আত্মা নাকি সে? সিজন-০২ ( পর্ব –০২)

0
3383

আত্মা নাকি সে? সিজন-০২ ( পর্ব –০২)

লেখক– Riaz Hossain imran
——————-
মারিয়াকে খুন করে,তার লাশ এভাবে উলঙ্গ করে,বাড়ির সামনে কে রেখেছে।তাও কলিং বেল বাজিয়ে চলে গেছে।কে হতে পারে, কে….?

কিছুক্ষনের মধ্যে নূপুর ও চলে আসে রিভার বাসায়। এসেই মারিয়ার লাশের পাশে বসে কান্না করতে থাকে। এদিকে মারিয়ার বয়ফ্রেন্ড, মানে রিভার ভাইও কান্না করতে থাকে।একজন মানুষ মরলে যেভাবে কান্না ধ্বনি চারপাশে জুড়ে যায়।যেমন ভাবেই মরা কান্নার জোয়ার ভেসে চলছে রিভার বাসায়। মারিয়ার আব্বু আম্মু সহ,পরিবারের সবাই এসে হাজির।কেও বলতে পারেনা কিভাবে খুন হয়েছে। মারিয়ার রিভার বাসায় আসবে,এইটা বাহিরের কেও জানতো না।তবে মারিয়ার লাশ কেনো রিভার বাসার সামনে রেখে চলে যায়। তাছাড়া কোনো ধর্ষক হলে তো লাশ এভাবে রেখেও যেতো না। আর কোনো মানুষ যতই নিষ্টুর হোক,এভাও খুন করবেনা। রহস্য তো রয়েই গেলো। রাতের মধ্যেই মারিয়ার পরিবার থানায় কমপ্লেইন্ট করে।
থানার পুলিশ ও বা করবে কি। DNA টেস্ট করে,মারিয়ার যৌনিতে কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। কিন্তু ধর্ষণ হয়েছে তা নিশ্চিত, তবে মেডিকেল রিপোর্টে এর কোনো ক্রু মিলছেনা তাদের।পুলিশ অবশেষে কেজ ক্লোজ করে দেয়। যার কোনো প্রমান নেই,তার পিছন দৌড়ে লাভ কি। প্রমান ছাড়া আজকাল কোনো কাজ হয়না। মিথ্যে কিছু প্রমান( নকল) যদি তুলে ধরা হয়,তবে সেটার বিচার আছে,আর সত্য কিছু জেনেও যদি প্রমান না দিতে পারে,তবে তার বিচার হয়না।বিচার পায়না হাজারো অসহায় মানুষ,হেরে যায় অপরাধের কালো ছায়ার, মুখ লুকাতে হয় সমাজের কাছে।অথচ তারা সত্যবাদী, তারা বিচার প্রাপ্য, তারা সমাজের কাছে নিরপরাধী। তবুও অপরাধীদের নকল প্রমানের কারণে, হেরে যায় তারা।মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয় তাদের। এর নামই কি বিচার…?

২ মাস পর সব কিছু মোটামুটি গুছিয়ে আসে। মারিয়ার কথা এখন আর তেমন ভাবে কেও মনেও রাখেনা। রিভার সাথে এখন আরো ৪-৫ জন ফ্রেন্ড যুক্ত হয়েছে। আড্ডার সময় হটাত নূপুর বলল,
— কিরে, মারিয়ার মৃত্যু হয়েছে আজ ২ মাস।তোর ভাই কি মারিয়াকে ভুলতে পেরেছে..?
— হুম পেরেছে। ভাইয়া এখন নিউ রিলেশন করছে। মেয়েটা দেখতে অনেক সুন্দর।
— হ্যা রে.. তা এখন কি করবি। ক্লাসে যাবি নাকি আড্ডা দিবি।
— ক্লাসে মন বসছেনা। ফেবুতে একটা হাটাহাটি করে বাসায় চলে যাবো।
— ফেবুতে? আচ্ছা, রিয়াজ হোসেন ইমরানের গল্প পড়িস?
— নাহহ,ওই আবালের গল্প আর ভালো লাগেনা।আত্মা নাকি সে নামের একটা গল্প লিখছে।এতো বাজে গল্প লেখকের গল্প আমি পড়িনা।
— দেখ দেখ,রিয়াজ একটা স্টাটাস দিছে।
— কি লেখা?
— লিখেছে..( লেখক আমরা বহুরূপী, কখনো মা,কখনো বাবা।কখনো ভাই,কখনো বোন।কখনো প্রেমিকা,প্রেমিক,নানা,চাচা,আন্টি, দোকানদার,রিক্সাওয়ালা,লুচ্চা,অশ্লীল মনোভাব ইত্যাদি। আমাদের হতে হয় এমন। যদি এসবই না ফীল করি,তবে গল্পটা আসবে কিভাবে।বুঝলে বুঝপাতা,না বুঝলে কইতাম না) । এইটা লিখছে।
— আমি বলেছি না..? এই লেখক একটা আবাল।কি লেখে,সে নিজেও জানেনা।
— উনি তো নাকি বাস্তবতা নিয়ে লেখে।
— আমার চুল নিয়ে লেখে।বাদ দে তো..?
— আচ্ছা শুন, সামির আমাকে বলেছে দেখা করতে।মনে হয় propose করবে।
— হায় হায়,বলিস কি। কয়দিন আগেই তো তোর ব্রেকাফ হয়েছে ওই ইয়াবা খোরের সাথে। এখন আবার রিলেশন..?
— আরেহ,কি যে বলিস।আজকাল প্রেমিক না থাকলে খরচ চালাবো কিভাবে তাছাড়া রিলেশন ছাড়া কি ভালো লাগে বল..? একা একা সময়ই কাটেনা।অবশ্য,তাকে আমি রিয়েল ভালোবেসেছিলাম।কিন্তু এখন আর বাসিনা।টাইম পাস করবো খালি।
— ঠিক আছে,আমাকেও সাথে নিয়ে চল।
— হুম,তা আর বলতে..? চল..?

( দুইজনই কলেজ থেকে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। সামিরকে কল দিয়ে,আগেই সতর্কবার্তা জানিয়ে দেয় নূপুর। এই সতর্কবার্তা অন্য কিছু নয়। বরং মানিব্যাগ গরম রাখার সতর্ক। কলেজ গেইট থেকে একটা সি এন জি নিয়ে সোজা রেস্টুরেন্ট এ হাজির নূপুর আর রিভা। গিয়ে দেখে সামির আগে থেকেই হাজির ওখানে। এরপর তিনজন মিলেই রেস্টুরেন্ট এর বাম দিকের টেবিলের কোনায় বসে। খাবার অর্ডার দেওয়া শুরু। তাও দামি দামি খাবার টেবিলে আসছে। রিভা রাক্ষসের মতো খাবার খাচ্ছে। চিকেন খাওয়ার গজ গজ শব্দটাও যেনো রেস্টুরেন্ট জুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সামির হা করে তাকিয়ে আছে রিভার দিকে। কিছুই করার নেই তার। যদি কিছু বলতে যায়,তবে ব্রেকাফের গোহায় প্রবেশ করতে হবে। তাই চুপচাপ হজম করে নিচ্ছে ওদের কান্ড। নূপুরও কম খাচ্ছেনা।মনে হয় জন্মের খাবার খেয়ে নিচ্ছে এরা।
খাবার শেষে সামিরকেই বিলের মুখে ফেলে দেওয়া হলো।অথচ সামির এক গ্লাস পানিও খায়নি। এই দুইজন মিলেই ৪৫৭৬ টাকা বিল তুলেছে। আহা,কি মনোরম পরিবেশ,সামিরের ইচ্ছে করছে এক্ষুনি দুইডারই পেট টিপে,খাবার গুলো বের করে নিতে।রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতেই নূপুর সামিরকে বলল,
— আচ্ছা শুনো,আমরা বাসায় যাচ্ছি,অনেক দেরি হয়ে গেছে। আম্মু বকা দিবে।
— আজব তো! আজকে ঘুরতে যাওয়ার প্লেন করেছি নূপুর।
— ধ্যাত,ভ্যাবলার মতো আচরণ কইরো নাতো..?
— ওকে,তুমি যা বলো।
— ঠিক আছে বায়, রাতে কল দিও।
— ওকে।

এ বলেই সামির চলে যায় সামিরের রাস্তায়। আর ওরা দুজন মনের সুখে গান গাইতে গাইতে চলে যায় বাসার দিকে। ওদের বাসায় গিয়ে পৌচাতে এতো সময় লাগবেনা,আর পাচ মিনিট হাটলেই রিভা তার বাসায় প্রবেশ করতে পারবে। এরপর নূপুর যাবে,নূপুরের বাসায়। তখনি খেয়াল করলো,রাস্তার পাশে অনেক লোক ভীড় জমে আছে। ওরা এমন লোকজনের ভীড় দেখেই ছুটে যায় ভীড়ের ভিতর। গিয়ে দেখলো, রাস্তার পাশে একটি কুমারী মেয়ে পড়ে আছে। শরীরের সমস্ত জামাকাপড় ছেড়া। লজ্জাস্থানটাও খোলামেলা। মুখ দেখে মনে হচ্ছে এখনো জীবিত আছে। কিন্তু মেয়েটিকে কেও হাসপাতাল না নিয়ে গিয়ে, ছবি আর ভিডিও করায় ব্যস্ত। ওর জীবন বাচানোর থেকেও বেশি যুদ্ধ হচ্ছে,কে কতো সুন্দর করে ওর গোপন জায়গাগুলো ক্যামেরা বন্দি করতে পারে। রিভা আর নূপুর ওই লোকদের এদিক সেদিক ধাক্কা দিয়ে,মেয়েটিকে রাস্তার নিছ থেকে উপরে তুলে। এখন একটা ছেলে,নিজের ভিতর ভদ্রলুচ্চাকে জাগিয়ে তুলে একটা গাড়ি দাড় করায়। এতক্ষন সেও ভিডিও করায় মগ্ধ ছিলো,আর এখন জাগিয়ে তুলেছে ভদ্রলুচ্চামী।
রাস্তাটা জমিন থেকে প্রায় ৫-৬ ফুট উচ্চতায়। রাস্তার পাশের, ঠিক ৫ ফুট নিছে ছোট ছোট ঘন জঙলে ভর্তি। ওখানে কোনো মেয়েকে রেপ করা,কঠিন কোনো কাজ নয়। এই সন্ধায় হয়তো কেও জোর করেই এসব করেছে। রিভা আর নূপুর সেই মেয়েটিকে সোজা হসপিটাল নিয়ে গিয়ে,ভর্তি করায়,আর সাথে সাথে থানায়ও একটা কমপ্লেইন্ট লিখে ফেলে।মেয়েটিকে, অক্সিজেনের দ্বারা,কোনো রকম বেচে রাখা হয়। ওর যৌনিতে, রক্তের প্রভাব এতোই বেশি ছিলো যে, ৪ মাসের ভিতরে মেয়েটি যদি শারীরিক সম্পর্ক করতে যায়,তবে নির্ঘাত মারা যাবে। পুলিশ এসে মেয়েটির DNA রিপোর্ট চেক করতে গিয়ে,এক ধাক্কা খায়।
একি!মেয়েটির কোনো রেপ হয়নি। কিন্তু…
অবাক চোখে সবাই একজন একজনের দিকে তাকিয়ে আছে। এসব হচ্ছেটা কি। রিভা এগিয়ে এসে,মারিয়ার কথাটাও পুলিশকে মনে করিয়ে দেয়। কিছুদিন আগেও মারিয়াকে এভাবে রেপ করা হয়েছিলো। কিন্তু রিপোর্টে, কোনো ক্রু মিলেনি। এই মেয়ের অবস্থাও সেম তারমানে এই কাজ, একজনেই করেছে? এক বিশাল রহস্য এসে দাড় হয় সবার সামনে। এইটা কেমন রেপ,কেমন ধর্ষণ। রিভা আর নূপুর চলে আসে বাসায়। পুলিশ চালাচ্ছে পুলিশের কাজ। কি আর করবে,চুলটাও ছিড়তে পারবেনা। কারণ তাদের প্রমান চাই। প্রমান ছাড়া নিরপরাধীও অপরাধী হয়ে যায়। কিছুই করার নেই,এইটাই সমাজ।

নূপুর বাসায় এসেই রিভাকে কল দেয়,
— দোস্ত,আমরা একটা গল্পকে ফালতু অশ্লীল বলে গালি দিয়েছি,ওইজে রিয়াজ নামের একজন লেখকের গল্পকে।
— হুম।
— দেখেছিস? সেইভাবেই কিন্তু ঘটনা ঘটেছে। উনি বলেছে, লেখকরা অশ্লীল হয়, খারাপ মনোভাব নিজের ভিতরেও নিয়ে নিতে হয়। নাহলে যে খারাপ লোকদের উপর আঙুল তুলতে অনেক বাধা। কথায় আছেনা?( চোর ধরতে গেলে, চোর হতে হয়)। হয়তো উনিও এমন কিছুই বুঝিয়েছে। শেষে কি বলেছে দেখলিনা? বুঝিলে বুঝপাতা,না বুঝলে কইতাম না। আর এখন তো সবই ক্লিয়ার।
— আরে রাখ তোর ক্লিয়ার। উনি লুচ্চা একজন লেখক।বলিসনা উনার কথা।
— আজ যে মেয়েটির রেপ হয়েছে,তাকে তুই হেল্প করতে গিয়েছিলি। কিন্তু দেখেছিস তো, এর আগে অনেক লোক ওখানে ভীড় করে দাঁড়িয়ে ছিলো। ভাইরাল করার জন্য। গল্পটা তো সেদিকেই তুলে ধরা হয়েছে।
— তো.? কি হইছে এখন।
— না মানে,আমার চিন্তা হচ্ছে অন্যটা, মেয়েটাকে রেপ করলোটা কে।
— তাই তো ভাবছি। যাইহোক, বাদ দে। ঘুমা।
— ওকে।

অতএব, পরেরদিন সকালে রিভা ঘুম থেকে উঠেই চমকে যায়। রিভার ফোনে নূপুরের একটা মেসেজ। লেখা ছিলো” দোস্ত, সামিরের সাথে আমার ২ মাস রিলেশনশিপ।আজ অব্দি একটা খারাও শব্দ ব্যবহার করনি। তবে ওর নাকি খুব ইচ্ছে হচ্ছে সেক্স করার জন্য। আমি যাচ্ছি রুম ডেটিং করতে। বিকেলে এসে তোকে ফোন দিবো।সকালে অনেক কল দিয়েছি,তুই ঘুমে ছিলি হয়তো । বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা কর।বায়”।
মেসেজ দেখেই রিভার মাথা আগুনে লালা। নূপুর ডেটিং করতে গেছে,অথচ তাকে না জানিয়েই।একটাবার তো কথা বলে যাওয়ার দরকার ছিলো। রিভা নূপুরের ফোনে কল দেওয়া শুরু করে। বার বার ফোন সুইচড অফ আসছে। রিভা কি আর করবে।কলেজেও না গিয়ে,আবার শুয়ে পড়ে।

ট্রিং ট্রিং ট্রিং।

ফোনের রিংটোনে জেগে উঠে রিভা। একি,মেলা সময় ধরেই ঘুমিয়েছে। প্রায় ২ টা বাজতে চলছে।রিভা ফোন ধরতেই অপর পাশ থেকে একটি ভয়ানক খবর পায়। রিভার বুক কাপতে লাগলো,চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসছে তার।

*

*
কি ভাবছেন? নূপুর মারা গেছে..? না,তা নয়, রিভার বয়ফ্রেন্ড এর বিয়ে ঠিক হয়েছে। রিভা খবর পাওয়া মাত্রই ফোন দেয় আকাশকে।অপর পাশ থেকে আকাশের শব্দ আসে খুব নরম ভাবে।,
— হ্যালো রিভা।কেমন আছো তুমি? খেয়েছো বেবি?
— আরে রাখ তোর বেবি। আমার সাথে ২ বছর রিলেশন করে তুই বিয়ে করতে যাচ্ছিস? কি করে পারলি..( অনেক রাগ আর অভিমান নিয়েই চেচিয়ে বলল রিভা।)
–দেখো রিভা, আমি চাইনি এই বিয়ে, কিন্তু আব্বু আম্মুর পছন্দ করা মেয়েটিকে আমার বিয়ে করতেই হবে। নয়তো আব্বু আমাকে ত্যাগ করে দিবে।
— তাই বলে তুই আমাকেই ভুলে যাবি.? ওই,এই তোর ভালোবাসা?
— আরে রাখ ভালোবাসার চন্ডি। কি বুঝিস তুই,আমার চুল? আরে,তোর শরীরের এমন কোনো স্থান আছে? যেখানে আমি টাচ করিনি? তোকে তো আমি ৫০ বারের মতো খেয়েছি। আর কি করবো তোকে দিয়ে।
— আকাশ,তুমি আমাকে এভাবে বলতে পা….( কথা শেষ না হতেই আকাশ বলল)
— হুম পেরেছি, এখন তোর এই নষ্ট দেহ নিয়ে আমার সামনেও আসবিনা। তোর নষ্ট মুখের নষ্ট শব্দ শুনার ইচ্ছে আমার নেই। বায়,ভালো থাকিস।আমার চেয়েও ভালো কাওকে পাবি।
— আকাশ শুনো শু…

কল কেটে দেয় আকাশ। রিভা ধীরে ধীরে ঘন কোনো অন্ধকারের ভিতর হারিয়ে যাচ্ছে। এ কি হলো ওর সাথে?
নিজেকে সামলাতে না পেরে,রাগ অভিমান আর কস্টের মাঝে ভুলে যায়,জীবন কি। ৩য় তলা থেকে ঝাপ দেয় রিভা……!

থাক,চিন্তার কারণ নেই পাঠক ভাইরা, রিভা মরেনি। ঝাপ দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু পড়েছে,রাস্তার পাশে ময়লার উপর। যেখানে পলিথিন আর পচা খাবার ফেলা হয়। কিছুটা ব্যাথা পেয়েছে বটে,তবে মরেনি। কেন যে মরেনি, থুক্কু, ফিরে আসি গল্পতে।
নূপুর ঘটনা জানিতে পেরে সোজা রিভার বাসায় চলে আসে। ডক্টর কিছু মেডিসিন দিয়ে গেছে। এগুলো খেলেই ব্যাথা সেরে যাবে।তবে ওর ভিতরের ব্যাথাটা তো কমবে না। নূপুর রিভাকে এসেই ঠাসস করেই চড় মেরে দেয়। আর কান্না করতে করতে আত্মহত্যার কারণ জানতে চায়।রিভা নূপুরকে আস্তে আস্তে সব বলে। রিভার কথা শুনেই নূপুর হতভাগ হয়ে যায়। সামির আবার এমন কিছু করবে নাতো..? ভাবতে না ভাবিতেই নূপুররের ফোনে কল আসে।

আচ্ছা,গল্প তো বলতাছিই, আগে আগে এতো বুঝতে চান কেন? না, সামির কল করেনি,ওর আম্মু কল দিছে।
— হ্যালো আম্মু,বলো।
— জলদি বাসায় আয়, তোর কলেজের একটি ছেলে বন্ধু এসে তোকে খুজতাছে।
— নাম কি?
— ইমরান।
— ইমরান..? এই নামের তো কাওকে আমি চিনিনা।
— ছেলেটা বলছে,তুই চেহারা দেখলে চিনতে পারবি।নাম নাকি জানা হয়নি। তবে তোর নাম জানে সে।
— কে হতে পারে কে জানে। ওকে আমি আসছি।
— আচ্ছা।

রিভার থেকে ২ ঘন্টার জন্য বিদায় নেয় নূপুর। পুরো পথে মনে করার চেস্টা করছে,এউ ইমরানটা কে। নামটা পরিচিত পরিচিত লাগছে ঠিকই।কিন্তু মনে পড়ছেনা তার। বাসায় ঢুকতেই নূপুরের আম্মু বলল,
— তোর রুমে দেখলাম বউ পুস্তক নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে। হয়তো কোনো কাগজ নিতে এসেছে।
— মানে? তুমি উনাকে আমার রুমে কেন যেতে দিলে( গরম হয়ে)
— একটা মানইজ্জত আছেনা? ছেলেটা কি ভাববে নাইলে।
— ছিনোনা,যানোনা,এভাবে একটা ছেলেকে আমার রুমে যেতে দিলে? আম্মু,তোমার বয়স হয়েছে তা জানতাম,কিন্তু জ্ঞানও কি শেষ হয়ে যাচ্ছে নাকি।ধুরর ভাল্লাগেনা।

আম্মুকে ঝাড়ি দিয়েই নূপুর নিজের রুমে খপ খপ করে এগিয়ে আসতে লাগলো। গরম মাথায় রুমে ঢুকতেই দেখে,ওর খাটের পাশে, মুখ ঘুরিয়ে একটা ছেলে বসে আছে। নূপুর এইটা দেখে আরো মেজাজ খারাপ করে ফেলে ।

থাপপপপপ….

দরজাটা হুট করেই বন্ধ হয়ে যায়।নূপুর পিছনে তাকিয়ে দেখে দরজা নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে। এরপর আবার হুট করেই,ভয়ের চোখে খাটের কোনায় তাকিয়ে দেখে,ছেলেটি সেখানে বসা নেই। নূপুর এবার ভয়ে চিৎকার দিতে যাবে,কিন্তু ওর মনে হচ্ছে,তার মুখের ভিতর কেও কোনো কিছু ঢুকিয়ে রেখেছে।যার কারণে আওয়াজ করার শক্তিটা ওর নেই।বাতাসের গতি ধীরে ধীরে বেড়েই যাচ্ছে। রুমের ভিতর কয়েক সেকেন্ডের মাথায় অন্ধকার নেমে আসে। ঠান্ডা বাতাসে যেনো,পুরো রুমটি শীতল করে তুলেছে।এই শীতলতার মাঝে,নূপুর অনুভব করলো, একটি গরম নিশ্বাস তার গলা ছুড়ে যাচ্ছে। চোখ বন্ধ করে দেয় নূপুর।কিছু টের পাওয়ার আগেই,সে নিজেকে বিচানায় অবিস্কার করলো। তখনি নূপুরের রুমে এক বিকট শব্দ
: আ……………..আ…:
নূপুরের আম্মু বাহির থেকেই শুনেছে সেই আওয়াজ। এরপর রুমে এসেই দেখে, ওর মেয়ের শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে আছে। নূপুরের লাশ ব্যতীত রুমে কেও নেই।মুহূর্তেই পাড়া- প্রতিবেশিরাও হাজির। হুম,যা ভাবছেন সেটাই,ছবি আর ভিডিও শুরু হয়ে গেছে। ভাইরাল হয়ে গেলো এক নতুন টপিক। এবার DNA টেস্ট করার পর,সামিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাবলিক জানায়ারের মতো সামিরের শাস্তির জন্য খাপ মেরে আছে। কিন্তু রিভা তো জানে, নূপুরের মৃত্যুর কারণ সামির নয়,অন্য কেও।
কিন্তু কে..?

চলবে…..

[ গল্প অশ্লীল মনে হচ্ছে? তবে রিভার সাপোর্টার্স আপনি।এতে সমস্যা নেই, ফলাফল শেষে হবে।সিজন -১ এ যেমন মোড় ঘুরেছে,তেমনি ভাবে হতে পারে,কোনো কিছু। অপেক্ষা ধরুন,রহস্য জানুন,ফলাফল জেনে,আমাকে গালিও দিতে পারেন।

মেসেজ আমার বিরক্ত লাগে।সারাদিন লেখালেখি,তার উপর এখন গান রেকর্ড করতে যাচ্ছি।এতো চাপের মাঝে মেসেজের রিপ্লে দেওয়া,সত্যিই কষ্টকর। যার যার মন চাইবে,কল দিয়ে খোজ নিবেন,মেসেজের উত্তর সব সময়ই দিতে পারিনা।
আর কতো করমু আপনাগো লাইগা.. ?।
জানাবেন,গল্পের হাব ভাব দেখে,আপনার কি মনে হচ্ছে,গল্পের কোথায় ভালো,আর কোথায় খারাপ লেগেছে।হু,অবশ্যই জানাবেন।]

আত্মা নাকি সে?
সিজন-০২ ( পর্ব –০২)

লেখক– Riaz Hossain imran

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে