তুমি চাইলে যেতে পারো পর্ব-১৫+১৬

0
669

গল্প:-#তুমি চাইলে যেতে পারো(পর্ব:-১৫+১৬)
লিখা:- AL Mohammad Sourav

সিমিকে আল জোঁড় করে টেনে বাহিরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে এমন সময় শাওন এসে ওদের সামনে দাঁড়িয়েছে। শাওনকে দেখে আল সিমির হাতটা ছেড়ে দিয়েছে। শাওন স্বাভাবিক ভাবে ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে।
শাওন:- আল সাহেব সিমিকে আপনি কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
আল:- শাওন আমি সিমিকে কোথাও নিয়ে যাচ্ছি না সিমিকে এখান থেকে বাহিরে বের করে দিতেছি।
শাওন:- কেনো সিমি কি করেছে?
আল:- আজ আমি একটা মেয়ের সাথে দেখা করতে এসেছি আর সিমি সেই মেয়েটাকে ওল্টা পাল্টা বলে বাহির করে দিয়েছে।
শাওন:- সিমি তুমি এমনটা করেছো কেনো? সিমি শাওনের দিকে তাকাচ্ছে না তখনি আল বলে।
আল:- শাওন এখানে কিছু বলার দরকার নেই সিমিকে বাসায় নিয়ে গিয়ে সেটা জিজ্ঞেস করো। আর সিমি তোমাকে বলি আজকের মধ্যে ডির্ভোসের কাগজটা সাইন করে পাঠিয়ে দিবে।
শাওন:- আল সাহেব সিমি যদি কনো অন্যায় করে থাকে তাঁর জন্য সরি। আপনি গিয়ে ঐ মেয়েটির সাথে দেখা করুন আমি সিমিকে বাড়ীতে নিয়ে যাচ্ছি সিমির হাতটা শাওন ধরতে ছিলো তখনি সিমি ঠাস করে এক থাপ্পড় বসিয়ে দেয় শাওনের গালে। আল সহ কফি’সপের সবাই তাকিয়ে আছে শাওনের দিকে। শাওন লজ্জা আর রাগে চেহারা লাল হয়ে গেছে আল ওদের দুজনকে রেখে চলে আসতে ছিলো তখনি সিমি
আনোকে কোলে নিয়ে বলে।
সিমি:- মামুনি চলো আমরা বাসায় যাই তখনি শাওন রেগে গিয়ে বলে।
শাওন:- সিমি তুমি আমাকে থাপ্পড় দিয়েছো কেনো? এত বড় সাহোস হলো কি করে তোমার? আজ বাসায় চলো আমি তোমার কি অবস্থা করি তখন তুমি দেখবে।
সিমি:- আমি আর তোমার সাথে তোমার বাড়ীতে গেলে তো আমার অবস্থা খারাপ করবে? শাওন আজ থেকে আমি আমার স্বামীর বাড়ীতে থাকবো আর তোমার আশল চেহারাটা আমি ধরে নিয়েছি সেইটার জবাব আরেক দিন দিবো বলে হাটা দিয়েছে তখনি আল বলে।
আল:- এই সিমি তুমি শাওনের সাথে এত বাজে ব্যবহার করছো কেনো? আর তুমি কার বাড়ীতে যাবে বলছো?
সিমি:- আপনি কি কানে কম শুনেন আমি যখনি কোনো কথা বলি সেইটা দুইবার আমার মুখ থেকে বের করান।
আল:- দেখো বেশি চালাকি করতে যাবে না বলে দিলাম। তুমি চুপচাপ শাওনের সাথে যাও আমি শাওনকে বুঝিয়ে বলছি ও তোমাকে বাড়ীতে নিয়ে কিছু করবে না তখনি সিমি বলে।
সিমি:- কি বুঝাবেন আরও দুই লক্ষ বাড়িয়ে দিয়ে ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে বলবেন সিমিকে কিছু বলবে না? সিমির কথা শুনে আল আর শাওন দুজনে থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তখন সিমি আবার বলে। দেখুন আমি শাওনের সব প্ল্যান যেনে গেছি। এখন আমার মেজাজ খারাপ আছে কখন কি করে ফেলি বলতে পারি না। শাওনকে বলেন আমার সামনে থেকে চলে যেতে তানা হলে আমি ওকে খু”ন করে ফেলবো। এই কথা বলেই সিমি আনোকে কোলে নিয়ে এখান থেকে দূরে সরে গেছে আর তখনি আল বলে।
আল:- শাওন তোমার আর আমার মাঝে যে একটা চুক্তি হয়ছে সেইটা সিমি জানতে পারলো কি করে? আর তাছাড়া তুমি না আমার অফিসে এসে কান্নাকাটি করে আমার হাতে পায়ে ধরে বলেছো সিমি তোমাকে নিজের জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসে? তাহলে সিমি তোমার উপর এতটা রেগে আছে কেনো? শাওন চুপচাপ হয়ে আছে তখনি আলের দাদি আর ওর ছোট বোন মালা এসেছে।
দাদী:- আল কোহিনুরের সাথে তুই কি করেছিস? কোহিনুর আমাদের সাথে কত খারাপ ব্যবহার করে গেছে। আচ্ছা এখানে তোর কোন বৌ এই কফি সপে এসেছে?
মালা:- ভাইয়া সাহানা ভাবি কি এসেছে? তখনি পিছন থেকে সিমি মালাকে ডেকে বলে।
সিমি:- মালা কেমন আছো তুমি? আরে দাদী মা তো দেখি এখানে এসেছেন। কেমন আছেন আপনি? সিমিকে দেখে ওরা দুজনে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সিমি আমাদের সবার কাছে এসেছে তখনি দাদী বলে।
দাদী:- এই তো সিমি আর আল তুই যে বলেছিস সিমি অনেক দূরে চলে গেছে! সিমি এতদিন কোথায় ছিলে তুমি?
সিমি:- সেটা তো আপনার নাতি ভালো বলতে পারবে? দেখুন না দাদী মা আমি রাগ করে এক সাপ্তাহর মত দূরে গেছি আর ওমনি ওনি বিয়ে করার জন্য মেয়ে দেখতে এখানে চলে এসেছে।
মালা:- কিন্তু আল ভাইয়া তো বলেছি তুমি নাকী ডির্ভোস দিয়ে দিবে আর তোমার ভালোবাসার মানুষের কাছে চলে গেছো?
সিমি:- কি এত বড় মিথ্যা কথা? আমাকে ওনি নিজেই তখনি আল সিমিকে থামিয়ে দিয়ে নিজেই বলে।
আল:- দাদী মালা চল আমরা বাড়ীতে যাই। এমনিতেই কোহিনুরের সাথে খুব খারাপ আচরণ করা হয়ছে আমি নিজে ওর বাড়ীতে গিয়ে ওকে সরি বলে আসবো। এবার চল এখান থেকে যতদ্রুত যাওয়া যাবে ততটাই ভালো হবে তখনি সিমি বলে।
সিমি:- হ্যা মালা ওনি ঠিকই বলেছে চলো আমরা তাঁড়াতাড়ি বাড়ীতে চলে যাই। সিমির কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে সিমির দিকে তাকিয়ে আছে। তখনি সিমি বলে আমার দিকে সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?
আল:- তুমি কার বাড়ীতে যাবে হ্যা?
সিমি:- আমার স্বামীর বাড়ীতে।
আল:- মানে?
সিমি:- দেখুন কফি সপে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আপনাকে এত মানে টানে বুঝাতে পারবো না আগে বাড়ীতে চলেন তখন সব মানে বুঝিয়ে দিবো।
আল:- দেখো সিমি এবার কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে? তুমি শাওনের সাথে যাও আমি তোমাকে আর কখনো বৌ হিসাবে আমাদের বাড়ীতে নিবো না।
সিমি:- আপনি আমার স্বামী আমার কাছে প্রমাণ আছে আর তাছাড়া আপনার সাথে এখনো আমার কোনো ডির্ভোস হয়নি তাহলে আমি কেনো আপনার বাড়ীতে যেতে পারবো না? তখনি আল রেগে মেগে কিছু বলতে যাবে তখনি দাদী বলে।
দাদী:- আহা আল থাম সিমি যেহেতু নিজে থেকে যেতে চায়ছে তাহলে তোর সমস্যাটা কোথায়? সিমি এসো আমি তোমাকে আমাদের বাড়ীতে নিয়ে যাবো বলেই সিমির হাত ধরে ওর দাদী নিয়ে যেতেছে। আল শাওন দাঁড়িয়ে আছে তখনি শাওন বলে।
শাওন:- আল সাহেব এখন কি করবেন?
আল:- সব দোষ তোমার! আরেকটা কথা সিমি যদি টাকার কথা শুনে আমার কাছে নতুন কোনো প্ল্যান নিয়ে আসে তাহলে আমি সিমিকে খুব তাঁড়াতাড়ি আমার জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দিবো। কিন্তু সিমি যদি অন্য কোনো কারণে আমাদের বাড়ীতে আসে তাহলে তোমার অবস্থা খুব খারাপ হবে। এখন তুমি যাও আমি বাড়ীতে গিয়ে দেখি সিমি কি কারণে আবার আমাদের বাড়ীতে পা রাখতে চাচ্ছে।
শাওন:- আমার মনে হয় ও জানতে পারছে আপনি আমাকে টাকা দিতে চায়ছেন? হয়তো সিমি ভাবছে আমি টাকার জন্য ওকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছি সেই জন্য আপনার কাছে চলে গেছে।
আল:- বলেছি তো যদি এই কারণে আসে তাহলে তুমি নিশ্চিন্তে থাকো আমি তোমার হাতে সিমিকে তুলে দিবো। এখন তুমি বাড়ীতে যাও আমিও বাড়ীতে যাবো। শাওনকে বিদায় করে দিয়ে আল কপি সপ থেকে বেরিয়ে সোজা নিচে গাড়ীর কাছে চলে এসে দেখে গাড়ীতে সিমি আর আনো সামনের সিটে দাদী আর মালা পিছনে বসে আছে আল কিছু না বলে গাড়ীতে উঠে ড্রাইভিং করতেছে। সিমি মনে মনে প্ল্যান করতেছে কি করে সবকিছু জানতে পারবে? আল কেনো শাওনকে টাকা দিতে রাজি হয়েছে এই কারণটা আমার জানাটা খুব দরকার এইটা যদি জানতে পারতাম তাহলে আমার সামনের দিন গুলি চলাটা খুব সহজ হতো এসব ভাবতেছে তখনি আলের দাদী বলে।
দাদী:- আল কোহিনুর কাছে তুই নিজে গিয়ে একবার ক্ষমা চেয়ে নিস। মেয়েটির সাথে সত্যি অন্যায় করা হয়ছে? আমরা নিজেরা ডেকে এনে এমন অপমান করাটা ঠিক হয়নি।
মালা:- সত্যি বলতে কোহিনুর আপু রাজি ছিলো না আমি অনেক রিকুয়েস্ট করার পর ওনি রাজি হয়েছে। আর ওনার সাথে এত বাজে ব্যবহার করাটা আমাদের সত্যি উচিত হয়নি তখনি আল বলে।
আল:- সব দোষ ওর সিমির দিকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে বলে। ওর জন্য আজ সবকিছু নষ্ট হয়ছে।
সিমি:- আহারে বেচারা আরেকটা বিয়ে করতে পারেনি বলে সব দোষ এখন আমার? আমার সাথে আপনার ডির্ভোস হয়নি এখনো তাও আপনি বিয়ে করার জন্য রাজি হয়ে গেলেন? ঐ মেয়েটাকে না বলে আপনাকে বলা উচিৎ ছিলো তাহলে গিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক লাগতো। তখনি আল গাড়ীটা থামিয়ে বলে
আল:- তুমি এই মুহুর্তে গাড়ী থেকে নামো।
সিমি:- এই গাড়ীতে আপনার যেমন অধীকার আছে ঠিক আমারও অধীকার আছে। আমি চাইলে আপনাকে গাড়ী থেকে নামিয়ে দিতে পারবো কিন্তু নামাবো না কারণ আমি গাড়ী চালাতে পারি না। সিমির কথা শুনে মালা দাদী আল তিনজনে ওর দিকে তাকিয়ে আছে তখনি দাদী বলে।
দাদী:- সিমি তোমার মাথাটা ঠিক আছে নাকী কোনো সমস্যা হয়ছে?
সিমি:- দাদী মা সব ঠিক আছে সময় হলে সত্যি সত্যি দেখবেন ওনাকে গাড়ী থেকে নামিয়ে দিবো তখনি আল রেগে গিয়ে সিমিকে গাড়ী থেকে নামিয়ে দিতে চাই তখনি ওর দাদী আর মালা আলকে থামিয়ে দেয়। আল ওর দাদী কথা কিছুটা মানে সেইটা ছোট থেকে তাই সিমিকে গাড়ী থেকে নামায়নি। সবাই চুপচাপ বসে আছে কেউ কারো সাথে কোনো কথা বলেনি। কিছুকক্ষণের মধ্যে ওরা বাড়ীতে এসেছে।
আল:- দাদী তোমরা ভেতরে যাও আমি গাড়ীটা রেখে আসতেছি। ওর দাদী ঠিক আছে বলে ভেতরে গেছে সিমিকে সাথে নিয়ে। ঝিনুক সোফায় বসা ছিলো সিমিকে দেখে বসা থেকে দাঁড়িয়ে বলে।
ঝিনুক:- মালা তোরা না আলের জন্য বৌ দেখতে গেছিলি?
মালা:- হ্যা দেখতে তো গেছিলাম কিন্তু সেখানে অনেক কান্ড ঘটে গেছে আর ঐখানে সিমি ভাবির সাথে আমাদের সবার দেখা হয় আর ওনি নিজে থেকে আমাদের সাথে এই বাড়ীতে এসেছে। তখনি আলের বাবা মা ওর ভাবি এসে দেখে সিমি আনোকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সিমিকে দেখে ওরা সবাই থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তখনি আলে ভাবি বলে।
ভাবি:- সিমি তুমি আবার এসেছো? তুমি নাকী আর কখনো এই বাড়ীতে আসবে না তাহলে আবার কেনো এসেছো?
ঝিনুক:- টাকার লোভ দেখছে সেইটা কি করে ভুলতে পারবে? আর তাছাড়া এত দামী দামী গহনা শাড়ি লেহেঙ্গা পাবে কোথায়? পড়নের থ্রী পিছটার দিকে তাকিয়ে দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন কেনো এসেছে?
সিমি:- আমার বাড়ীতে আমি আসবো না যাবো সেইটা আমার ব্যপার আপনারে বলার কে? আমার যখন ইচ্ছে হবে আসবো আবার যখন ইচ্ছে হবে চলে যাবো।
ঝিনুক:- তোমার বাড়ী মানে? এইটা তোমার বাড়ী নয় তোমার স্বামীর বাড়ী ছিলো আগে কিন্তু যেই তুমি এই বাড়ী ছেড়ে চলে গেছো সেই তুমি এই বাড়ীর কেউ না। তখনি সিমি রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে।
সিমি:- সময় হলে জানতে পারবেন এই বাড়ীটা কার এই কথা বলেই সিমি আনোকে কোলে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উপরে চলে গেছে আলের রুমে। ঠিক তখনি ভাবি বলে।
ভাবি:- দেখছেন মা বাবা ওর কতবড় সাহোস স্বামীর বাড়ীকে নিজের বাড়ী বলে দাবি করে?
মা:- বড় বৌ থামো এসব বাদ দাও। সিমি যেহেতু এসেছে সেহেতু ওকে কেউ কিছু বলার দরকার নেই। আমি জানি সিমি আলকে প্রচন্ড ভালোবাসে। সিমির বাড়ীতে আসা নিয়ে আলকে কেউ কোনো রকম প্রশ্ন করা দরকার নেই কথাটা সবার যেনো মনে থাকে? তখনি আল বাড়ীর ভেতরে এসেছে তখন কেউ কিছু বলেনি আল সোজা নিজের ঘরে চলে গেছে। ঘর গিয়ে দেখে আনোকে ঘুম পাড়াচ্ছে সিমি। তখনি আল সিমির হাত ধরে টেনে বারান্দায় নিয়ে যায়।
সিমি:- কি হলো আমাকে বারান্দায় আনছেন কেনো?
আল:- তুমি আবার কেনো এসেছো?
সিমি:- দেখুন বার বার এক কথা বলতে পারবো না। আর তাছাড়া আমার বাড়ীতে আমি এসেছি তাতে আপনার কি?
আল:- মানে তোমার বাড়ী হলো কি করে?
সিমি:- একটু পিছনে গিয়ে চিন্তা করে দেখুন কি করে আমার বাড়ী হলো। শুধু এই বাড়ীটা না আপনার নামে যত ব্যাংক ব্যালেন্স এবং যত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে সবকিছু এখন আমার নিজের নামে সিমি রহমান আমি সবকিছুর মালিক।
আল:- এই তোমার মাথায় কি কোনো গন্ডগোল হয়েছে? নাকী কোনো কিছু খেয়ে এসেছো? তখনি সিমি ঘরে এসে খাটের নিচে থেকে একটা কাগজ বের করে আলের কাছে দিয়ে বলে।
সিমি:- নেন কাগজটা পড়েন আর নিচের সাইনটা দেখেন?
আল:- কিসের কাগজ?
সিমি:- আপনি পড়েন নাকী পড়তে পারেন না?
আল:- বেশি চালাকি করোনা এর পরিনাম খুব ভয়ংকর হবে।
সিমি:- এত কথা না বলে কাগজটা পড়েন আর তখন বুঝতে পারবেন কার ভয়ংকর পরিনাম হবে। তখনি আল কোনো কথা না বলে কাগজের লিখা গুলি পড়তে আরম্ভ করেছে।

কাগজের লিখা:- আমি আল ইসলাম আমার যাবতীয় সম্পত্তি, ব্যাংক, ব্যালেন্স এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ সবকিছু আমার স্ত্রী সিমি রহমানের নামে লিখে দিলাম। এর জন্য আমাকে কেউ কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ করেনি। আর আজ থেকে আমি আমার স্ত্রীর যাবতীয় সব কথা মেনে চলবো। আমার স্ত্রীর কথার উপরে আমি কোনো রকম কথাবার্তা বলবো না। আমার স্ত্রী যে হুকুম দিবে আমি সবকিছু মাথা পেতে মেনে নিবো। আমি চাইলেও নিজে থেকে আমার স্ত্রীকে নিজে থেকে ডির্ভোস দিতে পারবো না। তবে আমার স্ত্রী চাইলে আমাকে ডির্ভোস দিতে পারবে।
উপরের সমস্থ লিখা গুলি আমি বারবার পড়ে বুঝে সুস্থ অবস্থায় সজ্ঞানে সবকিছু চিন্তা ভাবনা করেই এই মর্মে আমি কাগজে সাইন করেছি। আমি লিখাটা পড়ে কাগজের নিচে তাকিয়ে দেখি আল ইসলামের দুইটা সুন্দর ভাবে সাইন করা আছে। তখনি আল সিমির দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আল বলে।
আল:- সিমি এসব কি লিখেছো কাগজে? আর এই কাগজের কোনো মূল্য নেই এইটা আদালতে গ্রহন যোগ্য বলে প্রমান হবে না।
সিমি:- ওমা আমি কখন লিখেছি সেটা তো আপনি লিখে পড়ে নিজের হাতে সাইন করে দিয়েছেন মনে নেই আপনার? আর কি বলছেন আদালতে গ্রহন যোগ্য হবে না। আমি কাগজটা উকিলের মাধ্যমে লিখিয়েছি ওনি বলেছে আদালতে মামলা করলে এই কাগজটাই যথেষ্ট হবে সব কিছুর প্রমানের জন্য। যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে আপনার উকিলকে ফোন করে জিজ্ঞেস করেন।
আল:- মনে আছে বলেই কাগজটা ছিড়ে টুকরা টুকরা করে বারান্দা দিয়ে বাহিরে ফেলে দিয়েছে আর একট বড় করে হাসি দিয়ে বলে। এবার কি করবে কাগজ নেই কোনো প্রমান নেই এখন আমি যা বলবো তাই করবে? তখনি সিমি গিয়ে আরো কিছু সেইম কাগজ এনে আলের হাতে দিয়ে বলে।
সিমি:- এমন একশো ফটোকপি আছে আর তাছাড়া অর্জিনাল কাগজটা এমন জায়গা মত রেখেছি আপনি জীবনেও খুঁজে পাবেন না। এখন থেকে আমি যা যা বলবো তা তা করবেন। তবে এই কাগজের কথা আমি কাওকে বলবোনা আর আপনিও কাওকে বলবেন না। যদি বলেন তাহলে তার বিনিময়ে আপনাকে শান্তি প্রদান করিতে বাধ্য হবো। কথা গুলি যতটা মনে রাখবেন ততটাই আপনার জন্য ভালো হবে এখন আমি ফ্রেশ হবো বলেই সিমি ওয়াশরুমে চলে গেছে আর আল মাথায় হাত দিয়ে বলে কেনো যে খালি সাদা কাগজে সাইন করতে গেলাম এখন নিজেই নিজের পায়ে কুঁড়াল মেড়ে দিয়েছি। ঠিক তখনি সিমি ওয়াশরুমের ভেতের থেকে ডেকে বলে আমার কাপড় গুলি একটু আলমাড়ি থেকে বের করে দিয়ে যান তো।

চলবে….

গল্প:-#তুমি_চাইলে_যেতে_পারো (পর্ব:-১৬)
লিখা:- AL Mohammad Sourav

সাদা কাগজে সাইন করে নিজের পায়ে নিজেই কুঁড়াল মেড়েছি এখন কি করে এর থেকে মুক্তি পাবো সেই চিন্তা বসে বসে করছি তখনি সিমি ওয়াশরুম থেকে ডেকে বলে আমার কাপড় গুলি আলমাড়ি থেকে একটু দিয়ে যান। সিমির কথা শুন মেজাজ একদম খারাপ হয়ে গেছে। ওর ডাক শুনেও না শুনার মত করে বসে বসে চিন্তা করতে আরম্ভ করেছি কি ভাবে এর সমাধান করা যায় তখনি সিমি আবার ডেকে বলে।
সিমি:- আমি দশ পর্যন্ত গননা করবো এর মধ্যে যদি আপনি কাপড় গুলি না দিয়েছেন তাহলে এর পরিনাম কিন্তু খুবই বাজে হবে বলে গননা করতে আরম্ভ করেছে। আল দিশা না পেয়ে তাঁড়াতাড়ি করে আলমাড়ি থেকে কাপড় গুলি খুলে দরজার সামনে গেছে আর সিমি আট পর্যন্ত গননা করে ফেলছে আর সাথে সাথেই আল দরজায় কন্ক করেছে।
আল:- এই নাও তোমার কাপড় দরজাটা খুলো সিমি সাথে সাথে দরজাটা খুলেছে। আল কাপড় হাতে দাঁড়িয়ে আছে। সিমি কাপড় গুলির দিকে তাকিয়ে বলে।
সিমি:- আমি আজ লেহেঙ্গা পড়বো আপনি এক কাজ করেন সাড়িটা রেখে লেহেঙ্গা নিয়ে আসুন। আল নিজের দাতে দাত চেপে সিমির দিকে একটু রাগি চোখে তাকিয়ে আবার গিয়ে লেহেঙ্গা এনেছে তখনি বলে। আরে এখন তো রাত হয়ে গেছে থাক শাড়িটাই এনে দেন আমি শাড়িটা পড়বো এবার আল রেগে গেছে।
আল:- দেখো সিমি তুমি কিন্তু বেশী বেশী করছো? এর পরিনাম কিন্তু খুবই খারাপ হবে তোমার জন্য।
সিমি:- খারাপ না ভালো সেটা সময় বলে দিবে তবে এখন আমি যা বলবো আপনাকে তাই করতে হবে। যদি না করেন তাহলে আমি আপনার নামে আদালতে মালমা করে সব সম্পত্তি নিজের নামে নিয়ে আপনাকে ডির্ভোস দিয়ে দিয়ে আপনি সহ বাড়ীর সবাইকে রাস্থায় নামিয়ে দিবো কিন্তু।
আল:- আমি জানি তুমি এমন কিছু করবে। তবে চিন্তা করোনা এর প্রতিশোধ আমি নিবো তুমি আবার কেনো এই বাড়ীতে এসেছো এইটা তো আমি বুঝে গেছি।
সিমি:- বুঝতে পারার জন্য ধন্যবাদ এখন কথা না বাড়িয়ে শাড়িটা এনে দিন আমি ফ্রেশ হবো। কতক্ষণ এমন ভাবে ভেজা কাপড়ে দাঁড়িয়ে থাকবো। যখনি সিমি ভেজা কাপড়ের কথা বলছে তখনি আল সিমির দিকে একটু তাকিয়েছে। সিমি অসম্ভব সুন্দর লাগছে আল তাকিয়ে আছে তখনি সিমি কিছুটা মুচকি হেসে বলে। কি হলো এমন ভিবে তাকিয়ে কি দেখছেন? তখনি আল কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেছে। আল আর কোনো কথা না বলে সিমিকে শাড়িটা এনে দিয়ে সোজা বারান্দায় চলে গিয়েয়ে পায়চারি করছে কি ভাবে এর থেকে বের হতে পারবে।

আর ঐদিকে শাওন একা বাড়িতে গেছে শাওনকে একা দেখে তার বাবা মা দুজনে জিজ্ঞেস করছে সিমি কোথায়?
শাওন:- সিমি আল সাহেবের সাথে ওনার বাড়িতে চলে গেছে।
শাওনের মা:- মানে? কিন্তু কেনো? আর তাছাড়া আল তো বলেছে সিমি যদি কখনো যেতে চাই তাও ওকে ফিরিয়ে নিবে না। তাহলে ও আবার কেনো সিমিকে সাথে নিতে রাজি হলো?
শাওন:- সিমি জানতে পারছে আমাকে আল সাহেব দশ লক্ষ টাকা দিবে সিমিকে বিয়ে করার জন্য।
শাওনের বাবা:- এই কথাটা সিমি জানতে পারলো কি করে? নাকী আল সাহেব নিজেই সিমিকে বলেছে?
শাওন:- আমার মনে হয় না ওনি সিমিকে এই ব্যপারে কিছু বলবে। কিন্তু সিমি এই কথাটা জানতে পারলো কি করে সেইটা ভাবতেছি?
শাওনের মা:- তাহলে এখন কি করবি?
শাওন:- সিমিকে দেখে মনে হয়না ও আর আমাকে বিয়ে করবে? আমার প্রতি ওর যে ভালোবাসাটা ছিলো এখন সেইটাও নেই।
শাওনের বাবা:- নিশ্চয় তই সিমির সাথে খারাপ আচরণ করেছিস আর তার জন্যই সিমি চলে গেছে।
শাওন:- আমার সাথে যদি ওরা দুজনে গেইম খেলে থাকে তাহলে আমি এর পরিনাম খুব খারাপ করবো।
শাওনের মা:- হয়ছে এখন আর বড় কথা বলতে হবে না সোনার ডিম পাড়া হাঁসটাকে হাত ছাড়া করেছো আর এখন এসেছো বড় বড় কথা বলতে? এই কথা বলেই ওনি চলে গেছে সাথে ওর বাবাও।

এদিকে সিমি ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে চুপি মেরে দেখে আল রুমে আছে কি না! নাহ কোথাও দেখা যাচ্ছে না সিমি একটু সাজগুজ করে নিচে গেছে তখনি আলের দাদী বলে।
দাদী:- বাহ নাত বৌ তোমাকে তো আজ খুব সুন্দর লাগছে। তুমি সবসময় এমন ভাবে সুন্দর করে সেজেগুজে থাকবে।
সিমি:- দাদী মা আপনার মন ভালো তাই একটু বাড়িয়ে বলেছেন। সত্যি বলতে এতটাও আমাকে সুন্দর লাগছে না তখনি মালা এসে বলে।
মালা:- কে বলে আমার ভাবিকে সুন্দর লাগে না? আমার ভাবি তো একদম পরীদের মত সুন্দর। তখনি আলের বড় ভাবি এসেছে।
ভাবি:- মালা আজ পর্যন্ত আমাকে একদন প্রশংসা করেছো বলে তো মনে পড়ছে না আর সিমির এত প্রশংসা করছো? তখনি ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- ভাবি মন খারাপ করোনা ময়র যখন পাখা মেলে তখন তাকে সুন্দর লাগে কিন্তু যখন পায়ের দিকে সে নিজেই তাকাই তখন তাঁর সব অহংকার পতন হয়ে যায়। কিছুদিন যাক তখন দেখবে সব প্রশংসা শেষ হয়ে যাবে। তখনি আলের মা এসেছে আর সবাই চুপচাপ হয়ে গেছে।
মা:- রাতে রান্না তো আজ এখনো হয়নি লতা একটু বাহিরে গেছে ফিরতে দেরী হবে। এখন রান্নাটা করা দরকার কে করবে রান্না তখনি ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- আলের বৌয়ের হাতের রান্না তো আমরা আজ অব্দি খেয়ে দেখিনি। তাই আমি বলি আলের বৌ আজ রাতের খাবার তৈরি করুক।
ভাবি:- হ্যা আমারো মনে হয় আর তাছাড়া আমি তো সবসময় লতার সাথে রান্নাঘরে পড়েই থাকি আজ সিমি করুক।
মা:- সিমি রান্না করবে কিন্তু সিমি তো এই বাড়ীর রান্না কখনো করেনি আর আমরা সবাই কেমন খাবার খায় সেটা ও জানে না সিমি এত রান্না করতে পারবে না।
দাদী:- বৌমা একদম ঠিক বলেছো এর থেকে ভালো আজ রান্নাটা ঝিনুক আর বড় বৌ মিলে করে নেক।
ঝিনুক:- মানে আমি রান্না করবো? তখনি সিমি বলে।
সিমি:- মা আমি পারবো শুধু রান্না ঘরে কোথায় কি রাখা আছে সেইটা বলে দিলে হবে।
ভাবি:- সেটা আমি তোমাকে দেখিয়ে দিতেছি এসো আমার সাথে বলেই সিমিকে রান্নাঘরের সবকিছু দেখিয়ে দিয়ে ওনি বেরিয়ে গেছে আর মনে মনে বলছে সবার প্রশংসা আজ বুঝবে আমার থেকে বেশি প্রশংসা পাওয়ার কেমন মজা।
সিমি:- সবকিছু তো ঠিকঠাক আছে কিন্তু বাড়ীর সবাই কেমন ঝাল পছন্দ করে? তবে আমি যখন খেয়েছি তখন তো মুটামুটি ঝাল ছিলো তরকারিতে। আচ্ছা রান্নটা শুরু করি সিমি সাড়ির আঁচল পেচিয়ে রান্না করতে আরম্ভ করেছে আর আল এই সুযোগে সবটা ঘর তন্নতন্ন করে খোঁজতেছে সিমি অর্জিনাল কাগজটা কোথায় রেখেছে। খাটের নিচে খাটের চাদর কোনা সহ সবকিছু তছনছ করে ক্লান্ত হয়ে বসে নিজের চুল গুলি টেনে নিজেই বসে আছে তখনি সিমি সারা শরীর ঘামে ভেজা অবস্থায় এসেছে। ঘরটাকে এ্যালো মেলো দেখে সিমির মাথায় র’ক্ত চেপে যায় আর তখনি বলে।
সিমি:- ঘরটার এই অবস্থা হলো কি করে? তখনি চেয়ে দেখে সিমি এসেছে আর সাথে সাথে আল উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে ছিলো তখনি সিমি ও-র হাতটা ধরে বলে। কোথায় যাচ্ছেন আপনি?
আল:- যেখানে খুশি সেখানে তোমাকে বলতে যাবো কেনো?
সিমি:- আপনি যেখানে খুসি সেখানে যান এটা জানার অধীকার আমার আছে। আর আজকের পর থেকে আপনি ওয়াশরুমে গেলেও আমার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে যাবেন বলে দিলাম।
আল:- দেখো তুমি কিন্তু বেশি করতেছো?
সিমি:- সবে তো শুরু করেছি। সবকিছু তো পরেই আছে এখন ঘরটাকে পরিষ্কার করুন আমি ওয়াশরুমে যাচ্ছি বের হয়ে যেনো দেখি ঘরটা একদম মানুষের থাকার উপযোগী হয়েছে।
আল:- আমার ঘর আমি যেমন খুশি তেমন করে রাখবো তোমার যদি ভালো না লাগে তাহলে অন্য ঘরে গিয়ে থাকো তখনি সিমি বলে।
সিমি:- ঘরটা আগে আপনার ছিলো কিন্তু এখন ঘরটা আমার শুধু ঘরটা না এই বাড়ী আর আপনার ব্যাংক ব্যালেন্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যা কিছু আছে সব আমার। আপনার ভাগ্য ভালো আমি আপনাকে এখানে থাকতে দিয়েছি। কথা কম বলে ঘরটাকে যত দ্রুত সম্ভব গুচিয়ে নিন আমি ওয়াশরুম থেকে হাত মুখ ধুয়ে এসেই যেনো ঠিকঠাক দেখি।
আল:- ঠিক আছে আমিও দেখে নিবো।
সিমি:- সবসময় সামনে থাকবো যখন খুশি দেখতে পারবেন। এখন যা বলেছি তা করেন বলে সিমি চলে গেছে আর আল সবকিছু গুচানো শুরু করে দিয়েছে। সিমি হাত মুখ ধুয়ে বেরিয়ে দেখে কিছুটা গুচানো হয়ছে। আল রেগে আছে সেইটা বুঝতে পারছে তাও আবার রাগানোর জন্য বলে। এতকক্ষন লাগে একটা ঘর পরিষ্কার করতে বলে যখনি সামরে দিকে যেতে ছিলো তখনি পা পিছলে সোজা আলের বুকে এসে পড়েছে। আল কোনো মতে সিমিকে ধরেছে সিমি চোখ গুলি বন্ধ করে রাখছে আল সিমিকে জড়িয়ে ধরে রাখছে কিছুকক্ষণ পর সিমি আলকে ছেড়ে দিয়েছে আর তখনি চেয়ে দেখে নিচে তেলের বোতল পড়ে আছে। ঠিক তখনি সিমি তেলের বোতলটা হাতে নিয়েছে আর আল সোজা দৌড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেছে। আলের এমন কান্ড দেখে সিমি নিজেই হেসে দিয়ে মনে মনে বলে পাগল একটা। আর আল সোজা ছাদে চলে গেছে আর মনে মনে শুধু সিমিকে জড়িয়ে ধরার কথাটা মনে পড়ছে আর হাসতেছে কিছুকক্ষণ একা একা হেসে নিচে এসে দেখে বাড়ীর সবাই বসে গল্প করছে।
মা:- আজ সবার জন্য সারপ্রাইজ আছে।
বাবা:- কি সারপ্রাইজ?
মা:- আজ এই বাড়ীতে সিমি প্রথম রান্না করেছে।
বাবা:- তাহলে তো আজ আগে বাগে খেতে হবে।
মা:- হ্যা আমি বলতেছি তাই করেন। বাড়ির সবাই এক সাথে খাবার টেবিলে বসেছে সাথে সিমিও এসেছে। সবাই অনেক আগ্রোহ নিয়ে বসেছে। সিমি আজ নিজেই সবাইকে খাবার পরিবেষণ করেছে। এক এক করে সবাই খাবার মুখে দিতেছে আর সবাই কেমন করে উঠছে সবাই কেমন চুপচাপ কেউ কোনো কথা বলছে না তিন রকমের তরকারি সব গুলা এক এক করে সবাই দেখছে কিন্তু কেউ খাচ্ছে না তখনি ঝিনুক বলে।
ঝিনুক:- এই বুঝি তোমার হাতের রান্না? কি রান্না করেছো তুমি? কোনোটাতে লবন বেশি কোনোটাকে মরিচ বেশি আবার কোনোটাতে হুলুদ বেশি দিয়ে রেখেছো? তোমার বাবা মা কি তোমাকে রান্না করাটা শিখায়নি?
মা:- আহা ঝিনুক এমন বাবে বলছিস কেনো? হয়তো ওরা এমন ভাবে রান্না করে খায়ছে। সিমি তুমি রান্না সময় এই গুলা খেয়ে দেখোনি?
ঝিনুক:- মা তুমি এদানিং সিমির হয়ে একটু বেশি দরধ দেখাচ্ছো?
বাবা:- ঝিনুক প্রথম বার রান্না করেছে তাই এমন হয়ছে আস্তে আস্তে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে।
ঝিনুক:- কেমন ঠিক হবে সেটা তো বুঝতে পারছি। তখনি ভাবি বলে উঠে।
ভাবি:- তুমি যেইটা পারোনা সেইটা করতে এসেছো কেনো? তুমি আমাকে বলতে ভাবি আমি রান্না করতে পারিনা আপনি একটু কষ্ট করে রান্নটা করে নিন তাহলে আমি রান্না করে নিতাম। এক এক করে সবাই হাত ধুয়ে উঠে চলে গেছে আল সবার কথা শুনে চুপচাপ চলে গেছে। রুমে এসে দেখে আনো এখনো ঘুমিয়ে আছে আনোকে আর ঘুম থেকে উঠায়নি বসে বসে নিজের মোবাইলে চ্যাটিং করছে তখনি সিমি এসেছে। সিমি মনটা খারাপ করে এসে শুয়ে পড়েছে তখনি আল বলে।
আল:- খুব কষ্ট হচ্ছে তাই না এত ভালো রান্ন করার পরেও সবার থেকে কথা শুনতে হলো? তখনি সিমি লাফ মেরে উঠে বলে।
সিমি:- তাঁর মানে আপনি এসব কিছু করেছেন? তখনি আল ছোট করে হেসে বলে।
আল:- তুমি কি মনে করেছো আমি তোমার শুত্রু? আসলে আমি ছাড়া এমন অনেকেই আছে যারা তোমাকে এই বাড়িতে দেখতে পছন্দ করে না। তুমি নিজেকে সবার সামনে যতটা ভালো সাজতে যাবে ততটাই খারাপ হবে।
সিমি:- তাহলে কি ঝিনুক আপু বা ভাবি করেছে?
আল:- আমি কি করে বলবো? তবে একটা কথা কি তোমার হাতের রান্নটা খুব দারুন হয়ছে তখনি সিমির মুখে হাসি ফুঁটেছে আর আল আবার বলে। সত্যি তোমার হাতের রান্নার কোনো জবাব নেই আমার জীবনেও এমন বাজে রান্না কোনো দিন খায়নি সাথে সাথে সিমি রেগে গিয়ে ওল্টো দিকে শুয়ে মনে মনে ভাবছে ঠিক আছে আমিও সবকিছু দেখে নিবো বলে শুয়ে পড়েছে।

সকালে ঘুম থেকে উঠে যার যার মত করে দুজনে ফ্রেশ হয়েছে তখনি আল সিমি তুমি আমাকে সত্যি করে একটা কথা বলবে?
সিমি:- হ্যা বলবো তবে তাঁর আগে আমার একটা প্রশ্ন আছে? আপনি সেই প্রশ্নের উত্তরটা দিতে হবে?
আল:- আগে আমি বলেছি আমার উত্তর দাও তখনি সিমি বলে।
সিমি:- আপনার কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি বাধ্য নয় তবে আমি যা জিজ্ঞেস করবো আপনি সবকিছু বলতে বাধ্য। এবার বলেন শাওনের সাথে আপনার কি কথা হয়ছে আর শাওন আমাকে বিয়ে করার জন্য আপনি দশ লক্ষ টাকা দিতে চাইলেন কেনো? আল কেমন চুপচাপ হয়ে গেছে আর কোনো কথা না বলে আর বেরিয়ে গেছে তখনি সিমিও ওর পিছনে হাটা দিয়েছে তখনি আল বলে।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে