তোকে ভালোবেসে খুব পার্ট- ১০

0
2426

#তোকে_ভালোবেসে_খুব
#পার্ট_১০
Writer:#সারা_মেহেক

রুমের দরজা খোলা ছিলো।মৌ চা নিয়ে রুমে এসে ধড়াম করে দরজা লাগিয়ে দিলো।আয়ান বিছানায় বসে বসে মোবাইল চালাচ্ছিলো।দরজা আটকানোর আওয়াজে সে ধরফরিয়ে উঠে।ভয়ার্ত দৃষ্টিতে সে সামনে তাকিয়ে মৌ কে দেখতে পায়।মৌ এর চেহারাটা দেখে তার ভয়ার্ত দৃষ্টি আরো ভয়ে পরিপূর্ণ হয়ে যায়।মৌ এর চোখে যেমন পানি তেমনি রাগ।এর আগে সে কখনো মৌ কে এমন দেখেনি।মৌ দরজা আটকিয়ে চায়ের কাপটা নিয়ে এসে বেডসাইড টেবিলে রাখলো।তার দৃষ্টি আয়ানের দিকে।সে এমনভাবে তাকিয়েছে যেনো আয়ানকে চোখ দিয়েই গিলে খেয়ে ফেলবে।
আয়ান মৌ এর চেহারা দেখে শুকনো একটা ঢোক গিলে বিছানা থেকে উঠে বারান্দার দিকে পা বাড়ালো।তার কাছে মৌ এর রূপটা ভয়ংকর লাগছে।সকালে সে মৌ কে দেখে যতটা মুগ্ধ হয়েছিলো,এখন মৌ কে দেখে তার ঠিক ততোটাই ভয় লাগছে।সে নিজেকে বলছে, মৌ কি এমন মেয়ে যে ওর থেকে ভয় পেতে হবে?ওকে ভয় পাবি না একদম।তুই ছেলে হয়ে কি করে একটা মেয়েকে ভয় পেতে পারিস!ছিঃ ছিঃ।মান সম্মানের ব্যাপার স্যাপার। এসব বলার পরও সে বারান্দায় যাওটাকে সেইফ মনে করলো।
আয়ান যেই না বারান্দায় যেতে যাবে তখনই মৌ এসে আয়ানের পরনের টিশার্টের কলার চেপে ধরলো।মৌ এর এমন আকস্মিক কাজে আয়ান যেনো আকাশ থেকে পরলো।এমনটা সে স্বপ্নেও আশা করেনি।অবাকের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে।সেটারই জানান দিলো তার বড় হয়ে যাওয়া চোখজোড়া।মৌ এর চোখে স্পষ্ট রাগ দেখতে পেলো সে।
মৌ আয়ানের কলার চেপে ধরে আয়ানকে নিজের কাছে এনে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

—“তুই স্বামী নামের একটা কলঙ্ক।যে স্বামীকে একটু ভাইও বলা যায় না, সে কিসের স্বামী হুম?”

মৌ এর কথা শোনার সাথে সাথে আয়ানের চোখগুলো আরো বড় হয়ে এলো।যেনো কিছুক্ষন পরই কোটর থেকে বেড়িয়ে যাবে।মৌ এর ব্যবহার,কথাবার্তা সবই তাকে বিস্মিত করে তুলছে।সব চেয়ে বেশি অবাক হচ্ছে সে মৌ এর মুখে “তুই” শব্দটা শুনে।যে মৌ তাকে আপনি ছাড়া কথা বলে না,সে মৌ “আপনি” থেকে সোজা “তুই” তে চলে গেলো!!এটা পুরাটাই তার কাছে অবিশ্বাস্য লাগছে।
সে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বললো,

—” এসব কি ধরনের কথাবার্তা?”

মৌ আগের মতোই বললো,

—” তুই কিসের কি হুম?ভাই বললে তোর এতো জ্বলে বুঝি??”

আয়ান একটা শুকনো ঢোক গিলে বললো,

—” তোর হয়েছে টা কি?বলবি তো আমাকে..”

—” তোর খালা এতো ত্যাড়া মহিলা কেনো?তোকে এক ভাই বলেছি, আর তোর মা কে আন্টি বলেছি,তাতেই শখানেক কথা শুনিয়ে দিলো!!একটু ভালো করেই তো বলতে পারতো।”

এতোক্ষনে আয়ান বুঝলো গড়বড় টা কোথায়।মৌ এর কথা শুনে একদিকে তার যেমন রাগ হচ্ছে,তেমনি হাসিও পাচ্ছে।রাগ হচ্ছে তার সাথে এমন ব্যবহার করায়।আর হাসি পাচ্ছে তার খালার কথায় রাগ করে এমন বলছে বলে।আয়ান মুচকি হেসে বললো,

—” এদের কথা এক কান দিয়ে ঢুকাবি আরেক কান দিয়ে বের করবি।তোর ইচ্ছা হলে আমাকে ভাই বলতে পারিস।”
এতোক্ষনে আয়ানের কথা শুনে মৌ কলারের বাঁধন আলগা করে দিলো একটু করে।আয়ান মুচকি হেসে মৌ এর আলগা বাঁধ হতে নিজের কলার ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,

—” তোর যা ইচ্ছা হয় আমাকে তাই ডাকবি।আমি মাইন্ড করবো না।”

মৌ আজকে আয়ানের,আচার -আচরনে শুধু বিস্মিতই হচ্ছে।আয়ান যে তার সাথে এতো ভালো ব্যবহার করছে এটা সে কোনোমতেই মেনে নিতে পারছে না। তার জানামতে আয়ান তার ব্যবহারে এতোক্ষনে তুলকালাম কান্ড বাঁধিয়ে দিতো।অথচ সেই আয়ানই এখন তার থেকে ভয় পাচ্ছে,আবার মুচকি হাসি বিনিময় করে তার সাথে ভালো করেও কথা বলছে!কি করে সম্ভব এটা?এতোক্ষন যে সে সজ্ঞানে তার সাহসিকতার পরিচয় দিলো, সেটাতে আয়ানের কি কোনো যায় আসলো না?আর সে যে তুইতোকারি শুরু করে দিয়েছিলো সেটা!!
মৌ এতোক্ষন যা যা করেছে সব ইচ্ছাবশতই করেছে।তার প্রধান কাজ ছিলো, তার মধ্যে থাকা রাগ আর কষ্টটাকে ঝেড়ে ফেলা।এর সাথে সে আয়ানকে রাগানোরও প্ল্যানিং করেছিলো।তবে যে এভাবে তার প্ল্যানটা ভেস্তে যাবে সে ভাবেও নি।

আয়ান মৃদু হেসে মৌ এর সামনে তুড়ি বাজিয়ে বললো,

—” কি হলো?কি ভাবছিস এতো?”

মৌ এবার তার ভাবনার জগত থেকে ফিরে এসে আমতা আমতা করে বললো,

—” আচ্ছা আপনার কি মাথার স্ক্রু ঢিলা হয়ে গেলো নাকি?নাকি আপনার ভিতর কোনো জ্বিন, ভুত ঢুকে গেলো?”

মৌ এর এমন আজগুবি প্রশ্নে আয়ান হো হো করে হেসে দিলো।মৌ ভ্রু উঁচিয়ে আয়ানের হাসি পর্যবেক্ষণ করছে।আয়ানের ব্যবহার তার কাছে যেমনটা আজব লেগেছে,তেমনটা এ হাসিটাও তার কাছে আজব লাগছে।
মৌ সামান্য রাগী সুরে বললো,

—” কি হলো হাসছেন কেনো এভাবে?”

আয়ান হাসতে হাসতেই বললো,

—” হাসির কথা বললে হাসবো না তো কি কাঁদবো?”

মৌ ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাস করলো,

—” হাসির কি এমন বললাম?”

—” এই যে,তুই থেকে আবারো আপনি,আর মাথার স্ক্রু টাইট ঢিলা,জ্বিন ভুত এটসেটরা এটসেটরা…”

মৌ ভেঙচি কেটে বললো,

—” তুই বলেছি রাগে।এখন রাগ কিছুটা কম বলে আবার আপনি তে ফিরে এলাম।
আর জ্বিন ভুত এসব বললাম,এই চিন্তা করে যে,আমি এতো কিছু করলাম অথচ আপনি রাগও করলেন না। কেনো?আজ সকাল থেকেই দেখছি এমন।এক রাতের মধ্যে আপনার ভিতর থেকে রাগ নামক অনুভুতিটাই চলে গেলো!!!!”

আয়ান মৌ এর কথাগুলো বেশ চিন্তিত ভঙ্গিতে শুনলো।আসলেই তো…তার হয়েছে টা কি?সে মৌ এর উপর রাগ করছে না কেনো?কেনো ধমকের সুরে কথা বলছে না মৌ এর সাথে!!আজব তো!হলো টা কি তার?সে চেয়েও রাগ করতে পারছে না।উল্টো ভালো লাগছে তার কাছে সব।আচ্ছা? সে কি তাহলে মৌ প্রেমে পরে যেতে শুরু করলো নাকি?ধ্যাত, এটা কি করে সম্ভব? কেবল তো একদিনই হলো।তাতেই?যদিও মৌ তার পূর্বপরিচিত, তবুও প্রেমে পরতে এতো কম সময় লাগে বুঝি?
আয়ান এবার নিজেকে সামলে একটু ভাব নিয়ে বললো,

—” ভাবছি আজ থেকে রাগ,ঝগড়া এসব বন্ধ করে দিবো।”

মৌ অবাক হয়ে বললো,

—” সে কি!!”

আয়ান ভ্রু কুঁচকে বললো,

—” এতো অবাক হওয়ার কি আছে?”

মৌ কিছু না বলে জ্বর পরীক্ষা করার মতো আয়ানের গালে কপালে হাত দিয়ে বললো,

—” আপনি সুস্থ আছেন তো?”

—” হুম সুস্থ আছি।আমার কি হবে আবার।”

—” না মানে… আপনি সত্যিই রাগ ঝগড়া এসব বন্ধ করে দিবেন!!আপনিই তো সেধে সেধে আমার সাথে ঝগড়া করতে আসতেন,আর আজ আমিই ঝগড়া করতে চাইছি,অথচ আপনি বলছেন এসব করবেন না!!কেনো?হুয়াই ম্যান হুয়াই?”

আয়ান ভ্রু কুঁচকে বললো,

—” আমার সাথে ঝগড়া করতে চাইছিস কেনো?আমার সাথে ঝগড়া করতে বুঝি খুব ভালো লাগে?আচ্ছা,যদি ভালো লাগে,তাহলে ঝগড়া করিস।যে সে ব্যাপার নিয়ে ঝগড়া করতে পারিস।আমি মাইন্ড করবো না।”

মৌ স্বাভাবিক থেকেই বললো,

—“ঝগড়া করতে ভালো লাগুক বা খারাপ লাগুক,এটা কারন নয়।কারন হলো আরেকটা।আমি চাই আপনি আমার উপর অতিষ্ঠ হয়ে আমাকে ছেড়ে দিন।কারন আপনার সাথে সংসার করার বিন্দমাত্র ইচ্ছা নেই আমার।”বলে সে ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো।

এতোক্ষন মৌ এর কথাগুলো আয়ান বেশ মজা নিয়ে শুনলেও শেষের কথাগুলো সে মোটেও মজা নিয়ে শুনেনি।সে তো মৌ এর কথায় অবাক হয়ে যায়।মৌ তাকে ছেড়ে যাওয়ার প্ল্যানে আছে,এটা সম্পূর্ণ তার কাছে অজানা ছিলো।যদিও বিয়েটা জোর করে হয়েছে।তারপরেও সে মৌ কে ছাড়ার কথা এখন ভাবতে পারছে না।সে আহত সুরে বললো,

—” কি ভুল করেছি আমি যে তুই আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা বলছিস? ”

আয়ানের কথার সুরটা শুনে মৌ বেশ অবাকই হলো।তারপরেও সে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,

—” ভুল তো আমাদের বাবা মা রা করেছে আমাদের মতের বিরুদ্ধে বিয়ে দিয়ে।যে বিয়ে আমরা কেউই মানিনা।”

—“যদি বলি আমি এখন এ বিয়ে মানি?”

মৌ বিস্মিত হয়ে বললো,

—” মানে!! কি বলতে চাইছেন আপনি?”

—” আমি আমাদের এ বিয়েটা ভাঙতে চাইনা।”

মৌ অভিমানি সুরে বললো,

—” কিন্তু আমি ভাঙতে চাই।”

আয়ান করুন চাহনিতে মৌ এর দিকে তাকিয়ে বললো,

—” কেনো?কি ভুল করলাম আমি?”

—” দেখুন…আপনার আর আমার পরে না বললেই চলে।আর আপনি আমাকে কখনো ভালোবাসতে পারবেন না।আর ভালোবাসা ছাড়া বিয়ে টিকিয়ে রাখা আমার কাছে বেশ কষ্টসাধ্য মনে হয়।”

—“কে বলেছে আমি তোকে ভালোবাসতে পারবেন না?”

—” কি করে ভালোবাসবেন আপনি?যদি আগে থেকেই আপনার মনে অন্য কেউ জায়গা নিয়ে থাকে?আমি জানি মৌসুমির জায়গায় মৌ নামক মেয়েটাকে মেনে নেওয়া আপনার জন্য কষ্টকর।আর আমিও তো আপনাকে মেনে নিতে পারছি না।পারবোই বা কি করে,এটা জানার পর যে মৌসুমি নামক মেয়েটাকে আপনি ভালোবাসেন।”

মৌ এর কথা শুনে আয়ানের এবার রাগ উঠে গেলো।সে মৌ এর দিকে এগিয়ে গিয়ে মৌ এর হাত জোরে চেপে ধরে বললো,

—” তোকে কি আমি একবারো বলেছি, আমি মৌসুমি কে ভালোবাসি?”

আয়ান মৌ এর হাত চেপে ধরায় মৌ ব্যাথায় কুঁকিয়ে উঠে।তারপরও সে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,

—“বলেননি,তবে আমি জানি,বুঝি।”

আয়ান তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,

—“যা জানিস,বুঝিস সব ভুল জানিস।ভুল বুঝিস। তুই আসলেই একটা বোকা মেয়ে।একটা ব্যাপার আইডিয়া করে তুই ডিসিশন নিয়ে নিলি!!”

—” আইডিয়া না।সত্যিই বলছি।”

আয়ান এবার মৌ এর হাত আরো জোরে চেপে ধরে বললো,

—“মৌসুমি কে আমি ভালোবাসি না এটা শুনে রাখ।আর সেও আমাকে ভালোবাসে না।কারন বিয়ের ৩/৪দিন আগে থেকে এখন অব্দি আমি তাকে কল করিনি।আর সেও যে টেনশনে পরে আমাকে কল দিবে তাও না।তো বুঝতেই পারছিস দুই পক্ষ থেকে সম্পর্কটা কেমন চলছে।”

মৌ এবার কিছু বলতে যাবে,তার আগেই আয়ানের ফোনে একটা কল আসলো।আয়ান মৌ কে ছেড়ে দিয়ে তার ট্রাউজার এর পকেট থেকে মোবাইলটা বের করলো।মোবাইলের স্ক্রিনে স্পষ্ট সে দেখতে পেলো মৌসুমি নামটা।এ নামটা মৌ এর ও দৃষ্টিগোচর হলো না।মৌসুমির নাম দেখে মৌ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,

—” মিথ্যা তো ভালোই বলতে পারেন দেখছি।”

আয়ান সাথে সাথে মৌসুমির কল কেটে ফোনটা সাইলেন্ট করে দিয়ে মৌ এর দিকে তাকিয়ে বললো,

—” আমি কি মিথ্যা বললাম!!”

—” এই যে মৌসুমি আপনাকে কল দেয়না। দুপক্ষ থেকে সম্পর্কের কোনো গতি নেই।হেনতেন সাতসতেরো।”

আয়ানের এবার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলো। সে ফোনটা বিছানায় ছুঁড়ে মেরে দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

—” তুই তো বড়ই ত্যাড়া মেয়ে।আমি যা বলছি তা কি বিশ্বাস করা যায়না?বললাম তো মৌসুমি আমাকে এতোদিনে কল দেয়নি।আজকে দিলো।”

—” হয়তো আপনাকে খুব মনে পরছে।”

—” এসব ফালতু কথা বলা বন্ধ করবি?”

—” ফালতু কি বললাম?যে ছেলে বিয়ের আগে একটা না দুই দুইটা প্রেমপিরিতি করে বেড়ায় সে ছেলের কাছে এটা কোনো ফালতু কথাই হতে পারে না।”

—“তুই বিয়ের আগের কথা বিয়ের পরে আনছিস কোন লজিকে?”

—” এসব লজিক ফজিক বাদ দিন।আমি আমার মনের কথাটা আপনাকে বলি।”

—” হুম বল দেখি।”

—” আমার মন থেকে খুব বড়োসড়ো একটা ভাইব আসছে,যে আপনি আমাকে কখনোই ভালোবাসতে পারবেন না।কখনোই না।”

আয়ান হেসে বললো,

—“যদি বলি তোকে আমি ভালোবাসি?”

মৌ তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,

—“ভালোই হাসাতে পারেন দেখছি।”

আয়ান চোখমুখ কুঁচকে বললো,

—“আমি হাসির কি বললাম?”

—“এই যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন।”

—“হুম।তো এতে হাসির কি হলো?”

—“এই যে মিস্টার মিরর…এটা কি আদৌ সম্ভব একদিনে ভালোবাসা?পাগলেও তো এটা জানে একদিনে কখনো ভালোবাসা হয়না।”

—“হুম সম্ভব। আমি নিজেই তার প্রমাণ।আমার মনের মধ্যে তোর জন্য ভালোবাসা আছে।জানি না এই অনুভুতিটা কতোদিনের।তবে তোকে আজ সকালে দেখে মনের মধ্যে এক অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করেছে। তোকে দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি।মনে এক সুপ্ত অনুভুতি জেগেছিলো তোকে ছুঁয়ে দেওয়ার।হয়তো এসব অনুভুতি মনের কোনায় পরেছিলো।এতোদিনেও আমি তোয়াক্কা করেনি এসবের।আমার এসব ভালো লাগতো না।”

মৌ এতোক্ষন বেশ মনযোগ দিয়েই আয়ানের কথাগুলো শুনছিলো।আয়ানের কথাগুলো না চাওয়া সত্ত্বেও তার মনে ভালোলাগা তৈরী করলো।এসবের পরেও সে নিজেকে সামলে আয়ানকে জিজ্ঞাস করলো,

—“তো এখন এসব ভালো লাগছে কেনো?”

—“জানি না। এটাও জানি না আমি কেনো তোকে ভালোবাসা শুরু করলাম।হয়তো আমরা নতুন এক পবিত্র সম্পর্কে জড়িয়ে পরেছি বলে।যে সম্পর্কে কোনো না কোনো একসময়ে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের প্রেমে পরবেই।এক্ষেত্রে আমার প্রেমে পরাটা আগে হয়েছে।আর হয়তো খুব তাড়াতাড়ি।”

মৌ আবারো তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললো,

—“এসব ঢং ফং বাদ দিন।এসব কিছুদিনের এট্রাকশন আমি জানি।পরে হয়তো অন্য মেয়েকে দেখে পছন্দ হয়ে যাবে,তখন এসব দুদিনের ভালোবাসা ভুলে যাবেন আপনি।”

মৌ এর কথাগুলো আয়ানের বুকে গিয়ে বিঁধলো।সে আহত সুরে মৌ কে বললো,

—“তোর কি সত্যিই আমার উপর বিশ্বাস নেই?”

—” না নেই।এই দুদিনের কাঁচা ভালোবাসা আর আপনার মতো প্রেমিকের উপর আমার একটুও বিশ্বাস নেই।”

#চলবে
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে