আমি সোহেলের বাবাকে বললাম, এখানে রাকিবের তো কোনো দোষ নেই, ভুল যা করার করছে সব আপার ছেলে করছে।

সোহেলের বাবা যা বলল তা শোনার পরে আমার রাগ আরো দ্বিগুন হয়ে গেল।

সোহেলের বাবা বলল, সব সমস্যার মূল এই রাকিব। আমার ছেলের তো দোষ আছেই তার তাকে সাহায্য করছে রাকিব। এর পিছনে রাকিবের হাত না থাকলে কোনোদিন এমন কাজ করতে পারত না সোহেল। আর রাকিব বলেছে নিশ্চিয় এখানে আসার কথা।

আমি নিজেকে শান্ত করে বললাম, আপনি কীভাবে বুঝলেন এর পিছনে রাকিবের হাত আছে আর রাকিব এখানে আসতে বলেছে।

আমি সিওর কারণ, রাকিব একদিন এই মেয়ের বিষয়ে আমার সাথে কথা বলতে আসছিল, আমি মানা করে দিয়েছিলাম আর তখন রাকিব বলেছিল বিষয় টা আমি সামলিয়ে নিব। আর এটা রাকিব করছে। রাকিব ছোট থেকেই এমন, কাউকে সম্মান দিতে জানে না।

আমি রাকিব কে বললাম এটা কী সত্যি রাকিব।

রাকিব তখন বলল, হ্যাঁ আমি ওই মেয়ের বিষয়ে কাকার সাথে কথা বলছিলাম। কিন্ত আমি এসব বিষয়ে কিছু জানি না আর এখানে আসতেও বলি নাই। পালিয়েও বিয়ে করতে বলি নাই আমি।

বুঝলাম রাকিব কে ধরে হবে না। তাই সোহেল কে বললাম আমার একটা ফ্রেন্ড আছে সে পুলিশ অফিসার যদি প্রথম থেকে সব ঠিক ঠিক বলো তাহলে আমি তোমাকে সাহায্য করব, না হলে আমি স্যরি।

সোহেল তখন বলে আমি রাকিবকে কথা অনুযায়ী সব করছি। রাকিব বলেছে পালিয়ে বিয়ে করে এখানে আসতে। আমি তাই করেছি। বলছে এখানে চলে আই, মাহমুদ ভাইয়া সাহায্য করতে পারবে। তাই এখানে এসেছি।

আমি রাকিবের দিকে তাকাতেই রাকিব লজ্জায় মাথা নিচু করে নেয়। মনে মনে বললাম কুকুরের লেজ কখনো সোজা হবে না। আর যেখানে যায় ঝামেলা সৃষ্টি করে।

সুমির কাছে থেকে ওর বাবার নাম্বার নিয়ে ফোন দিয়ে সব খুলে বললাম। আর বাসার ঠিকানা দিয়ে বললাম এখানে আসেন আপনারা আর প্লিজ পুলিশ নিয়ে আসবেন না। নিজেরা নিজেরাই এই বিষয় টা সমাধান করতে পারলে ভালো হবে। কিছুক্ষণ বোঝানোর পরে ওরা আসতে রাজি হলো আমাদের এখানে।

সবাই বসে আছে গম্ভীর হয়ে। কেউ কোনো কথা বলছে না।সবার মাঝ থেকে সাবনাজ অনুপস্থিত। কিছুক্ষণ আগেও তো দেখলাম এখানেই ছিল। মনে হয় আমার এখানে আসতে দেখে চলে গিয়েছে। রাকিবের সাথে মাহমুদার বিয়ের কথা বলার পরে থেকে এমন করছে। কথা বলছে না। আমার সাথে রাগ করে আছে।

আমিও অনেক রাগ করে আছি সাবনাজের উপর। কালকে আমার কথার উত্তর না দেওয়ায় জন্য।

ওখান থেকে চলে আসলাম। রুমে এসে দেখি সাবনাজ বসে আছে খাটের উপরে। আমার আসার উপস্থিত ঠিক পেয়ে রুম থেকে চলে যেতে চাইলে জোরে হাত ধরে আবার খাটের উপর বসিয়ে দিয়ে বললাম, তোমার সমস্যা কী সাবনাজ?

আমার আবার কী হবে? আমার কোনো সমস্যা নেই মাহমুদ। আমি ঠিক আছি।

তাহলে কাল থেকে আমাকে ইগনোর করে চলছো কেন? ঠিক মতো কথা বলছো না কেন?

কিছু হয়নি। আর বাসায় আরেক ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছে না জানি কী হয়। যদি মেয়ের পরিবার ঝামেলা সৃষ্টি করে। পুলিশ নিয়ে এসে কেস করে। এসব বিষয় নিয়ে ঝামেলা হবে ভেবে মন খারাপ।

আমি কিছুটা রাগ নিয়ে গম্ভীর গলায় বললাম মিথ্যা বলছো কেন ‌? আমি বেশ ভালো করেই জানি অন্য কারণে মন খারাপ তোমার। রাকিবের সাথে মাহমুদার বিয়ের কথা বলেছি বলে এমন করছো তাই তো? না কি অন্য বিষয়।

আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে মাহমুদা এসে বলল, মা আপনাকে ডাকছে ভাবি। আমাকে আর কিছু না বলে মাহমুদার সাথে চলে যায় সাবনাজ।

রাগে রাগে হাত দিয়ে টেবিলের উপর কাঁচের গ্লাসে মারলাম এক ঘুশি, হাত কেটে টপটপ করে রক্ত পড়ছে। আমার রাগ তত বাড়ছে। বুঝতে পারছি না কী করব। এক দিকে সাবনাজ আর অন্যদিকে মাহমুদা, রাকিব। যতক্ষণ না বলছি মাহমুদার সাথে বিয়ে দিব না ততক্ষণ সাবনাজ ঠিক হবে না। সাবনাজের এই অবহেলা একদম আমার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। অসহ্য লাগছে সবকিছু।

হাতে ব্যান্ডেজ করে নিচে গেলাম। নিচে সবার জন্য চা তৈরি নিয়ে এসে দিচ্ছে সাবনাজ। আমাকে চা দেওয়ার সময় আমার হাতের দিকে লক্ষ্য করে সাবনাজ আস্তে করে বলছে হাতে কী হয়েছে?

আমি কোনো কথা বলছি না। চুপ করে বসে আছি। একটু বোঝানো দরকার অবহেলা করার যন্ত্রণা কেমন হয়। ইশারায় পাশের রুমে আসতে বললে না দেখার ভান করে এখানেই বসে রইলাম। অনেক মেসেজ দিচ্ছে কল দিচ্ছে কিন্তু আমি কানে নিচ্ছি না।

পরে দেখি মাহমুদা কে দিয়ে আমাকে ডাকতে দিয়ে পাঠাইছে সাবনাজ।

মাহমুদা বলল ভাইয়া একটু এইদিকে আই তোর সাথে কথা আছে।

আমি বললাম, কী কথা এখানে বল। আমি তো বেশ ভালোই বুঝতে পারছি কেন ডাকছে।

না এখান বলা যাবে না। পাশের রুমে চল‌ তাড়াতাড়ি। খুব জরুরি কথা।

তারপর মাহমুদা সাথে পাশের রুমে গেলাম। আমি রুমে ঢুকতেই মাহমুদা চলে যায়। রুমের মধ্যে সাবনাজ দাঁড়িয়ে আছে।

কাছে গিয়ে বললাম কী হলো কিছু বলবেন?

সাবনাজ বলল তোমার হাতে কি হয়েছে?

হাতে আবার কী হবে কিছু হয়নি।

হাতে যদি কিছু না হয় তাহলে রুম রুম থেকে আসার সময় দেখলাম হাত ঠিক আছে আর এখন দেখছি হাত ব্যান্ডেজ করা।

আমি কিছুটা মুড নিয়ে বললাম। আমার হাতে যা হওয়ার হয়েছে তাতে আপনার কী? আপনার এতো দরদ দেখাতে হবে না।

আমার অনেক কিছু কারণ তোমার শরীরের উপর আমার অধিকার আছে। এখন এই শরীর তোমার একার নয়, আমারো ভাগ আছে।

এতো সুন্দর কথা শুনে কেউ কী আর রাগ করে থাকতে পারে বউয়ের উপর। তাই রাগ ভেঙে বললাম তোমার উপর রাগ করে তখন হাত দিয়ে কাঁচের গ্লাস ভেঙ্গে ফেলছি তাই হাত কেটে গেছে।

সাবনাজ তখন বলল, আসলে আমি স্যরি। আমাকে মাফ করে দিও। তোমাকে এমন অবহেলা করা আমার একদম ঠিক হয়নি। সবকিছু তোমাকে বলা উচিত ছিল।

আমি তখন হাসতে হাসতে বললাম, তুমি তো আর বোবা হয়ে যাওনি আর সময় ফুরিয়ে যায়নি। এখন আমাকে বলো তোমার কী হয়েছে।

সাবনাজ তখন কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি কলিং বেলের আওয়াজ শুনতে পেলাম। তখন আমার বুঝতে বাকী রইল না, সুমির বাসা থেকে মানুষ এসেছে। সাবনাজ কে বললাম ওরা চলে এসেছে। আমি ওদের সাথে কথা বলে আসি তারপর তোমার সাথে কথা বলব।

আমি রুম থেকে যাচ্ছি আর ভাবছি আল্লাহ এই বিপদ থেকে উদ্ধার করো। রুম থেকে বাহির গিয়ে দেখি তিন বসে আছে। ওদের দিকে তাকিয়ে আমি হাঁ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। মনে হলো আমি অন্য জগতে আছি,,,,,,,

চলবে,,,

বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে