গল্প:-নব_বধূয়া পর্ব:-(১০)

0
3358
গল্প:-নব_বধূয়া পর্ব:-(১০) লেখা_AL_Mohammad_Sourav !! আমি দৌরে তসিবার দিকে গেছি দেখি ঠোট কেটে রক্ত পড়ছে। তসিবা নিছে পড়ে আছে কাছে গিয়ে ওর মাথাটা আমার কোলে নিয়েছি,,, তসিবা এই তসিবা কি হয়ছে তোমার কিছু বলছো না কেনো? তসিবার কোনো সারা শব্দ পাচ্ছিনা তারা তারি করে তসিবাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি তসিবাকে একটা কেবিনে নিয়ে গেছে ডাক্তার। আমি তসিবার বাবা মাকে ফোন করে বলে দিয়েছি ওনারা আসতেছে,,,, কিছুক্ষণ পর ডাক্তার বের হয়ে বলে,,, ডাক্তার:- আচ্ছা রুগি আপনার কি হয়? আমি:- আমার স্ত্রী। ডক্টর তসিবার কি হয়ছে? ডাক্তার:- দেখুন ওনাকে আমি ভালো করে চিনি, আজ থেকে ২ মাস আগে আমি ওনার চিকিৎশা করি আর তখন ওনার রিপুট গুলি দেখছিলাম। তখনি ওনাকে বলছি অপেরেশন করাতে হবে কিন্তু ওনি করায়নি আর এখন ওনার কন্ডিশন এখন খুবই খারাপ হয়ে গেছে। আমি:- কিন্তু ডক্টর তসিবার কি হয়ছে? (ডাক্তার আমার দিকে অভাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,,,) ডাক্তার:- সত্যি আপনি ওর হাজবেন্ট তো? আমি:- হ্যা আমি ওর হাজবেন্ট আসলে আমাদের বিয়েটা হয়ছে মাত্র দুই মাস। কিন্তু সম্পর্কটা ততটা ভালো ছিলো না। তসিবা আমার কাছে ওর ব্যাপারে তেমন কিছুই সেয়ার করেনি। আচ্ছা ডক্টর তসিবার কি হয়ছে ও ঠিক হয়ে যাবে তো? ডাক্তার:- দেখুন মিস্টার তসিবার যেইটা হয়ছে সেইটা অপেরেশন করালে ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু সে কোনো দিন মা হতে পারবে না। আর অপেরেশন যদি কিছু দিনের মধ্যে না করান তাহলে তাকে বাচানো অনেক কঠিন হয়ে যাবে। আপনার বউয়ের জ্বরআয়ো ক্যান্সার হয়ছে,,,,, আমি:- মানে কি বলছেন কোনো দিন মা হতে পারবে না? ডাক্তার:- হ্যা আমি ঠিক বলছি মা হওয়ার সম্বভনা একদম ঝুকি পূর্ণ্য হয়ে যাবে। আমি আগেই তসিবাকে সব কিছু বলেছি সে বলেছে অপেরেশন করাবে আমার থেকে ৩ মাস সময় নিয়ে ছিলো কিন্তু আমি দিতে চায়নি কিন্তু জোর করে সময়টা নিয়েছে। তখনি তসিবার বাবা মা এসেছে,,,,
শ্বশুড়:- সৌরভ তসিবা কোথায়? আমি:- কেবিনে আছে এখনো জ্ঞান ফিরেনি। আঙ্কেল আপনারা আমার সাথে এত বড় প্রতারনা করতে পারলেন? আমাকে কেনো এতটা যন্ত্রনা দিয়েছেন? কেনো আমাকে ঠকিয়েছেন? শ্বাশুড়ি:- সৌরভ তসিবার ব্যাপারে তুমি সব যেনে গেছো? আমি:- হ্যা সব যেনে গেছি,,, আমাকে না জানিয়ে আপনারা অনেক বড় অন্যায় কাজ করেছেন। শ্বশুড়:- সৌরভ সত্যি আমরা কিছুই জানতাম না তসিবার এই সমস্যার কথা। তসিবা ঐ দিন বাসায় গিয়ে আমাদের সব কিছু বলছে। আর তাও বলছে তোমাকে যেনো এসব কিছু না বলি,,, তসিবা তোমাকে নিজের চাইতে বেশি ভালোবাসে। তুমি কষ্ট পাবে বলে তসিবা তোমার থেকে দূরে সরে যেতে চায়ছে আর তোমার সাথে এত খারাপ আচরন করতেছে যাতে তুমি তসিবাকে ভূলে যাও। আমি:- জানি তসিবা আমাকে অনেক ভালোবাসে কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি তসিবার এমন একটা মারাত্মক রুগ আছে। কিন্তু আপনাদের তো আমাকে জানানোটা প্রয়োজন ছিলো না কী? তখনি একজন নার্ছ এসে বলে,,, নার্ছ:- আপনাদের মাঝে সৌরভ কে? আমি:- জ্বি আমি। নার্ছ:- রুগি আপনাকে ডাকছে আপনি ভীতরে যান। আমি:- ঠিক আছে যাচ্ছি ভীতরে ঢুকে দেখি তসিবার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে আর চেহারাটা মলিন হয়ে আছে। আমাকে দেখে চোখের পানি মুছে নিয়েছে,,, তসিবা:- আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন আমি আপনাকে অনেক ঠকিয়েছি। আসলে আপনাকে আমি হারাতে চায়নি তাই সাহোস করে কথাটা বলে পারিনি। আমি:- আমার সাথে তোমার অভিনয় করতে ভালো লাগে তাইনা তসিবা? তসিবা:- আসলে আমি চায়ছি অপেরেশন করালে যদি ঠিক হয়ে যায় তখন আপনাকে সব কিছু বলবো আর জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে নিবো। কিন্তু কি ভাগ্য আমার আমি এখন যে কোনো একটা জিনিস পারবো হয় বাচতে না হয় মাতৃত্বের সাদ পেতে।
আমি:- তসিবা একটা কথা বলবো? তসিবা:- হ্যা বলেন? আমি:- আমি কি এতটা খারাপ যে আমার সাথে তুমি তোমার সব কিছু সেয়ার করতে পারোনি? তসিবা:- আসলে আপনি অনেক ভালো কিন্তু আপনার মা বাবা আপনার পরিবারের সবাই আমাকে মেনে নিবে না। আমি যেদিন প্রথম বলেছি কলেজে যাবো সেইদিন বুঝতে পারছি আপনার পরিবার যদি জানতে পারে আমি কোনে দিন মা হতে পারবো না তাহলে আমার বাবা মাকে অনেক অপমান আর আমাকে ঘার ধাক্কা দিয়ে বের করে দিবে। তাই আমি আপনার কাছ থেকেও লুকিয়ে রাখছি প্লিজ আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমি:- ক্ষমা তোমাকে করবো তুমি ভাবলে কি করে? আমার জীবনটাকে নিয়ে খেলার অধিকার তোমাকে কে দিয়েছে। তখনি দেখি তসিবা মন খারাপ করে নিয়েছে আর চোখ বেয়ে পানি পড়তেছে আমি একটু মুচকি হেসে তসিবার পাশে গিয়ে বসেছি,,,, তসিবা চোখের পানি গুলি মুছে দিয়েছি,,, তসিবা:- আমি মরে গিয়ে শান্তি পাবো না যদি আপনি আমাকে ক্ষমা না করেন। আমি আপনার পায়ে পরি প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিন তখনি তসিবাকে বুকের মাঝে জড়িয়ে নিয়েছি আর আমি কান্না করে দিয়েছি,,, আমি:- তসিবা তোমাকে ছাড়া আমি বাচতে পারবো না তুমি কি করে ভাবলে আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাবো। সন্তান না হলে হবে জীবনে কি সন্তানটা বেশি জুরুরী? আমরা এক কাজ করবো একটা অনাত আস্রম থেকে মেয়ে বাচ্ছা নিয়ে আসবো ওকে বড় করবো নিজেদের সন্তানের মত করে। আর যখন বিয়ের বয়স হবে তখন ওকে বিয়ে দিয়ে ঘর জামাই রেখে দিবে। তুমি তো তোমার বরকে রাখতে পারোনি তোমার মেয়ের জামাইকে রেখে দিও কেমন। তসিবা:- আমি বাচতে চাই সৌরভ আমি বাচতে চাই তোমার বুকে মাথা রেখে সারাটা জীবন বাচতে চাই। আমি:- হ্যা তুমি বাচবে আমার জন্য হলেও বাচতে হবে তোমাকে,,, বোকা মেয়ে আমাকে আরো আগে বললে হত তাহলে এত কষ্ট করতে হত না আর এই ২ মাস আমাদের সংসারের আরো অনেক কিছু শিখে যেতাম। তসিবা:- কখনো আমাকে দূরে সরিয়ে দিবেন না তো? আমি:- কোনো দিন ওনা তোমাকে সারা জীবন আগলে রাখবো আমার বুকের মাঝে,,, তুমি থাকো আমি ডাক্তারকে সব বলে আসছি কালকের মধ্যে তোমার অপেরেশন করাতে বলবো। তসিবা:- যদি আপনার বাবা মা ওনারা না মানে? আমি:- ওদেরকে কিছু বলার দরকার নেই।
তসিবা:- যদি জিগেস করে সন্তান নেয়না কেনো তখন কি বলবো? আমি:- বলবে আমি কিছু জানিনা আপনার ছেলে যানে আর বলবে আমরা আরে কিছুদিন পর নিবো কেমন। তসিবা:- কিন্তু আমার অনেক ভয় করছে? আমি:- তোমার বর তোমার পাশে আছে তাহলে তোমার কিসের ভয়? তুমি কোনো চিন্তা করোনা আমি সব কিছু সামলে নিবো কেমন। উম্মা তসিবার কপালে আলতু করে ছুয়ে দিলাম আর তসিবাও আমার কপালে কিস করে দিয়েছে। আমি ডাক্তারকে বলেছি আমি রাজি আপনি কালকে অপেরেশন ব্যাবস্থা করেন। ডাক্তার:- কাল কেনো আজকে রাতে করি কারন আমাদের এক বড় স্যার ওনি আজকে থাকবেন তাই বলছি,,,, আমি:- ঠিক আছে যা ভালো মনে করেন তবে খেয়াল রাখবেন তসিবার যাতে কোনো কিছু না হয় তাহলে আমি কিন্তু মরে যাবো। ডাক্তার:- আমরা সব রকম চেস্টা করবো। আমি:- ধন্যবাদ আপনাকে,,, ডাক্তারের রুম থেকে বেরিয়ে তসিবার রুমে এসেছি দেখি শ্বাশুড়ি শ্বশুড় তসিবার সাথে কথা বলছে। ওনাদের মন একদম খারাপ হয়ে আছে আমি ওনাদের ভরসা দিয়েছি আমি তসিবার পাশে থাকবো। আমার কথা শুনে ওরা অনেক খুশি হয়েছে,,, শ্বাশুড়ি:- সৌরভ ডাক্তার কি বলছে? আমি:- আজ রাত ১০টায় অপেরেশন করানো হবে এখন তো সন্ধা হয়ে আসছে ৭ টা বাজে আর তিন ঘন্টা পর। আপনারা বাসা থেকে ঘুরে আসেন কেমন আমি আছি তসিবার পাশে,, তসিবা:- হ্যা মা তোমরা যাও সেই কখন এসেছো? শ্বশুড়:- না আমরা থাকবো সৌরভ তুমি বাসা থেকে ঘুরে আসো তখনি তসিবা বলে,,, তসিবা:- হ্যা আপনি গিয়ে ফ্রেস হয়ে আসেন। আমি:- তোমাকে রেখে আর কোথাও যাবো না তোমার সাথে থাকবো তখনি শ্বশুড়রা বেরিয়ে গেছে আমি তসিবার সাথে বসে দুষ্টমি করতেছি তসিবাও দেখতে দেখতে অপেরেশন সময় চলে আসছে তসিবাকে অপেরেশন কক্ষে নিয়ে গেছে,,,, তসিবার হাতটা ছাড়তে আমার মুটেও ইচ্ছে করছিলো না কিন্তু ছাড়তে তো হবেই। বাহিরে বসে আল্লাহ কাছে পার্থনা করতে থাকি তসিবার জন্য। প্রায় ২ ঘন্টা ১৫ মিনিট পর ডাক্তার বেরিয়ে আসে,,,, আমরা ডাক্তারের কাছে যাই,,,, ডাক্তার:- অপেরেশন সব কিছু ঠিক ভাবে হয়ছে তবে তসিবা কোনো দিন মা হতে পারবে না সরি মিস্টার সৌরভ আমরা অনেক চেস্টা করেছি কিন্তু পারিনি। আমি:- তসিবা ভালো আছে তো তাহলে হবে লাগবে না আমার সন্তান। ডাক্তার:- সত্যি আপনি মহান আপনার মত প্রতিটি ছেলে যেনো তার বউকে এমন ভাবে ভালোবাসে। ঘন্টা খানেক পর তসিবার জ্ঞান ফিরবে তখন কেবিনে সিফট করে দিবো কেমন। আমি:- ঠিক আছে,,, বাহিরে অপেক্ষা করতেছি ঘন্টা খানেক পর তসিবাকে কেবিনে সিফট করেছে তবে এখনো জ্ঞান ফিরেনি আমি তসিবার পাশে বসে আছি,,, তসিবার বাবা মাকে বাড়ীতে পাঠিয়ে দিয়েছি রাত ২ টা বাজে চোখে অনেক ঘুম আসছে আর তসিবার পাশে শুয়ে পড়েছি সকালে কারো ডাকে ঘুম ভাঙ্গছে চেয়ে দেখি তসিবা ডাকতেছে,,, তসিবা:- উঠেন সকাল হয়ে গেছে আপনার তো মনে হয় অফিস কাজ বাড়ী সব কিছু চাঙ্গে উঠেছে,, আমার জন্য আপনি কত কষ্ট করেছেন। আমি:- তুমি ঠিক আছো তো তসিবা? তসিবা:- হ্যা ঠিক আছি,,,যান আপনি হাত মুখ দুয়ে আসুন। কাল থেকে তো কিছুই খাননি যান এখুনি খাবেন। আমি:- যাচ্ছি বাহিরে এসেছি মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি পঞ্চাশটার বেসি মিসকল আর চার্জ যাই যাই অবস্থা। মোবাইলে চাপ দিয়েছি অফিস আর বাড়ীর সবার নাম্বার। কল করতে যাবো তখনি মোবাইলটা বন্ধ হয়ে গেছে,,, যা ভালোই হয়ছে যাই মুখটা দুয়ে আসি,,,হাত মুখ দুয়ে তসিবার কেবিনের সামনে এসেছি যখনি ভীতরে ঢুকতে যাবো তখনি ডাক্তার বলে,,,, ডাক্তার:- মিস তসিবা আপনি আপনার এত একটা ভালো বরের সাথে কেনো এমন মিথ্যা জ্বরআয়ো ক্যান্সারের অভিনয় করেছেন। ( ডাক্তারের কথা শুনে মনে হচ্ছে আমার মাথায় আকাঁশ ভেঙ্গে পড়ছে,,, তখনি তসিবা বলে,,,) তসিবা:- আমি পরীক্ষা করেছি সে আমাকে কতটা ভালোবাসে তা দেখার জন্য। কারন ওর মা কথায় কথায় আমাকে ডির্ভোস দিতে বলে কিন্তু সে কিছু বলে না তাই মিথ্যা অভিনয় করেছি তখনি আমি ভীতরে ঢুকে হাত তালি দিয়েছি আর তসিবা আমার দিকে তাকিয়ে অভাক হয়ে গেছে,,,, আমি:- বাহ বাহ তসিবা তোমার অভিনয়ের জবাব নেই সত্যি তোমার অভিনয়টার প্রশংসা করতে হবে এমন কি তোমার বাবা মায়ের অভিনয়েরও। আজ থেকে তোমার কোনো কথায় আমি বিশ্বাস করবো না আরে আমি তো পাগল তাই তোমার মত একটা মেয়ের জন্য এমনটা করেছি,,, তসিবা:- প্লিজ আমার কথাটা শেষ করতে দিন। আমি:- তোমার কোনো কথায় আমি শুনবো না ভালো থেকো আল্লাহ হাফেজ তখনি তসিবা বলে,,, তসিবা:- আপনা সাথে তো আমার বিয়ে হবার কথা ছিলো না,,, আমি যে আপনাকে বিয়ে করে আপনার আর আমার পরিবারের সম্মান বাচিয়েছি এইটা তো বেশি করেছি,,, আপনার সাথে তো বিয়ে হবার কথা ছিলো অন্য কারোর আমি বিয়ে করেছি আপনা বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে,,,, তাহলে তো আপনাকে আমার ভালো করে বুঝতে হবে আপনি আমাকে কতটা ভালোবাসেন তাই এই অভিনয় করা আর যা কিছু করেছি সব কিছু আপনার বাবা যানে। যান আজ থেকে আমি আপনার জীবন থেকে দুরে সরে যাবো,,,,, আমি তসিবার কথা গুলি শুনে তসিবার দিকে তাকিয়ে আছি আর তখনি তসিবা বলে,,, এখন তো আরো জাটকা খাবেন,,, এই তসিবা ভীতরে আয় তখনি একটা মেয়ে ভীতরে এসেছে,,,আমি চেয়ে তো পুরাই অভাক হয়ে গেছি আরে কি দেখছি আমি? To be continue,,,, !!

( প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমার গল্প পরে ভালোলেগে থাকে তাহলে আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার জন্য আমার facebook id follow করে রাখতে পারেন, কারণ আমার facebook id তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্প, কবিতা Publish করা হয়।)
Facebook Id link ???

https://www.facebook.com/shohrab.ampp

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে