আঁধার ভিড়ে সন্ধ্যাতারা পর্ব-১৪+১৫+১৬+১৭

0
2951

#আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা-মালিহা_খান❤️
#পর্ব-১৪

টানা দু-ঘন্টা শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে এলো আরিয়ান।অসহ্য লাগছে তার।কিছুতেই নেশা হচ্ছেনা,ঘুম আসছেনা।সেন্টার টেবিলে অর্ধেক খাওয়া ড্রিংক্সের গ্লাস রাখা।ঘড়ির কাঁটা প্রায় আড়াইটা ছুঁইছুঁই।
।একবার বিছানার দিকে তাকালো সে।খালি বিছানা দেখে একটা চাপা দীর্ঘ: শ্বাস বেরিয়ে আসলো।
কিছুক্ষন এপাশ-ওপাশ পায়চারি করেও লাভ হলোনা।মায়া হয়তো এতক্ষনে ঘুমিয়ে গিয়েছে।আচ্ছা,তাকে এই রুমে নিয়ে আসলে কি খুব ক্ষতি হয়ে যাবে?খুব বেশিই অনুচিত হয়ে যাবে?ক্ষতি হলে হবে,সে তো অন্তত একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারবে।কখনো কখনো একটু সার্থ:পর হওয়াই যায়।

দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে আরিয়ান।তারমানে,সে দরজা লক করে ঘুমায়না।
বিছানার একদম মাঝখানে হাত পা ছড়িয়ে ঘুমাচ্ছে মায়া।মাথাটা বালিশে নেই।বালিশ থেকে অনেকটা নিচে।
নি:শব্দে হেটে গিয়ে তাকে পাঁজাকোলা করে কোলে তুলে নিলো আরিয়ান।এতদিনে সে এতটুকু অন্তত জানে যে মায়ার ঘুম অনেক গাঢ়।সহজে ভাঙেনা।মেয়েটার পরণে হাল্কা গোলাপি রংয়ের ঢিলেঢালা লং ফ্রক।একটু বেশিই বাচ্চা বাচ্চা লাগছে ফ্রক পরায়।

নিজের বিছানায় মায়াকে শুইয়ে দিতেই একটা তৃপ্তি অনুভব করে আরিয়ান।অত:পর তাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়ে সেও শুয়ে পরে।বুকের ভিতর জমা হওয়া সব চাপা কষ্ট,দীর্ঘ:শ্বাস যেন নিমিষেই উবে যায়।
মায়ার শরীর থেকে মিষ্টি একটা সুগন্ধ আসে সবসময়।আরিয়ান চেনে গন্ধটা।
মায়া এতটা কাছাকাছি থাকায় গন্ধটা যেন আরো তীব্রভাবে নাকে এসে লাগে।ঘোর ধরে যায়।
কিছু না ভেবে,মায়ার গলায় মুখ ডুবিয়ে ঘুমিয়ে পরে আরিয়ান।
উচিত অনুচিত এর হিসেবটা তার মায়াময় অনুভূতির ভিড়ে আড়াল হয়ে যায়।
——————

সকালে ঘুম ভাঙতেই নিজেকে কারো বাহুডোরে আবদ্ধ অবস্থায় পেয়ে থমকে গেল মায়া।এটা যে আরিয়ানের রুম বুঝতে অসুবিধা হলোনা।সে তো নিজের ঘরে ঘুমিয়েছিল।তবে?
একহাত দিয়ে শক্ত করে তার পেট জড়িয়ে ধরেছে আরিয়ান।সে আবার সেই হাতের উপরে ধরেও আছে।
পাশে মুখ ঘুরাতেই আরিয়ানের ঠোঁট তার গাল ছুয়ে গেল।নি:শ্বাস আটকে এলো।লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে গেল মায়া।আড়িয়ান বেঘোরে ঘুমোচ্ছে।হাতটা একটু সরানোর চেষ্টা করতেই তাকে আরো কাছে টেনে নিলে আরিয়ান।অষ্পষ্ট কন্ঠে বললো,

—“মায়াবতী,নড়োনা প্লিজ।

মায়া থেমে গেল।প্রতিউওরে প্রতিবাদ করার মতো কিছু পেলোনা।লোকটা মাঝেমধ্য এমন অধিকারের স্বরে কথা বলে,মায়া নিজেই বোকা বনে যায়।যেমন এখন,সে বলতে পারছেনা তাকে ছাড়ার কথা।তার ইচ্ছেও করছেনা আরিয়ানের ঘুম ভাঙাতে।গরম নি:শ্বাস আছড়ে পরছে মায়ার মুখে,গলায়।মায়া ঠোঁট কামড়ে ধরে সেভাবেই সুয়ে থাকলো।বেশ অনেকক্ষন কেটে গেলেও আরিয়ান ঘুম থেকে উঠলোনা।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রায় এগারোটা বেজে যাচ্ছে।অনেক বেলা হয়ে গেছে।ইতি নিশ্চয় তাকে খুঁজছে।তাকে রুমে না পেয়ে না জানি কি ভাবছে।

হঠাৎই দরজায় জোরে জোরে নক করার শব্দ হলো।মায়া চমকে সেদিকে তাকালো।আরিয়ান চোখ না খুলেই বিরক্তিকর কন্ঠে বললো,

—“কে?কি সমস্যা?”

ওপাশ থেকে তন্ময়ের অস্থির কন্ঠ ভেসে আসলো,
—“ভাই,মায়া ম্যাম রুমে নেই।পুরা বাসায়ও নেই…

আরিয়ান একবার মায়ার দিকে তাকালো।মেয়েটা অন্যদিকে তাকিয়ে রয়েছে।লজ্জা পাচ্ছে হয়তো।আরিয়ান শান্ত কন্ঠে বলে,
—“ও আমার সাথে আছে।যা তুই”।

তন্ময়ের আর কোন কথা শোনা গেলনা।আরিয়ান মায়ার দিকে তাকালো।মায়া নিচের দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
আরিয়ান একটু হাসে।মায়ার গালদুটো লজ্জায় লাল হয়ে আছে।মায়ার উপর থেকে হাত সরিয়ে নেয় সে।মায়া যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে।ঘাড় কাত করে আরিয়ানকে দিকে তাকায়।আরিয়ান তার দিকেই তাকিয়ে ছিলো ফলে চোখাচোখি হয়ে যায়।

মায়া মৃদু কন্ঠে বলো,
—“আপনি আমাকে এখানে এনেছেন কেন?”

আরিয়ান গায়ের চাদর সরিয়ে উঠে বসে।এত বেলা করে সে কখনোই ঘুমায়না।মায়া এসে তার সব নিয়ম ভঙ্গ করে দিচ্ছে।একটা ছোট হাই তুলে সে বলে,

—“তোমাকে ছাড়া ঘুম আসছিলোনা মায়াবতী।”

আরিয়ানের সোজাসাপটা উওরে আবারো বোকা বনে যায় মায়া।কিছু বলতে পারেনা।সেও উঠে বসে।তার গায়ে ওড়না নেই।কাঁচুমাচু ভঙ্গিতে আরিয়ানের দিকে তাকায় সে।আরিয়ান ততক্ষনে বিছানা ছেড়ে নেমে দাড়িয়েছে।

—“কি হয়েছে?আমি এনেছি বলে মন খারাপ?রাগ করেছো?”

মায়া দু’পাশে মাথা নাড়ায়।কেন যেন তার রাগ লাগছেনা।তবে লজ্জা লাগছে খুব করে।কথা পর্যন্ত বলতে পারছেনা।কোনরকম সে বলে,

—“আমার ওড়না…”

আরিয়ান মুচকি হেসে তার বালিশের পাশ থেকে তার ওড়না বের করে দেয়।মায়ার দিকে এগিয়ে দিতেই দ্রুত সেটা গায়ে জরায় মায়া।এলোমেলো চুলগুলো ঠি ক করে বলে,

—“এখন আমি বাইরে যাবো কিভাবে?”

আরিয়ান ভ্রু কুচকে বলে,
—“কেন?”

—“তন্ময় ভাইয়া,ইতি ওরা কি ভাববে?”

—“কি ভাববে?”

মায়া আমতা আমতা করে।তার শব্দ ভান্ডার যেন শূন্য হয়ে পরেছে।বলার জন্য কিছু খুঁজেই পাচ্ছেনা আজ।আরিয়ান তার দিকে দুষ্টু চাহনীতে চেয়ে আছে।সে কোনরকম আমতা আমতা করে বলে,
—“না,কিছুনা।”

—“তুমি রোজ এখানেই ঘুমাবে,আমার সাথে”।

মায়া চট করে তাকায়।আরিয়ানের কন্ঠে গভীর অধিকার প্রকাশ পাচ্ছে।সে জিজ্ঞাসু কন্ঠে বলে,

—“কেন?”

—“কারণ তোমাকে ছাড়া আমার ঘুম আসেনা”

——————
আরিয়ান অনেকক্ষন আগেই অফিসে চলে গেছে।দেরি হয়ে যাওয়ায় ব্রেক-ফাস্টও করেনি।বাসায় আবারো একা হয়ে গেছে মায়া আর ইতি।আরিয়ান তাকে বাসার সব জায়গায় যেতে বলেছে।যাওয়ার আগে বলে গেছে নিজের রুমে বসে থাকতে বোরিং লাগলে যেন সারা বাসায় ঘুরে বেড়ায়।তাই সে আর ইতি বাড়ির সামনের বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছে।হঠাৎই….

~চলবে~

#আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা-মালিহা_খান❤️
#পর্ব-১৫

হঠাৎই মায়ার চোখ গেলো বাগানের এককোণে একটা ছোট্ট মতন ঘরের দিকে।সে ধীরপায়ে এগিয়ে গেল ওখানটায়।ইতিও তার পিছু পিছু গেল।ওখানে কিছু গার্ড দাড়িয়ে আছে।মায়া কাছে যেয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলো,
—“এটার ভিতর কি?”

একজন গার্ড নম্রভাবে উওর দিলো,
—“ম্যাম এখানে স্যারের পোষা কুকুরেরা থাকে।”

মায়া ভয়ে একটু পিছিয়ে গেলো।কুকুর সে ছোট থেকেই ভয় পায়।ভীত কন্ঠে সে বললো,
—“কুকুরেরা মানে?কয়টা কুকুর উনার?”

গার্ডটা মায়াকে ভয় পেতে দেখে একটু হেসে বললো,
—“দুইটা।একজন মেল একজন ফিমেল।আপনি ভয় পাবেননা ম্যাম।ওদের ট্রেনিং দেয়া আছে।কামড়াবে না।ওরা স্যারের খুব প্রিয়।”

মায়া “ওহ্ আচ্ছা” মাথা নাড়ায়।সে বুঝতে পারছে আরিয়ানের খুব প্রিয় এরা দুজন।নেটের দরজার দিয়ে দেখা যাচ্ছে বড়বড় পশম কুকুর গুলোর।একজন ঘুমিয়ে আছে।আরেকজন তার পাশে বসে আছে।সাইজে সাধারণ কুকুরের তুলনায় অনেক বড়।
দুজন একইরকম দেখতে।আচ্ছা,আরিয়ান ওদেরকে আলাদা করে কিভাবে? মনের প্রশ্নটা মনেই রেখে দিলো
মায়া।আরিয়ান আসলে তাকে জিজ্ঞেস করবে ভেবে।
••••••••••
হলরুমের সোফায় পা তুলে বসে টিভি দেখছে মায়া।টিভিতে কার্টুন চলছে।মায়া মনোযোগী দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে আছে।মাঝে মাঝে এক দু’বার ঘড়ির কাঁটা লক্ষ্য করছে।আরিয়ানের ফেরার সময় হয়েছে তবুও আসছেনা কেন?

আরিয়ান বাড়িতে ঢুকে।মায়া উল্টোদিকের সোফায় বসে আছে বিধায় তাকে দেখতে পায়নি।টিভির সাউন্ড
অনেক জোরে দেয়া তাই ওর পায়ের শব্দও তার কানে যাচ্ছেনা।আরিয়ান সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে গলার জোর বাড়িয়ে ডেকে উঠে,
—“মায়া,রুমে আসোতো।”

মায়া চমকে পেছনে তাকায়।শুধু দেখতে পায় আরিয়ান সিঁড়ি দিয়ে উঠে যাচ্ছে।অদ্ভুত!!উনি এলো কখন?
টিভি বন্ধ করে উঠে দাড়ায় মায়া।ইতি একটু আগেই রুমে গিয়েছে।সে একাই বসে ছিলো।
উপরে উঠতে উঠতে দেখতে পায় তন্ময় চোখ মুখ কালো করে নিজের রুমে ঢুকছে।

মায়া আস্তে করে নক করে দরজায়।ভেতর থেকে আরিয়ান বলে,

—“তোমার নক করে ঢুকতে হবেনা মায়া,আসো”।

মায়ার ঠোঁটের কোঁণে মৃদু হাসি ফুটে উঠলেও সে সেটাকে আড়াল করে ভেতরে ঢুকে।দেখে আরিয়ান আয়নার সামনে দাড়িয়ে ঘড়ি খুলছে।তার দিকে তাকাতেই সে লক্ষ্য করে আরিয়ানের চোখজোড়া অসম্ভব রকমের লাল হয়ে আছে।আৎকে উঠে সে।কিন্তু মুখে কিছু বলেনা।

আরিয়ান মুচকি হাসে।আজকাল মায়া কাছাকাছি থাকলেই কেমন যেন শান্তি শান্তি লাগে তার।এইযে তার গায়ে এত জর।মাথাব্যাথায় চোখ পর্যন্ত খুলতে পারছিলোনা।আর এখন কতটা ভালো লাগছে।মাথা ব্যাথাও যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে।হয়তো এখনো মাথাব্যাথা করছে কিন্তু সে অনুভব করতে পারছেনা,মায়া কাছে থাকলে অন্যকিছু অনুভব করতে ইচ্ছে হয়না তার।তখন সে কেবল মায়াতেই মগ্ন থাকে।

—“কাছে আসো”।

গুটিগুটি পায়ে তার সামনে যেতেই কোমড় ধরে তাকে একদম কাছে টেনে নেয় আরিয়ান।কপালে উত্তপ্ত ঠোঁটের উষ্ম স্পর্শ দিলে কেঁপে উঠে মায়া।তড়িৎগতিতে হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে আরিয়ানের গাল ছুঁয়ে দিতেই চোখ মুখে নিমিষেই অদ্ভুত ব্যাকুলভাবে ফুটে উঠে।অস্থিরতায় ভরা কন্ঠে বলে,

—“আপনার গায়ে প্রচন্ড জ্বর”

আরিয়ান মাদক মাখা নয়নে একদৃষ্টিতে তার দিকে থাকে।মায়ার চোখে মুখে তার জন্য অস্থিরতা দেখে মনে মনে একরাশ:প্রশান্তির হাওয়া বয়ে যায়।চোখ বন্ধ করে ফেলে সে।মাথার ব্যাথাটা কি তাহলে আবারো হচ্ছে?

—“জানি মায়াবতী,এই জ্বরে আ..আমার কিছু হয়না।”

আরিয়ানের কন্ঠে কেমন যেন জড়তা।মায়া বুঝতে পারে আরিয়ান জরের ঘোরে এসব বলছে।জ্বরে যেন পুড়ে যাচ্ছে তার শরীর।মায়া তাকে জোর করেই বিছানায় বসিয়ে দেয়।

—“আপনি বসুন আমি ওষুধ নিয়ে আসছি।আপনার জ্বর বেড়ে যাচ্ছে”

আরিয়ান তার হাত ধরে ফেলে।থেমে থেমে বলে,
—“তুমি যেওনা মায়াবতী।তুমি থাকলেই হবে।আমার আর কিছু লাগবেনা।কিছুনা।”

—“আমি এক্ষুনি আসছি,একটু বসুন।”
মায়া দ্রুত বেরিয়ে যায়।মেডিসিন কোথায় রাখা থাকে জানেনা সে।তন্ময়ের রুমে যেয়ে নক করতেই দরজা খুলে তন্ময়।তাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই মায়া বলে,
—“ভাইয়া,উনারতো খুব জ্বর,জ্বরের ওষুধ কোথায় আছে?”

তন্ময় রাগ নিয়ে কিছু একটা বলতে চায়।কিন্তু বলতে পারেনা।মায়ার অস্থির চাহনী দেখে সে নরম কন্ঠে বলে,
—“চলুন,দিচ্ছি।”

একটু আগেই এ নিয়ে আরিয়ানের সাথে তার একপ্রকার রাগারাগি হয়েছে।অসুস্থ হলে কখনোই নিজের খেয়াল রাখেনা আরিয়ান।সামান্য ওষুধও খেতে চায়না।আজ যে প্রচন্ড জ্বর তবু শত বলেও ডাক্তারের কাছে নিতে পারেনি।এখন যদি মায়ার কথায় একটু ওষুধ খায় তাহলেই শান্তি।

——————
আরিয়ানকে বিছানায় হেলান দিয়ে বসিয়ে দিয়েছে তন্ময়।মাথা কাত করে চোখ বন্ধ করে রেখেছে আরিয়ান।মায়ার কথাতে ওষুধ খেয়েছে সে।তবে জ্বর এখনো কমেনি।
মায়া সুপের বাটি হাতে ঘরে ঢুকে।তন্ময় একটু সরে দাড়ায়।আরিয়ানের পাশে বসে পরে মায়া।একচামচ সুপ মুখের সামনে ধরে বলে,

—“হা করুন”।

আরিয়ান আধো আধো ভাবে তাকায়।মায়ার অন্যহাতটা শক্ত করে ধরে বিনাবাক্য মুখ হা করে।
মায়ার লজ্জা লাগে।তন্ময়ের সামনে এভাবে উনি এভাবে হাত ধরে রেখেছেন।তন্ময় না জানি কি ভাবছে।
মায়ার নত চেহারার দিকে তাকিয়ে তন্ময় বুঝে তার অসস্তি হচ্ছে।

—“আপনি তাহলে খাইয়ে দিন,কোন দরকার হলে আমাকে ডাক দিয়েন।”

মায়া মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায়।তন্ময় বেরিয়ে যায়।আরিয়ানকে পুরো বাটির সুপ খাইয়ে দিয়ে সস্তির নি:শ্বাস ফেলে মায়া।বাটিটা টেবিলে রেখে পানি খাইয়ে দেয়।এখনও তার হাতটা ধরে রেখেছে আরিয়ান।
আরিয়ানের পিঠের পিছে বালিশ দেয়া।সেটা সরিয়েই তাকে শুইয়ে দিতে হবে।
হাতটা ছাড়িয়ে তার দু’বাহু ধরে সে বলে,
—‘একটু সামনে আসুন,বালিশটা সরাবো।”
আরিয়ান আবছাভাবে তাকায়।লাল লাল মনিগুলোয় ঘোর লাগা চাহনী।হুট করে মায়ার দুই গালে হাত রেখে সে নেশাতুর কন্ঠে বলে,

—“ক্যান আই কিস অন ইওর লিপস্?”

~চলবে~

#আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা-মালিহা_খান❤️
#পর্ব-১৬

কিছুক্ষন ভাবাবেগশুন্য হয়ে চেয়ে থাকে মায়া।চোখের পাতায় নেমে আছে একরাশ দম বন্ধকর অনুভূতি।সে জানে আরিয়ান জ্বরের ঘোরে এমন কথা বলছে তবুও তার লজ্জা লাগছে।এমন কথায় কার না লজ্জা লাগবে?সরাসরি ঠোঁটে চুমু খাওয়ার জন্য অনুমতি চাইছে?
আরিয়ান উওরের আশায় তাকিয়ে আছে সেই একই দৃষ্টিতে।সেই চাহনীতে গভীর তৃষ্ণা।
মায়া আমতা আমতা করে কিছু বলতে যায়।কিন্তু পারেনা।ততক্ষনে নিজের বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে মায়ার ঠোঁটে আলতোভাবে স্লাইড করছে আরিয়ান।
মায়া হাত ধরে আটকায়।গাল থেকে আরিয়ানের দুইহাত সরিয়ে নেয়।পিঠের বালিশ সরিয়ে আরিয়ানকে শুইয়ে দেয়।আরিয়ান কোন বাঁধা দেয় না।কোনরকম জোড়ও করেনা।সে হয়তো তার উওরটা পেয়ে গেছে।

আরিয়ানকে গায়ে কম্বল টেনে দিয়ে উঠে যেতে গেলে তার হাত ধরে ফেলে আরিয়ান।চোখ বন্ধ অবস্থায় সে ধীর কন্ঠে বলে,

—“মায়াবতী,যেওনা..এখানেই থাকো।”

—“লাইটটা অফ করে দিয়ে আসি।আপনার ঘুম হবে না আলো থাকলে।”

আরিয়ান হাসে।ছেড়ে দেয় মায়ার হাত।জ্বরের উত্তাপে তার ফর্সা চেহারা লাল হয়ে আছে।নাকের ডগার জায়গাটা আর ঠোঁটগুলো অতিরিক্ত লাল।
ঘরে হাল্কা আলো জ্বালিয়ে দেয় মায়া।ওয়াশরুম থেকে মগে করে পানি এনে পাশের টেবিলে রাখে।রাতে যদি জ্বর না কমে তাহলে পানি দিয়ে গা মুছিয়ে দিতে পারবে।
অত:পর আরিয়ানের পাশ ঘেঁষে শুয়ে পরে।একহাত আরিয়ান নিজের বুকে চেপে ধরে রেখেছে।
অন্যহাতে সে নরম কোমল স্পর্শে আরিয়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।

ভোরের দিকেও মায়ার চোখে ঘুম নেই।কপালে চিন্তার ছাপ।ওষুধ খাইয়েছে অনেকক্ষন হলো তবুও জ্বর কিছুতেই নামছেনা।উল্টা ক্রমাগত বেরে চলেছে।
জ্বরে কাঁপছে আরিয়ান।তার শরীরের তাপে মায়ার ও গরম লাগছে।ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে উঠে যায় মায়া।
এতরাতে তন্ময়কে ডাকতে কেমন যেন একটা অসস্তি হচ্ছে।তাই আর ডাকলোনা।ঘরের আলো জ্বালিয়ে দিল।
ড্রেসিং টেবিল থেকে একটা রুমাল নিয়ে মগের পানিতে ভিজিয়ে প্রায় একঘন্টা কপালে পানি দেয়ার পর জ্বর কিছুটা কমে এলো।আরিয়ানের এতক্ষন অচেতন ছিলো।জ্বর নেমে যেতেই শরীর ঘামে ভিজে গেলো।
মায়া গায়ের কম্বল সরিয়ে দিলো।
আরিয়ানের জ্বরের ঘোর কেটে যায়।চোখ মেলে তাকায় সে।তবে ঘুমের রেশ কাটেনি।মায়াকে তার পাশে বসে থাকতে দেখে বলে,
—“মায়া..তুমি..

—“আছি আছি আপনার কাছেই আছি।কোথাও যাইনি।”

আরিয়ান হেসে ফেলে।মায়ার বলার ধরণ শুনে প্রচন্ড হাসি পায় তার।নিশ্চিত সে জ্বরের ঘোরে উল্টা-পাল্টা বকছিলো।এই সমস্যা তার আছে।তবে আগে এসব শোনার মতো কেউ ছিলনা।একা একাই কথা বলতো।একা একাই জ্বর সেড়ে যেত।এসব নিয়ে মাথা ঘামাতোনা সে।

আরিয়ানকে একা একাই হাসতে দেখে ভ্রু কুচকে ফেলে মায়া।
—“হাসছেন কেনো?”

—“তোমাকে খুব জ্বালিয়েছি তাইনা?বিরক্ত হয়েছো?”

—“উহু,বিরক্ত হইনি”।

বাস্তবিকই মায়ার একফোঁটা বিরক্তিও আসেনি।বরং চিন্তা হচ্ছিলো।সারাটা সময় অস্থিরতায় কেটেছে।নিজে অসুস্থ হলেও কখনো এতোটা টেনশন হয়না তার।

আরিয়ানের শার্ট ঘামে ভিজে শরীরের সাথে লেপটে আছে।মায়া ইতস্ততভাবে বললো,
—“শার্টটা খুলে ফেলুন।ঘেমে গেছেন।এভাবে থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে।”

আরিয়ান উঠে বসে।শার্টের তিনটা বোতাম খুলতেই মায়া চোখ নামিয়ে নেয়।আজকাল হুটহাট লজ্জা লাগে তার।খুব লজ্জা!

উঠে গিয়ে সে তোয়ালে নিয়ে আসে।আরিয়ানের দিকে এগিয়ে দেয়।
—“শরীর মুছে নিন।”

আরিয়ান মায়ার নত মুখের দিকে তাকায়।তোয়ালেটা নিয়ে গা মুছতে মুছতে বলে,
—“এত লজ্জা পেয়োনা।কাবার্ড থেকে টি-শার্ট বের করে দাও।”

মায়া কোন উওর দেয়না।টি-শার্ট বের করে দিলে সেটা পরে নেয় আরিয়ান।হাই তুলে মায়া।সারারাত ঘুম হয়নি।এখন ঘুম পাচ্ছে।
মায়া যেয়ে লাইট নিভিয়ে দেয়।আরিয়ান বালিশ ঠিক করতে করতে বলে,

—“দরজা খোলা মায়া।দরজা লক করে ঘুমাতে আসো।”

বিছানায় গা এলিয়ে ক্লান্তিতে দু’চোখ বন্ধ করে মায়া।তার চুলে পরম স্নেহে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আরিয়ান।
আজকে জ্বরের ঘোরেও লোকটা তার সাথে খারাপ কিছু করেনি।কোনরকম জোড় করেনি।নিজের নিয়ন্ত্রন হারায়নি।
••••••••••
সকালে আরিয়ানের রুম থেকে বেরিয়ে আসতেই তন্ময়ের মুখোমুখি হয় মায়া।তাকে দেখেই তন্ময় প্রশ্ন করে,

—“ভাইয়ের জ্বর কমেছে?”

—“জি।এখন নেই জ্বর”।

—“কোথায় উনি?উঠেনি?”

—“উঠেছেন।,,,ওয়াশরুমে।”

—“ওহ্,আচ্ছা।বলে মায়াকে সাইড দিলো তন্ময়।মায়া মুচকি হেসে নিজের ঘরে চলে গেল।


আরিয়ান গলায় টাই বাঁধছে।অফিসে যাবে সে।মায়া বসে আছে তার সামনের সোফায়।সে বসে বসে মনোযোগ দিয়ে আরিয়ানের টাই বাঁধা দেখছে।আরিয়ান সন্দিহান কন্ঠে বলে,

—“আমাকে এভাবে কি দেখছো?”

—“আপনার টাই বাঁধা দেখছি।আপনাকে না।”

আরিয়ান হেসে দেয়।কাবার্ড খুলে একটা বক্স বের করে মায়ার সামনে একহাঁটু গেড়ে বসে।মায়ার বাম পা টেনে নিজের পায়ের উপর রাখতেই মায়া তাড়াহুড়ো করে বলে,
—“কি করছেন?”

আরিয়ান বক্স থেকে সেই পায়েলটা বের করে।যেটা সে নিজের বিছানায় পেয়েছিলো।খুব যত্ন করে রেখেও দিয়েছিলো।
চিরচেনা প্রিয় পায়েলটা এতদিন পর দেখে মায়ার মুখে খুশি উপচে পরে।ঠোঁটে ফুটে ওঠে মিষ্টি হাসি।

—“আপনি এটা কোথায় পেলেন?জানেন আমি কত খুঁজেছি?ভেবেছিলাম হারিয়ে ফেলেছি।আপনার কাছে এলো কি করে?”

—“আমার বিছানায় পেয়েছিলাম।তোমার পায়ে ব্যান্ডেজ করার সময় ওইদিন ডক্টর ভুলে খুলে রেখেছিল।”

মায়া কন্ঠে দুষ্টুমি মেখে বলে,
—“আপনি রেখে দিয়েছিলেন কেন?”

—“কেন রেখেছিলাম?কারণ শুনতে চাও?”

—“হুম”

আরিয়ান ভ্রু উচিয়ে বাঁকা হাসে।পায়েলটা পরিয়ে দিয়ে মায়ার কানের সামনে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,
—“আমি কারণ বলতে শুরু করলে তুমিই লজ্জা পাবে মায়াবতী”।

~চলবে~

#আঁধার ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা-মালিহা_খান❤️
#পর্ব-১৭

ডাইনিং টেবিলে ব্রেক-ফাস্ট করার সময় হঠাৎই গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে যায় মায়া।
তন্ময়-ইতি দুজনেই হতভম্ব হয়ে চেয়ে থাকে।আরিয়ান দাড়াতেই পেছন থেকে কুকুরের ডাকে সেদিকে তাকায় সবাই।আরিয়ানকে দেখে কুকুর গুলো দৌড়ে তার পায়ের কাছে এসে মুখ ঘঁষছে থাকে।
মায়া ভয়ে সিটিয়ে যায়।কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,

—“ওদেরকে সরান প্লিজ,কামড়ে দিবে।”

আরিয়ান তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।কুকুরগুলো যেন খুশিতে লাফাতে থাকে।
—“Don’t be scared.ওরা কামড়াবে না।”

একটা কুকুর মায়ার দিকে আসতেই ছিঁটকে দু’কদম পিছিয়ে যায় মায়া।পা কাঁপছে তার।এমনেই সে কুকুড় প্রচন্ড ভয় পায়।তার উপর এদের আকৃতি এত বড়।গা ভর্তি লম্বা লম্বা সাদা পশম।দেখতে খুব সুন্দর।তবুও ভয় লাগছে মায়ার।
আরিয়ান প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে মায়ার দিকে তাকায়।সে চোখমুখ খিঁচে বন্ধ করে রেখেছে।ইতির দিকে তাকাতেই সে বলে,

—“ম্যাম কুকুর ভয় পান।শুনেছিলাম ছোটবেলায় একবার কুকুর ধাঁওয়া করেছিলো তাকে।কামড়ায়নি তবে খুব ভয় পেয়েছিলেন তখন।

আরিয়ান কাছে গিয়ে মায়ার বাহু জড়িয়ে ধরে।হাতের ইশারায় কুকুরগুলোরও বসতে বললেই তারা সুন্দরমতো পাশাপাশি বসে লেজ নাড়াতে থাকে।আরিয়ান নরম কন্ঠে বলে,

—“মায়া,,ভয় পায়না।চোখ খুলো।ওরা কিছু করবেনা।ট্রাস্ট মি!।

—“না প্লিজ,,,ওদেরকে নিয়ে যান।ভয় লাগছে।!

আরিয়ান ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে তন্ময়কে ইশারা করে।তন্ময় মাথা নাড়িয়ে কুকুর দুটোকে গার্ডেনে নিয়ে যায়।মায়া ধীরে ধীরে চোখ মেলে।আরিয়ান তাকে ছেড়ে দাড়ায়।নিজের চেয়ারে বসতে বসতে বলে,

—“খাবার শেষ করো।ওরা এখন আসবেনা।”

মায়া চুপচাপ খেতে বসে।তার কেন যেন মনে হচ্ছে আরিয়ান তার উপর রেগে আছে।গতকাল গার্ড বলেছিলো কুকুর গুলো আরিয়ানের খুব প্রিয়।তবে কি সে ভয় পাওয়ায় আরিয়ান রেগে গিয়েছে?কিন্তু সে কি করবে?তারতো সত্যিই খুব ভয় করছিলো।

খাওয়া শেষে হাত ধুয়ে রুমে যেতে নিলেই আরিয়ান তার হাত টেনে ধরে।মায়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই সে বলে,

—“আসো আমার সাথে।”

মায়া আর কিছু বলেনা।আরিয়ানের পিছে পিছে গার্ডেনে এসে দাড়ায়।আরিয়ান তার হাত ধরেই সেই ছোট্ট ঘরটার সামনে নিয়ে যায়।।গার্ডরা দরজা খুলে দেয়।আরিয়ান ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলে,

—“ভয় পাবেনা ঠিকাছে?”

মায়া ফট করে বলে দেয়,
—“আপনি আমার সাথে রাগ করেছেন?”

আরিয়ান ভ্রু কুচকায়।হেসে দিয়ে বলে,
—“রাগ করবো কেন?”

—“আমি ওদের ভয় পেলাম তাই।ওরা তো আপনার খুব প্রিয়।”

আরিয়ান মৃদু হেসে বলে,
—“তুমিও আমার খুব প্রিয় মায়াবতী।প্রিয় মানুষের সাথে রাগ করা যায়না।আর তোমার সাথেতো একদমই না”।

মায়ার জানতে ইচ্ছে করে।”কেন তার সাথে রাগ করা যাবেনা?”কিন্তু জিজ্ঞেস করতে পারেনা।কেন?ওইয়ে লজ্জা।তার যে খুব লজ্জা লাগছে।

ভেতরে ঢুকেতেই কুকুরগুলো দাড়িয়ে লেজ নাড়াতে থাকে।মায়া একটু পিছিয়ে যায়।আরিয়ান তাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়।বলে,

—“আমি আছিতো।ওরা কামড়ালে কি আমি তোমাকে এখানে আনতাম বলো?”

মায়া উওর দেয়না।ভীত নয়নে কুকুর গুলোর দিকে চেয়ে থাকে।আরিয়ান হাত দিয়ে ইশারা করে বলে,

—“ওর নাম জ্যাক আর ওর নাম জেনি।ওদের কে আমি নিয়ে এসেছিলাম প্রায় ৩ বছর আগে।তখন ওরা একদম বাচ্চা ছিলো।এখানেই বড় হয়েছে।খুব আদরের।বুঝলে?

মায়া মৃদু স্বরে বলে,
—“হু”।

একজন এসে মায়ার পায়ে মাথা ঘঁষতেই মায়া আরিয়ানের বাহু খামছে ধরে বুকে মুখ লুকায় মায়া।আরিয়ান তার চুলের ভাঁজে হাত গলিয়ে আশ্বস্ত করে বলে,

—“জ্যাক আদর নিতে এসেছে।মাথায় হাত বুলিয়ে দাও।দেখো তোমার ভয় কেটে যাবে।”

মায়া ঘাড় বাকিয়ে তাকায়।কুকুরটা ক্রমাগত তার পায়ে মাথা ঘঁষছে।সে কাঁপা কাঁপা হাতে মাথায় আদর করতেই তার হাতে জিহ্বা দিয়ে চেটে দেয় জ্যাক।মায়া আৎকে ওঠে হাত সরিয়ে নেয়।আরিয়ান হেসে দিয়ে বলে,
—“জ্যাকও আদর করছে।পছন্দ হয়েছে তোমাকে”।

মায়ার ঠোঁটের কোঁণে মৃদু হাসি ফুটে উঠে।জেনি এগিয়ে আসলে তার মাথায়ও আদর করে দেয় সে।ভয়টা কেটে গেছে।আরিয়ান হাতের ঘড়ির দিকে তাকায়।অফিসের জন্য লেট হয়ে যাচ্ছে তার।

—“ভয় কমেছে?”

—“হুম”।

—“শিওর?আর ভয় পাবেনাতো ওদের?”

মায়া দু’দিকে মাথা নাড়ায়।আড়িয়ান হেসে তার কপালে গভীরভাবে চুমু খায়।সে চাচ্ছিলোনা মায়া কোনোরকম ভয়ে থাকুক।
তাও আবার তার কোন বিষয়ের জন্য।
________________
আরিয়ানের অফিসে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে।হাত নাড়িয়ে তাকে বিদায় জানায় মায়া।মনে মনে ভাবে,
“লোকটা এত ভালো কেন?”

~চলবে~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে