ধর্ষিতা_বউ পার্ট: ১১

0
3407

ধর্ষিতা_বউ

পার্ট: ১১

#Rabeya Sultana Nipa

 

__ দুই মেয়ের একসাথে বিয়ে দিতে উঠে পড়ে লেগেছে উনি।একা হাতে কতো করবো আমি।এই লোকের সাথে ৩০ টা বছর ঘর করে এলাম এখনো আমার কষ্টটা বুজলো না।আমার জায়গা অন্য কেউ থাকলে কবেই এইবাড়ী রেখে চলে যেতো।নিলিমা বেগমের মাছির মতো পেঁনপেঁনানি শুনে পিছন থেকে আজাদ সাহেব হাঁসি ছেপে রেখে বলতে লাগলেন,সব মেয়েই এই কথা বলে।আমার জায়গা অন্য কেউ থাকলে চলে যেতো।এইটা পুরনো ডায়লগ, আমার কাছে ভালো লাগেনি অন্য কিছু বলো।

নিলিমা বেগম -দেখেছো আবার মুখে মুখে তর্ক করছে, এখন তর্ক করার সময়?
আসিফ গাঁয়ে হলুদের ফুল নিয়ে এসে ছাদে যাবে তখনি মা বাবারর কাণ্ড দেখে,আব্বু
এখন রাগারাগি করার সময়?আম্মু শুনো প্রাপ্তি আর অরণীর বন্ধুরা এসে ড্রইংরুমে বসে আছে। মামী কে বলো তাদের নাস্তা দিতে।

আজাদ সাহেব- হে রে আসিফ তোর বন্ধুদের আসতে বলিসনি?

আসিফ- হ্যাঁ আব্বু ওরা সবাই একটু পর চলে আসবে।আচ্ছা আমি গিয়ে ছাদে স্টেজ সাজানোর জন্য ফুল গুলো দিয়ে আসি।তুমি ডেকোরেশন গুলো ঠিকঠাক হয়েছে কিনা দেখো।আসিফ কথা গুলো বলতে বলতে উপরে চলে গেলো।

নিলিমা বেগম প্রাপ্তির রুমে এসে দেখে প্রাপ্তি বই পড়ছে।
নিলিমা বেগম -কিরে,,,,,তুই এখনো গোসল করিসনি? অরণী তো গোসল সেরে ফেলেছে।যা না মা বই পড়ার অনেক টাইম পাবি। কিন্তু বিয়েটা মানুষের জীবনে একবারে আসে।মন টা কে পাথরের মতো না রেখে একটু নরম কর।
যা উঠে যা এই নে এই শাড়ী টা গোসল করে পরেনিবি।
প্রাপ্তি -(বিরুক্তির চাপ নিয়ে)আম্মু আমার ভালোলাগছে না।কেন শাড়ী পড়বো এখন?

নিলিমা বেগম -দুই বাড়ী থেকে সকালে শাড়ী গহনা পাঠিয়েছে। সিয়াম আর আয়ানের মা যোগাযোগ করে এইগুলো পাঠিয়েছে।যখন শুনেছে তোদের দুই বোনের এক সাথে বিয়ে আয়ানের মা নাকি আসিফের থেকে নাম্বার নিয়ে সিয়ামের মাকে ফোন দিয়েছে, সবছেয়ে অবাক ব্যাপার কি জানিস ফোন দিয়ে দেখে আয়ানের মায়ের ছোটো বেলার বন্ধু সিয়ামের মা! (কথাটা বলেই হাঁসিতে গড়িয়ে পড়ছে নিলিমা বেগম)আয়ানের মা তো ফোন করে বলেছে ওনাদের বাড়ী বউ আজ থেকেই ওদের বাড়ীর শাড়ী গহনা পরে থাকবে।সিয়ামের মা ও তাই বললো। শাড়ীর প্যাকেট টা প্রাপ্তির হাতে দিয়ে ঠেলে নিয়ে ওয়াশ রুমে দিয়ে আসলো নিলিমা বেগম।তাড়াতাড়ি গোসল করে বের হও একটু পর পার্লারে যেতে হবে তোদের।
মায়ের কথা শুনে কিছু বলতে গিয়েও চুপ করে থেকে গেলো।গোসল টা সেরেনি পরে না হয় বলা যাবে।

ভাবী! সুইট হার্ট! কই তুমি এইদিকে আসোতো। দোতালা থেকে আয়ানের ডাক শুনে সুমি হাতের কাজ টা রেখে তাড়াতাড়ি করে আয়ানের রুমে গেলো।

সুমি -এই শুনো আমাকে আর সুইট হার্ট বলে ডাকবেনা।

আয়ান -(গোসল করে এসে চুলের পানি নিতে নিতে)কেন সুইট হার্ট?এতো দিনের অভ্যাস সেটা কি চেঞ্জ করা যায়?

সুমি -হুম করবা। কারণ তোমার বউ এসে হয়তো সহ্য করবে না হয়তো তোমার সাথে রাগও করতে পারে।পরে আমাকেও খারাপ ভাববে।
আয়ান মন খারাপ করে মেয়েটাকে কি তোমার এইরকম মনে হয়।আমার কিন্তু তেমন মনে হয়নি।মনে হয়েছে ঠান্ডা,সহজ, সরল, ভালোবাসার মতো একজন মানুষ। চোখ গুলো দেখে মনে হয় যাকে একনজর দেখলেই বিশ্বাস করা যায় ভালোবাসা যায়।আমি এতো মেয়ে দেখেছি ওর মতো মেয়ে আগে কখনো দেখিনি।

সুমি -তুমি যে রকম বলছো আমার কাছে মেয়ের বড় বোনকে সেই রকমই লেগেছে।তবে মেয়েটাও খারাপ না।যাইহোক আমাকে এই ভাবে ডেকেছো কেন?
আয়ান -আজকের জন্য আমি যে শাড়ী টা পছন্দ করে কিনে ছিলাম পাঠিয়ে ছিলে ওদের বাড়ী তে?
সুমি -হুম মিনু আর ওর হ্যাজবেন্ড গিয়ে সকালে দিয়ে এসেছে।গাঁয়ে হলুদের আর বিয়ের শাড়ী গুলোও পাঠিয়ে দিয়েছি।

আয়ান -হুম ভালো করেছো।

সুমি -আচ্ছা আমি এখন যাই কতো কাজ পড়ে আছে। এখন তোমার সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় নয়।ঘরে নতুন বউ আসুক একসাথে আড্ডা দিবো।

রুমকি এসে মামনি, মামা নানা ভাইয়া সবাইকে নিচে ডাকছে।

আয়ান রুমকি কে কোলে নিয়ে চলোতো দেখি কেনো ডাকছে।
সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে দেখে আয়েশা বেগম ঝিনুক, আকাশ,মিনু, সবাই মন খারাপ করে বসে আছে।আবিদ সাহেবও গম্ভীর হয়ে বসে আছে।
সুমি সবার দিকে তাকিয়ে, কি হয়েছে সবার? সবাই চুপ কেন?

ঝিনুক -ভাবী! আব্বু এইসব কি বলছে?

আয়ান -কেন? কি হয়েছে?

আয়েশা বেগম -তোর আব্বু বলছে তোর বিয়েতে নাকি থাকতে পারবেনা। এইটা কোনো কথা বল? নিজের ছেলের বিয়ে আর নিজেই থাকবে না।

আয়ান -আব্বু কি শুনছি এইসব? কেনো থাকবে না বিয়েতে।

আবিদ চৌধুরী গলা টা একটু ঝেড়ে নিয়ে বললো,আয়ান তোকে বলা হয়নি আমাদের
নতুন প্রজেক্ট এর কাজে আমাকে দেশের বাহিরে যেতে হবে এইখানে কছু করার নেই।

আকাশ -আয়ান! আমি আব্বুকে অনেক বার বলেছি আমি যাই।কিন্তু আব্বু কিছুতেই রাজী হচ্ছেনা।

আবিদ চৌধুরী -তুমি গেলে এতো দ্বায়িত্ব বিয়ের সেই গুলো করবে কে? আমি তোমার কাঁধে বিয়ের সব দ্বায়িত্ব দিয়ে যাবো।আমি এসে যেনো শুনি সব ঠিক ভাবেই হয়েছে।আর বাড়ীর জামাইরা তো আছেই তারাও তোমাকে হেল্প করবে।(মিনু আর ঝিনুকের হ্যাজবেন্ডের দিকে তাকিয়ে)কি বলো তোমরা?

নিহাদ(ঝিনুকের হ্যাজবেন্ড)-হ্যাঁ বাবা আমি আর রাহাত(মিনুর হ্যাজবেন্ড)আকাশ ভাইয়ার সাথে আছি।আপনি কোনো চিন্তা করবেন না।

আয়েশা বেগম -তোহ্ তুমি যাচ্ছো কখন?

আবিদ চৌধুরী -আজ সন্ধ্যায় বাসা থেকে বের হবো।তুমি গিয়ে আমার সব কিছু গুছিয়ে দাও।
কথাটা শুনে আয়েশা বেগম মন খারাপ করে কেমন বাবা কাল ছেলের বিয়ে আর তুমিই থাকবে না।এমন টাকার দরকার কি যেই টাকা নিজের আপন জনদের সাথে থাকতে দেয়না কথা গুলো বলতে বলতে আয়েশা বেগম রুমে চলে গেলেন।

চলবে,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে