অন্তরালে তুমি আমি পর্বঃ০৮

0
1759

#অন্তরালে_তুমি_আমি
#পর্বঃ০৮
#Mst_Liza

“জলি গাড়ি থেকে নামতেই আদি এসে জলিকে কোলে তুলে নেয়।জলি রেগে গিয়ে আদির কোলের উপরে দাপাদাপি ঝাঁপাঝাপি শুরু করে। তাল সামলাতে না পেরে আদি ধপাস করে জলিকে নিয়ে নিচে পরে যায়। নিচে পরে আদি কোমড়ে ব্যাথা পাই।তাই কোমড়ে হাত দিয়ে ডলে।আর জলি সেটা দেখে হাসতে থাকে।”
হাসতে হাসতে জলি বলে,
—হারামজাদা ঠিক হয়েছে পরেছিস!
আদির শার্টের কলারটা টেনে ধরে বলে,
—একদম উচিৎ শিক্ষা হয়েছে।এখন ভাঙা কোমড় নিয়ে বসে থাক।আর আমিও তোর পাশে বসে থাকি।
“কথাটা বলে দু’পায়ের হাঁটু ভাজ করে আদির পাশে বসে থাকে জলি।আর আদি জলির দিকে তাকিয়ে থাকে। জলির কথা বলা, হাসি এক অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখে আদি।আজ যেন জলিকে আদির অন্য রকম লাগছে।”

“জলি পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে আদি তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে চোখের কোনো পলক পরছে না।জলি হাত দিয়ে তুরি বাজিয়ে আদির চোখের সামনে নিজের মুখটা এনে আদির মুখে ফুঁ দেয়।আর জলির ফুঁ’তে আদি কেঁপে ওঠে।”

আদির ধ্যান ফিরলে জলি বলে,
—ভাঙা কোমড়ে তো কিছুই করতে পারবি না, আমি বরং যায়!

“কথাটা বলে জলি উঠে দাড়াতে যায় আদি হাত ধরে টেনে জলিকে বসিয়ে দেয়।”
তারপর বলে,
—বস না এখানে! তোকে একটু দেখি!
—ফাট্ট!
“জলি আবার উঠতে যায় আর আদি আবার জলিকে টেনে বসাই।”
তারপর আদি বলে,
—আচ্ছা জলি উল্টো জামা পরা কি মেয়েদের নিউ ফ্যাশান?
—মানে?
—তুই জামাটা উল্টো কেন পরেছিস?

“জলি তাকিয়ে দেখে তার জামাটা উল্টো পরা।”
—না আসলে অনেক গরম পরেছে তো তাই গোসল করতে গিয়েছিলাম।তারপর তোর জন্য তারাহুরো করতে গিয়ে উল্টো হয়ে গেছে।
—ওহহ বুঝতে পেরেছি।সমস্যা নেয় তুই আমার এখানে গোসল করে নিস।

“আদি কোমড় ধরে উঠে দাড়ায় তারপর জলিকে আবার কোলে তুলে নেয়। এবার আর জলি দাপাদাপি ঝাঁপাঝাপি করে না।আদি আস্তে করে জলিকে নিয়ে নিজের রুমে যায়।”

আদি আলমারি থেকে নিজের একটা শার্ট বের করে জলিকে দিয়ে বলে,
—এটা পরে গোসল করে নে!
—হিইইই হলুদ শার্ট? হলুদ রং আমার একদম পছন্দ না।
—তাহলে কি রং পছন্দ?
“আদি একটা একটা করে শার্ট জলির সামনে ধরে জলির একটাও পছন্দ হয় না।”
তারপর জলি বলে,
—আচ্ছা তুই রাখ আমি বেছে নিচ্ছি।

“জলি এগিয়ে গিয়ে একটা সাদা শার্ট উঠিয়ে বলে এটা সুন্দর।নিচে তাকিয়ে দেখে আলমারির মধ্যে একটা বক্স।”

“জলি বক্সটা খোলে দেখে একটা ছবি দুই খন্ড করে ছেঁড়া। জলি ছবিটা উঠিয়ে আদির সামনে ধরে।”
আর আদির কাছে জানতে চায়,
—কার ছবি এটা?

“আদি এক টান দিয়ে জলির হাত থেকে ছবিটা কেড়ে নেয়।”
আর বলে,
—তুই আমার বক্সে হাত দিয়েছিস কেন?
—এমনি চোখের সামনে পেলাম তাই।এতে এমন ভাং ধরার কি আছে? ঢং যতো!

“কথাটা বলে জলি ওয়াশরুমে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর গোসল করে আদির শার্টটা পরে বেড়িয়ে আসে।”

“আয়নার সামনে দাড়িয়ে জলি চুল ঝারছে।আর আয়নার ভেতর থেকে চেয়ে দেখছে আদিকে।আদি মাথাটা নিচু করে বসে আছে।একবারও তার দিকে ফিরে তাকাচ্ছে না।কিন্তু আদি তো এমন নয়।জলি মনে মনে ভাবছে আজ কি হয়েছে আদির।”

“জলি উঠে আদির পাশে গিয়ে বসে।আর আদির মুখটা তুলে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়।”
—কি হলো আদি? এতোটা নিশ্চুপ কেন তুই?

“সঙ্গে সঙ্গে আদি জলিকে ঝাপটে ধরে। জলির বুকে মাথা রেখে শব্দ করে কাঁদে।”
আর সেই ছবিটার দিকে ইশারা করে বলে,
—জানিস জলি,,ওই ছবির লোকটা আমার বাবা।যে আমার মাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্যাবহার করেছিলো।তারপর যখন আমি গর্ভে আসি আমার মাকে ছুড়ে ফেলে দেয়।
—এসব কি বলছিস আদি?
—হ্যাঁ, এটাই সত্যি। আমার মা আমাকে গর্ভে নিয়ে আত্নহত্যা করতে গিয়েছিলো কিন্তু পারে নি।একজন মহিলা মাকে বাঁচায়।তারপর সেই আমার মাকে আশ্রয় দেয়।আর ওই ছবিটা মাই তাকে দেখিয়েছিলো।আর বলেছিলো ওটা আমার বাবা।আমার জন্মের সময় যখন আমার মা মারা যায় তখন সেই আমাকে মানুষ করে।আমি একটু বড় হলে আমার মা-বাবার কথা জানতে চাইলে সে আমাকে সব খুলে বলে।আজ থেকে দুবছর আগে সেও মারা গেছে।আমি খারাপ না জলি মানসিক হতাশা আর বিরহ আমাকে শেষ করে দিয়েছে।আমি যা করি নিজেকে ভালো রাখতে করি। তবে আর না। আমি এই সবকিছু ছেড়ে দেবো। আমি আর কখনো কোনো মেয়ের কাছে যাবো না। আমার একটা কথা রাখবি?
—কি?
—তুই আমার বউ হবি? আবিরকে ভুলে যাবি?

“জলি মনে মনে ভাবে এই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না।”
আদির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
—হ্যাঁ ভুলে যাবো।আর তোকেও বিয়ে করবো।তার বদলে তোরও আমাকে সম্মান করতে হবে।
—হ্যাঁ করবো জলি।
—ঠিক আছে। তোর কাছে আমার যেই ভিডিও গুলো আছে ওগুলো আগে ডিলিট কর তারপর মানবো।

“আদি ভিডিও গুলো সব ডিলিট করে দেয়।” আর বলে,
—ডিলিট করে দিয়েছি জলি।
—বেশ ভালো করেছিস।

চলবে,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে