তুই আমারই থাকবি part-30

0
1868

#তুই_আমারই_থাকবি?
#Esrat_Jahan?
#Part_30
!
‘আমি তো পড়াতেই পারি,তাই না?

না না,আপনাকে পড়াতে হবে না,আমিই পারি।

নাহ!আমাকেই পড়াতে হবে। তুমি তো আর পড়বে না!

কে বলেছে পড়বো না?আমি পড়ছি।

রিয়েলি?

হ্যাঁ হ্যাঁ!

যাক,তোমাকে বিশ্বাস করা যায়! সো পড়বে কখন?

বিয়ে শেষ হয়ে যাওয়ার পরে?

হুম,না মানে একটু পর!আপনি যান…..

বোকা পেয়েছ আমাকে?আমি যেই রুম থেকে বের হবো ওমনি তুমি দরজা বন্ধ করে বসে থাকবে?তাই না?

আমি অবাক হলাম,উনি আমার প্ল্যান জানলো কী করে?বললাম,না না!

যাইহোক, তুমি পাঁচমিনিটের মধ্যে রেডি হও!নইলে যা করার আমি করবো!

আরে আমি বলেছি তো পড়বো!

পড়বে যখন এখুনি পড়তে হবে।আর আমি কোথাও যাচ্ছি না।সো…. বুঝে নাও!

আর কোনো উপায় না দেখে আমি শাড়ি হাতে নিয়ে রেডি হয়ে এলাম।উনি আমাকে দেখেই বাঁকা হাসি দিয়ে বললেন,বাহ!

আমি ভেঙচি কেটে দিলাম।উনি চুলগুলো স্পাইক করতে করতে বললেন, আমরা হলাম বেষ্ট কাপল, তাই না?

আমি উনার দিকে ফিরে বললাম, মোটেও না।আপনার মতো লম্বু ছেলের সাথে আমার মতো ছোটখাটো মানুষকে ম্যাচ হয় না।সো আমরা বেষ্ট কাপল না।বেস্ট কাপল হলো আনিকা-সাদাফ ভাইয়া!আপু আর আরহাম ভাইয়া!আর আমি আর আপনি হলাম চুইক্কা কাপল!

উনি রেগে বললেন, মোটেই না!তুমি এক নম্বরের ফালতু মেয়ে।ডাফার একটা!যাও কচু গাছের সাথে গিয়ে ফাঁসি লেগে……

ওয়েট, ওয়েট!আপনি তো কচু চিনেন না।দেখতে চান?আসুন,দেখিয়ে আনি আপনাকে।

কচু গাছ?কোথায়?

এইতো আমাদের বাসার পিছনেই!চলুন।দাঁড়ান আগে একটু সাজগোজ করি!

নাহ!সাজগোজ করতে হবে না।এমনিতেই বেশী সুন্দরী লাগছে।

বললেই হলো নাকি?

হুম!একটু পর ভাইয়ার একটা ফ্রেন্ড আসবে,বুঝলে?ওই ছেলে এক নম্বরের খারাপ।মেয়ে দেখলেই ছোক ছোক করবে।তাই বলছি।তোমাকে দেখতে এখনই যা ড্যাশিং লাগছে তাতেই ওই ছেলে হার্ট এট্যাক করবে।আর সেজো না প্লিজ।জানি না ওই ছেলে সবসময় কেন আমার জিনিসের দিকে নজর দেয়।

আরহাম ভাইয়া কিছু বলে না?চলে কেন?

ভাইয়া জানে না!লণ্ডনে একবার এক মেয়ের সাথে খারাপ কিছু করার চেষ্টা করেছিলো আর আমার সামনে পড়ে যাওয়ায় আমি পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলাম ওকে।তারপর থেকেই ও আমার জিনিসের দিকে নজর দেয়।ভাইয়া এসব কিছুই জানে না!ভাবে,ও বুঝি ভালো ছেলে!

ওহহহ…..

যাইহোক, তুমি অতিরিক্ত ভুত্নী সেজো না!এমনিতেই পরী পরী লাগছে,বেশী সাজলে ভুত্নী-পেত্নী লাগবে এবার!

আমি উনার কথা শুনে হেসে দিলাম।উনি আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন কেমন করে! নেশা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে হঠাৎ করেই আচমকা উনি বলে উঠলেন,’আমি ভালোবাসি গো!’

আমি হাসি থামিয়ে…… বললাম,কি বললেন?

তুমি কি কালা?শুনতে পাওনি?নাকি আবার শুনতে চাইছো?

আপনি কি বলেছেন একটু আগে?

উনি ভ্রু কুঁচকে বললেন, ভালোবাসি বলেছি!

আমি ভাঙ্গা গলায় কাঁদো কাঁদো হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কাকে ভালোবাসেন?

বাসি একজনকে?বাট তোমাকে বলা যাবে না!

কেন?আমি তো আপনার ওয়াইফ!আমার জানার অধিকার আছে!রেগে….

উনি স্পাইক করা চুলগুলো নাড়াতে নাড়াতে বললেন,সো হোয়াট?আমার গার্লফ্রেন্ডের নাম তোমাকে বলবো কেন?ওর সাথে আজ রাতে ডেটে যাবো!কে তুমি?

আমি আচমকা রেগে উনাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিয়ে উনার উপর উঠে বসলাম।শার্টের কলার ধরে চিল্লিয়ে বললাম,কিহ?তুই কি বললি?তোর গার্লফ্রেন্ড আছে?তুই ওর নাম বলবি না আমাকে? ঘরে বউ রেখে তুই ডেটে যাবি?এতবড় স্পর্ধা তোর?

উনি আমাকে ছাড়াবার চেষ্টা করে বললেন,ওহহ…নো।তুমি আমার এত সুন্দর সাজগোজ নষ্ট করে দিলে?আমার বাবুটার সাথে আমি আজ ডেটে যাবো,ও কী ভাববে?

আমি দ্বিগুণ চিল্লিয়ে বললাম, কিহ?তুই তোর বাবুর সাথে আজ ডেটে যাবি?ওর জন্য এমন হ্যান্ডসাম সাজ দিয়েছিস?ওহহ.. তলে তলে তুই পরকীয়াও করিস,আর আমি জানি না?

তুমি কে?তোমাকে জানাবো কেন?

দাঁড়া, ঘরে বউ রেখে তুই ডেটে যাবি?তোর ডেটে যাওয়া বের করছি আমি।বলেই,স্পাইক করা চুলগুলো এলোমেলো করে দিলাম।তারপর দেখি,উনাকে এই এলোমেলো চুলে আগের চেয়েও বেশী হ্যান্ডসাম লাগছে।তাই আর কিছু না করে আমি মন খারাপ করে শার্টের কলার ধরে আগের মতোই বসে আছি।

উনার গার্লফ্রেন্ড আছে শুনে বুকের ভেতর কেমন চিনচিন ব্যথা অনুভূত হচ্ছিলো। উনি কেমন করে পারলেন আমাকে রেখে অন্য মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখতে?ঠিকই তো,কে আমি?এমন করছি কেন আমি?উনার মতো ছেলের জন্য আমি হয়তো পারফেক্ট না,উনি আরো ভালো কাউকে ডিজার্ভ করেন।আমার মতো ভ্যাবলি,বোকাসোকা মেয়ের সাথে উনাকে মানায় না।কিন্তু আমি যে উনাকে ভালোবেসে ফেলেছি!
উনাকে দেখেও তো মনে হয় যে উনিও আমাকে ভালোবাসেন।কিন্ত?হয়তো এটা উনার আমার প্রতি মোহ!আমার উচিৎ উনার কাছ থেকে দূরে থাকা!হুম সেটাই ভালো হবে,আমি কারো জীবনে উটকো ঝামেলা হয়ে থাকতে চাই না। অতিরিক্ত রাগ,ভয়,হতাশার চোটে আমি হঠাৎ ফুপিয়ে কেঁদে উঠলাম।

আমাকে কাঁদতে দেখে উনি চমকে জিজ্ঞেস করলেন,কাঁদছো কেন?কি হয়েছে? বলো আমাকে!

আমি কেঁদেই চলেছি।দু হাতে মুখ ঢেকে মাথা নিচু করে বসে আছি আর ফুপাচ্ছি!উনি আবারও জিজ্ঞেস করলেন,কি হয়েছে?চুপ করো প্লিজ!

হঠাৎ করেই উনি আমাকে উনার বুকে টেনে নিলেন।আমি উনার হার্টবিটের কাপুনি শুনতে পাচ্ছি।তবুও আমার কান্না থামছে না।

উনি ম্লান গলায় বললেন, কান্না থামাও প্লিজ।আমার কেমন অস্বস্তি ফিল হচ্ছে।এভাবে কাঁদতে হয় না সুগন্ধা!

আমি উনার কন্ঠ শুনে চমকিত হলাম।কিছু বলতে যাবো তখনই উনার গার্লফ্রেন্ড এর কথা মনে হলো। আর আমি ধাক্কা দিয়ে উনার বুক থেকে সরে আসলাম।মুখচোখ মুছে, কাপড় ঠিকঠাক করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম আমি।আর উনি আমার কান্ড দেখে হতবিহ্বল হয়ে আমার যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছেন।থাকুক না মানুষ নিজের মতো!যার যার জীবন তাকেও সাজাতে দেয়ার অধিকারটুকু দিতে হয়।নইলে জীবন হয়ে যায় একঘেয়ে, আনন্দহীন!আর আমি কাউকে বেঁধে রাখতে চাই না!

!

স্যরি গাইজ!অনেক কষ্টে এতটুকু দিলাম।আইডি নিয়ে ঝামেলায় আছি। প্লিজ বোঝার চেষ্টা করবেন সমস্যাটা। ঝামেলার কারণে এডিট করতেও পারিনি।রি-চেইক করতে পারিনি।ভুল ত্রুটি মাফ করা করবেন।অনেকের রিকুয়েষ্ট রাখতে গল্পটা এখানেই শেষ করলাম না।?

?দোয়া করবেন ঝামেলা যেন তাড়াতাড়ি শেষ হয়।

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে