কতোটা চাই তোকে পর্ব-০৭

0
4285

#কতোটা_চাই_তোকে💖
#Writer:—#TanjiL_Mim💖
#part:—07
.
.
🍁
“কাব্য ভাইয়া আমাদের ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে চলে গেল তার অফিসে’!!আমরাও হাসি মুখ নিয়ে ভার্সিটির ভিতরে প্রবেশ করলাম’!!এমন সময় আমাদের সামনে আসলো দিহান’!!ও আমাদের ক্লাসমেট’!! বলতে গেলে আমরা ভালো বন্ধু’!!ও আমাদের সামনে এসে বললোঃ

——-“কি সাতচুন্নিরা তোরা এতদিন কোথায় ছিলি কোনো খোঁজ খবরই নেই’!!

“দিহানের কথা শুনে তানিশা রেগে বললোঃ

——-“ওই তুই আমাদের সাতচুন্নি বলিস কেন আমাদের কি সাতচুন্নির মতো দেখতে…….

“তানিশার কথা শুনে দিহান হেঁসে বললোঃ

——-“মাইশাকে না হলেও তোকে একদম ওই রকমেই দেখতে…….

“তানিশা দিহানের কথা শুনে রেগে গিয়ে বললোঃ

——-“তুই কি বলল্লি দিহাইনার বাচ্চা আজকে তোর একদিন কী আমার যে কয়দিন লাগে’!!

“তানিশার কথা শুনে দিহান দিলো দৌড় সাথে তানিশাও দিলো দৌড় তারপর শুরু হয়ে গেল তাদের মধ্যে লড়ালড়ি দৌড়’!!আর আমি ওদের কান্ড দেখে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাসতে লাগলাম’!!অবশ্য এটা নতুন নয় ওরা সবসময় কোনো না কোনো কারন নিয়ে সারাদিন ঝগড়া করবেই’!!!

“হর্ঠাৎই কেউ পিছন থেকে বলে উঠলঃ

“এতো হাসো কেন তোমার হাসি দেখলে তো আমি পাগল হয়ে যাই’!!মুহূর্তের মধ্যে হাসি থামিয়ে দিয়ে পিছন ঘুরে তাকালাম আমি’!!সামনে আবির ভাইয়াকে দেখে কিছুটা ঘাবড়ে গেলাম আমি'”!!উনি হলেন আমাদের ভার্সিটির সিনিয়র’!!কিন্তু প্রায় এইসব আলতু ফালতু কথা বলে যেটা আমার কাছে সবসময় বিরক্তিকর লাগে’!!যেমনটা এখন লাগছে’!!আমার বিরক্তকর মেজাজে উনি আবার বলে উঠলেনঃ

———“কি হলো মাইশা কথা কেন বলছো না’!!

———“ভাইয়া প্লিজ আমার সাথে এই ধরনের কথা বইলেন না আমার কাব্য ভাইয়া জানতে পারলে আমাকে আর আস্ত রাখবে না(মনে মনে)

——–“কি হলো চুপ কেন??

——–“না ভাইয়া কিছু না এমনি……

——–“তা এতদিন ভার্সিটি আসো নি কেন??

——-“আসলে ভাইয়া আমার বি……এতটুকু বলতেই এমন সময় তানিশা আর দিহান ডাক দিলো আমায়’!!আমিও আর কিছু না বলে ওখান থেকে চলে আসলাম’!!তারপর তিনজন মিলে চলে গেলাম ক্লাসরুমে……….

“এদিকে মাইশা যেতেই আবির হেঁসে বললোঃ

——-“আজকে যখন তুমি এসেছো তাহলে আমি আর দেরি করবো না আজকেই তোমায় সব কথা বলে দিবো’!!এই বলে হেঁসে চলে গেল আবির’!!

_____________________

“আজকের মতো সব ক্লাস শেষ করে বাড়ি ফেরা উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম আমি আর তানিশা’!!কাব্য ভাইয়াও ফোন করে বলেছে কিছুক্ষনের মধ্যেই চলে আসবে আমাদের নিতে’!!ভার্সিটির মাঠে আসতেই এমন সময় সামনে এসে দাঁড়ালো আবির ভাইয়া ওনাকে দেখে কিছুটা অবাক হলাম আমি’!!উনি হাতে একটা গোলাপ ফুল নিয়ে বললোঃ

——-“মাইশা “আই লাভ ইউ”……..

“ওনার কথা শুনে রীতিমতো চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার’!!আমিসহ তানিশাও হয়তো হা হয়ে তাকিয়ে আছে’!!আমাদের এইভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আবির ভাইয়া বললোঃ

———“কি হলো মাইশা কথা বলো…….

“ওনার কথা শুনে আমি বলে উঠলামঃ

———“ভাইয়া এসব কি বলছেন আপনি ভাইয়া,,আর আমার বিয়ে হয়ে গেছে ভাইয়া’!!

“আমার কথা শুনে আবির ভাইয়া অবাক হয়ে বললোঃ

———“এসব কি বলছো তুমি কবে হলো তোমার বিয়ে আর কার সাথেই হলো’!!

“ওনার কথা শুনে তানিশা বলে উঠলঃ

——–“ভাইয়া সেটা একটা বড় কাহিনি এখন বলা যাবে না আর বিয়েটা হয়েছে কাব্য ভাইয়ার সাথে…….

“আবির ভাইয়া হয়তো অবাক হলো তানিশার কথা শুনে’!!হর্ঠাৎই ভাইয়া বলে উঠলোঃ

———“তাহলে সরি মাইশা তোমার সম্পর্কে না জেনেই এত বড় ভুল করে ফেলেছি,, আই এম সো সরি মাইশা…..

“আমিও হালকা হেঁসে বললামঃ

———“It’s okk ভাইয়া……..

——–“আচ্ছা আরেকটা কথা বলি

——–“জি বলুন ভাইয়া……..

——–“এই গোলাপটা তোমার জন্য নিয়ে এসেছিলাম কিছু মনে না করলে এটা কি তুমি নিবে’!!ভালোবাসা ভেবে নয় এমনি জাস্ট ছোট গিফট হিসেবে নেও (কিছুটা নরম গলায়)

“ওনার কথা শুনে আমার একটু খারাপ লাগলো’!!যার কারনে আমিও মুচকি হেঁসে বললামঃ

——–“ঠিক আছে ভাইয়া দিন…..

“আমার কথা শুনে উনি খুব খুশি হয়ে গেলেন তারপর তার হাতে থাকা গোলাপটা আমার দিকে এগিয়ে দিলেন আমিও মুচকি হেঁসে গোলাপটা হাতে নিলাম’!!

.

“এদিকে দূর থেকে কাব্য এমন দৃশ্য দেখে চোখে আগুন জ্বলে উঠল তার’!!

.

“আবির ভাইয়া গোলাপটা দিয়েই চলে গেলেন’!!এমন সময় কোথা থেকে কাব্য ভাইয়া এসে আমার হাত শক্ত করে ধরে টানতে টানতে ভার্সিটির বাহিরে বের করে নিয়ে আসলো’!!আমাদের পিছন পিছন তানিশা আসলো’!আচমকা এমনটা হওয়াতে আমি পুরো ঘাবড়ে গেলাম’!!পরক্ষণেই মনে হলো ভাইয়া কি তাহলে দেখে ফেললো নাকি আবির ভাইয়ার কাছ থেকে গোলাপ নিছি’!!ভাবতেই ভয়ে ঢোক গিললাম আমি’!!ভাইয়া আমাকে গাড়ির সামনে নিয়ে এসে চেঁচিয়ে বললোঃ

———“তোর সাহস কি করে হলো অন্য ছেলের কাছ থেকে গোলাপ ফুল নেওয়ার’!!

“ভাইয়ার দমক শুনে আমি পুরো ভয়ে কেঁপে উঠলাম’!!এমন সময় তানিশা বলে উঠলঃ

——–“-ভাইয়া তুমি যা ভাবছো তেমন কিছু নয়………

“তানিশার কথা শুনে ভাইয়া আরো রেগে গিয়ে বললোঃ

——”চুপ কর তুই…….

“ভাইয়ার দমক শুনে তানিশাও আর কিছু বলতে পারলো না’!!ভাইয়া ঘন ঘন শ্বাস ফেলছে যাতে বোঝাই যাচ্ছে ভাইয়া কতটা রেগে গেছে’!!আমি আর তানিশা চুপটি করে কোনো কথা না বলেই গাড়িতে বসে পরলাম’!!তারপর ভাইয়াও কোনো কথা না বলে গাড়ি চালাতে শুরু করল’!!আর যাইহোক এই রাস্তার ভিতর চেচামেচি করা ভালো দেখাবে না……..

“ঝড়ে গতিতে ভাইয়া গাড়ি চালাচ্ছে’!!আর ভাইয়ার এমন কাজে আমি ভয়ে পুরো অর্ধেক হয়ে যাচ্ছি’!না জানি এখন৷ বাসায় গেলে কি করবে আমায়’!!

__________________________________________

_____________________

“দেড় ঘন্টার রাস্তা আজকে ভাইয়া ১০ মিনিটের মধ্যে নিয়ে এসেছে’!!যা দেখে বোঝাই যাচ্ছে ভাইয়া কতোটা রেগে আছে’!!ভাইয়া গাড়ি থামাতেই আমি গাড়ি থেকে নেমে এক দৌড় আমায় পায় কে??বাসায় ঢুকেই সোজা তানিশার রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছি আমি’!!আজকে আর আমায় পায় কে??আজকে কোনো ভাবেই কাব্য ভাইয়ার সামনে যাওয়া যাবে না’!!এই ভেবে বসে পরলাম তানিশার বিছানায়’!!

“এদিকে কাব্য এখন গাড়িতে বসে ঘন ঘন শ্বাস ফেলে নিজের রাগকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে'”! এমন সময় গাড়ির ভিতরে বসে থাকা তানিশা বলে উঠল কাঁপা কাঁপা গলায়ঃ

——–“ভাইয়া রাগ করো না আগে আমার পুরো কথাটা তো শোনো’!!

”কাব্য চুপটি করে বসে রইল তানিশার প্রশ্নের কোনো উওর দিলো না’!!তানিশা কাব্যকে এই ভাবে চুপ থাকতে দেখে বলে উঠলঃ

——–“ভাইয়া তুমি যেটা ভেবেছো আসলে কাহিনীটা তেমন নয় এই বলে তানিশা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত হয়ে যাওয়া কাহিনী বললো কাব্যকে সব শুনে কাব্য কিছু বললো না’!!শুধু এতটুকু বললোঃ

——–“বাড়ি যা তুই…….

———“ভাইয়া মাইশার কোনো দোষ নেই…….

——–“তোকে যেতে বলেছি(দমক দিয়ে)

“কাব্যের কথা শুনে তানিশা আর কিছু না বলেই চলে গেল’!!

“কাব্য কিছুক্ষন বসে কিছু একটা ভেবে গাড়ি চালিয়ে চলে গেল…….

_____________________

“একরাশ ভয় নিয়ে বসে আছি তানিশার রুমে কি করবো এখন কিছুই বুঝতে পারছি না’!!ধুর কেন যে আবির ভাইয়ার কাছ থেকে গোলাপটা নিতে গেলাম’!!কিন্তু না নিলেও তো ভালো লাগতো না’!!কিন্তু এখন কি করবো কাব্য ভাইয়া এখন আমায় কি করবে কে জানে……না জানি কতোটা রেগে আছে'”!! এমন সময় দরজায় টোকা দিল কেউ’!!সাথে সাথে ঘাবড়ে গেলাম আমি’!!বিছানা থেকে উঠে ধীরে ধীরে দরজার কাছে যেতেই তানিশা বলে উঠলঃ

——-“মাইশা দরজা খোল আমি আসছি…..

“তানিশার কন্ঠ শুনে ছোট্ট একটা নিশ্বাস নিয়ে দরজা খুলে দিলাম’!!ও ঢুকতেই আবার দরজা বন্ধ করে দিলাম……..

“আমি তানিশার দিকে তাকিয়ে বললামঃ

——–“বোইন এখন আমার কি হবে……

——–“আমি কেমনে বলুন……’!!এই বলে ও চলে গেল ওয়াশরুমে……

“তানিশার কথা শুনে আরো ভয় পেলাম আমি’!!তারপর চুপটি করে তানিশার বিছানায় বসে রইলাম আর ভাবছি ভাইয়া আমার সাথে কি কি করতে পারে……….
.
.
.
.
.
🌼

রাত_৯:০০টা…….

“তানিশার রুমে পায়চারি করছি আমি’!!আর তানিশা বিছানায় বসে মোবাইল গুতাচ্ছে’!!ইচ্ছে তো করছে কিছু একটা মেরে ওর মাথাটা ফাটিয়ে দেই……..

“সারাদিনে কাব্য ভাইয়া বাড়িতে আসে নি’!!না জানি কোথায় গেছে’!!এদিকে কি করবো না করবো কিছুই বুঝতে পারছি না আমি’!!এমন সময় দরজায় নক করলো মামুনি’!!আমি গিয়ে দরজা খুলে দিলাম’!!দরজা খুলতেই মামুনি বললোঃ

——-“তাড়াতাড়ি খেতে আয়…..

“আমি কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলামঃ

——–“মামুনি কাব্য ভাইয়া আসে নি……

——–“না আসে নি আজকে তার দেরি হবে কোনো এক কাজ আছে তাই’!!!এই বলে মামুনি চলে গেল……..

“মামুনির কথা শুনে আমি মনে মনে প্রচুর খুশি হলাম’!!তারপর খুশি মনে আমি আর তানিশা চলে গেলাম ডিনার করতে’!!ডিনার শেষে টেবিলের পাশে বসে আছি এখন কোথায় ঘুমাবো তানিশার বাচ্চায় তো ওর রুমে যেতে দিবে না’!!এখন তো ওই রুমেই যেতেই হবে’!!এমন সময় মামুনি বলে উঠলঃ

——–“কি হলো বসে আছিস কেন যা রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে থাক’!!কাব্যের ফিরতে দেরি হবে তুই গিয়ে ঘুমিয়ে পড়……..

“আমিও আর কোনো কথা না বাড়িয়ে চলে গেলাম কাব্যের রুমে’!!রুমে ঢুকেই সোজা বিছানায় শুয়ে পরলাম’!!ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে আমার’!!ঘুম আসছে না অতিরিক্ত ভয়ে থাকলে ঘুম আসে নাকি’!!বেশ কিছুক্ষণ নড়ে চড়ে কাটিয়ে দিলাম’!!তারপরও ঘুম আসলো না’!! ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত_১ঃ০০টা বাজে কাব্য ভাইয়া এখনো আসে নি’!!কেমন যেন টেনশন হচ্ছে আমার’!!এমন সময় দরজা খোলার আওয়াজে নড়েচড়ে বসলাম আমি’!!কাব্য ঢুলতে ঢুলতে রুমে প্রবেশ করলো’!!রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে সোজা আমার দিকে এগোতে লাগলো’!!চোখ তার পুরো লাল হয়ে গেছে’!!দেখে বুঝতে পেরেছি ভাইয়া ড্রিংক করেছে’!!ভাইয়ার এভাবে আমার দিকে এগোতে দেখে ভয়ে ঘাবড়ে গেলাম আমি……..
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে…………

♥️♥️[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ’!!আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানবেন’!!]😊😊😊😊

#TanjiL_Mim💖

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে