তুই আমার ২ পর্বঃ১৬

0
2015

#তুই আমার ২
#পর্বঃ১৬
#Tanisha Sultana

কি হলো বলো না

“নোন তুই একটুও পাঁজি না যারা তোকে পাঁজি বলেছে তারা পাজি।

” ওহহ তাহলে আমাদের ভার্সিটির টিচারটা পাঁজি আর অভি কাকু পাঁজি

এখন জীম কি বলবে বুঝতে পারছে না।

অভির মা বলি

“মিষ্টি বসো না

” হ্যাঁ বসবো তার আগে বলো তোমার ছেলেটাকে বকবে

“ঠিক আছে বকবো। কিন্তু ও কি করেছে?

” আমাকে মোটা বলেছে। তুমিই বলো আমি কোথায় মোটা আমি তো পারফেক্ট

“হ্যাঁ তাই তো

তখন মিষ্টি ফোন আসে।
” বাপি আমি একটু বেরচ্ছি একটু পরেই চলে আসবো।

মিষ্টি তারাহুরো করে বেরিয়ে যায়।

আবির রুশা জীম রাতে ডিনার করে বাসায় ফেরে।
মিষ্টি নিজের রুমে কানে হেডফোন দিয়ে শুয়ে শুয়ে গান শুনছিলো। তখন আবির রুশা আসে। আবির মিষ্টির পাশে বসে মাথায় হাত দেয়। মিষ্টি হেডফোন খুলে উঠে বসে বলে

” একি তোমরা এই সময় আমার ঘরে। ওহ বুঝতে পারছি দাভাইয়ের বিয়ে ডেটটা বলতে এসেছো তাই তো।

“হ্যা সাথে আরও একটা কথা বলতে এসেছি।

মিষ্টি উৎসাহ নিয়ে জিজ্ঞেস করে

“কি কথা বাপি?

” শুক্রবার তোমার আর তোমার দাভাইয়ের বিয়ে।

আবিরের কথা শুনে মিষ্টি আকাশ থেকে পড়ে। বড় বড় চোখ করে আবিরের দিকে তাকায়। মিষ্টির অবস্থা বুঝতে পেরে রুশা বলে

“সোনা প্লিজ বোঝার চেষ্টা করো

” আমি সব বুঝেগেছি মামনি। আমি এই বিয়েটা করবো

গম্ভীর হয়ে মিষ্টি বলে। মিষ্টির মুখে এই কথা শুনে আবির আর রুশা খুব খুশি হয়। কিন্তু সব সময় হাসিখুশি থাকা মিষ্টির এমন গম্ভীর মুখ দেখে ওদের খুশি চলে যায়।

“মিষ্টি তুমি কি খুশি না??

মিষ্টি আবিরের বুকে মাথা রেখে বলে

” আমার বাপি আর মামনি খুশি হলে আমিও খুশি

“মিষ্টি ছেলেটা

রুশাকে থামিয়ে
” ছেলের বিবরণ শুনবো না। একদম বিয়ের পরে দেখে নেবো।

রুশা আর আবির হেসে দেয়। তারপর মিষ্টির সাথে কিছুখন গল্প করে চলে যায়। আবির রুশা চলে যাওয়ার পরে মিষ্টি দরজা বন্ধ করে দেয়। তারপর চার বছর আগের পুরোনো মোবাইল হাতে নিয়ে গ্যালারি থেকে অভির ছবি বের করে

“অভি সত্যি তোমায় খুব ভালোবাসতাম। চার বছর আগে তোমার থেকে দুরে যাওয়ার জন্য দেশ ছাড়লাম তবুও একটা সেকেন্ডের জন্য তোমায় ভুলতে পারি নি। আজও বুঝলাম না আমার দোষটা কি ছিলো। রিনি তো তোমায় ভালোবাসে না তবুও রিনিকে ভালোবাসো। আর আমি তোমায় এতো ভালোবাসি আমার ভালোবাসাটা তুমি দেখেও না দেখার ভান করো। কেনো অভি কেনো।

মিষ্টি কান্না করে। তারপর চোখ বলে

” না অভি আমি তোমাকে রিনিকে নিয়ে ভালো থাকতে দেবো না। কিছুতেই না। তুই আমার শুধু আমার।

খুব সকালে মিষ্টির ঘুম ভেঙে যায়। হালকা হালকা শীত তাই গায়ে একটা পাতলা চাদর জড়িয়ে বাড়ির সামনে বাগানে হাটতে যায়। বাগানে অনেক রকমের ফুল ফুটেছে। মিষ্টি কয়েকটা বেলিফুল ছিড়ে চোখ বন্ধ করে দোলনায় বসে পড়ে।
কিছুখন পরে পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মিষ্টি চোখ খুলে। চোখ খুলে দেখে অভি দাঁড়িয়ে আছে।
অভি মিষ্টির পাশে বসতে বসতে বলে

“কি বেপার এতো সকালে এখানে আবার মুখটাকে পেচার মতো করে রেখেছো কাহিনি কি

মিষ্টি একবার অভির দিকে তাকিয়ে বলে

আচ্ছা ধরো আমি কৃশকে ভালোবাসি আর কৃশ আমাকে না অন্য একটা মেয়েকে ভালোবাসে কিন্তু সেই মেয়েটা কৃশকে ভালোবাসে না জাস্ট নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে। এটা আমি জানি এখন আমার কি করা উচিৎ

” কৃশকে সাবধান করা উচিৎ

“হুম সাবধান করা উচিৎ। কিন্ত সাবধান করার পরে ও আমাকে উল্টো ভুল বুঝলো তখন

” তখন তোমার ওদের মাঝখান থেকে বেরিয়ে আশা উচিৎ। ওদের যা ইচ্ছা করুক কৃশ পরে বুঝতেই পারবে

“হুমম

” আমি ভাবছি ?

“কি?

” ইডিয়েট টা এমন কথা বলছে

“সব সময় হাসিখুশি থাকি বলে ভাবো আমার জীবনে কোনো গল্প নেই। জানো মানুষ কখন সব চেয়ে বেশি হাসে? যখন সে সব থেকে বেশি কষ্টে থাকে।

মিষ্টির কথাগুলো অভির খুব খারাপ লাগছে। কি বলবে বুঝতে পারছে না।

” আচ্ছা মিষ্টি তুমি কৃশকে খুব ভালোবাসো

“নাহহ। কৃশ জাস্ট আমার প্রয়োজন।

” তাহলে ওকে এমন ঘোরাচ্ছ কেনো?

“তুমিও তো ঘুরছো

” মানে

“কিছু না। কাল আমার গায়ে হলুদ

” তুমি বিয়ে করছো

“হ্যাঁ। তোমরা কবে বিয়ে করবে??

” তোমরা চলে যাওয়ার কিছুদিন পরেই বাসায় আমার আর রিনির কথা বলি। কেউ রাজি না। বাবা তো বলেই দিয়েছে আমি রিনিকে বিয়ে করলে বাবার একটু সম্পত্তিও দেবে না আমাকে। তেয্যপুএ করে দেবে।
আমি রিনিকে বলেছিলাম বাবার টাকা পয়সা আমার চাই না। আমি রিনিকে নিয়েই ভালো থাকবো। কিন্তু রিনি রাজি না। ও বলেছে বাবা যেদিন তার সম্পদের মালিক আমাকে বানাবে সেদিনই ও আমাকে বিয়ে করবে।
এভাবেই চলছে।

“ওহহহ বুঝলাম। আমি এখন যাই।

মিষ্টি চলে যায়। অভিও একটু বসে চলে যায়।

মিষ্টি নিজের রুমে সুয়ে আছে। মাইসা আসে মিষ্টির রুমে
” মিষ্টি তুমি শুয়ে আছো কেনো চলো মেহেদি লাগাবো

“আপি তুমি লাগাও না আমি লাগাবো না

” তা বললে তো হবে না মিষ্টি। বিয়ে কি আমার একা হচ্ছে না কি তোমারও তো বিয়ে চলো না

“ভালো লাগছে না।

” ওকে আমি জীমকে বলছি তুমি এবিয়েতে খুশি না।

মাইসা এক পা বাড়াতেই মিষ্টি লাভ দিয়ে উঠে বসে। মাইসা মিষ্টিকে উঠিয়ে একটু সাজিয়ে নিয়ে যায়।

খুব ভালোভাবেই মিষ্টি আর জীমের বিয়েটা শেষ হয়। মিষ্টি এখনও জানে না কার সাথে মিষ্টির বিয়ে হয়েছে। বরের নামটাও জানে না।
একটু আগেই মিষ্টি শশুর বাড়িতে এসেছে। মাথা উচু করে এখনো কারো দিকে তাকায় নি। এবাড়িতে আসার পর থেকেই মাথা নিচু করে আছে।

ফুলদিয়ে সাজানো একটা ঘরে মিষ্টিকে দুটো মেয়ে নিয়ে এসেছে। মিষ্টিকে খাটে বসিয়ে দিয়ে একটা মেয়ে বলে

“ভাবি তুমি এখানে বসো একটা পরেই ভাইয়া চলে আসবে। আমরা এখন যাই

” শুনো। আমার লাগেজটা কোথায় বলতে পারবে।

“তুমি এখানে থাকো আমরা নিয়ে আসি

মেয়ে দুটো চলে যায়। একটু পরে মিষ্টির লাগেজটা দিয়ে যায়। মিষ্টি লাগেজ খুলে স্কার্ট আর টিশার্ট নিয়ে বাথরুমে যায়

” ভাগ্যিস মামনিকে বলেছিলাম এগুলো দিয়ে দিতে না হলে যে কি হতো।

মিষ্টি সারারুম এলোমেলো করে ফেলেছে। এক জায়গায় লেহেঙ্গার একজায়গায় ওড়না, সারা রুমে গহনাগাটি ছড়িয়ে বিছানার ফুলগুলো ছিড়ে নিচে ফেলে খাটে ঘুমিয়ে পড়ে।

কিছুখন পরে একটা ছেলে রুমে এসে দেখে রুমের অবস্থা শেষ। মিষ্টিকে বকতে বকতে রুমটা পরিষ্কার করে মিষ্টির পাশে শুয়ে পড়ে।

সকালে পেটে কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে মিষ্টির ঘুম ভেঙে যায়। পাশে থাকা মানুষটাকে দেখে মিষ্টি জোরে চিৎকার করে

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে